hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

১১
নবম আসর : দয়া ও রহমতের নবী (১)
নিজ শত্রুদের প্রতি তাঁর দয়া ও অনুকম্পা

নবী করিম সাল্ল্লাল্ল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সমগ্র মানব জাতির জন্য রহমত বিশেষ। এ বিশেষণে বিশেষায়িত করে মহান আল্ল্লহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করছেন।

وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ .

আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

إنما بعثت رحمة . رواه مسلم

আমি তো রহমত স্বরূপ প্রেরিত হয়েছি।

তাঁর দয়া ও রহমত ছিল মুসলিম অমুসলিম সবার ক্ষেত্রেই ব্যাপক ।

সাহাবী তোফায়েল বিন আমর আদদাওসী যখন নিজ কবীলা দাওসের হেদায়েত প্রাপ্তি নিয়ে একেবারে নিরাশ হয়ে রাসূলুল্লাহর নিকট এসে আরজ করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ! দাওস সম্প্রদায় নাফরমানী করছে এবং হক গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। আপনি তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর নিকট বলুন, তাদের উপর বদ-দুআ করুন।

দরখাস্ত শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবলামুখী হয়ে দু হাত ওঠালেন। দৃশ্য দেখে লোকেরা দাওস গোত্রের ধ্বংস হওয়ার ব্যাপারে নিঃসংশয় হয়ে গেল। কিন্তু রহমতের নবী দোয়া করে বললেন:

اللهم اهد دوسا وائت بهم .

হে আল্ল্লাহ দাওসকে হেদায়াত দান কর এবং সুপথে নিয়ে আস।

তাদের জন্যে তিনি হেদায়াত ও কল্যাণের দুআ করলেন। ধ্বংস ও বিনাশের দুআ হতে তিনি বিরত রইলেন। কারণ তিনি মানবতার জন্যে শুধু কল্যাণই কামনা করতেন, তিনি তাদের সফলতা ও মুক্তির প্রত্যাশা করতেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামের দাওয়াত দেয়ার জন্যে তায়েফ গিয়েছেন। কিন্তু তায়েফবাসী তাঁর এ কল্যাণময় আহ্বান শোনার কথা দূরে থাক, বরং তারা তাকে বিদ্রূপ ও উপহাস করল। দুষ্ট লোকদের তাঁর পেছনে লেলিয়ে দিল। তারা তাঁকে পাথর নিক্ষেপ করে রক্তাক্ত করে দিল, তাঁর গোড়ালিদ্বয় থেকে অজস্র রক্ত ঝরল।

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা উক্ত ঘটনা সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জানতে চাইলাম, আপনার জীবনে উহুদের দিন থেকেও মারাত্মক কোন দিন কি অতিবাহিত হয়েছে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: (হ্যাঁ,) আকাবার দিন তোমার সম্প্রদায়ের কাছ থেকে যা পেয়েছিলাম। -তাদের কাছ থেকে যে ব্যবহার আমি পেয়েছিলাম সেটি ছিল খুবই ভয়াবহ- যখন আমি নিজেকে ইবনে আবদে ইয়ালীল বিন আবদে কুলালের সামনে পেশ করেছিলাম। কিন্তু তার কাছে যা আশা করেছিলাম সেটি পাইনি। তাই দুঃখ ভরা হৃদয় ও বিষন্ন চেহারা নিয়ে ফিরে আসছিলাম। করনুস সাআলিব নামক স্থানে এসে চৈতন্য ফিরে পেলাম। মাথা উপরে উঠিয়ে দেখি একগুচ্ছ মেঘ আমাকে ছায়া দিচ্ছে। ভাল করে তাকিয়ে দেখি সেখানে জিবরাইলও আছেন। আমাকে ডেকে বললেন, আপনার পালনকর্তা -আপনার কওমের কথা এবং তারা যে উত্তর দিয়েছে- সবই শুনেছেন। তিনি আপনার নিকট পাহাড়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতাকে পাঠিয়েছেন। তাদের ব্যাপারে আপনার যা ইচ্ছা তাই নির্দেশ করুন। তিনি বলেন, এরপর পাহাড়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা আমাকে ডেকে বললেন, হে মুহাম্মাদ! নিশ্চয় আল্লাহ আপনার জাতির কথা এবং আপনার সাথে তাদের দুর্ব্যবহার সম্পর্কে সবই জানেন। আমি পাহাড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা। আল্লাহ আমাকে আপনার নিকট পাঠিয়েছেন। তাদের ব্যাপারে আপনার যা ইচ্ছা তাই আমাকে আদেশ করুন। আপনি ইচ্ছে করলে তাদের দুই পাশের দুই পাহাড়কে একত্রিত করে দেব। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বরং আমি চাই আল্লাহ তাআলা তাদের ঔরস থেকে এমন সব লোক বের করবেন যারা একমাত্র আল্লাহ তাআলার ইবাদত করবে এবং তার সাথে কাউকে শরীক করবে না।

এটিই হচ্ছে নববী রহমত, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রক্তঝরা জখম, ভগ্ন হৃদয়, ক্ষত-বিক্ষত অন্তর- সব ভুলিয়ে দিয়েছে এবং এমন অবস্থায় তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে যে তাদের কল্যাণ ভিন্ন অন্য কোন চিন্তা তিনি করেননি। তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোতে নিয়ে আসা এবং সিরাতে মুস্তাকীমের পথ দেখানো ব্যতীত অন্য কিছু ভাবেননি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয় করলেন, দশ হাজার যোদ্ধার একটি বিশাল বাহিনী নিয়ে তাতে প্রবেশ করলেন। যারা তাঁকে নির্যাতন করেছিল, দূরে ছুঁড়ে মেরেছিল, হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল, নিজভূমি হতে অন্যায়ভাবে বের করে দিয়েছিল, তাঁর সাথি - সঙ্গীদের হত্যা করেছিল এবং তাদের দীনকে কেন্দ্র করে নির্যাতন চালিয়েছিল, আজ আল্লাহ তাআলা তাঁকে সেই সব লোকদের উপর কর্তৃত্ব দান করলেন। এ মহান বিজয় সাধিত হওয়ার পর জনৈক সাহাবী বললেন:

اليوم يوم الملحمة

আজ হচ্ছে তীব্র লড়াই ও হতাহতের দিন। শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:

بل اليوم يوم المرحمة

আজ বরং অনুকম্পা ও দয়া প্রদর্শনের দিন।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেসব পরাভূত লোকদের নিকট তাশরীফ নিয়ে গেলেন, যাদের চক্ষু হয়ে গিয়ে ছিল ছানাবড়া, গলা বুক গিয়েছিল শুকিয়ে এবং অন্তরাত্মা হয়ে গিয়ে ছিল ভীত-সন্ত্রস্ত। যারা অপেক্ষা করছিল এ বিজয়ী নেতা তাদের সাথে কী ধরনের আচরণ করেন, তাদের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তা দেখার জন্যে। তারা তো সে জাতি যারা প্রতিশোধ গ্রহণ ও গাদ্দারিতে ছিল সিদ্ধহস্ত যেমনটি করেছিল উহুদসহ অন্যান্য যুদ্ধে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের লক্ষ্য করে বললেন, হে কুরাইশ সম্প্রদায়! আমি তোমাদের সাথে কীরূপ আচরণ করব বলে তোমাদের ধারণা, তারা বলল, ভাল ও সুন্দর আচরণ। তুমি সম্মানিত ভাই ও সম্মানিত ভাইয়ের পুত্র।তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: যাও, তোমরা সকলেই মুক্ত। তারা চলে গেল, দেখে মনে হচ্ছিল তারা সবেমাত্র কবর থেকে উত্থিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যথার্থ ই বলেছেন:

إنما أنا رحمة مهداة .

নিশ্চয় আমি উপহারস্বরূপ প্রদত্ত রহমত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন