hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সংক্ষেপিত ইযহারুল হক্ক

লেখকঃ ড. মুহাম্মাদ আহমদ আব্দুল কাদির মালকাবী

১৬
১. ২. ৫. পবিত্র বাইবেল বিষয়ে মুসলিম বিশ্বাস
ক. মূল তাওরাত ও ইঞ্জিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পূর্বেই হারিয়ে গিয়েছে।

আমরা মুসলিমগণ বিশ্বাস করি যে, মূসা আলাইহিস সালাম-এর উপর অবতীর্ণ মূল তাওরাত এবং ঈসা আলাইহিস সালাম-এর উপর অবতীর্ণ মূল ইঞ্জিল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমনের পূর্বেই হারিয়ে গিয়েছে। বর্তমানে বাইবেলের পুরাতন ও নতুন নিয়মের নামে প্রচলিত বই দুইটি মূলত কোনো আল্লাহপ্রদত্ত গ্রন্থ নয়। বরং এই বই দুইটি হচ্ছে জীবনী ও ইতিহাসমূলক দুইটি সংকলন, যাতে সত্য ও মিথ্য সকল প্রকার কথা ও কাহিনী সংকলন করা হয়েছে।

আমরা কখনোই বলি না যে, আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে তাওরাত ও ইঞ্জিল সঠিকরূপে বিদ্যমান ছিল এবং তারপরে তা বিকৃত করা হয়েছে। আমরা কখনোই তা বলি না। কোনো একজন মুসলিমও এরূপ কথা বলেন না বা বিশ্বাস করেন না।

খ. পৌল ভাক্ত বা ভন্ড ভাববাদী, তার বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়

পৌলের বিষয়ে আমাদের বিশ্বাস যে, খৃস্টান ধর্মের প্রথম প্রজন্মে খৃস্টধর্মকে বিকৃত ও নষ্ট করতে যে সকল মিথ্যাবাদী ভাক্ত ভাববাদীর আবির্ভাব ঘটেছিল, পৌল ছিলেন তাদের অন্যতম। কাজেই নতুন নিয়মে সংকলিত পৌলের পত্রাবলি ও বক্তব্যসমূহ যদি প্রকৃতপক্ষে তার বলে প্রমাণিত হয় তাহলেও আমাদের নিকট সেগুলির কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।

গ. প্রেরিতগণ সৎ ও ধার্মিক ছিলেন, ভাববাদী ছিলেন না

যীশুখৃস্টের প্রেরিত শিষ্যগণের সম্পর্কে আমাদের বিশ্বাস হলো যে, তারা যীশুর ঊর্ধ্বারোহণের পরে সততা ও ধার্মিকতার মধ্যে জীবন কাটিয়েছেন। তবে আমরা তাদেরকে ভাববাদী বা নবী বলে বিশ্বাস করি না। আমাদের দৃষ্টিতে তাদের বক্তব্য ও মতামত অন্যান্য সাধারণ সৎ ও ধার্মিক ধর্মবিদ পণ্ডিতের মতামতের মতই, ভুলের ঊর্ধ্বে নয়।

যীশু ও তার শিষ্যদের যুগ থেকে শুরু করে দ্বিতীয় শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত নতুন নিয়মের কোনো পুস্তক বা পত্রের কোনো অবিচ্ছিন্ন সূত্র পরম্পরা পাওয়া যায় না। মূল ইঞ্জিলও হারিয়ে গিয়েছে। একারণে নতুন নিয়মের মধ্যে বিদ্যমান যীশুশিষ্য মথি ও যোহনের সুসমাচারদ্বয় এবং অন্যান্য প্রেরিতের পত্রগুলির বক্তব্য আসলেই তাদের কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত জানার কোনো উপায় নেই। সর্বোপরি প্রচলিত নতুন নিয়মের বিভিন্ন বক্তব্য থেকে নিশ্চিতরূপে প্রমাণিত যে, প্রেরিতগণ, যীশুর শিষ্যগণ বা প্রথম যুগের খৃস্টানগণ যীশুর কথার মর্মও সঠিকভাবে বুঝতে পারতেন না। অপরদিকে মার্ক ও লূক যীশুর শিষ্য ছিলেন না। তারা ইলহাম বা ঐশ্বরিক প্রেরণাপ্রাপ্ত ছিলেন বলে কোনোভাবেই প্রমাণিত নয়। উপরন্তু তারা জীবনে একটিবারও যীশুকে দেখার সৌভাগ্য লাভ করেন নি।

ঘ. মুসলিম বিশ্বাসে তাওরাত ও ইঞ্জিল

আমাদের বিশ্বাস অনুসারে মূসা আলাইহিস সালাম-কে প্রত্যাদেশ বা ওহীর (Revelation) মাধ্যমে যা প্রদান করা হয়েছে তাই তাওরাত। আর ঈসা আলাইহিস সালাম প্রত্যাদেশের মাধ্যমে যা প্রদান করা হয়েছে তাই হলো ইঞ্জিল। এর মধ্যে যা ছিল সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী বা প্রত্যাদেশ। এগুলির মধ্যে সংযোজন, বিয়োজন, পরিবর্ত বা সম্পাদনের মাধ্যমে সামান্যতম পরিবর্তন বা বিকৃতিও বৈধ নয়।

সূলা বাকারা-৮৭, সূরা হূদ-১১০, সূরা মুমিনূন-৪৯, সূরা ফুরকান-৩৫, সূরা কাসাস-৪৩, সূরা সাজদা-২৩, সূরা ফুসসিলাত-৪৫ আয়াতে আল্লাহ বলেন: ‘‘এবং আমি মূসাকে গ্রন্থ প্রদান করেছি।’’ সূরা মায়িদার-৪৬ ও সূরা হাদীদ-২৭ আয়াতে ঈসা আ. (যীশু) সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন: ‘‘এবং আমি তাকে ইঞ্জিল প্রদান করেছি’’। সূরা মরিয়ম-৩০ আয়াতে ঈসা আলাইহিস সালাম-এর জবানীতে বলা হয়েছে: ‘‘আমাকে তিনি গ্রন্থ প্রদান করেছেন।’’ সূরা বাকারা-২৩৬ এবং সূরা আল-এমরান-৮৪ আয়াতে বলা হয়েছে: ‘‘এবং মূসা ও ঈসাকে যা প্রদান করা হয়েছে।’’, অর্থাৎ তাওরাত ও ইঞ্জিল।

কাজেই ‘‘পবিত্র বাইবেল’’ নামে প্রচারিত পুস্তক সংকলনের মধ্যে নতুন ও পুরাতন নিয়মের অন্তর্ভুক্ত এ সকল ঐতিহাসিক পুস্তকাদি এবং পত্রাবলি কুরআনে উল্লিখিত তাওরাত ও ইঞ্জিল নয়। কাজেই এগুলি বিশ্বাস বা মান্য করা জরুরী নয়। এ সকল পুস্তক, পত্রাবলি এবং নতুন ও পুরাতন নিয়মের সকল পুস্তকের ক্ষেত্রে মুসলিম বিশ্বাস নিম্নরূপ:

এ সকল পুস্তকের যে সকল কথা ও কাহিনীকে কুরআন সত্য বলেছে সেগুলি সন্দেহাতীতভাবে গ্রহণযোগ্য। আমরা কোনো দ্বিধা ও আপত্তি ছাড়া সেগুলিকে সত্য বলে গ্রহণ করি। যেগুলিকে কুরআন মিথ্যা বলে ঘোষণা করেছে সেগুলি নিঃসন্দেহে মিথ্যা ও প্রত্যাখ্যাত। আমরা কোনো দ্বিধা ছাড়াই সেগুলিকে মিথ্যা বলে ঘোষণা করি। আর যেগুলি বিষয়ে কুরআন সত্য ও মিথ্যা কোনো প্রকারের কিছু না বলে চুপ থেকেছে, সেগুলির বিষয়ে আমরাও চুপ থাকি। আমরা সেগুলিকে সত্য বলেও গ্রহণ করি না, আবার সরাসরি মিথ্যাও বলি না।

মহান আল্লাহ সূরা মায়েদার ৪৮ আয়াতে বলেন: ‘‘এবং আপনার উপর সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছি, তার পূর্বে অবতীর্ণ গ্রন্থসমূহের সমর্থক ও সংরক্ষক-নিয়ন্ত্রক রূপে।’’

আল-কুরআনুল কারীমই পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহের নিয়ন্ত্রক, সংরক্ষক বা বিশুদ্ধতা ও অশুদ্ধতার মাপকাঠি। কুরআন পূর্ববর্তী গ্রন্থগুলির মধ্যে যা কিছু সত্য রয়েছে তা প্রকাশ ও সমর্থন করে এবং এগুলির মধ্যে বিদ্যমান মিথ্যা প্রকাশ করে দেয় এবং তার প্রতিবাদ করে।

যে সকল মুসলিম আলিম প্রচলিত তাওরাত ও ইঞ্জিলের বিরুদ্ধে গ্রন্থ রচনা করেছেন এবং এগুলির মধ্যে বিদ্যমান মিথ্যা ও বিকৃতি প্রকাশ করেছেন, তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে মূসা আলাইহিস সালাম ও ঈসা আলাইহিস সালাম-এর উপর অবতীর্ণ তাওরাত ও ইঞ্জিলের বিরুদ্ধে কলম ধরেন নি বা সেগুলিকে উদ্দেশ্য করে গ্রন্থ রচনা করেন নি। বরং তারা ‘‘পবিত্র বাইবেলের’’ পুরাতন ও নতুন নিয়মের মধ্যে বিদ্যমান এ সকল ঐতিহাসিক ও জীবনীমূলক পুস্তকগুলির বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন, যেগুলি কয়েক শতাব্দী ধরে লেখা ও সংকলন করা হয়েছে এবং এরপর দাবি করা হয়েছে যে, এগুলি ওহী বা ইলহামের মাধ্যমে বা আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত পুস্তক। এগুলির বিষয়েই আল্লাহ সূরা বাকারার ৭৮৯ আয়াতে/ শ্লোকে বলেছেন: ‘‘দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা নিজ হাতে গ্রন্থ রচনা করে এবং এরপর বলে: এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে; যেন তারা এগুলির দ্বারা সামান্য বিনিময়মূল্য লাভ করতে পারে। কাজেই যা তাদের হাতগুলি লিখেছে তার জন্য তাদের দুর্ভোগ এবং যা তারা উপার্জন করে তার জন্যও তাদের দুর্ভোগ।”

মুসলিম উম্মাহর সকলেই একমত যে, আল্লাহর নিকট থেকে ওহীর মাধ্যমে গ্রহণ করে মূসা আলাইহিস সালাম যা মুখে উচ্চারণ করেছিলেন তাই প্রকৃত তাওরাহ। আর আল্লাহর নিকট থেকে ওহীর মাধ্যমে গ্রহণ করে ঈসা আলাইহিস সালাম যা মুখে উচ্চারণ করেছিলেন তাই প্রকৃত ইঞ্জিল। আর ‘‘পবিত্র বাইবেল’’-এর পুরাতন ও নতুন নিয়ম বা ‘‘তাওরাত শরীফ’’, ‘‘ইঞ্জিল শরীফ’’ বা ‘‘যাবূর শরীফ’’ নামে প্রচলিত পুস্তকগুলি কখনোই সেই তাওরাত, ইঞ্জিল বা যাবূর নয়।

ইয়াহূদী-খৃস্টানগণের নিকট সংরক্ষিত তাওরাতের মূল তিনটি সংস্করণ রয়েছে বা তিন প্রকারের ‘‘তাওরাত’’ রয়েছে। আর ‘‘ইঞ্জিল’’ বা সুসমাচার রয়েছে চারটি। এগুলির মধ্যে রয়েছে বৈপরীত্য ও সংঘাত। অথচ মূসা আলাইহিস সালাম-এর উপর একটিই তাওরাত নাযিল হয়েছিল এবং ঈসা আলাইহিস সালাম একটিই ইঞ্জিল পেয়েছিলেন।

কুরআনে উল্লিখিত মূসা আলাইহিস সালাম ও ঈসা আলাইহিস সালাম-এর উপর অবতীর্ণ মূল তাওরাত ও ইঞ্জিল যদি কেউ অস্বীকার করেন তবে তার ঈমান নষ্ট হবে। আর ‘‘পবিত্র বাইবেল’’ নামে বা তাওরাত বা ইঞ্জিল নামে বর্তমানে প্রচলিত, আল্লাহর বাণী নাম দিয়ে বা নবী-রাসূলগণের লেখা বলে প্রচারিত জাল ও মিথ্যা এ সকল মিথ্যা গল্প, কাহিনী ও বিবরণ অস্বীকার করলে ঈমান নষ্ট হওয়া তো দূরের কথা, বরং তাতে ঈমানী দায়িত্ব পালিত হবে। কারণ মহান আল্লাহর মর্যাদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং নবী-রাসূলগণের পবিত্রতা ও নিষ্পাপত্বের সাথে সাংঘর্ষিক এ সকল মিথ্যা ও জাল গল্প, কাহিনী ও বিবরণগুলির মিথ্যাচার ও জালিয়াতি প্রকাশ করা মুমিনের ঈমানী দায়িত্ব।

তাওরাতের প্রচলিত তিনটি সংস্করণ বা ভার্সনের মধ্যে রয়েছে পারস্পরিক বৈপরীত্য। এগুলিতে রয়েছে অনেক ভুল ও পরস্পর বিরোধী বক্তব্য। এতে মূসা আলাইহিস সালাম-এর মৃত্যু এবং মাওআব অঞ্চলে তার কবর দেওয়ার বিবরণ। আমরা নিশ্চিত যে, এগুলি কখনোই মূসা আলাইহিস সালাম-এর উপর অবতীর্ণ বিশুদ্ধ তাওরাত নয়।

প্রচলিত চারটি ইঞ্জিল বা সুসমাচারের মধ্যেও রয়েছে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য। এগুলির মধ্যে অনেক ভুল-ভ্রান্তি, বৈপরীত্য ও পরস্পর সাংঘর্ষিক বক্তব্য রয়েছে। এতে যীশুর ক্রুশারোহণ (খৃস্টানগণের বিশ্বাস অনুসারে), ক্রুশে মৃত্যু, তার কবরস্থ করণ ইত্যাদি বিবরণ রয়েছে। আমরা সুনিশ্চিত যে, এগুলি কখনোই ঈসা আলাইহিস সালাম-এর উপর অবতীর্ণ ইঞ্জিল নয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন