hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

১২
দশম আসর: দয়া ও রহমতের নবী (২) জীব-জন্তু ও জড়পদার্থের প্রতি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দয়া
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দয়া-অনুকম্পা মুসলিম- অমুসলিম সকলের জন্য ব্যাপ্ত ছিল, বিষয়টি ইতিপূর্বে আলোচিত হয়েছে। এবার আমরা আলোচনা করব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মায়া-মমতার আরও বিস্তৃত পরিধি নিয়ে। অর্থাৎ তাঁর এ অনুকম্পা শুধুমাত্র মানব জাতি পর্যন্ত সীমিত ছিল এমন নয়, বরং তা জীব-জন্তু ও জড়পদার্থকেও শামিল করেছে চমৎকারভাবে।

এক বর্ণনায় এসেছে, জনৈক লোক রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল, পথিমধ্যে কঠিন পিপাসায় আক্রান্ত হয়ে অনেক খোঁজাখুঁজির পর একটি কূপের সন্ধান পেল। সে তাতে নেমে পানি পান করে বের হয়ে এসে দেখতে পেল একটি কুকুর পিপাসায় কাতর হয়ে জিহ্বা বের করে হাঁপাচ্ছে আর কাদামাটি খাচ্ছে। লোকটি নিজ মনে বলল: পিপাসার কারণে কুকুরটির তেমন কষ্টই হচ্ছে যেমনটি হয়েছিল সামান্য আগে আমার। এ চিন্তা করে সে কূপে অবতরণ করে নিজ মৌজা পানি ভর্তি করল এরপর পানি ভর্তি মৌজা দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে উপরে উঠে আসল।এবং পানি কুকুরকে পান করাল। আল্লাহ তাআলা তার এ কাজ পছন্দ করলেন এবং তাকে ক্ষমা করে দিলেন। সাহাবাগণ জানতে চেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ! এসব জন্তু-জানোয়ারের মাঝেও কি আমাদের জন্যে পুরস্কারের ব্যবস্থা আছে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: প্রাণ স্পন্দন আছে এমন প্রতিটি বস্তুতেই ছাওয়াবের ব্যবস্থা আছে।

এই ব্যাপক অর্থবোধক নীতিবাক্যের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবীর তাবৎ পশুসম্পদ প্রতিরক্ষা পরিষদ ও সংস্থা যারা পশুকুলের প্রতি মমত্বপূর্ণ আচরণ নিশ্চিত করণ ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে, তাদের সবাইকে পিছনে ফেলে শীর্ষ আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বরং সেদিন হতেই তাদের থেকে শত-সহস্র বছরের পথ এগিয়ে রয়েছেন যেদিন তিনি বলেছেন :

জনৈকা নারী একটি বিড়ালের কারণে শাস্তির সম্মুখীন হয়েছে, সে ঐ বিড়ালটি মৃত্যু অবধি বন্দি করে রেখেছিল, ফলে সেই নারীকে ঐ বিড়ালের কারণে জাহান্নামে যেতে হবে। বন্দি করে সে তাকে খেতে ও পান করতে দেয়নি। এবং মুক্ত করে দেয়নি যে পড়ে থাকা আবর্জনা কুড়িয়ে খাবে।

এর দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উদ্দেশ্য, তাঁর সাহাবীদের জীব-জন্তুর প্রতি যত্নশীল ও দরদি করে তোলা এবং সংগত কারণ ছাড়া জীব-জন্তু হত্যা করা মারাত্মক অপরাধ যার কারণে হত্যাকারীকে জাহান্নামে যেতে হবে মর্মে বিধান বর্ণনা করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীব-জন্তু সংক্রান- এ বিধিমালা প্রদান করেছেন সেই কবে, অথচ বর্তমান যুগের মানব রচিত বিধিমালা বিষয়টি সম্পর্কে এখনও সম্পূর্ণ অজ্ঞ।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিনা কারণে জন্তু হত্যা থেকে বিরত থাকার জন্যে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন। বলেছেন:

কেউ চড়ুই বা তদুর্ধ্ব কোন পাখি নাহকভাবে হত্যা করলে আল্লাহ তাআলা কিয়ামত দিবসে তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। প্রশ্ন করা হল : ইয়া রাসূলাল্লাহ ! তার হক কি? বললেন: তার হক হল, জবাই করা অতঃপর খাওয়া। মস্তক ছিঁড়ে তাকে ছুঁড়ে না মারা । পশু-পাখি জবাই করার সময় জবাই প্রক্রিয়া সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা এবং দয়া ও মমতাপূর্ণ আচরণের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশেষ নির্দেশ প্রদান করেছেন।

তিনি বলেছেন:

নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক বস্তুতে ইহসানকে ফরয করেছেন, অতএব তোমরা যখন হত্যা করবে সুন্দরভাবে করবে আর যখন জবাই করবে মমতার সাথে-সুন্দরভাবে জবাই করবে, এবং তোমাদের প্রত্যেকেই যেন (জবাইয়ের পূর্বে) নিজ ছুরি ধার দিয়ে নেয় এবং জবাইকৃত জন্তুকে যেন আরাম দান করে।

কতিপয় আলেম বলেছেন: জবাইর ক্ষেত্রে ইসলামের এ সুন্দরতম ও মানবতাপূর্ণ রীতি দেখে অনেক পশ্চিমা লোক ইসলামে দীক্ষিত হয়েছেন। ইসলাম যে সর্বদিক থেকে পরিপূর্ণ দীন এটি তারই প্রমাণ বহন করে।

নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো ইরশাদ করেছেন:

لا تتخذوا شيئا فيه الروح غرضا . ) متفق عليه (

প্রাণ আছে এমন কোন বস্তুকে তোমরা নিশানা হিসাবে ব্যবহার কর না।

অর্থাৎ তিরন্দাজি প্রশিক্ষণকালে কোন জীবকে নিশানা হিসেবে স্থাপন করো না। কেননা এরূপ করা দয়া ও অনুকম্পা পরিপন্থী।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্যতম মিশন ছিল সব জায়গা থেকে সর্বপ্রকার নির্যাতন ও নিপীড়ন দূর করা, এমনকি জীব-জন্তুর ক্ষেত্রেও তাঁর এ প্রচেষ্টা ছিল দুর্বার। এসব কাজে তিনি খুব বেশি গুরুত্ব দিতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার জনৈক আনসারী সাহাবীর খেজুর বাগানে তাশরীফ রাখলেন। সেখানে একটি উট বাধা ছিল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখে সে শব্দ করে কেঁদে উঠল, এতে তার দু গাল বেয়ে অশ্রু ঝরতে লাগল। রাসূলুল্লাহ উটের নিকটে এলেন এবং তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। উট শান্ত হয়ে গেল। এরপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন: এ উটের মালিক কে?

এক আনসারী যুবক এসে বলল: আমি, হে আল্লাহর রাসূল! রাসূলুল্লাহ বললেন:

ألا تتقي الله في هذه البهائم التي ملكك الله إياها ؟ فإنه شكى إلي أنك تجيعه و تدئبه .

এসব জীব-জন্তু আল্লাহ তাআলা যেগুলো তোমার মালিকানায় দিয়েছেন, এ সবের ব্যাপারে তুমি কি আল্লাহকে ভয় করনা? সে এসে আমার নিকট অভিযোগ করল : তুমি তাকে খেতে দাও না এবং লাগাতার কাজে খাটিয়ে তাকে ধ্বংস করে দিচ্ছ।

এ রহমতে মুহাম্মদী থেকে কেউই বঞ্চিত হয়নি। জিন-ইনসান থেকে শুরু করে জীব-জন্তু পর্যন্ত সমানভাবে তাঁর দয়া-অনুকম্পা উপভোগ করে গেছে, এমনকি জড় পদার্থও মুহাম্মাদী অনুকম্পায় তাদের পরিপূর্ণ হিস্‌সা বুঝে পেয়েছিল।

ইমাম বুখারী রহ. বর্ণনা করেন:

নবীজীর জন্যে মিম্বার তৈরি করা হলে, যে খেজুর বৃক্ষের উপর তিনি খোতবা দিতেন সেটি ছোট শিশুর মত কান্না জুড়ে দিল। অবস্থা দেখে তিনি মিম্বার থেকে নেমে আসলেন এবং তাকে জড়িয়ে ধরলেন। তখন সেটি শান্ত্বনা প্রদত্ত শিশুর ন্যায় বিলাপ করতে লাগল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: সে আগে যিকির-আযকার এবং ওয়াজ নসিহত শ্রবণ করত সে দুঃখে এখন কাঁদছে।

আল্লামা হাসান রহ. যখন এ হাদীসের আলোচনা করতেন খুব কাঁদতেন আর বলতেন: হে মুসলিমবৃন্দ, একটি কাঠ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাক্ষাতের আগ্রহে কাঁদতে পারে তাহলে তোমরা তাঁর প্রতি আরো আগ্রহী হওয়ার অধিক উপযোগী।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন