hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

৪৪
বেয়াল্লিশতম আসর: রাসূলুল্লাহর দানশীলতা
বদান্যতা, মহানুভবতা, দানশীলতা ও উদারতার ক্ষেত্রে কেউই নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সমকক্ষ হতে পারেনি এবং পারবেও না।

দানশীলতার সব কয়টি স্তরই তিনি অতিক্রম করেছেন। সর্বোচ্চ স্তর হলো : আল্লাহর রাস্তায় নিজের জীবন উৎসর্গ করা। কবির ভাষায় :-

يجود بالنفس إن ضن البخيل بها والجود بالنفس أقصى غاية الجود

তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করছেন, যদিও কৃপণ ব্যক্তি নিজের জীবন দান করতে চায় না, আর জীবন উৎসর্গ করাই হলো সর্বোচ্চ পর্যায়ের বদান্যতা।

শত্রুর মুকাবিলায় যুদ্ধ করার সময় তিনি নিজেকে উৎসর্গ করে দিতেন। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুদের খুব কাছাকাছি তিনিই অবস্থান করতেন। বীর বিক্রম যোদ্ধারাই কেবল তার সাথে অবস্থান করতে পারত।

তিনি সর্বদা ইল্‌ম দানে নিরত থাকতেন। আল্লাহ তাকে যে শিক্ষা দিয়েছেন, সার্বক্ষণিক সাহাবাগণকে তা শিক্ষা দিতেন। তাদেরকে কল্যাণকর বিষয় শিক্ষা দেয়ার ব্যাপারে সর্বদা সচেষ্ট থাকতেন। শিক্ষা দানের ব্যাপারে তাদের সাথে নম্রতা ও হৃদ্যতাপূর্ণ আচরণ করতেন, সব সময় বলতেন : إن الله لم يبعثني معنتا ولا متعنتاً، ولكن بعثني معلماً ميسراً . رواه مسلم

আল্লাহ আমাকে কঠোর ও রূঢ় বানিয়ে প্রেরণ করেন নি, বরং একজন সহজকারী শিক্ষক হিসেবে পাঠিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন :

إنما أنا لكم بمنزلة الوالد، أعلمكم . رواه أحمد

আমি তোমাদের জন্যে পিতৃসমতুল্য, তোমাদের আমি শিক্ষা দান করি।

প্রশ্নকারী কোনো বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি জবাব দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু বাড়িয়ে বলতেন। আর এটি ইলম শিক্ষাদানের ব্যাপারে উদারতার পরিচয় বহন করে। তাকে কেউ সমুদ্রের পানির পবিত্রতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে, উত্তরে তিনি বললেন:

هو الطهور ماؤه والحل ميتته، رواه أحمد

সমুদ্রের পানি পবিত্র এবং এর মৃত প্রাণী হালাল।

মুসলমানদের কল্যাণ এবং তাদের প্রয়োজন মিটাতে গিয়ে তাঁর সময় ও আরাম-আয়েশ কুরবানী করার দৃষ্টান্ত বিরল। তিনি এ ক্ষেত্রেও সকল মানুষের মধ্যে এগিয়ে আছেন। একটি ক্ষুদ্র দৃষ্টান্তই এর প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট :

মদীনার কোন একজন কৃতদাসী তার হাত ধরে স্বীয় প্রয়োজন মেটানোর জন্যে যথা ইচ্ছা নিয়ে যেতে পারত।

জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. কর্তৃক বর্ণিত হাদীসখানা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মহানুভবতার উত্তম দৃষ্টান্ত, তিনি বলেন :

ما سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم شيئاً قط فقال : لا . متفق عليه

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট কোন কিছু চাওয়া হলে তিনি কখনও না বলতেন না।

আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : ইসলামের বরাত দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট কিছু চাওয়া হলে তিনি তা দিয়ে দিতেন। এক ব্যক্তি তার নিকট আসল, তিনি তাকে দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে থাকা সবগুলো ছাগল দিয়ে দিলেন। সে লোক আপন সম্প্রদায়ের নিকট গিয়ে বলল : হে আমার জাতি, তোমরা মুসলমান হয়ে যাও, কেননা মুহাম্মদ এমনভাবে দান করেন, মনে হয় তিনি কোন দরিদ্রতার ভয় করেন না।

আনাস রা. বলেন : কোন ব্যক্তি দুনিয়ার উদ্দেশ্যে সকালে মুসলমান হলে, বিকাল হওয়ার পূর্বে ইসলাম তার নিকট দুনিয়া ও এর মধ্যকার সবকিছু থেকে অধিক প্রিয় হয়ে যেত।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুনাইন যুদ্ধের পর সফওয়ান ইবনে উমাইয়াকে তিন শত উট দিয়েছিলেন। অতঃপর সে বলল : আল্লাহর কসম, আমাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক দিয়েছেন। তিনি আমার কাছে সর্বাধিক অপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন, অত:পর ক্রমান্বয়ে দান করতে করতে সকল মানুষ অপেক্ষা বেশি প্রিয় হয়ে গিয়েছেন।

আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল মানুষের মধ্যে সর্বাধিক দানশীল ব্যক্তি ছিলেন। আর এ দানশীলতা রমজানে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেত।

কারণ, রমজান মাসে জিবরাইল আ. তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাকে কুরআনের প্রশিক্ষণ দিতেন। আল্লাহর কসম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন প্রবল বাতাসের চেয়েও বেশি দানশীল হয়ে যেতেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার সাথি-সঙ্গীরা হুনাইনের যুদ্ধ হতে ফেরার পথে কতক বেদুইন লোক তার নিকট বিভিন্ন বিষয়ে চাইতে লাগল। তাদের চাপাচাপিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামুরা বৃক্ষের নীচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হলেন। ইতিমধ্যে গাছে তার চাদর আঁটকে পড়লে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সঙ্গীদের বললেন তোমরা আমার চাদর ফিরিয়ে নিয়ে আস। আমি আল্লাহর কসম করে বলছি যদি আমার কাছে এ বাগানে অবস্থিত গাছের সমপরিমাণও চতুষ্পদ জন্তু থাকতো তাহলে আমি সবই তোমাদের মধ্যে বণ্টন করে দিতাম। তারপরও তোমরা আমাকে কৃপণ হিসেবে দেখতে পেতে না এবং মিথ্যাবাদী, কাপুরুষ হিসেবেও না।

দানশীলতা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চিরাচরিত আদর্শ, এমনকি তিনি নবী হওয়ার পূর্বেও দানশীলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

যেমন, হেরা গুহায় ফেরেশতা জিবরাইল ওহী নিয়ে তাঁর সাথে সাক্ষাতের পর তিনি কাঁপতে কাঁপতে যখন খাদিজা রা. এর নিকট ফিরে আসলেন। তখন তাকে তিনি এ বলে সান্ত্বনা দেন যে, কখনও নয়, আল্লাহর কসম, আল্লাহ আপনাকে কখনো অপমান করবেন না। কারণ, আপনি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখেন, দুস্থ-অসহায় মানুষের দায়িত্ব নিয়ে থাকেন, অন্ন-বস্ত্রহীন মানুষের সহযোগিতা করেন এবং বিপদাপদে লোকদের আপনি সহযোগিতা করেন।

এবং আনাস রা. বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগামী কালের জন্য কোন কিছু জমা করে রাখতেন না।

আবু সাঈদ খুদরী রা. হতে বর্ণিত, কিছু সংখ্যক আনসারী সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট কিছু সাহায্য প্রার্থনা করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের প্রার্থনা অনুযায়ী দান করলেন, তারা আবারও প্রার্থনা করলে তিনি আবারও দিলেন, এরপর তারা আবারও প্রার্থনা করে, তিনি আবারো তাদের দান করেন। এভাবে যখন দান করতে করতে সব শেষ হয়ে গেল। তখন তিনি বললেন, আমার নিকট কিছু আসলে এমন হয় না যে আমি তোমাদের না দিয়ে জমা করে রাখি। আর যে পবিত্র থাকতে চায় আল্লাহ তাকে পবিত্র রাখেন। আর যে অমুখাপেক্ষী থাকতে চায় আল্লাহ তাকে অমুখাপেক্ষী করে দেন। আর যে ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহ তাকে ধৈর্য ধারণের তাওফীক দেন। কোন ব্যক্তি সবর অপেক্ষা উত্তম ও বৃহত্তর আর কোন নেয়ামত প্রাপ্ত হয়নি।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন