মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
পীর সাহেবদের দরবারের সবচাইতে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এই যে, এখানে সব সময় স্বপ্নের রাজত্ব কায়েম হয়ে থাকে। কে কত বেশি এবং ভালো স্বপ্ন দেখতে পারে, মুরীদ-মুসাহিবদের মাঝে তা নিয়ে প্রবল প্রতিযোগিতা চলে। ফলে তাদের কেউ কেউ যে বানানো স্বপ্নও না বলে, এমন কথা জোর করে বলা যায়না। কেননা যে যত ভালো স্বপ্ন দেখবে এবং স্বপ্নযোগে হুজুর কিবলার বেলায়েত ও উচ্চ মর্যাদা প্রমাণ করতে পারবে, হুজুরের দোয়া ফায়েজ এবং স্নেহাশীষ সেই পাবে সবচাইতে বেশি। কাজেই এ দরবারে স্বপ্ন দেখতেই হবে;-স্বপ্ন না দেখে কোনো উপায় আছে? এ দরবারের লোকেরা চোখ বুঝলেই স্বপ্ন দেখতে পায়, স্বপ্ন যেন এদের জন্য এমন পাগল হয়ে বসে থাকে যে, যে কোনো সময়ই তা এদের চোখের সামনে ভেসে ওঠার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। তারা জেগে জেগেও স্বপ্ন দেখে অনেক সময় এবং তা হুজুর কিবলাকে খুশি করার জন্য সুন্দরভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে দরবারে পেশ করে। শুধু তা-ই নয়, শরীয়তের দৃষ্টিতে ভালো-মন্দ জায়েয নাজায়েয সম্পর্কেও এখানে স্বপ্ন দ্বারাই ফয়সালা গ্রহণ করা হয়। একজন হয়তো বললোঃ আমি অমুক হুজুরকে স্বপ্নে দেখেছি, তিনি এই কাজটি করতে নিষেধ করেছেন; অমনি সে কাজটি পরিত্যাগ করা হলো। কিংবা তিনি অমুক কাজ করতে বলেছেন। অতএব সঙ্গে সঙ্গে সে কাজ করতে শুরু করা হলো।
কেউ বললোঃ আমি নবী করীম(স)কে স্বপ্নে দেখেছি, তিনি আমাকে এ কাজটি করতে আদেশ করেছেন, আর অমনি সে কাজ করতে শুরু করে দেয়া হলো। কিংবা কোনো কাজ করতে নিষেধ করেছেন বলে তা বন্ধ করা হলো। এ ব্যাপারে শরীয়তের ফয়সালা যে কি, সে দিকে আদৌ তাকিয়েও দেখা হয়না; শরীয়ত কি বলে সে কথা জিজ্ঞেস করার কোনো প্রয়োজন তারা বোধ করেনা।
এভাবে স্বপ্নের ওপর নির্ভরতা, স্বপ্ন দ্বারা পরিচালিত হওয়া, স্বপ্নের ভিত্তিতে কোনো কাজ করা বা না করা পীর-পূজকদের নীতি, কোনো শরীয়তপন্থীর এ নীতি নয়। কেননা সাধারণ মানুষের স্বপ্ন-সত্যিকারভাবে যদি কেউ দেখেই –কোনো শরীয়তের বিধান হতে পারেনা। স্বপ্ন সত্য হতে পারে। কোনো স্বপ্ন যদি কেউ সত্যিই দেখে থাকে তবে তা থেকে সে নিজে কোনো আগাম সুখবর লাভ করবে, না হয় কোনো বিষয়ে সতর্কাবলম্বনের ইঙ্গিত পাবে। সে জন্যে তার উচিত আল্লাহর শোকর করা। কিন্তু এ স্বপ্ন দ্বারা ফরয-ওয়াজিব, হালাল হারাম ও জায়েয নাজায়েয কিংবা করণীয় কি, না করণীয় কি, তা প্রমাণিত হতে পারেনা। স্বপ্ন থেকে শরীয়তের অনুকূল কোনো কথা জানতে পারলে সে তো ভালোই; কিন্তু শরীয়তের বিপরীতে যদি কিছু জানা যায় তবে তা কিছুতেই অনুসরণ করা যাবেনা। করা যাবেনা এজন্য যে, শরীয়তের বিপরীত কারো কোনো হুকুম দেয়ার অধিকার নেই, স্বপ্নের কি দাম থাকতে পারে শরীয়তের মুকাবিলায়?
অবশ্য স্বপ্ন ইসলামের দৃষ্টিতে একেবারে ফেলবার বিষয় নয়- এ কথা ঠিক। স্বপ্নযোগে নবী করীম(স) এর দর্শন লাভ করা যায়, তাও হাদীস থেকে প্রমাণিত। কিন্তু প্রথম কথা হলো, স্বপ্নযোগে শয়তান যদি নবী করীমের নিজের বেশ নয়- যে কোনো একটি বেশ ধারণ করে তাকেই ‘নবী করীম’ বলে জাহির করে, তবে স্বপ্ন দ্রষ্টা কি করে বুঝতে পারবে যে এ প্রকৃত রাসূল নয়?
এ পর্যায়ে রাসূলে(স) এর হাদীসের ভাষা ও তাতে ব্যবহৃত শব্দগুলো লক্ষণীয়। হযরত আবদুল্লাহ(রা) নবী করীম(স) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেনঃ (আরবি)
-যে লোক স্বপ্নযোগে আমাকে দেখলো, সে ঠিক আমাকেই দেখলো। কেননা শয়তান আমার রূপ ও প্রতিকৃতি ধারণ করতে পারেনা। (তিরমিযী)।
শয়তান রাসূলের রূপ ও প্রতিকৃতি ধারণ করতে পারবেনা-বলে যদি কেউ স্বপ্নযোগে রাসূলে করীম(স)কে দেখল, তবে বিশ্বাস করতে হবে যে, সে ঠিক রাসূলকেই দেখেছে, অন্য কাউকে নয়-হাদীসের শব্দ ও ভাষা থেকে একথাই স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। কিন্তু এ শব্দ ও ভাষার ভিত্তিতেই দু’টো দিক এমন থেকে যায়-যার স্পষ্ট মীমাংসা হওয়ার প্রয়োজন। একটি হলো রাসূলে করীম(স) বলেছেনঃ যে লোক আমাকে দেখল, সে আমাকেই দেখল, কিন্তু যদি কেউ অন্য কাউকে দেখে এবং তার মনে ভ্রম হয় শয়তান ভ্রম জাগিয়ে দেয় যে, ইনি রাসূল(স) তাহলে কি হবে? এরূপ হওয়ার অবকাশ কি এ হাদীসের ভাষা থেকে বের হয়না?
দ্বিতীয় রাসূলে করীম(স) বলেছেনঃ শয়তান আমার রূপ ও প্রতিকৃতি ধারণ করতে পারেনা, কিন্তু শয়তান যদি অন্য কারো রূপ প্রতিকৃতি ধারণ করে স্বপ্ন দ্রষ্টার মনে এই ভ্রম জাগিয়ে দেয় যে, ইনি রাসূলে করীম তাহলে কি হবে?
এরূপ হওয়া সম্ভব কিনা এ হাদীসের স্পষ্ট ভাষার পরিপ্রেক্ষিতে? আমার মনে হয়, হাদীসে এই দুটো সম্ভাবনার পথ বন্ধ করে দেয়নি। এখানে এ সম্ভাবনাকে সামনে রেখেই কথা বলা হচ্ছে। আল মাজেরী ও কাযী ইয়াজ প্রমুখ হাদীস বিশারদ এ হাদীসের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তাতেও এর সমর্থন পাওয়া যায়। (তিরমিযীর শরাহ‘তুহফাতুল আল ওয়াযী, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৫৫৫ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য)।
কাজেই স্বপ্ন দেখলেই তদনুযায়ী কাজ করতে হবে, ইসলামে এমন কথা অচল। আর দ্বিতীয় কথা হলো, নবী করীম(স) এর যা কিছু বলবার ছিল তা তো তাঁর জীবিত থাকাকালে সম্পূর্ণই বলে দিয়ে গেছেন, তাঁর জীবদ্দশয়াইতো দ্বীন পূর্ণতা লাভ করেছে। এখন নতুন করে তাঁর কিছুই বলবার থাকতে পারেনা। হালাল-হারাম, জায়েয-নাজায়েয বলে দেয়া নবীর দায়িত্ব। আর নবীর এ দায়িত্ব নবীর জীবন পর্য্ন্তই সীমাবদ্ধ। নবীর জীবন শেষ হয়ে যাওয়ার পর এ পর্যায়ের কোনো দায়িত্বই থাকতে পারেনা তাঁর ওপর। আর শেষ নবীতো তাঁর জীবদ্দশাতেই ‘খাতামুন্নাবীয়ীন’ ছিলেন। নবীর জীবন শেষ হয়ে গেছে, তার পূর্বেই নব্যুয়তের দায়িত্ব পূর্ণরূপে পালিত হয়ে গেছে। অতঃপর স্বপ্নযোগে শরীয়তের কোনো নতুন বিধান দেয়ার প্রয়োজনই নেই। তাই স্বপ্নযোগে নবী করীম(স) কে দেখলেও এবং তার নিকট হতে কোনো নির্দেশ পেলেও তা পালন করার কোনো দায়িত্ব স্বপ্নদ্রষ্টারও নেই, নেই উম্মতের কোনো লোকেরও। দ্বীন ইসলাম পরিপূর্ণ। এখন বিশ্ব মানবের জন্য তা-ই একমাত্র চূড়ান্ত বিধান। সবকিছু তা থেকেই জানতে হবে, তা থেকেই গ্রহণ করতে হবে, চলতে হবে তাকে অনুসরণ করেই।
শরীয়তে স্বপ্নের যে মর্যাদা দেয়া হয়েছে, তা নিম্নোক্ত হাদীস থেকেই প্রমাণিত। এ পর্যায়ে দুটো হাদীস উল্লেখ করা যেতে পারে। একটি হযরত আবু হুরায়রা(রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ (আরবি)
-নবী করীম(স) বলেছেন, নব্যুয়তের কোনো কিছুই বাকী নেই- সবই শেষ হয়ে গেছে। এখন আছে শুধু-‘সুসংবাদ দাতাসমূহ’। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন-সুসংবাদ দাতাসমূহ বলতে কি বোঝায়? নবী করীম (স) বললেনঃ তা হলো ভালো স্বপ্ন।
দ্বিতীয় হাদীস হলো হযরত আনাস(রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ (আরবি)
প্রথম হাদীস থেকে এতটুকু জানা যায় যে, ভালো স্বপ্ন বান্দার জন্য সুসংবাদ লাভের একটি মাধ্যম মাত্র। আর দ্বিতীয় হাদীস থেকে জানা যায় যে, নব্যুয়তের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ মর্যাদার অধিকারী হলো এই ‘শুভ স্বপ্ন’। তা হলে বাকি পঁয়তাল্লিশ ভাগ কি? তা হলো নব্যুয়তের মাধ্যমে লব্ধ কুরআন ও সুন্নাত।[এ হাদীসে শুভ স্বপ্নকে নব্যুয়তের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ বলা হয়েছে। মুসলিম শরীফে হযরত আবু হুরায়রা(রা) বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছেঃ ‘শুভ স্বপ্ন’ নব্যুয়তের পঁয়তাল্লিশ ভাগের এক ভাগ, ইবনে আমর বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে সত্তর ভাগের এক ভাগ। কাজেই এসব কথা কোনো নির্দিষ্ট জিনিস নয়। দ্বিতীয়, শুভ স্বপ্নকে নব্যুয়তের অংশ বলার মানে এ নয় যে, শুভ স্বপ্নও বুঝি ঠিক নব্যুয়তের মতোই নির্ভূল বিধানকারী জিনিস। এখানে নব্যুয়তের সঙ্গে শুভ স্বপ্নের শুধু সাদৃশ্য দেখানোর জন্যই এ কথা বলা হয়েছে। অন্যথায় শুভ স্বপ্ন কখনো নব্যুয়তের সমান হতে পারেনা।(জুরকানী লিখিত মুয়াত্তার শরাহ, চতূর্থ খন্ড. ৩৫১ পৃ.)]
অতএব এই কুরআন ও সুন্নাহই হলো দ্বীনের আসল ও মূল ভিত্তি। তা-ই বাস্তব জিনিস, তার মুকাবিলায় স্বপ্নকে পেশ করা কল্পনা বিলাসী লোকদেরই কাজ। যারা বাস্তব জীবনের ব্যাপারগুলোকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ইচ্ছুক, তাদের কর্তব্য হলো স্বপ্নের পেছনে না ছুটে কুরআন ও সুন্নাহকে ভিত্তি ধরে অগ্রসর হওয়া। যারা কুরআন-হাদীসের বাস্তব বিধানকে ভিত্তি করে কাজ করেনা, তা থেকে গ্রহণ করেনা জীবন পথের নির্দেশ ও ফয়সালা; বরং যারা স্বপ্নের ভিত্তিতেই সব বিষয়ে ফয়সালা গ্রহণ করে, তারা আসলেই ঈমানদার নয়, ঈমানদার নয় আল্লাহর কুরআন ও রাসূলের সুন্নাতের প্রতি। অতএব তারা বিদয়াতপন্থী, বিদয়াতী লোক।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/289/49
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।