hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সুন্নাত ও বিদয়াত

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৩৮
মৃত লোকদের নিকট সাহায্য চাওয়া বিদয়াত
যারা মরে গেছে-তাঁরা অলী-ই হোন, আর নবী-ই হউন তাদের নিকট জীবিত লোকদের কোনোরূপ সাহায্য প্রার্থনা করা- বিদয়াতীদের ভাষায় যাদের বলা হয় ইস্তেমদাদে রূহানী-সুস্পষ্ট বিদয়াত।

প্রকৃতপক্ষে সাহায্য বা ক্ষতি কোনো কিছু করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারোরই নেই। এজন্যই কুরআন মজীদে আল্লাহ তা‘আলা কেবল তাঁরই নিকট সাহায্য চাওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন নানাভাবে। সূরায়ে ফাতিহা যা মূলত একটি দোয়ারই সূরা, তাতে বন্দেগী যেমন একমাত্র আল্লাহরই করার কখা বলা হয়েছে, তেমনি সাহায্যও একমাত্র আল্লাহরই কাছে চাইতে শেখান হয়েছে। বলা হয়েছেঃ (আরবি)

-হে আল্লাহ! আমরা কেবল তোমারই বন্দেগী করি, কেবল তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি।

এ আয়াত যেমন বন্দেগী, দাসত্ব ও আইন পালনকে কেবলমাত্র আল্লাহর সাথে খাস করে দেয়ার নির্দেশ দেয়, তেমনি যাবতীয় বিষয়ে ও ব্যাপারে সব রকমের সাহায্য প্রার্থনাও কেবল আল্লাহরই নিকট করা যেতে পারে কিংবা করা উচিত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ইমাম রাযীর ভাষায়- হে আল্লাহ, আর কারো নিকটই আমি কোনো প্রকারের সাহায্য চাইনা। কেননা তুমি ছাড়া আর যার কাছেই সাহায্য চাইব, তার পক্ষে আমার কোনোরূপ সাহায্য করা আদৌ সম্ভব নয়-তোমার সাহায্য ছাড়া। তাহলে তোমার সাহায্য ছাড়া অপর কারো পক্ষেই আমার কোনোরূপ সাহায্য করা যখন আদৌ সম্ভব নয়, তখন আমি তোমাকে ছাড়া অপর কারো নিকট সাহায্যই চাইবোই বা কেন? মাঝখানের এই মধ্যস্থতা মেনে নেয়ার এবং তোমাকে বাদ দিয়ে তার নিকট ধর্ণা দেয়ার কিই বা দরকার থাকতে পারে?

তাছাড়া নবী করীম(স) এর বাণী এ পর্যায়ে আমাদের যে পথ নির্দেশ করে তাওতো এই যে, সাহায্য কেবল আল্লাহরই নিকট চাইতে হবে। অন্য কারো নিকট নয়। নবী করীম(স) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রা) কে লক্ষ্য করে বলেছিলেন-

তুমি যদি কোনো প্রার্থনা করতে চাও তো, আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করো। আর যদি তুমি কোনো সাহায্যই চাও, তাহলে সাহায্য চাইবে আল্লাহর নিকট।

আর আসল ব্যাপারই যখন এই, তখন যাবতীয় ব্যাপারে কেবল আল্লাহরই নিকট সাহায্য চাওয়া কর্তব্য। অপর কারো নিকট সাহায্য চাওয়াতো চরম বোকামী; চূড়ান্ত নির্বুদ্ধিতা, নীচতা ও হীনতা।

বিশেষ করে মরে যাওয়া লোকদের নিকট সাহায্য চাওয়াতো আরো বেশি মারাত্মক। দুনিয়ায় জীবিত থাকা অবস্থায় বৈষয়িক বিষয়ে সাহায্য চাওয়ার তো একটা মূল্য আছে। আছে বৈষয়িক তাৎপর্য্, তা নিষিদ্ধও নয়; কিন্তু মরে যাওয়া লোকদের নিকট সাহায্য চাওয়ার কি অর্থ হতে পারে। কবরস্থ লোকেরা কি দুনিয়ার লোকদের ফরিয়াদ শুনতে পায়, শুনতে পেলেও তাদের কিছু করার ক্ষমতা আছে কি? তারা যে শুনতে পায়না, তাতো কুরআনের ঘোষণা থেকেই প্রমাণিত। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীকে বলেছেনঃ (আরবি)

-তুমি মরে যাওয়া লোকদের কোনো কথা শোনাতে পারবেনা।

অন্যত্র বলেছেনঃ (আরবি)

-নিশ্চয়ই তুমি হে নবী! মরে যাওয়া লোকদের কোনো কথা শোনাতে পারবেনা।

মরে যাওয়া লোকদের সম্পর্কে যদি এই ধারণা হয় যে, তারা মরে যাওয়ার পর এতদূর ক্ষমতাশালী থাকে যে, সেখানেও তারা যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারে; আর এসব কিছুই করতে পারে অলৌকিকভাবে; তাহলে এতে তাকে আল্লাহর সমতুল্য-আল্লাহর সমান-ক্ষমতাশালী হওয়ার ধারণা করার শামিল। আর এ ধারণা যে শিরক তাতে আর কোনো সন্দেহ থাকতে পারেনা।

ইমাম বগভী লিখেছেনঃ সাহায্য প্রার্থনাতো এক প্রকারের ইবাদত। ইবাদত বলা হয় বিনয় ও হীনতা জ্ঞান সহকারে করাকে। আর বান্দাকে বান্দা বলাই হয় আল্লাহর মুকাবিলায় তার এই বিনয়, বাধ্যতা ও হীনতার কারণে।

-যে লোক নবী রাসূল ও নেককার লোকদের কবর যিয়ারত করতে গিয়ে তাদের কবরে গিয়ে নামায পড়বে এবং সেখানে বসে দো’আ করবে, কবরস্থ লোকদের কাছে নিজেদের প্রয়োজন পূরণের জন্য প্রার্থনা করবে-মুসলিম আলিমদের মধ্যে কারো মতেই এ কাজ আদৌ জায়েয নয়। কেননা ইবাদত, প্রয়োজন পূরণের জন্য প্রার্থনা এবং সাহায্য চাওয়া এসব এক আল্লাহরই হক (কেবল তাঁরই নিকট চাওয়া যেতে পারে, অন্য কারো নিকট নয়)।

নবী করীম(স)এর এ পর্যায়েরই এক দীর্ঘ হাদীসের শেষাংশে বলা হয়েছেঃ (আরবি)

-জেনে রাখো, সমস্ত মানুষও যদি একত্রিত হয়ে তোমার কোনো উপকার করতে চায়, তবে তারা তা করতে পারবেনা ততটুকু ছাড়া, যা আল্লাহ নির্দিষ্ট করে তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। অনুরূপভাবে সমস্ত মানুষও যদি তোমার একবিন্দু ক্ষতি করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়, তবুও তারা কিছুই করতে পারবেনা কেবল ততটুকুই ছাড়া, যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। বস্তুত কলমতো তুলে নেয়া হয়েছে, কাগজের কালিও শুকিয়ে গেছে।

অর্থাৎ আল্লাহর বিধান মতো যা হওয়ার তা হবেই এবং শুধু তা-ই হবে, অন্য কিছু হবেনা, হতে পারেনা। কারো তেমন কিছু করার একবিন্দু ক্ষমতা নেই। কাজেই আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নিকট-সে মৃত নবী রাসূল আর অলী পীর গাওস কুতুব-ই হোকনা কেন- কোনো কিছু চাওয়ার কোনো অর্থই হতে পারেনা। বরং তা হবে সুস্পষ্ট শিরক-শিরক এর বিদয়াত।

মক্কা শরীফের মুফতী আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ মীর গনী আল হানাফীর নিকট নিম্নোক্ত বিষয়ে ফতোয়া চাওয়া হয়ঃ

মরে যাওয়া লোকদের নিকট মান সম্মান লাভ, রিযিকের প্রাচূর্য্ ও সন্তান লাভেল জন্য জীবিত লোকদের সাহায্য চাওয়া সম্পর্কে আলিম সমাজের কি বক্তব্য? কবরস্থানে গিয়ে এ কথা বলাঃ ‘হে কবরস্থ লোকেরা, তোমরা আমাদের জন্য আল্লাহর নিকট দো’আ করো; আমাদের গরিবী দূর করার, রিযিকের প্রাচূর্য্, বেশি সন্তান হওয়া, আমাদের রোগীদের নিরাময়তা এবং উভয় জগতে আমাদের কল্যাণ হওয়ার জন্য। কেননা তোমরা ‘সলফে সালেহীন’, তোমাদের দো’আ আল্লাহর নিকট কবুল হয়।” মৃত ব্যক্তিদের নিকট এরূপভাবে সাহায্য চাওয়া কি জায়েয? কুরআন, সুন্নাহ ও মুজতাহিদদের মতের ভিত্তিতে এর জবাব দিন।

জবাবে মুফতি সাহেব যে ফতোয়া দেন, তার সারকথা হলোঃ নবী অলীদের নিকট ফরিয়াদ করা যায়; কিন্তু প্রশ্নের উল্লেখিত বিষয় ও স্থানে তা করা শরীয়তে বিধিবদ্ধ নয়। এই ফতোয়ায় তদানীন্তন বহু সংখ্যক আলেম সম্মতিসূচক স্বাক্ষর দেন।

মাওলানা রশীদ আহমদ গংগুহী(রহ) অপর এক প্রশ্নের জওয়াবে লিখেছেনঃ শায়খ আবদুল কাদের জিলানী(রহ) গায়েব জানেন এবং স্বতন্ত্র ও স্বশক্তিতে দুনিয়ার ওপর তাশাররূফ(ক্ষমতা প্রয়োগ)করতে পারেন বলে বিশ্বাস করলে সুস্পষ্ট শিরক হবে। এ পর্যায়ে তিনি প্রথমত উল্লেখ করেছেন কুরআনের আয়াত। (আরবি)

-গায়েব জগতের চাবিসমূহ আল্লাহরই হাতে নিবদ্ধ, তা তিনি ছাড়া আর কেউ জানেননা।

পরে বাজ্জাজীয়া প্রভৃতি ফতোয়ার কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেনঃ

মাশায়িখ-তথা পীর বুযুর্গদের রূহ হাযির হয় এবং তারা সব কিছু জানে বলে যে বিশ্বাস করবে সে কাফির হয়ে যাবে।

উক্ত কিতাবে এ কথাও লিখিত হয়েছে-যে ব্যক্তি মনে করে মৃত ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া নিজেই যাবতীয় বিষয়ে ও ব্যাপারে কর্তৃত্ব চালায়, আর এরূপ আকীদা ও বিশ্বাস যার হবে, সে কাফির হয়ে যাবে। (বাহরুর রায়েখ গ্রন্থেও এমন উল্লেখ রয়েছে, মিয়াত মাসায়েল গ্রন্থ)।

মওলানা শাহ মুহাম্মদ ইসহাকের ছাত্র মওলানা নওয়াব কুতুবুদ্দীন খান কবরস্থ লোকদের নিকট সাহায্য চাওয়া জায়েয কিনা এমন এরূপ এক প্রশ্নের জবাবে লিখেছেনঃ

-কবরস্থ লোকদের নিকট সাহায্য চাওয়া, তা যে প্রকারেরই হোকনা কেন জায়েয নয়। শায়খ আবদুল হক মিশকাতের (আরবি) শরাহ এ লিখেছেনঃ নবী ও আম্বিায়া ছাড়া কবরস্থ অন্য লোকদের নিকট কোনোরূপ সাহায্য চাওয়া-ইস্তেমদাদে রূহানী করা-বহুসংখ্যক ফকীহ নাজায়েয বলেছেন। তাতা বলেছেনঃ মৃতদের জন্য দো’আ করা, তাদের জন্যে আল্লাহর নিকট মাগফেরাত চাওয়া, দো’আ ও কুরআন তিলাওয়াত করে তাদের কোনোরূপ ফায়দা পৌছানো ছাড়া কবর যিয়ারতে আর কোনো কিছুই করণীয় নেই।

এ পর্যায়ে একটি ধোঁকা হচ্ছে এই যে, আল্লাহর নামে আল্লাহর ওয়াস্তে কোনো অলীর রূহের নিকট কিছু প্রার্থনা করাকে জায়েয মনে করা হচ্ছে এবং এতে কোনো দোষ আছে বলে মনে করা হচ্ছেনা। মনে করা হচ্ছে যে, তাকে শুধু অসীলা হিসেবেই গ্রহণ করা হচ্ছে আর এরূপ অসীলা গ্রহণে কোনো দোষ নেই।

কিন্তু এ বাস্তবিকই একটি ধোঁকা যার ফলে অনেক নিষ্ঠাবান তওহীদবাদী মুসলমানও অজ্ঞাতসারে পরিষ্কার শিরক এর মধ্যে লিপ্ত হয়ে পড়ে। কোনো কিছু প্রার্থনা করার সময় আল্লাহ ছাড়া আর কারো নাম করা হলে হয় তার অর্থ এই হবে যে, আসলে চাওয়া হচ্ছে অন্য ব্যক্তির নিকট- আল্লাহর নিকট চাইলে আল্লাহ তা দিবেন কিনা কিংবা শুধু আল্লাহর তা দেয়ার ক্ষমতা আছে কিনা। আর এ দু’টো দিক দিয়েই ব্যাপারটি পুরো শিরক এর মধ্যে গণ্য হয়ে যায়।

শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী এ পর্যায়ে লিখেছেনঃ

-শিরক হওয়ার ধারণা হয় যে সব ক্ষেত্রে, তার মধ্যে এ ও একটি যে, লোকেরা আল্লাহ ছাড়া অপরের নিকট রোগীর রোগ সারা ও গরীবকে ধন দেয়া প্রভৃতি প্রয়োজন পূরণের জন্য দো’আ করে, তাদের জন্য মানত মানে, এসব মানত হতে নিজেদের কামনা পূরণ হওয়ার আশা পোষণ করে তাদের নামে তিলাওয়াত করে বরকত লাভের আশায়। এ জন্যে আল্লাহ লোকদের ওপর ওয়াযিব করে দিয়েছেন যে, তারা নামাযে বলবেঃ “হে আল্লাহ! আমরা কেবল তোমারই বন্দেগী করি, কেবল তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি।” আল্লাহ আরো বলেছেনঃ আল্লাহ ছাড়া আর কাউকেই ডাকবেনা। এ ডাকা নিষিদ্ধ হওয়ার অর্থ শুধু ইবাদত করা থেকে নিষিদ্ধ নয়-যা কোনো কোনো তাফসীরকারক মনে করেন। বরং এর অর্থ হচ্ছে অন্য কারো নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা নিষেধ।

কেননা আল্লাহ অপর আয়াতে বলেছেনঃ “কেবল আল্লাহকেই ডাকবে। ফলে তোমরা যা চাও, তিনি তা তোমাদের জন্য খুলে দিবেন।”

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন