hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

৩২
ত্রিশতম আসর: উম্মতের প্রতি নবীজীর দয়া ও সহানুভূতি (১)
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মতের প্রতি ছিলেন খুবই দয়াবান। যখন তাঁকে দুটি বিষয়ের একটি বেছে নেয়ার স্বাধীনতা দেয়া হত তখন তিনি সহজ বিষয়টি বেছে নিতেন। যাতে উম্মতের কষ্ট দূর হয় এবং তাদের জন্য বিষয়টি সহজ হয়।

এজন্যই তিনি বলেছেন:

إِنَّ اللهَ لَمْ يَبْعَثْنِي مُعَنِّتا وَلَا مُتَعَنِّتًا , وَلَكِنْ بَعَثَنِي مُعَلِّمًا مُيَسِّرًا " ] رواه مسلم [

নিশ্চয় আল্লাহ আমাকে জোর প্রয়োগকারী ও কঠোরতাকারী হিসেবে প্রেরণ করেননি বরং তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন শিক্ষক ও সহজকারী হিসেবে।

তিনি আরো বলেন:

إِنَّ اللهَ تَعَالَى رَفِيقٌ يُحِبُّ الرِّفْقَ , وَيُعْطِي عَلَيْهِ مَا لَا يُعْطِي عَلَى الْعُنْفِ " ] رَواهُ أَبُوداودَ وصحَّحَه الألبانيُّ [

নিশ্চয় আল্লাহ দয়ালু, দয়া করা পছন্দ করেন, দয়ার কারণে সে পুরস্কার দান করেন করেন যা কঠোরতায় দান করেন না।

আরও ইরশাদ করেছেন,

مَا كَانَ الرِّفْقُ فِي شَيْءٍ إِلَّا زَانَهُ، وَمَا نُزِّعَ مِنْ شَيْءٍ إِلَّا شَانه " ] رَواهُ مسْلِم [

কোমলতা যে বস্তুতেই পাওয়া যাবে সেটি তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে, আর যে বস্তু থেকে তা সরিয়ে নেওয়া হবে তা তাকে অসুন্দর করে দেবে।

আল্লাহ তাআলা তার নবী দয়া এবং নমনীয়তার গুণে গুণান্বিত মর্মে প্রশংসা করে বলেন:

لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ .

তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল। তোমাদের দু:খ-কষ্ট তার পক্ষে দু:সহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়।

উম্মতের প্রতি তার দয়ার দৃষ্টান,

এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল: হে রাসূল! আমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছি।

রাসূলুল্লাহ বললেন: তোমাকে কীসে ধ্বংস করেছে?

সে বলল: আমি রমযানের দিনের বেলায় আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি একজন গোলাম আযাদ করতে পার? সে বলল: না।

তারপর বললেন: তাহলে তুমি কি দুই মাস লাগাতার রোযা রাখার সামর্থ্য রাখ?

সে বলল: না।

রাসূলুল্লাহ বললেন: তাহলে কি তুমি ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়াতে পারবে?

বলল: না।

লোকটি অপেক্ষা করছিল, এরই মাঝে একটি খেজুর ভর্তি থলে রাসূলের সম্মুখে আনা হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তুমি এগুলো সদকা করে দাও।

লোকটি বলল: আমার থেকে বড় অভাবী কে? মদীনার দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে এমন কোন পরিবার পাবেন না যারা আমার চেয়ে দরিদ্র। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনভাবে হাসলেন যে তাঁর গজদন্ত বের হয়ে পড়ল। এরপর তিনি বললেন, তুমি এগুলো নিয়ে যাও এবং নিজ পরিবারকে প্রদান কর।

সম্মানিত পাঠক, যে লোকটি রমযানের দিনে ভুল করল এবং স্ত্রীর সাথে সহবাস করল তার সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কতো মমত্ব ও দয়াপূর্ণ আচরণ তা একটু ভেবে দেখলেই বুঝা যায়।

রাসূল সা: বার বার তার সাথে নম্রতা প্রদর্শন করছিলেন এবং কঠিন শাস্তি থেকে তুলনামূলক সহজ শাস্তির দিকে নিয়ে এসেছেন। অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছল যে, তিনি তাকে অপরাধ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে মুক্তিপণ আদায়ের ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন।

বরং তার দারিদ্র্য ও প্রয়োজনীয়তার প্রতি লক্ষ্য করে তিনি খাবার নিয়ে তার পরিবারস্থ লোকদের মাঝে বণ্টন করার অনুমতিও প্রদান করেছেন। কি অভূতপূর্ব মায়া ও নম্রতা । কেমন হৃদয় নাড়া দেয়া কোমলতা। এ হল নববী দয়া আর এমনই ছিল মুহাম্মদী হৃদ্যতা।

মুয়াবিয়া বিন হাকাম আস্‌সুলামী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এর সাথে সালাত আদায় করছিলাম, হঠাৎ, সালাতে এক লোক হাঁচি দিল, তার উত্তরে আমি বললাম, يرحمك الله অর্থাৎ আল্লাহ তোমার প্রতি দয়া করুন ! এ শুনে সবাই আমার দিকে কড়াভাবে তাকাল, আমি তাদেরকে বললাম, হায় দুর্ভোগ ! তোমাদের কি হয়েছে? তোমরা আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছ কেন? তারা তাদের হাত দিয়ে উরুতে আঘাত করতে লাগল, আমি বুঝতে পারলাম তারা আমাকে চুপ করাতে চাচ্ছে। তাই আমি নীরব হয়ে গেলাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শেষ করে বলেন, -তাঁর জন্য আমার মাতা পিতা উৎসর্গ হোক, তাঁর পূর্বে আমি তাঁর চেয়ে উত্তম শিক্ষক এত সুন্দরভাবে শিক্ষা প্রদান করতে দেখিনি। আল্লাহর কসম তিনি আমাকে কোন প্রকার গালমন্দ করেননি, কোন রূপ তিরস্কার করেননি এবং কোন প্রকার মারধর করেননি- নিশ্চয় সালাতে মানুষের নিজেদের কোন কথা বলার অবকাশ নেই বরং সালাত হলো তাসবীহ, তাকবীর এবং কুরআন তিলাওয়াত।

ইমাম নববী রহ. বলেন, এ হাদীস আমাদের নিম্নোক্ত বিষয়গুলো শিক্ষা দেয়।

-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহান চরিত্র, যার উপর তিনি অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং যার সাক্ষ্য স্বয়ং আল্লাহ তাআলা প্রদান করেছেন।

- জাহেল মূর্খদের প্রতি তাঁর সহানুভূতিপূর্ণ আচরণ এবং তাদের প্রতি তাঁর দয়া ও নম্রতা প্রদর্শন।

-এবং জাহেল-মূর্খদের সাথে হৃদ্যতা ও দয়াপূর্ণ আচরণ প্রদর্শন, তাদেরকে কোন বিষয় শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে উত্তম পদ্ধতি অবলম্বন বা উত্তমরূপে শিক্ষা প্রদান, তাদের প্রতি মমতা প্রদর্শন এবং সঠিক বিষয়টি তাদের বোধ ও বুঝের নিকটবর্তী করার উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহর চরিত্রে নিজেদের চরিত্রবান করার ব্রত গ্রহণ করা।

উম্মতের প্রতি তাঁর সহানুভূতির আরো একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে তাদের উপর ফরয হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সওমে বিসাল তথা ইফতার ও সাহরী বিহীন লাগাতার রোযা রাখার প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।

সহানুভূতির আরো একটি নিদর্শন:

তিনি রমযানে তিন বা ততোধিক রাত্র মসজিদে কিয়ামুল্লাইল করেছিলেন, এক পর্যায়ে তাঁর পেছনে বহু লোক সমবেত হয়ে গেলো, আর তিনি আশঙ্কা করলেন এভাবে চলতে থাকলে হয়ত সেটি তাদের উপর ফরয হয়ে যাবে। তাই তিনি আর সেখানে উপস্থিত হননি।

উম্মতের প্রতি দয়া ও সহানুভূতির আরো একটি উদাহরণ:

তিনি একদিন মসজিদে গিয়ে মসজিদের দুই খুঁটিতে রশি বাঁধা দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন: এ রশি কেন? লোকেরা বলল: এটি যয়নবের রশি। (ইবাদত করতে করতে) ক্লান্ত হয়ে পড়লে তিনি এতে ঝুলে পড়েন। তখন রাসূলুল্লাহ বললেন, রশিটি খুলে ফেল, তোমাদের কেউ সালাত আদায় করলে যেন উদ্যম ও প্রাণবন- অবস্থায় আদায় করে। যদি ক্লান্ত ও অবসাদ গ্রস্ত হয়ে যায় তাহলে যেন বসে পড়ে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন