hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

চতুর্থ আসর: মাহে রমযানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ (২)
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রহ. বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সময় হওয়া মাত্রই ইফতার সেরে নেয়ার প্রতি গুরুত্ব দিতেন, বিলম্ব করতেন না। এবং তিনি সেহরী গ্রহণ করতেন। সেহরী গ্রহণের প্রতি গুরুত্বারোপ করতেন। তবে সেহরী বিলম্বে গ্রহণ করতেন। সেহরী বিলম্বিত করার প্রতি তিনি উৎসাহও দিতেন।

তিনি খেজুর দিয়ে ইফতার করতে উৎসাহ দিতেন। খেজুর না পেলে পানি দিয়ে। উম্মতের প্রতি গভীরতম মমত্ববোধেরই প্রকাশ ঘটেছে রাসূলুল্লাহর এই কর্মপদ্ধতিতে। কেননা ক্ষুধাক্লিষ্ট উদরে মিষ্টি জাতীয় দ্রব্যের প্রবেশ মানবপ্রকৃতির সাথে সংগতিপূর্ণ। মানুষের দৈহিক শক্তি এতে সতেজ হয়। বিশেষ করে দৃষ্টিশক্তির প্রখরতা বৃদ্ধি পায়।

মদীনার মিষ্টি দ্রব্য হল খেজুর। খেজুরই মদীনাবাসীদের প্রধান খাদ্য। এটিই তাদের খাদ্য এবং এটিই তাদের তরকারী। এর তাজাগুলো তাদের ফল।

আর পানি দ্বারা ইফতার করার গুরুত্ব এখান থেকে বুঝা যায় যে, রোযা রাখার ফলে কলিজায় একপ্রকার শুষ্কতার সৃষ্টি হয়। শুরুতে, পানি দিয়ে যদি তা ভিজিয়ে নেয়া যায় তাহলে খাদ্য গ্রহণের উপকারিতা পরিপূর্ণ হয়। ক্ষুধা ও পিপাসার্ত ব্যক্তি যদি খাবার গ্রহণের পূর্বে একটু পানি পান করে খাবার শুরু করে তবে এটাই তার জন্য উত্তম। উপরন্তু পানি ও খেজুরের মধ্যে হৃৎপিন্ড সুস্থ থাকার যে উপাদান রয়েছে তা তো হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাই ভাল জানেন।

ইফতার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায়ের পূর্বেই ইফতার সারতেন। তিনি সাধারণত গুটি কয়েক খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। খেজুর না পেলে কয়েকটি খোরমা। তাও না পেলে কয়েক ঢোক পানি।

একটি বর্ণনায় এসেছে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইফতারের সময় বলতেন,

ذهب الظمأ وابتلت العروق وثبت الأجر إن شاء الله تعالى

অর্থ: তৃষ্ণা বিদূরিত হল, ধমনি হল সিক্ত, আর পুণ্য সাব্যস্ত হল ইনশাআল্লাহু তাআলা।

অন্য আরেকটি হাদীসে এসেছে,

إِنَّ لِلصَّائِم عِنْدَ فِطْرِه دَعْوةً مَا تُرَدُّ } رَواه ابْنُ مَاجَه {

ইফতারের সময় রোযাদারের জন্য এমন একটি দোয়া করার সুযোগ রয়েছে যা কখনো ফিরিয়ে দেয়া হয় না।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত,

إِذَا أَقْبَل اللَّيْلُ مِنْ هَاهُنَا، وَأَدْبَرَ مِنْ هَاهُنَا , فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ ] مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ [

রাত যখন এইদিক দিয়ে আগমন করে এবং ঐ দিক দিয়ে চলে যায়, রোযাদারের তখন ইফতার হয়ে যায়।

এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, অর্থাৎ রাতের আগমনের সাথে সাথে রোযাদার ব্যক্তি বিধানগতভাবে ইফতার করে ফেলেছে বলে ধরে নেয়া হবে যদিও সে নিয়ত না করে । অন্য এক ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, এরূপ ব্যক্তির ক্ষেত্রে বলা হবে, সে ইফতার লগ্নে প্রবেশ করেছে। أصبح (সকাল করেছে) ও أمسى (সন্ধ্যা করেছে) এর মতই।

সিয়াম পালনকারীর আদব:

রোযাপালনাবস্থায় অশ্লীল কর্মে জড়িত হওয়া, হট্টগোল, গালমন্দ অথবা অপরের গালমন্দের উত্তর দেওয়া থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারণ করেছেন। গালাগালকারী ব্যক্তির উদ্দেশ্যে রোযাদার ব্যক্তিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু এতটুকু বলতে বলেছেন, إِنِّي صَائِمٌ অর্থাৎ, আমি রোযাদার।

.আমি রোযাদার. কথাটি কীভাবে বলতে হবে সে বিষয়ে ওলামাদের কয়েকটি মতামত পাওয়া যায়,

-মুখে উচ্চারণ করে বলা, এটাই হাদীসের আপাত ব্যাখ্যা।

-রোযা পালন অবস্থায় রয়েছে, কথাটি নিজেকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য রোযাদার ব্যক্তি মনে মনে এরূপ বলবে ।

-ফরয রোযার সময় মুখে উচ্চারণ করে বলবে, আর নফলের সময় মনে মনে বলবে, কেননা রিয়ামুক্ত হওয়ার এটা একটা সুন্দর পন্থা।

রমযানে সফর সংক্রান্ত আদর্শ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে সফর করেছেন। সফর অবস্থায় তিনি কখনো রোযা রেখেছেন আবার কখনো ইফতার করেছেন, অর্থাৎ রোযা বিহীন অবস্থায় থেকেছেন। আর সাহাবাদেরকে এ দুয়ের যে কোন একটি গ্রহণ করার স্বাধীনতা দিয়েছেন। শত্রুর কাছাকাছি পৌঁছে গেলে তিনি রোযা ভঙ্গ করার নির্দেশ দিতেন। শত্রুদেরকে মোকাবেলা করার সময় শক্তি সঞ্চয়ের উদ্দেশেই তিনি এরূপ করতেন।

তবে যদি সফরে যুদ্ধ-লড়াইয়ের কোন অনুষঙ্গ না থাকত তাহলে রোযা ভঙ্গের ক্ষেত্রে বলতেন, এটা হল রুখসত তথা সুযোগ, যে গ্রহণ করল, ভাল করল। আর যে করল না বরং রোযা রাখল তাতে তার কোন পাপ হবে না।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বড় বড় অভিযানের প্রায় সবগুলোতেই, যেমন, বদর, উহুদ, খন্দক, তাবুক, ফাতহে মক্কা ইত্যাদি।

তবে তিনি কতটুকু পথ অতিক্রম করলে শরীয়তসম্মত সফর হবে এবং রোযাদার ইফতার করতে পারবে, এ ব্যাপারে কিছু নির্ধারণ করেন নি। সফরের দূরত্ব নির্ধারক কোন কিছুই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে প্রমাণিত নয়।

সাহাবাগণ সফর শুরু করতেন। আর রোযা ভঙ্গ করলে নিজ এলাকা অতিক্রম করে যাওয়ার পর ভঙ্গ করতে হবে, এ জাতীয় কোন শর্ত আরোপ করতেন না। সফরের শুরুতেই নিজ বাড়ি-ঘর অতিক্রম করার পূর্বেই রোযা ভঙ্গ করতেন এবং বলতেন, এটিই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শ। উবাইদ বিন যাবর বলেন:

قَال عُبَيْدُ بْنُ جَبْرٍ : رَكِبتُ مَع أَبِي بَصْرةَ الغِفَارِيِّ صَاحِب رَسُولِ اللهِ سَفِينةٍ مِنَ الفُسْطَاطِ فِي رَمضَانَ، فَلَمْ يُجَاوِزِ البُيُوتَ حَتَّى دَعَا بِالسُّفْرَةِ وَقَالَ : اقْتَرِبْ . قُلْتُ : أَلسْتَ تَرَى البُيُوتَ؟ قَالَ أبُو بَصْرةَ : أَتَرْغَبُ عَنْ سُنَّةِ رَسُولِ اللهِ ؟ . ] رواه أحمد وأبوداود [

আমি সাহাবী আবু বসরা (রা) এর সাথে ফুসতাত থেকে সফরের উদ্দেশ্যে নৌকোয় আরোহণ করলাম। তিনি নিজ এলাকার ঘর-বাড়ি অতিক্রম করার পূর্বেই দস্তরখান আনার জন্যে বললেন। এবং আমাকে বললেন, কাছে আস। আমি বললাম: আপনি কি এলাকার ঘর-বাড়িগুলো দেখতে পাচ্ছেন না? আবু বসরা বললেন: তুমি কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নত উপেক্ষা করতে চাও।

মুহাম্মদ ইবনে কাব বলেছেন.

أَتَيتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ فِي رَمَضَانَ، وَهُوَ يُرِيدُ سَفَرًا , وَقَد رُحِّلَتْ لَهُ رَاحِلَتُه، وَقَدْ لَبِسَ ثِيابَ السَّفَرِ، فَدَعا بِطَعَامٍ فَأَكَلَ، فَقُلْتُ لَهُ : سُنَّةٌ؟ قَالَ : سُنَّةٌ . ثُمَّ رَكِبَ . قَالَ التِّرْمِذِيُّ : حَدِيثٌ حَسَنٌ

আমি রমযানে আনাস ইবনে মালেকের কাছে গেলাম, তিনি সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সফরের উদ্দেশ্যে তার বাহন প্রস্তুত করে রাখা ছিল। তিনি সফরের পোশাক পরিধান করলেন। অতঃপর খাবার আনতে বললেন এবং গ্রহণ করলেন। আমি বললাম, এটা কি সুন্নত। তিনি বললেন, হ্যাঁ, সুন্নত। এরপর তিনি সওয়ার হয়ে রওয়ানা হলেন।

এই হাদীসগুলো রমযানে সফর অবস্থায় রোযা ভঙ্গ করার অনুমতি প্রসঙ্গে খুবই স্পষ্ট প্রমাণ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন