HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
ধৈর্য-সবর কখন ও কিভাবে
লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اصْبِرُوا وَصَابِرُوا ( آل عمران : 200)
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, ধৈর্যে প্রতিযোগিতা কর।’’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ২০০)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنْفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ ( البقرة : 155)
‘‘আমি তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা অবশ্যই পরীক্ষা করব। আর তুমি শুভ সংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের।’’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৫৫)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ ( الزمر : 10)
‘‘নিশ্চয় ধৈর্যশীলদের অপরিমিত পুরস্কার দেয়া হবে।’’ (সূরা যুমার, আয়াত: ১০)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
وَلَمَنْ صَبَرَ وَغَفَرَ إِنَّ ذَلِكَ لَمِنْ عَزْمِ الْأُمُورِ ( الشورى : 43)
‘‘অবশ্য যে ধৈর্যধারণ করে এবং ক্ষমা করে দেয়, নিশ্চয় এটা দৃঢ় সংকল্পেরই কাজ।’’ (সূরা আশ-শুরা, আয়াত: ৪৩)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ . ( البقرة : 153)
‘‘হে ঈমানদারগণ! ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।’’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৫৩)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتَّى نَعْلَمَ الْمُجَاهِدِينَ مِنْكُمْ وَالصَّابِرِينَ وَنَبْلُوَ أَخْبَارَكُمْ . ( محمد : 31)
‘‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব, যতক্ষণ না আমি জেনে নেই তোমাদের মধ্যে জিহাদকারী ও ধৈর্যশীলদেরকে এবং আমি তোমাদের ব্যাপারে পরীক্ষা করি।’’ (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ৩১)
এ সকল আয়াত ছাড়াও ধৈর্য ও তার গুরুত্ব সম্পর্কে আরো অসংখ্য আয়াত রয়েছে পবিত্র আল-কুরআনে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اصْبِرُوا وَصَابِرُوا ( آل عمران : 200)
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, ধৈর্যে প্রতিযোগিতা কর।’’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ২০০)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنْفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ ( البقرة : 155)
‘‘আমি তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা অবশ্যই পরীক্ষা করব। আর তুমি শুভ সংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের।’’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৫৫)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ ( الزمر : 10)
‘‘নিশ্চয় ধৈর্যশীলদের অপরিমিত পুরস্কার দেয়া হবে।’’ (সূরা যুমার, আয়াত: ১০)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
وَلَمَنْ صَبَرَ وَغَفَرَ إِنَّ ذَلِكَ لَمِنْ عَزْمِ الْأُمُورِ ( الشورى : 43)
‘‘অবশ্য যে ধৈর্যধারণ করে এবং ক্ষমা করে দেয়, নিশ্চয় এটা দৃঢ় সংকল্পেরই কাজ।’’ (সূরা আশ-শুরা, আয়াত: ৪৩)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ . ( البقرة : 153)
‘‘হে ঈমানদারগণ! ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।’’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৫৩)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتَّى نَعْلَمَ الْمُجَاهِدِينَ مِنْكُمْ وَالصَّابِرِينَ وَنَبْلُوَ أَخْبَارَكُمْ . ( محمد : 31)
‘‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব, যতক্ষণ না আমি জেনে নেই তোমাদের মধ্যে জিহাদকারী ও ধৈর্যশীলদেরকে এবং আমি তোমাদের ব্যাপারে পরীক্ষা করি।’’ (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ৩১)
এ সকল আয়াত ছাড়াও ধৈর্য ও তার গুরুত্ব সম্পর্কে আরো অসংখ্য আয়াত রয়েছে পবিত্র আল-কুরআনে।
১- আল্লাহ রাববুল আলামীন ধৈর্য ধারণ করেতে হুকুম দিয়েছেন।
২- তিনি ধৈর্য ধারণে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা করতে বলেছেন। তাই নিজেকে সকলের চেয়ে বেশী ধৈর্যশীল হিসেবে তৈরী করা প্রয়োজন।
৩- ঈমানদার সকল প্রকার বিপদ-আপদকে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা হিসাবে গ্রহণ করবে। আর এতে ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে থাকবে শুভ সংবাদ।
৪- আল্লাহ ধৈর্যশীলদের পুরস্কার ও প্রতিদান দেবেন বিনা হিসাবে।
৫- ধৈর্য ও ক্ষমাকে আল্লাহ দৃঢ় সংকল্পের কাজ বলে প্রশংসা করেছেন।
৬- আল্লাহ তাআলা বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ ও সালাতের মাধ্যমে তারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
৭- ধৈর্যশীলদের সাথে আল্লাহর সাহায্য থাকে।
৮- আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন বিপদ-আপদ, বালা-মুসীবত, সমস্যা-সংকট দিয়ে পরীক্ষা করে প্রকাশ্যে প্রমাণ করতে চান যে, কে আল্লাহর পথে জিহাদ করতে প্রস্তত আর কে ধৈর্য ধারণ করতে পারে।
২- তিনি ধৈর্য ধারণে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা করতে বলেছেন। তাই নিজেকে সকলের চেয়ে বেশী ধৈর্যশীল হিসেবে তৈরী করা প্রয়োজন।
৩- ঈমানদার সকল প্রকার বিপদ-আপদকে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা হিসাবে গ্রহণ করবে। আর এতে ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে থাকবে শুভ সংবাদ।
৪- আল্লাহ ধৈর্যশীলদের পুরস্কার ও প্রতিদান দেবেন বিনা হিসাবে।
৫- ধৈর্য ও ক্ষমাকে আল্লাহ দৃঢ় সংকল্পের কাজ বলে প্রশংসা করেছেন।
৬- আল্লাহ তাআলা বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ ও সালাতের মাধ্যমে তারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
৭- ধৈর্যশীলদের সাথে আল্লাহর সাহায্য থাকে।
৮- আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন বিপদ-আপদ, বালা-মুসীবত, সমস্যা-সংকট দিয়ে পরীক্ষা করে প্রকাশ্যে প্রমাণ করতে চান যে, কে আল্লাহর পথে জিহাদ করতে প্রস্তত আর কে ধৈর্য ধারণ করতে পারে।
‘সবর’ আরবী শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হল আটকে রাখা।
শরয়ী পরিভাষায় তিনটি বিষয়ে নিজেকে আটকে রাখার নাম সবর বা ধৈর্য।
প্রথম বিষয়ঃ আল্লাহ তাআলার আদেশ-নির্দেশ পালনে নিজেকে আটকে রাখা।
দ্বিতীয় বিষয়ঃ আল্লাহ তাআলা যা নিষেধ করেছেন তার দিকে যেতে নিজেকে আটকে রাখা বা বিরত রাখা।
তৃতীয় বিষয়ঃ যে সকল বিপদ-আপদ আসবে সে সকল ব্যাপারে অসঙ্গত ও অনর্থক বা ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা থেকে নিজেকে আটকে রাখা।
শরয়ী পরিভাষায় তিনটি বিষয়ে নিজেকে আটকে রাখার নাম সবর বা ধৈর্য।
প্রথম বিষয়ঃ আল্লাহ তাআলার আদেশ-নির্দেশ পালনে নিজেকে আটকে রাখা।
দ্বিতীয় বিষয়ঃ আল্লাহ তাআলা যা নিষেধ করেছেন তার দিকে যেতে নিজেকে আটকে রাখা বা বিরত রাখা।
তৃতীয় বিষয়ঃ যে সকল বিপদ-আপদ আসবে সে সকল ব্যাপারে অসঙ্গত ও অনর্থক বা ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা থেকে নিজেকে আটকে রাখা।
১ - عن أبي مالك الحارث بن عاصم الأشعري رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : الطَّهُوْرُ شَطْرُ الإيْمَانِ، وَسُبْحَانَ الله والحَمَدُ للهِ تَمْلآنِ أوْ تَمْلأ- ما بَيْنَ السَماواتِ والأرْضِ، والصَّلاةُ نُوْرٌ، والصَّدقَةُ بُرْهَانٌ، والصّبْرُ ضِيَاءٌ، والقرآنُ حُجَّةٌ لَكَ أوْ عَلَيْكَ، كلُّ النّاسِ يَغْدُو، فَبَائِعٌ نَفْسَه فَمُعْتِقُهَا أو مُوبِقُهَا . رواه مسلم
আবু মালিক হারেস ইবনে আসেম আল-আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘পবিত্রতা হল ঈমানের অর্ধেক। আর ‘আল-হামদুল্লিাহ’ আমলের পাল্লা পূর্ণ করে দেয়। ছুবহানাল্লাহ ও আল-হামদুলিল্লাহ উভয়ে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর মধ্যবর্তী স্থান পূর্ণ করে দেয়। নামাজ হল জ্যোতি। দান-সদকা হল প্রমাণ। সবর-ধৈর্য হচ্ছে আলো। আল-কুরআন তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে প্রমাণ হবে। প্রত্যেক মানুষ সকালে উঠে নিজেকে বিক্রি করে দেয়। এরপর সে নিজেকে মুক্ত করে অথবা ধ্বংস করে।’’ বর্ণনায়ঃ মুসলিম
আবু মালিক হারেস ইবনে আসেম আল-আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘পবিত্রতা হল ঈমানের অর্ধেক। আর ‘আল-হামদুল্লিাহ’ আমলের পাল্লা পূর্ণ করে দেয়। ছুবহানাল্লাহ ও আল-হামদুলিল্লাহ উভয়ে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর মধ্যবর্তী স্থান পূর্ণ করে দেয়। নামাজ হল জ্যোতি। দান-সদকা হল প্রমাণ। সবর-ধৈর্য হচ্ছে আলো। আল-কুরআন তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে প্রমাণ হবে। প্রত্যেক মানুষ সকালে উঠে নিজেকে বিক্রি করে দেয়। এরপর সে নিজেকে মুক্ত করে অথবা ধ্বংস করে।’’ বর্ণনায়ঃ মুসলিম
১- পবিত্রতা মানুষের বাহ্যিক দিক। অন্তরের বিশ্বাস হল অপ্রকাশ্য বিষয়। বাহ্যিক ও অপ্রকাশ্য দুটো বিষয় নিয়েই ঈমান। সে হিসাবে পবিত্রতা হল ঈমানের অর্ধাংশ।
২- তাসবীহ (ছুবহানাল্লাহ) ও তাহমীদ (আল-হামদুলিল্লাহ) এর ফজিলত। আমলের পাল্লায় এর রয়েছে অনেক গুরুত্ব।
৩- সালাত বা নামাজ ঈমানদারের অন্তরকে ও চেহারাকে উজ্জল করে। এমনিভাবে তা কবর ও হাশরে তার জন্য আলোকবর্তিকা হবে।
৪- দান-সদকা ও আল্লাহর পথে ব্যয় করা সঠিক ঈমানের একটি প্রমাণ। মুনাফিকরা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না।
৫- ধৈর্য-সবর হল ঈমানদারদের জন্য আলো স্বরূপ। এ আলো সুর্যের আলোর মত। যেমন এ হাদীসে এ আলোকে ‘জিয়া’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। আর ‘জিয়া’ বলতে আল কুরআনে সুর্যের আলোকে বুঝানো হয়েছে। যা মানুষকে আলো দেয় ও তাপের মাধমে শক্তি যোগায়। ধৈর্য - সবর এমন বিষয় যা মানুষকে আলোকিত করে ও শক্তিশালী করে। ধৈর্য সংক্রান্ত হাদীসের এ অংশের সাথেই বিষয় শিরোনামের সম্পর্ক রয়েছে।
৬- যদি কেহ আল-কুরআনকে জীবনের পাথেয় হিসাবে গ্রহণ করে তাহলে আল-কুরআন তার পক্ষে প্রমাণ হবে। আর যদি কেহ আল-কুরআনকে বর্জন করে তাহলে বিচার দিবসে আল-কুরআন তার বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসাবে দাঁড়িয়ে যাবে।
৭- সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রত্যেক মানুষই নিজেকে কাজ-কর্মের জন্য বিক্রি করে দেয়। কেহ ভাল কাজ করে নিজেকে মুক্ত ও স্বাধীন রাখে। আর কেহ খারাপ কাজ করে নিজের ধ্বংস ডেকে আনে।
২- তাসবীহ (ছুবহানাল্লাহ) ও তাহমীদ (আল-হামদুলিল্লাহ) এর ফজিলত। আমলের পাল্লায় এর রয়েছে অনেক গুরুত্ব।
৩- সালাত বা নামাজ ঈমানদারের অন্তরকে ও চেহারাকে উজ্জল করে। এমনিভাবে তা কবর ও হাশরে তার জন্য আলোকবর্তিকা হবে।
৪- দান-সদকা ও আল্লাহর পথে ব্যয় করা সঠিক ঈমানের একটি প্রমাণ। মুনাফিকরা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না।
৫- ধৈর্য-সবর হল ঈমানদারদের জন্য আলো স্বরূপ। এ আলো সুর্যের আলোর মত। যেমন এ হাদীসে এ আলোকে ‘জিয়া’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। আর ‘জিয়া’ বলতে আল কুরআনে সুর্যের আলোকে বুঝানো হয়েছে। যা মানুষকে আলো দেয় ও তাপের মাধমে শক্তি যোগায়। ধৈর্য - সবর এমন বিষয় যা মানুষকে আলোকিত করে ও শক্তিশালী করে। ধৈর্য সংক্রান্ত হাদীসের এ অংশের সাথেই বিষয় শিরোনামের সম্পর্ক রয়েছে।
৬- যদি কেহ আল-কুরআনকে জীবনের পাথেয় হিসাবে গ্রহণ করে তাহলে আল-কুরআন তার পক্ষে প্রমাণ হবে। আর যদি কেহ আল-কুরআনকে বর্জন করে তাহলে বিচার দিবসে আল-কুরআন তার বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসাবে দাঁড়িয়ে যাবে।
৭- সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রত্যেক মানুষই নিজেকে কাজ-কর্মের জন্য বিক্রি করে দেয়। কেহ ভাল কাজ করে নিজেকে মুক্ত ও স্বাধীন রাখে। আর কেহ খারাপ কাজ করে নিজের ধ্বংস ডেকে আনে।
২ - عن أبي سعيد سعد بن مالك بن سنان الخدري رضي الله عنه : أنَّ نَاسًا مِنَ الأنْصَار ِسَألُوْا رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم فَأعْطاهُمْ، ثُمَّ سَألُوْهُ فَأعْطَاهُمْ، حتَّى نَفِدَ مَا عِنْدَهُ، فَقَالَ لَهُمْ حِيْنَ أنْفَقَ كُلَّ شَيءٍ بِيَدِه : مَا يَكُنْ عِنْدِي مِنْ خَيْرٍ فَلَنْ أدَّخِرَهُ عَنْكُمْ، وَمَنْ يَسْتَعْفِفْ يُعِفَّهُ اللهُ، وَمَنْ يَسْتَغْنِ يُغْنِهِ اللهُ، وَمَنْ يَتَصَبَّرْ يُصَبِّرهُ الله، وَمَا أعْطِىَ أحَدٌ عَطَاءَ خَيْرًا وَأوْسَعَ مِنَ الصَّبْرِ . رواه البخاري و مسلم
আবু সায়ীদ সাদ বিন মালেক বিন সিনান আল-খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, আনসারী সাহাবীদের মধ্য থেকে কিছু লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে সাহায্য চাইল। তিনি তাদেরকে দান করলেন। তারা আবার সাহায্য চাইল। তিনি আবার দান করলেন। শেষ পর্যন্ত যা কিছু তার কাছে ছিল সবই শেষ হয়ে গেল। যখন সবকিছু দান করে দিলেন তখন তিনি তাদের বললেন, ‘‘আমার কাছে যা কিছু সম্পদ আসে তা আমি তোমাদেরকে না দিয়ে জমা করে রাখি না। যে ব্যক্তি মানুষের কাছে চাওয়া থেকে মুক্ত থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে মুক্ত রাখেন। যে ব্যক্তি কারো মুখাপেক্ষী হতে চায় না, আল্লাহ তাকে ধনী বানিয়ে দেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করতে চায়, আল্লাহ তাকে ধৈর্যশীল বানিয়ে দেন। ধৈর্যের চেয়ে উত্তম ব্যাপক-বিস্তৃত সম্পদ কাউকে দান করা হয়নি।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
আবু সায়ীদ সাদ বিন মালেক বিন সিনান আল-খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, আনসারী সাহাবীদের মধ্য থেকে কিছু লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে সাহায্য চাইল। তিনি তাদেরকে দান করলেন। তারা আবার সাহায্য চাইল। তিনি আবার দান করলেন। শেষ পর্যন্ত যা কিছু তার কাছে ছিল সবই শেষ হয়ে গেল। যখন সবকিছু দান করে দিলেন তখন তিনি তাদের বললেন, ‘‘আমার কাছে যা কিছু সম্পদ আসে তা আমি তোমাদেরকে না দিয়ে জমা করে রাখি না। যে ব্যক্তি মানুষের কাছে চাওয়া থেকে মুক্ত থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে মুক্ত রাখেন। যে ব্যক্তি কারো মুখাপেক্ষী হতে চায় না, আল্লাহ তাকে ধনী বানিয়ে দেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করতে চায়, আল্লাহ তাকে ধৈর্যশীল বানিয়ে দেন। ধৈর্যের চেয়ে উত্তম ব্যাপক-বিস্তৃত সম্পদ কাউকে দান করা হয়নি।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
১- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে কেহ কিছু চাইলে তাকে ফেরত দিতেন না। যতক্ষণ তার কাছে সম্পদ থাকত ততক্ষণ দান করতে থাকতেন। নিজের জন্য কখনো কিছু রেখে দিতেন না।
২- যে পবিত্র থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে পবিত্র থাকতে সামর্থ দান করেন। যে মানুষের কাছে হাত পাতা থেকে মুক্ত থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে মুক্ত থাকতে তাওফিক দান করেন।
৩- মানুষের কাছে যা আছে এর থেকে যে ব্যক্তি মুখাপেক্ষীহীন থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে সর্বদা মানুষ থেকে মুখাপেক্ষীহীন থাকতে সাহায্য করেন।
৪- যে ব্যক্তি নিজেকে ধৈর্যশীল বানাতে চায় আল্লাহ তাকে ধৈর্যশীল হতে সাহায্য করেন।
৫- অভাবে পড়ে মানুষের কাছে না চাওয়া, নিজের অভাবের কথা প্রকাশ না করা ধৈর্যের অন্তর্ভূক্ত।
৬- যত চারিত্রিক সম্পদ আছে তার মধ্যে সবচেয়ে উত্তম ও ব্যাপক কার্যবরী হল ধৈর্য বা সবর। যাকে এ গুণটি দান করা হয়েছে সে অনেক মুল্যবান সম্পদ অর্জন করেছে।
২- যে পবিত্র থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে পবিত্র থাকতে সামর্থ দান করেন। যে মানুষের কাছে হাত পাতা থেকে মুক্ত থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে মুক্ত থাকতে তাওফিক দান করেন।
৩- মানুষের কাছে যা আছে এর থেকে যে ব্যক্তি মুখাপেক্ষীহীন থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে সর্বদা মানুষ থেকে মুখাপেক্ষীহীন থাকতে সাহায্য করেন।
৪- যে ব্যক্তি নিজেকে ধৈর্যশীল বানাতে চায় আল্লাহ তাকে ধৈর্যশীল হতে সাহায্য করেন।
৫- অভাবে পড়ে মানুষের কাছে না চাওয়া, নিজের অভাবের কথা প্রকাশ না করা ধৈর্যের অন্তর্ভূক্ত।
৬- যত চারিত্রিক সম্পদ আছে তার মধ্যে সবচেয়ে উত্তম ও ব্যাপক কার্যবরী হল ধৈর্য বা সবর। যাকে এ গুণটি দান করা হয়েছে সে অনেক মুল্যবান সম্পদ অর্জন করেছে।
৩ - عن أبي يحي صهيب بن سنان رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : عَجَباً لِأمْرِ المُؤمِنِ إنَّ أمْرَهُ كُلَّهُ لَهُ خَيْرٌ، وَلَيْسَ ذَلكَ لِأحَدٍ إلاَّ لِلمُؤمِنِ : إنْ أصَابَتْهُ سَرَّاءُ شَكَرَ فَكَانَ خَيْراً لَهُ، وَإنْ أصَابَتْهُ ضَرَّاءُ صَبَرَ فَكَانَ خَيْراً لَهُ . رواه مسلم
আবু ইয়াহইয়া সুহাইব বিন সিনান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘‘ঈমানদারের বিষয় নিয়ে আমি খুব আশ্চর্য বোধ করি। তার সকল কাজেই আছে কল্যাণ। ঈমানদার ছাড়া অন্য কোন মানুষের এ সৌভাগ্য নেই। তার যদি আনন্দ বা সুখকর কোন বিষয় অর্জিত হয়, তাহলে সে আল্লাহ শোকর করবে, ফলে তার কল্যাণ হবে। আর যদি তাকে কোন বিপদ-মুসীবত স্পর্ষ করে, তাহলে সে ধৈর্য ধারণ করবে। এতেও অর্জিত হবে তার কল্যাণ।’’ বর্ণনায়ঃ মুসলিম
আবু ইয়াহইয়া সুহাইব বিন সিনান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘‘ঈমানদারের বিষয় নিয়ে আমি খুব আশ্চর্য বোধ করি। তার সকল কাজেই আছে কল্যাণ। ঈমানদার ছাড়া অন্য কোন মানুষের এ সৌভাগ্য নেই। তার যদি আনন্দ বা সুখকর কোন বিষয় অর্জিত হয়, তাহলে সে আল্লাহ শোকর করবে, ফলে তার কল্যাণ হবে। আর যদি তাকে কোন বিপদ-মুসীবত স্পর্ষ করে, তাহলে সে ধৈর্য ধারণ করবে। এতেও অর্জিত হবে তার কল্যাণ।’’ বর্ণনায়ঃ মুসলিম
১- এ হাদীসে ঈমানদারের দুটো বড় গুণ ‘সবর ও শোকর’ এর আলোচনা এক সাথে এসেছে।
২- সকল মানুষদের মধ্যে ইসলাম অনুসারীদের এ এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। মানুষ হয়তো সুখী হবে কখনো, অথবা কখনো থাকবে অসুখী। কোন অবস্থাতেই ঈমানদার ব্যক্তির ক্ষতি নেই।
৩- সুখ-সম্পদ, নেয়ামত পেয়ে আল্লাহর শোকর আদায় করতে এ হাদীস ঈমানদারদের নির্দেশ দেয়।
৪- কোন ধরনের বিপদ মুসীবত আসলে তাতে ঈমানদার ভেঙ্গে পড়বে না, হতাশ হবে না। ধৈর্য অবলম্বন করে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাবে।
২- সকল মানুষদের মধ্যে ইসলাম অনুসারীদের এ এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। মানুষ হয়তো সুখী হবে কখনো, অথবা কখনো থাকবে অসুখী। কোন অবস্থাতেই ঈমানদার ব্যক্তির ক্ষতি নেই।
৩- সুখ-সম্পদ, নেয়ামত পেয়ে আল্লাহর শোকর আদায় করতে এ হাদীস ঈমানদারদের নির্দেশ দেয়।
৪- কোন ধরনের বিপদ মুসীবত আসলে তাতে ঈমানদার ভেঙ্গে পড়বে না, হতাশ হবে না। ধৈর্য অবলম্বন করে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাবে।
৪ - عن أنس رضي الله عنه قال : لَمَّا ثَقُلَ النبي صلى الله عليه وسلم جَعَلَ يَتَغَشَّاه الكَرْبُ فَقَالَتْ فَاطِمَةُ رضي الله عنها : واكرْب أبتاه . فَقَالَ : لَيْسَ عَلى أبِيْكَ كَرْبٌ بَعْدَ اليَوْمِ . فَلَمَّا مَاتَ قَالَتْ : ياَ أبَتَاه أجَابَ رَبًّا دَعَاه، يا أبَتَاه جَنَّةُ الفِردَوسِ مَأوَاه، يا أبَتَاه إلى جِبْرِيْلَ نَعْنَاه . فَلَمَّا دُفِنَ قَالَتْ فَاطِمَةُ رضي الله عنها : أطَابَتْ أنْفُسُكُمْ أنْ تَحْثُوا على رسول الله صلى الله عليه وسلم التُّرَابُ؟ رواه البخاري
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন রোগে ভারী হয়ে গেলেন, রোগ যন্ত্রণা তাকে বেহুশ করতে লাগল তখন ফাতেমা রা. দুঃখের সাথে বললেন, ‘উহ! আমার আববার কি কষ্ট হচ্ছে! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কথা শুনে বললেন, ‘‘আজকের পর তোমার আববার কোন কষ্ট নেই। যখন তিনি ইন্তেকাল করলেন তখন ফাতেমা রা. বললেন, ‘হায় আমার আববা! তিনি প্রভুর ডাকে সাড়া দিলেন। হায় আমার আববা! জান্নাতুল ফেরদাউস তার ঠিকানা। হায় আববা! জিবরীলকে মৃত্যুর খবর দিচ্ছি।’ যখন তাঁর দাফন শেষ হল, তখন ফাতেমা রা. লোকদের বললেন, ‘তোমাদের মন কি চেয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর মাটি রাখতে?’
বর্ণনায়ঃ বুখারী
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন রোগে ভারী হয়ে গেলেন, রোগ যন্ত্রণা তাকে বেহুশ করতে লাগল তখন ফাতেমা রা. দুঃখের সাথে বললেন, ‘উহ! আমার আববার কি কষ্ট হচ্ছে! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কথা শুনে বললেন, ‘‘আজকের পর তোমার আববার কোন কষ্ট নেই। যখন তিনি ইন্তেকাল করলেন তখন ফাতেমা রা. বললেন, ‘হায় আমার আববা! তিনি প্রভুর ডাকে সাড়া দিলেন। হায় আমার আববা! জান্নাতুল ফেরদাউস তার ঠিকানা। হায় আববা! জিবরীলকে মৃত্যুর খবর দিচ্ছি।’ যখন তাঁর দাফন শেষ হল, তখন ফাতেমা রা. লোকদের বললেন, ‘তোমাদের মন কি চেয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর মাটি রাখতে?’
বর্ণনায়ঃ বুখারী
১- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন অন্যান্য মানুষের মত রক্ত মাংসে গড়া মানুষ। সাধারণ মানুষ যেমন দুঃখ, কষ্ট রোগ-যন্ত্রণা, মৃত্যু কষ্টে ভোগে তাকেও তা বরদাশত করতে হয়েছে।
২- অন্যান্য মানুষ যেমন মৃত্যু বরণ করে, তিনিও তেমনি মৃত্যু বরণ করেছেন। যেমন আল্লাহ তাআলা তাকে বলেছেনঃ
إِنَّكَ مَيِّتٌ وَإِنَّهُمْ مَيِّتُونَ
‘‘তুমি মৃত্যু বরণ করবে আর তারাও মৃত্যু বরণ করবে।’’ (সূরা যুমার, আয়াত ৩০)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
إنما أنا بشر مثلكم أنسى كما تنسون ( أخرجه البخاري في الصلاة ومسلم في المساجد )
‘‘আমি তোমাদের মত একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভুলে যাও, আমিও তেমন ভুলে যাই।’’ (বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম)
৩- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মর্যাদা আরো বৃদ্ধি করার জন্য ও উম্মতকে ধৈর্যের আদর্শ শিক্ষা দেয়ার জন্য তাকে মৃত্যু যন্ত্রণা দেয়া হয়েছে। উম্মত যেন এ কথা মনে না করে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মহা সূখী মানুষ আমরা তাকে কিভাবে অনুসরণ করি?
৪- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যু যন্ত্রণায় এতটা কাতর হওয়া সত্বেও ধৈর্যের সর্বোত্তম আদর্শের দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন। অস্থিরতা বা হতাশা প্রকাশ করে, এমন কোন বাক্য তাঁর মুখ থেকে বের হয়নি। ফাতেমা রা. ব্যাকুল হয়ে পড়লেও তাকে শান্তনা দিয়ে বললেন, ‘‘আজকের এ কষ্টের পর তোমার পিতার আর কষ্ট নেই।’’
৫- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ইন্তেকালে সময় ফাতেমা রা. ছিলেন তার একমাত্র সন্তান। পিতার মৃত্যুতে তিনি কতখানি শোকে কাতর ছিলেন তা অনুভব করানো যাবে না। তা সত্বেও অধৈর্য প্রকাশ পায় বা আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ পায়, এমন কোন বাক্য তার মুখে শোনা যায়নি। তার যে কথাগুলো এ হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে তা ছন্দ ও অর্থের দিক দিয়ে চমৎকার অভিব্যক্তি। এতে যেমন তার দুঃখ প্রকাশ পেয়েছে তেমনি প্রকাশ পেয়েছে তার ধৈর্য।
৬- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবদ্দশায় আল্লাহর পক্ষ থেকে ফেরেশতা জিবরীল সর্বদা রাসূলের কাছে অহী নিয়ে আসা যাওয়া করতেন। রাসূলের ইন্তেকালের পর আর তিনি আল্লাহর বাণী নিয়ে পৃথিবীতে আসবেন না। এ কথাটি ব্যক্ত করার জন্য ফাতেমা রা. বলেছেন, ‘আমি জিবরীলকে তার মৃত্যু সংবাদ দিচ্ছি।’
৭- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দাফন শেষ হলে ফাতেমা রা. শোকে মুহ্যমান অবস্থায় বললেন, ‘আল্লাহর রাসূলের উপর মাটি রাখতে কি তোমাদের মন সায় দিল?’ এর উত্তর হলো ‘হ্যাঁ, কারণ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা চেয়েছেন, যা করতে বলেছেন তাতে আমাদের মন অবশ্যই সায় দেয়। তাতে যদি মনে ব্যথা পাই বা দুঃখ লাগে তবুও সায় দিতেই হয়।’
২- অন্যান্য মানুষ যেমন মৃত্যু বরণ করে, তিনিও তেমনি মৃত্যু বরণ করেছেন। যেমন আল্লাহ তাআলা তাকে বলেছেনঃ
إِنَّكَ مَيِّتٌ وَإِنَّهُمْ مَيِّتُونَ
‘‘তুমি মৃত্যু বরণ করবে আর তারাও মৃত্যু বরণ করবে।’’ (সূরা যুমার, আয়াত ৩০)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
إنما أنا بشر مثلكم أنسى كما تنسون ( أخرجه البخاري في الصلاة ومسلم في المساجد )
‘‘আমি তোমাদের মত একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভুলে যাও, আমিও তেমন ভুলে যাই।’’ (বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম)
৩- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মর্যাদা আরো বৃদ্ধি করার জন্য ও উম্মতকে ধৈর্যের আদর্শ শিক্ষা দেয়ার জন্য তাকে মৃত্যু যন্ত্রণা দেয়া হয়েছে। উম্মত যেন এ কথা মনে না করে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মহা সূখী মানুষ আমরা তাকে কিভাবে অনুসরণ করি?
৪- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যু যন্ত্রণায় এতটা কাতর হওয়া সত্বেও ধৈর্যের সর্বোত্তম আদর্শের দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন। অস্থিরতা বা হতাশা প্রকাশ করে, এমন কোন বাক্য তাঁর মুখ থেকে বের হয়নি। ফাতেমা রা. ব্যাকুল হয়ে পড়লেও তাকে শান্তনা দিয়ে বললেন, ‘‘আজকের এ কষ্টের পর তোমার পিতার আর কষ্ট নেই।’’
৫- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ইন্তেকালে সময় ফাতেমা রা. ছিলেন তার একমাত্র সন্তান। পিতার মৃত্যুতে তিনি কতখানি শোকে কাতর ছিলেন তা অনুভব করানো যাবে না। তা সত্বেও অধৈর্য প্রকাশ পায় বা আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ পায়, এমন কোন বাক্য তার মুখে শোনা যায়নি। তার যে কথাগুলো এ হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে তা ছন্দ ও অর্থের দিক দিয়ে চমৎকার অভিব্যক্তি। এতে যেমন তার দুঃখ প্রকাশ পেয়েছে তেমনি প্রকাশ পেয়েছে তার ধৈর্য।
৬- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবদ্দশায় আল্লাহর পক্ষ থেকে ফেরেশতা জিবরীল সর্বদা রাসূলের কাছে অহী নিয়ে আসা যাওয়া করতেন। রাসূলের ইন্তেকালের পর আর তিনি আল্লাহর বাণী নিয়ে পৃথিবীতে আসবেন না। এ কথাটি ব্যক্ত করার জন্য ফাতেমা রা. বলেছেন, ‘আমি জিবরীলকে তার মৃত্যু সংবাদ দিচ্ছি।’
৭- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দাফন শেষ হলে ফাতেমা রা. শোকে মুহ্যমান অবস্থায় বললেন, ‘আল্লাহর রাসূলের উপর মাটি রাখতে কি তোমাদের মন সায় দিল?’ এর উত্তর হলো ‘হ্যাঁ, কারণ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা চেয়েছেন, যা করতে বলেছেন তাতে আমাদের মন অবশ্যই সায় দেয়। তাতে যদি মনে ব্যথা পাই বা দুঃখ লাগে তবুও সায় দিতেই হয়।’
৫ - عن أبي زيد أسامة بن حارثة رضي الله عنهما قال : أرسَلَتْ بٍنتُ النبي صلى الله عليه وسلم : إنَّ ابنِني قَد احْتُضِرَ فَاشْهَدنا، فأرسل يُقْريء السَّلامَ وَيَقُول : إنَّ للهِ مَا أخَذَ، وَلَهُ مَا أعْطَى، وَكُلَّ شَيءٍ عِنْدَهُ بِأجَلٍ مُسَمَّى، فَلِتَصْبِر وَلتَحسِبْ . فأرْسَلَتْ إليهِ تُقسِم عَلَيْهِ لَيَأتِيَنَّهَا . فَقَامَ وَمَعَهُ سَعَد بن عُبَادَة وَمُعَاذ بن جَبَل وأبَي بن كَعَب وزيد بن ثَابِت وَرِجَالٌ رضي الله عنهم، فَرُفِعَ إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم الصَّبِيُّ، فَأقْعَدَهُ فِي حِجْرِهِ وَنَفْسُهُ تَقَعْقَعُ، فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ، فَقَالَ سَعَدُ : يا رَسُولَ الله مَا هذا؟ فَقَالَ : هذِه رَحْمَةٌ جَعَلَهَا الله فِي قُلُوبِ عِبَادِه . وَفي رواية : في قلوب مَنْ شاء الله مِن عِبَادِه وَإنّمَا يَرْحَمُ الله مِنْ عِبَادِه الرُّحَمَاءَ . متفق عليه .
আবু যায়েদ উসামা ইবনে হারেস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘‘নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কন্যা খবর পাঠালেন যে, আমার ছেলে মৃত্যুদ্বারে উপস্থিত, তাই আপনি একটু আমাদের দেখে যান! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খবর দাতাকে বললেন, ‘‘যেয়ে সালাম বলো, আর বলবে যা তিনি নিয়ে গেছেন তা আল্লাহর জন্যই । তিনি যা দিয়েছেন তাতো তাঁরই ছিলো। তাঁর কাছে প্রত্যক বস্ত্তর একটা নির্ধারিত মেয়াদ আছে। যেন সে ধৈর্য ধারন করে ও আল্লাহর কাছে পুরস্কারের আশা করে।’’ ইতিমধ্যে আবার কসম দিয়ে তাঁর কাছে লোক পাঠালেন তাকে আসতে বলে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রওয়ানা হলেন। সাথে ছিলেন, সাআদ বিন উবাদা, মুআজ বিন জাবাল, উবাই বিন কাআব, যায়েদ বিন সাবেত প্রমুখ সাহাবায়ে কেরাম। তারপর বাচ্চাটিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে দেয়া হলো, তিনি তাকে নিজ কোলে বসালেন। এ সময় বাচ্চাটি মৃত্যুর হেচকি দিচ্ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দু চোখ দিয়ে পানি বের হতে লাগল। এ দেখে সাআদ বললেন, হে রাসূল এটা কী (আপনি কাঁদছেন)? তিনি বললেন, ‘‘এটা রহমত, যা আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অন্তরে রেখেছেন।’’ অন্য এক বর্ণনায় আছে তিনি বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে চান তার অন্তরে এ রহমত দিয়ে দেন। আর আল্লাহ তার দয়ালু বান্দাদের প্রতি দয়া করেন।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
আবু যায়েদ উসামা ইবনে হারেস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘‘নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কন্যা খবর পাঠালেন যে, আমার ছেলে মৃত্যুদ্বারে উপস্থিত, তাই আপনি একটু আমাদের দেখে যান! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খবর দাতাকে বললেন, ‘‘যেয়ে সালাম বলো, আর বলবে যা তিনি নিয়ে গেছেন তা আল্লাহর জন্যই । তিনি যা দিয়েছেন তাতো তাঁরই ছিলো। তাঁর কাছে প্রত্যক বস্ত্তর একটা নির্ধারিত মেয়াদ আছে। যেন সে ধৈর্য ধারন করে ও আল্লাহর কাছে পুরস্কারের আশা করে।’’ ইতিমধ্যে আবার কসম দিয়ে তাঁর কাছে লোক পাঠালেন তাকে আসতে বলে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রওয়ানা হলেন। সাথে ছিলেন, সাআদ বিন উবাদা, মুআজ বিন জাবাল, উবাই বিন কাআব, যায়েদ বিন সাবেত প্রমুখ সাহাবায়ে কেরাম। তারপর বাচ্চাটিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে দেয়া হলো, তিনি তাকে নিজ কোলে বসালেন। এ সময় বাচ্চাটি মৃত্যুর হেচকি দিচ্ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দু চোখ দিয়ে পানি বের হতে লাগল। এ দেখে সাআদ বললেন, হে রাসূল এটা কী (আপনি কাঁদছেন)? তিনি বললেন, ‘‘এটা রহমত, যা আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অন্তরে রেখেছেন।’’ অন্য এক বর্ণনায় আছে তিনি বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে চান তার অন্তরে এ রহমত দিয়ে দেন। আর আল্লাহ তার দয়ালু বান্দাদের প্রতি দয়া করেন।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
১- কাউকে কোথাও পাঠালে সালাম প্রেরণ করার প্রচলন শরীয়ত অনুমোদিত।
২- কারো আপন জনের ইন্তেকালে তাকে সান্তনা দেয়া সুন্নাত। এমনিভাবে ধৈর্য ধারন করার জন্য উপদেশ দেয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শ।
৩- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সান্তনা প্রদানের ভাষা কত চমৎকার। যেমন তিনি বলেছেন, আল্লাহ যা নিয়ে গেছেন তা তারই ছিলো। তিনি যা দিয়েছেন তাও তাঁরই ছিলো। তাঁর কাছে প্রত্যক বস্ত্তর একটা নির্ধারিত মেয়াদ আছে।
৪- সাহাবায়ে কেরাম আল্লাহর রাসূলের সান্নিধ্যের কত মূল্য দিতেন, যেমন আমরা এ হাদীসে দেখতে পাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের নাতিকে দেখতে গেছেন, সাথে তার সাহাবাগণ সতস্ফুর্তভাবে সঙ্গ দিয়েছেন।
৫- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দয়া-মমতার প্রকাশ। তিনি শিশুটির ইন্তেকালে কেঁদেছেন। সাথের সাহাবাদের ধারনা ছিলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাঁদবেন কেন? কান্নাকাটি করা ধৈর্যের পরিপন্থী। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের ধারনা দূর করে দিলেন, বললেন, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের বহিঃপ্রকাশ। তাই কারো ইন্তেকালে দুঃখে শোকে চোখের পানি ফেলে কাঁদা দোষের কিছু নয়। বরং এটা মানব প্রকৃতি, যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। তবে চিৎকার করা, শশব্দে আহাজারী করা ধৈর্যের পরিপন্থী।
২- কারো আপন জনের ইন্তেকালে তাকে সান্তনা দেয়া সুন্নাত। এমনিভাবে ধৈর্য ধারন করার জন্য উপদেশ দেয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শ।
৩- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সান্তনা প্রদানের ভাষা কত চমৎকার। যেমন তিনি বলেছেন, আল্লাহ যা নিয়ে গেছেন তা তারই ছিলো। তিনি যা দিয়েছেন তাও তাঁরই ছিলো। তাঁর কাছে প্রত্যক বস্ত্তর একটা নির্ধারিত মেয়াদ আছে।
৪- সাহাবায়ে কেরাম আল্লাহর রাসূলের সান্নিধ্যের কত মূল্য দিতেন, যেমন আমরা এ হাদীসে দেখতে পাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের নাতিকে দেখতে গেছেন, সাথে তার সাহাবাগণ সতস্ফুর্তভাবে সঙ্গ দিয়েছেন।
৫- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দয়া-মমতার প্রকাশ। তিনি শিশুটির ইন্তেকালে কেঁদেছেন। সাথের সাহাবাদের ধারনা ছিলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাঁদবেন কেন? কান্নাকাটি করা ধৈর্যের পরিপন্থী। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের ধারনা দূর করে দিলেন, বললেন, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের বহিঃপ্রকাশ। তাই কারো ইন্তেকালে দুঃখে শোকে চোখের পানি ফেলে কাঁদা দোষের কিছু নয়। বরং এটা মানব প্রকৃতি, যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। তবে চিৎকার করা, শশব্দে আহাজারী করা ধৈর্যের পরিপন্থী।
6 - وَعَنْ صُهَيْبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قَالَ : « كَانَ مَلِكٌ فيِمَنْ كَانَ قبْلَكُمْ، وَكَانَ لَهُ سَاحِرٌ، فَلَمَّا كَبِرَ قَالَ لِلْمَلِك : إِنِّي قَدْ كَبِرْتُ فَابعَثْ إِلَيَّ غُلاَماً أُعَلِّمْهُ السِّحْرَ ، فَبَعَثَ إِلَيْهِ غُلاَماً يعَلِّمُهُ ، وَكَانَ في طَريقِهِ إِذَا سَلَكَ رَاهِبٌ، فَقَعَدَ إِلَيْهِ وَسَمِعَ كَلاَمهُ فأَعْجَبهُ، وَكَانَ إِذَا أَتَى السَّاحِرَ مَرَّ بالرَّاهِب وَقَعَدَ إِلَيْه، فَإِذَا أَتَى السَّاحِرَ ضَرَبَهُ، فَشَكَا ذَلِكَ إِلَى الرَّاهِبِ فقال : إِذَا خَشِيتَ السَّاحِر فَقُلْ : حبَسَنِي أَهْلي، وَإِذَا خَشِيتَ أَهْلَكَ فَقُلْ : حَبَسَنِي السَّاحرُ .
فَبيْنَمَا هُو عَلَى ذَلِكَ إذْ أتَى عَلَى دابَّةٍ عظِيمَة قدْ حَبَسَت النَّاس فقال : اليوْمَ أعْلَمُ السَّاحِرُ أفْضَل أم الرَّاهبُ أفْضلَ ؟ فأخَذَ حجَراً فقالَ : اللهُمَّ إنْ كان أمْرُ الرَّاهب أحَبَّ إلَيْكَ مِنْ أَمْرِ السَّاحِرِ فاقتُلْ هَذِهِ الدَّابَّة حتَّى يمْضِيَ النَّاسُ، فرَماها فقتَلَها ومَضى النَّاسُ، فأتَى الرَّاهب فأخبَرهُ . فقال لهُ الرَّاهبُ : أىْ بُنيَّ أَنْتَ اليوْمَ أفْضلُ منِّي، قدْ بلَغَ مِنْ أمْركَ مَا أَرَى، وإِنَّكَ ستُبْتَلَى ، فإنِ ابْتُليتَ فَلاَ تدُلَّ عليَّ، وكانَ الغُلامُ يبْرئُ الأكْمةَ والأبرصَ، ويدَاوي النَّاس مِنْ سائِرِ الأدوَاءِ . فَسَمعَ جلِيسٌ للملِكِ كانَ قدْ عمِىَ، فأتَاهُ بهداياَ كثيرَةٍ فقال : ما ههُنَا لك أجْمَعُ إنْ أنْتَ شفَيْتني، فقال إنِّي لا أشفِي أحَداً، إِنَّمَا يشْفِي الله تعَالى، فإنْ آمنْتَ بِاللَّهِ تعَالَى دعوْتُ الله فشَفاكَ، فآمَنَ باللَّه تعَالى فشفَاهُ اللَّهُ تَعَالَى، فأتَى المَلِكَ فجَلَس إليْهِ كما كانَ يجْلِسُ فقالَ لَهُ المَلكُ : منْ ردَّ علَيْك بصَرك؟ قال : ربِّي . قَالَ : ولكَ ربٌّ غيْرِي ؟ قَالَ : رَبِّي وربُّكَ الله، فأَخَذَهُ فلَمْ يزلْ يُعذِّبُهُ حتَّى دلَّ عَلَى الغُلاَمِ فجئَ بِالغُلاَمِ، فقال لهُ المَلكُ : أىْ بُنَيَّ قدْ بَلَغَ منْ سِحْرِك مَا تبْرئُ الأكمَهَ والأبرَصَ وتَفْعلُ وَتفْعَلُ فقالَ : إِنَّي لا أشْفي أَحَداً، إنَّما يشْفي الله تَعَالَى، فأخَذَهُ فَلَمْ يزَلْ يعذِّبُهُ حتَّى دلَّ عَلَى الرَّاهبِ، فجِئ بالرَّاهِبِ فقيل لَهُ : ارجَعْ عنْ دِينكَ، فأبَى، فدَعا بالمنْشَار فوُضِع المنْشَارُ في مفْرقِ رأْسِهِ، فشقَّهُ حتَّى وقَعَ شقَّاهُ، ثُمَّ جِئ بجَلِيسِ المَلكِ فقِلَ لَهُ : ارجِعْ عنْ دينِكَ فأبَى، فوُضِعَ المنْشَارُ في مفْرِقِ رَأسِهِ، فشقَّهُ به حتَّى وقَع شقَّاهُ، ثُمَّ جئ بالغُلامِ فقِيل لَهُ : ارجِعْ عنْ دينِكَ، فأبَى، فدَفعَهُ إِلَى نَفَرٍ منْ أصْحابِهِ فقال : اذهبُوا بِهِ إِلَى جبَلِ كَذَا وكذَا فاصعدُوا بِهِ الجبلَ، فـإذَا بلغتُمْ ذروتهُ فإنْ رجعَ عنْ دينِهِ وإِلاَّ فاطرَحوهُ فذهبُوا به فصعدُوا بهِ الجَبَل فقال : اللَّهُمَّ اكفنِيهمْ بمَا شئْت، فرجَف بِهمُ الجَبَلُ فسَقطُوا، وجَاءَ يمْشي إِلَى المَلِكِ، فقالَ لَهُ المَلكُ : ما فَعَلَ أَصحَابكَ ؟ فقالَ : كفانيهِمُ الله تعالَى، فدفعَهُ إِلَى نَفَرَ منْ أصْحَابِهِ فقال : اذهبُوا بِهِ فاحملُوه في قُرقُور وَتَوسَّطُوا بِهِ البحْرَ، فإنْ رَجَعَ عنْ دينِهِ وإلاَّ فَاقْذفُوهُ، فذَهبُوا بِهِ فقال : اللَّهُمَّ اكفنِيهمْ بمَا شِئْت، فانكَفَأَتْ بِهِمُ السَّفينةُ فغرِقوا، وجَاءَ يمْشِي إِلَى المَلِك . فقالَ لَهُ الملِكُ : ما فَعَلَ أَصحَابكَ ؟ فقال : كفانِيهمُ الله تعالَى . فقالَ للمَلِكِ إنَّك لسْتَ بقَاتِلِي حتَّى تفْعلَ ما آمُركَ بِهِ . قال : ما هُوَ ؟ قال : تجْمَعُ النَّاس في صَعيدٍ واحدٍ، وتصلُبُني عَلَى جذْعٍ، ثُمَّ خُذ سهْماً مِنْ كنَانتِي، ثُمَّ ضعِ السَّهْمِ في كَبدِ القَوْسِ ثُمَّ قُل : بسْمِ اللَّهِ ربِّ الغُلاَمِ ثُمَّ ارمِنِي، فإنَّكَ إذَا فَعَلْتَ ذَلِكَ قَتَلْتنِي . فجَمَع النَّاس في صَعيدٍ واحِدٍ، وصلَبَهُ عَلَى جذْعٍ، ثُمَّ أَخَذَ سهْماً منْ كنَانَتِهِ، ثُمَّ وضَعَ السَّهمَ في كبِدِ القَوْسِ، ثُمَّ قَالَ : بِسْم اللَّهِ رَبِّ الغُلامِ، ثُمَّ رمَاهُ فَوقَعَ السَّهمُ في صُدْغِهِ، فَوضَعَ يدَهُ في صُدْغِهِ فمَاتَ . فقَالَ النَّاسُ : آمَنَّا بِرَبِّ الغُلاَمِ، فَأُتِىَ المَلكُ فَقِيلُ لَهُ : أَرَأَيْت ما كُنْت تحْذَر قَدْ وَاللَّه نَزَلَ بِك حَذرُكَ . قدْ آمنَ النَّاسُ . فأَمَرَ بِالأخدُودِ بأفْوَاهِ السِّكك فخُدَّتَ وَأضْرِمَ فِيها النيرانُ وقالَ : مَنْ لَمْ يرْجَعْ عنْ دينِهِ فأقْحمُوهُ فِيهَا أوْ قيلَ لَهُ : اقْتَحمْ ، ففعَلُوا حتَّى جَاءتِ امرَأَةٌ ومعَهَا صَبِيٌّ لهَا ، فَتقَاعَسَت أنْ تَقعَ فِيهَا، فقال لَهَا الغُلاَمُ : يا أمَّاهْ اصبِرِي فَإِنَّكَ عَلَي الحَقِّ » روَاهُ مُسْلَمٌ
সুহাইব রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের মধ্যে এক রাজা ছিল। তার একজন যাদুকর ছিল। সে যখন বৃদ্ধ হয়ে গেল তখন সে রাজাকে বলল, ‘আমিতো বৃদ্ধ হয়ে গেছি। একজন বালককে আমার কাছে পাঠিয়ে দিন। আমি তাকে যাদু বিদ্যা শিক্ষা দেব। রাজা একজন বালককে তার কাছে যাদু শেখার জন্য পাঠাল। তার যাতায়াতের পথে ছিল একজন খৃষ্টান ধর্মযাজক। সে বালকটি তার কাছে বসে তার কথা-বার্তা শুনে মুগ্ধ হয়ে গেল। আর এভাবে সে যাদুকরের কাছে আসার সময় ধর্মযাজকের কাছে বসতে লাগল। যাদুকরের কাছে যেতে দেরী করার কারণে যাদুকর তাকে মারপিট করত। ফলে সে ধর্মযাজকের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ দিল। ধর্মযাজক বলল, যখন তোমার যাদুকরের ভয় হবে তখন তাকে বলবে, ‘আমার পরিবার আমাকে আটকে রেখে ছিল।’ যখন তোমাদের পরিবারের ভয় করবে তখন তাদের বলবে, ‘যাদুকর আমাকে আটকে রেখেছিল।’ একদিন এক বন্য জন্তু এসে মানুষের যাতায়াতের পথ বন্ধ করে রাখল। বালকটি তখন ভাবল, আজ আমি জেনে নেব ধর্মযাজক শ্রেষ্ঠ না যাদুকর শ্রেষ্ঠ। সে এক খন্ড পাথর হাতে নিয়ে বলল, ‘হে আল্লাহ! ধর্মযাজকের কাজ যদি যাদুকরের কাজ থেকে আপনার কাছে বেশী পছন্দের হয় তাহলে এ জন্তুটিকে মেরে ফেলুন, যাতে মানুষ পথ দিয়ে চলাচল করতে পারে। তারপর সে পাথরটি নিক্ষেপ করল। জন্তুটি মারা গেল। আর মানুষের পথের বাধা দূর হয়ে গেল। তারপর সে ধর্মযাজকের কাছে এসে ঘটনাটি বর্ণনা করল। ধর্মযাজক তাকে বলল, ‘হে আমার প্রিয় বৎস! আজ তুমি আমার থেকে শ্রেষ্ঠ হয়ে গেলে। আমার মতে তোমার ব্যাপারটা একটা বিশেষ পর্যায়ে পৌছে গেছে। তুমি শীঘ্রই পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। যদি তুমি পরীক্ষায় পতিত হও তবে আমার কথা কাউকে বলবে না।’ বালকটি অন্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে সুস্থ করে দিত এবং মানুষের সকল ধরণের রোগের চিকিৎসা করত। রাজার পরিষদবর্গের একজন অন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সে বালকটির কাছে অনেক উপঢৌকন নিয়ে হাজির হয়ে বলল, ‘তুমি যদি আমাকে আরোগ্য করে দাও তাহলে এ সকল উপঢৌকন সবই তোমার।’ বালকটি বলল, ‘আমি কাউকে আরোগ্য দান করি না। মহান আল্লাহ আরোগ্য দান করেন। আপনি যদি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেন তবে আমি আপনার জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করব। ফলে তিনি তোমাকে আরোগ্য দান করবেন।’ সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করল। মহান আল্লাহ তাকে আরোগ্য দান করলেন। তারপর সে আবার রাজদরবারে গিয়ে বসল। রাজা তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘কে তোমাকে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিল?’ সে উত্তর দিল, ‘আমার প্রভূ।’ রাজা বলল, ‘আমি ছাড়া তোমার প্রভূ আছে?’ সে বলল, ‘আল্লাহ-ই হলেন আপনার ও আমার প্রভু।’ তারপর রাজা তাকে গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে লাগল। অবশেষে সে বালকটির কথা বলে দিল। তখন বালকটিকে রাজদরবারে আনা হল। রাজা তাকে বলল, ‘হে প্রিয় বৎস! তোমার যাদুর খবর আমার কাছে পৌছেছে যে, তুমি নাকি অন্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে সুস্থ করে থাক। এবং আরো অনেক কিছু করতে পার।’ বালকটি বলল, ‘আমি কাউকে সুস্থ করি না। আরোগ্য ও সুস্থতা তো আল্লাহ তাআলাই দান করেন।’ রাজা তাকে (আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের অপরাধে) গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে লাগল। অবশেষে বালকটি ধর্মযাজকের কথা বলে দিল। তারপর ধর্মযাজককে ধরে আনা হল। তাকে বলা হল, ‘তুমি তোমার ধর্ম থেকে ফিরে আস।’ সে ধর্ম থেকে ফিরে আসতে অস্বীকার করল। তখন রাজা করাত আনতে নির্দেশ দিল। তারপর করাতটি তার মাথার উপর চালিয়ে তাকে চিরে দু টুকরা করা হল। তারপর বাদশার সে পরিষদ সদস্যকে হাজির করা হল। তাকেও বলা হল, ‘তুমি তোমার ধর্ম থেকে ফিরে আস।’ সেও অস্বীকার করল। ফলে তাকে করাত দিয়ে দু টুকরো করা হল। তারপর বালকটিকে আনা হল। তাকেও বলা হল, ‘তুমি তোমার ধর্ম থেকে ফিরে আস।’ সেও অস্বীকার করল। তারপর রাজা তাকে কয়েকজন লোকের হাতে সোপর্দ করে বলল, তাকে অমুক পাহাড়ের চূড়ায় উঠাও। উঠিয়ে তাকে তার ধর্ম ত্যাগ করতে বলবে। যদি করে, তো ঠিক আছে। না করলে তাকে সেখান থেকে নীচে ফেলে দেবে। তারা তাকে নিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করল। সে বলল, ‘হে আল্লাহ! আপনি যেভাবে চান আমাকে তাদের হাত থেকে মুক্তি দান করুন।’ অত:পর পাহাড়টি কেঁপে উঠল। তারা পাহাড় থেকে পড়ে গেল। আর বালকটি হেটে রাজার কাছে আসল। রাজা তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার সঙ্গীদের খবর কি?’ সে বলল, ‘তাদের বিরুদ্ধে আমার পক্ষে আল্লাহ তাআলাই যথেষ্ট।’ তখন রাজা তাকে তার কয়েকজন সঙ্গীর কাছে অর্পন করে বলল, ‘ছোট নৌকায় উঠিয়ে তাকে সমুদ্রের মাঝে নিয়ে যাও। তারপর সে যদি তার ধর্ম ত্যাগ না করে তাহলে সমুদ্রে ফেলে দেবে।’ তারা তাকে নিয়ে চলে গেল। বালকটি দুআ করল, ‘হে আল্লাহ! আপনি যেভাবে চান আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করুন।’ রাজার নৌকা তাদের সকলকে নিয়ে নিমজ্জিত হল। তারা সকলে ডুবে মারা গেল আর বালকটি আবার রাজার কাছে ফিরে আসল। রাজা তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার সাথের লোকদের খবর কী?’ সে বলল, ‘তাদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করতে আল্লাহ তাআলাই যথেষ্ট।’ তারপর সে রাজাকে বলল, ‘আপনি আমার নির্দেশ মত কাজ না করলে আমাকে হত্যা করতে পারবেন না।’ বাদশা জিজ্ঞেস করল, ‘সেটা কী কাজ?’ সে বলল, ‘একটি ময়দানে লোকদের জমায়েত করবেন। তারপর আমাকে শুলে চরাবেন। তারপর আমার তীরদানি থেকে একটি তীর বের করে ধনুকের মাঝে রেখে ‘বিছমিল্লাহি রাবিবল গোলাম’ (বালকটির প্রতিপালক আল্লাহর নামে তীর ছুড়ছি) বলে তীর মারবেন। এরকম করলে আপনি আমাকে হত্যা করতে পারবেন।’
রাজা একটি ময়দানে লোকদের একত্রিত করে বালকটিকে শুলে চড়াল। তীর থেকে একটি তীর বের করে ধনুকের মাঝে রেখে বলল, ‘বিছমিল্লাহি রাবিবল গোলাম’ (বালকটির প্রতিপালক আল্লাহর নামে তীর ছুড়ছি) বলে তীর ছুড়ল। তীরটি বালকটির কানের কাছে মাথায় গিয়ে লাগল এবং সেখানে তার হাত রাখল। তারপর সে মারা গেল। এ দেখে উপস্থিত লোকেরা বলতে লাগল, আমরা বালকটির প্রতিপালকের উপর ঈমান গ্রহণ করলাম। এ খবর রাজার কাছে পৌছলে তাকে বলা হল, যে ভয় আপনার ছিল তাই হয়ে গেল। সকল মানুষ আল্লাহর প্রতি ঈমান আনল। রাজা তখন তার লোকজনকে রাস্তার পার্শ্বে বড় বড় গর্ত খোড়ার নির্দেশ দিল। তারপর গর্ত খনন করে তাতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হল। রাজা ঘোষণা দিল, যে ধর্ম ত্যাগ না করবে তাকে তোমরা এ গর্তে ফেলে দেবে। যারা আল্লাহর প্রতি ঈমানের ধর্ম ত্যাগ করল না, তাদের আগুনে ফেলে দেয়া হল। এমনি করে একজন মহিলা তার শিশুসহ আসল। সে ধর্ম ত্যাগ করবে, না আগুনে যাবে এ বিষয়ে ইতস্তত করছিল। শিশুটি তার মাকে বলল, ‘মা! (ধর্ম ত্যাগ না করে) আপনি ধৈর্য ধারণ করুন। কারণ আপনি সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত।’
বর্ণনায়ঃ মুসলিম
فَبيْنَمَا هُو عَلَى ذَلِكَ إذْ أتَى عَلَى دابَّةٍ عظِيمَة قدْ حَبَسَت النَّاس فقال : اليوْمَ أعْلَمُ السَّاحِرُ أفْضَل أم الرَّاهبُ أفْضلَ ؟ فأخَذَ حجَراً فقالَ : اللهُمَّ إنْ كان أمْرُ الرَّاهب أحَبَّ إلَيْكَ مِنْ أَمْرِ السَّاحِرِ فاقتُلْ هَذِهِ الدَّابَّة حتَّى يمْضِيَ النَّاسُ، فرَماها فقتَلَها ومَضى النَّاسُ، فأتَى الرَّاهب فأخبَرهُ . فقال لهُ الرَّاهبُ : أىْ بُنيَّ أَنْتَ اليوْمَ أفْضلُ منِّي، قدْ بلَغَ مِنْ أمْركَ مَا أَرَى، وإِنَّكَ ستُبْتَلَى ، فإنِ ابْتُليتَ فَلاَ تدُلَّ عليَّ، وكانَ الغُلامُ يبْرئُ الأكْمةَ والأبرصَ، ويدَاوي النَّاس مِنْ سائِرِ الأدوَاءِ . فَسَمعَ جلِيسٌ للملِكِ كانَ قدْ عمِىَ، فأتَاهُ بهداياَ كثيرَةٍ فقال : ما ههُنَا لك أجْمَعُ إنْ أنْتَ شفَيْتني، فقال إنِّي لا أشفِي أحَداً، إِنَّمَا يشْفِي الله تعَالى، فإنْ آمنْتَ بِاللَّهِ تعَالَى دعوْتُ الله فشَفاكَ، فآمَنَ باللَّه تعَالى فشفَاهُ اللَّهُ تَعَالَى، فأتَى المَلِكَ فجَلَس إليْهِ كما كانَ يجْلِسُ فقالَ لَهُ المَلكُ : منْ ردَّ علَيْك بصَرك؟ قال : ربِّي . قَالَ : ولكَ ربٌّ غيْرِي ؟ قَالَ : رَبِّي وربُّكَ الله، فأَخَذَهُ فلَمْ يزلْ يُعذِّبُهُ حتَّى دلَّ عَلَى الغُلاَمِ فجئَ بِالغُلاَمِ، فقال لهُ المَلكُ : أىْ بُنَيَّ قدْ بَلَغَ منْ سِحْرِك مَا تبْرئُ الأكمَهَ والأبرَصَ وتَفْعلُ وَتفْعَلُ فقالَ : إِنَّي لا أشْفي أَحَداً، إنَّما يشْفي الله تَعَالَى، فأخَذَهُ فَلَمْ يزَلْ يعذِّبُهُ حتَّى دلَّ عَلَى الرَّاهبِ، فجِئ بالرَّاهِبِ فقيل لَهُ : ارجَعْ عنْ دِينكَ، فأبَى، فدَعا بالمنْشَار فوُضِع المنْشَارُ في مفْرقِ رأْسِهِ، فشقَّهُ حتَّى وقَعَ شقَّاهُ، ثُمَّ جِئ بجَلِيسِ المَلكِ فقِلَ لَهُ : ارجِعْ عنْ دينِكَ فأبَى، فوُضِعَ المنْشَارُ في مفْرِقِ رَأسِهِ، فشقَّهُ به حتَّى وقَع شقَّاهُ، ثُمَّ جئ بالغُلامِ فقِيل لَهُ : ارجِعْ عنْ دينِكَ، فأبَى، فدَفعَهُ إِلَى نَفَرٍ منْ أصْحابِهِ فقال : اذهبُوا بِهِ إِلَى جبَلِ كَذَا وكذَا فاصعدُوا بِهِ الجبلَ، فـإذَا بلغتُمْ ذروتهُ فإنْ رجعَ عنْ دينِهِ وإِلاَّ فاطرَحوهُ فذهبُوا به فصعدُوا بهِ الجَبَل فقال : اللَّهُمَّ اكفنِيهمْ بمَا شئْت، فرجَف بِهمُ الجَبَلُ فسَقطُوا، وجَاءَ يمْشي إِلَى المَلِكِ، فقالَ لَهُ المَلكُ : ما فَعَلَ أَصحَابكَ ؟ فقالَ : كفانيهِمُ الله تعالَى، فدفعَهُ إِلَى نَفَرَ منْ أصْحَابِهِ فقال : اذهبُوا بِهِ فاحملُوه في قُرقُور وَتَوسَّطُوا بِهِ البحْرَ، فإنْ رَجَعَ عنْ دينِهِ وإلاَّ فَاقْذفُوهُ، فذَهبُوا بِهِ فقال : اللَّهُمَّ اكفنِيهمْ بمَا شِئْت، فانكَفَأَتْ بِهِمُ السَّفينةُ فغرِقوا، وجَاءَ يمْشِي إِلَى المَلِك . فقالَ لَهُ الملِكُ : ما فَعَلَ أَصحَابكَ ؟ فقال : كفانِيهمُ الله تعالَى . فقالَ للمَلِكِ إنَّك لسْتَ بقَاتِلِي حتَّى تفْعلَ ما آمُركَ بِهِ . قال : ما هُوَ ؟ قال : تجْمَعُ النَّاس في صَعيدٍ واحدٍ، وتصلُبُني عَلَى جذْعٍ، ثُمَّ خُذ سهْماً مِنْ كنَانتِي، ثُمَّ ضعِ السَّهْمِ في كَبدِ القَوْسِ ثُمَّ قُل : بسْمِ اللَّهِ ربِّ الغُلاَمِ ثُمَّ ارمِنِي، فإنَّكَ إذَا فَعَلْتَ ذَلِكَ قَتَلْتنِي . فجَمَع النَّاس في صَعيدٍ واحِدٍ، وصلَبَهُ عَلَى جذْعٍ، ثُمَّ أَخَذَ سهْماً منْ كنَانَتِهِ، ثُمَّ وضَعَ السَّهمَ في كبِدِ القَوْسِ، ثُمَّ قَالَ : بِسْم اللَّهِ رَبِّ الغُلامِ، ثُمَّ رمَاهُ فَوقَعَ السَّهمُ في صُدْغِهِ، فَوضَعَ يدَهُ في صُدْغِهِ فمَاتَ . فقَالَ النَّاسُ : آمَنَّا بِرَبِّ الغُلاَمِ، فَأُتِىَ المَلكُ فَقِيلُ لَهُ : أَرَأَيْت ما كُنْت تحْذَر قَدْ وَاللَّه نَزَلَ بِك حَذرُكَ . قدْ آمنَ النَّاسُ . فأَمَرَ بِالأخدُودِ بأفْوَاهِ السِّكك فخُدَّتَ وَأضْرِمَ فِيها النيرانُ وقالَ : مَنْ لَمْ يرْجَعْ عنْ دينِهِ فأقْحمُوهُ فِيهَا أوْ قيلَ لَهُ : اقْتَحمْ ، ففعَلُوا حتَّى جَاءتِ امرَأَةٌ ومعَهَا صَبِيٌّ لهَا ، فَتقَاعَسَت أنْ تَقعَ فِيهَا، فقال لَهَا الغُلاَمُ : يا أمَّاهْ اصبِرِي فَإِنَّكَ عَلَي الحَقِّ » روَاهُ مُسْلَمٌ
সুহাইব রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের মধ্যে এক রাজা ছিল। তার একজন যাদুকর ছিল। সে যখন বৃদ্ধ হয়ে গেল তখন সে রাজাকে বলল, ‘আমিতো বৃদ্ধ হয়ে গেছি। একজন বালককে আমার কাছে পাঠিয়ে দিন। আমি তাকে যাদু বিদ্যা শিক্ষা দেব। রাজা একজন বালককে তার কাছে যাদু শেখার জন্য পাঠাল। তার যাতায়াতের পথে ছিল একজন খৃষ্টান ধর্মযাজক। সে বালকটি তার কাছে বসে তার কথা-বার্তা শুনে মুগ্ধ হয়ে গেল। আর এভাবে সে যাদুকরের কাছে আসার সময় ধর্মযাজকের কাছে বসতে লাগল। যাদুকরের কাছে যেতে দেরী করার কারণে যাদুকর তাকে মারপিট করত। ফলে সে ধর্মযাজকের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ দিল। ধর্মযাজক বলল, যখন তোমার যাদুকরের ভয় হবে তখন তাকে বলবে, ‘আমার পরিবার আমাকে আটকে রেখে ছিল।’ যখন তোমাদের পরিবারের ভয় করবে তখন তাদের বলবে, ‘যাদুকর আমাকে আটকে রেখেছিল।’ একদিন এক বন্য জন্তু এসে মানুষের যাতায়াতের পথ বন্ধ করে রাখল। বালকটি তখন ভাবল, আজ আমি জেনে নেব ধর্মযাজক শ্রেষ্ঠ না যাদুকর শ্রেষ্ঠ। সে এক খন্ড পাথর হাতে নিয়ে বলল, ‘হে আল্লাহ! ধর্মযাজকের কাজ যদি যাদুকরের কাজ থেকে আপনার কাছে বেশী পছন্দের হয় তাহলে এ জন্তুটিকে মেরে ফেলুন, যাতে মানুষ পথ দিয়ে চলাচল করতে পারে। তারপর সে পাথরটি নিক্ষেপ করল। জন্তুটি মারা গেল। আর মানুষের পথের বাধা দূর হয়ে গেল। তারপর সে ধর্মযাজকের কাছে এসে ঘটনাটি বর্ণনা করল। ধর্মযাজক তাকে বলল, ‘হে আমার প্রিয় বৎস! আজ তুমি আমার থেকে শ্রেষ্ঠ হয়ে গেলে। আমার মতে তোমার ব্যাপারটা একটা বিশেষ পর্যায়ে পৌছে গেছে। তুমি শীঘ্রই পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। যদি তুমি পরীক্ষায় পতিত হও তবে আমার কথা কাউকে বলবে না।’ বালকটি অন্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে সুস্থ করে দিত এবং মানুষের সকল ধরণের রোগের চিকিৎসা করত। রাজার পরিষদবর্গের একজন অন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সে বালকটির কাছে অনেক উপঢৌকন নিয়ে হাজির হয়ে বলল, ‘তুমি যদি আমাকে আরোগ্য করে দাও তাহলে এ সকল উপঢৌকন সবই তোমার।’ বালকটি বলল, ‘আমি কাউকে আরোগ্য দান করি না। মহান আল্লাহ আরোগ্য দান করেন। আপনি যদি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেন তবে আমি আপনার জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করব। ফলে তিনি তোমাকে আরোগ্য দান করবেন।’ সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করল। মহান আল্লাহ তাকে আরোগ্য দান করলেন। তারপর সে আবার রাজদরবারে গিয়ে বসল। রাজা তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘কে তোমাকে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিল?’ সে উত্তর দিল, ‘আমার প্রভূ।’ রাজা বলল, ‘আমি ছাড়া তোমার প্রভূ আছে?’ সে বলল, ‘আল্লাহ-ই হলেন আপনার ও আমার প্রভু।’ তারপর রাজা তাকে গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে লাগল। অবশেষে সে বালকটির কথা বলে দিল। তখন বালকটিকে রাজদরবারে আনা হল। রাজা তাকে বলল, ‘হে প্রিয় বৎস! তোমার যাদুর খবর আমার কাছে পৌছেছে যে, তুমি নাকি অন্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে সুস্থ করে থাক। এবং আরো অনেক কিছু করতে পার।’ বালকটি বলল, ‘আমি কাউকে সুস্থ করি না। আরোগ্য ও সুস্থতা তো আল্লাহ তাআলাই দান করেন।’ রাজা তাকে (আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের অপরাধে) গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে লাগল। অবশেষে বালকটি ধর্মযাজকের কথা বলে দিল। তারপর ধর্মযাজককে ধরে আনা হল। তাকে বলা হল, ‘তুমি তোমার ধর্ম থেকে ফিরে আস।’ সে ধর্ম থেকে ফিরে আসতে অস্বীকার করল। তখন রাজা করাত আনতে নির্দেশ দিল। তারপর করাতটি তার মাথার উপর চালিয়ে তাকে চিরে দু টুকরা করা হল। তারপর বাদশার সে পরিষদ সদস্যকে হাজির করা হল। তাকেও বলা হল, ‘তুমি তোমার ধর্ম থেকে ফিরে আস।’ সেও অস্বীকার করল। ফলে তাকে করাত দিয়ে দু টুকরো করা হল। তারপর বালকটিকে আনা হল। তাকেও বলা হল, ‘তুমি তোমার ধর্ম থেকে ফিরে আস।’ সেও অস্বীকার করল। তারপর রাজা তাকে কয়েকজন লোকের হাতে সোপর্দ করে বলল, তাকে অমুক পাহাড়ের চূড়ায় উঠাও। উঠিয়ে তাকে তার ধর্ম ত্যাগ করতে বলবে। যদি করে, তো ঠিক আছে। না করলে তাকে সেখান থেকে নীচে ফেলে দেবে। তারা তাকে নিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করল। সে বলল, ‘হে আল্লাহ! আপনি যেভাবে চান আমাকে তাদের হাত থেকে মুক্তি দান করুন।’ অত:পর পাহাড়টি কেঁপে উঠল। তারা পাহাড় থেকে পড়ে গেল। আর বালকটি হেটে রাজার কাছে আসল। রাজা তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার সঙ্গীদের খবর কি?’ সে বলল, ‘তাদের বিরুদ্ধে আমার পক্ষে আল্লাহ তাআলাই যথেষ্ট।’ তখন রাজা তাকে তার কয়েকজন সঙ্গীর কাছে অর্পন করে বলল, ‘ছোট নৌকায় উঠিয়ে তাকে সমুদ্রের মাঝে নিয়ে যাও। তারপর সে যদি তার ধর্ম ত্যাগ না করে তাহলে সমুদ্রে ফেলে দেবে।’ তারা তাকে নিয়ে চলে গেল। বালকটি দুআ করল, ‘হে আল্লাহ! আপনি যেভাবে চান আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করুন।’ রাজার নৌকা তাদের সকলকে নিয়ে নিমজ্জিত হল। তারা সকলে ডুবে মারা গেল আর বালকটি আবার রাজার কাছে ফিরে আসল। রাজা তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার সাথের লোকদের খবর কী?’ সে বলল, ‘তাদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করতে আল্লাহ তাআলাই যথেষ্ট।’ তারপর সে রাজাকে বলল, ‘আপনি আমার নির্দেশ মত কাজ না করলে আমাকে হত্যা করতে পারবেন না।’ বাদশা জিজ্ঞেস করল, ‘সেটা কী কাজ?’ সে বলল, ‘একটি ময়দানে লোকদের জমায়েত করবেন। তারপর আমাকে শুলে চরাবেন। তারপর আমার তীরদানি থেকে একটি তীর বের করে ধনুকের মাঝে রেখে ‘বিছমিল্লাহি রাবিবল গোলাম’ (বালকটির প্রতিপালক আল্লাহর নামে তীর ছুড়ছি) বলে তীর মারবেন। এরকম করলে আপনি আমাকে হত্যা করতে পারবেন।’
রাজা একটি ময়দানে লোকদের একত্রিত করে বালকটিকে শুলে চড়াল। তীর থেকে একটি তীর বের করে ধনুকের মাঝে রেখে বলল, ‘বিছমিল্লাহি রাবিবল গোলাম’ (বালকটির প্রতিপালক আল্লাহর নামে তীর ছুড়ছি) বলে তীর ছুড়ল। তীরটি বালকটির কানের কাছে মাথায় গিয়ে লাগল এবং সেখানে তার হাত রাখল। তারপর সে মারা গেল। এ দেখে উপস্থিত লোকেরা বলতে লাগল, আমরা বালকটির প্রতিপালকের উপর ঈমান গ্রহণ করলাম। এ খবর রাজার কাছে পৌছলে তাকে বলা হল, যে ভয় আপনার ছিল তাই হয়ে গেল। সকল মানুষ আল্লাহর প্রতি ঈমান আনল। রাজা তখন তার লোকজনকে রাস্তার পার্শ্বে বড় বড় গর্ত খোড়ার নির্দেশ দিল। তারপর গর্ত খনন করে তাতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হল। রাজা ঘোষণা দিল, যে ধর্ম ত্যাগ না করবে তাকে তোমরা এ গর্তে ফেলে দেবে। যারা আল্লাহর প্রতি ঈমানের ধর্ম ত্যাগ করল না, তাদের আগুনে ফেলে দেয়া হল। এমনি করে একজন মহিলা তার শিশুসহ আসল। সে ধর্ম ত্যাগ করবে, না আগুনে যাবে এ বিষয়ে ইতস্তত করছিল। শিশুটি তার মাকে বলল, ‘মা! (ধর্ম ত্যাগ না করে) আপনি ধৈর্য ধারণ করুন। কারণ আপনি সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত।’
বর্ণনায়ঃ মুসলিম
১- আমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের দায়ী ও ধর্মানুসারীরা আল্লাহর প্রতি ঈমান ও তার ধর্মের জন্য কতখানি ত্যাগ স্বীকার করেছেন তার একটি চিত্র হল এ হাদীস। এটা ইসলামপূর্ব যুগের কয়েকজন খৃষ্টানের ঘটনা। আমাদের সকলেরই জানা যে, ইসলাম আগমনের পূর্বে খৃষ্ট ধর্ম বাতিল ধর্ম ছিল না।
২- আল-কুরআনের সূরা আল-বুরুজে উল্লেখিত আসহাবুল উখদূদের আলোচনার ব্যাখ্যা হল এ হাদীস।
৩- রোগ থেকে আরোগ্য ও সুস্থতা দান করেন আল্লাহ রাববুল আলামীন। তিনি ছাড়া এ ক্ষমতা অন্য কারো নেই। ডাক্তার, ঔষধ ইত্যাদি বাহ্যিক উপকরণ মাত্র।
৪- আল্লাহর অলীদের কারামত একটি সত্য বিষয়।
৫- অন্তরে দৃঢ় ঈমান থাকার পর কারো অত্যাচার উৎপীড়নের ভয়ে, জীবন রক্ষার উদ্দেশ্যে ঈমান গোপন করা অথবা ঈমান - ইসলাম গ্রহণের কথা অস্বীকার করার অনুমতি আছে। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন ইরশাদ করেনঃ
مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنَ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ . ( النحل : 106)
‘‘কেহ ঈমান আনার পর আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং কুফরীর জন্য হৃদয় উম্মুক্ত রাখলে তার উপর আপতিত হবে আল্লাহর গযব এবং তার জন্য রয়েছে মহাশাস্তি; তবে তার জন্য নয়, যাকে কুফরীর জন্য বাধ্য করা হয়েছে কিন্তু তার হৃদয় ঈমানে অবিচল।’’ (সূরা আন- নাহল : ১০৬)
কিন্তু হাদীসে বর্ণিত এ তিন ব্যক্তি তাদের জীবন রক্ষার জন্য ঈমানের কথা অস্বীকার করতে পারতেন, কিন্তু কেন করলেন না?
বাধ্য হয়ে ঈমানের কথা অস্বীকার করার দুটো অবস্থা হতে পারে। এক. যদি ঈমানের কথা অস্বীকার করা হয় তাহলে এর প্রভাব শুধু নিজের উপর বর্তায়। অন্যের উপর বা সমাজে এর প্রভাব পড়ে না। ঈমানের বিষয়টি গোপন রাখার কারণে অন্য লোকেরা ধর্ম থেকে ফিরে যায় না।
দুই. যদি ঈমানের কথা অস্বীকার করা হয়, তা হলে সমাজে এর প্রভাব পড়ে। অন্য লোকেরা বলবে, অমুক মহান ব্যক্তি ইসলাম ত্যাগ করেছে আমরা করলে দোষের কী?
প্রথম অবস্থায় ঈমান বা ইসলামের কথা গোপন করা বৈধ। কিন্তু দ্বিতীয় অবস্থায় ঈমান বা ইসলামের কথা গোপন করা উচিত নয়। কারণ এতে অন্যের ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা - না থাকার প্রশ্ন জড়িত। বর্ণিত হাদীসে দেখা যায়, যদি ধর্ম যাজক বা বালকটি ঈমানের কথা অস্বীকার করত, তাহলে অনেক মানুষ -যারা গোপনে আল্লাহ ও তাঁর মনোনীত ধর্মের প্রতি ঈমান এনেছিল তারা - ঈমান ত্যাগ করত। যেমন আমরা বালকটির আত্নত্যাগের কারণে দেখতে পেলাম, উপস্থিত লোকেরা তাদের ঈমানের ঘোষণা দিয়েছে।
কাজেই ঈমান ও ইসলামের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী বা অনুসরনীয় ব্যক্তিবর্গ কোন প্রতিকুল অবস্থায় নিজেদের ঈমান ও ইসলামের কথা গোপন করতে পারেন না বা ইসলামকে অস্বীকার করা হয় এমন কোন কথা বলতে পারেন না।
আল্লাহ তাআলার লাখো-কোটি প্রশংসা যে, তিনি পূর্ববর্তী উম্মতের মত এ উম্মতে মুহাম্মাদীর মধ্যেও হাজার হাজার নিবেদিত প্রাণ আলেম-উলামা, ইমাম-ফকীহ, মুজাদ্দিদ-দায়ী সৃষ্টি করেছেন। যারা ইসলামের সামান্য বিষয়েও নিজেরদের জীবন বাজি রেখেছেন। তাগুতকে কোন রকম ছাড়ই দেননি। ফাঁসীর মঞ্চে উঠে কিংবা নিশ্চিত মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়েও বুক উচু করে আল্লাহর দীনের কথা বলে গেছেন। আল্লাহ রাববুল আলামীন তাদের আত্ন-ত্যাগ কবুল করুন। ইসলাম ও তার অনুসারীদের পক্ষ থেকে তাদের তিনি উত্তম প্রতিদানে ভুষিত করুন।
৬- আল্লাহর দীনের জন্য এ বালকের আত্নত্যাগের দৃষ্টান্তকে সামনে রেখে অনেকে ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রুদের বিরুদ্ধে আত্নঘাতী আক্রমনকে সমর্থন করেন। আজকে বিভিন্ন মুসলিম দেশে আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে আত্নঘাতী হামলা লক্ষ করা যায়। আসলে এ হাদীসটিকে প্রমাণ হিসাবে নিয়ে বর্তমানের আত্নঘাতী হামলাগুলো সমর্থন করার অবকাশ নেই। কারণ, এ বালকটি আত্নত্যাগের কারণে অনেকগুলো মানুষ আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল। আর বালকটি নিজেকে নিজে হত্যা করেনি। অন্যের আঘাতে সে নিহত হয়েছে। যদি ইসলাম ও মুসলমানদের কল্যাণের জন্য আত্নঘাতী হামলা করা হয়ে থাকে তাহলে অন্য কথা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় আত্নঘাতী হামলাগুলো ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনে। এর দ্বারা ইসলামের শত্রুরা আরো বেশী বর্বরতা, পাশবিকতা নিয়ে মুসলমানদের উপর হামলা করে। কাজেই বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় শত্রুদের বিরুদ্ধে আত্নঘাতী হামলা করা সঠিক নয়। এ হাদীস এবং ইসলামের প্রথম যুগেও সাহাবায়ে কেরাম ও ইসলামের সৈনিকদের আত্নত্যাগের বিরল দৃষ্টান্ত রয়েছে। কিন্তু কোথাও তারা নিজেদের অস্ত্র দিয়ে নিজেদের হত্যা করেননি। আর বর্তমানের আত্নঘাতী হামলায় নিরাপরাধ লোকজন হতাহত বেশী হয়ে থাকে। কোন অবস্থাতেই নিরাপরাধ মানুষ হত্যা করা বা তা সমথর্ন করা ইসলাম অনুমোদন করে না। কোন কোন ইসলামী ব্যক্তিত্ব বর্তমানের আত্নঘাতী হামলাগুলো অনুমোদিত বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন ঠিকই। কিন্তু অধিকাংশ আলেম-উলামা শরীয়ত বিশেষজ্ঞদের অভিমত হল আত্নঘাতী হামলা বৈধ হওয়ার জন্য কতগুলো শর্তের প্রয়োজন। শর্তগুলো হলঃ
এক. আত্নঘাতী হামলা দিয়ে ইসলাম মুসলমানদের উপকার হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। দুই. কোন নিরাপরাধ লোক হতাহত হতে পারবে না। তিন. কোন গোপন ব্যক্তি বা সংগঠনের নির্দেশে আত্নঘাতী হামলা চালানো যাবে না। শুধুমাত্র দেশ ও জাতির বৈধ সরকার বা সরকারের অবর্তমানে সরকারের বিকল্প প্রতিষ্ঠান আত্নঘাতী হামলার নির্দেশ দেয়ার অধিকার রাখে। চার. আত্নঘাতী হামলা ছাড়া যখন লক্ষ্য অর্জনের কোন বিকল্প না থাকে, তখন হামলার বৈধতার প্রশ্ন আসবে। যখন বিভিন্নভাবে শত্রুর সাথে লড়াই করার পথ খোলা থাকে তখন আত্নঘাতী হামলার কোন যৌক্তিকতা থাকে না। এ চারটি শর্তের সবগুলো যখন উপস্থিত থাকবে তখনই দুশমনের বিরুদ্ধে আত্নঘাতী আক্রমন বৈধ বলে বিবেচিত হবে। এ সকল শর্তের প্রতিটির বিষয়ে কুরআন ও সহীহ হাদীসের প্রমাণ রয়েছে।
৭- আলোচ্য বিষয়ের শিরোনাম হল ধৈর্য ও সবর। এ হাদীসের প্রতিটি বাক্যে রয়েছে ধৈর্য-সবরের বিরল দৃষ্টান্ত। সর্বশেষে দেখা যায়, শিশুটি তার মাকে ধৈর্য ধারণ করে নিজের ঈমানের উপর অটল থেকে নিশ্চিত মৃত্যুকে বরণ করতে উপদেশ দিয়েছিল।
৮- ইমাম কুরতুবী রহ. বলেন, বালকটির নাম ছিল আব্দুল্লাহ বিন সামের।
৯- ইবনে আববাস বলেন, ‘বাদশা ছিল নাজরানের বাদশা।’ নাজরান হল বর্তমান সৌদী আরবের দক্ষিণাঞ্চলের একটি প্রদেশ। এ ঘটনা সেখানে সংঘটিত হয়েছিল বলে অধিকাংশ তাফসীরবিদ মত প্রকাশ করেছেন।
২- আল-কুরআনের সূরা আল-বুরুজে উল্লেখিত আসহাবুল উখদূদের আলোচনার ব্যাখ্যা হল এ হাদীস।
৩- রোগ থেকে আরোগ্য ও সুস্থতা দান করেন আল্লাহ রাববুল আলামীন। তিনি ছাড়া এ ক্ষমতা অন্য কারো নেই। ডাক্তার, ঔষধ ইত্যাদি বাহ্যিক উপকরণ মাত্র।
৪- আল্লাহর অলীদের কারামত একটি সত্য বিষয়।
৫- অন্তরে দৃঢ় ঈমান থাকার পর কারো অত্যাচার উৎপীড়নের ভয়ে, জীবন রক্ষার উদ্দেশ্যে ঈমান গোপন করা অথবা ঈমান - ইসলাম গ্রহণের কথা অস্বীকার করার অনুমতি আছে। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন ইরশাদ করেনঃ
مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنَ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ . ( النحل : 106)
‘‘কেহ ঈমান আনার পর আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং কুফরীর জন্য হৃদয় উম্মুক্ত রাখলে তার উপর আপতিত হবে আল্লাহর গযব এবং তার জন্য রয়েছে মহাশাস্তি; তবে তার জন্য নয়, যাকে কুফরীর জন্য বাধ্য করা হয়েছে কিন্তু তার হৃদয় ঈমানে অবিচল।’’ (সূরা আন- নাহল : ১০৬)
কিন্তু হাদীসে বর্ণিত এ তিন ব্যক্তি তাদের জীবন রক্ষার জন্য ঈমানের কথা অস্বীকার করতে পারতেন, কিন্তু কেন করলেন না?
বাধ্য হয়ে ঈমানের কথা অস্বীকার করার দুটো অবস্থা হতে পারে। এক. যদি ঈমানের কথা অস্বীকার করা হয় তাহলে এর প্রভাব শুধু নিজের উপর বর্তায়। অন্যের উপর বা সমাজে এর প্রভাব পড়ে না। ঈমানের বিষয়টি গোপন রাখার কারণে অন্য লোকেরা ধর্ম থেকে ফিরে যায় না।
দুই. যদি ঈমানের কথা অস্বীকার করা হয়, তা হলে সমাজে এর প্রভাব পড়ে। অন্য লোকেরা বলবে, অমুক মহান ব্যক্তি ইসলাম ত্যাগ করেছে আমরা করলে দোষের কী?
প্রথম অবস্থায় ঈমান বা ইসলামের কথা গোপন করা বৈধ। কিন্তু দ্বিতীয় অবস্থায় ঈমান বা ইসলামের কথা গোপন করা উচিত নয়। কারণ এতে অন্যের ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা - না থাকার প্রশ্ন জড়িত। বর্ণিত হাদীসে দেখা যায়, যদি ধর্ম যাজক বা বালকটি ঈমানের কথা অস্বীকার করত, তাহলে অনেক মানুষ -যারা গোপনে আল্লাহ ও তাঁর মনোনীত ধর্মের প্রতি ঈমান এনেছিল তারা - ঈমান ত্যাগ করত। যেমন আমরা বালকটির আত্নত্যাগের কারণে দেখতে পেলাম, উপস্থিত লোকেরা তাদের ঈমানের ঘোষণা দিয়েছে।
কাজেই ঈমান ও ইসলামের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী বা অনুসরনীয় ব্যক্তিবর্গ কোন প্রতিকুল অবস্থায় নিজেদের ঈমান ও ইসলামের কথা গোপন করতে পারেন না বা ইসলামকে অস্বীকার করা হয় এমন কোন কথা বলতে পারেন না।
আল্লাহ তাআলার লাখো-কোটি প্রশংসা যে, তিনি পূর্ববর্তী উম্মতের মত এ উম্মতে মুহাম্মাদীর মধ্যেও হাজার হাজার নিবেদিত প্রাণ আলেম-উলামা, ইমাম-ফকীহ, মুজাদ্দিদ-দায়ী সৃষ্টি করেছেন। যারা ইসলামের সামান্য বিষয়েও নিজেরদের জীবন বাজি রেখেছেন। তাগুতকে কোন রকম ছাড়ই দেননি। ফাঁসীর মঞ্চে উঠে কিংবা নিশ্চিত মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়েও বুক উচু করে আল্লাহর দীনের কথা বলে গেছেন। আল্লাহ রাববুল আলামীন তাদের আত্ন-ত্যাগ কবুল করুন। ইসলাম ও তার অনুসারীদের পক্ষ থেকে তাদের তিনি উত্তম প্রতিদানে ভুষিত করুন।
৬- আল্লাহর দীনের জন্য এ বালকের আত্নত্যাগের দৃষ্টান্তকে সামনে রেখে অনেকে ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রুদের বিরুদ্ধে আত্নঘাতী আক্রমনকে সমর্থন করেন। আজকে বিভিন্ন মুসলিম দেশে আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে আত্নঘাতী হামলা লক্ষ করা যায়। আসলে এ হাদীসটিকে প্রমাণ হিসাবে নিয়ে বর্তমানের আত্নঘাতী হামলাগুলো সমর্থন করার অবকাশ নেই। কারণ, এ বালকটি আত্নত্যাগের কারণে অনেকগুলো মানুষ আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল। আর বালকটি নিজেকে নিজে হত্যা করেনি। অন্যের আঘাতে সে নিহত হয়েছে। যদি ইসলাম ও মুসলমানদের কল্যাণের জন্য আত্নঘাতী হামলা করা হয়ে থাকে তাহলে অন্য কথা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় আত্নঘাতী হামলাগুলো ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনে। এর দ্বারা ইসলামের শত্রুরা আরো বেশী বর্বরতা, পাশবিকতা নিয়ে মুসলমানদের উপর হামলা করে। কাজেই বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় শত্রুদের বিরুদ্ধে আত্নঘাতী হামলা করা সঠিক নয়। এ হাদীস এবং ইসলামের প্রথম যুগেও সাহাবায়ে কেরাম ও ইসলামের সৈনিকদের আত্নত্যাগের বিরল দৃষ্টান্ত রয়েছে। কিন্তু কোথাও তারা নিজেদের অস্ত্র দিয়ে নিজেদের হত্যা করেননি। আর বর্তমানের আত্নঘাতী হামলায় নিরাপরাধ লোকজন হতাহত বেশী হয়ে থাকে। কোন অবস্থাতেই নিরাপরাধ মানুষ হত্যা করা বা তা সমথর্ন করা ইসলাম অনুমোদন করে না। কোন কোন ইসলামী ব্যক্তিত্ব বর্তমানের আত্নঘাতী হামলাগুলো অনুমোদিত বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন ঠিকই। কিন্তু অধিকাংশ আলেম-উলামা শরীয়ত বিশেষজ্ঞদের অভিমত হল আত্নঘাতী হামলা বৈধ হওয়ার জন্য কতগুলো শর্তের প্রয়োজন। শর্তগুলো হলঃ
এক. আত্নঘাতী হামলা দিয়ে ইসলাম মুসলমানদের উপকার হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। দুই. কোন নিরাপরাধ লোক হতাহত হতে পারবে না। তিন. কোন গোপন ব্যক্তি বা সংগঠনের নির্দেশে আত্নঘাতী হামলা চালানো যাবে না। শুধুমাত্র দেশ ও জাতির বৈধ সরকার বা সরকারের অবর্তমানে সরকারের বিকল্প প্রতিষ্ঠান আত্নঘাতী হামলার নির্দেশ দেয়ার অধিকার রাখে। চার. আত্নঘাতী হামলা ছাড়া যখন লক্ষ্য অর্জনের কোন বিকল্প না থাকে, তখন হামলার বৈধতার প্রশ্ন আসবে। যখন বিভিন্নভাবে শত্রুর সাথে লড়াই করার পথ খোলা থাকে তখন আত্নঘাতী হামলার কোন যৌক্তিকতা থাকে না। এ চারটি শর্তের সবগুলো যখন উপস্থিত থাকবে তখনই দুশমনের বিরুদ্ধে আত্নঘাতী আক্রমন বৈধ বলে বিবেচিত হবে। এ সকল শর্তের প্রতিটির বিষয়ে কুরআন ও সহীহ হাদীসের প্রমাণ রয়েছে।
৭- আলোচ্য বিষয়ের শিরোনাম হল ধৈর্য ও সবর। এ হাদীসের প্রতিটি বাক্যে রয়েছে ধৈর্য-সবরের বিরল দৃষ্টান্ত। সর্বশেষে দেখা যায়, শিশুটি তার মাকে ধৈর্য ধারণ করে নিজের ঈমানের উপর অটল থেকে নিশ্চিত মৃত্যুকে বরণ করতে উপদেশ দিয়েছিল।
৮- ইমাম কুরতুবী রহ. বলেন, বালকটির নাম ছিল আব্দুল্লাহ বিন সামের।
৯- ইবনে আববাস বলেন, ‘বাদশা ছিল নাজরানের বাদশা।’ নাজরান হল বর্তমান সৌদী আরবের দক্ষিণাঞ্চলের একটি প্রদেশ। এ ঘটনা সেখানে সংঘটিত হয়েছিল বলে অধিকাংশ তাফসীরবিদ মত প্রকাশ করেছেন।
7 - عَنْ أَنَسٍ رَضِي اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : مَرَّ النَّبِيُّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم بِامْرَأَةٍ تَبْكِي عِنْدَ قَبْرٍ فَقَال : «اتَّقِي الله وَاصْبِرِي » فَقَالَتْ : إِلَيْكَ عَنِّي ، فَإِنِّكَ لَمْ تُصَبْ بمُصِيبتى، وَلَمْ تعْرفْهُ، فَقيلَ لَها : إِنَّه النَّبِيُّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، فَأَتتْ بَابَ النَّبِّي صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم، فلَمْ تَجِد عِنْدَهُ بَوَّابينَ، فَقالتْ : لَمْ أَعْرِفْكَ، فقالَ : « إِنَّما الصَّبْرُ عِنْدَ الصَّدْمَةِ الأولَى » متفقٌ عليه . وفي رواية لمُسْلمٍ : « تَبْكِي عَلَى صَبيٍّ لَهَا »
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যে একটি কবরের কাছে বসে কাঁদছিল। তিনি তাকে বললেনঃ ‘‘আল্লাহ-কে ভয় কর ও ধৈর্য ধারণ কর।’’ মহিলাটি তাঁকে বলল, ‘তুমি আমার কাছ থেকে সরে যাও! আমার উপর যে বিপদ এসেছে তাতো তোমার কাছে আসেনি (তুমি আমার বিপদের কি বুঝবে)।’ আসলে মহিলাটি রাসূল-কে চিনতে পারেনি। পরে তাকে বলা হল, এ ব্যক্তি হলেন আল্লাহর রাসূল। সে তৎক্ষণাৎ আল্লাহর রাসূলের দরজায় আসল, সেখানে কোন দারোয়ান দেখতে পেল না। সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলল, ‘আমি আপনাকে চিনতে পারিনি।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘‘ধৈর্য ধারণ তো প্রথম আঘাতের সময়ই হয়ে থাকে।’’
বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
তবে মুসলিমের বর্ণনায় একটি বাক্য বেশি আছে, তাহল : ‘মহিলাটি তার মৃত সন্তানের জন্য কাঁদছিল।’
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যে একটি কবরের কাছে বসে কাঁদছিল। তিনি তাকে বললেনঃ ‘‘আল্লাহ-কে ভয় কর ও ধৈর্য ধারণ কর।’’ মহিলাটি তাঁকে বলল, ‘তুমি আমার কাছ থেকে সরে যাও! আমার উপর যে বিপদ এসেছে তাতো তোমার কাছে আসেনি (তুমি আমার বিপদের কি বুঝবে)।’ আসলে মহিলাটি রাসূল-কে চিনতে পারেনি। পরে তাকে বলা হল, এ ব্যক্তি হলেন আল্লাহর রাসূল। সে তৎক্ষণাৎ আল্লাহর রাসূলের দরজায় আসল, সেখানে কোন দারোয়ান দেখতে পেল না। সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলল, ‘আমি আপনাকে চিনতে পারিনি।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘‘ধৈর্য ধারণ তো প্রথম আঘাতের সময়ই হয়ে থাকে।’’
বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
তবে মুসলিমের বর্ণনায় একটি বাক্য বেশি আছে, তাহল : ‘মহিলাটি তার মৃত সন্তানের জন্য কাঁদছিল।’
১- কবরের কাছে কান্নাকাটি করা মোটেও উচিত নয়। এটা ধৈর্যের পরিপন্থী। তবে নীরবে চোখে পানি আসলে তাতে অসুবিধা নেই। কিন্তু আহাজারী, চিৎকার, শব্দ করে কান্নাকাটি করা উচিত নয়। যেমন হাদীসে এসেছেঃ -
عن أنس رضى الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : كنت نهيتكم عن زيارة القبور، ألا فزورها فإنها ترق القلب وتدمع العين وتذكر الآخرة، ولا تقولوا هجراً . صحيح الجامع رقم ৪৫৮৪
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, হ্যাঁ এখন তোমরা কবর যিয়ারত করবে। কারণ কবর যিয়ারত হৃদয়কে কোমল করে, নয়নকে অশ্রুসিক্ত করে ও পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে তোমরা শোক ও বেদনা প্রকাশ করতে সেখানে কিছু বলবে না।’’
সহীহ আল-জামে হাদীস নং ৪৫৮৪
২- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কারো ব্যাপারে নসীহত করতে কৃপণতা করেননি। যেমন তিনি মসজিদে, সমাবেশে মানুষকে নসীহত করেছেন। এমনিভাবে পথে-ঘাটে মানুষকে কোন অসঙ্গত কাজ করতে দেখলে বারণ করেছেন। উপদেশ দিয়েছেন। সঠিক পথটি বাতলে দিয়েছেন। সৎ কাজের আদেশ করেছেন। অন্যায় কাজে নিষেধ করেছেন।
৩- মানুষের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ হল, ‘আল্লাহকে ভয় কর।’
৪- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ধৈর্যের একটি দৃষ্টান্ত। মহিলাটিকে ভাল উপদেশ দেয়ার পরও সে রাসূলের সাথে অসঙ্গত কথা বলেছে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার কোন উত্তর দেননি। এমনকি মহিলাটি লজ্জা পাবে মনে করে নিজের পরিচয়টিও দেননি।
৫- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন। কিন্তু তার বাড়ীতে কোন দারোয়ান ছিল না। যে কোন মানুষ তার সুখ-দুঃখের কথা যখন ইচ্ছা তখন, সরাসরি বলার জন্য তাঁর কাছে উপস্থিত হতে পারত।
৬- বিপদ আসার সাথে সাথেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং অসংযত আচরণ থেকে বিরত থাকাটাই হল আসল ধৈর্য। বিপদ আসার পর হা-হুতোশ, আহাজারী করে বিপদ হাল্কা হয়ে যাওয়ার পরে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার নাম ধৈর্য নয়। এটাই এ হাদীসের মূল শিক্ষা। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছে, ‘প্রথম আঘাতের সময়-ই হল ধৈর্য।’
৭- মহিলাদের কবর যিয়ারতের বৈধতা প্রমাণিত হল এ হাদীস দিয়ে। এখানে আমরা দেখতে পাই, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মহিলাকে বলেননি, তুমি কেন কবর যিয়ারত করতে আসলে? যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলেন, তখন এ নিষেধাজ্ঞা নারী পুরুষ সকলের জন্যই ছিল। আবার যখন কবর যিয়ারত করতে অনুমতি দিয়েছেন, তখন সে অনুমতি নারী পুরুষ সকলের জন্যই প্রযোজ্য। উপরের হাদীসে বর্ণিত কবর যিয়ারতের অনুমতির যে সকল কারণ উল্লেখ করা হয়েছে তা যেমন পুরুষের জন্য প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন নারীরও। তাই নারীদের জন্য কবর যিয়ারত করার অনুমতি আছে, যেমন আছে জানাযার নামাজে তাদের অংশ গ্রহণের অনুমতি।
عن أنس رضى الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : كنت نهيتكم عن زيارة القبور، ألا فزورها فإنها ترق القلب وتدمع العين وتذكر الآخرة، ولا تقولوا هجراً . صحيح الجامع رقم ৪৫৮৪
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, হ্যাঁ এখন তোমরা কবর যিয়ারত করবে। কারণ কবর যিয়ারত হৃদয়কে কোমল করে, নয়নকে অশ্রুসিক্ত করে ও পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে তোমরা শোক ও বেদনা প্রকাশ করতে সেখানে কিছু বলবে না।’’
সহীহ আল-জামে হাদীস নং ৪৫৮৪
২- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কারো ব্যাপারে নসীহত করতে কৃপণতা করেননি। যেমন তিনি মসজিদে, সমাবেশে মানুষকে নসীহত করেছেন। এমনিভাবে পথে-ঘাটে মানুষকে কোন অসঙ্গত কাজ করতে দেখলে বারণ করেছেন। উপদেশ দিয়েছেন। সঠিক পথটি বাতলে দিয়েছেন। সৎ কাজের আদেশ করেছেন। অন্যায় কাজে নিষেধ করেছেন।
৩- মানুষের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ হল, ‘আল্লাহকে ভয় কর।’
৪- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ধৈর্যের একটি দৃষ্টান্ত। মহিলাটিকে ভাল উপদেশ দেয়ার পরও সে রাসূলের সাথে অসঙ্গত কথা বলেছে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার কোন উত্তর দেননি। এমনকি মহিলাটি লজ্জা পাবে মনে করে নিজের পরিচয়টিও দেননি।
৫- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন। কিন্তু তার বাড়ীতে কোন দারোয়ান ছিল না। যে কোন মানুষ তার সুখ-দুঃখের কথা যখন ইচ্ছা তখন, সরাসরি বলার জন্য তাঁর কাছে উপস্থিত হতে পারত।
৬- বিপদ আসার সাথে সাথেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং অসংযত আচরণ থেকে বিরত থাকাটাই হল আসল ধৈর্য। বিপদ আসার পর হা-হুতোশ, আহাজারী করে বিপদ হাল্কা হয়ে যাওয়ার পরে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার নাম ধৈর্য নয়। এটাই এ হাদীসের মূল শিক্ষা। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছে, ‘প্রথম আঘাতের সময়-ই হল ধৈর্য।’
৭- মহিলাদের কবর যিয়ারতের বৈধতা প্রমাণিত হল এ হাদীস দিয়ে। এখানে আমরা দেখতে পাই, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মহিলাকে বলেননি, তুমি কেন কবর যিয়ারত করতে আসলে? যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলেন, তখন এ নিষেধাজ্ঞা নারী পুরুষ সকলের জন্যই ছিল। আবার যখন কবর যিয়ারত করতে অনুমতি দিয়েছেন, তখন সে অনুমতি নারী পুরুষ সকলের জন্যই প্রযোজ্য। উপরের হাদীসে বর্ণিত কবর যিয়ারতের অনুমতির যে সকল কারণ উল্লেখ করা হয়েছে তা যেমন পুরুষের জন্য প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন নারীরও। তাই নারীদের জন্য কবর যিয়ারত করার অনুমতি আছে, যেমন আছে জানাযার নামাজে তাদের অংশ গ্রহণের অনুমতি।
8 - عَنْ أبي هَرَيرَةَ رَضي اللَّه عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قالَ : « يَقولُ اللَّهُ تَعَالَى : مَا لِعَبْدِي المُؤْمِنِ عِنْدِي جَزَاءٌ إِذَا قَبضْتُ صَفِيَّهُ مِنْ أَهْلِ الدُّنْيَا ثُمَّ احْتَسَبهُ إِلاَّ الجَنَّة » رواه البخاري .
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ ‘‘আমার মুমিন বান্দার আপন জনকে যখন আমি দুনিয়া থেকে নিয়ে যাই, তখন যদি সে ইহতেসাবের সাথে ধৈর্য ধারণ করে, তাহলে আমার কাছে তার জন্য প্রতিদান অবশ্যই জান্নাত।’’বর্ণনায়ঃ বুখারী
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ ‘‘আমার মুমিন বান্দার আপন জনকে যখন আমি দুনিয়া থেকে নিয়ে যাই, তখন যদি সে ইহতেসাবের সাথে ধৈর্য ধারণ করে, তাহলে আমার কাছে তার জন্য প্রতিদান অবশ্যই জান্নাত।’’বর্ণনায়ঃ বুখারী
১- এটি একটি হাদীসে কুদসী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মুখের ভাষায় আল্লাহ তাআলার বক্তব্য প্রকাশ পেয়েছে।
২- আপনজনের ইন্তেকালে ধৈর্য ধারণ করার ফজিলত ও তাতে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে এ হাদীসে।
৩- ইহতেসাবের সাথে ধৈর্য ধারণ করতে দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইহতেসাব হল, ‘আল্লাহর জন্য ও তাঁর থেকে প্রতিদান পাওয়ার’ আশা ও বিশ্বাস ধারণ করা। সকল প্রকার ইবাদত-বন্দেগী ও সৎকর্মে ইহতেসাব অবলম্বন করা উচিত। ধৈর্যের ক্ষেত্রে ইহতেসাবের মর্ম হল, আমি যে এ বিপদে ধৈর্য ধারণ করছি এটা আল্লাহ-কে সন্তুষ্ট করার জন্যই করছি এবং এর প্রতিদান আমি তাঁর কাছেই আশা করছি। এ সংকল্প ধারণ করা হল, ধৈর্যের ক্ষেত্রে ইহতেসাব।
২- আপনজনের ইন্তেকালে ধৈর্য ধারণ করার ফজিলত ও তাতে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে এ হাদীসে।
৩- ইহতেসাবের সাথে ধৈর্য ধারণ করতে দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইহতেসাব হল, ‘আল্লাহর জন্য ও তাঁর থেকে প্রতিদান পাওয়ার’ আশা ও বিশ্বাস ধারণ করা। সকল প্রকার ইবাদত-বন্দেগী ও সৎকর্মে ইহতেসাব অবলম্বন করা উচিত। ধৈর্যের ক্ষেত্রে ইহতেসাবের মর্ম হল, আমি যে এ বিপদে ধৈর্য ধারণ করছি এটা আল্লাহ-কে সন্তুষ্ট করার জন্যই করছি এবং এর প্রতিদান আমি তাঁর কাছেই আশা করছি। এ সংকল্প ধারণ করা হল, ধৈর্যের ক্ষেত্রে ইহতেসাব।
9 - عَنْ عائشَةَ رضي اللَّهُ عنها أنَهَا سَأَلَتْ رسولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم عَن الطَّاعونِ ، فَأَخبَرَهَا أَنَهُ كَانَ عَذَاباً يَبْعَثُهُ اللَّه تعالى عَلَى منْ يَشَاءُ ، فَجَعَلَهُ اللَّهُ تعالَى رحْمةً للْمُؤْمنِينَ ، فَلَيْسَ مِنْ عَبْدٍ يَقَعُ في الطَّاعُون فَيَمْكُثُ في بلَدِهِ صَابِراً مُحْتَسِباً يَعْلَمُ أَنَّهُ لاَ يُصِيبُهُ إِلاَّ مَا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ إِلاَّ كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ الشَّهِيدِ » رواه البخاري .
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি প্লেগ রোগ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেনঃ ‘‘এটা ছিল আল্লাহ তাআলার একটি শাস্তি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে এতে আক্রান্ত করতেন, তার কাছে এটা পাঠাতেন। অতঃপর তিনি এটাকে মুমিনদের জন্য রহমতে পরিণত করেছেন। অতএব যে কোন মুমিন বান্দা প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয়ে ধৈর্য ও আল্লাহর কাছে প্রতিদানের আশা করে এবং এ কথা জেনে বুঝে নিজ এলাকায় অবস্থান করে যে, আল্লাহ যার তাকদীরে লিখে রেখেছেন শুধু সে-ই এতে আক্রান্ত হবে, তাহলে সে (প্লেগ রোগে মৃত্যু বরণ করলে) শহীদের অনুরূপ প্রতিদান পাবে।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি প্লেগ রোগ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেনঃ ‘‘এটা ছিল আল্লাহ তাআলার একটি শাস্তি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে এতে আক্রান্ত করতেন, তার কাছে এটা পাঠাতেন। অতঃপর তিনি এটাকে মুমিনদের জন্য রহমতে পরিণত করেছেন। অতএব যে কোন মুমিন বান্দা প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয়ে ধৈর্য ও আল্লাহর কাছে প্রতিদানের আশা করে এবং এ কথা জেনে বুঝে নিজ এলাকায় অবস্থান করে যে, আল্লাহ যার তাকদীরে লিখে রেখেছেন শুধু সে-ই এতে আক্রান্ত হবে, তাহলে সে (প্লেগ রোগে মৃত্যু বরণ করলে) শহীদের অনুরূপ প্রতিদান পাবে।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী
১- প্লেগ মহামারী মূলত মানুষের জন্য একটি শাস্তি বা আজাব। কিন্তু তা ঈমানদারদের জন্য শাস্তি নয়, বরং রহমত।
২- কোন এলাকায় প্লেগ বা অন্য কোন মহামারী ছড়িয়ে পড়লে সে স্থান ত্যাগ না করে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে নিজ এলাকায় অবস্থান করা উত্তম। এটা উচ্চ স্তরের ধৈর্যের পরিচয়।
৩- এ অবস্থায় সে প্লেগে মারা গেলে শহীদি মর্যাদা লাভ করবে।
৪- ধৈর্য ধারণ করার সাথে সাথে ইহতেসাব বা আল্লাহর কাছে প্রতিদান পাওয়ার নিয়্যত ও আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল থাকলে সে বিশাল পুরস্কারের অধিকারী হবে।
৫- আল্লাহর পথে শহীদ হওয়ার মর্যাদা ও পুরস্কারের মহত্ব ও তৎপর্যের প্রতি ঈঙ্গিত রয়েছে এ হাদীসে।
২- কোন এলাকায় প্লেগ বা অন্য কোন মহামারী ছড়িয়ে পড়লে সে স্থান ত্যাগ না করে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে নিজ এলাকায় অবস্থান করা উত্তম। এটা উচ্চ স্তরের ধৈর্যের পরিচয়।
৩- এ অবস্থায় সে প্লেগে মারা গেলে শহীদি মর্যাদা লাভ করবে।
৪- ধৈর্য ধারণ করার সাথে সাথে ইহতেসাব বা আল্লাহর কাছে প্রতিদান পাওয়ার নিয়্যত ও আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল থাকলে সে বিশাল পুরস্কারের অধিকারী হবে।
৫- আল্লাহর পথে শহীদ হওয়ার মর্যাদা ও পুরস্কারের মহত্ব ও তৎপর্যের প্রতি ঈঙ্গিত রয়েছে এ হাদীসে।
10 - وعَنْ أَنسٍ رضي اللَّه عنه قال : سَمِعْتُ رسول اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم يقولُ : « إنَّ اللَّه عَزَّ وجَلَّ قَالَ : إِذَا ابْتَلَيْتُ عَبدِي بحبيبتَيْهِ فَصبَرَ عَوَّضْتُهُ مِنْهُمَا الْجنَّةَ » يُريدُ عينيْه ، رواه البخاريُّ .
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘‘যখন আমি আমার বান্দাকে দুটো প্রিয় বস্ত্তর ব্যাপারে পরীক্ষা করি, অতঃপর সে তাতে ধৈর্য ধারন করে, তখন আমি সে দুটো বস্ত্তর পরিবর্তে তাকে জান্নাত দান করি।’’ দুটো প্রিয় বস্ত্ত দ্বারা তিনি দুটো চোখ-কে বুঝিয়েছেন।
বর্ণনায়ঃ বুখারী
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘‘যখন আমি আমার বান্দাকে দুটো প্রিয় বস্ত্তর ব্যাপারে পরীক্ষা করি, অতঃপর সে তাতে ধৈর্য ধারন করে, তখন আমি সে দুটো বস্ত্তর পরিবর্তে তাকে জান্নাত দান করি।’’ দুটো প্রিয় বস্ত্ত দ্বারা তিনি দুটো চোখ-কে বুঝিয়েছেন।
বর্ণনায়ঃ বুখারী
১- বর্ণিত হাদীসটি হাদীসে কুদসী। এতে আল্লাহ তাআলারই কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে।
২- কোন ঈমানদার মানুষের দৃষ্টিশক্তি চলে গেলে তা আল্লাহর রাববুল আলামীনের পক্ষ থেকে বিশেষ পরীক্ষা বলে ধরে নেয়া হবে।
৩- হাদীসে দুটো চোখ-কে হাবীব বা প্রিয়তম বলা হয়েছে। এতে চোখ ও তার রক্ষণাবেক্ষনের গুরুত্ব প্রকাশ পেয়েছে।
৪- কোন ঈমানদার দৃষ্টি শক্তি চলে যাওয়ার পরীক্ষার সম্মুখীন হলে তাকে ধৈর্য ধারন করতে হবে। তাকে মনে করতে হবে, আল্লাহর পক্ষ থেকে এ পরীক্ষার প্রতিদান ও ফলাফল আমি লাভ করব। আমি তার সিদ্ধান্তেই রাজী ও সন্তুষ্ট থাকলাম। দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ায় আল্লাহ তাআলার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই। তিনি কেন আমার থেকে এ নেআমাত নিয়ে গেলেন? অন্য কোন মানুষকে তিনি কেন দেখলেন না? এ ধরণের কথা-বার্তা বলা যাবে না। এমনিভাবে হা-হুতাশ, আহাজারী, আক্ষেপ করা ঠিক নয়। বলতে হবে, আল্লাহ যা নিয়ে গেছেন তা তাঁরই দান ছিল। তিনি যা আমাকে দিয়েছেন তা তাঁরই। তিনি নিজ অনুগ্রহে আমাকে এর প্রতিদান ও বিনিময় দেবেন।
৫- যে সকল ঈমানদার ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তি চলে গেছে এ হাদীসটি তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সুসংবাদ।
৬- এ হাদীসটি ধৈর্য ধারনের পুরস্কার সম্পর্কে আলোচিত। কেহ আল্লাহ তাআলার জন্য, তাঁরই কাছে প্রতিদান পাওয়ার আশায় ধৈর্য ধারন করলে তার জন্য রয়েছে আল্লাহর কাছে বিরাট পুরস্কার। আল্লাহ তাআলা নিজেই বলেনঃ
إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ . الزمر : ১০
‘‘ধৈর্যশীলদেরই তো বিনা হিসাবে পুরস্কার দেয়া হবে।’’ সূরা যুমার : ১০
২- কোন ঈমানদার মানুষের দৃষ্টিশক্তি চলে গেলে তা আল্লাহর রাববুল আলামীনের পক্ষ থেকে বিশেষ পরীক্ষা বলে ধরে নেয়া হবে।
৩- হাদীসে দুটো চোখ-কে হাবীব বা প্রিয়তম বলা হয়েছে। এতে চোখ ও তার রক্ষণাবেক্ষনের গুরুত্ব প্রকাশ পেয়েছে।
৪- কোন ঈমানদার দৃষ্টি শক্তি চলে যাওয়ার পরীক্ষার সম্মুখীন হলে তাকে ধৈর্য ধারন করতে হবে। তাকে মনে করতে হবে, আল্লাহর পক্ষ থেকে এ পরীক্ষার প্রতিদান ও ফলাফল আমি লাভ করব। আমি তার সিদ্ধান্তেই রাজী ও সন্তুষ্ট থাকলাম। দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ায় আল্লাহ তাআলার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই। তিনি কেন আমার থেকে এ নেআমাত নিয়ে গেলেন? অন্য কোন মানুষকে তিনি কেন দেখলেন না? এ ধরণের কথা-বার্তা বলা যাবে না। এমনিভাবে হা-হুতাশ, আহাজারী, আক্ষেপ করা ঠিক নয়। বলতে হবে, আল্লাহ যা নিয়ে গেছেন তা তাঁরই দান ছিল। তিনি যা আমাকে দিয়েছেন তা তাঁরই। তিনি নিজ অনুগ্রহে আমাকে এর প্রতিদান ও বিনিময় দেবেন।
৫- যে সকল ঈমানদার ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তি চলে গেছে এ হাদীসটি তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সুসংবাদ।
৬- এ হাদীসটি ধৈর্য ধারনের পুরস্কার সম্পর্কে আলোচিত। কেহ আল্লাহ তাআলার জন্য, তাঁরই কাছে প্রতিদান পাওয়ার আশায় ধৈর্য ধারন করলে তার জন্য রয়েছে আল্লাহর কাছে বিরাট পুরস্কার। আল্লাহ তাআলা নিজেই বলেনঃ
إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ . الزمر : ১০
‘‘ধৈর্যশীলদেরই তো বিনা হিসাবে পুরস্কার দেয়া হবে।’’ সূরা যুমার : ১০
11 - وعنْ عطاءِ بْن أَبي رَباحٍ قالَ : قالَ لِي ابْنُ عبَّاسٍ رضي اللَّهُ عنهُمَا ألا أريكَ امْرَأَةً مِن أَهْلِ الجَنَّة ؟ فَقُلت : بلَى ، قَالَ : هذِهِ المْرأَةُ السوْداءُ أَتَتِ النبيَّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم فقالَتْ : إِنِّي أُصْرَعُ ، وإِنِّي أَتكَشَّفُ ، فَادْعُ اللَّه تعالى لِي قَالَ : « إِن شئْتِ صَبَرْتِ ولكِ الْجنَّةُ، وإِنْ شِئْتِ دعَوْتُ اللَّه تَعالَى أَنْ يُعافِيَكِ » فقَالتْ : أَصْبرُ ، فَقالت : إِنِّي أَتَكشَّفُ ، فَادْعُ اللَّه أَنْ لا أَتكشَّفَ ، فَدَعَا لَهَا . متَّفقٌ عليْهِ .
আতা ইবনে আবী রাবাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে ইবনে আববাস রা. বলেন, আমি কী তোমাকে জান্নাতের অধিকারী একজন মহিলা দেখাব? আমি বললাম, অবশ্যই দেখাবেন। তিনি বললেন, এই কালো মহিলাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে বলেছিল, ‘আমি মৃগী রোগে ভুগছি এবং আমার কাপর খুলে যায়। অতএব আপনি আমার জন্য দুআ করুন।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘‘তুমি যদি ধৈর্য ধারণ করতে পার, তাহলে তোমার জন্য রয়েছে জান্নাত। আর যদি তুমি চাও তাহলে আমি আল্লাহ তাআলার কাছে দুআ করব, আল্লাহ যেন তোমাকে সুস্থ করে দেন।’’ সে বলল, ‘আমি ধৈর্য ধারণ করব, কিন্তু আমি যেন উলঙ্গ হয়ে না যাই সে জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করুন।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জন্য দুআ করলেন।
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
আতা ইবনে আবী রাবাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে ইবনে আববাস রা. বলেন, আমি কী তোমাকে জান্নাতের অধিকারী একজন মহিলা দেখাব? আমি বললাম, অবশ্যই দেখাবেন। তিনি বললেন, এই কালো মহিলাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে বলেছিল, ‘আমি মৃগী রোগে ভুগছি এবং আমার কাপর খুলে যায়। অতএব আপনি আমার জন্য দুআ করুন।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘‘তুমি যদি ধৈর্য ধারণ করতে পার, তাহলে তোমার জন্য রয়েছে জান্নাত। আর যদি তুমি চাও তাহলে আমি আল্লাহ তাআলার কাছে দুআ করব, আল্লাহ যেন তোমাকে সুস্থ করে দেন।’’ সে বলল, ‘আমি ধৈর্য ধারণ করব, কিন্তু আমি যেন উলঙ্গ হয়ে না যাই সে জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করুন।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জন্য দুআ করলেন।
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
১- এ মহিলাকে ইবনে আববাস জান্নাতী এ জন্য বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জান্নাত লাভের সংবাদ দিয়েছেন। এ ছাড়া অন্য কেহ কাউকে জান্নাতী বা কোন ঈমানদারকে জাহান্নামী বলে অভিহিত করতে পারে না।
২- ঈমানদারের যে কোন রোগ বা শোক, বিপদ বা মুসীবত সব কিছুইতে রয়েছে তার জন্য পুরস্কার।
৩- এ মহিলা সাহাবী দুনিয়াতে এ দুরারোগ্য ব্যধি থেকে মুক্তি লাভের চেয়ে আখেরাতে জান্নাত লাভ দেয়াকে প্রাধান্য দিয়েছেন। দুনিয়া সুখ শান্তি ও ভোগের স্থান নয়। সুখ শান্তি ও সীমাহীন ভোগের স্থান হল জান্নাত।
৪- শালীনতা ঈমানদারদের একটি বিশাল গুণ। মৃগী রোগে যখন আক্রান্ত হত তখন এ মহিলার কাপড় খুলে যেত। তাতে তার কোন দোষ বা পাপ ছিল না। তবুও সে লজ্জা ও শালীনতাকে পছন্দ করেছে।
৫- এ মহিলা সাহাবী তার রোগের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দুআ করতে অনুরোধ করেছে। তাই কোন নেককার আলেম বা দায়ীর কাছে দুআ করতে অনুরোধ করা জায়েয।
৬- যে কোন রোগ ব্যধিতে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা গ্রহণ করা সুন্নাত। তবে চিকিৎসা গ্রহণ না করে যদি আল্লাহরই কাছে প্রতিদান ও পুরস্কার পাওয়ার আশায় ধৈর্য ধারণ করে তাহলে তা হবে তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতার একটি উচ্চ স্তর। যারা এ স্তরে উপনীত হতে পারবেন তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন বলে সহীহ হাদীসে এসেছে।
২- ঈমানদারের যে কোন রোগ বা শোক, বিপদ বা মুসীবত সব কিছুইতে রয়েছে তার জন্য পুরস্কার।
৩- এ মহিলা সাহাবী দুনিয়াতে এ দুরারোগ্য ব্যধি থেকে মুক্তি লাভের চেয়ে আখেরাতে জান্নাত লাভ দেয়াকে প্রাধান্য দিয়েছেন। দুনিয়া সুখ শান্তি ও ভোগের স্থান নয়। সুখ শান্তি ও সীমাহীন ভোগের স্থান হল জান্নাত।
৪- শালীনতা ঈমানদারদের একটি বিশাল গুণ। মৃগী রোগে যখন আক্রান্ত হত তখন এ মহিলার কাপড় খুলে যেত। তাতে তার কোন দোষ বা পাপ ছিল না। তবুও সে লজ্জা ও শালীনতাকে পছন্দ করেছে।
৫- এ মহিলা সাহাবী তার রোগের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দুআ করতে অনুরোধ করেছে। তাই কোন নেককার আলেম বা দায়ীর কাছে দুআ করতে অনুরোধ করা জায়েয।
৬- যে কোন রোগ ব্যধিতে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা গ্রহণ করা সুন্নাত। তবে চিকিৎসা গ্রহণ না করে যদি আল্লাহরই কাছে প্রতিদান ও পুরস্কার পাওয়ার আশায় ধৈর্য ধারণ করে তাহলে তা হবে তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতার একটি উচ্চ স্তর। যারা এ স্তরে উপনীত হতে পারবেন তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন বলে সহীহ হাদীসে এসেছে।
12 - وعنْ أَبي عبْدِ الرَّحْمنِ عبْدِ اللَّه بنِ مسْعُودٍ رضيَ اللَّه عنه قَال : كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلى رسولِ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم يحْكيِ نَبيّاً من الأَنْبِياءِ ، صلواتُ اللَّهِ وسَلاَمُهُ عَليْهم ، ضَرَبُهُ قَوْمُهُ فَأَدْمـوْهُ وهُو يمْسحُ الدَّم عنْ وجْهِهِ ، يقُولُ : « اللَّهمَّ اغْفِرْ لِقَوْمي فإِنَّهُمْ لا يعْلمُونَ » متفقٌ عَلَيْه .
আবু আব্দুররহমান আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দিকে তাকিয়ে আছি, আর তিনি কোন এক নবীর ঘটনা বর্ণনা করছেন যে, তার জাতি তাকে মেরে রক্তাক্ত করে দিয়েছিল আর তিনি নিজের মুখমন্ডল থেকে রক্ত মুছে যাচ্ছিলেন আর বলছিলেন, ‘‘হে আল্লাহ! আমার জাতিকে ক্ষমা করে দিন, কারণ তারা বুঝে না।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
আবু আব্দুররহমান আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দিকে তাকিয়ে আছি, আর তিনি কোন এক নবীর ঘটনা বর্ণনা করছেন যে, তার জাতি তাকে মেরে রক্তাক্ত করে দিয়েছিল আর তিনি নিজের মুখমন্ডল থেকে রক্ত মুছে যাচ্ছিলেন আর বলছিলেন, ‘‘হে আল্লাহ! আমার জাতিকে ক্ষমা করে দিন, কারণ তারা বুঝে না।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
১- এ ঘটনাটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিজের জীবনের ঘটনা। তায়েফ অঞ্চলে দাওয়াতী সফরে তিনি এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
২- নবী ও রাসূলদের ধৈর্যের একটি দৃষ্টান্ত দেয়া হয়েছে এ হাদীসে।
৩- নবী ও রাসূল হয়েও যখন আল্লাহর দীনের দাওয়াতের ক্ষেত্রে এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন তখন সাধারণ মানুষদের মধ্যে যারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন তাদের এ ধরনের পরিস্থিতির মোকাবেলা ও তাতে ধৈর্য ধারন করতে প্রস্ত্তত থাকতে হবে।
৪- নিজের কাহিনী নিজের নামে না বলে তৃতীয় ব্যক্তির নামে প্রকাশ করার বৈধতা প্রমাণিত। এতে নিজের অহংকার, গর্ব ও কৃতিত্ব প্রকাশ করা হয় না।
৫- নবী ও রাসূলগণ নিজে জাতির প্রতি কত দয়াদ্র ও কল্যাণকামী ছিলেন। তাদের দ্বারা অত্যাচারিত, নির্যাতিত ও নিগৃহীত হয়েও তাদের জন্য দুআ করেছেন। ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। বিশেষ করে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মধ্যে এ গুণটি সবচেয়ে বেশী ছিল।
২- নবী ও রাসূলদের ধৈর্যের একটি দৃষ্টান্ত দেয়া হয়েছে এ হাদীসে।
৩- নবী ও রাসূল হয়েও যখন আল্লাহর দীনের দাওয়াতের ক্ষেত্রে এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন তখন সাধারণ মানুষদের মধ্যে যারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন তাদের এ ধরনের পরিস্থিতির মোকাবেলা ও তাতে ধৈর্য ধারন করতে প্রস্ত্তত থাকতে হবে।
৪- নিজের কাহিনী নিজের নামে না বলে তৃতীয় ব্যক্তির নামে প্রকাশ করার বৈধতা প্রমাণিত। এতে নিজের অহংকার, গর্ব ও কৃতিত্ব প্রকাশ করা হয় না।
৫- নবী ও রাসূলগণ নিজে জাতির প্রতি কত দয়াদ্র ও কল্যাণকামী ছিলেন। তাদের দ্বারা অত্যাচারিত, নির্যাতিত ও নিগৃহীত হয়েও তাদের জন্য দুআ করেছেন। ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। বিশেষ করে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মধ্যে এ গুণটি সবচেয়ে বেশী ছিল।
13 - وَعنْ أَبي سَعيدٍ وأَبي هُرَيْرة رضي اللَّه عَنْهُمَا عن النَّبيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قَالَ : «مَا يُصِيبُ الْمُسْلِمَ مِنْ نَصَبٍ وَلاَ وَصَبٍ وَلاَ هَمٍّ وَلاَ حَزَن وَلاَ أَذًى وَلاَ غمٍّ ، حتَّى الشَّوْكَةُ يُشَاكُها إِلاَّ كفَّر اللَّه بهَا مِنْ خطَايَاه » متفقٌ عليه .
আবু সাঈদ খুদরী ও আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘মুসলিম ব্যক্তিকে যে কোন ক্লান্তি, ব্যধি, দুশ্চিন্তা, উদ্বিগ্নতা, দুঃখ-কষ্ট ও অস্থিরতা আক্রান্ত করে এমনকি একটি কাঁটা বিধলেও এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার পাপসমূহ মিটিয়ে দেন।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
আবু সাঈদ খুদরী ও আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘মুসলিম ব্যক্তিকে যে কোন ক্লান্তি, ব্যধি, দুশ্চিন্তা, উদ্বিগ্নতা, দুঃখ-কষ্ট ও অস্থিরতা আক্রান্ত করে এমনকি একটি কাঁটা বিধলেও এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার পাপসমূহ মিটিয়ে দেন।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
১- মুসলমানের যে কোন বিপদ-মুসীবত তা যত ছোট হোক কিংবা বড়, তা কখনো বৃথা যায় না।
২- মুসলমানের প্রতিটি দুঃখ-কষ্ট, বিপদ-মুসীবতকে আল্লাহ পাপসমূহের কাফফারা হিসাবে গ্রহণ করে থাকেন। এর বিনিময়ে আল্লাহ তার পাপরাশিকে ক্ষমা করে দেন।
৩- প্রতিটি বিপদ-মুসীবতে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। তাহলেই তো এর আলোচ্য বিনিময় আল্লাহ তাআলার কাছে থেকে লাভ করা যাবে। পরিচ্ছেদ শিরোনামের সাথে হাদীসটির সম্পর্ক এখানেই। আর এ জন্য এ হাদীসটিকে ইমাম নববী ধৈর্য-সবর অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন।
৪- এ হাদীসটি মুসলমানের মর্যাদা ও ফজিলতের একটি দিক প্রমাণ করে।
২- মুসলমানের প্রতিটি দুঃখ-কষ্ট, বিপদ-মুসীবতকে আল্লাহ পাপসমূহের কাফফারা হিসাবে গ্রহণ করে থাকেন। এর বিনিময়ে আল্লাহ তার পাপরাশিকে ক্ষমা করে দেন।
৩- প্রতিটি বিপদ-মুসীবতে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। তাহলেই তো এর আলোচ্য বিনিময় আল্লাহ তাআলার কাছে থেকে লাভ করা যাবে। পরিচ্ছেদ শিরোনামের সাথে হাদীসটির সম্পর্ক এখানেই। আর এ জন্য এ হাদীসটিকে ইমাম নববী ধৈর্য-সবর অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন।
৪- এ হাদীসটি মুসলমানের মর্যাদা ও ফজিলতের একটি দিক প্রমাণ করে।
14 - وعن ابْن مسْعُود رضي اللَّه عنه قَالَ : دَخلْتُ عَلى النَبيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم وَهُو يُوعَكُ فَقُلْتُ يا رسُولَ اللَّه إِنَّكَ تُوعكُ وَعْكاً شَدِيداً قال : « أَجَلْ إِنِّي أُوعَكُ كَمَا يُوعَكُ رَجُلانِ مِنْكُم» قُلْتُ : ذلك أَنَّ لَكَ أَجْريْن ؟ قال : « أَجَلْ ذَلك كَذَلك مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُصِيبُهُ أَذًى ، شوْكَةٌ فَمَا فوْقَهَا إلاَّ كَفَّر اللَّه بهَا سيئاته ، وَحطَّتْ عنْهُ ذُنُوبُهُ كَمَا تَحُطُّ الشَّجرةُ وَرقَهَا » متفقٌ عليه .
ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসলাম সে সময় তিনি জ্বরে আক্রান্ত। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি তো ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত। তিনি বললেন, ‘‘আমি তোমাদের মত দু জনের সমান জ্বরে ভুগছি।’’ আমি বললাম, এ জন্যই তো আপনার জন্য দ্বিগুণ সওয়াব। তিনি বললেন, ‘‘ঠিক তাই। যে কোন মুসলিম ব্যক্তি কাটা বা তার চেয়ে কঠিন কোন বস্ত্ত দ্বারা কষ্ট পেলেও এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার পাপগুলো মিটিয়ে দেন। আর তার পাপগুলো এ কষ্টের কারণে এমনভাবে ঝড়ে পড়ে যায় যেমন গাছ তার শুকনো পাতাগুলো ঝড়িয়ে দেয়।’’ বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসলাম সে সময় তিনি জ্বরে আক্রান্ত। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি তো ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত। তিনি বললেন, ‘‘আমি তোমাদের মত দু জনের সমান জ্বরে ভুগছি।’’ আমি বললাম, এ জন্যই তো আপনার জন্য দ্বিগুণ সওয়াব। তিনি বললেন, ‘‘ঠিক তাই। যে কোন মুসলিম ব্যক্তি কাটা বা তার চেয়ে কঠিন কোন বস্ত্ত দ্বারা কষ্ট পেলেও এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার পাপগুলো মিটিয়ে দেন। আর তার পাপগুলো এ কষ্টের কারণে এমনভাবে ঝড়ে পড়ে যায় যেমন গাছ তার শুকনো পাতাগুলো ঝড়িয়ে দেয়।’’ বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
১- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাধারণ মানুষের মত রোগ-ব্যধি, শোক-দুঃখে আক্রান্ত হতেন।
২- সাধারণ মানুষের চেয়ে নবী ও রাসূলদের পরীক্ষা কঠিন হয়ে থাকে। এমনিভাবে যে যত মুত্তাকী বা আল্লাহ ভীরু তার পরীক্ষা তত কঠিন হয়ে থাকে।
৩- মুসলিম ব্যক্তির যে কোন কষ্ট বা বিপদাপদ তার গুনাহের কাফফারা হিসাবে আল্লাহ তাআলার কাছে গৃহিত হয়ে থাকে।
৪- বিপদা আপদে পতিত ব্যক্তিকে শান্তনা দেয়া সুন্নাত। যদি বিপদে পতিত ব্যক্তি শান্তনা দানকারী ব্যক্তির চেয়ে মর্যাদা বা শিক্ষায় অনেক বড় হয় তবুও। যেমন এ হাদীসে আমরা দেখি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে শান্তনা দিয়েছেন।
৫- জ্বরের কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ধৈর্য-সবর। তিনি এত জ্বরেও অধৈর্য হননি। এমনিভাবে সকল বিপদ আপদে তিনি ধৈর্যের পরাকাষ্টা প্রদর্শন করেছেন।
২- সাধারণ মানুষের চেয়ে নবী ও রাসূলদের পরীক্ষা কঠিন হয়ে থাকে। এমনিভাবে যে যত মুত্তাকী বা আল্লাহ ভীরু তার পরীক্ষা তত কঠিন হয়ে থাকে।
৩- মুসলিম ব্যক্তির যে কোন কষ্ট বা বিপদাপদ তার গুনাহের কাফফারা হিসাবে আল্লাহ তাআলার কাছে গৃহিত হয়ে থাকে।
৪- বিপদা আপদে পতিত ব্যক্তিকে শান্তনা দেয়া সুন্নাত। যদি বিপদে পতিত ব্যক্তি শান্তনা দানকারী ব্যক্তির চেয়ে মর্যাদা বা শিক্ষায় অনেক বড় হয় তবুও। যেমন এ হাদীসে আমরা দেখি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে শান্তনা দিয়েছেন।
৫- জ্বরের কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ধৈর্য-সবর। তিনি এত জ্বরেও অধৈর্য হননি। এমনিভাবে সকল বিপদ আপদে তিনি ধৈর্যের পরাকাষ্টা প্রদর্শন করেছেন।
15 - وعنْ أَبي هُرَيرة رضيَ اللَّهُ عنه قال : قال رسولُ اللَّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : « مَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْراً يُصِبْ مِنْهُ » : رواه البخاري
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘আল্লাহ তাআলা যে ব্যক্তির কল্যাণ চান তাকে বিপদ আপদে লিপ্ত করেন।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘আল্লাহ তাআলা যে ব্যক্তির কল্যাণ চান তাকে বিপদ আপদে লিপ্ত করেন।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী
১- মুসলিম ব্যক্তির বিপদ- আপদ তার জন্য কল্যাণ বয়ে আনে। বিপদাপদের কারণে ধৈর্য ধারণ করে সে প্রশিক্ষণ লাভ করে, অর্জন করে অভিজ্ঞতা। ফলে সে দুনিয়াতে যেমন কল্যাণ লাভ করে আখেরাতেও লাভ করে অফুরন্ত সওয়াব।
২- যে কোন বিপদ আপদে মুসলিম ব্যক্তির উচিত ধৈর্য ধারণ করা। ধৈর্য ধারণের কারণেই তার মর্যাদা বেড়ে যায়। সে প্রভূত কল্যাণের অধিকারী হয়ে থাকে।
৩- মুসলমানদের উপর আপতিত বিপদ-মুসীবত তাদের জন্য সর্বদা গজব বা শাস্তি নয়। অনেক সময় তা তাদের কল্যাণ লাভের কারণ হয়ে থাকে।
২- যে কোন বিপদ আপদে মুসলিম ব্যক্তির উচিত ধৈর্য ধারণ করা। ধৈর্য ধারণের কারণেই তার মর্যাদা বেড়ে যায়। সে প্রভূত কল্যাণের অধিকারী হয়ে থাকে।
৩- মুসলমানদের উপর আপতিত বিপদ-মুসীবত তাদের জন্য সর্বদা গজব বা শাস্তি নয়। অনেক সময় তা তাদের কল্যাণ লাভের কারণ হয়ে থাকে।
16 - وعَنْ أَنَسٍ رضي اللَّهُ عنه قال : قال رسولُ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : « لا يتَمنينَّ أَحدُكُمُ الْمَوْتَ لِضُرٍّ أَصَابَهُ ، فَإِنْ كَانَ لا بُدَّ فاعلاً فليقُل : اللَّهُمَّ أَحْيني ما كَانَت الْحياةُ خَيراً لِي وتوفَّني إِذَا كَانَتِ الْوفاَةُ خَيْراً لِي » متفق عليه .
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘তোমাদের কারো কোন কষ্টের কারণে কখনো মৃত্যু কামনা করবে না। যদি কেহ এ রকম করতে বাধ্য হয়, তবে বলবে, ‘হে আল্লাহ আপনি আমাকে জীবিত রাখুন যতক্ষণ জীবন আমার জন্য কল্যাণকর হয়। আর আমাকে মৃত্যু দান করুন যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয়।’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘তোমাদের কারো কোন কষ্টের কারণে কখনো মৃত্যু কামনা করবে না। যদি কেহ এ রকম করতে বাধ্য হয়, তবে বলবে, ‘হে আল্লাহ আপনি আমাকে জীবিত রাখুন যতক্ষণ জীবন আমার জন্য কল্যাণকর হয়। আর আমাকে মৃত্যু দান করুন যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয়।’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
১- মৃত্যু কামনা করতে ইসলামের নবী নিষেধ করেছেন। কোন অবস্থাতে মৃত্যু কামনা করা যাবে না।
২- বিপদ আপদে মৃত্যু কামনা করা ধৈর্যের পরিপন্থী। যে বিপদে পতিত হয়ে মৃত্যু কামনা করল সে ধৈর্য ধারণ করতে ব্যর্থ হল।
৩- ধৈর্যের দাবী হল মৃত্যু কামনা না করা।
৪- যদি কোন বিপদে বা রোগ ব্যধিতে কিংবা করো অত্যাচারে জীবন দুর্বিসহ হয়ে যায়, তাহলে মৃত্যু কামনা না করে এ প্রার্থনা করা যায়, ‘হে আল্লাহ আপনি আমাকে জীবিত রাখুন যতক্ষণ জীবন আমার জন্য কল্যাণকর হয়। আর আমাকে মৃত্যু দান করুন যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয়।’ এ রকম দুআ-প্রার্থনা করলে তা ধৈর্যের পরিপন্থী হবে না।
৫- ইসলাম সর্বাবস্থায় জীবন রক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। বেচে থাকতে উৎসাহিত করেছে। ইসলামের কাছে জীবনের মুল্য অনেক বেশী।
৬- ইসলাম সর্বদা কল্যাণের পথে উৎসাহ দেয়। কল্যাণ অর্জন করতে পথ দেখায়। সেটা জীবন ধারণ করে হোক বা মৃত্যুতে হোক। কল্যাণ অর্জন করা হল আসল উদ্দেশ্য। আর সে কল্যাণ হবে চিরস্থায়ী। পশুর মত বাধা-বন্ধনহীন জীবন যাপন করে সল্প মেয়াদী কল্যাণ অর্জন ইসলামের উদ্দেশ্য নয় কখনো।
২- বিপদ আপদে মৃত্যু কামনা করা ধৈর্যের পরিপন্থী। যে বিপদে পতিত হয়ে মৃত্যু কামনা করল সে ধৈর্য ধারণ করতে ব্যর্থ হল।
৩- ধৈর্যের দাবী হল মৃত্যু কামনা না করা।
৪- যদি কোন বিপদে বা রোগ ব্যধিতে কিংবা করো অত্যাচারে জীবন দুর্বিসহ হয়ে যায়, তাহলে মৃত্যু কামনা না করে এ প্রার্থনা করা যায়, ‘হে আল্লাহ আপনি আমাকে জীবিত রাখুন যতক্ষণ জীবন আমার জন্য কল্যাণকর হয়। আর আমাকে মৃত্যু দান করুন যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয়।’ এ রকম দুআ-প্রার্থনা করলে তা ধৈর্যের পরিপন্থী হবে না।
৫- ইসলাম সর্বাবস্থায় জীবন রক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। বেচে থাকতে উৎসাহিত করেছে। ইসলামের কাছে জীবনের মুল্য অনেক বেশী।
৬- ইসলাম সর্বদা কল্যাণের পথে উৎসাহ দেয়। কল্যাণ অর্জন করতে পথ দেখায়। সেটা জীবন ধারণ করে হোক বা মৃত্যুতে হোক। কল্যাণ অর্জন করা হল আসল উদ্দেশ্য। আর সে কল্যাণ হবে চিরস্থায়ী। পশুর মত বাধা-বন্ধনহীন জীবন যাপন করে সল্প মেয়াদী কল্যাণ অর্জন ইসলামের উদ্দেশ্য নয় কখনো।
17 - وعنْ أبي عبدِ اللَّهِ خَبَّابِ بْن الأَرتِّ رضيَ اللَّهُ عنه قال : شَكَوْنَا إِلَى رسولِ اللَّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم وَهُو مُتَوسِّدٌ بُردةً لَهُ في ظلِّ الْكَعْبةِ ، فَقُلْنَا : أَلا تَسْتَنْصرُ لَنَا أَلا تَدْعُو لَنَا ؟ فَقَالَ : قَد كَانَ مَنْ قَبْلكُمْ يؤْخَذُ الرَّجُلُ فيُحْفَرُ لَهُ في الأَرْضِ في جْعلُ فِيهَا ، ثمَّ يُؤْتِى بالْمِنْشارِ فَيُوضَعُ علَى رَأْسِهِ فيُجعلُ نصْفَيْن ، ويُمْشطُ بِأَمْشاطِ الْحديدِ مَا دُونَ لَحْمِهِ وَعظْمِهِ ، ما يَصُدُّهُ ذلكَ عَنْ دِينِهِ ، واللَّه ليتِمنَّ اللَّهُ هَذا الأَمْر حتَّى يسِير الرَّاكِبُ مِنْ صنْعاءَ إِلَى حَضْرمْوتَ لا يخافُ إِلاَّ الله والذِّئْبَ عَلَى غنَمِهِ ، ولكِنَّكُمْ تَسْتَعْجِلُونَ » رواه البخاري .
আবু আব্দুল্লাহ খাববাব ইবনুল আরত রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে (মক্কার কাফিরদের জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে) অভিযোগ করে বললাম - তখন তিনি মাথার নিচে চাদর রেখে কাবার ছায়ায় শুয়ে ছিলেন- ‘আপনি কেন আমাদের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করেন না, কেন আমাদের জন্য দুআ করেন না?’ তিনি বললেনঃ ‘‘তোমাদের পূর্ব যুগে মানুষকে ধরে নিয়ে মাটিতে গর্ত করে তাতে রাখা হত। তারপর করাত এনে তার মাথার উপর রেখে তাকে দু টুকরা করা হত। কাউকে লোহার চিরুনী দিয়ে আঁচরিয়ে শরীরের গোশত হাড় থেকে আলাদা করা হত। এতসব অত্যাচার তাদের দীন ইসলাম থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারেনি। আল্লাহর কসম তিনি এ দীন ইসলাম-কে অবশ্যই পূর্ণতা দান করবেন। এমনকি সে সময় একজন আরোহী সানা থেকে হাজরামাউত পর্যন্ত সফর করবে তখন আল্লাহ ব্যতীত কোন কিছুর ভয় করবে না। ভয় করবে না নিজের ছাগলের উপর নেকড়ে বাঘের কিন্তু তোমরা তাড়াহুড়া করছ।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী
আবু আব্দুল্লাহ খাববাব ইবনুল আরত রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে (মক্কার কাফিরদের জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে) অভিযোগ করে বললাম - তখন তিনি মাথার নিচে চাদর রেখে কাবার ছায়ায় শুয়ে ছিলেন- ‘আপনি কেন আমাদের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করেন না, কেন আমাদের জন্য দুআ করেন না?’ তিনি বললেনঃ ‘‘তোমাদের পূর্ব যুগে মানুষকে ধরে নিয়ে মাটিতে গর্ত করে তাতে রাখা হত। তারপর করাত এনে তার মাথার উপর রেখে তাকে দু টুকরা করা হত। কাউকে লোহার চিরুনী দিয়ে আঁচরিয়ে শরীরের গোশত হাড় থেকে আলাদা করা হত। এতসব অত্যাচার তাদের দীন ইসলাম থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারেনি। আল্লাহর কসম তিনি এ দীন ইসলাম-কে অবশ্যই পূর্ণতা দান করবেন। এমনকি সে সময় একজন আরোহী সানা থেকে হাজরামাউত পর্যন্ত সফর করবে তখন আল্লাহ ব্যতীত কোন কিছুর ভয় করবে না। ভয় করবে না নিজের ছাগলের উপর নেকড়ে বাঘের কিন্তু তোমরা তাড়াহুড়া করছ।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী
১- দীনে ইসলামের উপর চলতে গেলে এ পথে মানুষকে আহবান করতে গেলে কাফেরদের পক্ষ থেকে জুলুম অত্যাচার আসবে। এটা সকল যুগেই এসেছে। আজ পর্যন্ত তা অব্যাহত আছে। এ সকল জুলুম নির্যাতনের মুখে ধৈর্য ধারণ করা হল ঈমানের দাবী। কোন রকম অধৈর্য প্রকাশ করা ঠিক হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَأْتِكُم مَّثَلُ الَّذِينَ خَلَوْاْ مِن قَبْلِكُم مَّسَّتْهُمُ الْبَأْسَاء وَالضَّرَّاء وَزُلْزِلُواْ حَتَّى يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ مَعَهُ مَتَى نَصْرُ اللّهِ أَلا إِنَّ نَصْرَ اللّهِ قَرِيبٌ [ البقرة (214) ] .
‘‘তোমরা কি ভেবেছ যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে অথচ এখনো তোমাদের নিকট তাদের মত কিছু আসেনি, যারা তোমাদের পূর্বে বিগত হয়েছে। তাদেরকে স্পর্শ করেছিল কষ্ট ও দুর্দশা এবং তারা কম্পিত হয়েছিল। এমনিক রাসূল ও তার সাথি মুমিনগণ বলছিল, ‘কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে? জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী।’’
সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২১৪
২- কাফেরদের জুলুম অত্যাচারের মুখে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্য চেয়ে আল্লাহর কাছে দুআ-প্রার্থনা করা ধৈর্যের বিরোধী নয়। এ হাদীসে দুআ প্রার্থনা করতে অনুৎসাহিত করা হয়নি। বরং ধৈর্যের পরিপন্থী কোন কাজ করতে অনুৎসাহিত করা হয়েছে। কারণ খাববাব ইবনুল আরত কিছুটা অধৈর্যের পরিচয় দিয়েছিলেন। একজন নবী বা রাসূল সর্বদা উম্মাতের কল্যাণ ও মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দুআ-প্রার্থনা করে থাকেন। তাকে আবার দুআ করার জন্য বলা মানে আমরা আর সবর করতে পারছি না। আপনি কিছু একটা করেন।
৩- অত্যাচারী শাসকরা সর্বদা ইসলাম অনুসারীদের বিরুদ্ধে পাশবিক ও বর্বর অত্যাচার চালিয়েছে। ইসলামকে তারা সর্বদা নিজেদের জন্য হুমকি মনে করেছে। বর্তমান সময়টাও এর থেকে কিছুমাত্র ব্যতিক্রম নয়। দুনিয়ার সকল অত্যাচারী শাসক গোষ্ঠী ইসলামকে তাদের প্রতিপক্ষ মনে করে। ইসলাম অনুসারীদের বিরুদ্ধে তাদের বর্বরতার দুটো চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এ হাদীসে।
৪-এ হাদীসে গর্ত জ্বালিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ও করাত দিয়ে হত্যা করে নির্যাতনের যে কথা এসেছে সেটি এ পরিচ্ছেদের ত্রিশ নং হাদীসটিতে বর্ণিত ইতিহাসের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। যা সূরা আল-বুরুজে আসহাবুল উখদুদ নামে আলোচিত।
৫- মানুষকে শিক্ষা দেয়ার জন্য ইতিহাস আলোচনার গুরুত্ব প্রমাণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসংখ হাদীসে ইতিহাস আলোচনা করেছেন। আল্লাহ রাববুল আলামীনও আল-কুরআনে ইতিহাস আলোচনা করেছেন ও ইতিহাস আলোচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
৬- যদি সমাজে দীনে ইসলাম পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে এমন নিারপদ পরিবেশ তৈরী হবে যেমনটি এ হাদীসে বলা হয়েছে। একজন আরোহী একাকী ইয়েমেনের রাজধানী সানা থেকে সুদূর হাজরামাউত পর্যন্ত দীর্ঘ পথ পাড়ি দেবে কিন্তু তার কোন চোর-ডাকাতের ভয় থাকবে না। সে কখনো নিরাপত্তাহীনতায় পতিত হবে না।
৭- ইসলাম মানুষের জান মালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। মানুষের জান মালের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা ইসলামের দাবী।
৮- ইসলাম অনুসারীদের ত্যাগ ও ধৈর্যের কারণে আল্লাহ ইসলামকে সাহায্য করেন। ইসলাম অনুসারীদের প্রতিষ্ঠিত করেন। মুসলমানরা যখন ত্যাগ ও ধৈর্য পরিহার করবে, অমুসলিমদের পক্ষ থেকে জুলুম অত্যাচার শুরুর আগেই তাদের ভয়ে তাদের কাছে মাথা নত করে দেবে, তখন ইসলাম ও মুসলমানদের বিজয় সুদুর পরাহত হয়েই থাকবে।
৯- কোন বিষয়ে তাড়াহুড়া করা ধৈর্য ও সবরের পরিপন্থী। এ হাদীসে তাড়াহুড়া না করার জন্য বলা হয়েছে। যে সকল মুসলিম নেতারা কাফেরদের ভয়ে নিজ দেশের সবকিছু তাদের সামনে কুরবানী করে দেয় তারা অবশ্য তাড়াহুড়াকারী দলের প্রথম সারির মানুষ। আল্লাহ তাআলা তাদের সুপথে পরিচালিত করুন!
১০- সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম কায়েম হলে তার প্রভাব পশু পাখির উপরও পড়ে। তারাও তখন সভ্য ও ভদ্র হয়ে যায়। মানুষের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বা ক্ষতির কারণ হয় না।
১১- কাবা চত্বরে শয়ন করা জায়েয।
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَأْتِكُم مَّثَلُ الَّذِينَ خَلَوْاْ مِن قَبْلِكُم مَّسَّتْهُمُ الْبَأْسَاء وَالضَّرَّاء وَزُلْزِلُواْ حَتَّى يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ مَعَهُ مَتَى نَصْرُ اللّهِ أَلا إِنَّ نَصْرَ اللّهِ قَرِيبٌ [ البقرة (214) ] .
‘‘তোমরা কি ভেবেছ যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে অথচ এখনো তোমাদের নিকট তাদের মত কিছু আসেনি, যারা তোমাদের পূর্বে বিগত হয়েছে। তাদেরকে স্পর্শ করেছিল কষ্ট ও দুর্দশা এবং তারা কম্পিত হয়েছিল। এমনিক রাসূল ও তার সাথি মুমিনগণ বলছিল, ‘কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে? জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী।’’
সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২১৪
২- কাফেরদের জুলুম অত্যাচারের মুখে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্য চেয়ে আল্লাহর কাছে দুআ-প্রার্থনা করা ধৈর্যের বিরোধী নয়। এ হাদীসে দুআ প্রার্থনা করতে অনুৎসাহিত করা হয়নি। বরং ধৈর্যের পরিপন্থী কোন কাজ করতে অনুৎসাহিত করা হয়েছে। কারণ খাববাব ইবনুল আরত কিছুটা অধৈর্যের পরিচয় দিয়েছিলেন। একজন নবী বা রাসূল সর্বদা উম্মাতের কল্যাণ ও মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দুআ-প্রার্থনা করে থাকেন। তাকে আবার দুআ করার জন্য বলা মানে আমরা আর সবর করতে পারছি না। আপনি কিছু একটা করেন।
৩- অত্যাচারী শাসকরা সর্বদা ইসলাম অনুসারীদের বিরুদ্ধে পাশবিক ও বর্বর অত্যাচার চালিয়েছে। ইসলামকে তারা সর্বদা নিজেদের জন্য হুমকি মনে করেছে। বর্তমান সময়টাও এর থেকে কিছুমাত্র ব্যতিক্রম নয়। দুনিয়ার সকল অত্যাচারী শাসক গোষ্ঠী ইসলামকে তাদের প্রতিপক্ষ মনে করে। ইসলাম অনুসারীদের বিরুদ্ধে তাদের বর্বরতার দুটো চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এ হাদীসে।
৪-এ হাদীসে গর্ত জ্বালিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ও করাত দিয়ে হত্যা করে নির্যাতনের যে কথা এসেছে সেটি এ পরিচ্ছেদের ত্রিশ নং হাদীসটিতে বর্ণিত ইতিহাসের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। যা সূরা আল-বুরুজে আসহাবুল উখদুদ নামে আলোচিত।
৫- মানুষকে শিক্ষা দেয়ার জন্য ইতিহাস আলোচনার গুরুত্ব প্রমাণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসংখ হাদীসে ইতিহাস আলোচনা করেছেন। আল্লাহ রাববুল আলামীনও আল-কুরআনে ইতিহাস আলোচনা করেছেন ও ইতিহাস আলোচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
৬- যদি সমাজে দীনে ইসলাম পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে এমন নিারপদ পরিবেশ তৈরী হবে যেমনটি এ হাদীসে বলা হয়েছে। একজন আরোহী একাকী ইয়েমেনের রাজধানী সানা থেকে সুদূর হাজরামাউত পর্যন্ত দীর্ঘ পথ পাড়ি দেবে কিন্তু তার কোন চোর-ডাকাতের ভয় থাকবে না। সে কখনো নিরাপত্তাহীনতায় পতিত হবে না।
৭- ইসলাম মানুষের জান মালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। মানুষের জান মালের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা ইসলামের দাবী।
৮- ইসলাম অনুসারীদের ত্যাগ ও ধৈর্যের কারণে আল্লাহ ইসলামকে সাহায্য করেন। ইসলাম অনুসারীদের প্রতিষ্ঠিত করেন। মুসলমানরা যখন ত্যাগ ও ধৈর্য পরিহার করবে, অমুসলিমদের পক্ষ থেকে জুলুম অত্যাচার শুরুর আগেই তাদের ভয়ে তাদের কাছে মাথা নত করে দেবে, তখন ইসলাম ও মুসলমানদের বিজয় সুদুর পরাহত হয়েই থাকবে।
৯- কোন বিষয়ে তাড়াহুড়া করা ধৈর্য ও সবরের পরিপন্থী। এ হাদীসে তাড়াহুড়া না করার জন্য বলা হয়েছে। যে সকল মুসলিম নেতারা কাফেরদের ভয়ে নিজ দেশের সবকিছু তাদের সামনে কুরবানী করে দেয় তারা অবশ্য তাড়াহুড়াকারী দলের প্রথম সারির মানুষ। আল্লাহ তাআলা তাদের সুপথে পরিচালিত করুন!
১০- সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম কায়েম হলে তার প্রভাব পশু পাখির উপরও পড়ে। তারাও তখন সভ্য ও ভদ্র হয়ে যায়। মানুষের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বা ক্ষতির কারণ হয় না।
১১- কাবা চত্বরে শয়ন করা জায়েয।
18 - وعن ابن مَسعُودٍ رضي اللَّه عنه قال : لمَّا كَانَ يَوْمُ حُنَيْنٍ آثر رسولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم نَاساً في الْقِسْمَةِ : فأَعْطَى الأَقْرعَ بْنَ حابِسٍ مائةً مِنَ الإِبِلِ وأَعْطَى عُييْنَةَ بْنَ حِصْنٍ مِثْلَ ذلِكَ ، وأَعطى نَاساً منْ أشرافِ الْعربِ وآثَرهُمْ يوْمئِذٍ في الْقِسْمَةِ . فَقَالَ رجُلٌ : واللَّهِ إنَّ هَذِهِ قِسْمةٌ ما عُدِلَ فِيها، وما أُريد فِيهَا وَجهُ اللَّه ، فَقُلْتُ : واللَّه لأُخْبِرَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، فأتيتُهُ فَأخبرته بِما قال ، فتغَيَّر وَجْهُهُ حتَّى كَانَ كَالصِّرْفِ . ثُمَّ قال : « فَمنْ يَعْدِلُ إِذَا لَمْ يعدِلِ اللَّهُ ورسُولُهُ ؟ ثم قال : يرحَمُ اللَّهُ موسى قَدْ أُوْذِيَ بِأَكْثَرَ مِنْ هَذَا فَصبرَ » فَقُلْتُ : لا جرمَ لا أَرْفعُ إلَيه بعْدها حدِيثاً . متفقٌ عليه .
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুনাইনের যুদ্ধের দিন গণীমতের সম্পদ বন্টনে কিছু লোককে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। তিনি আকরা ইবনে হাবেস-কে একশত উট এবং উআইনা ইবনে হেসান-কেও অনুরূপ দিয়েছিলেন। আরবের সম্ভ্রান্ত বংশের লোকদেরও বন্টনে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। এক ব্যক্তি বলল, ‘আল্লাহর কসম! এ বন্টনে ন্যায়নীতির অনুসরণ করা হয়নি এবং তাতে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্য করা হয়নি।’ আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি অবশ্যই এ খবরটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জানিয়ে দেব। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে এ ব্যক্তির মন্তব্য সম্পর্কে সংবাদ দিলাম। এতে তাঁর চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল, খাটি লাল বর্ণ ধারণ করল। তিনি বললেনঃ ‘‘আল্লাহ ও তার রাসূল যদি ন্যায়নীতির অনুসরণ না করেন, তবে আর কে ন্যায়নীতির অনুসরণ করবে?’’ তারপর বললেনঃ ‘‘আল্লাহ মূসার প্রতি রহম করুন! তাকে তো এর চেয়ে বেশী কষ্ট দেয়া হয়েছে। তিনি তাতে ধৈর্য ধারণ করেছেন।’’ আমি (প্রতিজ্ঞা করে) বললাম, ‘এরপর আমি আর কখনো তাঁর কাছে এরূপ সংবাদ পৌছে দেব না।’ বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুনাইনের যুদ্ধের দিন গণীমতের সম্পদ বন্টনে কিছু লোককে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। তিনি আকরা ইবনে হাবেস-কে একশত উট এবং উআইনা ইবনে হেসান-কেও অনুরূপ দিয়েছিলেন। আরবের সম্ভ্রান্ত বংশের লোকদেরও বন্টনে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। এক ব্যক্তি বলল, ‘আল্লাহর কসম! এ বন্টনে ন্যায়নীতির অনুসরণ করা হয়নি এবং তাতে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্য করা হয়নি।’ আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি অবশ্যই এ খবরটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জানিয়ে দেব। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে এ ব্যক্তির মন্তব্য সম্পর্কে সংবাদ দিলাম। এতে তাঁর চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল, খাটি লাল বর্ণ ধারণ করল। তিনি বললেনঃ ‘‘আল্লাহ ও তার রাসূল যদি ন্যায়নীতির অনুসরণ না করেন, তবে আর কে ন্যায়নীতির অনুসরণ করবে?’’ তারপর বললেনঃ ‘‘আল্লাহ মূসার প্রতি রহম করুন! তাকে তো এর চেয়ে বেশী কষ্ট দেয়া হয়েছে। তিনি তাতে ধৈর্য ধারণ করেছেন।’’ আমি (প্রতিজ্ঞা করে) বললাম, ‘এরপর আমি আর কখনো তাঁর কাছে এরূপ সংবাদ পৌছে দেব না।’ বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
১- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবদ্দশায় গণীমত বা যুদ্ধলব্দ সম্পদ বন্টন করার দায়িত্ব ছিল তাঁরই। কাকে কত পরিমাণ দিলে ইসলামের স্বার্থ উদ্ধার হবে, ইসলামের উন্নতি হবে সে সম্পর্কে তিনি ছিলেন পরিপূর্ণ ওয়াকেফহাল। যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারীদের মধ্যে সবকিছু সমভাবে বন্টন করার ব্যাপারে তিনি আদিষ্ট ছিলেন না। কিন্তু সমালোচক ব্যক্তি মনে করেছিল, সকলকে সমভাবে দেয়ার নামই হল ন্যায়নীতি। তার ধারণা মতেই সে মন্তব্য করেছে। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সকল কিছু আল্লাহর নির্দেশে করেন, তখন তার বন্টনের ব্যাপারে এ ধরনের মন্তব্য করা ন্যায়সঙ্গত হয়নি। মন্তব্যটা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্যও করা হয়নি। করা হয়েছে নিজ স্বার্থের খাতিরে। কাজেই তার মন্তব্যটা নিজের ব্যাপারে প্রযোজ্য। আল্লাহর রাসূলের ব্যাপারে নয়।
২- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক সময় নতুন মুসলমানদের মধ্যে যারা গোত্রের নেতা ছিলেন গণীমত ও দান সাদকা তাদের বেশী পরিমাণে দিতেন। যাতে তারা নিজেরা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়, অবিচল থাকে ও নিজেদের গোত্রের লোকদের ইসলামের প্রতি আহবান করে। ইসলামের শক্তি বৃদ্ধি হয়। আর এটা তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই করতেন।
৩- এ সমালোচনা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাঁর চেহারা বিবর্তিত হওয়ায় সহজে তা বুঝে আসে। তিনি মানবীয় সাধারণ গুণাবলির উর্দ্ধে ছিলেন না। কিন্তু তিনি এ সমালোচনা সহ্য করেছেন। ধৈর্য ধারণ করেছেন। শাস্তিযোগ্য অপরাধ করা সত্বেও সমালোচনাকারীকে কোন শাস্তি দেননি। তাকে তিরস্কার করেননি। তিনি শাস্তি প্রদানে সম্পূর্ণ সক্ষম ছিলেন। কারণ এটা ছিল হিজরতের আট বছর পরের ঘটনা। ইসলামী রাষ্ট্র তখন বেশ শক্তিশালী। ইসলামের প্রথম যুগ ছিল না যে, শাস্তি দিলে সমস্যা হবে। বরং তিনি এখানে মুসা আ. এর ধৈর্যের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। নিজেকে ধৈর্য ধারনের ব্যাপারে অবিচল রেখেছেন।
৪- সমালোচকদের সমালোচনা শোনা ও তা সহ্য করা আল্লাহর রাসূলের একটি আদর্শ। আল্লাহ তাআলা এ রকমই নির্দেশ দিয়েছেন।
خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجَاهِلِينَ .
‘‘তুমি ক্ষমা প্রদর্শন কর এবং ভালো কাজের আদেশ দাও। আর মূর্খদের থেকে বিমুখ থাক।’’ সূরা আল-আরাফ, আয়াত ১৯৯
৫- সংবাদ সেবা অর্থাত সাংবাদিকতা ইসলামে একটি সুন্দর ও স্বীকৃত কাজ। অনেক সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে বিভিন্ন সংবাদ পৌছে দিতেন। তবে যে সকল সংবাদ কাউকে কষ্ট দেয়, কারো মানহানী করে, এমন নৈতিবাচক সংবাদ পৌছে দেয়া উচিত নয়। যেমন আমরা এ প্রাজ্ঞ সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. কে এ হাদীসে বলতে দেখলাম, ‘এরপর আমি কখনো এরূপ সংবাদ পৌছে দেব না।’
৬- আল্লাহ ও তারপরে তাঁর রাসূল হলেন সবচেয়ে বেশী ন্যায়নীতি পরায়ন। আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে ইনসাফ, ন্যায়-বিচার করতে শিখিয়েছেন, সর্বক্ষেত্রে ন্যায়ের অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
৬- এ হাদীসে যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ধৈর্য ধারণের একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে, তেমনি মুসা আ. এর ধৈর্যের কথা আলোচিত হয়েছে। যাতে বিপদাপদে নবী রাসূলদের পদাংক অনুসরণ করে মুমিনরা ধৈর্য ধারণে উৎসাহ পায়।
২- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক সময় নতুন মুসলমানদের মধ্যে যারা গোত্রের নেতা ছিলেন গণীমত ও দান সাদকা তাদের বেশী পরিমাণে দিতেন। যাতে তারা নিজেরা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়, অবিচল থাকে ও নিজেদের গোত্রের লোকদের ইসলামের প্রতি আহবান করে। ইসলামের শক্তি বৃদ্ধি হয়। আর এটা তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই করতেন।
৩- এ সমালোচনা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাঁর চেহারা বিবর্তিত হওয়ায় সহজে তা বুঝে আসে। তিনি মানবীয় সাধারণ গুণাবলির উর্দ্ধে ছিলেন না। কিন্তু তিনি এ সমালোচনা সহ্য করেছেন। ধৈর্য ধারণ করেছেন। শাস্তিযোগ্য অপরাধ করা সত্বেও সমালোচনাকারীকে কোন শাস্তি দেননি। তাকে তিরস্কার করেননি। তিনি শাস্তি প্রদানে সম্পূর্ণ সক্ষম ছিলেন। কারণ এটা ছিল হিজরতের আট বছর পরের ঘটনা। ইসলামী রাষ্ট্র তখন বেশ শক্তিশালী। ইসলামের প্রথম যুগ ছিল না যে, শাস্তি দিলে সমস্যা হবে। বরং তিনি এখানে মুসা আ. এর ধৈর্যের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। নিজেকে ধৈর্য ধারনের ব্যাপারে অবিচল রেখেছেন।
৪- সমালোচকদের সমালোচনা শোনা ও তা সহ্য করা আল্লাহর রাসূলের একটি আদর্শ। আল্লাহ তাআলা এ রকমই নির্দেশ দিয়েছেন।
خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجَاهِلِينَ .
‘‘তুমি ক্ষমা প্রদর্শন কর এবং ভালো কাজের আদেশ দাও। আর মূর্খদের থেকে বিমুখ থাক।’’ সূরা আল-আরাফ, আয়াত ১৯৯
৫- সংবাদ সেবা অর্থাত সাংবাদিকতা ইসলামে একটি সুন্দর ও স্বীকৃত কাজ। অনেক সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে বিভিন্ন সংবাদ পৌছে দিতেন। তবে যে সকল সংবাদ কাউকে কষ্ট দেয়, কারো মানহানী করে, এমন নৈতিবাচক সংবাদ পৌছে দেয়া উচিত নয়। যেমন আমরা এ প্রাজ্ঞ সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. কে এ হাদীসে বলতে দেখলাম, ‘এরপর আমি কখনো এরূপ সংবাদ পৌছে দেব না।’
৬- আল্লাহ ও তারপরে তাঁর রাসূল হলেন সবচেয়ে বেশী ন্যায়নীতি পরায়ন। আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে ইনসাফ, ন্যায়-বিচার করতে শিখিয়েছেন, সর্বক্ষেত্রে ন্যায়ের অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
৬- এ হাদীসে যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ধৈর্য ধারণের একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে, তেমনি মুসা আ. এর ধৈর্যের কথা আলোচিত হয়েছে। যাতে বিপদাপদে নবী রাসূলদের পদাংক অনুসরণ করে মুমিনরা ধৈর্য ধারণে উৎসাহ পায়।
19 - وعن أنس رضي اللَّه عنه قال : قال رسولُ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : « إِذَا أَرَادَ اللَّهُ بعبْدِهِ خَيْراً عجَّلَ لَهُ الْعُقُوبةَ في الدُّنْيَا ، وإِذَا أَرَادَ اللَّه بِعبدِهِ الشَّرَّ أمسَكَ عنْهُ بذَنْبِهِ حتَّى يُوافِيَ بهِ يَومَ الْقِيامةِ » .
وقَالَ النبِيُّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : « إِنَّ عِظَمَ الْجزاءِ مَعَ عِظَمِ الْبلاءِ ، وإِنَّ اللَّه تعالى إِذَا أَحَبَّ قَوماً ابتلاهُمْ ، فَمنْ رضِيَ فلَهُ الرضَا ، ومَنْ سَخِطَ فَلَهُ السُّخْطُ » رواه الترمذي وقَالَ : حديثٌ حسنٌ .
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘আল্লাহ যখন তাঁর কোন বান্দার প্রতি কল্যাণের ইচ্ছা করেন, তখন পার্থিব জীবনে তাকে তাড়াতাড়ি শাস্তি প্রদান করে থাকেন। আর তিনি যখন তাঁর কোন বান্দার প্রতি অকল্যাণের ইচ্ছা করেন, তখন তার পাপাচার সত্বেও দুনিয়ার শাস্তি প্রদান আটকে রাখেন। অবশেষে কেয়ামত দিবসে তাকে পূর্ণ শাস্তি প্রদান করবেন।’’ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেনঃ ‘‘অধিক কষ্টের সাথে অধিক পুরস্কার রয়েছে। আর আল্লাহ যখন কোন জাতিকে ভালোবাসেন তখন তাদের পরীক্ষা করেন। যে ব্যক্তি এ পরীক্ষায় আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট থাকে তার জন্য রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর যে ব্যক্তি অসন্তুষ্ট হয় তার জন্য রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি।’’
বর্ণনায়ঃ তিরমিজী
وقَالَ النبِيُّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : « إِنَّ عِظَمَ الْجزاءِ مَعَ عِظَمِ الْبلاءِ ، وإِنَّ اللَّه تعالى إِذَا أَحَبَّ قَوماً ابتلاهُمْ ، فَمنْ رضِيَ فلَهُ الرضَا ، ومَنْ سَخِطَ فَلَهُ السُّخْطُ » رواه الترمذي وقَالَ : حديثٌ حسنٌ .
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘আল্লাহ যখন তাঁর কোন বান্দার প্রতি কল্যাণের ইচ্ছা করেন, তখন পার্থিব জীবনে তাকে তাড়াতাড়ি শাস্তি প্রদান করে থাকেন। আর তিনি যখন তাঁর কোন বান্দার প্রতি অকল্যাণের ইচ্ছা করেন, তখন তার পাপাচার সত্বেও দুনিয়ার শাস্তি প্রদান আটকে রাখেন। অবশেষে কেয়ামত দিবসে তাকে পূর্ণ শাস্তি প্রদান করবেন।’’ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেনঃ ‘‘অধিক কষ্টের সাথে অধিক পুরস্কার রয়েছে। আর আল্লাহ যখন কোন জাতিকে ভালোবাসেন তখন তাদের পরীক্ষা করেন। যে ব্যক্তি এ পরীক্ষায় আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট থাকে তার জন্য রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর যে ব্যক্তি অসন্তুষ্ট হয় তার জন্য রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি।’’
বর্ণনায়ঃ তিরমিজী
১- সমাজে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা বেশ মুত্তাকী পরহেযগার। সর্বক্ষেত্রে তাকওয়া - আল্লাহভীতি অনুসরণ করেন। কিন্তু দেখা যায় বিপদ-আপদ তাদের সাথে লেগেই আছে। মানুষ প্রশ্ন করে, লোকটি এত ভাল হওয়া সত্বেও কেন বার বার বিপদে পড়ে? সে নিজেও অনেক সময় ভাবনায় পড়ে, কেন বিপদ আপদ আমাকে ছাড়ছে না? তাদের প্রশ্নের সুন্দর ও পরিপূর্ণ উত্তর হল এ হাদীস।
২- দুনিয়ার শাস্তির চেয়ে আখেরাতে শাস্তি মারাত্নক ও ভয়াবহ। দুনিয়ার শাস্তি হল হাল্কা। তাই আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাকে হাল্কা শাস্তি দিয়ে পরিশুদ্ধ করে ভয়াবহ শাস্তি থেকে মুক্তি দিতে চান। এ কারণেই মুত্তাকী পরহেযগার বান্দাদের দুনিয়াতে তড়িত শাস্তি দিয়ে থাকেন। তাই এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে গজব নয় বরং তাঁর রহমত।
৩- আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালোবাসেন না তখন তাকে দুনিয়াতে শাস্তি না দিয়ে আখেরাতে কঠিন শাস্তি দিবেন। ফলে সে দুনিয়াতে বিপদাপদ মুক্ত থাকে। এ অবস্থা তার প্রতি আল্লাহর রহমত নয়।
৪- দুনিয়ার বিপদ আপদ যত কঠিন ও বড় হবে তার পুরুস্কারও তত বড় ও মর্যাদাপূর্ণ। আর বিপদ আপদ ছোট ও হাল্কা হলে তার পুরুস্কারও সে রকম।
৫- ইসলাম অনুসারী বান্দাদের উপর আপতিত বিপদ মুসীবত আল্লাহর গজব নয় কখনো। এগুলো তাঁর ভালোবাসার লক্ষণ। যেমন এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন কোন সম্প্রদায়কে ভালোবাসেন তখন তাদের পরীক্ষা করেন।’
৬- ইসলাম অনুসারী মানুষেরা বিপদ মুসীবতে আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন না বরং তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন। ফলে আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান।
৭- বিপদ মুসীবতে আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা ধৈর্যের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। যেমন অনেকে বলে থাকেন, হে আল্লাহ! আমি তোমার দীন-কে এত মান্য করি, তোমার দীনে ইসলামের জন্য এত কিছু করি তারপরও তুমি আমাকে কেন বার বার বিপদে পতিত কর? এ ধরনের কথা বা মানসিকতা ধৈর্যের পরিচয় নয় বরং আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশের শামিল।
৮- বিপদ মুসীবতে আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট থাকা, তাঁর কাছেই এর প্রতিদান কামনা করা হল সত্যিকার ধৈর্য। এ ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।
৯- বিপদ মুসীবতে পতিত হয়ে অনেক মানুষ আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগী শুরু করে। কিন্তু যখন দেখে বিপদ-মুসীবত কাটছে না। তখন ইবাদত-বন্দেগী ত্যাগ করে। তারা মুলত পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি। আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। যারা আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে তাদের জন্য রয়েছে আললাহর অসন্তুষ্টি। তাই বিপদ যত বড়ই হোক আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা ঈমানদারের জন্য আরো বড় বিপদ।
২- দুনিয়ার শাস্তির চেয়ে আখেরাতে শাস্তি মারাত্নক ও ভয়াবহ। দুনিয়ার শাস্তি হল হাল্কা। তাই আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাকে হাল্কা শাস্তি দিয়ে পরিশুদ্ধ করে ভয়াবহ শাস্তি থেকে মুক্তি দিতে চান। এ কারণেই মুত্তাকী পরহেযগার বান্দাদের দুনিয়াতে তড়িত শাস্তি দিয়ে থাকেন। তাই এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে গজব নয় বরং তাঁর রহমত।
৩- আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালোবাসেন না তখন তাকে দুনিয়াতে শাস্তি না দিয়ে আখেরাতে কঠিন শাস্তি দিবেন। ফলে সে দুনিয়াতে বিপদাপদ মুক্ত থাকে। এ অবস্থা তার প্রতি আল্লাহর রহমত নয়।
৪- দুনিয়ার বিপদ আপদ যত কঠিন ও বড় হবে তার পুরুস্কারও তত বড় ও মর্যাদাপূর্ণ। আর বিপদ আপদ ছোট ও হাল্কা হলে তার পুরুস্কারও সে রকম।
৫- ইসলাম অনুসারী বান্দাদের উপর আপতিত বিপদ মুসীবত আল্লাহর গজব নয় কখনো। এগুলো তাঁর ভালোবাসার লক্ষণ। যেমন এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন কোন সম্প্রদায়কে ভালোবাসেন তখন তাদের পরীক্ষা করেন।’
৬- ইসলাম অনুসারী মানুষেরা বিপদ মুসীবতে আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন না বরং তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন। ফলে আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান।
৭- বিপদ মুসীবতে আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা ধৈর্যের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। যেমন অনেকে বলে থাকেন, হে আল্লাহ! আমি তোমার দীন-কে এত মান্য করি, তোমার দীনে ইসলামের জন্য এত কিছু করি তারপরও তুমি আমাকে কেন বার বার বিপদে পতিত কর? এ ধরনের কথা বা মানসিকতা ধৈর্যের পরিচয় নয় বরং আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশের শামিল।
৮- বিপদ মুসীবতে আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট থাকা, তাঁর কাছেই এর প্রতিদান কামনা করা হল সত্যিকার ধৈর্য। এ ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।
৯- বিপদ মুসীবতে পতিত হয়ে অনেক মানুষ আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগী শুরু করে। কিন্তু যখন দেখে বিপদ-মুসীবত কাটছে না। তখন ইবাদত-বন্দেগী ত্যাগ করে। তারা মুলত পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি। আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। যারা আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে তাদের জন্য রয়েছে আললাহর অসন্তুষ্টি। তাই বিপদ যত বড়ই হোক আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা ঈমানদারের জন্য আরো বড় বিপদ।
20 - وعنْ أَنَسٍ رضي اللَّه عنه قال : كَانَ ابْنٌ لأبي طلْحةَ رضي اللَّه عنه يَشْتَكي ، فخرج أبُو طَلْحة ، فَقُبِضَ الصَّبِيُّ ، فَلَمَّا رَجَعَ أَبُو طَلْحةَ قال : ما فَعَلَ ابنِي ؟ قَالَت أُمُّ سُلَيْم وَهِيَ أُمُّ الصَّبيِّ : هو أَسْكَنُ مَا كَانَ ، فَقَرَّبَتْ إِلَيْهِ الْعَشَاءَ فَتَعَشَّى ، ثُمَّ أَصَابَ مِنْهَا، فَلَمَّا فرغَ قَالَتْ : وارُوا الصَّبيَّ ، فَلَمَّا أَصْبحَ أَبُو طَلْحَة أَتَى رسولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم فَأَخْبرهُ، فَقَالَ : « أَعرَّسْتُمُ اللَّيْلَةَ ؟ قَالَ : نَعَمْ ، قال : « اللَّهمَّ باركْ لَهُما » فَولَدتْ غُلاماً فقَالَ لِي أَبُو طَلْحَةَ : احْمِلْهُ حتَّى تَأَتِيَ بِهِ النبيَّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، وبَعثَ مَعهُ بِتمْرَات ، فقال : «أَمعهُ شْيءٌ ؟ » قال : نعمْ ، تَمراتٌ فَأَخَذَهَا النَّبِيُّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم فَمضَغَهَا ، ثُمَّ أَخذَهَا مِنْ فِيهِ فَجَعَلَهَا في في الصَّبيِّ ثُمَّ حَنَّكَه وسمَّاهُ عبدَ اللَّهِ متفقٌ عليه .
وفي روايةٍ للْبُخَاريِّ : قال ابْنُ عُيَيْنَة : فَقَالَ رجُلٌ منَ الأَنْصارِ : فَرَأَيْتُ تَسعة أَوْلادٍ كلُّهُمْ قدْ قَرؤُوا الْقُرْآنَ ، يعْنِي مِنْ أَوْلادِ عَبْدِ اللَّه الْموْلُود .
وفي روايةٍ لمسلِم : ماتَ ابْنٌ لأبِي طَلْحَةَ مِنْ أُمِّ سُلَيْمٍ ، فَقَالَتْ لأهْلِهَا : لا تُحَدِّثُوا أَبَا طَلْحَةَ بابنِهِ حتَّى أَكُونَ أَنَا أُحَدِّثُهُ ، فَجَاءَ فَقَرَّبَتْ إِلَيْهِ عَشَاءً فَأَكَلَ وشَرِبَ ، ثُمَّ تَصنَّعتْ لهُ أَحْسنَ ما كانتْ تَصَنَّعُ قَبْلَ ذلكَ ، فَوقَعَ بِهَا ، فَلَمَّا أَنْ رأَتْ أَنَّهُ قَدْ شَبِعِ وأَصَابَ مِنْها قَالتْ : يا أَبَا طلْحةَ ، أَرَايْتَ لَوْ أَنَّ قَوْماً أَعارُوا عارِيتهُمْ أَهْل بيْتٍ فَطَلبوا عاريَتَهُم ، ألَهُمْ أَنْ يمْنَعُوهَا؟ قَالَ : لا ، فَقَالَتْ : فاحتسِبْ ابْنَكَ . قَالَ : فغَضِبَ ، ثُمَّ قَالَ : تركتنِي حتَّى إِذَا تَلطَّخْتُ ثُمَّ أَخْبرتِني بِابْني ، فَانْطَلَقَ حتَّى أَتَى رسولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم فأخْبَرهُ بما كَانَ ، فَقَالَ رسولُ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : « بَاركَ اللَّه لكُما في ليْلتِكُما » .
قال : فحملَتْ ، قال : وكَانَ رسول اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم في سفَرٍ وهِي مَعَهُ وكَانَ رسولُ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم إِذَا أَتَى الْمَدِينَةِ مِنْ سَفَرٍ لاَ يَطْرُقُها طُرُوقاً فَدنَوْا مِنَ الْمَدِينَةِ ، فَضَرَبَهَا الْمَخاضُ ، فَاحْتَبَس عَلَيْهَا أَبُو طلْحَةَ ، وانْطلَقَ رسولُ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم . قَالَ : يقُولُ أَبُو طَلْحةَ إِنَّكَ لتعلمُ يَا ربِّ أَنَّهُ يعْجبُنِي أَنْ أَخْرُجَ معَ رسولِ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم إِذَا خَرَجَ ، وأَدْخُلَ مَعهُ إِذَا دَخَلَ ، وقَدِ احْتَبَسْتُ بِما تَرى . تقولُ أُمُّ سُلَيْمٍ : يا أَبَا طلْحةَ مَا أَجِد الَّذي كنْتُ أَجِدُ ، انْطَلِقْ ، فانْطَلقْنَا ، وضَربهَا المَخاضُ حينَ قَدِمَا فَولَدتْ غُلاماً . فقالَتْ لِي أُمِّي : يا أَنَسُ لا يُرْضِعُهُ أَحدٌ تَغْدُوَ بِهِ عَلَى رسُول اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، فلمَّا أَصْبحَ احتملْتُهُ فانطَلقْتُ بِهِ إِلَى رسولِ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم . وذَكَرَ تمامَ الْحَدِيثِ .
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু তালহার এক ছেলে অসুস্থ ছিল। আবু তালহা কাজে বের হয়ে গেলেন। তখন ছেলেটি মৃত্যু বরণ করল। আবু তালহা রাতে যখন ফিরে আসলেন তখন বললেন, আমার ছেলে কি করে? ছেলের মা উম্মে সুলাইম বললেন, সে আগের চেয়ে শান্ত। এরপর তিনি আবু তালহা-কে রাতের খাবার দিলেন। আবু তালহা খাবার খেলেন। রাতে স্ত্রীর সাথে মিলিত হলেন। অতঃপর যখন অবসর হলেন উম্মে সুলাইম তখন বললেন, ছেলেকে দাফন করে দিন। আবু তালহা সকাল বেলা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে এ ঘটনা বর্ণনা করলেন তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি রাতে স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছ?’ আবু তালহা হ্যাঁ বললেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘‘হে আল্লাহ ! তাদের দুজনকে আপনি বরকত দান করুন।’’ পরে উম্মে সুলাইমের একটি ছেলে জন্ম গ্রহণ করল।
আনাস রা. বললেন, আবু তালহা আমাকে বললেন, বাচ্চাটিকে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাও। সাথে কিছু খেজুর দিয়ে দিলেন। রাসূলুল্লাহ বাচ্চাটিকে দেখে বললেন, ‘তার সাথে কিছু আছে?’’ আনাস রা. বললেন, হ্যাঁ খেজুর আছে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি খেজুর নিয়ে চিবালেন। তা বাচ্চার মুখে দিলেন। বাচ্চাটির নাম রাখলেন আব্দুল্লাহ।
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
বুখারীর অন্য একটি বর্ণনায় আছে, ইবনু উআইনা বলেছেন, আনসারদের এক ব্যক্তি বলেছেন, আমি নয়টি ছেলে দেখেছি। তারা সকলেই কুরআন পড়েছে। (অর্থাৎ আবু তালহার ছেলে আব্দুল্লাহর সন্তান)
মুসলিমের অন্য একটি বর্ণনায় আছে, আবু তালহার ছেলে মৃত্যু বরণ করলে ছেলেটির মা উম্মে সুলাইম বাড়ীর লোকদের বললেন, আমি ছেলে সম্পর্কে আবু তালহাকে কিছু বলার পূর্বে তোমরা কিছু বলবে না। আবু তালহা বাড়ীতে এলে উম্মে সুলাইম তাকে রাতের খাবার দিলেন। তিনি পানাহার করলেন। এরপর উম্মে সুলাইম স্বামীর জন্য নিজেকে সাজালেন আগের চেয়ে সুন্দর করে। আবু তালহা রাতে তার সাথে মিলিত হলেন। সকালে উম্মে সুলাইম যখন দেখলেন, আবু তালহা পরিতৃপ্ত হয়েছে, তখন তাকে বললেন, আবু তালহা! বলুনতো যদি কোন সম্প্রদায় কোন পরিবারকে কিছু ধার দেয়, এরপর তারা তা ফেরত চায়, তাহলে কি সে পরিবার ফেরত না দিয়ে আটকে রাখতে পারে? আবু তালহা উত্তরে বললেন, ‘না’। উম্মে সুলাইম বললেন, ‘তাহলে আপনার ছেলের ব্যাপারে আল্লাহর কাছে প্রতিদানের আশা করুন।’ বর্ণনাকারী বলেন, আবু তালহা এ কথা শুনে রাগ হয়ে গেলেন, বললেন, তুমি আগে কিছু বলনি, এখন আমি নাপাক হওয়ার পর আমার ছেলে সম্পর্কে খবর বলছ? এরপর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে যেয়ে সব ঘটনা বললেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ করলেন, ‘‘হে আল্লাহ! আপনি তাদের দুজনের রাতে বরকত দান করুন!’’ তারপর উম্মে সুলাইম গর্ভবতী হলেন।
এক সফরে আবু তালহা (তার স্ত্রীসহ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর থেকে ফিরে আসলে সাধারণত মদীনায় রাতে প্রবেশ করতেন না। তারা যখন মদীনার নিকটবর্তী হলেন, তখন উম্মে সুলাইমের প্রসব বেদনা শুরু হল। ফলে আবু তালহা তার কাছে থেকে গেলেন আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনার দিকে রওয়ানা হলেন। বর্ণনাকারী আনাস রা. বলেন, আবু তালহা বলতে লাগলেন, হে আল্লাহ! আপনি অবশ্যই জানেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোথাও যান তখন তাঁর সাথে বের হওয়া এবং যখন প্রবেশ করেন তাঁর সাথে প্রবেশ করা আমার কাছে পছন্দনীয়। কিন্তু আমি এখন যে কারণে আটকে পড়লাম তা আপনি দেখছেন। উম্মে সুলাইম তখন বললেন, হে আবু তালহা আমি যে বেদনা অনুভব করছিলাম এখন তা আর নেই। চলুন (রাসূলুল্লাহর সাথে) যাই। অতঃপর আমরা চলে আসলাম। মদীনার আসার পর তার প্রসব বেদনা আরম্ভ হল এবং একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হল।
আনাস রা. বলেন, আমার আম্মা (উম্মে সুলাইম) আমাকে বললেন, এ বাচ্চাকে দুধ পান করার আগেই সকালে তুমি তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে যাবে। যখন সকাল হল, আমি বাচ্চাটাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসলাম। এরপর তিনি সম্পূর্ণ হাদীসটি বর্ণনা করলেন।
وفي روايةٍ للْبُخَاريِّ : قال ابْنُ عُيَيْنَة : فَقَالَ رجُلٌ منَ الأَنْصارِ : فَرَأَيْتُ تَسعة أَوْلادٍ كلُّهُمْ قدْ قَرؤُوا الْقُرْآنَ ، يعْنِي مِنْ أَوْلادِ عَبْدِ اللَّه الْموْلُود .
وفي روايةٍ لمسلِم : ماتَ ابْنٌ لأبِي طَلْحَةَ مِنْ أُمِّ سُلَيْمٍ ، فَقَالَتْ لأهْلِهَا : لا تُحَدِّثُوا أَبَا طَلْحَةَ بابنِهِ حتَّى أَكُونَ أَنَا أُحَدِّثُهُ ، فَجَاءَ فَقَرَّبَتْ إِلَيْهِ عَشَاءً فَأَكَلَ وشَرِبَ ، ثُمَّ تَصنَّعتْ لهُ أَحْسنَ ما كانتْ تَصَنَّعُ قَبْلَ ذلكَ ، فَوقَعَ بِهَا ، فَلَمَّا أَنْ رأَتْ أَنَّهُ قَدْ شَبِعِ وأَصَابَ مِنْها قَالتْ : يا أَبَا طلْحةَ ، أَرَايْتَ لَوْ أَنَّ قَوْماً أَعارُوا عارِيتهُمْ أَهْل بيْتٍ فَطَلبوا عاريَتَهُم ، ألَهُمْ أَنْ يمْنَعُوهَا؟ قَالَ : لا ، فَقَالَتْ : فاحتسِبْ ابْنَكَ . قَالَ : فغَضِبَ ، ثُمَّ قَالَ : تركتنِي حتَّى إِذَا تَلطَّخْتُ ثُمَّ أَخْبرتِني بِابْني ، فَانْطَلَقَ حتَّى أَتَى رسولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم فأخْبَرهُ بما كَانَ ، فَقَالَ رسولُ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : « بَاركَ اللَّه لكُما في ليْلتِكُما » .
قال : فحملَتْ ، قال : وكَانَ رسول اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم في سفَرٍ وهِي مَعَهُ وكَانَ رسولُ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم إِذَا أَتَى الْمَدِينَةِ مِنْ سَفَرٍ لاَ يَطْرُقُها طُرُوقاً فَدنَوْا مِنَ الْمَدِينَةِ ، فَضَرَبَهَا الْمَخاضُ ، فَاحْتَبَس عَلَيْهَا أَبُو طلْحَةَ ، وانْطلَقَ رسولُ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم . قَالَ : يقُولُ أَبُو طَلْحةَ إِنَّكَ لتعلمُ يَا ربِّ أَنَّهُ يعْجبُنِي أَنْ أَخْرُجَ معَ رسولِ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم إِذَا خَرَجَ ، وأَدْخُلَ مَعهُ إِذَا دَخَلَ ، وقَدِ احْتَبَسْتُ بِما تَرى . تقولُ أُمُّ سُلَيْمٍ : يا أَبَا طلْحةَ مَا أَجِد الَّذي كنْتُ أَجِدُ ، انْطَلِقْ ، فانْطَلقْنَا ، وضَربهَا المَخاضُ حينَ قَدِمَا فَولَدتْ غُلاماً . فقالَتْ لِي أُمِّي : يا أَنَسُ لا يُرْضِعُهُ أَحدٌ تَغْدُوَ بِهِ عَلَى رسُول اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، فلمَّا أَصْبحَ احتملْتُهُ فانطَلقْتُ بِهِ إِلَى رسولِ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم . وذَكَرَ تمامَ الْحَدِيثِ .
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু তালহার এক ছেলে অসুস্থ ছিল। আবু তালহা কাজে বের হয়ে গেলেন। তখন ছেলেটি মৃত্যু বরণ করল। আবু তালহা রাতে যখন ফিরে আসলেন তখন বললেন, আমার ছেলে কি করে? ছেলের মা উম্মে সুলাইম বললেন, সে আগের চেয়ে শান্ত। এরপর তিনি আবু তালহা-কে রাতের খাবার দিলেন। আবু তালহা খাবার খেলেন। রাতে স্ত্রীর সাথে মিলিত হলেন। অতঃপর যখন অবসর হলেন উম্মে সুলাইম তখন বললেন, ছেলেকে দাফন করে দিন। আবু তালহা সকাল বেলা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে এ ঘটনা বর্ণনা করলেন তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি রাতে স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছ?’ আবু তালহা হ্যাঁ বললেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘‘হে আল্লাহ ! তাদের দুজনকে আপনি বরকত দান করুন।’’ পরে উম্মে সুলাইমের একটি ছেলে জন্ম গ্রহণ করল।
আনাস রা. বললেন, আবু তালহা আমাকে বললেন, বাচ্চাটিকে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাও। সাথে কিছু খেজুর দিয়ে দিলেন। রাসূলুল্লাহ বাচ্চাটিকে দেখে বললেন, ‘তার সাথে কিছু আছে?’’ আনাস রা. বললেন, হ্যাঁ খেজুর আছে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি খেজুর নিয়ে চিবালেন। তা বাচ্চার মুখে দিলেন। বাচ্চাটির নাম রাখলেন আব্দুল্লাহ।
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
বুখারীর অন্য একটি বর্ণনায় আছে, ইবনু উআইনা বলেছেন, আনসারদের এক ব্যক্তি বলেছেন, আমি নয়টি ছেলে দেখেছি। তারা সকলেই কুরআন পড়েছে। (অর্থাৎ আবু তালহার ছেলে আব্দুল্লাহর সন্তান)
মুসলিমের অন্য একটি বর্ণনায় আছে, আবু তালহার ছেলে মৃত্যু বরণ করলে ছেলেটির মা উম্মে সুলাইম বাড়ীর লোকদের বললেন, আমি ছেলে সম্পর্কে আবু তালহাকে কিছু বলার পূর্বে তোমরা কিছু বলবে না। আবু তালহা বাড়ীতে এলে উম্মে সুলাইম তাকে রাতের খাবার দিলেন। তিনি পানাহার করলেন। এরপর উম্মে সুলাইম স্বামীর জন্য নিজেকে সাজালেন আগের চেয়ে সুন্দর করে। আবু তালহা রাতে তার সাথে মিলিত হলেন। সকালে উম্মে সুলাইম যখন দেখলেন, আবু তালহা পরিতৃপ্ত হয়েছে, তখন তাকে বললেন, আবু তালহা! বলুনতো যদি কোন সম্প্রদায় কোন পরিবারকে কিছু ধার দেয়, এরপর তারা তা ফেরত চায়, তাহলে কি সে পরিবার ফেরত না দিয়ে আটকে রাখতে পারে? আবু তালহা উত্তরে বললেন, ‘না’। উম্মে সুলাইম বললেন, ‘তাহলে আপনার ছেলের ব্যাপারে আল্লাহর কাছে প্রতিদানের আশা করুন।’ বর্ণনাকারী বলেন, আবু তালহা এ কথা শুনে রাগ হয়ে গেলেন, বললেন, তুমি আগে কিছু বলনি, এখন আমি নাপাক হওয়ার পর আমার ছেলে সম্পর্কে খবর বলছ? এরপর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে যেয়ে সব ঘটনা বললেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ করলেন, ‘‘হে আল্লাহ! আপনি তাদের দুজনের রাতে বরকত দান করুন!’’ তারপর উম্মে সুলাইম গর্ভবতী হলেন।
এক সফরে আবু তালহা (তার স্ত্রীসহ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর থেকে ফিরে আসলে সাধারণত মদীনায় রাতে প্রবেশ করতেন না। তারা যখন মদীনার নিকটবর্তী হলেন, তখন উম্মে সুলাইমের প্রসব বেদনা শুরু হল। ফলে আবু তালহা তার কাছে থেকে গেলেন আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনার দিকে রওয়ানা হলেন। বর্ণনাকারী আনাস রা. বলেন, আবু তালহা বলতে লাগলেন, হে আল্লাহ! আপনি অবশ্যই জানেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোথাও যান তখন তাঁর সাথে বের হওয়া এবং যখন প্রবেশ করেন তাঁর সাথে প্রবেশ করা আমার কাছে পছন্দনীয়। কিন্তু আমি এখন যে কারণে আটকে পড়লাম তা আপনি দেখছেন। উম্মে সুলাইম তখন বললেন, হে আবু তালহা আমি যে বেদনা অনুভব করছিলাম এখন তা আর নেই। চলুন (রাসূলুল্লাহর সাথে) যাই। অতঃপর আমরা চলে আসলাম। মদীনার আসার পর তার প্রসব বেদনা আরম্ভ হল এবং একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হল।
আনাস রা. বলেন, আমার আম্মা (উম্মে সুলাইম) আমাকে বললেন, এ বাচ্চাকে দুধ পান করার আগেই সকালে তুমি তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে যাবে। যখন সকাল হল, আমি বাচ্চাটাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসলাম। এরপর তিনি সম্পূর্ণ হাদীসটি বর্ণনা করলেন।
১- হাদীসটি বর্ণনাকারী প্রখ্যাত সাহাবী আনাস রা. ছিলেন উম্মে সুলাইমের ছেলে।
২- সাহাবী উম্মে সুলাইম রা. তার ছেলের ইন্তেকালের ঘটনায় ধৈর্য ও সবরের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিরল। পৃথিবীর কেহ এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছে বা ভবিষ্যতে পারবে বলে মনে করা যায় না। যেমন ছিল তার ধৈর্য তেমনি বুদ্ধিমত্তা।
৩- সাহাবায়ে কেরাম তাদের যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্মরণাপন্ন হতেন।
৪- তাদের ধৈর্য ধারণের ঘটনায় সন্তুষ্ট হয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের উভয়ের জন্য বরকতের দুআ করেছেন।
৫- তাদের ধৈর্যের ফলে ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দুআর বরকতে তাদের সন্তানাদি হয়েছে প্রচুর। তারা সকলেই কুরআনের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছে বলে বর্ণনাকারীগন বর্ণনা করেছেন।
৬- তাদের এ নজিরবিহীন ধৈর্যের ফল আল্লাহ দুনিয়াতে এমনভাবেই দিলেন যে, এ হাদীসের মাধ্যমে পৃথিবীর মানুষ কেয়ামত পর্যন্ত তাদের কথা শ্রদ্ধার সাথে আলোচনা করতে থাকবে।
৭- ধৈর্য ও সবরের ফল দুনিয়াতেও লাভ করা যায়। আখেরাতে তো আছেই।
৮- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সার্বক্ষণিক সঙ্গ পেতে তাঁর সাহাবায়ে কেরাম কতখানি উৎসাহী ছিলেন তা আবু তালহার বক্তব্য থেকে বুঝে আসে।
৯- অধিক সন্তানের অধিকারী হওয়াকে সাহাবায়ে কেরাম সৌভাগ্য ও বরকত মনে করতেন। এবং সন্তান কুরআনের শিক্ষায় শিক্ষিত হলে তা তাদের গর্বের বিষয় হত।
২- সাহাবী উম্মে সুলাইম রা. তার ছেলের ইন্তেকালের ঘটনায় ধৈর্য ও সবরের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিরল। পৃথিবীর কেহ এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছে বা ভবিষ্যতে পারবে বলে মনে করা যায় না। যেমন ছিল তার ধৈর্য তেমনি বুদ্ধিমত্তা।
৩- সাহাবায়ে কেরাম তাদের যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্মরণাপন্ন হতেন।
৪- তাদের ধৈর্য ধারণের ঘটনায় সন্তুষ্ট হয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের উভয়ের জন্য বরকতের দুআ করেছেন।
৫- তাদের ধৈর্যের ফলে ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দুআর বরকতে তাদের সন্তানাদি হয়েছে প্রচুর। তারা সকলেই কুরআনের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছে বলে বর্ণনাকারীগন বর্ণনা করেছেন।
৬- তাদের এ নজিরবিহীন ধৈর্যের ফল আল্লাহ দুনিয়াতে এমনভাবেই দিলেন যে, এ হাদীসের মাধ্যমে পৃথিবীর মানুষ কেয়ামত পর্যন্ত তাদের কথা শ্রদ্ধার সাথে আলোচনা করতে থাকবে।
৭- ধৈর্য ও সবরের ফল দুনিয়াতেও লাভ করা যায়। আখেরাতে তো আছেই।
৮- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সার্বক্ষণিক সঙ্গ পেতে তাঁর সাহাবায়ে কেরাম কতখানি উৎসাহী ছিলেন তা আবু তালহার বক্তব্য থেকে বুঝে আসে।
৯- অধিক সন্তানের অধিকারী হওয়াকে সাহাবায়ে কেরাম সৌভাগ্য ও বরকত মনে করতেন। এবং সন্তান কুরআনের শিক্ষায় শিক্ষিত হলে তা তাদের গর্বের বিষয় হত।
21 - وعنْ أَبِي هُريرةَ رضي اللَّه عنه أَن رسول اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قال : « لَيْسَ الشديدُ بالصُّرَعةِ إِنمَّا الشديدُ الَّذي يمْلِكُ نَفسَهُ عِنْد الْغَضَبِ » متفقٌ عليه .
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘কুস্তিতে অন্যকে আছাড় দেওয়ার মাধ্যমে শক্তিশালী প্রমাণিত হয় না। অবশ্য শক্তিশালী হল সেই ব্যক্তি, যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংযত রাখতে সক্ষম হয়।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘কুস্তিতে অন্যকে আছাড় দেওয়ার মাধ্যমে শক্তিশালী প্রমাণিত হয় না। অবশ্য শক্তিশালী হল সেই ব্যক্তি, যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংযত রাখতে সক্ষম হয়।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
22 - وعنْ سُلَيْمانَ بْنِ صُرَدٍ رضي اللَّه عنهُ قال : كُنْتُ جالِساً مع النَّبِي صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم، ورجُلان يستَبَّانِ وأَحدُهُمَا قَدِ احْمَرَّ وَجْهُهُ . وانْتفَخَتْ أودَاجهُ . فقال رسولُ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : « إِنِّي لأعلَمُ كَلِمةً لَوْ قَالَهَا لَذَهَبَ عنْهُ ما يجِدُ ، لوْ قَالَ : أَعْوذُ بِاللّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ ذَهَبَ عنْهُ ما يجدُ . فقَالُوا لَهُ : إِنَّ النَّبِيَّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قَالَ : «تعوَّذْ بِاللِّهِ مِن الشَّيَطان الرَّجِيمِ » . متفقٌ عليه .
সুলাইমান ইবনে সুরাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে বসা ছিলাম। তখন দু জন লোক একে অপরকে গালি দিচ্ছিল। একজনের চেহারা ক্রোধে লাল হয়ে গিয়েছিল, ঘাড়ের শিরাগুলো ফুলে উঠেছিল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘‘আমি এমন একটি কথা জানি তা যদি সে বলে তাহলে তার এ অবস্থা দূর হয়ে যাবে। সে যদি আউযু বিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রজীম বলে তবে তার এ অবস্থা চলে যাবে।’’ এরপর লোকেরা তাকে বলল, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আউযু বিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রজীম বলে শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
সুলাইমান ইবনে সুরাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে বসা ছিলাম। তখন দু জন লোক একে অপরকে গালি দিচ্ছিল। একজনের চেহারা ক্রোধে লাল হয়ে গিয়েছিল, ঘাড়ের শিরাগুলো ফুলে উঠেছিল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘‘আমি এমন একটি কথা জানি তা যদি সে বলে তাহলে তার এ অবস্থা দূর হয়ে যাবে। সে যদি আউযু বিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রজীম বলে তবে তার এ অবস্থা চলে যাবে।’’ এরপর লোকেরা তাকে বলল, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আউযু বিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রজীম বলে শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
১- রাগ এমন একটি দোষ যাতে আক্রান্ত হলে মানুষ আরো অনেক দোষে জড়িয়ে হয়ে পড়ে। রাগের মাথায় মানুষ অন্যকে গালি দেয়, মারতে উদ্যত হয়, নিজ স্ত্রীকে পর্যন্ত তালাক দেয়। তাই রাগ সর্বদা ধৈর্যের পরিপন্থী বিষয়। কারো মধ্যে ধৈর্য নামক গুণটি থাকলে তাকে রাগে কাবু করতে পারে না।
২- কেহ রাগ হলে তার রাগ থামানোর জন্য চেষ্টা করা সুন্নাত।
৩- যে রাগ হয়ে যায় সে নিজের রাগ থামানোর কোন প্রয়োজন অনুভব করে না। তাই তার রাগ থামানোর জন্য উপস্থিত ব্যক্তিরা যে কোন কৌশল অবলম্বন করতে পারে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উপস্থিত সাহাবীগণ এমন একটি কৌশল অবলম্বন করেছিলেন আউজুবিল্লাহ . . . বলার মাধ্যমে।
৪- রাগ হলে শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করার শিক্ষার মাধমে স্পষ্ট হল, শয়তানের কুমন্ত্রণায়-ই রাগ এসে থাকে। তাই রাগ ও ক্রোধ শয়তানের অস্ত্র। শয়তানের এ অস্ত্র থেকে সাবধান থাকা সকলের কর্তব্য।
৫- শয়তানের প্ররোচনায় যেহেতু মানুষ রাগ হয় তাই রাগ আসলে শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা অর্থাৎ আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রজীম বলা সুন্নাত। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ
وَإِمَّا يَنْزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ إِنَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
‘‘আর যদি শয়তানের পক্ষ হতে কোন প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে তুমি আল্লাহর আশ্রয় চাও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’’
সূরা আল-আরাফ, আয়াত ২০০
২- কেহ রাগ হলে তার রাগ থামানোর জন্য চেষ্টা করা সুন্নাত।
৩- যে রাগ হয়ে যায় সে নিজের রাগ থামানোর কোন প্রয়োজন অনুভব করে না। তাই তার রাগ থামানোর জন্য উপস্থিত ব্যক্তিরা যে কোন কৌশল অবলম্বন করতে পারে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উপস্থিত সাহাবীগণ এমন একটি কৌশল অবলম্বন করেছিলেন আউজুবিল্লাহ . . . বলার মাধ্যমে।
৪- রাগ হলে শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করার শিক্ষার মাধমে স্পষ্ট হল, শয়তানের কুমন্ত্রণায়-ই রাগ এসে থাকে। তাই রাগ ও ক্রোধ শয়তানের অস্ত্র। শয়তানের এ অস্ত্র থেকে সাবধান থাকা সকলের কর্তব্য।
৫- শয়তানের প্ররোচনায় যেহেতু মানুষ রাগ হয় তাই রাগ আসলে শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা অর্থাৎ আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রজীম বলা সুন্নাত। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেনঃ
وَإِمَّا يَنْزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ إِنَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
‘‘আর যদি শয়তানের পক্ষ হতে কোন প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে তুমি আল্লাহর আশ্রয় চাও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’’
সূরা আল-আরাফ, আয়াত ২০০
23 - وعنْ مُعاذ بْنِ أَنَسٍ رضي اللَّه عنه أَنَّ النَّبِيَّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قَالَ : « مَنْ كظَمَ غيظاً ، وهُو قَادِرٌ عَلَى أَنْ يُنْفِذَهُ ، دَعَاهُ اللَّهُ سُبْحانَهُ وتَعالَى عَلَى رُؤُوسِ الْخلائقِ يَوْمَ الْقِيامَةِ حَتَّى يُخَيِّرَهُ مِنَ الْحُورِ الْعِينِ مَا شَاءَ » رواه أَبُو داوُدَ ، والتِّرْمِذيُّ وقال : حديثٌ حسنٌ .
মুআজ ইবনে আনাস রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের ক্রোধ কার্যকর করার ক্ষমতা রাখা সত্বেও তা দমিয়ে রাখে কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে সকল সৃষ্টি উপর মর্যাদা দিয়ে ডাকবেন। এমনকি তাকে বড় বড় চোখের অধিকারী হূরদের মধ্য থেকে যাদের ইচ্ছা বেছে নেয়ার স্বাধীনতা দেবেন।
বর্ণনায়ঃ আবু দাউদ ও তিরমিজী
মুআজ ইবনে আনাস রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের ক্রোধ কার্যকর করার ক্ষমতা রাখা সত্বেও তা দমিয়ে রাখে কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে সকল সৃষ্টি উপর মর্যাদা দিয়ে ডাকবেন। এমনকি তাকে বড় বড় চোখের অধিকারী হূরদের মধ্য থেকে যাদের ইচ্ছা বেছে নেয়ার স্বাধীনতা দেবেন।
বর্ণনায়ঃ আবু দাউদ ও তিরমিজী
১- রাগ বা ক্রোধ প্রকাশ করা ও তার চাহিদা কার্যকর করার সামর্থ থাকা সত্বেও তা দমিয়ে রেখে ধৈর্য ধারণের ফজিলত।
২- রাগের সময় যা মনে চায়, তা না করে ধৈর্য ধারণ করলে কি পুরস্কার রয়েছে তার বর্ণনা।
যারা ক্রোধ দমিয়ে রাখে আল্লাহ রাববুল আলামীন তাদের প্রশংসা করে বলেছেনঃ
الَّذِينَ يُنْفِقُونَ فِي السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
‘‘যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন।’’
সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৩৪
২- রাগের সময় যা মনে চায়, তা না করে ধৈর্য ধারণ করলে কি পুরস্কার রয়েছে তার বর্ণনা।
যারা ক্রোধ দমিয়ে রাখে আল্লাহ রাববুল আলামীন তাদের প্রশংসা করে বলেছেনঃ
الَّذِينَ يُنْفِقُونَ فِي السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
‘‘যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন।’’
সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৩৪
24 - وعنْ أَبِي هُريْرَةَ رَضيَ اللَّهُ عنهُ أَنَّ رَجُلاً قَالَ للنَّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : أوْصِني ، قَالَ : « لا تَغضَبْ » فَردَّدَ مِراراً قَالَ ، « لا تَغْضَبْ » رواه البخاريُّ .
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলল, আমাকে অসিয়ত করুন। তিনি বললেনঃ ‘‘রাগ করবে না।’’ সে ব্যক্তি ‘আমাকে অসীয়ত করুন’ কথাটি বারবার বলল। আর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিবার তাকে বললেনঃ ‘‘রাগ করবে না।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলল, আমাকে অসিয়ত করুন। তিনি বললেনঃ ‘‘রাগ করবে না।’’ সে ব্যক্তি ‘আমাকে অসীয়ত করুন’ কথাটি বারবার বলল। আর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিবার তাকে বললেনঃ ‘‘রাগ করবে না।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী
25 - وَعَنْ أبي هُرَيْرةَ رَضِيَ اللَّهُ عنه قال : قال رسولُ اللَّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : « مَا يَزَال الْبَلاءُ بِالْمُؤْمِنِ وَالْمؤمِنَةِ في نَفْسِهِ وَولَدِهِ ومَالِهِ حَتَّى يَلْقَى اللَّه تعالى وَمَا عَلَيْهِ خَطِيئَةٌ» رواه التِّرْمِذيُّ وقال : حديثٌ حسنٌ صحِيحٌ .
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘মুমিন নর ও নারীর উপর, তাদের সন্তান-সন্ততি ও ধন-সম্পদের উপর সর্বদা বিপদ-মুসীবত আসতেই থাকে। অবশেষে সে আল্লাহর সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাত করে যে, তার আর কোন পাপ অবশিষ্ট থাকে না।’’
বর্ণনায়ঃ তিরমিজী, তিনি হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘মুমিন নর ও নারীর উপর, তাদের সন্তান-সন্ততি ও ধন-সম্পদের উপর সর্বদা বিপদ-মুসীবত আসতেই থাকে। অবশেষে সে আল্লাহর সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাত করে যে, তার আর কোন পাপ অবশিষ্ট থাকে না।’’
বর্ণনায়ঃ তিরমিজী, তিনি হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন
১- বিপদ- আপদ মুসলিমদের সাথি। তবে তা আজাব-গজব হিসাবে নয়। পরীক্ষা, উচ্চ মর্যাদা লাভ ও পাপ মুক্তির কারণ হিসাবে এসে থাকে।
২- যদি বিপদ আপদে ধৈর্য ধারণ করা হয় তাহলেই সেই বিপদ আপদ মুসলমানের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে। গুনাহ মাফের কারণ হিসাবে গৃহিত হয়।
৩- বিপদ-মুসীবত নিজের উপর আসুক বা নিজের সন্তান-সন্ততি, পরিবারের উপর আসুক কিংবা নিজের সম্পদের উপর আসুক সকল প্রকার বিপদে ধৈর্য ধারণ করলেই তা গুনাহের কাফফারা হিসাবে গ্রহণ করা হয়।
যেমন আল্লাহ তাআলা বলেছেন
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنْفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ ( البقرة : 155)
‘‘আমি তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা অবশ্যই পরীক্ষা করব। আর তুমি শুভ সংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের।’’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৫৫)
২- যদি বিপদ আপদে ধৈর্য ধারণ করা হয় তাহলেই সেই বিপদ আপদ মুসলমানের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে। গুনাহ মাফের কারণ হিসাবে গৃহিত হয়।
৩- বিপদ-মুসীবত নিজের উপর আসুক বা নিজের সন্তান-সন্ততি, পরিবারের উপর আসুক কিংবা নিজের সম্পদের উপর আসুক সকল প্রকার বিপদে ধৈর্য ধারণ করলেই তা গুনাহের কাফফারা হিসাবে গ্রহণ করা হয়।
যেমন আল্লাহ তাআলা বলেছেন
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنْفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ ( البقرة : 155)
‘‘আমি তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা অবশ্যই পরীক্ষা করব। আর তুমি শুভ সংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের।’’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৫৫)
26 - وَعَنْ ابْن عَبَاسٍ رضي اللَّه عنهما قال : قَدِمَ عُيَيْنَة بْنُ حِصْنٍ فَنَزلَ عَلَى ابْنِ أَخيِهِ الْحُر بْنِ قَيْسٍ ، وَكَانَ مِن النَّفَرِ الَّذِين يُدْنِيهِمْ عُمرُ رضِيَ اللَّهُ عنهُ ، وَكَانَ الْقُرَّاءُ أَصْحابَ مَجْلِسِ عُمَرَ رضي اللَّهُ عنه وَمُشاوَرَتِهِ كُهولاً كَانُوا أَوْ شُبَّاناً ، فَقَالَ عُييْنَةُ لابْنِ أَخيِهِ : يَا ابْنَ أَخِى لَكَ وَجْهٌ عِنْدَ هَذَا الأمِيرِ فَاسْتَأْذِنْ لى عَلَيْهِ ، فاستَأذنَ فَأَذِنَ لَهُ عُمرُ . فَلَمَّا دخَلَ قَالَ : هِيْ يا ابْنَ الْخَطَّاب ، فَوَاللَّه مَا تُعْطِينَا الْجَزْلَ وَلا تَحْكُمُ فِينَا بالْعَدْل ، فَغَضِبَ عُمَرُ رضيَ اللَّه عنه حتَّى هَمَّ أَنْ يُوقِعَ بِهِ فَقَالَ لَهُ الْحُرُّ : يا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ إِنَّ اللَّه تعَالى قَال لِنبِيِّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : { خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الجاهلينَ } [ سورة الأعراف : 198 ] وإنَّ هَذَا مِنَ الجاهلينَ ، وَاللَّه ما جاوَزَها عُمَرُ حِينَ تلاها ، وكَانَ وَقَّافاً عِنْد كِتَابِ اللَّهِ تعالى رواه البخارى .
ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উআইনা ইবনে হিসান মদীনায় তার ভাতিজা হুর ইবনে কায়েসের কাছে বেড়াতে আসলেন। তিনি উমার রা. এর ঘনিষ্ট ব্যক্তিদের একজন ছিলেন। উমার রা. এর পরিষদ বর্গের সকলে ছিলেন কুরআন সম্পর্কে জ্ঞানী। যুব বৃদ্ধ সকলেই। উআইনা তার ভাতিজাকে বললেন, হে ভাতিজা! আমীরুল মুমীনিনের কাছে তোমার মর্যাদা আছে। তার সাথে সাক্ষাতের জন্য আমার জন্য অনুমতি চেয়ে দাও। অতঃপর তিনি অনুমতি চাইলেন। উমারা রা. তাকে অনুমতি দিলেন। যখন সাক্ষাতের জন্য উমারের কাছে গেলেন তখন তাকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘হে খাত্তাবের ছেলে! আল্লাহর কসম! আপনি আমাদের বেশী প্রদান করেন না ও আমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করেন না।’ উমার রা. এ কথা শুনে অসন্তুষ্ট হলেন এমনকি তাকে শাস্তি দিতে উদ্যত হলেন। তখন হুর তাকে বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীকে বলেছেন,
خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجَاهِلِينَ .
‘‘তুমি ক্ষমা প্রদর্শন কর এবং ভালো কাজের আদেশ দাও। আর মূর্খদের থেকে বিমুখ থাক।’’ আর এ ব্যক্তি মূর্খদের একজন। আল্লাহর কসম! এ আয়াত শোনার পর উমার কোন ব্যবস্থা নেননি। তিনি কুরআনের হুকুমের কাছে থেমে যেতেন।
বর্ণনায়ঃ বুখারী
ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উআইনা ইবনে হিসান মদীনায় তার ভাতিজা হুর ইবনে কায়েসের কাছে বেড়াতে আসলেন। তিনি উমার রা. এর ঘনিষ্ট ব্যক্তিদের একজন ছিলেন। উমার রা. এর পরিষদ বর্গের সকলে ছিলেন কুরআন সম্পর্কে জ্ঞানী। যুব বৃদ্ধ সকলেই। উআইনা তার ভাতিজাকে বললেন, হে ভাতিজা! আমীরুল মুমীনিনের কাছে তোমার মর্যাদা আছে। তার সাথে সাক্ষাতের জন্য আমার জন্য অনুমতি চেয়ে দাও। অতঃপর তিনি অনুমতি চাইলেন। উমারা রা. তাকে অনুমতি দিলেন। যখন সাক্ষাতের জন্য উমারের কাছে গেলেন তখন তাকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘হে খাত্তাবের ছেলে! আল্লাহর কসম! আপনি আমাদের বেশী প্রদান করেন না ও আমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করেন না।’ উমার রা. এ কথা শুনে অসন্তুষ্ট হলেন এমনকি তাকে শাস্তি দিতে উদ্যত হলেন। তখন হুর তাকে বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীকে বলেছেন,
خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجَاهِلِينَ .
‘‘তুমি ক্ষমা প্রদর্শন কর এবং ভালো কাজের আদেশ দাও। আর মূর্খদের থেকে বিমুখ থাক।’’ আর এ ব্যক্তি মূর্খদের একজন। আল্লাহর কসম! এ আয়াত শোনার পর উমার কোন ব্যবস্থা নেননি। তিনি কুরআনের হুকুমের কাছে থেমে যেতেন।
বর্ণনায়ঃ বুখারী
১- শাসক শ্রেণীর সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে সাহাবায়ে কেরাম সাহসী ছিলেন। ইসলামী রাষ্ট্রে অবাধ বাক-স্বাধীনতা ছিল। তারা শাসকদের থেকে কোন অন্যায় করা হয়েছে মনে করলে তার প্রতিবাদ করতে ভয় করতেন না। এ ধরণের ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে অসংখ্য। স্বাধীনতার ব্যবহার ও তা ভোগ করার সভ্যতা যখন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছে তখন রোম ও পারস্য সম্রাটরা কথায় কথায় মানুষের গর্দান উড়িয়ে দিত। তাদের সম্পর্কে পিছনে বসেও কেহ এ ধরনের কথা বলার বিষয় কল্পনা করতে পারত না।
২- এমনিভাবে সাহাবায়ে কেরাম শাসকদের যথাযথ উপদেশ ও ইসলামী দিকনির্দেশনা দিতে কোন রকম ভয় করতেন না বা তোষামোদের আশ্রয় নিতেন না।
৩- কুরআনের আদেশের সামনে উমার রা. কিভাবে নিজেকে সমর্পন করলেন। এ আয়াত শোনার পর তিনি এর উপর আমল করলেন। নিজের পক্ষ থেকে ভিন্ন কোন ব্যাখ্যা দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করলেন না। তাকে শাস্তি দিলেন না বা কোন তিরস্কার করলেন না। এটা কুরআনের প্রতি তার যেমন গভীর আগ্রহের প্রকাশ তেমনি তার ধৈর্যের পরিচয়। তিনি তখন অর্ধ জাহানের শাসক। ইচ্ছে করলে উআইনাকে শাস্তি দিতে পারতেন। কেহ তার উপর কতৃত্বশীল ছিল না। তা সত্বেও তিনি তাকে শাস্তি না দিয়ে নিজের ধৈর্য ও সবরের দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
৪- যে ব্যক্তি আল-কুরআনের উদ্ধৃতি দিলেন, তার প্রতি তিনি শ্রদ্ধা দেখালেন। তাকে বললেন না যে, তুমি কী আমার চেয়ে কুরআন বেশী বুঝ?
৫- বয়স ও পদে বা শিক্ষা-দীক্ষায় যে বড়, তাকে ছোটরা নসীহত করতে পারে। উপদেশ দিতে পারে। তেমনি পারে ভুল ধরিয়ে দিতে। এটা ইসলামে কোন দোষের বিষয় নয় বরং প্রশংসিত বিষয়।
২- এমনিভাবে সাহাবায়ে কেরাম শাসকদের যথাযথ উপদেশ ও ইসলামী দিকনির্দেশনা দিতে কোন রকম ভয় করতেন না বা তোষামোদের আশ্রয় নিতেন না।
৩- কুরআনের আদেশের সামনে উমার রা. কিভাবে নিজেকে সমর্পন করলেন। এ আয়াত শোনার পর তিনি এর উপর আমল করলেন। নিজের পক্ষ থেকে ভিন্ন কোন ব্যাখ্যা দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করলেন না। তাকে শাস্তি দিলেন না বা কোন তিরস্কার করলেন না। এটা কুরআনের প্রতি তার যেমন গভীর আগ্রহের প্রকাশ তেমনি তার ধৈর্যের পরিচয়। তিনি তখন অর্ধ জাহানের শাসক। ইচ্ছে করলে উআইনাকে শাস্তি দিতে পারতেন। কেহ তার উপর কতৃত্বশীল ছিল না। তা সত্বেও তিনি তাকে শাস্তি না দিয়ে নিজের ধৈর্য ও সবরের দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
৪- যে ব্যক্তি আল-কুরআনের উদ্ধৃতি দিলেন, তার প্রতি তিনি শ্রদ্ধা দেখালেন। তাকে বললেন না যে, তুমি কী আমার চেয়ে কুরআন বেশী বুঝ?
৫- বয়স ও পদে বা শিক্ষা-দীক্ষায় যে বড়, তাকে ছোটরা নসীহত করতে পারে। উপদেশ দিতে পারে। তেমনি পারে ভুল ধরিয়ে দিতে। এটা ইসলামে কোন দোষের বিষয় নয় বরং প্রশংসিত বিষয়।
27 - وعَن ابْنِ مسْعُودٍ رضي اللَّه عنه أنَّ رسولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قال : « إِنَّهَا سَتكُونُ بَعْدِى أَثَرَةٌ وَأُمُورٌ تُنْكِرونَها ، قَالُوا : يا رسُولَ اللَّهِ فَما تَأمرُنا ؟ قالَ : تُؤَدُّونَ الْحقَّ الَّذي عَلَيْكُمْ وتَسْألونَ اللَّه الذي لكُمْ » متفقٌ عليه . « والأَثَرَةُ » : الانفرادُ بالشيْءِ عمَّنْ لَهُ فيهِ حقٌّ .
ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘আমার পরে এমন কিছু প্রাধান্য গ্রহণকারী মানুষ ও বিষয় আসবে যা তোমরা অপছন্দ করবে।’’ সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ রাসূল! এমতাবস্থায় আপনি আপনি আমাদের কী নির্দেশ করবেন? তিনি বললেনঃ ‘‘তোমাদের উপর তাদের যে সকল অধিকার ও দায়িত্ব আছে তা পালন করবে, আর তোমাদের অধিকার বা পাওনা আল্লাহর কাছে চাবে।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘আমার পরে এমন কিছু প্রাধান্য গ্রহণকারী মানুষ ও বিষয় আসবে যা তোমরা অপছন্দ করবে।’’ সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ রাসূল! এমতাবস্থায় আপনি আপনি আমাদের কী নির্দেশ করবেন? তিনি বললেনঃ ‘‘তোমাদের উপর তাদের যে সকল অধিকার ও দায়িত্ব আছে তা পালন করবে, আর তোমাদের অধিকার বা পাওনা আল্লাহর কাছে চাবে।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
১- এ হাদীসে আসারাতুন বা প্রাধান্য গ্রহণকারী মানুষ বলতে সে সকল শাসক, সরকার ও কর্মকর্তাদের বুঝানো হয়েছে, যারা জনগনের সম্পদ-কে যথেচ্ছা ভোগ করে, অপচয় করে, নিজের জন্য নিজের গোষ্ঠির জন্য বা নিজের দলের জন্য খরচ করে, বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে জনগনের সম্পদ ভোগ করে। জনগনের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য সঠিকভাবে আদায় করে না। রাজনৈতিক পরিভাষায় এদেরকে স্বৈরাচারী বলা হয়।
২- এ ধরনের মানুষ যখন দেশে ক্ষমতায় থাকবে যাদের মানুষ অপছন্দ করে, তখন সাধারণ মানুষের কর্তব্য হবে সরকার ও রাষ্ট্রের প্রতি তাদের দায়িত্ব যথাযথ আদায় করা। এ সকল শাসকদের হটাতে অস্ত্র ধারণ না করা। তাদের আনুগত্য বর্জন না করা।
৩- এ ধরনের শাসকদের আমলে জনগন তাদের অধিকার বা পাওনা আদায় করতে কোন হাঙ্গামা, যুদ্ধ, বিশৃংখলা করবে না বরং তাদের অধিকার ও পাওনার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার কাছেই প্রার্থনা করবে।
৪- এ ধরনের স্বৈরাচারী, সেচ্ছাচারী, দুর্নীতিপরায়ণ শাসকদের আমলে জনগনকে ধৈর্য ধারণ করার জন্য এ হাদীস দিকনির্দেশনা দিচ্ছে।
৫- এ সংকটকালে জনগনের করণীয় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত সংক্ষেপে অল্প কথায় ব্যাপক দিকনির্দেশনা দিলেন। বললেন, ‘‘তাদের পাওনা আদায় করো আর নিজেদের পাওনা আল্লাহর কাছে চাও।’’
৬- এ হাদীস যেমন নিজেদের দেশের শাসকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তেমনি তা গ্রোত্র, দল, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাদের সেচ্ছাচারীতার ক্ষেত্রেও অধীনস্থদের এ হাদীস অনুযায়ী আচরণ করতে হবে। তাদের আনুগত্য বজায় রাখতে হবে। নয়তো সর্বত্র বিশৃংখলা লেগে থাকবে। দেশ, সমাজ ও প্রতিষ্ঠানের উন্নতি ও অগ্রগতি থমকে যাবে, আর সবকিছু স্থবির হয়ে পড়বে।
২- এ ধরনের মানুষ যখন দেশে ক্ষমতায় থাকবে যাদের মানুষ অপছন্দ করে, তখন সাধারণ মানুষের কর্তব্য হবে সরকার ও রাষ্ট্রের প্রতি তাদের দায়িত্ব যথাযথ আদায় করা। এ সকল শাসকদের হটাতে অস্ত্র ধারণ না করা। তাদের আনুগত্য বর্জন না করা।
৩- এ ধরনের শাসকদের আমলে জনগন তাদের অধিকার বা পাওনা আদায় করতে কোন হাঙ্গামা, যুদ্ধ, বিশৃংখলা করবে না বরং তাদের অধিকার ও পাওনার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার কাছেই প্রার্থনা করবে।
৪- এ ধরনের স্বৈরাচারী, সেচ্ছাচারী, দুর্নীতিপরায়ণ শাসকদের আমলে জনগনকে ধৈর্য ধারণ করার জন্য এ হাদীস দিকনির্দেশনা দিচ্ছে।
৫- এ সংকটকালে জনগনের করণীয় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত সংক্ষেপে অল্প কথায় ব্যাপক দিকনির্দেশনা দিলেন। বললেন, ‘‘তাদের পাওনা আদায় করো আর নিজেদের পাওনা আল্লাহর কাছে চাও।’’
৬- এ হাদীস যেমন নিজেদের দেশের শাসকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তেমনি তা গ্রোত্র, দল, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাদের সেচ্ছাচারীতার ক্ষেত্রেও অধীনস্থদের এ হাদীস অনুযায়ী আচরণ করতে হবে। তাদের আনুগত্য বজায় রাখতে হবে। নয়তো সর্বত্র বিশৃংখলা লেগে থাকবে। দেশ, সমাজ ও প্রতিষ্ঠানের উন্নতি ও অগ্রগতি থমকে যাবে, আর সবকিছু স্থবির হয়ে পড়বে।
28 - وَعن أبي يحْيَى أُسَيْدِ بْنِ حُضَيْرٍ رضي اللَّهُ عنهُ أَنَّ رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ قال : يا رسولَ اللَّهِ أَلا تَسْتَعْمِلُني كَمَا اسْتْعْملتَ فُلاناً وفلاناً فَقَالَ : « إِنَّكُمْ سَتَلْقَوْنَ بَعْدي أَثَرَةً فاصْبِرُوا حَتَّى تلقَوْنِي علَى الْحوْضِ » متفقٌ عليه .
আবু ইয়াহইয়া উসাইদ ইবনে হুদাইর থেকে বর্ণিত যে, এক আনসারী সাহাবী বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আমাকে দায়িত্বশীল নিয়োগ করবে না যেমন অমুক ব্যক্তিকে আপনি দায়িত্বশীল নিয়োগ করেছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘‘নিশ্চয় তোমরা আমার পরে প্রাধান্য গ্রহণকারী মানুষদের দেখতে পাবে। তখন তোমরা ধৈর্য ও সবর অবলম্বন করবে। ফলে আমার সাথে তোমরা হাউজে কাউসারে সাক্ষাত করবে।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
আবু ইয়াহইয়া উসাইদ ইবনে হুদাইর থেকে বর্ণিত যে, এক আনসারী সাহাবী বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আমাকে দায়িত্বশীল নিয়োগ করবে না যেমন অমুক ব্যক্তিকে আপনি দায়িত্বশীল নিয়োগ করেছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘‘নিশ্চয় তোমরা আমার পরে প্রাধান্য গ্রহণকারী মানুষদের দেখতে পাবে। তখন তোমরা ধৈর্য ও সবর অবলম্বন করবে। ফলে আমার সাথে তোমরা হাউজে কাউসারে সাক্ষাত করবে।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
১- এ হাদীসে আসারাতুন বা প্রাধান্য গ্রহণকারী মানুষ বলতে সে সকল শাসক, সরকার ও পরিচালকদের বুঝানো হয়েছে, যারা জনগনের সম্পদ-কে যথেচ্ছা ভোগ করে, অপচয় করে, নিজের জন্য নিজের গোষ্ঠির জন্য বা নিজের দলের জন্য খরচ করে, বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে জনগনের সম্পদ ভোগ করে। পরিভাষায় এদেরকে স্বৈরাচারী বলা হয়।
২- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নেতৃত্ব কর্তত্ব চাওয়া-কে অপছন্দ করতেন। তিনি তার সাহাবীদের নেতৃত্ব কর্তৃত্বের লোভ না করতে উপদেশ দিয়েছেন। বিভিন্ন হাদীসে তা বিবৃত হয়েছে।
৩- সরকার, শাসক বা কর্তৃপক্ষের অবিচার অনাচারের সময় ধৈর্য ধারণ করতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপদেশ দিয়েছেন।
৪- এ অবস্থায় ধৈর্য ধারণ করলে পুরুস্কারের অংশ হিসাবে কেয়ামতের সময় হাউজে কাউসারে আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে সাক্ষাত লাভ হবে।
২- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নেতৃত্ব কর্তত্ব চাওয়া-কে অপছন্দ করতেন। তিনি তার সাহাবীদের নেতৃত্ব কর্তৃত্বের লোভ না করতে উপদেশ দিয়েছেন। বিভিন্ন হাদীসে তা বিবৃত হয়েছে।
৩- সরকার, শাসক বা কর্তৃপক্ষের অবিচার অনাচারের সময় ধৈর্য ধারণ করতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপদেশ দিয়েছেন।
৪- এ অবস্থায় ধৈর্য ধারণ করলে পুরুস্কারের অংশ হিসাবে কেয়ামতের সময় হাউজে কাউসারে আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে সাক্ষাত লাভ হবে।
29 - وَعنْ أبي إِبْراهيمَ عَبْدِ اللَّه بْنِ أبي أَوْفي رضي اللَّهُ عنهمَا أَنَّ رسولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم في بعْضِ أَيَّامِهِ التي لَقِيَ فِيهَا الْعَدُوَّ ، انْتَظرَ حَتَّى إِذَا مَالَتِ الشَّمْسُ قَامَ فِيهمْ فَقَالَ : « يَا أَيُّهَا النَّاسُ لا تَتَمنَّوا لِقَاءَ الْعدُوِّ ، وَاسْأَلُوا اللَّه العَافِيَةَ ، فَإِذَا لقيتُموهم فاصْبرُوا ، وَاعْلَمُوا أَنَّ الْجَنَّة تَحْتَ ظِلاَلِ السُّيُوفِ » ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : « اللَّهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ وَمُجْرِيَ السَّحَابِ ، وَهَازِمَ الأَحْزابِ ، اهْزِمْهُمْ وَانْصُرْنا عَلَيْهِمْ » . متفقٌ عليه
আবু ইবরাহীম আব্দুল্লাহ ইবনে আউফা রা. থেকে বর্ণিত যে, দুশমনদের সাথে যুদ্ধকালীন দিনসমূহের একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুদ্ধ করার জন্য সূর্য হেলে যাওয়া (দ্বি প্রহর) পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলেন। (কিন্তু শত্রুবাহিনী আসছিল না) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাড়িয়ে বললেন, ‘‘হে লোকেরা তোমরা দুশমনদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া কামনা করো না। আল্লাহ তাআলার কাছে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করবে। তবে যখন তাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে তখন ধৈর্য ধারণ করবে। জেনে রাখ! জান্নাত হলো তরবারীর ছায়া তলে।’’ অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ করে বললেন, ‘‘কিতাব নাযিলকারী, মেঘমালা পরিচালনাকারী ও শত্রু বাহিনীকে পররাজিতকারী হে আল্লাহ! আপনি তাদের পরাস্ত করুন এবং তাদের উপর আমাদের বিজয় দান করুন।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
আবু ইবরাহীম আব্দুল্লাহ ইবনে আউফা রা. থেকে বর্ণিত যে, দুশমনদের সাথে যুদ্ধকালীন দিনসমূহের একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুদ্ধ করার জন্য সূর্য হেলে যাওয়া (দ্বি প্রহর) পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলেন। (কিন্তু শত্রুবাহিনী আসছিল না) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাড়িয়ে বললেন, ‘‘হে লোকেরা তোমরা দুশমনদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া কামনা করো না। আল্লাহ তাআলার কাছে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করবে। তবে যখন তাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে তখন ধৈর্য ধারণ করবে। জেনে রাখ! জান্নাত হলো তরবারীর ছায়া তলে।’’ অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ করে বললেন, ‘‘কিতাব নাযিলকারী, মেঘমালা পরিচালনাকারী ও শত্রু বাহিনীকে পররাজিতকারী হে আল্লাহ! আপনি তাদের পরাস্ত করুন এবং তাদের উপর আমাদের বিজয় দান করুন।’’
বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম
১- ইসলামে জিহাদের গুরুত্ব ও ফজিলত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শত্রুর বিরুদ্ধে নিজে বহু সংখ্যক জিহাদে অংশ নিয়েছেন।
২- কোথাও শত্রুর বিরুদ্ধে অভিযানে বের হলে ফজরের পূর্বেই বের হতেন। এ হাদীসে দেখা যায় তিনি দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন শত্রুর প্রতীক্ষায়।
৩- ইসলামের কোন যুদ্ধই অযথা বা আক্রমণাত্নক ছিল না। বরং সবগুলো ছিল আত্নরক্ষামুলক যুদ্ধ। শত্রুর পক্ষ থেকে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ মোকাবেলা করতে হয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে। তাইতো তিনি বলেছেন ‘‘শত্রুর সাথে সাক্ষাত তোমরা কামনা করবে না বরং শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করবে।’’ ইসলামের নীতি যদি যুদ্ধ করে ধর্ম প্রচার করা হতো, তাহলে তিনি এমন কথা বলতেন না।
৪- ‘তোমরা শত্রুর সাথে সাক্ষাতের প্রত্যাশা করবে না বরং শান্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করো’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এ বাণীটি ‘ইসলামে যুদ্ধ ও শান্তি’ বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি।
৫- কিন্তু শত্রু যখন মুসলিম জনপদে আগ্রাসন চালিয়ে বসে, তখন তাদের প্রতিরোধে যুদ্ধ করা অনিবার্য ও অপরিহার্য হয়ে যাবে প্রতিটি মুসলমানের উপর। তখন ধৈর্য ধারণ করে তাদের সাথে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে যতক্ষণ না তারা পরাস্ত হয়। মুসলিম জনপদে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়।
৬- ‘তরবারীর ছায়াতলে জান্নাত’ কথা বলে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জিহাদের মর্যাদা ও গুরুত্ব বুঝানো হয়েছে।
৭- শত্রুর বিরুদ্ধে বিজয় কামনা করে দুআ করা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি মহান সুন্নাত। আল্লাহ রাববুল আলামীন নিজেও আল-কুরআনের বহু স্থানে শত্রুর পরাজয় ও নিজেদের বিজয় কামনা করে দুআ করার জন্য মুসলমানদের উৎসাহিত করেছেন। এ দুআ যেমন যুদ্ধের ময়দানে করা উচিত তেমনি অন্য সময়ও করা দরকার।
বি: দ্র: এ গ্রন্থে বর্ণিত হাদীসগুলো ইমাম নববী রহ. এর রিয়াদুস সালেহীন থেকে সংগৃহিত।
সমাপ্ত
২- কোথাও শত্রুর বিরুদ্ধে অভিযানে বের হলে ফজরের পূর্বেই বের হতেন। এ হাদীসে দেখা যায় তিনি দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন শত্রুর প্রতীক্ষায়।
৩- ইসলামের কোন যুদ্ধই অযথা বা আক্রমণাত্নক ছিল না। বরং সবগুলো ছিল আত্নরক্ষামুলক যুদ্ধ। শত্রুর পক্ষ থেকে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ মোকাবেলা করতে হয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে। তাইতো তিনি বলেছেন ‘‘শত্রুর সাথে সাক্ষাত তোমরা কামনা করবে না বরং শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করবে।’’ ইসলামের নীতি যদি যুদ্ধ করে ধর্ম প্রচার করা হতো, তাহলে তিনি এমন কথা বলতেন না।
৪- ‘তোমরা শত্রুর সাথে সাক্ষাতের প্রত্যাশা করবে না বরং শান্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করো’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এ বাণীটি ‘ইসলামে যুদ্ধ ও শান্তি’ বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি।
৫- কিন্তু শত্রু যখন মুসলিম জনপদে আগ্রাসন চালিয়ে বসে, তখন তাদের প্রতিরোধে যুদ্ধ করা অনিবার্য ও অপরিহার্য হয়ে যাবে প্রতিটি মুসলমানের উপর। তখন ধৈর্য ধারণ করে তাদের সাথে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে যতক্ষণ না তারা পরাস্ত হয়। মুসলিম জনপদে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়।
৬- ‘তরবারীর ছায়াতলে জান্নাত’ কথা বলে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জিহাদের মর্যাদা ও গুরুত্ব বুঝানো হয়েছে।
৭- শত্রুর বিরুদ্ধে বিজয় কামনা করে দুআ করা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি মহান সুন্নাত। আল্লাহ রাববুল আলামীন নিজেও আল-কুরআনের বহু স্থানে শত্রুর পরাজয় ও নিজেদের বিজয় কামনা করে দুআ করার জন্য মুসলমানদের উৎসাহিত করেছেন। এ দুআ যেমন যুদ্ধের ময়দানে করা উচিত তেমনি অন্য সময়ও করা দরকার।
বি: দ্র: এ গ্রন্থে বর্ণিত হাদীসগুলো ইমাম নববী রহ. এর রিয়াদুস সালেহীন থেকে সংগৃহিত।
সমাপ্ত
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন