hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

৪২
চল্লিশতম আসর: রহমতের নবী (৩)
শিশুদের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্নেহ ও দয়া

রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুদের প্রতি সকল মানুষ অপেক্ষা বেশি দয়াবান ও স্নেহবৎসল ছিলেন।

বিশিষ্ট সাহাবি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার হাসান বিন আলী রাদিয়াল্লহু আনহুমাকে চুমু খেলেন, তখন তাঁর নিকট আকরা বিন হাবেস তামীমী রাদিয়াল্লাহু আনহু বসা ছিলেন। তিনি বললেন: আমার দশজন সন্তান আছে আমি তাদের কাউকে কখনো চুমু খাইনি। (একথা শুনে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকালেন। অত:পর বললেন: যে অপরের প্রতি দয়া করে না তাকেও দয়া করা হয় না

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট কিছু বেদুইন লোক আসল। তারা জিজ্ঞেস করল: তোমরা কি তোমাদের বাচ্চাদেরকে চুমু খাও? সাহাবারা বললেন: হ্যাঁ। তারা বলল: কিন্তু আমরা - আল্লাহর কসম- আমাদের বাচ্চাদের চুমু খাই না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আল্লাহ তাআলা যদি তোমাদের থেকে দয়া-মায়া উঠিয়ে নেন তাহলে আমি কি কিছু করতে পারি?

উপরোক্ত হাদীসদ্বয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লমের শিশুদের প্রতি স্নেহ-মমতার বিশাল দিকটি উন্মোচিত হয়েছে। সাথে সাথে এ বিষয়টি ও ফুটে উঠেছে যে, বাচ্চাদের চুমু খাওয়া স্নেহ-মমতার একটি নিদর্শন। তাঁর বাণী যে রহম করে না তাকেও রহম করা হয় না। এ কথার প্রমাণ বহন করে যে প্রত্যেক কাজের প্রতিদান সে কাজের অনুরূপ হয়ে থাকে। সুতরাং যে ব্যক্তি শিশুদেরকে স্নেহ-মমতা থেকে বঞ্চিত করবে আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন তাদেরকে তা থেকে বঞ্চিত করবেন।

শিশুদের প্রতি তাঁর স্নেহ মমতার আরো একটি দৃষ্টান্ত : তিনি স্বীয় সন্তান ইবরাহীমের মৃত্যুর প্রাক্কালে তার নিকট আসলেন, রাসূলুল্লাহর চক্ষু দ্বয় অশ্রু বর্ষণ করতে লাগল। এবং বললেন: নিশ্চয় চক্ষু অশ্রুসিক্ত হয়, হৃদয়-মন ব্যথিত ও পেরেশান হয় আর আমরা আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে এমন কোন কথা বলব না। বরং তাঁকে সন্তুষ্ট করে এমন কথাই বলব, আর আমরা হে ইবরাহীম! তোমার বিচ্ছেদে খুবই ব্যথিত।

এ ঘটনায় আমরা দেখতে পাই, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত নিয়তি কে সবরের সাথে প্রসন্ন চিত্তে মেনে নেয়ার মাধ্যমে তাঁর রবকে উবুদিয়্যতের পরিপূর্ণ হক প্রদান করলেন। আর সন্তানের প্রতি স্নেহ-মমতা প্রদর্শন ও তার বিরহে অশ্রু বর্ষণ করার মাধ্যমে সন্তানের হক আদায় করেছেন। আর এটিই হচ্ছে উবুদিয়্যতের (দাসত্ব প্রকাশের ) পরিপূর্ণ প্রতিচ্ছবি।

আর যখন তাঁর মেয়ের ছেলে (নাতি) মারা গেল, তার চক্ষু থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। এ দৃশ্য দেখে সাহাবী সাদ বিন উবাদা আরয করলেন : ইয়া রাসূলাল্লাহ ! এ কি? তখন তিনি বললেন:

এটি হচ্ছে রহমত, (মায়া-মমতার নিদর্শন) আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের হৃদয়ে রেখে দিয়েছেন। তিনি তাঁর বান্দাদের মাঝে যারা স্নেহ বৎসল ও রহমশীল শুধুমাত্র তাদেরকেই রহম করেন।

শিশুদের প্রতি তাঁর স্নেহ ও ভালোবাসার আরো একটি দৃষ্টান্ত :

তিনি একবার একজন অসুস্থ ইহুদী কিশোরকে দেখতে গেলেন - বাচ্চাটি তাঁর সেবা করত- তিনি তাকে বললেন: তুমি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু বল। ছেলেটি তার পিতার দিকে তাকাল: সে বলল: তুমি আবুল কাসেমের (রাসূলুল্লাহ) অনুসরণ কর (তার কথা মান্য কর)। এরপর ছেলেটি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল। রাসূলুল্লাহ বললেন: الحمد لله الذي أنقذه من النار সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার যিনি একে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেছেন।

আরো একটি দৃষ্টান্ত :

সাহাবি আনাস বিন মালেকের উমায়র নামক একটি গোলাম ছিল। তার একটি ছোট পাখি ছিল, তার সাথে সে খেলা করত। সে পাখিটি এক সময় মরে যায় ফলে ছেলেটি খুবই ব্যথিত হয়। রহমতের নবী তার এ দু:সময়ে সান্ত্বনা দেয়ার উদ্দেশ্যে তার নিকট তাশরীফ নিয়ে গেলেন এবং তার সাথে কৌতুক করে বললেন:

يا أبا عمير , ما فعل النغير .

হে আবু উমায়র, কি করেছে তোমার নুগায়র ?

আব্দুল্লাহ বিন শাদ্দাদ তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিব অথবা এশার কোন এক সালাতে হাসান রা. অথবা হোসাইন রা.কে বহন করা অবস্থায় আমাদের নিকট আগমন করলেন। অতঃপর তাকে রেখে রাসূলুল্লাহ ইমামতির জন্যে সামনে অগ্রসর হলেন, সালাতের তাকবীর বললেন এবং এরই মাঝে সিজদায় গিয়ে অনেক দীর্ঘ সময় কাটালেন, শাদ্দাদ তাঁর মাথা উত্তোলন করে দেখলেন ঐ শিশু বাচ্চাটি রাসূলুল্লাহর পিঠের উপর, তিনি সালাত শেষ করলেন, লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল ! আপনি সালাতে অনেক বড় সেজদা করলেন, আমরা মনে করেছি, কোন ঘটনা ঘটেছে অথবা আপনার প্রতি ওহী প্রেরণ করা হচ্ছে, তিনি বললেনঃ এসবের কোনটিই হয়নি। তবে আমার নাতি আমার পিঠে সাওয়ার হয়েছে, সে তার চাহিদা মিটানোর পূর্বেই তাড়াহুড়ো করে তাকে নামিয়ে দেয়া আমার কাছে ভাল মনে হয়নি।

শিশুদের প্রতি তাঁর দয়ার আরো একটি নমুনা:

তিনি আনসারদের যিয়ারত করতেন, এবং তাদের শিশুদের সালাম দিতেন, মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেন।

ছোট ছোট বাচ্চাদের যে তিনি আদর করতেন তার আরো একটি উদাহরণ: তাঁর কাছে শিশুদের নিয়ে আসা হলে তিনি তাদের কল্যাণের দুআ করতেন, এবং তাদের তাহনিক করাতেন।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমামা বিনতে যায়নাবকে বহন করে সালাত আদায় করতেন, সিজদায় যাওয়ার সময় নামিয়ে রাখতেন, আবার যখন দাঁড়াতেন উঠিয়ে নিতেন।

এ দয়াময় অনুগ্রহশীল মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর আমার রবের অসংখ্য সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন