hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

২৫
তেইশতম আসর: মদীনাভিমুখে রাসূলের হিজরত
সাহাবাদের উপর যখন কাফিরদের নিপীড়নের মাত্রা ছাড়িয়ে গেল, রাসূলুল্লাহ তাদেরকে মদীনায় হিজরতের অনুমতি দিলেন। তিনি দেখলেন এবং নিশ্চিত হলেন যে, ইসলামের দাওয়াত মদীনায় ব্যাপকতা লাভ করেছে। মুহাজিরদের অভ্যর্থনা ও আশ্রয়দানের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে এর মাটি ও মানুষ।

সাহাবাগণ রাসূলের আদেশে হিজরতের প্রস্তুতি নিলেন। একের পর এক দলে দলে মদীনার দিকে রওয়ানা হলেন।

বাকি থাকলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু বকর ও আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুমা। এবং আরো কিছু সাহাবি যাদেরকে কাফিররা জোরপূর্বক আটকে রেখেছিল।

এদিকে কুরাইশদের মধ্যেও জানাজানি হয়ে গেল, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি সুরক্ষিত এলাকায় হিজরত করতে যাচ্ছেন। এতে ইসলাম দুনিয়াব্যাপি ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনায় তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ল। তাই, সকলে মিলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যা করার পরিকল্পনা করল।

রাত্রিতে মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যার পরিকল্পনা করল আর আল্লাহ তা স্বীয় রাসূলকে জানিয়ে দিলেন। এবং হিজরতের নির্দেশ দিলেন, আর সে রাতে নিজ বিছানায় ঘুমোতে বারণ করলেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুকে তাঁর বিছানায় তাঁরই চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমোতে নির্দেশ দিলেন। এবং তার কাছে রক্ষিত, মানুষের আমানত ফেরত দিতে বললেন। রাসূলের নির্দেশ মত আলী রা. ঘরের ভেতর ঘুমিয়ে রইলেন। আর দরজার বাইরে অনেকগুলো তলোয়ার উন্মুক্ত হয়ে থাকল।

হত্যার জন্য জড়ো হওয়া কাফিরদের ব্যূহ ভেদ করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে গেলেন। আল্লাহ তাদের চক্ষু অন্ধ করে দিলেন, এভাবেই তারা লাঞ্ছিত হল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের মাথার উপর একমুষ্টি মাটি নিক্ষেপ করে আবু বকর রা. এর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। এবং রাতেই তারা খুব দ্রুত বেরিয়ে পড়লেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবু বকর রা. চলতে চলতে সাউর গুহায় এসে পৌঁছালেন। কাফিরদের অনুসন্ধানে ভাটা পড়ার আগ পর্যন্ত তাঁরা সেখানেই অবস্থান করেছেন।

এদিকে কুরাইশরা যখন তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে বলে নিশ্চিত হল, তাদের উত্তেজনা ও প্রতিশোধস্পৃহা বেড়ে গেল। তারা মক্কার চতুর্দিকে অনুসন্ধানকারীদের পাঠিয়ে দিল। পুরস্কার ঘোষণা করল, যে মুহাম্মদকে নিয়ে আসতে পারবে কিংবা তার সন্ধান দিতে পারবে, তাকে একশত উট পুরষ্কার দেয়া হবে। তার তালাশে তারা চারিদিক ছড়িয়ে পড়ল এবং তালাশ করতে করতে সাউর গুহার দ্বারপ্রানন্তে চলে গেল। কিন্তু আল্লাহ তাদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিলেন। স্বীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাদের ষড়যন্ত্র হতে রক্ষা করলেন। আবু বকর বলে উঠলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তারা নিজ পায়ের দিকে তাকালেই আমাদের দেখে ফেলবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, আবু বকর, সে দুইজন সম্পর্কে তোমার কি ধারণা, যাদের তৃতীয়জন হচ্ছেন আল্লাহ ?

আগে থেকে ঠিক করে রাখা রাহবার তিন দিন পর তাদের কাছে আসল, অতঃপর সকলে মদীনার দিকে রওয়ানা হলেন।

রাস্তায় খোযায়ী বংশের উম্মে মাবাদ নামক এক নারীর তাঁবুর দেখা পেলেন। সে একটি বকরী দ্বারা রাসূলের বরকত লাভে ধন্য হয়েছে। ঘটনাটি এমন, তার একটি বকরী ছিল, যাতে এক ফোঁটা দুধও অবশিষ্ট ছিল না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বকরীটি দোহন করার অনুমতি নিলেন, সাথে সাথে তার স্তন দুধে ভরে গেল। সে দুধ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাকে পান করালেন এবং তার সাথে যারা ছিল তারাও পান করল। সবশেষে তিনি নিজে পান করলেন। এরপর আবারো দোহন করে পাত্র পূর্ণ করে পথ চলা শুরু করলেন।

এদিকে সুরাকা বিন মালেক জানতে পারল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমুদ্র পথ ধরে মদীনার দিকে রওয়ানা হয়েছেন। কুরাইশ কর্তৃক ঘোষিত পুরস্কারের প্রতি তার খুব লোভ জন্মেছিল। সে তীর ধনুক নিয়ে গোড়ার পিঠে চড়ে তাদের সন্ধানে রওয়ানা করল। এক সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটবর্তী হয়ে গেল, নবীজী আল্লাহর নিকট দুআ করলেন ফলে তার ঘোড়ার সামনের পা দুটি মাটির নীচে দেবে গেল। সে বুঝে গেল এমনটি রাসূলের বদ দোয়ার কারণেই হয়েছে, রাসূল আল্লাহর তরফ থেকে নিরাপত্তা প্রাপ্ত। সুতরাং তার কোনও ক্ষতি করা যাবে না। তাই সে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিল এবং এই মর্মে অঙ্গীকারাবদ্ধ হল যে, আপনার অনুসন্ধানে আসা প্রতিটি দলকে আমি ফিরিয়ে দেব। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুআ করলেন, ফলে তার ঘোড়ার পা মাটি থেকে বেরিয়ে আসল। ফেরার পথে রাসূলের সন্ধানে ধাবমান প্রতিটি দলকে সে অন্য দিকে ফিরিয়ে দিল।

এদিকে আনসারগণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের প্রতীক্ষায় প্রতিদিন মদীনার প্রবেশ পথে এসে জড়ো হতেন । দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পর গরম বেড়ে গেলে তারা বাড়ি ফিরে যেতেন।

নবুওয়তের তেরতম বছরের শুরুর দিকে রবিউল আউয়াল মাসের বার তারিখ, সোমবার দিন হঠাৎ একটি ধ্বনি ভেসে এল রাসূল আসছেন, রাসূল আসছেন। এরই সাথে সাথে চতুর্দিক থেকে রাসূলের আগমন বার্তা ও আল্লাহু আকবার শব্দের ধ্বনি গুঞ্জরিত হতে লাগল। সকলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইস্তেকবাল জানানোর জন্যে বের হয়ে পড়ল।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোবায় অবতরণ করলেন এবং সেখানে একটি মসজিদের ভিত্তি রাখলেন। এটাই ইসলামের প্রথম মসজিদ।

এখানে কয়েক দিন অবস্থান করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রওয়ানা হলেন। রাস্তায় জুমার সালাতের সময় হয়ে গেলে সাথে থাকা মুসলমানদের নিয়ে জুমার সালাত আদায় করলেন। এটাই ইসলামে সর্ব প্রথম জুমার সালাত। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দক্ষিণ দিক দিয়ে মদীনায় প্রবেশ করলেন আর তখন থেকেই তার নামকরণ হয় মদীনাতুন্নাবী বা নবীর শহর। মদীনার বুকে বইতে শুরু করল প্রশান্তি ও আত্মতৃপ্তির সুবাতাস। ইসলামের সুরক্ষিত এক দুর্গে পরিণত হল আল-মদীনা। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যসহ পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ সব দিকেই ইসলামের দাওয়াত ও আল-কুরআনের বাণী ছড়িয়ে দেয়ার মানসে বেরিয়ে পড়ল খাঁটি ঈমানদার আল্লাহর অকুতোভয় সৈনিক, এক ঝাঁক দাওয়াত-কর্মী।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন