hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

২৭
পঁচিশতম আসর: ইসলামি রাষ্ট্রের ভিত্তি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় প্রবেশ করলেন আর মদীনার অধিবাসীরা তাকে খুব আগ্রহ ও প্রফুল্ল চিত্তে বরণ করে নিল। যে কোন বাড়ি অতিক্রম করার সময় বাড়ির মালিক উটের লাগাম ধরে তার মেহমান হতে আবদার জানাতো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপারগতা প্রকাশ করে বলতেন, আমার উটের পথ ছেড়ে দাও, সে আল্লাহর পক্ষ হতে আদিষ্ট। উট চলতে চলতে মসজিদের নিকট আসতেই পা গেড়ে বসে পড়ল। অতঃপর উঠে দাঁড়াল, একটু সামনে গিয়ে, পুনরায় আগের জায়গায় এসে বসে পড়ল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মামাদের -বনী নাজ্জারের- মেহমান হলেন। অতঃপর তিনি বললেন, আমার আত্মীয়ের মধ্যে কার বাড়ি অতি নিকটে? আবু আইয়ূব আনসারী রা. বললেন, আমার, হে আল্লাহর রাসূল! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বাড়িতে মেহমান হলেন।

মদীনায় এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিলেন। যেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উট পা গেড়ে বসে পড়েছিল সেখানেই মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান- হল। জায়গাটি ছিল মূলত: দুই ইয়াতিম কিশোরের। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমিটি কিনে নিলেন। সকলের সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও মসজিদ নির্মাণ কাজে অংশ গ্রহণ করলেন। অতঃপর মসজিদের পাশে উম্মাহাতুল মুমিনীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করলেন। নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলে, আবু আইয়ূব রা. এর বাড়ি ছেড়ে এখানে চলে এলেন। সালাতের সময় সম্পর্কে অবহিত করার জন্য আজানের অনুমোদন ও তার সূচনা করলেন।

অতঃপর মুহাজির ও আনসারদের মাঝে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টি করলেন। তাদের নব্বই জনের মাঝে এ সম্পর্ক কায়েম করলেন। (এর অর্ধেক ছিল আনসার, বাকি অর্ধেক মুহাজির) তারা একে অপরের যেমন ছিলেন সহযোগী, তেমনি ছিলেন হিতাকাঙ্ক্ষী। মৃত্যুর পরে নিকট আত্মীয়ের বিপরীতে তাদের মধ্যেও উত্তরাধিকার বিধান চালু ছিল। বদর যুদ্ধ পর্যন্ত এ নীতি বলবৎ থাকে । যখন আল্লাহ তাআলা নাযিল করলেন :

وَأُولُو الْأَرْحَامِ بَعْضُهُمْ أَوْلَى بِبَعْضٍ فِي كِتَابِ اللَّهِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُهَاجِرِينَ إِلَّا أَنْ تَفْعَلُوا إِلَى أَوْلِيَائِكُمْ مَعْرُوفًا كَانَ ذَلِكَ فِي الْكِتَابِ مَسْطُورًا . ﴿الأحزاب ৬﴾

আল্লাহর বিধান অনুযায়ী মুমিন ও মুহাজিরদের চেয়ে যারা আত্মীয়, তারা পরস্পরের নিকটতর, তবে তোমরা যদি তোমাদের বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি দয়া- দাক্ষিণ্য প্রদর্শন করতে চাও তাহলে করতে পার। এটি কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। {সূরা আহযাব:৬}

তখন থেকে এ বিধান রহিত হয়ে যায়। আত্মীয়দের ভেতর-ই বণ্টন হতে থাকে উত্তরাধিকার-সূত্রে-প্রাপ্ত, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় বসবাসকারী ইহুদিদের সাথে সন্ধি স্থাপন করলেন। তাদের আলেম ও পণ্ডিত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম খুব দ্রুত এবং সর্ব প্রথম ইসলামে দীক্ষিত হন। বাকিরা কাফির অবস্থাই থেকে যায়।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় বসবাসরত মুহাজির, আনসার এবং ইহুদিদের মাঝে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার একটি সনদ তৈরি করলেন। যার গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক কিছু ধারা কতিপয় সিরাত গ্রন্থে উল্লেখ হয়েছে। যার প্রধান প্রধান অংশ নিম্নে তুলে ধরা হল।

-অন্য সকল জাতি ও গোত্রের বিপরীতে মুহাজির ও আনসার মুসলমানগণ এক জাতি ও এক বংশের ন্যায়।

-মুসলমানরা নিজেদের ভেতর ঋণগ্রস্ত ও অধিক সন্তনাদি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাহায্য করতে কার্পণ্য করবে না।

-মুসলমানগণ সকলে মিলে অত্যাচারী, অবাধ্য. দুষ্কৃতিপ্রবণ ও নিজেদের মাঝে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীকে প্রতিহত করবে। যদিও সে তাদের কারো সন্তান হয়।

- মুসলমান অপর মুসলমানকে কাফেরের পরিবর্তে হত্যা করবে না। মুসলমানের বিপরীতে কোন কাফিরকে সাহায্যও করবে না।

-আল্লাহর নিরাপত্তা সবার জন্য সমান। একজন নিম্ন স্তরের মুসলমানও যে কাউকে নিরাপত্তা দিতে পারবে। মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই।

- ইহুদীদের যে আমাদের অনুসরণ করবে, আমরা তাকে সাহায্য করব, তার জন্য উদারতা দেখাব। তার উপর জুলুম করব না, তার বিপরীতে অন্য কাউকে সাহায্যও করব না।

- মুমিনদের সন্ধি একটিই। আল্লাহর রাস্তায় জেহাদের সময় কোন মুসলমান এককভাবে কাউকে নিরাপত্তা দেবে না। যাকে নিরাপত্তা দেয়া প্রয়োজন সম্মিলিতভাবে ইনসাফের ভিত্তিতে দেয়া হবে।

-মুসলমানদের ভেতর কোন মতবিরোধের সৃষ্টি হলে, তার ফয়সালা একমাত্র আল্লাহ এবং তার রাসূলের উপর সোপর্দ করা হবে।

- আউফ বংশের ইহুদিরা মুসলমানদের স্বজাতি। তারা তাদের ধর্ম পালন করবে, মুসলমানগণ নিজেদের ধর্ম পালন করবে। তাদের এবং তাদের গোলামের ব্যাপারে একই নীতি প্রযোজ্য। তবে, যে নিজের উপর অবিচার করবে, অবাধ্য হবে, সে নিজকে এবং নিজ পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

- ইহুদিদের যারা বন্ধু, তারাও তাদের মত। তাদের কাউকে মুহাম্মাদের অনুমতি ব্যতীত মদীনা হতে বহিষ্কার করা যাবে না।

- প্রতিবেশীও নিজের মত। কেউ কারো উপর জুলুম করবে না। কেউ কারো অবাধ্য কিংবা ক্ষতির কারণ হবে না।

- অনুমতি ব্যতীত কারো সংরক্ষিত অধিকারে হস্তক্ষেপ করা যাবে না।

এ ধরনের আরো কিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। যার দ্বারা তিনি মদীনায় বসবাসরত বিভিন্ন বংশ ও গোত্রের মাঝে সমন্বয় সাধন করেছেন। মুসলমান ও ইসলামি রাষ্ট্র তথা মদীনাকে কেন্দ্র করে মুসলিম উম্মাহর ভেতর ঐক্যের একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বিচার ফয়সালা ও বিধানের ক্ষেত্রে সকলকে রুজু করতে হবে, আল্লাহ ও তার রাসূলের নিকট। বিশেষ করে যখন কোন ঝগড়া কিংবা বিরোধের সৃষ্টি হয়।

এ সনদে প্রতিটি মানুষের আকীদা, ইবাদত ও নিরাপত্তার অধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। নিশ্চিত করা হয়েছে সকল মানুষের মৌলিক অধিকারে সাম্যতাও।

একজন চিন্তাশীল গবেষক মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির অনেক প্রাথমিক মূলনীতিই এতে খুঁজে পাবেন। যারা সাধারণত: মানবাধিকার বিষয়ে সোচ্চার কণ্ঠ তারা অবশ্যই স্বীকার করতে বাধ্য হবেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই মানবাধিকারের গোড়াপত্তন করেছেন এবং কুরআন-সন্নাহ অনুযায়ী তা ঢেলে সাজিয়েছেন। বরং মদীনার এ সনদই ইনসাফপূর্ণ মানবাধিকার ও প্রতারণামূলক মানবাধিকারের মধ্যে পার্থক্যের মানদণ্ড। পক্ষান্তরে যে মানবাধিকারের প্রতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠন আহ্বান জানাচ্ছে, যাকে তারা মানবাধিকার বলে দাবি করছে, তা হচ্ছে মূলত: অন্যায়, অবিচার ও মানবগোষ্ঠির অধিকার হরণ এবং একজাতি দ্বারা অন্য জাতিকে নিষ্পেষিত ও নিঃশেষ করণের মিথ্যা মানবাধিকার।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন