মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
হোদায়বিয়ার সন্ধি মোতাবেক খুযাআ গোত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অধীনে আর বকর গোত্র কুরাইশদের অধীনে সন্ধি চুক্তির আওতাভুক্ত হল। এর পরের ঘটনা, খুযাআ গোত্রের জনৈক ব্যক্তি, বকর গোত্রের এক ব্যক্তিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানে ধৃষ্টতাপূর্ণ কবিতা আবৃত করতে দেখল। তাই তাকে আঘাত করে রক্তাক্ত করে দেয়। এই কারণে উভয় গোত্রের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল এবং বনী বকর বনী খুযাআর বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রতিজ্ঞা করল। বনী বকর তাদের মিত্র কুরাইশদের নিকট সাহায্য চাইলে তারা অস্ত্র এবং বাহন দিয়ে সহযোগিতা করল। কুরাইশদের অনেকে চুপিসারে যুদ্ধেও অংশ গ্রহণ করল। যেমন সফওয়ান ইবনে উমাইয়া, ইকরামা ইবনে আবু জাহাল এবং সুহাইল ইবনে আমর। বনী খোযাআ হারাম শরীফে আশ্রয় নিল কিন্তু বনী বকর হারামের সম্মান রক্ষা করেনি। তারা সেখানেই খুযাআর উপর হামলা চালায় এবং বিশ জনেরও বেশি লোককে হত্যা করে।
এর মাধ্যমে কুরাইশরা তাদের ও রাসূলুল্লাহর মাঝে সম্পাদিত সন্ধিচুক্তি ভঙ্গ করল। কারণ, তারা রাসূলের অধীনে চুক্তিতে আবদ্ধ বনী খোযাআর বিরুদ্ধে বনী বকরকে সাহায্য করেছে। তারা এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অবহিত করল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি আমার নিজেকে যেভাবে হেফাযত করি, তোমাদেরকেও ঠিক সেভাবেই হেফাযত করব।
অতঃপর কুরাইশরা অনুশোচনা করল এবং আবু সুফিয়ানকে চুক্তি নবায়ণ এবং চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করার আবদার জানিয়ে পাঠাল। তাদের এ অনুশোচনা কোনো কাজে আসেনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কোনো উত্তর করেননি বরং উপেক্ষা করেছেন। তখন সে বড় বড় সাহাবীকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার মাঝে মধ্যস্থতা করার অনুরোধ জানিয়ে তাদের সহযোগিতা চাইল, সকলেই তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করল। অবশেষে সে ব্যর্থ হয়ে মক্কায় ফিরে এলো।
কুরাইশদের পক্ষ হতে মুসলমানদের সাথে সম্পাদিত চুক্তি ও অঙ্গীকার ভঙ্গ করার বিপরীতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয় ও কাফিরদের উপযুক্ত শিক্ষা দেয়ার সংকল্প করলেন।
অত:পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিযানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বিষয়টি গোপন রাখলেন। কারণ, তার পরিকল্পনা ছিল হঠাৎ করেই মক্কায় ঢুকে পড়ে কুরাইশদের নিজ ঘরের মধ্যেই আটকে ফেলবেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার আশপাশের আরব গোত্রের নিকট সংবাদ পাঠালেন। যেমন, আসলাম, গিফার, মুযাইনা, জুহাইনা, আসজা ও সুলাইম। এক পর্যায়ে মুসলমানদের সংখ্যা দশ হাজার পর্যন্ত পৌঁছে গেল। মদীনাতে আবু রুহ্ম আল-গিফারীকে প্রতিনিধি মনোনীত করে, রমজানের ১০ম তারিখ বুধবার দিন রওয়ানা করলেন। কাদীদ নামক স্থানে তিনি ঝান্ডা উত্তোলন করলেন।
রাসূলের এ অভিযানের সংবাদ তখনও মক্কায় পৌঁছেনি, তারা আবু সুফিয়ানকে সংবাদের সত্যতা যাচাই করার জন্য প্রেরণ করল। তাকে তারা বলে দিল, যদি মুহাম্মাদের সাথে তোমার দেখা হয়, তবে তাঁর থেকে আমাদের জন্যে নিরাপত্তা নিয়ে নিও।
আবু সুফিয়ান, হাকিম বিন হিযাম এবং বুদাইল বিন ওরকা বের হল। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাহিনী দেখে ভয় পেয়ে গেল। এদিকে আব্বাস রা. আবু সুফিয়ানের আওয়াজ শুনে ফেললেন। তিনি বললেন : হে হানযালার বাপ! সে বলল : উপস্থিত, বলুন। তিনি বললেন : দেখ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাথে দশ হাজার সৈন্য বাহিনী। তখন আবু সুফিয়ান ইসলাম গ্রহণ করে নিলেন। আর আব্বাস রা. তাকে নিরাপত্তা দিলেন। আবু সুফিয়ান ও তার দুই সাথিকে নিয়ে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হলেন, তারা সকলেই ইসলাম গ্রহণ করলেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্বাস রা.-কে বললেন: তুমি তাকে নিয়ে মুসলমানদের চলার পথে দাঁড় করিয়ে দাও, যাতে সে মুসলমানদের শক্তি ও ক্ষমতা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করতে পারে। আব্বাস রা. নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইশারায় বললেন, আবু সুফিয়ানকে কিছু একটা দিন যা দিয়ে সে গর্ব করতে পারে। কারণ, সে গৌরব প্রিয় লোক। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : যে ব্যক্তি আবু সুফিয়ানের ঘরে প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ। যে মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ। যে নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে থাকবে সে নিরাপদ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধ হতে বিরত থাকতে বললেন। তিনি সকল নেতৃবর্গকে কঠোরভাবে নিষেধ করে বলেছেন, তোমরা যুদ্ধ হতে সম্পূর্ণ বিরত থাকবে। তবে যদি কেউ তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে চায় তাহলে শুধু তার সাথেই যুদ্ধ করবে। খালেদ বিন ওলীদ ব্যতীত মুসলমানদের কেউ কোনো প্রতিরোধের সম্মুখীন হননি। খানদামা নামক স্থানে কুরাইশদের একটি দলসহ সাফওয়ান ইবনে উমাইয়া, সুহাইল ইবনে আমর এবং ইকরামা বিন আবু জাহেলের সাথে খালেদ বিন ওলীদের সাক্ষাৎ হয়। তারা তাকে প্রবেশে বাধা প্রদান করে। এবং অস্ত্র প্রদর্শন করে ও তীর নিক্ষেপ করে। খালেদ তার সাথিদের যুদ্ধের প্রতি আহ্বান জানালেন এবং তাদের সাথে যুদ্ধ করলেন। মুশরিকদের তেরো জন নিহত হল আর মুসলমানদের মাত্র দুজন শহীদ হলেন। তারা হলেন কারয বিন জাবের এবং হুবাইশ বিন খালেদ বিন রাবিআ।
জুহুন নামক স্থানে রাসূলের তাঁবু সাটানো হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলপ্রয়োগ করে বীর দর্পে মক্কাতে প্রবেশ করেন। ফলে মক্কাবাসী ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় তাকে মেনে নেয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উটের উপর চড়ে বাইতুল্লার তাওয়াফ সম্পাদন করলেন। কাবার চার পাশে তিন শত ষাটটি মূর্তি রাখা ছিল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেগুলোর পাশ দিয়ে যেতেন আর হাতে রাখা লাঠি দিয়ে আঘাত করতেন। মুখে বলতেন:
وَقُلْ جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ .
এবং সত্য এসেছে, মিথ্যা বিদূরিত হয়েছে।
মূর্তিগুলো তখন উপুর হয়ে পড়ে যাচ্ছিল। সর্ববৃহৎ মূর্তিটির নাম ছিল হুবুল, এটা ছিল কাবার একেবারে সামনে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাকামে ইবরাহীমে এসে দুরাকাত সালাত আদায় করলেন। এর পরেই লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয়ার জন্য আসলেন। বললেন : হে কুরাইশ জনগণ! তোমাদের কি ধারণা, আমি তোমাদের সাথে কি রূপ ব্যবহার করব? তারা বলল : আপনি ভাল ব্যবহারই করবেন। আপনি আমাদের উদার-অনুগ্রহশীল ভাই, এবং অনুগ্রহশীল ভাইয়ের ছেলে। তিনি বললেন : তোমরা যাও, তোমরা সকলেই মুক্ত ও স্বাধীন। আল্লাহ তাদের উপর বিজয়ী করে দেয়ার পর, তিনি তাদের ক্ষমা করে দিলেন। অপরাধী ও অবাধ্য সম্প্রদায়ের উপর কর্তৃত্ব অর্জন করার পর তিনি মাফ করে দেয়ার একটি মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। অতঃপর সাফা পাহাড়ে বসলেন। সেখানে লোকজন তার হাতে ইসলাম গ্রহণ করল। তাঁর কথা শুনবে এবং সাধ্য মত তাঁর অনুসরণ করবে মর্মে অঙ্গীকার প্রদান করল। অত:পর একের পর এক লোক এসে ইসলামে দীক্ষিত হতে লাগল।
মক্কা বিজয়ের দিনটি ছিল শুক্রবার, রমজান মাসের বিশ তারিখ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় পনেরো দিন অবস্থান করেন। অতঃপর হুনাইন অভিমুখে যাত্রা করেন। মক্কাতে সালাত পড়ানোর জন্য ইতাব বিন উসাইদকে মনোনীত করলেন, আর দীনী শিক্ষা-দীক্ষার জন্য মুয়ায বিন জাবালকে দায়িত্ব দিলেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/583/40
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।