hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

১৯
সপ্তদশ আসর:নিপীড়ন-নির্যাতনের বিপরীতে রাসূলের ধৈর্য
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাওয়াতের জটিল ও কঠিন ময়দানে প্রবেশ করেছেন। উপদেশ প্রদানের সকল পথে গমন করেছেন। দিক নির্দেশনার সমস্ত প্রান্তরে পা রেখেছেন। তিনি আহ্বান জানিয়েছেন এক আল্লাহর প্রতি, পূর্ব পুরুষদের অনুসৃত সকল উপাস্যদের উপাসনা পরিত্যাগ করার প্রতি, আরো আহ্বান জানিয়েছেন শিরক, কুফর, মূর্তি পূজা ও মূর্তিপূজকদের ত্যাগ করার প্রতি। অশ্লীলতা ও নিষিদ্ধ কর্ম হতে বারণ করেছেন। কিন্তু খুব কম মানুষই তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়েছে, বেশির ভাগ লোকেই প্রত্যাখ্যান করেছে।

আল্লাহ প্রদত্ত নিরাপত্তা ও চাচা আবু তালেবের তত্ত্বাবধান সত্ত্বেও রাসূলকে কষ্ট দেয়া হয়েছে অনেক। অবরুদ্ধ করা হয়েছে। সংকুচিত করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে তার জীবন। নবুওয়তের সপ্তম বছর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর চাচা আবু তালেব, বনু হাশেম ও আবদুল মুত্তালিব বংশীয় মুসলমান ও কাফির সকল ব্যক্তি, শিয়াবে আবু তালেবে প্রবেশ করেছে। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল আবু লাহাব। এদিকে কাফিররা তাদের সাথে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দিল। তাদেরকে সর্বতভাবে বয়কট করল। কখনো সন্ধি চুক্তিতে আসবে না বলে ঘোষণা দিল। বাজারের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হল। খাদ্য-সামগ্রী পৌঁছানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল। যতক্ষণ না তারা রাসূলকে হত্যার জন্য তাদের হাতে সোপর্দ করে দেয়। এ সব জুলুম অন্যায়ের অঙ্গীকার নামা লিপিবদ্ধ করে কাবা ঘরের দেয়ালে তারা ঝুলিয়ে দিল। এদিকে কাফিরদের নির্যাতনের তীব্রতা লক্ষ্য করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথিদের ইথিওপিয়ায় (হাবশা) হিজরতের নির্দেশ দিলেন। এটা ছিল দ্বিতীয় হিজরত। এ যাত্রায় ৮৩ জন পুরুষ এবং ১৮ জন মহিলা রওয়ানা করলেন। তাদের সাথে রওনা করলেন ইয়েমেনের মুসলমানগণও।

কষ্ট-নির্যাতন এবং ক্ষুধা ক্লিষ্ট হয়ে দীর্ঘ তিন বছর শিয়াবে অতিবাহিত করলেন তিনি ও তাঁর সাথিরা। কোন কিছুই তাদের নিকট পৌঁছত না, যৎসামান্য যাও যেত, অত্যন্ত গোপনে। এক পর্যায়ে তাদের বৃক্ষের পাতা পর্যন্ত চিবাতে হয়েছে। নবুওয়তের দশম বর্ষ পর্যন্ত মুসলমানগণ এ দুর্বিষহ জীবন যাপন করেন। এক সময় কুরাইশের কতক লোক প্রতিজ্ঞা ভঙ্গের ঘোষণা দিলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাথিদের নিয়ে বন্দিদশা থেকে বের হয়ে আসলেন।

এ বছরই ইন্তেকাল করলেন স্ত্রী খাদিজা রা.। এর প্রায় দুই মাস পর মারা গেলেন চাচা আবু তালেব। তিনি মারা যাওয়ার পর রাসূলের উপর কুরাইশদের নির্যাতন, বাড়াবাড়ি ও গোঁড়ামি বেড়ে গেল। যা আবু তালেবের জীবিত অবস্থায় তারা করতে পারেনি।

সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত এক ঘটনায় এসেছে, একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাবা ঘরের সামনে সালাত আদায় করছিলেন। আবু জাহেল তার সাথিদের নিয়ে পাশেই বসা ছিল। কিছু দূরেই গতকালের জবাই করা একটি উটের পচা ভুঁড়ি পড়ে ছিল। আবু জাহেল বলল, তোমাদের মধ্যে কে পারবে, অমুকদের জবাই করা উটের ভুঁড়িটি এনে মুহাম্মদ যখন সেজদায় যাবে তার পিঠের উপর রেখে দিতে? তাদের মধ্যে এক হতভাগা উঠে গিয়ে তা নিয়ে আসল এবং রাসূল সেজদায় যাওয়ার পর তার কাঁধের উপর রেখে দিল। এ দৃশ্য দেখে তারা খিলখিল করে হাসতে লাগল। একে অপরের উপর গড়াগড়ি খাচ্ছিল। মেয়ে ফাতেমা দৌড়ে আসলেন, এবং পিতার কাঁধ হতে ভুঁড়ি সরিয়ে তাদের গাল-মন্দ করতে লাগলেন। সালাত শেষ করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চ স্বরে তাদের জন্য বদ-দোয়া করলেন। তিনবার বললেন, হে আল্লাহ! তুমি কুরাইশদের বিচার কর। দোয়ার আওয়াজ শোনার সাথে সাথে তাদের হাসি উবে গেল। তার বদ-দুআকে তারা ভয় করতে লাগল। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন :

হে আল্লাহ! তুমি আবু জাহেল, উত্‌বা, শাইবা, ওলীদ, উমাইয়া ও উকবার বিচার কর।

ইবনে মাসউদ রা. বলেন : যে আল্লাহ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সত্য রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছেন, তার শপথ করে বলছি, যাদের নাম ধরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদ-দুআ করেছিলেন আমি তাদের সকলকেই বদর যুদ্ধে নিহত হতে দেখেছি। অতঃপর তাদের সকলকে কূপে নিক্ষেপ করা হয়েছে।

সহীহ বুখারীর এক জায়গায় এসেছে, একদিন উকবা বিন আবি মুআইত রাসূলুল্লাহর কাঁধ ধরে গ্রীবায় কাপড় পেঁচাল এবং নিশ্বাস বন্ধ করে দেওয়ার জন্য প্রচণ্ডভাবে চাপ দিল। ইত্যবসরে আবু বকর রা. দৌড়ে এলেন এবং তাকে মুক্ত করে বললেন, তোমরা কি এমন এক ব্যক্তিকে হত্যা করতে চাও এ অপরাধে যে তিনি বলেন আমার রব আল্লাহ ?

কাফিরদের নির্যাতন যখন দিন দিন বেড়েই চলল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়েফের উদ্দেশে রওয়ানা হলেন। সেখানকার ছাকীফ গোত্রগুলোকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন। কিন্তু তাদের কাছ থেকে শত্রুতা, উপহাস ও কষ্ট ছাড়া কিছুই পেলেন না। তারা তাঁকে পাথর নিক্ষেপ করে পায়ের উভয় টাখনু রক্তাক্ত করে দিল। তিনি পুনরায় মক্কায় ফিরে আসতে মনস্থির করলেন। কারনুস সাআলিব নামক স্থানে এসে রাসূল উপরের দিকে তাকিয়ে দেখেন একটি মেঘমালা ছায়া করে আছে। ভালো করে দৃষ্টি দিয়ে দেখেন, জিবরাঈল সেখানে উপস্থিত। তিনি উচ্চ আওয়াজে বললেন : আপনার গোত্রীয় লোকজন কি করেছে এবং তারা কি উত্তর দিয়েছে, মহান আল্লাহ সবই প্রত্যক্ষ করেছেন। তাদের ব্যাপারে আপনার নির্দেশ শোনার জন্য তিনি পাহাড়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতাদের প্রেরণ করেছেন। পাহাড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা তাকে ডাক দিয়ে সালাম করলেন। অতঃপর বললেন : মুহাম্মদ! আপনার গোত্র আপনাকে কি বলেছে, আল্লাহ শুনেছেন। আমি পাহাড়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা। আপনার রব আমাকে আপনার নিকট প্রেরণ করেছেন। তাদের ব্যাপারে আপনার যা ইচ্ছে হয়, নির্দেশ করুন। আপনার মর্জি হলে আমি মক্কার দুটি পাহাড় এক সাথে মিশিয়ে দেই । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন :

بَلْ أَرْجُو أَنْ يُخْرِجَ اللهُ مِنْ أَصْلَابِهِمْ مَنْ يَعْبُدُ اللهَ وَحْدَهُ لَا يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا .

বরং আমি আশা করছি, তাদের বংশ হতে এমন লোক বের হয়ে আসবে, যারা আল্লাহর ইবাদত করবে। তার সাথে অন্য কাউকে শরীক করবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন