মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
এ ছিল রাসূলে করীম(স) এর আগাম সাবধান বাণী। তাঁর উম্মতের উপর যেসব আদর্শিক বিপদ ও সংঘাত আসতে পারে বলে রাসূলে করীম(স)মনে করেছেন, সেগুলোর উল্লেখ করে তিনি আগেই সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন যেন উম্মতের জনগণ সে বিষয়ে হুঁশিয়ার হয়ে থাকে এবং নিজেদের ঈমান-আকীদায় এবং আমলে ও আখলাকে সে ধরনের কোনো জিনিস-ই প্রবেশ করতে না পারে। এ পর্যায়ের আর একটি হাদীস হচ্ছে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ(রা) কর্তৃক বর্ণিত।
রাসূলে করীম(স) বলেছেনঃ (আরবি)
– আমার পূর্বে প্রেরিত প্রত্যেক নবীর-ই তাঁর উম্মতের মধ্য থেকে হাওয়ারীগণ হয়েছে এবং এমন সব সঙ্গী সাথী ও হয়েছে, যারা সে নবীর সুন্নাত গ্রহণ ও ধারণ করেছেন। আর তাঁর আদেশ ও নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করেছেন। পরে সে উম্মতের অধিকারী হয়েছে এমন সব লোক, যারা বলতো এমন সব কথা যা তারা করতোনা এবং করতো এমন সব কাজ, যা করতে তাদের আদৌ আদেশ করা হয়নি। এরূপ অবস্থায় এ লোকদের বিরুদ্ধে যারা জিহাদ করবে নিজেদের শক্তি দ্বারা, তারা মুমিন আর যারা জিহাদ করবে নিজেদের মুখের ভাষা ও সাহিত্য দ্বারা তারাও মুমিন; আর যারা জিহাদ করবে দিল দ্বারা তারাও মুমিন। কিন্তু অতঃপর একবিন্দু ঈমাণের অস্তিত্ব আছে বলে মনে করা যেতে পারেনা।
এ দীর্ঘ হাদীসে পরবর্তীকালে যেসব উত্তরাধিকারী সম্পর্কে সাবধান করা হয়েছে, তারাই হচ্ছে আহলে বিদয়াত। কেননা তাদের কাজ ও কথায় মিলন নেই এবং করে এমন কাজ, যা করতে তাদের বলা হয়নি। অথচ ইসলামী শরীয়তে এমন কাজকে দ্বীন কাজ হিসেবে করার কাউকে-ই অনুমতি দেয়া যেতে পারেনা। তাহলে রাসূলের সুন্নাতের কোনো মূল্যই থাকবেনা কারো কাছে, থাকবেনা কোনো গুরুত্ব। এ জন্যে এদের বিরুদ্ধেই জিহাদ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অতএব বিদয়াতীদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তিরই কর্তব্য। যে তা করবেনা, এ হাদীস অনুযায়ী তার মধ্যে ঈমানের লেশমাত্র নেই।
ইসলামের জিহাদ ঘোষণার নির্দেশ মূলত কূফর ও শিরকের বিরুদ্ধে। কিন্তু এখানে যে বিদয়াতের বিরুদ্ধে জিহাদ করার গুরুত্ব এত জোরালো ভাষায় বলা হলো, তার কারণ এই যে, বিদয়াত সুস্পষ্ট কুফর ও প্রকাশ্য শিরক না হলেও তা যে কুফর ও শিরক এ সূচনা, কুফর ও শিরক এর উৎসে বীজ, তাতে সন্দেহ নেই।
ইসলামী সমাজে একবার বিদয়াত দেখা দিলে ও ক্ষেত্র তৈরি করে নিতে পারলে অনতিবিলম্বে তা-ই যে আসল শিরক ও কুফর-এর দিকে টেনে নিয়ে যাবে তাতে কোনোই সন্দেহ নেই। এ কারণেই ইসলামী সমাজে কুফর ও শির্ক এর এই বীজকে অংকুরেই বিনষ্ট করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং এ জন্যেই বিদয়াত ও বিদয়াতপন্থীদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করার ওপর ঈমানের নির্ভরশীর হওয়ার কথা বলা হয়েছে। বস্তুত দ্বীন ইসলামে যে কাজ করতে বলা হয়নি সে কাজকে দ্বীনি কাজ মনে করে করাই হচ্ছে এক প্রকার কুফরী এবং এতেই নিহীত রয়েছে শিরক এর ভাবধারা। এ পর্যায়ে নিম্নোক্ত হাদীস কয়টিও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
নবী করীম(স) ইরশাদ করেছেনঃ
(আরবি)
– যে লোক আমার পরে মরে যাওয়া কোনো সুন্নাতকে পুনরুজ্জীবিত করবে, তার জন্যে সে পরিমাণ সওয়াব রয়েছে যে পরিমাণ সওয়াব সে সুন্নাত অনুযায়ী আমল করে পাও্য়া যাবে; কিন্তু আমলকারীর সওয়াবে বিন্দুমাত্র কম করা হবেনা। পক্ষান্তরে যে লোক কোনো গোমরাহীর বিদয়াতকে চালু করবে-যে বিদয়াতে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল মোটেই রাজি নহেন-তার গুনাহ হবে সে পরিমাণ, যে পরিমাণ গুনাহ তদনুযায়ী আমল করলে হবে; কিন্তু আমলকারীর গুনাহ হতে এক বিন্দু কম করা হবেনা।
এখানে মরে যাওয়া সুন্নাতকে পুণরায় চালু করার সওয়াব ও গোমরাহীর বিদয়াত প্রবর্তন করার গুনাহ সম্বন্ধে যা কিছু বলা হয়েছে, তা থেকে মুসলিম সমাজকে সুরক্ষিত রাখা এবং সমাজে সুন্নাতকে চালু ও প্রতিষ্ঠিত করা- তাকে মরে যেতে না দেয়া ও বিদয়াতকে কোনোক্রমেই চালু হতে না দেয়ার জন্যে উদ্বুদ্ধ করাই এ হাদীসের মূল লক্ষ্য।
নবী করীম(স) বলেছেনঃ
(আরবি)
– দ্বীন ইসলাম শুরুতে যেমন অপরিচিত ও প্রভাবহীন ছিল, তেমনি অবস্থা পরেও দেখা যাবে। এই সময়কার এই অপরিচিত লোকদের জন্য সুসংবাদ। আর এই অপরিচিত লোক হচ্ছে তারা, যারা আমার পরে আমার সুন্নাতকে বিপর্যস্ত করার যাবতীয় কাজকে নির্মূল করে সুন্নাতকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে চেষ্টিত হবে। (তিরমিযী)।
মুসলিম সমাজে যদি সাধারণভাবে সুন্নাত প্রতিষ্ঠিত না থাকে, বিদয়াত যদি মুসলিম সমাজকে গ্রাস করে ফেলে তাহলে প্রকৃত দ্বীন ইসলাম সেখানে এক অপরিচিত জিনিসে পরিণত হবে এবং প্রকৃত ইসলাম পালনকারী লোকগণ-যাও বা অবশিষ্ট থাকে- তারা সমাজে সম্পূর্ণ অপরিচিত ও প্রভাবহীন হয়ে পড়ে। সমাজের উপর মাতব্বরী ও কর্তৃত্ব হয় বিদয়াতী ও বিদয়াতপন্থী লোকদের। এরূপ অবস্থায় যারাই সুন্নাতকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে দ্বীনের দৃষ্টিতে সমাজকে সুস্থ করে গড়ে তুলতে চেষ্টিত হয়, তাদের জন্য আল্লাহ ও আল্লাহ্র রাসূলের তরফ হতে সুসংবাদ শুনান হয়েছে। কেননা তারা বাস্তবিক মজবুত ঈমানের ধারক।
বস্তুত সুন্নাত যখন সমাজে ম্লান ও স্তিমিত হয়ে আসে এবং বিদয়াতের জুলমাত পুঞ্জীভূত হয়ে গ্রাস করে ফেলে সমস্ত সমাজকে, তখন ঈমানদার লোকদের একমাত্র কাজ হলো বিদয়াতকে মিটিয়ে সুন্নাতকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সংগ্রাম করা। কিন্তু তখনও যারা বিদয়াত ও বিদয়াতপন্থীদের সম্মান দেখায়, তারা ইসলামের সাথে করে চরম দুশমনি।
রাসূলে করীম(স) ইরশাদ করেছেনঃ
(আরবি)
– যে লোক কোনো বিদয়াতী বা বিদয়াতপন্থীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলো, সে তো ইসলামকে ধ্বংস করায় সাহায্য করলো।
কেননা বিদয়াত পন্থী ব্যক্তির ভূমিকা ইসলামের বিপরীত। সে তো ইসলামকে নির্মূল করার ব্রতেই লেগে আছে নিরন্তর। আর এরূপ অবস্থায় তার প্রতি সম্মান দেখানো বা শ্রদ্ধা প্রকাশ করার অর্থ এই দাঁড়ায় যে, সে লোক বিদয়াতীর কাজকে সমর্থন করে এবং বিদয়াতকে পছন্দ করে। এতে করে বিদয়াতী ও বিদয়াতপন্থী ব্যক্তির মনে ইসলামকে ধ্বংস করার ব্যাপারে অধিক সাহস ও হিম্মত হবে, সে হবে নির্ভীক, দুঃসাহসী। আর এ জন্যেই এ কাজ ইসলামকে ধ্বংস করার ব্যাপারে সাহায্য করে বলে রাসূলে করীম(স)ঘোষণা করেছেন।
হযরত ইবনে আব্বাস(রা) বলেন, নবী করীম(স) ইরশাদ করেছেনঃ
(আরবি)
– আল্লাহর নিকট তিন শ্রেণীর লোক অত্যধিক ঘৃণ্য। এক. যারা হারাম শরীফে শরীয়তবিরোধী কাজ করে, দুই. ইসলামী আদর্শে যারা জাহিলিয়াতের নিয়ম-নীতি প্রথাকে চালু করতে ইচ্ছুক এবং তিন. যারা কোনো কারণ ব্যতীত-ই মুসলমানের রক্তপাত করতে উদ্ধত হয়। (বুখারী)।
হাদীসে বলা হয়েছে জাহিলিয়াতের সুন্নাত, নিয়ম-নীতি ও প্রথা। অর্থাৎ জাহিলিয়াতের সুন্নাত। আর তা সম্যকভাবেই ‘সুন্নাতে রাসূল’ এর বিপরীত জিনিস। এখন যে লোক ইসলামের সুন্নাতের মাঝে জাহিলিয়াতের সুন্নাত বা নিয়ম-নীতি প্রথাকে চালু করতে চায় ইসলামের অন্তর্ভূক্ত সুন্নাত হিসেবে, সে যে আল্লাহ্র নিকট অত্যন্ত ঘৃণ্য হবে, হবে আল্লাহ্র নিকট অত্যন্ত অভিশপ্ত তাতে আর কি সন্দেহ থাকতে পারে।
এ পর্যায়ে হযরত হাসান বসরী(র) বলেছেনঃ যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই তাঁর নামে শপথ করে বলছি, অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি ও মাত্রা হ্রাস করার দুই সীমাতিরিক্ত প্রান্তিক নীতির মধ্যবর্তী নীতিই হচ্ছে তোমাদের সুন্নাতের নীতি, অতএব তোমরা তারই উপর ধৈর্য্ সহকারে অবিচল হয়ে থাক, আল্লাহ তোমাদের প্রতি রহম করবেন। কেননা আহলে সুন্নাত-সুন্নাত অনুসারী লোকদের সংখ্যা চিরকালই কম ছিল অতীতে, পরবর্তীকালেও তাই থাকবে। এরা হচ্ছে তারা যারা কখনো বাড়াবাড়িকারীদের সঙ্গে যোগদান করেনি। বিদয়াতপন্থীদেরও সঙ্গী হয়নি তারা তাদের বিদয়াতের ব্যাপারে। বরং তারা সুন্নাতের উপর অটল হয়েই দাঁড়িয়ে রয়েছে, যদ্দিন না আল্লাহ্র সাক্ষাতের জন্য তারা মৃত্যুবরণ করেছে। আল্লাহ চাইলে তোমরাও এমনিই হবে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেছেনঃ
লোকেরা যখনই কোনো বিদয়াতকে উদ্ভাবন করেছে, তখনই তারা এক একটি সুন্নাতকে মেরেছে। এভাবেই বিদয়াত জাগ্রত ও প্রচন্ড হয়ে পড়েছে, আর সুন্নাত মিটে গেছে।
এসব কয়টি হাদীসই মুসলমানদের সামনে একটা সুস্পষ্ট কর্মসূচী পেশ করেছে এবং তা হচ্ছে এই যে, মুসলমানরা যে দেশ ও যে অবস্থাতেই থাকুকনা কেন, তারা বিদয়াত ও বিদয়াতপন্থীদের বিরুদ্ধে দূর্ভেদ্য প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এবং সুন্নাতকে তার আসল রূপে ও ভাবধারায় প্রতিষ্ঠিত করতে এবং রাখতে চেষ্টিত হবে। ‘সুন্নাত’ যদি বিলীন হয়ে যায় আর বিদয়াত যদি প্রবল হয়ে দাঁড়াতে পারে, তাহলে মুমিন ও মুসলিমের অস্তিত্বই অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/289/16
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।