hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

৩৮
ছত্রিশতম আসর: হুদাইবিয়ার সন্ধি
হিজরতের ষষ্ঠ বছর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমরার জন্য সকল সহাবিদের প্রস্তুত হতে বললেন। তারা খুব দ্রুত প্রস্তুতি নিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাজার চার শত সাহাবিসহ রওয়ানা করলেন। সাথে ছিল মুসাফিরের ন্যায় সামান্য হাতিয়ার, অর্থাৎ কোষ বন্ধ তলোয়ার। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার সাথিরা হাদি (উমরার পশু) সাথে নিয়ে নিয়েছিলেন। কুরাইশরা এ ব্যাপারে অবগত হলে, হারাম শরীফ থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গতিরোধ করার জন্য বিরাট বাহিনী প্রস্তুত করল।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতুল খাওফ আদায় করলেন। অতঃপর মক্কার নিকটবর্তী হলেন। রাসূলকে নিয়ে তাঁর উট বসে পড়ল। মুসলমানরা বলতে লাগলেন : কোসওয়া চলতে চাচ্ছে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : কোসওয়া বসে পড়েনি, বরং তাকে আটকে রেখেছেন সে সত্তা যিনি হস্তী বাহিনীকে আটকে দিয়েছিলেন। আজকে তারা আমার কাছে যে চুক্তিই করতে চাইবে, আমি তাদের সে চুক্তিতেই সই করব, যদি তাতে বাইতুল্লাহর সম্মান ও মর্যাদা বিদ্যমান থাকে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উট হাঁকালেন. উট উঠে দাঁড়াল এবং হুদাইবিয়ার নিকট সামান্য পানি বিশিষ্ট একটি কূপের নিকট অবতরণ করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি তীর বের করে, তার ভেতর গেড়ে দিলেন, সাথে সাথে পানি বের হতে লাগল। সকলে কূপ থেকে হাতের আজলা ভরে পানি পান করলেন।

বুদাইল ফিরে গিয়ে কুরাইশদের সংবাদ দিলে তারা উরওয়া বিন মাসউদ সাকাফীকে প্রেরণ করল। তার সাথেও বুদাইলের ন্যায় কথাবার্তা হল। সাহাবায়ে কেরাম তাকে এমন কিছু আচরণ দেখাল, যার দ্বারা সে বুঝতে পারে যে, মুসলমানগণ মুহাম্মদ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেমন মহব্বত করে এবং কীভাবে তার অনুসরণ ও আদেশ পালন করতে প্রস্তুত আছে। সে ফিরে গিয়ে মক্কার কাফিরদের এ সম্পর্কে বর্ণনা দিল। অতঃপর তারা কেনানা বংশের জনৈক হুলাইছ বিন আলকামাকে পাঠাল, তারপর মিকরাজ ইবনে হাফসকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে কথা বলছিলেন। এমতাবস্থায় সুহাইল ইবনে আমর আসলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখে বললেন, তোমাদের জন্যে তোমাদের ব্যাপারটি সহজ করা হয়েছে।

অতঃপর দু পক্ষের মাঝে সন্ধি চুক্তি সম্পন্ন হল। অথচ সেদিন যদি মুসলমানগণ শত্রুদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেন তাহলে তারাই জয়ী হতেন। কিন্তু তারা বাইতুল্লাহর সম্মান যথাযথভাবে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন।

সন্ধি চুক্তি ছিল নিম্নরূপ :

১.উভয় পক্ষের মাঝে দশ বছর পর্যন্ত কোনো যুদ্ধ-বিগ্রহ হবে না।

২.এক পক্ষ অপর পক্ষকে নিরাপত্তা দেবে।

৩. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বছর ফিরে যাবেন, তবে শর্ত হচ্ছে, আগামী বছর তিনি ও মক্কার মাঝে তারা কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না।

৪.মুসলমানদের কাছে তাদের কেউ আসলে তারা তাকে ফিরত পাঠাতে বাধ্য থাকবে, যদিও সে মুসলমান হয়। কিন্তু তাদের কাছে কোনো মুসলমান ফিরে গেলে, তারা তাকে ফিরত পাঠাতে বাধ্য থাকবে না।

৫.কুরাইশ ব্যতীত অন্য যে কেউ মুহাম্মদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে চাইলে, হতে পারবে। তদ্রুপ মক্কার কুরাইশদের সাথে কেউ চুক্তিবদ্ধ হতে চাইলে, তারাও তা পারবে।

হুদাইবিয়ার সন্ধির ফলাফল:

সন্ধির সময় মুসলমানদের অনেকেই এ চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন। তাদের মনে হয়েছিল, এ সন্ধিচুক্তি একপেশে এবং চুক্তির ধারাগুলোর মাধ্যমে মুসলমানদের উপর অন্যায় করা হয়েছে। কিন্তু অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই মুসলমানগণ এর উত্তম ফলাফল পেতে শুরু করেছিলেন। তা হতে নিম্নে কিছু প্রদান করা হল,

১.কুরাইশদের পক্ষ হতে একটি ইসলামী রাষ্ট্রের স্বীকৃতি। কারণ, দুপক্ষ এক সমান না হলে চুক্তি হয় না। এই স্বীকৃতির একটি বিরাট প্রভাব অন্যান্য গোত্রের মধ্যেও পড়েছে ।

২.মুশরিক ও মুনাফিকদের অন্তরে ভীতির সঞ্চারণ। তাদের অনেকেই ইসলামের বিজয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। মক্কার কতিপয় নেতৃবর্গের খুব দ্রুত ইসলাম গ্রহণের কারণে বিষয়টি তাদের নিকট আরো স্পষ্ট হয়। যেমন খালেদ বিন ওলীদ ও আমর ইবনুল আস রা.।

৩.যুদ্ধবিরতি ইসলামের প্রচার-প্রসার ও লোকদের এ সম্পর্কে অবহিত করার একটি বিরাট সুযোগ এনে দেয়, যা অনেক লোক ও গোত্রকে ইসলাম গ্রহণ করার ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছে।

৪.মুসলমানগণ কুরাইশদের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হল। ফলে ইহুদীসহ ইসলামের অন্যান্য শত্রুদের ব্যাপারে পূর্ণ মনোযোগ দেয়া সহজ হয়ে গেল। আর খায়বর যুদ্ধতো হুদায়বিয়ার সন্ধির পরই সংঘটিত হয়েছে।

৫.সন্ধির আলাপ-আলোচনা কুরাইশের অনেক মিত্রদেরকে মুসলমানদের সম্পর্কে জানার এবং তাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করার আগ্রহ তৈরি করে দিয়েছে। উদাহরণত: হুলাইস বিন আলকামা যখন মুসলমানদের দেখল যে, তারা তালবিয়া পড়ছে, সে নিজ সাথীদের কাছে গিয়ে বলল: আমি তাদের অনেক হাদী দেখেছি, যাদের কালাদা পরানো হয়েছে এবং হজের আলামত দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। আমার বিশ্বাস, তাদেরকে বাইতুল্লাহ থেকে ফেরানো যাবে না।

৬.হুদাইবিয়ার সন্ধি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মুতার যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। যা ছিল আরব উপদ্বীপের বাইরে অভিনব পন্থায় ইসলামের দাওয়াত কার্য পরিচালনার নতুন পদক্ষেপ।

৭.এই সন্ধি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রোম, পারস্য ও কিবতী রাজন্যবর্গের নিকট ইসলামের প্রতি আহ্বান জানিয়ে চিঠি-পত্র পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

৮.হুদাইবিয়ার এ সন্ধি ছিল মূলত: মক্কা বিজয়ের পট ভূমিকা ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন