hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

৩৪
বত্রিশতম আসর: আহযাব যুদ্ধ
বিশুদ্ধ মতানুসারে পরিখার যুদ্ধ নামে পরিচিত আহযাব যুদ্ধ, হিজরী পঞ্চম বছরের শাওয়াল মাসে সংঘটিত হয়।

যুদ্ধের কারণ সম্বন্ধে বলা হয়, হিজরী চতুর্থ বছরে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করার অপরাধে বনী নযীরের ইহুদীদের মদীনা থেকে দেশান্তরিত করে দেন। তখন তাদের কয়েকজন নেতৃস্থানীয় লোক মক্কায় গিয়ে রাসূলের বিরুদ্ধে কুরাইশদের যুদ্ধ করতে উদ্বুদ্ধ করে তাদেরকে জড় করতে থাকে এবং যুদ্ধে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেয়। প্ররোচণার এক পর্যায়ে কুরাইশরা তাদের ডাকে সাড়া দেয় এবং সম্মিলিতভাবে যুদ্ধ করার ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌঁছে। এরপর তারা গাতফান ও বনী সুলাইমের নিকট যায়, তারাও তাদের ডাকে সাড়া দেয়। এক এক করে আরবের বিভিন্ন গোত্রের নিকট গিয়ে নবীজীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের আহ্বান জানাতে থাকে।

অবশেষে কুরাইশরা আবু সুফয়ানের নেতৃত্বে বের হয়। যোদ্ধা সংখ্যা ছিল চার হাজার। সাথে ছিল তিন শত ঘোড়া ও এক হাজার পাঁচ শত উট।

মাররুয্ যাহরান নামক স্থানে বনু সুলাইম থেকে সাত শত লোকের একটি বিশাল কাফেলা তাদের সাথে মিলিত হয়। তাদের দেখাদেখি আসাদ গোত্রের লোকেরাও বের হয়ে আসে। ফাযারাহ গোত্র থেকে এক হাজার, আশজা গোত্র থেকে চার শত, ও বনু মুররাহ থেকে আরো চার শত লোক তাদের সাথে যোগ দেয়। পরিশেষে বিভিন্ন গোত্র থেকে মোট দশ হাজার লোকের এক বশাল দল পরিখার দ্বার প্রান্তে এসে একত্রিত হয়। আর এরাই হল আহযাব তথা বিভিন্ন দল।

রাসূলুল্লাহর নিকট তাদের জড় হবার সংবাদ পৌঁছলে তিনি মদীনাবাসীকে পরামর্শের জন্য আহ্বান করলেন। সালমান ফার্সী রা. পরিখা খনন করার পরামর্শ দিলেন। যার মাধ্যমে শত্রু বাহিনী ও মদীনার মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পরামর্শ মোতাবেক পরিখা খনন করার আদেশ দিলেন। মুসলমানরা বিলম্ব না করে খনন কাজ শুরু করে দিল। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও খননে অংশ নিলেন। পরিখা সালআ পাহাড়ের সামনের দিকে খনন করা হয়েছিল। এমনভাবে যে, পাহাড়টি ছিল মুসলমানদের পেছনে আর পরিখাটি তাদের ও কাফিরদের সামনে।

ছয় দিনে খনন কাজ শেষ হল। অতঃপর নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন হাজার মুসলমানের বিশাল কাফেলা নিয়ে পেছনের পাহাড় ও সামনের পরিখার মাধ্যমে নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান গ্রহণ করলেন।

নবীজী মহিলা ও শিশু বাচ্চাদের নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার নির্দেশ করলেন। সে মতে তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হল।

হুয়াই বিন আখতাব বনী কুরাইযার নিকট গেল, তাদের সাথে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সন্ধি ছিল। এই দুষ্ট লোকটি তাদেরকে সন্ধি ভাঙ্কতে প্ররোচিত করতে থাকল। এক পর্যায় তারা সন্ধি ভঙ্গ করে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে কাফিরদের সাথে মিলে গেল। যার কারণে মুসলমানদের বিপদ আরো বেড়ে গেল। এবং তাদের নিফাকি প্রকাশ পেয়ে গেল। এ দিকে বনী হারেসার কিছু লোক মদীনায় ফিরে যেতে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট অনুমতি চেয়ে বলল :

إِنَّ بُيُوتَنَا عَوْرَةٌ وَمَا هِيَ بِعَوْرَةٍ إِنْ يُرِيدُونَ إِلَّا فِرَارًا .

আমাদের ঘর-বাড়ি খালি। অথচ সেগুলো খালি ছিল না, পলায়ন করাই ছিল তাদের ইচ্ছা।

বনী সালামাও পলায়নের ইচ্ছা করেছিল। কিন্তু আল্লাহ তাআলা উভয় দলকেই দৃঢ়তা দান করেন।

বারা বিন আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমাদেরকে পরিখা খনন করার নির্দেশ দিলেন, একটি গর্তে প্রকাণ্ড ও শক্তি এক পাথর আমরা দেখতে পেলাম। অনেকগুলো কুড়ালও তাকে কিছু করতে পারছিল না। তখন আমরা নবীজীকে বিষয়টি জানালাম। নবীজী আসলেন এবং পাথরটি দেখে তাঁর কাপড় পাথরের উপর রাখলেন। এরপর কুড়াল নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে পাথরে একটি আঘাত করে এক তৃতীয়াংশ ভেঙে ফেললেন আর বললেন, আল্লাহু আকবার, আমাকে শামের চাবি দেয়া হয়েছে। আল্লাহর শপথ, নিশ্চয় আমি এ মুহূর্তে শামের লাল অট্টালিকা গুলো দেখতে পাচ্ছি।

এরপর দ্বিতীয় আঘাত করলেন এবং আরেক তৃতীয়াংশ ভেঙে ফেললেন। আর বললেন, আল্লাহু আকবার, আমাকে পারস্যের চাবিগুলো দেয়া হয়েছে, আল্লাহর শপথ নিশ্চয় আমি মাদায়েনের সাদা অট্টালিকাগুলো দেখতে পাচ্ছি। অত:পর তৃতীয় আঘাত করলেন, এবং বললেন, বিসমিল্লাহ, ফলে পাথরের অবশিষ্ট অংশটিও ভেঙে গেল। এরপর বললেন, আল্লাহু আকবার, আমাকে ইয়েমেনের চাবিগুলো দেয়া হয়েছে, আল্লাহর শপথ, আমি এ মুহূর্তে এখান থেকে সানআর ফটকগুলো দেখতে পাচ্ছি।

মুশরিকরা রাসূলুল্লাহকে এক মাস পযর্ন্ত অবরোধ করে রেখেছিল, তবে আল্লাহ তাআলা তাদের ও মুসলমানদের মাঝে পরিখার মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দেয়ার কারণে কোন যুদ্ধ-লড়াই হয়নি ।

ইতিহাসবেত্তারা বলেন : খন্দকের দিন ভীতি খুব মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল, লোকজন ভীত হয়ে পড়েছিল, সন্তান-সন্ততি ও ধন-সম্পদের উপর আশঙ্কা হচ্ছিল। আর মুশরিকরা তাদের ঘোড়া প্রবেশ করানোর জন্যে গিরিপথ খুঁজছিল। বরং তাদের একটি দল পরিখা পাড়িও দিয়ে দিয়েছিল। তাদের মাঝে আমর বিন ওদ্দ- নামক ব্যক্তিও ছিল। সে এসে মল্লযুদ্ধের জন্যে ডাকাডাকি করতে লাগল। তার বয়স ছিল সত্তর বছর। আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু মুকাবিলা করলেন এবং পরাভূত করে হত্যা করলেন।

সকাল হল, মুসলমানগণ একটি বিশাল ব্যাটেলিয়ন প্রস্তুত করলেন যাদের মাঝে খালেদ বিন ওলীদও ছিলেন, তারা রাত অবধি যুদ্ধ করলেন। এদিকে নবীজী যোহর ও আসর সালাত আদায় করতে পারেননি। তিনি বললেন, তারা আমাদেরকে আসর সালাত হতে বিরত রেখেছে, আল্লাহ তাআলা তাদের ঘর ও কবরগুলো আগুন দ্বারা ভর্তি করে দেবেন।

অত:পর আল্লাহ তাআলা নিজের পক্ষ থেকে একটি কাজের মাধ্যমে শত্রুদের অপমানিত করলেন এবং তাদের সংঘবদ্ধতাকে বিক্ষিপ্ত করে দিলেন। এটি এভাবে সম্ভব হয়েছে যে, নুয়াইম ইবনে মাসউদ মুসলমান হয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু ইহুদী ও মুশরিকদের কেউ বিষয়টি জানতে পারেনি। তিনি তাদের এ অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে তাদের মাঝে ঢুকে গেলেন, এবং কুরাইশ ও কুরাইযার মাঝে ভয় সৃষ্টি করে দিলেন।

অত:পর প্রচণ্ড বাতাস বইতে লাগল। আবু সুফিয়ান তার সাথিদের বলল, তোমরা নিজ দেশে নেই, উটের পায়ের তলা ও ক্ষুর ধ্বংস হতে চলেছে, কুরাইযা বিরোধিতা করছে, এবং কেমন বাতাস বয়ে যাচ্ছে তাতো দেখতেই পাচ্ছ। চল ফিরে যাই, আমি চললাম।

সেই যুদ্ধে মুশরিকদের তিনজন এবং মুসলমানদের ছয় জন নিহত হয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন