hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

২০
আঠারতম আসর: আল্লাহর হেফাযতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আল্লাহ তাআলা বলেন :

يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللَّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ .

হে রাসূল! আপনার রব আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন, আপনি তা পৌঁছে দিন। যদি তা না করেন, তবে আপনি আল্লাহর রেসালাত-ই আদায় করলেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষ হতে হেফাজত করবেন।

ইবনে কাছীর রহ. বলেন, অর্থাৎ আপনি আমার রেসালত পৌঁছাতে থাকুন, আমি আপনাকে হেফাজত করব, এবং আপনার শত্রুদের মুকাবিলায় আপনাকে শক্তিশালী করব। আমি আপনাকে তাদের উপর জয়ী করব, আপনি ভয় করবেন না, চিন্তাও করবেন না। কু-বাসনা নিয়ে আপনার পর্যন্ত কেউ পৌঁছতে পারবে না। এই আয়াত নাযিল হওয়ার আগ পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পাহারা দেয়ার ব্যবস্থা করা হত।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ হেফাযত করেছেন এর একটি উদাহরণ : আবু হুরায়রা রা. এর বর্ণনা: আবু জাহেল একদিন বলল, তোমাদের সামনে কি মুহাম্মদ মাটিতে কপাল ধূলায়িত করে? উত্তরে বলা হল, হ্যাঁ। সে বলল : লাত, উজ্জার শপথ! আমি যদি এমনটি করতে দেখি, তার গরদান পা দিয়ে মাড়িয়ে দেব-কর্দমাক্ত করে দেব তার চেহারা। এরপর একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করছিলেন। সে কাছে । ইচ্ছা রাসূলুল্লাহর গরদান মাড়িয়ে দেওয়া। উপস্থিত সকলে উৎসাহ দিল। সে রাসূলের নিকট পৌঁছতে না পৌঁছতেই পিছু হটতে লাগল। আর দুই হাত দিয়ে নিজেকে হেফাযত করার চেষ্টা করতে দেখা গেল। লোকেরা জিজ্ঞেস করল : কি হয়েছে? সে বলল, আমার ও তার মাঝখানে আগুনের গর্ত দেখতে পাচ্ছি, ভয়াবহ অবস্থা ও বিরাট সৈন্যবাহিনী। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যদি সে আমার দিকে এগিয়ে আসত, ফেরেশতারা একটি একটি করে তার অঙ্গসমূহ ছেঁড়ে নিয়ে যেত।

ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, আবু জাহেল বলেছে, আমি যদি মুহাম্মদকে কাবার পাশে সালাত আদায় করতে দেখি, তার ঘাড় মাড়িয়ে দেব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা শুনে বললেন, যদি সে এমনটি করতে আসে, ফেরেশতারা তাকে পাকড়াও করবে। বুখারী ।

জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাসফা নামক গোত্রের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলেন। সুযোগ বুঝে তাদের এক যোদ্ধা, গাউরাস বিন হারেস রাসূলের একেবারে নিকটে চলে আসে। সামনে দাঁড়িয়ে বলে, তোমাকে আমার কবজা থেকে কে রক্ষা করবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ । এ কথা শুনে তার হাত থেকে তলোয়ার পড়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তলোয়ার উঠিয়ে বললেন, এবার তোমাকে আমার হাত থেকে কে বাঁচাবে? সে বলল, উদারতার পরিচয় দিন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি সাক্ষ্য দাও আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আমি তাঁর রাসূল। সে বলল, না। এ সাক্ষ্য আমি দিতে পারব না। তবে, আমি আপনার সাথে অঙ্গীকার করছি। আপনার বিরুদ্ধে আর যুদ্ধ করব না এবং তাদের সাথেও থাকব না যারা আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে মুক্ত করে দিলেন। ফিরে গিয়ে সে বলল, আমি সর্বোত্তম মানুষের নিকট হতে এসেছি।

আনাস রা. বলেন, জনৈক খৃস্টান ইসলাম গ্রহণ করল। সে সূরা বাকারা ও আলে ইমরান পড়তে পারত। পরবর্তীতে সে রাসূলের কাতেব হিসেবে কাজ করত। কিছুদিন পর আবার খ্রিস্টান হয়ে গেল। এবং মানুষের কাছে বলে বেড়াতে লাগল, আমি যা লিখে দিয়েছি এর বেশি মুহাম্মদ কিছুই জানে না। তার মৃত্যু হলে লোকজন দাফন করে আসে, কিন্তু সকাল বেলা দেখতে পায় মাটি তাকে উপরে নিক্ষেপ করে রেখেছে। তারা বলাবলি করতে লাগল : এটা মুহাম্মদ এবং তার সাহাবীদের কাজ। আমরা চলে যাবার পর তারা তাকে মাটি খুঁড়ে বের করে উপরে নিক্ষেপ করেছে। দ্বিতীয় দিন খুব গভীর করে মাটিতে পুতে রেখে আসল, দ্বিতীয় দিনও মাটি তাকে বাইরে নিক্ষেপ করে। তখনও তারা আগের মতো কথা বলল। তৃতীয় দিন আরো গভীর করে দাফন করল, তৃতীয় দিনও মাটি তাকে বাইরে নিক্ষেপ করল, তাদের বুঝতে বাকি রইল না যে এটা মানুষের কাজ নয়। অতঃপর এভাবেই তাকে ফেলে দিল।

আল্লাহর পক্ষ হতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হেফাজত করার আরেকটি উদাহরণ :

কুরাইশরা সম্মিলিতভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যা করার চক্রান্ত করল। তারা একমত হল যে, সব গোত্র হতে একজন করে শক্তিশালী যুবক একত্রিত করে তাদের হাতে উন্মুক্ত তলোয়ার দেয়া হবে। তারা সকলে একযোগে মুহাম্মদের উপর হামলা করে হত্যা করবে। ফলে সব গোত্রই সমানভাবে দোষী সাব্যস্ত হবে। আর এভাবে আবদু মানাফের বংশধররা সকল আরবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হবার সাহস করবে না। জিবরাঈল আলাইহিস সালাম আল্লাহর পক্ষ হতে নির্দেশ নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আগমন করেন এবং কাফিরদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে অবহিত করেন। সে রাতে তাঁকে নিজ বিছানায় ঘুমাতে বারণ করেন। তিনি আরো বলেন, আল্লাহ আপনাকে হিজরত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আরো একটি উদাহরণ : হিজরতের পথে আল্লাহ তাআলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সুরাকা ইবনে মালেক হতে হেফাজত করেছেন।

আরেকটি উদাহরণ : সাউর গুহায় কাফিরদের থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রক্ষা করা। আবু বকর সিদ্দিক রা. বলেছিলেন: হে আল্লাহর রাসূল! তাদের কেউ নিজের পায়ের দিকে তাকালেই আমাদের দেখে ফেলবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবু বকর! যে দুইজনের তৃতীয়জন হচ্ছেন আল্লাহ, তাদের ব্যাপারে তোমার কি ধারণা?

ইবনে কাছীর রহ. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহর হেফাজত করার আরো একটি উদাহরণ :

এত শত্রুতা, দুশমনি এবং রাতদিন ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও আল্লাহ তাআলা সীমালঙ্ঘনকারী, জালেম ও অত্যাচারী মক্কাবাসী হতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হেফাজত করেছেন। এর জন্য আল্লাহ তাআলা সময়ে সময়ে বিভিন্ন মাধ্যম ও সাহায্যকারী তৈরি করে দিয়েছেন। যেমন নবুওয়তের শুরুতে চাচা আবু তালেবের মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হেফাজত করা হয়েছে। আবু তালেব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খুব ভালোবাসতেন -মনের টানে, ধর্মের টানে নয়- তার মহব্বতের কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেউ কিছু বলতে সাহস পেত না। কারণ, আবু তালেব ছিলেন কুরাইশদের সকলের নিকট সম্মানিত ও অনুকরণীয় ব্যক্তি, আবার তাদের ধর্মের লোক - কাফির। এ মিলের জন্য আবু তালেবকে তারা সমীহ ও সম্মান করত। অন্যথায় তিনি মুসলমান হলে তার উপরও তারা চড়াও হত।

আবু তালেবের মৃত্যুর পর মক্কার কাফিররা রাসূলুল্লাহকে অল্প হলেও কষ্ট দিতে পেরেছে। এরই মাঝে আল্লাহ তাআলা আনসারদের অন্তরে তার মহব্বত সৃষ্টি করে দেন। তারা তাঁর হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। এবং তাকে মদীনায় নিয়ে যাওয়ার শপথ করেন। মদীনায় আল্লাহ তাআলা কালো-সাদা সকল প্রকার শত্রু হতে তাঁকে হেফাজত করেন। যখনই মুশরিক কিংবা আহলে কিতাবের কেউ রাসূলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, আল্লাহ সে ষড়যন্ত্র উল্টো তাদের জন্য কাল বানিয়ে দিয়েছেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন