hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

সপ্তম আসর: সত্যবাদিতা ও আমানতদারী
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়ত প্রাপ্তির পূর্বেই নিজ জাতির কাছে সত্যবাদী ও আমানতদার হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিলেন। তারা তাকেঁ আল আমীন বলে ডাকত। এই খেতাবটি কেবল তার জন্যই সুনির্ধারিত ছিল। এর মাধ্যমে এটিই প্রমাণ হয় যে তিনি সত্যবাদিতা আমানতদারীসহ যাবতীয় উত্তম গুণাবলির সর্বোচ্চ চূড়া স্পর্শ করতে পেরেছেন।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সত্যবাদিতা ও আমানতদারির ব্যাপারে তাঁর শত্রুরাও সাক্ষ্য দিয়েছে। আবু জেহেল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মারাত্মকভাবে ঘৃণা ও তাঁকে মিথ্যা-প্রতিপন্ন করা সত্ত্বেও সত্যবাদী বলেই বিশ্বাস করত । এক ব্যক্তি তাকে জিজ্ঞেস করল: মুহাম্মদ সত্যবাদী না মিথ্যাবাদী? উত্তরে সে বলল, ধ্বংস হোক তোমার। আল্লাহর কসম। নিশ্চয়ই মুহাম্মদ সত্যবাদী। মুহাম্মদ কখনও মিথ্যা কথা বলেননি। কিন্তু যদি কুসাইয়ের সন্তানরা ঝান্ডা, পানি পান করানো, কাবা ঘরের পাহারাদারী ও নবুওয়ত নিয়ে যায় তাহলে কুরাইশের অন্যান্য শাখাগুলোর ভাগে কি রইল ?

ইসলাম গ্রহণের পূর্বে যে আবু সুফয়ান নবীর বিরুদ্ধে কঠিন শত্রুতায় লিপ্ত ছিল, সম্রাট হেরাকলিয়াস যখন তাকে জিজ্ঞেস করল, সে এখন যা বলছে তা বলার আগে, তোমরা কি তাঁকে মিথ্যা বলার অপবাদ দিতে? আবু সুফিয়ান উত্তরে বলল, না।

হেরাকলিয়াস বলল: আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, সে যা বলছে তা বলার পূর্বে তোমরা কি তাঁকে মিথ্যার অপবাদ দিতে, তুমি বললে, না। আমি বুঝতে পেরেছি, যিনি মানুষের ব্যাপারে মিথ্যাবাদী নন তিনি আল্লাহর ব্যাপারে মিথ্যাবাদী হতে পারেন না।

রাসূলুল্লাহর উপর যেদিন প্রথম ওহী নাযিল হয়, তিনি কাঁপতে কাঁপতে খাদিজা (রা.) এর কাছে এসে বললেন, আমাকে কম্বলাবৃত কর। আমাকে কম্বলাবৃত কর। খাদিজা (রা.) বললেন, সুসংবাদ গ্রহণ করুন। না না। আল্লাহ আপনাকে কখনো অসম্মানিত করবেন না। আপনি আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করেন। সত্য কথা বলেন...।

عنِ ابْنِ عَبَّاسِ رَضِي اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : لَـمَّا نَزَلَتْ : وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ ﴾ [ الشعراء : ২১৪ خَرَجَ رَسُولُ اللهِ حَتَّى صَعِد الصَّفَا، فَهَتفَ : " يَا صَبَاحاهُ " فَقَالُوا : مَنْ هَذَا ؟ فَاجْتَمَعُوا إِلَيْهِ، فَقَالَ : " أَرَأَيْتُم إِنْ أَخْبَرتُكمْ أَنَّ خَيْلاً بِالوَادِي تُرِيدُ أَنْ تُغِيرَ عَلَيْكُمْ، أَكُنْتُمْ مُصَدِّقِيّ ؟ " قَالُوا : نَعَمْ مَا جَرَّبْنَا عَلَيْكَ إِلَّا صِدْقًا . قَالَ : " فَإِنِّي نَذِيرٌ لَكُمْ بَيْنَ يَدِي عَذَابٍ شَدِيدٍ " [ متفق عليه [

ইবনে আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যখন وأنذر عشيرتك الأقربين (তুমি তোমার নিকটজনদের ভীতি প্রদর্শন কর) নাযিল হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন এবং সাফা পর্বতে আরোহণ করে উচ্চ কণ্ঠে বললেন, ইয়া সাবাহাহ! লোকেরা বলল, কে ডাকছে? অতঃপর সকলেই তাঁর কাছে একত্রিত হল। তিনি বললেন, যদি আমি বলি, উপত্যকায় একটি সৈন্য দল তোমাদের উপর হামলা করতে উন্মুখ হয়ে আছে, তবে কি তোমরা আমাকে বিশ্বাস করবে? তারা বলল, নিশ্চয়ই। আমরাতো আপনাকে কেবল সত্যবাদী হিসেবেই পেয়েছি। তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করছি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সত্যবাদিতা ও আমানতদারি মুশরিকদেরকে রীতিমতো বিপদে ফেলে দিয়েছিল যে, তারা তাঁকে কি উপাধিতে খেতাব করবে - তারা একবার বলে জাদুকর, মিথ্যাবাদী। আবার বলে, কবি। একবার বলে, গণক আবার বলে, পাগল। আর তারা এই ক্ষেত্রে একজন অন্যজনকে ভৎসনা করত। কেননা তারা জানত যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসব অপবাদ থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র।

নযর ইবনে হারিস রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কষ্ট দেওয়ার ব্যাপারে খুবই নির্দয় ছিল। সে একবার কুরাইশদেরকে বলল, হে কোরাইশগণ! তোমাদেরকে এমন একটি বিষয় পেয়ে বসেছে যা পূর্বে কখনো ঘটেনি। মুহাম্মদ তোমাদের মধ্যে ছিলেন অল্প বয়সী বালক। বুদ্ধিমত্তায় তোমাদের সবার সন্তুষ্টির পাত্র। কথায় সত্যবাদী। তোমাদের মধ্যে সমধিক আমানতদার। অতঃপর যখন তোমরা তার অলকে সাদা চুল দেখতে পেলে, আর সে নিয়ে এল নতুন এক বার্তা, তখন তোমরা তাকে বললে যাদুকর। আল্লাহর কসম, সে যাদুকর নয়। তোমরা তাকে গণক বললে। না, আল্লাহর কসম, সে গণক নয়। তোমরা তাকে কবি বললে, পাগল বললে। এরপর সে বলল, হে কুরাইশগণ! তোমরা তোমাদের বিষয়টা খতিয়ে দেখ। আল্লাহর কসম! খুবই মহৎ এক বিষয় তোমাদের কাছে এসেছে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমানতদারী প্রসঙ্গে বলা যায় যে এ মহৎ গুণটিই খাদিজাকে আকৃষ্ট করেছে। রাসূলুল্লাহর স্ত্রী হওয়ার জন্যে তাকে আগ্রহান্বিত করেছে। কেননা সিরিয়ায় ব্যবসা-মৌসুমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদিজা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি তার গোলাম মায়সারার কাছ থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমানতদারী ও উন্নত চরিত্র সম্পর্কে যা জানতে পেরেছিলেন তা তাকে অভিভূত করেছিল।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমানতদারীর একটি প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত হচ্ছে, কুরাইশের মুশরিকরা- কাফির ও রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা সত্ত্বেও- তাদের মূল্যবান ধন-সম্পদ তাঁর কাছে গচ্ছিত রাখত। এ ব্যাপারে তারা নিরাপত্তাবোধ করত। আল্লাহ যখন তার রাসূলকে মদীনায় হিজরতের অনুমতি দিলেন তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী (রা) কে মক্কায় তাঁর জায়গায় রেখে গেলেন, যাতে তিনি আমানতগুলো হকদারদের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন।

সবচেয়ে বড় আমানত যা রাসূল বহন করেছেন ও সর্বোত্তম পদ্ধতিতে হকদারদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন তা হল ওহী ও রেসালতের আমানত যা আল্লাহ তাঁর কাঁধে অর্পণ করেছেন। তিনি এই আমানত মানুষের কাছে অনুপুঙ্খভাবে ও সর্বোত্তম পদ্ধতিতে পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি দলীল-প্রমাণ, বয়ান-বর্ণনা, যবান, তরবারী সবই ব্যবহার করেছেন শত্রুদের মুকাবিলায়। আল্লাহ তাআলা তাঁর জন্য বিজয় এনে দিয়েছেন। তাঁর দাওয়াত গ্রহণ করার জন্য মানুষের হৃদয় খুলে দিয়েছেন। তারা রাসূলের প্রতি ঈমান আনল এবং তাঁকে সত্য বলে জানল, তাঁকে সাহায্য করল। আর এভাবে তাওহীদের বাণী উঁচু হল। ইসলাম পৃথিবী জুড়ে প্রচার পেল। গ্রাম ও শহরের এমন বাড়ি বাকি রইল না যেখানে আল্লাহ এই দীনকে প্রবেশ করাননি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন