hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সুন্নাত ও বিদয়াত

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৪০
কুরআনের আয়াত দিয়ে ধোঁকাবাজি
আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো সাহায্য চাওয়া জায়েয নয়; বরং তা শিরক। পূর্বোক্ত আলোচনা থেকে তা কুরআন হাদীস ও ফিকাহর অকাট্য দলীলের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এই আলোচনার শেষ ভাগে পীর পোরস্ত আলিমদের তিনটি দলীল সম্পর্কে সংক্ষেপে দুটি কথা না বললে ভুল অপনোদন এবং বাতিলের প্রতিবাদ সম্পূর্ণ হবেনা।

উক্ত আলিম সাহেবদের আল্লাহ ছাড়া অন্য শক্তির নিকট-জীবিত বা মৃত অলী-আল্লাহর নিকট ইস্তেমদাদ ও সাহায্য চাওয়া জায়েয। আর তা প্রমাণের জন্য তারা কুরআন মজীদ থেকে তিনটি আয়াত পেশ করে থাকেন। প্রথম আয়াত হলো সূরা ছফ এর।

مَنْ أَنصَارِي إِلَى اللَّهِ ۖ قَالَ الْحَوَارِيُّونَ نَحْنُ أَنصَارُ اللَّهِ ۖ

-হযরত ঈসা (আ) বললেনঃ আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে আমার সহায়ক কে হবে? শিষ্যগণ বললো-আমরাই আল্লাহর কাজে আপনার সহায়ক। (আছ ছফঃ১৪)

আর দ্বিতীয় আয়াতটি হলো সূরা আল কাহাফ এর।

قَالَ مَا مَكَّنِّي فِيهِ رَبِّي خَيْرٌ فَأَعِينُونِي بِقُوَّةٍ أَجْعَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ رَدْمًا [ ١٨ : ٩٥ ]

-তোমাদের আর্থিক সাহায্য দেয়ার জরুরত নেই, কেননা আমার প্রভু আমাকে যে ধন সম্পদ দান করেছেন তা-ই যথেষ্ট; তবে তোমরা আমাকে দৈহিক সাহায্য করতে পার। তাহলে আমি তোমাদের ও তাদের মাঝে এক দৃঢ় প্রাচীর নির্মাণ করে দেবো।(আল কাহাফঃ৯৫)

আর তৃতীয় আয়াত হলো সূরা ইউসুফ এর। আয়াতটি এইঃ

اذْكُرْنِي عِندَ رَبِّكَ فَأَنسَاهُ الشَّيْطَانُ ذِكْرَ رَبِّهِ فَلَبِثَ فِي السِّجْنِ بِضْعَ سِنِينَ [ ١٢ : ٤٢ ]

–তোমার প্রভুর(আজিজ মিসর) নিকট আমার কথা উল্লেখ করবে। কিন্তু শয়তান তাকে তার প্রভুর নিকট তার কথার উল্লেখ করতে ভুলিয়ে দিলো। ফলে ইউসুফ(আ)আরও কয়েক বৎসর কারাগারেই রইলো।

এই তিনটি আয়াত পেশ করে পীর-পোরস্ত আলিম নামধারী লোকেরা বলতে চান যে, যেভাবে হযরত ঈসা(আ)হাওয়ারী লোকদের নিকট সাহায্য চেয়েছিলেন, যেভাবে জুলকারনাইন জনগণের কাছে বলেছিলেন বাঁধ বাধার ব্যাপারে তোমরা শক্তি দিয়ে আমাকে সাহায্য করো এবং যেভাবে হযরত ইউসুফ(আ) কারাগার থেকে মুক্তিলাভের জন্য মুক্তিপ্রাপ্ত সাথীকে বাদশাহর নিকট সুপারিশ করতে বলেছিলেন, অনুরূপভাবে কোনো বিপদ থেকে উদ্ধার পাবার জন্যে কিংবা বৈষয়িক মুক্তি লাভের আশায় যে কোনো জীবিত বা মৃত অলী আল্লাহর নিকট দো’আ প্রার্থনা করা যায় তা সম্পূর্ণ জায়েয। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে কথাটি প্রমাণ করার জন্য কুরআন মজীদের উক্ত তিনটি আয়াত পেশ করা হয়, তা এর কোনো একটি আয়াত থেকেও প্রমাণিত হয়না। প্রত্যেকটি আয়াতকে ভিত্তি করে বিচার বিবেচনা করলেই আমার এ কথার সত্যতা প্রমাণিত হবে। মনে রাখা আবশ্যক যে, আলোচনা হচ্ছে ‘ইস্তেমদাদে রূহানী’ ‘আধ্যাত্মিক উপায়ে সাহায্য পাওয়ার জন্য কারো নিকট দো’আ করা’ সম্পর্কে। আহলে সুন্নাত আল জামা’আতের আকীদা হলো এই যে, এ ধরনের সাহায্য প্রার্থনা একমাত্র আল্লাহরই নিকট করা যেতে পারে। কেননা এ ধরনের সাহায্য দানের ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া আর কারো নেই-থাকতে পারেনা। আর আল্লাহ তা’আলার সুস্পষ্ট নির্দেশ এই যে, এ ধরনের অবস্থায় কেবল আল্লাহর নিকট সাহায্য চাইতে হবে। তওহীদী আকীদাও তাই। অন্য কারো নিকট সাহায্য চাইলে তা আকীদার দিক দিয়ে হবে শিরক এবং তওহীদী আকীদায় তাই হবে বিদয়াত। এ প্রেক্ষিতে আয়াত তিনটি যাচাই করলে দেখা যাবে যে, এর কোনোটিতেই এ পর্যায়ের সাহায্য চাওয়ার কথা নেই। সূরা ছফ এর প্রথমোক্ত আয়াতে হযরত ঈসা(আ) এর যে সাহায্য চাওয়ার কথা বলা হয়েছে ‘আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে আমার সহায়ক কে হবে?’ এ কথা বলে, সে সাহায্য তো কোনো ব্যক্তির বিপদে পড়ে চাওয়া সাহায্য নয়। হযরত ঈসা(আ) কোনো বিপদে পড়ে হাওয়াকারীদের সাহায্য চাননি। সাহায্য চাননি নিজের কোনো কাজের ব্যাপারে। কোনো আধ্যাত্মিক উপায়ে সাহায্য করার জন্যে ফরিয়াদ করা হয়নি এখানে। কুরআনের আয়াত مَنْ أَنصَارِي إِلَى اللَّهِ ‘আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে কে আমার সহায়ক হবে’ কথাটিই প্রমাণ করে সে সাহায্য চাওয়ার মূল লক্ষ্য হলো আল্লাহর দ্বীন প্রচার ও কায়েম করার ব্যাপারে কাজ করার জন্য এগিয়ে আসতে তাদের আহবান জানানো হয়েছে মাত্র। কেননা দ্বীন কায়েমের জন্য চেষ্টা করা কেবলমাত্র ঈসা(আ) এরই দায়িত্ব ছিলনা, অন্য সব মুসলমানেরও দায়িত্ব ছিল। আয়াতটির সূচনাইতো হয়েছে আল্লাহর সাহায্যকারী হওয়ার নির্দেশ দিয়ে।

বলা হয়েছেঃ হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও।

এখন বাস্তবভাবে আল্লাহর সাহায্য কাজে আহবান করাতো নবীরই দায়িত্ব। হযরত ঈসা(আ) তো সে দায়িত্বই পালন করেছেন এই সাহায্য চেয়ে। এ কারণেই আল্লামা আলূসী সহ সব মু’তাবার তাফসীরেই এই আয়াতের তাফসীর করা হয়েছে এভাবেঃ

অর্থাৎ আল্লাহর সাহায্যের উদ্দেশ্য নিয়ে কে আমার সৈন্য হতে রাজি আছে? এতো কোনো আধ্যাত্মিক উপায়ে সাহায্য করতে বলার কথা নয়। এ তো হচ্ছে নবীর নব্যুয়তী দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে সাহায্য করার আহবান। এ কাজ নবীর নিজের কোনো কাজ নয়। এ হচ্ছে সোজাসুজি ও সরাসরি আল্লাহর সাহায্যের কাজ। এর বড় প্রমাণ রয়েছে খোদ কুরআনের এ সূরাতেই উল্লিখিত তাদের জবাবে।তারা অগ্রসর হয়ে এসেছে ঈসা(আ) এর সাহায্যে নয়, আল্লাহর সাহায্য করার কাজে। তাই তারা বলেছেন - نَحْنُ أَنصَارُ اللَّهِ –আমরাই আল্লাহর সাহায্যকারী।আল্লামা আলুসী এখানেই লিখেছেনঃ আমার সাহায্য বলার মানে দুই শরীকের কাজকে একজনের পক্ষে অপরজনের কাজ বলা। আর যখন, এরা দুপক্ষই সমানভাবে আল্লাহর সাহায্য কাজে শরীক হয়েছে, তখন উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হলো এবং এ কথা বলাকে সহীহ সাব্যস্ত করে দিলো।

অতএব স্পষ্ট হয়ে গেল যে, হযরত ঈসা(আ) কোনো অলৌকিক কাজ করার ব্যাপারে কোনো মৃত ব্যক্তির নিকট সাহায্য চাননি। তাঁর কথার সার হলোঃ বাঁধ বাঁধতে হবে, টাকা পয়সা আমার আছে। তোমরা বাস্তবভাবে সাহায্য করে আমার এ কাজে সাহায্য করো। এ হচ্ছে বৈষয়িক কাজে নিতান্ত বাস্তবভাবে কাজের সহযোগিতা করতে বলা। আর এ জগততো বাস্তব কার্য্কারণের জগত। এ জগতে এ ধরনের পারস্পরিক সাহায্য সহযোগিতা চাওয়া বা পাওয়া কিছুতেই কোনো আধ্যাত্মিক সাহায্যের ব্যাপার নয়।এ হলো মানুষের সামাজিক জীবনের জন্য অপরিহার্য্ ব্যাপার, যা সম্পূর্ণ জায়েয। তাই ইমাম ইবনে কাসীর এ আয়াতের তাফসীরে লিখেছেনঃ

-“অর্থাৎ আল্লাহ আমাকে রাজত্ব ও আধিপত্য যা দিয়েছেন, তা তোমাদের জন্য সব কিছুই থেকে উত্তম। কিন্তু তোমরা আমাকে শক্তি দিয়ে সাহায্য করো অর্থাৎ কাজ করে ও নির্মাণ কাজের জিনিসপত্র দিয়ে।”

আর তৃতীয় আয়াতটিও একটি বৈষয়িক তদবীর সংক্রান্ত ব্যাপার। হযরত ইউসুফ(আ) দীর্ঘদিন বিনাবিচারে আটক হয়ে পড়েছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন, বাদশাহ হয়তো তাঁর কথা ভুলেই গেছে। অতএব তিনি সহবন্দীর রেহাই পেয়ে জেল থেকে চলে যাওয়ার সময় বলে দিলেন যে, আমার কথা তোমার প্রভুর নিকট বলবে। এও যদি কোনো আধ্যাত্মিক সাহায্য চাওয়ার পর্যায়ের কাজ হয়ে থাকে তা হলে তো বলতে হবে যে, নবীও অ-নবীর নিকট অলৌকিক উপায়ে সাহায্য চাইতে পারেন। কিন্তু তা যে একজন নবীর পক্ষে কতখানি অপমানকর তা বলাই বাহুল্য।(এই পর্যায়ে ইমাম ইবনে কাসীর একটি হাদীস উদ্ধৃতি করেছিলেন। হাদীসটি এইঃ নবী করীম(স) বলেছেনঃ হযরত ইউসুফ(আ) এই যে কথাটি বলেছিলেন, অর্থাৎ তিনি যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নিকট মুক্তি কামনা করেছিলেন, তা না করলে তিনি যতদিন জেলে ছিলেন ততদিন থাকতেননা। পরে ইবনে কাসীর লিখেছেন- এ হাদীসটি সাংঘাতিকভাবে যয়ীফ, অগ্রহণযোগ্য।) সবচেয়ে বড় কথা, একজন নবী অলৌকিক বা আধ্যাত্মিক উপায়ে(?) সাহায্য চাইলেন, আর শয়তান তা ভুলিয়ে দিলো, তার মুক্তির প্রয়াসকে ব্যর্থ করে দিলো! এরূপ কথা পীর-পোরস্তারাই বিশ্বাস করতে পারে, কোনো তওহীদবাদী আহলে সুন্নাত ব্যক্তি এরূপ বিশ্বাসকে মনের দূরতম কোণেও স্থান দিতে প্রস্তুত হতে পারেনা।

মোটকথা, এ কয়টি আয়াত দিয়ে পীর-পোরস্তরা যা প্রমাণ করতে চাইছে তা আদৌ প্রমাণিত হয়না। হয় শুধু ধোঁকাবাজি করা।

এই পর্যায়ে কুরআনের নিম্নোদ্ধৃত আয়াতটি আমাদের অবশ্যই সবসময় স্মরণে রাখতে হবে।

(আরবি)

-আল্লাহ ছাড়া আর যারা যারা আছে তারা তো তোমাদের কোনো উপকারও করতে পারেনা, ক্ষতিও না-তাই তাকে আদৌ ডাকবেনা। যদি ডাকো তাহলে তুমি জালিমদের মধ্যে গণ্য হয়ে যাবে।

মানুষ কাউকে ডাকে তাঁর কাছ হতে উপকার পাওয়ার আশায় অথবা কোনো ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য। আর উপকার ও ক্ষতি যে করতে পারেনা তাকে ডেকে কি লাভ হবে। তা করার নিরংকুশ ক্ষমতা তো একমাত্র আল্লাহর, অতএব ডাকতে হবে সর্বাবস্থায়, সব কিছুর জন্য একমাত্র তাঁকেই। পানাহ বা আশ্রয় চাওয়া কেবল তাঁরই নিকট সম্ভব। কেননা পানাহ বা আশ্রয় দেয়ার একবিন্দু ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া আর কারোরই নেই। তাই আল্লাহ নিজেই নির্দেশ দিয়েছেন-পানাহ বা আশ্রয় চাও কেবল সেই এক আল্লাহর নিকট।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন