hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

৩৭
পয়ত্রিশতম আসর: ইসলামে যুদ্ধকে বৈধ করা হল কেন?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ইসলামে প্রবেশ করানোর জন্য সাথে তলোয়ার নিয়ে চলতেন না। বরং আল-কুরআন সুস্পষ্ট ভাষায় এ নীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন :

لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ .

দীনের ব্যাপারে কোন বাধ্য-বাধকতা নেই।

অন্য জায়গায় বলেছেন :

তুমি কি মানুষদের বাধ্য করবে, যাতে তারা মুমিন হয়ে যায়?

অন্যত্র বলেছেন :

তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম, আমার জন্য আমার ধর্ম।

কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, অভ্যন্তরীণ কিংবা বহিরাগত আক্রমণ ও ষড়যন্ত্রের মুকাবিলায় হাত গুটিয়ে বসে থাকবে ইসলাম, কোনো পদক্ষেপ নিবে না। বরং আল্লাহ তাআলা মুমিনদের অনুমতি দিয়েছেন, তারা নিজেদের উপর যে কোনো হামলা প্রতিহত করবে এবং তাদের উপর আরোপিত যুলম-নির্যাতনের প্রতিশোধ নিবে, তবে এক্ষেত্রে কোন রূপ অন্যায় ও বাড়াবাড়ি করা যাবে না।

আল্লাহ তাআলা বলেন : যে তোমাদের উপর অন্যায়ভাবে যুলম করবে, তোমরাও তার থেকে বদলা নাও, যে পরিমাণ সে তোমাদের উপর যুলম করেছে।

আল্লাহ আরো বলেছেন : যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে, তোমরাও তাদের সাথে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ কর। তবে তোমরা সীমা ছাড়িয়ে যাবে না।

অন্যত্র বলেছেন : তারা যদি তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে, তোমরাও তাদের সাথে যুদ্ধ করো।

এর দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, ইসলামে যুদ্ধ বৈধ করার মূল দিক হল : আত্মরক্ষা এবং অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত ষড়যন্ত্র ও আক্রমণ প্রতিহত করা। মুসলিম জাতিকে শত্রু পক্ষের যুলম, নির্যাতন ও অত্যাচার হতে হেফাযত করা। আমরা ইসলামী যুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি দৃষ্টি দিলে এ সত্যটি ভালো করে বুঝতে পারব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর যখন মক্কার কুরাইশদের নির্যাতন-নিপীড়ন সীমা ছাড়িয়ে গেল, এমনকি তাঁকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র পর্যন্ত বাকি থাকল না, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিরুপায় হয়ে হিজরত করেন। মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুলমের সূচনা তাদের পক্ষ থেকেই শরু হয়েছে। তারা অন্যায়ভাবে মুসলমানদেরকে নিজ বাড়ি-ঘর ছাড়তে বাধ্য করেছে। তাই হিজরতের পর আল্লাহ তাআলা মুসলমান মুহাজিরদেরকে মক্কার কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অনুমতি প্রদান করেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন : (যুদ্ধের) অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ, তাদের প্রতি যুলম করা হয়েছে, নিশ্চয় আল্লাহ তাদের সাহায্য করতে অবশ্যই সক্ষম। যাদের অন্যায়ভাবে স্বীয় ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। তাদের অপরাধ, তারা বলে : আমাদের রব আল্লাহ।

আর এ জন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কার কুরাইশ ব্যতীত আরবের অন্য কারো সাথে যুদ্ধে জড়িত হননি।

যখন মক্কার কুরাইশদের সাথে আরবের অন্যান্য মুশরিকরাও শরিক হল এবং সকলে মিলে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিল, তখন আল্লাহ তাআলা সকল মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দিলেন। ইরশাদ হয়েছে :

وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً .

আর তোমরা সকল মুশরিকদের বিরুদ্ধে লড়াই কর, যেমন তারা সকলে মিলে তোমাদের সকলের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

তখন থেকেই আহলে কিতাব ছাড়া সকল মুশরিকদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে জেহাদের হুকুম নাযিল হয়। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : মানুষ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু না বলা অবধি, আমাকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার হুকুম দেয়া হয়েছে। আর যদি তারা এ বাক্য পড়ে নেয়, তাহলে স্বীয় রক্ত ও সম্পদ আমার থেকে নিরাপদ করে নিল। তবে আল্লাহর বিধান অনুসারে কোনো কিছু জরুরি হলে ভিন্ন কথা। আর তাদের হিসাব আল্লাহর উপর।

যখন মুসলমানগণ ইহুদীদের পক্ষ হতে সম্পাদিত শান্তিচুক্তি ও সন্ধির ব্যাপারে খিয়ানত দেখতে পেলেন, যেমন তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে মক্কার কাফিরদের সাহায্য করেছে তখন, আল্লাহ তাআলা তাদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করার নির্দেশ দিলেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন, তুমি যদি কোন সম্প্রদায়ের পক্ষ হতে খিয়ানতের (বিশ্বাস ভঙ্গ) আশঙ্কা কর তবে তোমার চুক্তিকেও সমানভাবে তাদের সামনে নিক্ষেপ করবে (বাতিল করবে) নিশ্চয় আল্লাহ খিয়ানতকারীদের পছন্দ করেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা সত্য ধর্ম গ্রহণ না করবে কিংবা অবনত হয়ে জিযিয়া কর দিতে সম্মত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ওয়াজিব। যাতে মুসলমানরা তাদের দিক হতে নিরাপদ হয়ে যায়।

অনুরূপভাবে নাসারাদের বিরুদ্ধেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগ-বেড়ে যুদ্ধ শুরু করেননি। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন : হোদায়বিয়ার সন্ধির আগ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেননি। হোদায়বিয়ার সন্ধির পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামের দাওয়াত দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন রাজা-বাদশাহর নিকট পত্র প্রেরণ করেন। কায়সার, কিসরা, মুকাওকিস ও নাজ্জাশীসহ সিরিয়া ও প্রাচ্যের আরব বাদশাহদের সকলের নিকটই পত্র প্রেরণ করেন।

খ্রিস্টান ও অন্যান্য জাতি হতে অনেক ভাগ্যবান লোক ইসলামে দীক্ষিত হল। সিরিয়ায় নাসারারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয় এবং তারই ধারাবাহিকতায় তাদের নেতৃবর্গের মধ্য হতে ইসলাম গ্রহণকারী কতিপয় মুসলমানকে মাআন নামক স্থানে নিয়ে হত্যা করে।

সুতরাং খ্রিস্টানরাই প্রথমে মুসলমানদের উপর চড়াও হয়। এবং তাদের মধ্যে ইসলাম গ্রহণ কারীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করে। অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দূতদের মানুষদেরকে আহ্বান করার জন্য পাঠিয়েছেন, যাতে তারা স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে। কোন রূপ বল প্রয়োগের জন্য নয়। আর তারাও ইসলাম গ্রহণ করার জন্যে একজন ব্যক্তিকেও বাধ্য করেননি।

উপরোক্ত বর্ণনার আলোকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুদ্ধগুলো নিম্নের কয়েকটি ধারায় বিভক্ত ছিল :

১.মক্কার কুরাইশদের আক্রমকারী হিসাবে চি‎হ্নিত করণ। কেননা, তারাই সর্বপ্রথম মুসলমানদের উপর সীমা লঙ্ঘন করে। ফলে মুসলমানদের জন্যও যুদ্ধ বৈধ ঘোষণা করা হয়।

২. মুসলমানগণ ইহুদীদের খিয়ানত ও মক্কার কাফিরদের সাথে তাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি দেখে তাদের সাথে যুদ্ধ করতে বাধ্য হয়।

৩. আরবের কোনো গোত্র মুসলমানদের উপর হামলা করলে কিংবা মক্কার কাফিরদের সাহায্য করলে, কেবল তখনই মুসলমানরা ইসলাম গ্রহণ করা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন।

৪.খ্রিস্টানসহ অন্যান্য কিতাবী সম্প্রদায়ের যারাই শত্রুতার সূচনা করেছে তাদের সাথেই যুদ্ধ করা হয়েছে, যতক্ষণ না তারা ইসলাম গ্রহণ করেছে কিংবা জিযিয়া দিতে সম্মত হয়েছে।

৫.যে ব্যক্তিই ইসলাম গ্রহণ করবে, তার জীবন ও সম্পদ নিরাপদ হয়ে যাবে। তবে ইসলামের বিধান মতে হলে ভিন্ন কথা। ইসলাম তার পূর্বের সব অপরাধ মুছে দেবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন