hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রিয় নবীর সান্নিধ্যে চল্লিশ আসর

লেখকঃ আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী

১৪
বারতম আসর: জন্ম, দুগ্ধ পান এবং আল্লাহ তাআলা কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণ
নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রবিউল আউয়াল মাসে সোমবার দিন জন্ম গ্রহণ করেন। রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার জন্ম গ্রহণ করেছেন এ বিষয়ে ঐতিহাসিকগণ মোটামুটি একমত হলেও কোন তারিখ, এ বিষয়ে তাদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলেছেন : দুই তারিখ। কেউ বলেছেন, আট তারিখ। আবার কারো কারো মতে, দশ তারিখ। আবার অনেকে বলেছেন, বারোই রবিউল আউয়াল।

আল্লামা ইবনে কাছীর রহ. বলেন, বিশুদ্ধ মত হচ্ছে তিনি হাতির ঘটনা সংঘটিত হওয়ার বছর জন্ম গ্রহণ করেছেন। ইমাম বুখারীর উস্তাদ ইবরাহীম ইবনুল মুনযির ও খলীফা বিন খাইয়াত প্রমুখ এ ব্যাপারে ওলামাদের ইজমা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।

বিজ্ঞ ঐতিহাসিকবৃন্দ বলেছেন,

নবী মাতা আমেনা তাঁকে গর্ভে ধারণ প্রসঙ্গে বলেন, তার কারণে আমি কোন ভার অনুভব করিনি। যখন ভূমিষ্ঠ হল তার সাথে একটি নূর (আলো বিশেষ) বের হয়ে আসল আর প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্য সব আলোকিত হয়ে গেল।

ইবনে আসাকির ও আবু নুআইম সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণনা করছেন, তিনি বলেন, নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্ম গ্রহণ করে ধরা পৃষ্ঠে আগমন করার পর দাদা আব্দুল মোত্তালিব একটি মেষ জবাই করে আকীকা দিলেন এবং তাঁর নাম রাখলেন, মুহাম্মাদ। তাকে জিজ্ঞেস করা হল, হে আবুল হারেছ! বাপ-দাদাদের রীতি ভঙ্গ করে তার নাম মুহাম্মাদ রাখার হেতু কি ? কি কারণে এ বিষয়ে আপনি উৎসাহী হলেন ? উত্তরে তিনি বললেন, আমার আশা, আল্লাহ যেন আকাশে তার প্রশংসা করেন এবং পৃথিবীতে মানুষের নিকটও যেন সে সমধিক প্রশংসার পাত্র হয়, সকলেই যেন তার প্রশংসা করে।

পিতার ইন্তেকাল

মাতৃ গর্ভে থাকাবস্থায়ই তাঁর পিতা পৃথিবী ত্যাগ করেন। অবশ্য কেউ কেউ বলেছেন, তাঁর আগমনের কয়েক মাস পরে ইন্তেকাল করেছেন। প্রথম মতটিই প্রসিদ্ধ।

দুগ্ধ পান

জন্মের পর পর আবু লাহাবের বাঁদি ছুয়াইবীয়াহ কিছু দিন তাঁকে দুগ্ধ পান করান। কিন্তু শিশু মুহাম্মাদকে উপলক্ষ্য করে আবু লাহাব খুশিতে নিজ বাঁদি ছুয়াইবীয়াহকে মুক্ত করে দেয়। অতঃপর বনী সাআদ গোত্র থেকে ধাত্রীর ব্যবস্থা করা হয়। হালীমা সাদিয়া নাম্নী জনৈকা পুণ্যবতী নারী তাঁকে দুধ পান করানোর সৌভাগ্য অর্জন করেন। বনী সাআদ গোত্রে হালীমা সাদিয়ার নিকট তিনি প্রায় পাঁচ বছর অবস্থান করেন। সেখানেই তাঁর বক্ষ বিদীর্ণ-কর্ম সংঘটিত হয়। ফেরেশতারা তাঁর পবিত্র অন্ত:করণ বের করে ধৌত করেন। এবং তাঁর প্রবৃত্তিতে শয়তানের নির্ধারিত হিস্‌সা বের করে নিয়ে আসেন। অতঃপর আল্লাহ তাআলা তাঁকে বিশেষ নূর, প্রজ্ঞা, অনুকম্পা ও রহমত দ্বারা পূর্ণ করে দেন। এরপর ফেরেশতারা তাঁকে স্বস্থানে রেখে আসেন।

এ ঘটনা সংঘটিত হবার পর হালীমা তাঁর ব্যাপারে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাই তাঁকে মা আমেনার কাছে ফেরত দিয়ে আসেন এবং ঘটনার পূর্ণ বিবরণ তাকে শুনান। ঘটনা শুনে মা আমেনা শঙ্কিত হননি।

আল্লামা সুহাইলী বলেন,

এ পবিত্রকরণ কর্মটি মোট দুবার সংঘটিত হয়েছে।

প্রথমবার: শিশু বয়সে, যাতে তাঁর অন্তরাত্মা শয়তানের দোষ থেকে পবিত্র হয়ে যায়।

দ্বিতীয়বার: যখন আল্লাহ তাআলা তাঁকে আকাশস্থ ফেরেশতাদের নিয়ে সালাত আদায় করার উদ্দেশ্যে নিজ পবিত্র সান্নিধ্যে উঠিয়ে নেয়ার ইচ্ছা করলেন। এ সময় তাঁকে অন্দর ও বহির উভয় দিক থেকে পবিত্র করা হয় এবং তাঁর হৃদয় ঈমান ও হিকমত দ্বারা পরিপূর্ণ করে দেয়া হয়।

মাতৃ বিয়োগ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছয় বছর বয়সে উপনীত হলে মাতা আমেনা তাঁকে নিয়ে মদীনা মুনওয়ারায় বনী দাউই বিন নাজ্জারে তাঁর নানা-মামাদের যিয়ারতে গেলেন। তাদের সাথে উম্মে আইমানও ছিলেন। সেখানে তিনি একমাস অবস্থান করেন। অতঃপর মক্কায় ফেরার পথে আবওয়া নামক স্থানে মৃত্যুমুখে পতিত হন।

মক্কা বিজয় অভিযানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবওয়া অতিক্রম করার সময় আল্লাহর তাআলার নিকট তাঁর মাতার কবর জিয়ারতের অনুমতি প্রার্থনা করলে আল্লাহ অনুমতি প্রদান করেন। তখন রাসূলুল্লাহ নিজে খুব কেঁদেছেন, সাথে থাকা সাথীদেরকেও কাঁদিয়েছেন। এবং ইরশাদ করেছেন:

زوروا القبور , فإنها تذكر الموت ) رواه مسلم (

তোমরা কবর যিয়ারত কর কারণ এটি মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

মাতৃ বিয়োগের পর বাবা থেকে উত্তরাধিকার-সূত্রে-প্রাপ্ত বাঁদি উম্মে আইমান তাঁকে কোলে তুলে নেন। আর দাদা আব্দুল মুত্তালিব লালন-পালনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। বয়স আট বছর হলে দাদাও পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। তবে চাচা আবু তালিবকে তাঁর ব্যাপারে অসিয়ত করে যান। আবু তালিব দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং পরিপূর্ণ দায়িত্বশীলতার সাথে তাঁর রক্ষণাবেক্ষণ করে যান। আল্লাহ তাআলা তাঁকে নবী হিসেবে প্রেরণ করার পর যথাসম্ভব সকল প্রকার সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। জীবনবাজী রেখে তিনি রাসূলকে সহায়তা দিয়েছেন। তবে এতকিছুর পরও নিজে শিরকের বেড়াজাল ছিন্ন করে বের হয়ে আসতে পারেননি বরং শিরকের উপরই মৃত্যু বরণ করেছেন। হ্যাঁ... ইসলাম ও মুসলমানদের সহায়তা এবং রাসূলের প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকার কারণে আল্লাহ তাআলা তার শাস্তি বেশ শিথিল করবেন এবং জাহান্নামের সব চেয়ে সহজ শাস্তি দিবেন। এ প্রসঙ্গে বহু সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

জাহেলী পঙ্কিলতা থেকে আল্লাহ তাআলার সংরক্ষণ

আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীকে সেই শিশুকাল থেকেই বিশেষ যত্ন সহকারে তত্ত্বাবধান ও হেফাযত করেছেন। এবং জাহেলী যুগের নানাবিধ পঙ্কিলতা থেকে পবিত্র রেখেছেন। তাঁর মধ্যে প্রতিমা ইত্যাদির প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। ফলে কখনই তিনি মূর্তি পূজা করেননি। প্রতিমার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেননি। কোন প্রকার শরাব পান করেননি। কুরাইশ যুবকদের সাথে মিশে কোন অন্যায় ও পাপ-কর্মে জড়িত হননি। বরং সর্ব প্রকার দোষ ও গুনাহর কাজ থেকে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ মুক্ত ও পবিত্র। যাবতীয় সুন্দর গুণাবলী ও অভিজাত কর্মাবলী তাঁর প্রকৃতিতে প্রথিত করে দেয়া হয়েছিল। বরং তাঁর এ উন্নত আখলাক, সততা, চরিত্র মাধুরী ও মনোহারী ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে লোকেরা তাঁর নামই দিয়েছিল আল-আমীন। আর এ নামেই তিনি ছিলেন সকলের নিকট সমধিক পরিচিত। তাঁর বিচার-ফয়সালা সকলেই বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নিত, তাঁর মতামত সমর্থন করে নিজেদের দাবি-দাওয়া থেকে সরে আসত। হাজরে আসওয়াদ স্বস্থানে পূন:স্থাপনকে কেন্দ্র করে যে বিশৃঙ্খলা দানা বেধে উঠেছিল সে সময় তাঁর যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বিষয়টিকে সুরাহা করে দেয়। কাবা শরীফ পুনঃনির্মাণকালে হাজরে আসওয়াদ স্বস্থানে কে রাখবে এ নিয়ে তাদের মাঝে মতবিরোধ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সংঘাতের আশঙ্কা সৃষ্টি হয় এবং অশান্তির আগুন জ্বলে উঠার উপক্রম হয় তখন সকলে তাঁকে এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্যে বিচারক নির্বাচন করে। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন সকলে মেনে নেবে বলে একমত হয়। উক্ত সমস্যার সমাধানকল্পে তিনি একটি বড় চাদর বিছিয়ে হাজরে আসওয়াদ তাতে রাখার নির্দেশ দিলেন এবং প্রত্যেক গোত্রের লোকদের চাদরের চারিদিক থেকে ধরতে বললেন। এরপর পাথরটি নিজ হাতে নির্ধারিত জায়গায় স্থাপন করে দিলেন। তাঁর এ অভিনব সিদ্ধান্ত দেখে সকলে বিস্ময়াভিভূত হল এবং সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নিল। এবং একটি বিরাট সঙ্ঘর্ষ থেকে সকলে নিষ্কৃতি পেল।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন