মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
কবর যিয়ারত করা জায়েয কিন্তু তা করতে হবে শরীয়তসম্মতভাবে। কবরস্থানে গিয়ে যেমন শরীয়তবিরোধী কোনো কাজ করা যাবেনা, কোনো অবাঞ্চিত কথাও বলা যাবেনা; তেমনি কোনো নবী বা অলী বা কোনো নেককার লোকের কবর যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে বিদেশ সফরও জায়েয নয়। এ পর্যায়ে সর্বপ্রথম দলীল হচ্ছে নবী করীম(স) এর তীব্র ও জোরদার নিষেধ বাণী।
তিনি ইরশাদ করেছেনঃ (আরবি)
– আল্লাহর নৈকট্য লাভ মূলক সফর কেবল তিনটি মসজিদ যিয়ারতের জন্য করা যাবে, তা হলো মসজিদে হারাম(কাবা ঘর), মসজিদে নববী, এবং মসজিদে আকসা। এছাড়া আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে অপর কোনো স্থানের জন্য সফর করা যাবেনা।
ইমাম নববী এ হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেনঃ এ হাদীস উক্ত তিনটি মসজিদের এবং সে মসজিদ ত্রয়ের জন্য সফর করার ফযীলত প্রমাণ করেছে। কেননা সর্বশ্রেণীর আলিমের মতে এর মানে হচ্ছে এই যে, মসজিদত্রয় ছাড়া অন্য কোনো মসজিদের জন্য সফর করার কোনো ফযীলত নেই।
ইমাম নববী হাদীসের ব্যাখ্যায় অন্যত্র লিখেছেনঃ এ তিনটি হচ্ছে নবীগণের মসজিদ। এতে নামায পড়ার ফযীলত অনেক বেশি অন্যান্য মসজিদের তুলনায়।
অতএব তাতে নামায পড়া ও ইবাদত করার নিয়্যতেই সফর করা যাবে। তাতে আল্লাহ ছাড়া অপর কারো ইবাদতের জন্য সফর করা যাবেনা। কেননা মসজিদে হারামের দিকে সফর করা মানত করা হলে তার হ্জ্জ বা উমরা করার উদ্দেশ্যে তা পূরণ করা কর্তব্য। আর শেষোক্ত মসজিদদ্বয়ের সফর মানত করা হলে ইমাম শাফেয়ীর একটি কথা হচ্ছে এই যে, এ দুয়ের নিয়্যতে সফর করা মুস্তাহাব; ওয়াজিব নয়। আর দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, সে মানত পূরণ করা ওয়াজিব হবে। আর অনেক আলিমই এই মত পোষণ করেন। অতঃপর তিনি লিখেছেনঃ
-এ তিনটি মসজিদ ছাড়া অপর কোনো মসজিদের জন্য সফর মানত করা হলে তা পূরণ করা ওয়াজিব নয় এবং মানতই শুদ্ধ হবেনা। এ মত আমাদের এবং সমগ্র আলিমদের। অবশ্য মুহাম্মদ ইবনে মুসলিম মালিকী ভিন্নমত পোষণ করেন।
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ হাদীসের শব্দ ‘শাদ্দুর রীহাল’ মানে বিদেশ সফর করা। অর্থাৎ আল্লাহর নৈকট্য লাভের নিয়্যত ও উদ্দেশ্যে এ তিনটি মসজিদ ছাড়া অপর কোনো স্থানের জন্যে সফর করবেনা। কেননা এ তিনটি মসজিদিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় সম্মানার্হ্ এ কারণে যে, এ ছাড়া অপর সব মসজিদই মর্যাদায় সমান। অতএব যে কোনো মসজিদেই নামায পড়া হোকনা কেন, সবখানেই একই রকম সওয়াব পাওয়া যাবে। কিন্তু এ তিনটি মসজিদের সম্মান ভিন্ন রকম। এ হাদীসের অর্থ হলো, কোনো বিশেষ জায়গার নিয়্যত করে সেজন্যে সফর করবেনা। কিন্তু সেখানে যদি লেখাপড়া শেখা ইত্যাদির কোনো প্রয়োজন থাকে, তাহলে সে কথা স্বতন্ত্র। হাদীসের বাহ্যিক অর্থ তো এই যে, এই তিনটি স্থান ছাড়া অপর কোনো জায়গায় সফরই করতে নিষেধ করা হয়েছে। কেউ বলেছেন এ তিনটি মসজিদ ছাড়া অপর কোনো স্থানে সফরের মানত করা হলে তা পূরণ করা ওয়াজিব হবেনা। এ মানতই মানত বলে গণ্য হবেনা, তা পূরণ করাও ওয়াজিব হবেনা। এ মানতই মানত বলে গণ্য হবেনা, তা পূরণ করা জরুরী হবেনা। আর ‘অলী’ ও নেককার লোকদের বা পবিত্র স্থানসমূহ সফর করা সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা হারাম।
মনে রাখতে হবে, এখানে শুধু যিয়ারত করতে নিষেধ করা হয়নি, তা আলোচ্যও নয় এখানে। বরং এ নিষেধ হচ্ছে শুধু এ উদ্দেশ্যে বিদেশ সফর করা সম্পর্কে। রাসূলের এ হাদীসই হচ্ছে সুন্নাত এবং এই সুন্নাত অনুযায়ীই আমল করেছেন সাহাবায়ে কিরাম। এমন কি, কোনো কোনো বর্ণনামতে শুধু রাসূলের কবর যিয়ারতের জন্য সফর করার কাজও তাঁরা করেননি এবং তা তাঁরা করা পছন্দও করেননি। এ পর্যায়ে প্রমাণ হিসেবে নিম্নোক্ত কথা দুটি উল্লেখ করা যেতে পারেঃ
সব সাহাবী- যেমন মুয়ায, আবু ওবায়দা, উবাদা ইবনে সামিত এবং আবুদ দারদা প্রমুখ-এঁদের কেউ দুনিয়ার একটি কবরগাহেরও যিয়ারত করবার উদ্দেশ্যে সফর করেছেন বলে জানা যায়নি।
এমন কি, সাহাবায়ে কিরাম(রা)শুধু কোনো নবীর মাযার যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে সফর করেছেন বলেও প্রমাণ পাওয়া যায়না। বলা হয়েছেঃ হযরত আবু বকর, উমর, উসমান, আলী(রা) এবং তাঁদের পরবর্তী লোকদের যুগ শেষ হওয়া পর্য্ন্ত কোনো সাহাবীই কোনো নবী বা নেক ব্যক্তির কবর যিয়ারতের জন্য সফর করে বিদেশ যাননি।
এই পর্যায়ে সর্বজনমান্য ভারতীয় মনীষী শাহওয়ারী মুহাদ্দিসে দিহলভী যা কিছু লিখেছেন, তা উল্লেখ করে আমাদের এ সম্পর্কিত বক্তব্য শেষ করছি। মুয়াত্তা ইমাম মালিক গ্রন্থে এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে নিম্নোক্ত ভাষায়; হযরত আবু হুরায়রা(রা)বলেনঃ আমি বুসরা ইবনে আবূ গিফারীর সঙ্গে সাক্ষাত করলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ কোথ্থেকে এসেছ? বললামঃ ‘তুর’ থেকে। তিনি বললেন-তুরের দিকে যাওয়ার পূর্বে যদি তোমার সাথে আমার একবার সাক্ষাত হতো, তাহলে তোমার আর যাওয়া হতোনা। কেননা, নবী করীম(স) কে আমি বলতে শুনেছিঃ তোমরা মসজিদে হারাম, আমার মসজিদ এবং মসজিদে ইলীয়া বা বায়তুল মুকাদ্দাস- এই তিনটি মসজিদ ছাড়া আর কোনো মসজিদের জন্য সফরের আয়োজন করবেনা।
শাহ ওয়ালী উল্লাহ(রা) এ হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেনঃ এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, এ তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্য কোনো জায়গার জন্য আল্লাহর নৈকট্য (বা সওয়াব) লাভের নিয়্যতে সফর করা এবং কোনো জায়গাকে এ জন্যে নির্দিষ্ট করে নেয়া নিষিদ্ধ।
এর কারণ বলতে গিয়ে তিনি লিখেছেনঃ সম্ভবত এ নিষেধের মূল লক্ষ্য হলো লোকদেরকে সে কাজ হতে বিরত রাখা, যা জাহিলিয়াতের জামানার লোকেরা করতো। যেমন-তারা নিজেদের ইচ্ছেমত এক একটি তাজীমের স্থান আবিষ্কার ও নির্দিষ্ট করে নিত।
তিনি এ হাদীসের ভিত্তিতে আরো লিখেছেনঃ আমি বলবো জাহিলিয়াতের যুগের লোকেরা বিভিন্ন কল্পনার ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গাকে তাজীমের জায়গা বলে মনে করতো, তার যিয়ারত করতো, তা থেকে বরকত হাসিল করতো। তাতে করে মূল দ্বীন-ই বিকৃত হয়ে যেত, আর হতো নানা বিপর্য্য়। এ কারণে আলোচ্য হাদীস দ্বারা নবী করীম(স) এ বিপর্য্য়ের পথ বন্ধ করে দিলেন, যেন ইসলামী সুন্নাতী আদর্শ ও নিদর্শনাদি গায়র ইসলামী আদর্শের সাথে মিলে মিশে একাকার না হয়ে যায় এবং তা গায়রুল্লাহর ইবাদতের পন্থা উদ্ভাবনের কারণ রূপে গৃহীত না হয়। আমার মতে হক কথা হলো এই যে কবর, কোনো অলী আল্লাহর ইবাদতের জায়গা ও ‘তুর’-এ সবাই সমানভাবে এই নিষেধের মধ্যে গণ্য।
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় আল্লামা কস্তলানী লিখেছেনঃ
-এ তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্য সব জায়গায় যাওয়ার জন্য সফর করা-যেমন নেককার লোকদের জীবিত থাকা বা মরে যাওয়ার পর তাদের জিয়ারতের জন্য যাওয়া, সেখানে ইবাদত করা বা সেখান থেকে বরকত লাভের উদ্দেশ্যে যাওয়া- এ সম্পর্কে আবু মুহাম্মদ জুয়েনী বলেন যে, বাহ্যত হাদীস অনুযায়ী আমল করা হলে এসব হারাম হবে। কাযী হুসাইন, কাযী ইয়াজ ও অন্যান্য মনীষীও এই মত-ই গ্রহণ করেছেন। তবে শাফেয়ী মাজহাবের ঈমামুল হারামইন প্রমুখের মতে এ কাজ জায়েয।(বলাবাহুল্য, একদিকে জায়েয অপরদিকে হারাম)। হারাম থেকে বাঁচার জন্য এ জায়েয মত গ্রহণ করা যেতে পারেনা।
মুল্লা আলী আল কারী এ হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেনঃ কোনো কোনো আলিম এ হাদীসের দলীল দিয়ে বলেছেন যে, বরকতের জায়গা এবং আলিম ও নেককার লোক (অলী-পীর-দরবেশ) এর কবর যিয়ারতের জন্য সফর করা নিষিদ্ধ।
উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিসে দিহলভী(রহ) লিখেছেনঃ হজ্জের সফরের সমান কিংবা তার চাইতেও ভাল ও উত্তম সফর মনে করে, হজ্জের ইহরাম বাঁধার মত জেনে শুনে বা না জেনে ইহরাম বাঁধে- এ কাজ কিছুতেই করা উচিত নয়।
সহীহ হাদীস, উহার ব্যাখ্যা এবং ইসলামের বিশেষজ্ঞ সলফে সালেহীনের পূর্বোদ্ধৃত মূল্যবান বাণীসমূহের ভিত্তিতে এ কথা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, কবর বা নির্দিষ্ট কোনো স্থানকে নিজেদের ইচ্ছেমতো পবিত্র বরকতওয়ালা বা শরীফ ইত্যাদি মনে করা, তা যিয়ারত করার জন্য এবং কবরস্থ অলী পীর দরবেশ এর নিকট প্রার্থনা করা বা তাকে অসীলা করার জন্য বিদেশ সফর করা এবং সেখান থেকে বরকত হাসীল করতে চাওয়া- এ সবই জাহিলিয়াতের জমানার মুশরিক লোকদের কাজ, এ কাজ দ্বীন-ইসলামের সম্পূর্ণ খেলাফ। এতে যেমন আকীদার খারাবী দেয়া দেয়, তেমনি আমলেরও। এ কারণে নবী করীম(স) এ ধরনের কাজ করতে এ হাদীস মারফত চিরদিনের জন্য নিষেধ করে দিয়েছেন। অতএব বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় স্বকপোল কল্পিত মনগড়া পীর বা অলী দরবেশের কবরকে কেন্দ্র করে যা কিছু করা হচ্ছে, আজমীর শরীফে, বাগদাদ শরীফ, দাতাগঞ্জবখশ, শর্ষিণা শরীফ, মাইজভান্ডার আর সুরেশ্বর শরীফ প্রভৃতি স্থানে যে ওরস ও অন্যান্য অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় এবং দলে দলে মূর্খ মুরীদরা একত্রিত হয় মরা পীরের কবর হতে ফায়েজ নেয়ার উদ্দেশ্যে- তা সবই রাসূলের নির্দেশের সম্পূর্ণ খেলাফ, সুন্নাতের বিপরীত- এক স্পষ্ট বিদয়াত। আর পীর ভক্তির তীব্রতা ও আতিশয্যের কারণে অনেক ক্ষেত্রে তা-ই শিরক এ পরিণত হয়।
এমন কি, মক্কায় কাবা ঘরের হজ্জ করতে গিয়ে মদীনায় যাওয়া যারা বাধ্যতামূলক মনে করেন, তাদের উচিত মসজিদে নববীতে নামায পড়ার নিয়্যতে সফর করবে, শুধু রাসূলে করীমের কবরে সালাম করার উদ্দেশ্যে সফর করা উচিত নয়।
এ সব অকাট্য দলীলের মুকাবিলায় বিদয়াতীদের কথাবার্তা পেশ করে পীর-মুরীদী মহাশূণ্যে মিলিয়ে যেতে দেরী নেই মোটেও।
আল্লাহ এই বিদয়াতীদের হেদায়াত করুন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/289/41
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।