hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

২৮
ছাব্বিশতম আসর: সূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বীরত্ব
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সর্বাপেক্ষা বীরত্বের অধিকারী একজন সাহসী মানুষ। যার প্রমাণ, এক আল্লাহর ইবাদত এবং তার তাওহীদের ঝান্ডা নিয়ে তাবৎ কাফির সম্প্রদায়ের মোকাবেলায় তিনি একাই এগিয়ে গিয়েছেন। তারা সম্মিলিতভাবে তাঁর বিরোধিতা করেছে, এক অবস্থান থেকে যুদ্ধ করেছে, নির্যাতন নিপীড়নের সব পদ্ধতি তার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছে, হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে বার বার। তাদের এত ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও তাঁকে ভীত করতে পারেনি মোটেও। মুহূর্তের জন্যেও বিরত রাখতে পারেনি তাঁর দাওয়াত-কর্ম থেকে। তাদের নির্যাতন যত বেড়েছে তাঁর কর্মস্পৃহা তত বৃদ্ধি পেয়েছে। দাওয়াতি চাঞ্চল্য আরো গতিময় হয়েছে। তিনি সত্যকে আঁকড়ে ধরেছেন আরও দৃঢ়তার সাথে। তাদের লোভ প্রদর্শন ও চ্যালেঞ্জের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে ঘোষণা করেছেন :

আল্লাহর শপথ! তারা যদি আমার ডান হাতে সূর্য, আর বাঁ হাতে চন্দ্র এনে দিয়ে আমাকে এ দাওয়াত-কর্ম পরিত্যাগ করতে বলে, তবুও আমি তা ত্যাগ করব না। যতক্ষণ না, আল্লাহ তাআলা তার দীনকে জয়ী করেন, অথবা আমি ধ্বংস হয়ে যাই।

আনাস রা. বলেন :

كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَحْسَنَ النَّاسِ، وَكانَ أَجودَ النَّاسِ , وَكانَ أشْجَع النَّاسِ، ولقَدْ فَزِعَ أهلُ المدِينةِ ذَاتَ ليلةٍ , فَانْطلَق ناسٌ قِبَل الصوْتِ , فتلقَّاهُمْ رَسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَاجِعًا، وَقَدْ سَبقهُمْ إِلَى الصَّوْتِ , وَهُو عَلى فَرَسٍ لأبِي طَلْحةَ عُرْيٍ، فِي عُنقِه السيفُ، وَهُوَ يقُول : " لَمْ تُرَاعُوا، لَـمْ تُراعُوا " [ مُتَّفقٌ عليه ] أَيْ لَا تَخَافُوا , لَا تَخَافُوا .

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন একজন সুন্দরতম মানুষ, বড় দানশীল, ও সর্বাপেক্ষা সাহসী। এক রাতের ঘটনা, হটাৎ চিৎকার শুনে, মদীনার জনগণ আতঙ্কিত হয়ে আওয়াজের উৎসের দিকে ছুটে চলল। গিয়ে দেখতে পেল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের আগেই সেখানে পৌঁছে ফিরে আসছেন। তিনি আবু তাল্‌হার ঘোড়ায় সওয়ার ছিলেন, তার কাঁধে ছিল তরবারি। আর মুখে বলছিলেন : ভয় পেয়ো না, ভয় পেয়ো না। {বোখারি ও মুসলিম}

আল্লামা নববী রহ. বলেন, এখানে অনেকগুলো শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে, যেমন:

রাসূলের বীরত্ব, তিনি সকলের আগে এবং সব চেয়ে দ্রুত শত্রু অভিমুখে ছুটে গিয়েছেন। অবস্থার সত্যতা যাচাই করেছেন এবং অনেকের পৌঁছার পূর্বেই তিনি ফিরে এসেছেন।

জাবের রা. বলেন :

كُنَّا يومَ الخَنْدَقِ نَحْفِرُ، إذْ عَرضَتْ كُديةٌ شَدِيدةٌ . فَجاءُوا بالنبيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا : هَذِهِ كُديَةٌ عَرضَتْ فِي الخَنْدقِ . فَقالَ صلى الله عليه وسلم : " أَنَا نَازِلٌ " ثُمَّ قَام، وبطنُه معصوبٌ بحجَرٍ، ولبثْنَا ثلاثةَ أَيَّامٍ لا نذُوقُ ذَوَاقًا , فأخذَ النبيُّ صلى الله عليه وسلم المعْوَلَ، فَضربَ في الكُديةِ، فَعاد كثيبًا أَهْيَل أَوْ أَهْيمَ " [ رواه البخاريُّ [

আমরা খন্দকের দিন পরিখা খনন করছিলাম। হটাৎ একটি বিশাল শক্ত পাথর বের হয়ে এল। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে এ বিষয়ে অবহিত করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি আসছি। এরপর তিনি দাঁড়ালেন। তাঁর পেটে ছিল পাথর বাঁধা। আমরা সকলেই তিন দিন যাবৎ কোন খাবার গ্রহণ করিনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুড়াল হাতে নিয়ে খুব জোরে আঘাত করলেন আর পাথরটি বালু কণার ন্যায় টুকরো টুকরো হয়ে গেল। {সহিহ বোখারি}

এ ঘটনা থেকে রাসূলের শক্তি ও সামর্থ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠিন থেকে কঠিনতম মুহূর্তেও স্বীয় বীরত্ব ও সাহসের প্রমাণ দিয়েছেন। যত-ই কঠিন মুহূর্ত হোক-না-কেন তিনি পিছপা হতেন না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মর্যাদা, সম্মান, দায়িত্ব ও কর্তব্য বোধের গুরুত্ব কেবল সেই ব্যক্তিই উপলব্ধি করতে পারে, যাকে আল্লাহ তাআলা এ গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য নিয়োজিত করেছেন।

এ জন্যই আমরা দেখতে পাই, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন। কোন ব্যক্তি একবারের জন্যও প্রমাণ করতে পারেনি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় অবস্থান হতে এক আঙুল কিংবা এক হাত পরিমাণও পিছু হটার চিন্তা করেছিলেন। কি কারণে সাহাবায়ে কেরাম চক্ষু ও অন্তর ভরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মহব্বত করতেন? কি জন্যে ছোট-বড় সকলেই রাসূলের ইশারাতে প্রতিযোগিতা করে ছুটে আসতেন? শুধু কি এ জন্যই যে, তিনি একজন রাসূল? না, বরং তারা রাসূলের বীরত্ব ও সাহসের কাছে নিজেদেরকে দেখতে পেতেন শূন্য-সদৃশ। অথচ তাদের মধ্যেও এমন বীর ও দুঃসাহসী পুরুষ বিদ্যমান ছিল যাদের মাধ্যমে মানুষ বীরত্বের উদাহরণ পেশ করত।

এ প্রসঙ্গে আলী রা. বলেন :

كُنَّا إِذَا احمرَّ البأْسُ، ولَقِيَ القومُ القومَ , اتَّقيْنا برسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَما يَكُونُ مِنَّا أحدٌ أَدْنَى إِلَى العدوِّ مِنْهُ . [ رَوَاهُ أحْمدُ وَالنِّسائيُّ [.

যখন যুদ্ধ কঠিন আকার ধারণ করত, আমরা নিজেদেরকে রাসূলের দ্বারা হেফাযত করতাম। (অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হতেন) তিনিই আমাদের চেয়ে শত্রুর বেশি নিকটবর্তী থাকতেন।

আলী রা. আরো বলেছেন :

لَقَدْ رأيتُنَا يَوْمَ بَدْرٍ , وَنَحْنُ نَلُوذُ بالنَّبِيّ صلى الله عليه وسلم ِ ، وَهُوَ أَقْرَبُنَا إِلى العَدُوِّ، وَكَانَ مِنْ أَشَدِّ النَّاسِ بَأْسًا " [ رَواه أحمدُ [.

বদরের যুদ্ধে দেখেছি, আমরা রাসূলের দ্বারা নিজেদেরকে রক্ষা করছি। শত্রু পক্ষের অতি নিকটে তিনিই ছিলেন। যুদ্ধে তিনি সকলের চেয়ে বেশি বীরত্বের প্রমাণ দিতেন।

উহুদ যুদ্ধে অভিশপ্ত উবাই বিন খালফ ঘোড়ার পিঠে চড়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যার উদ্দেশে নিকটবর্তী হতে লাগল। সে বলছিল, মুহাম্মদ! তুমি যদি বেঁচে যাও, তাহলে আমার রক্ষা নেই। সাহাবারা বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের কেউ কি তার উপর দয়া দেখাতে পারে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে আসতে দাও। সে নিকটবর্তী হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হারেস বিন সাম্মা থেকে একটি বর্শা নিয়ে ঝাঁকুনি দিলেন, সাথে সাথেই সাহাবায়ে কেরাম তার নিকট হতে বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার গর্দানে একটি খোঁচা মারলেন, আর তাতেই সে ঘোড়া হতে কয়েকটি পলটি খেয়ে লুটিয়ে পড়ল এবং কুরাইশদের নিকট ফিরে গিয়ে বলতে লাগল : মুহাম্মদ আমাকে হত্যা করেছে। তারা বলল : তোমার কিছু হয়নি। সে বলল : তোমরা বল কি! এ যন্ত্রণা যদি সমগ্র মানুষের মাঝে বন্টন করে দেয়া হয়, তবে সকলেই মারা যাবে। তোমরা কি ভুলে গেছ! সে কি আমাকে বলেনি : আমি তোমাকে হত্যা করব। আল্লাহর শপথ করে বলছি, সে যদি আমার প্রতি থুতুও নিক্ষেপ করত, আমি মরে যেতাম। অতঃপর ফেরার পথে সে মারা গেল।

হুনাইনের যুদ্ধে মুসলমানগণ যখন দৌড়ে পালাচ্ছিল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় জায়গাতে স্থির দাড়িয়ে ছিলেন। আর বলছিলেন,

আমি সত্যিকারার্থে নবী, মিথ্যুক নই : আমি আব্দুল মুত্তালিবের সন্তান। (ভীরু নই)।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন