hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

২৬
চব্বিশতম আসর : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন পদ্ধতি
দুনিয়ার বাস্তবতা, ভঙ্গুরতা ও অস্থায়িত্ব রাসূলের নিকট দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট ছিল। তাই তিনি নিঃস্ব ও গরিব লোকদের জীবনযাপন-পদ্ধতি প্রাধান্য দিতেন এবং তাদের মতই সাদাসিদা জীবন যাপন করতেন। আর প্রত্যাখ্যান করতেন ঐশ্বর্যবানদের প্রাচুর্যময় জীবনাচার। একদিন অভুক্ত থেকে সবর করতেন, অপর দিন খাবার গ্রহণ করে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতেন।

তিনি নিজ উম্মতকে পার্থিব জগতের ফিতনা-প্রতারণা, চাকচিক্যে নিমগ্ন হওয়ার সমূহ ক্ষতি সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নিশ্চয় দুনিয়া- সুমিষ্ট, শ্যামল । আর আল্লাহ তোমাদেরকে সেখানে খলিফা হিসেবে রেখেছেন। অতঃপর তিনি লক্ষ্য করবেন, তোমরা কি আমল কর। তোমরা দুনিয়া হতে সতর্ক থাক, সতর্ক থাক নারী হতেও । কারণ বনী ইসরাইলের সর্বপ্রথম ফিতনা ছিল নারী।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিশ্চিত ছিলেন যে, দুনিয়া সেই ব্যক্তির ঘর যার কোনো ঘর নেই, সেই ব্যক্তির জান্নাত পরকালের জান্নাতে যার কোনো অংশ নেই। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, হে আল্লাহ! একমাত্র আখেরাতের সুখ-ই প্রকৃত সুখ।

একারণেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আখিরাতকে তাঁর একান্ত লক্ষ্য বানিয়েছিলেন। দুনিয়ার যাবতীয় ঝামেলা হতে একেবারে শূণ্য করে রেখেছেন নিজ অন্তরকে। তবে দুনিয়া তাঁর কাছে দৌড়ে আসত, আর তিনি তা পাশ কাটিয়ে যেতেন খুবই সতর্কতার সাথে।

তিনি বলতেন, দুনিয়ার সাথে আমার কি সম্পর্ক! আমি তো আরোহীতুল্য - যে ক্ষণিকের জন্য একটি গাছের নীচে বিশ্রাম নিল, পরক্ষণেই তা ত্যাগ করে আবার যাত্রা শুরু করবে।

উম্মুল মুমিনীন জুয়াইরিয়া রা. এর ভাই আমর বিন হারেস বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর সময় টাকা-পয়সা, গোলাম-বাঁদি, কিছুই রেখে যাননি। শুধু তাঁর আরোহণের একটি সাদা খচ্চর, ব্যক্তিগত হাতিয়ার আর একখণ্ড জমি যা তিনি সদকা করে দিয়েছিলেন ( বিপদগ্রস্ত) পথিকদের কল্যাণার্থে।

এই হল সৃষ্টি সেরা রহমতে আলমের রেখে যাওয়া উত্তরাধিকার। তাঁর উপর আল্লাহ তাআলার শত কোটি সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক। তিনি বাদশা-নবী হতে চাননি। তিনি বরং দাস-নবী হওয়াকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত:

جَلسَ جِبْريْلُ إِلَى النبيِّ صلى الله عليه وسلم فَنَظَر إِلى السَّماءِ، فَإِذَا مَلَكٌ يَنْزِلُ، فَقَالَ لَهُ جِبْريلُ : هَذا المَلَكُ مَا نَزلَ مُنْذُ خُلِقَ قَبْلَ هَذِهِ السَّاعةِ . فَلَمَّا نَزَلَ قَالَ : يَا مُحمَّدُ ! أَرْسَلَنِي إِليْكَ رَبُّكَ؛ أَمَلِكًا أَجْعَلُكَ، أَمْ عَبْدًا رسولاً؟ فَقَالَ لَه جِبْرِيلُ : تَواضعْ لِرَبِّكَ يَا محمَّدُ ! فَقَالَ رَسُولُ اللهِ : " لَا بَلْ عَبْدًا رَسُولاً " [ رواهُ ابنُ حبَّان وصحَّحهُ الألبانيُّ ].

জিবরাঈল আলাইহিস সালাম একদিন রাসূলের কাছে বসা। এমতাবস্থায় আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখেন, একজন ফেরেশতা অবতরণ করছেন। জিবরাঈল তাকে বলেন, এ ফেরেশতা সৃষ্টির পর থেকে আজকের এ মুহূর্তের আগ পর্যন্ত কখনো অবতরণ করেননি। তিনি অবতরণ করে বলেন : মুহাম্মদ! আপনার প্রভু আমাকে আপনার নিকট পাঠিয়েছেন। আপনাকে কি বাদশা-নবী বানিয়ে দেব? না, দাস-নবী? জিবরাঈল তাকে বললেন, মুহাম্মদ! আল্লাহর জন্য বিনয়ী হোন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, আমি বান্দা রাসূল হতে চাই।

এই হল রাসূলের পার্থিব জীবন-যাপন। যা ছিল বিনয় নির্লোভ ও দুনিয়া বিমুখতায় সমৃদ্ধ।

আয়েশা রা. বলেন :

تُوَفِّيَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَا فِي بَيْتِي مِنْ شَيْءٍ يَأكُلُه ذُو كَبِدٍ إِلَّا شِطْرُ شَعَيرٍ فِي رَفٍّ لِي، فَأكلْتُ مِنْه حَتَّى طَالَ عَليَّ، فَكِلْتُه فَفَنِي " ] متَّفَقٌ عليْهِ [.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইন্তেকাল করলেন, আমার ঘরে একটি তাকের উপর রাখা সামান্য কিছু যব ছাড়া কোন প্রাণী খেতে পারে তেমন কিছু ছিল না। আমি তা-ই খেয়ে যাচ্ছিলাম অনেকদিন যাবৎ। একদিন মেপে দেখলাম, এর পরই শেষ হয়ে গেল।

ওমর রা. মানুষের প্রাচুর্য দেখে একদিন বললেন :

لَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَظلُّ الْيَوْمَ يَلْتَوِي مَا يَجِدُ مِنَ الدَّقْلِ مَا يَمْلَأُ بِهِ بَطْنَهُ " [ رَواهُ مسْلِم [.

আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি, পেট মোড়াতে মোড়াতে দিন পার করে দিয়েছেন, অথচ পেট ভরে খাবার জন্য নিম্ন মানের খেজুরের ব্যবস্থাও হয়নি।

আনাস রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

لَقَدْ أُخِفْتُ فِي اللهِ وَمَا يَخَافُ أَحَدٌ، وَلَقَدْ أُوذِيتُ فِي اللهِ وَمَا يُؤْذَى أَحَدٌ، وَلَقَدْ أَتَتْ عَليَّ ثَلَاثُونَ مِنْ بَيْنِ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ؛ وَمَا لِي وَلِبِلَالٍ طَعَامٌ يِأْكُلُهُ ذُو كَبِدٍ إِلَّا شَيْءٌ يُوارِيه إِبِطُ بِلَالٍ " [ رَواه التِّرمذِيُّ وَقَالَ : حسنٌ صحيحٌ [

আমাকে আল্লাহর পথে এতো ভয় দেখানো হয়েছে, যা অন্য কারও ব্যাপারে হয়নি। আল্লাহর জন্য আমাকে এতো কষ্ট দেয়া হয়েছে, যা অন্য কাউকে দেয়া হয়নি। আমার উপর দিয়ে ত্রিশটি রাত ও ত্রিশটি দিন এমনও অতিবাহিত হয়েছে যে, আমার এবং বেলালের খাবারের জন্য কিছুই ছিল না। একমাত্র বেলালের বগলের ভেতর রক্ষিত সামান্য কিছু খাদ্য ছাড়া।

ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার পরিবার একাধারে কয়েক দিন পর্যন্ত অভুক্ত কাটাতেন। রাতের খাবারের জন্য কিছুই জুটত না। তাদের অধিকাংশ সময়ের জীবিকা ছিল যবের রুটি।

আনাস রা. বলেন :

لَمْ يَأْكُلِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى خِوَانٍ حَتَّى مَاتَ , وَلَمْ يَأْكُلْ خَبْزًا مُرَقَّقًا حَتَّى مَاتَ " [ رواه البخاريُّ [.

নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কখনো টেবিল জাতীয় কিছুর উপর রেখে খাবার গ্রহণ করেন নি। এবং তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কখনো পাতলা রুটি খাননি।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণত চাটাই-এ বসতেন এবং তাতেই নিদ্রা যেতেন।

ওমর রা. বলেন :

دَخلْتُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَلَى حَصِيرٍ . قَالَ : فَجلَسْتُ , فَإِذَا عَليهِ إِزَارُه، وَلَيْس عَلَيْهِ غَيرُه , وَإِذَا الحصِيرُ قَدْ أَثَّر فِي جَنْبِه صلى الله عليه وسلم ، وَإِذا أَنَا بقبْضَةٍ مِن شَعيرٍ نَحوِ الصَّاعِ، وقَرَظٍ () فِي نَاحِيةٍ فِي الغُرْفَةِ , وَإِذَا إِهَابٌ () مُعلَّقٌ، فَابتَدَرتْ عَيْنَايَ . فَقَالَ رَسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : " مَا يُبْكِيكَ يَا ابْنَ الخَطَّابِ؟ " فَقُلتُ : يَا نبيَّ اللهِ ! وَمَا لِي لَا أبْكِي , وَهَذَا الحصِيرُ قَدْ أثَّر في جَنْبِكَ , وَهَذِهِ خِزانتُك لَا أَرى فِيها إِلَّا مَا أرَى، وَذاك كِسْرى وَقيْصرُ فِي الثِّمارِ والأنْهارِ، وَأنتَ نبيُّ اللهِ وصَفْوتُه , وَهَذِهِ خزَانتُك ! َ فَقَالَ صلى الله عليه وسلم : " يَا ابْنَ الخَطَّابِ ! أَمَا تَرْضَى أَنْ تَكُونَ لَنَا الْآخِرَةُ وَلَهُمُ الدُّنْيَا ؟ " [ رواهُ ابْن مَاجَه وصحَّحه المنذريُّ [.

আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গিয়ে দেখি তিনি চাটাইয়ের উপর শুয়ে আছেন। আমি তার পাশে বসলাম, তার উপর শুধুমাত্র একটি চাদর ছিল। চাটাই তার পার্শ্বদেশে দাগ কেটে দিয়েছে। আরো দেখলাম, ঘরের কোনায় রাখা এক সা পরিমাণ যব, ডালের ন্যায় সামান্য সালন উপকরণ আর ঝুলানো একটি চামড়া। এগুলো দেখে আমি অশ্রু সংবরণ করতে পারলাম না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওমর! কাঁদছ কেন ? আমি বললাম : হে আল্লাহর রাসূল! আমার না কাঁদার কি আছে? এ চাটাই আপনার পার্শ্বদেশে দাগ কেটে দিয়েছে! আমার সামনে রক্ষিত আপনার এ সামান্যমাত্র জীবনোপকরণ। অথচ কেসরা-কায়সার তথা রোম-পারস্যের রাজা-বাদশারা বড় বড় বাগান আর নির্ঝরিণীতে বসবাস করছে। আপনি আল্লাহর নবী, সব নবীদের সরদার আর এ হলো আপনার সম্বল! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : হে খাত্তাবের বেটা! তুমি কি তাতে সন্তুষ্ট নও, তাদের জন্য দুনিয়া আর আমাদের জন্য আখেরাত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন