hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

৪৩
একচল্লিশতম আসর: রহমতের নবী (৪)
সেবক ও কৃতদাসদের প্রতি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দয়া

ইসলাম পূর্ব যুগে চাকর, কৃতদাসদের কোন মর্যাদা ও অধিকার ছিল না, যখন আল্লাহ ইসলাম দিয়ে পৃথিবীকে মর্যাদাবান করলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সকল অধিকার বঞ্চিতদের থেকে দূর করে দিলেন সকল প্রকার অত্যাচার-অবিচার আর প্রতিষ্ঠা করলেন তাদের অধিকার। যারা তাদের প্রতি অন্যায়-অত্যাচার করত, ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করত কিংবা তিরস্কার-ভৎসনা করত তিনি তাদেরকে কঠিন আযাবের ভয় দেখিয়ে সতর্ক করেছেন।

মারূর বিন সুয়াইদ বলেনঃ আমি আবু যর রা. কে দেখলাম, তিনি যে পোশাক পরিধান করতেন, তাঁর চাকরকে ঠিক ঐ মানের পোশাকই পরিধান করতে দিতেন, তাকে এ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে বললেন: রাসূলের যুগে তিনি একজন লোককে গালি দিয়েছিলেন- তাকে তার মায়ের নামে তিরস্কার করেছিলেন- লোকটি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে নালিশ করল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:

إنَّك امرؤٌ فيك جاهلية

তুমি এমন লোক যার মাঝে জাহিলিয়াত বিরাজিত। তোমাদের ভ্রাতৃবৃন্দ তোমাদের চাকর-বাকর, আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন, সুতরাং যার অধীনে তার ভাই থাকবে, তার উচিত সে যা খাবে তাকেও তা খাওয়াবে, সে যা পরিধান করবে তাকেও তা পরিধান করাবে, তাদের কষ্ট হয় এমন বোঝা তাদের চাপিয়ে দিবে না, আর যদি দাও তবে তাদের সহায়তা করবে।

প্রিয় পাঠকবৃন্দ: লক্ষ্য করে দেখুন, কিভাবে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন চাকরকে ভাইয়ের মর্যাদার আসন দান করলেন। যাতে প্রতিটি মুসলিমের হৃদয়ে একথা স্থিরভাবে প্রথিত হয়ে যায়, সে যদি তার চাকর, কর্মচারী অথবা কৃতদাস শ্রেণির লোকদের উপর অত্যাচার করে, তাহলে যেন নিজ ভাইয়ের সাথেই এ আচরণ করল। অতঃপর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাদের প্রতি অনুগ্রহ-দয়া, সম্মান প্রদর্শন, খাবার প্রদান ও পরিধেয় দান ইত্যাদি ক্ষেত্রে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেয়ার জন্যে বিশেষভাবে আদেশ প্রদান করলেন। বললেন: সে নিজে যা খাবে তাকেও তাই খেতে দেবে। নিজে যা পরিধান করবে তাকেও তাই পরতে দেবে। আর তাই আবু যর রা. নিজে যা পরিধান করতেন খাদেমকেও তা-ই পরতে দিতেন। অনুরূপ সামর্থ্যের অতিরিক্ত কাজ চাপিয়ে দিতেও নিষেধ করেছেন। এ নিষেধাজ্ঞা পরোক্ষ ভাবে আদেশ করছে যে তাদের থেকে কাজ নেয়ার ক্ষেত্রে সহজ করতে হবে এবং বিশ্রামের জন্যে যথেষ্ট সময় দিতে হবে।

আবু মাসউদ আনসারী রা. বলেনঃ আমি আমার এক গৃহভৃত্যকে চাবুক দিয়ে প্রহার করছিলাম, হঠাৎ আমার পিছন থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পেলাম, اعلَم أبا مسعود জেনে রাখ! হে আবু মাসউদ। রাগে আমি আওয়াজ বুঝতে পারছিলাম না। যখন তিনি আমার নিকটে আসলেন, তাকিয়ে দেখি, তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। বলছেন: জেনে রাখ! আবু মাসউদ। তিনি বলেন, অত:পর আমি হাত থেকে চাবুক ফেলে দিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ বললেন: জেনে রাখ! হে আবু মাসউদ! তুমি এ গোলামের উপর যতটুকু ক্ষমতাবান, অবশ্যই আল্লাহ তাআলা তোমার উপর এর চেয়ে অধিক ক্ষমতাবান। আমি বললাম: আজকের পর থেকে আমি আর কখনো কোন গোলামকে প্রহার করব না।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, আমি বললাম: আল্লাহর রাসূল সে আল্লাহর ওয়াস্তে মুক্ত। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: যদি তুমি তা না করতে, অবশ্যই তোমাকে (জাহান্নামের) আগুন স্পর্শ করতো।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন: যে স্বীয় গোলামকে চপেটাঘাত করবে, তার প্রতিকার হল সে তাকে আযাদ করে দেবে।

নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই- ঐ মহান ব্যক্তিত্ব, যিনি দুর্বলদের রক্ষা করেছেন, কৃতদাসদের মুক্ত করেছেন, চাকর-বাকরদের সাথে সুবিচার করেছেন, ভগ্ন হৃদয়দের মাঝে থেকে তাদের দুঃখ-কষ্ট খুব কাছ থেকে দেখেছেন এবং তা লাঘব করার জন্যে আজীবন জিহাদ করেছেন। এবং প্রশান্ত করেছেন তাদের হৃদয় মন।

মু্আবিয়া বিন সুয়াইদ বিন মুকরিন বলেন: আমাদের একজন কৃতদাসকে আমি চপেটাঘাত করেছিলাম, তারপর তাকে ও আমাকে আমার পিতা ডেকে বললেন: এর থেকে তুমি কেসাস (প্রতিশোধ) গ্রহণ কর। আমরা মুকরিন গোত্রের লোকেরা রাসূলের যুগে মাত্র সাতজন ছিলাম, আর আমাদের খাদেম ছিল মাত্র একজন। আমাদের এক লোক তাকে চপেটাঘাত করল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তাকে তোমরা মুক্ত করে দাও।

সবাই বলল: আমাদের তো অন্য কোন খাদেম নেই। তখন তাকে বলল: তুমি তাদের খেদমত কর, তাদের প্রয়োজনমুক্ত হওয়া পর্যন্ত। যখন প্রয়োজন শেষ হয়ে যাবে তখন তাদের উচিত তাকে মুক্ত করে দেয়া।

এ হচ্ছেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আর চাকর-বাকর এবং কৃতদাসদের সাথে এই ছিল তাঁর অবস্থান। যারা মানব স্বাধীনতার দাবি করছে এবং এ ব্যাপারে খুব সোচ্চার প্রমাণ করার চেষ্টা করছে প্রতিনিয়ত: রাসূলুল্লাহর এই অবস্থানের তুলনায় তারা কোথায়?

খাদেমদের সাথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিজের আচরণের বাস্তব নমুনার প্রতি লক্ষ্য করুন।

আনাস বিন মালেক রা. বলেন: আমি দশ বছর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমত করেছি, আল্লাহর শপথ করে বলছি: তিনি আমার কোন কাজে কখনো উফ্‌ফ শব্দটি পর্যন্ত বলেননি। এবং আমি কোন কাজ করার পর, বলেননি কেন করেছ? আর না করলে বলেননি- কেন করোনি?

অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, তিনি আমাকে কখনো কোন দোষারোপ করেননি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার খাদেমকে জিজ্ঞেস করতেন: তোমার কোন প্রয়োজন আছে কি?

আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: মদীনার কোন বাঁদি যদি রাসূলুল্লাহ স. এর হাত ধরত তাহলে তিনি স্বীয় হাত বাঁদির হাত থেকে ছাড়িয়ে নিতেন না যতক্ষণ না সে তার প্রয়োজনে মদীনার যেখানে ইচ্ছা নিয়ে যেত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন