hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সংক্ষেপিত ইযহারুল হক্ক

লেখকঃ ড. মুহাম্মাদ আহমদ আব্দুল কাদির মালকাবী

৪৯
৩. ১. ১. ৩. ভবিষ্যতের সংবাদ
তৃতীয় যে বিষয়টি প্রমাণ করে যে, কুরআন আল্লাহর বাণী তা হলো কুরআনের ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ। কুরআনের মধ্যে অনেক আগাম খবর দেওয়া হয়েছে, যেগুলি পরবর্তীকালে ঠিক সংবাদ অনুযায়ীই সংঘটিত হয়েছে। এ সকল আগাম খবরের মধ্যে রয়েছে:

(১) মহান আল্লাহ বলেছেন: ‘‘আল্লাহর ইচ্ছায় তোমরা অবশ্যই মাস্জিদুল হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে, কেউ কেউ মস্তক মুন্ডিত করবে এবং কেউ কেউ কেশ কর্তন করবে। তোমাদের কোনো ভয় থাকবে না।’’ [সূরা: ৪৮ ফাত্হ, ২৭ আয়াত। হুদাইবিয়ার সন্ধির সময়ে এই ভবিষ্যদ্বাণী ঘোষণা করা হয় পরে তা বাস্তবায়িত হয়।]

(২) মহান আল্লাহ বলেছেন: ‘‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি তাদেরকে পৃথিবীতে স্থলাভিষিক্ত-ক্ষমতাধর করবেন, যেভাবে তিনি ক্ষমতা দিয়েছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে, এবং অব্যশই তিনি তাদের জন্য সুদৃঢ়-সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দীনকে, যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে অবশ্য তাদেরকে নিরাপত্তা দান করবেন। তারা আমার ইবাদত করবে, আমার কোনো শরীক করবে না...’’। [সূরা : ২৪ নূর, ৫৫ আয়াত।]

এখানে আল্লাহ ওয়াদা করলেন মুমিনদেরকে যে, তাদেরকে পৃথিবীতে ক্ষমতাধর করবেন, খলীফা বা শাসক তাদের মধ্য থেকেই হবেন, তাদের মনোনীত দীন সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন, তাদের ভয়-ভীতির অবস্থা পরিবর্তন করে নিরাপত্তা প্রদান করবেন। অল্প সময়ের মধ্যেই আল্লাহ তাঁর ওয়াদা পুরণ করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশাতেই আল্লাহ তাঁদেরকে ক্ষমতা ও প্রতিষ্ঠা দান করেন। আবূ বাক্র সিদ্দীকের (রা) সময়ে এই বিজয়, ক্ষমতা, প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তার অবয়ব বৃদ্ধি পেতে থাকে। উমার ফারূকের (রা) সময়ে তা আরো প্রসারিত হয়। উসমান ইবনু আফ্ফানের (রা) সময়ে ক্ষমতা ও নিরাপত্তার চাদর আরো প্রসারিত হয়। এভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওফাতের মাত্র ২৫ বৎসরের মধ্যে মুসলিমগণ তৎকালীন পরিচিত বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র প্রায় পুরোটুকুই অধিকার করেন। এভাবে আল্লাহর মনোনীত দীন এ সকল দেশের সকল দীনের উপর বিজয় লাভ করে। ফলে মুসলিমগণ নিরাপদে ভয়-ভীতি থেকে মুক্ত থেকে আল্লাহর ইবাদত করতে পারেন।

(৩) মহান আল্লাহ বলেছেন: ‘‘অচিরেই তোমরা আহূত হবে এক প্রবল পরাক্রান্ত জাতির সাথে যুদ্ধ করতে; তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে যতক্ষণ না তারা আত্মসমর্পন করে’’। [সূরা: ৪৮ ফাত্হ, ১৬ আয়াত।]

এ ভবিষ্যদ্বাণীও যথাযথভাবে সংঘটিত হয়েছে। [৬ষ্ঠ হিজরী সনে উমরা পালনের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কায় রাওয়ানা দেন। মদীনার মুনাফিকগণ এতে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে এবং মনে করে যে, মক্কার কাফিরগণ মুসলিমদেরকে নির্মুল করবে। তাদের ধারণা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও মুসলিমগণ হুদাইবিয়ার সন্ধি শেষে নিরাপদে মদীনায় ফিরে আসেন। তখন মহান আল্লাহ সূরা ফাতহে নির্দেশ দেন, যে সকল মুনাফিক এ যাত্রা থেকে বিরত ছিল তারা পরবর্তী যুদ্ধেও অংশগ্রহণের অনুমতি পাবে না। তবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পরে প্রবল পরাক্রান্ত জাতির সাথে যুদ্ধের জন্য তাদেরকে আহবান করা হবে। খুলাফায়ে রাশেদীনের যুগে তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রোমান ও পারসিয়ান রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মাধ্যমে এ ভবিষ্যদ্বাণী আক্ষরিকভাবে কার্যকর হয়েছে।]

(৪) মহান আল্লাহ বলেন: ‘‘যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়। এবং তুমি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে দেখবে।’’ [সূরা : ১১০ নাস্র, ১-২ আয়াত।]

মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে এই ওয়াদাও যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। এবং মক্কা বিজয়ের পরে মানুষ দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করেছে।

(৫) আল্লাহ বলেন: ‘‘আল্লাহ আপনাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন।’’ [সূরা: ৫ মায়িদা, ৬৭ আয়াত।]

এ ভবিষ্যদ্বাণীও যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। অগণিত মানুষ তাঁকে হত্যা করার ও তাঁকে ধরার বুক থেমে মুছে দেওয়ার জন্য প্রাণপন চেষ্টা করা সত্ত্বেও কেউই তার ক্ষতি করতে সক্ষম হয় নি। তিনি আল্লাহর হেফাযতে থেকে পরিপূর্ণ বিজয় লাভ করে পৃথিবীর আবাসস্থল পরিত্যাগ করে পরকালীন মহান আবাসস্থলে গমন করেন।

(৬) আল্লাহ বলেন: ‘‘আলিফ-লাম-মীম। রোমকগণ (বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনী) পরাজিত হয়েছে। নিকটবর্তী অঞ্চলে (আরব দেশের সীমানায়)। কিন্তু তারা (রোমকগণ) তাদের এই পরাজয়ের পর শীঘ্রই বিজয়ী হবে। কয়েক (তিন থেকে দশ) বৎসরের মধ্যেই। পূর্বের ও পরের সিদ্ধান্ত আল্লাহরই। আর সে দিন মুমিনগণ আনন্দিত হবে। আল্লাহর সাহায্যে। তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। এ আল্লাহরই প্রতিশ্রুতি। আল্লাহ তাঁর প্রতিশ্রুতি ব্যতিক্রম করেন না, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। তারা পার্থিব জীবনের বাহ্য দিক সম্বন্ধে অবগত, আর পারলৌকিক জীবন সম্বন্ধে তারা অমনোযোগী।’’ [সূরা : ৩০, রূম, ১-৭ আয়াত।]

পারস্য সাম্রাজ্যের অধিবাসীরা ছিল অগ্নি উপাসক আর রোমান সাম্রাজ্যের অধিবাসীরা ছিল খৃস্টান। এই দুই সাম্রাজ্যের মধ্যে যুদ্ধ বিগ্রহ আগে থেকেই চলছিল। ৬১৮/৬১৯ খৃস্টাব্দের দিকে (নবুয়তের ৮/৯ম বৎসরের দিকে, হিজরতের ৩/৪ বৎসর পূর্বে) পারস্য-বাহিনীর নিকট রোমান বাহিনী শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। [পারস্য সম্রাটের সেনাদল মিসর অধিকার পূর্বক উত্তর আফ্রিকার বিখ্যাত কার্থেজ নগর আক্রমন করে। অপর একদল পারসিক সেনা এসিয়া মাইনর পুরোটাই রোমানদের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বিজয়ী বেশে বস্ফোরাস প্রণালীর তীরে উপনীত হয়। দুর্দান্ত স্লাভ জাতির আক্রমনে রাজধানী কন্সটান্টিনোপল আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ব্যতিব্যস্ত থাকার কারণে রোমক সম্রাট পারসিক সেনাদলের গতিরোধ করতে অক্ষম হন। মতিওর রহমান, ঐতিহাসিক অভিধান, পৃ. ৪১।] কিছু সময়ের মধ্যে এই পরাজয়ের সংবাদ মক্কাতেও পৌঁছে যায়। রোমকদের উপর পারস্যবাসীদের বিজয়ের সংবাদ মক্কায় পৌঁছালে মক্কার কাফিরগণ আনন্দিত হন। তারা বলে, তোমরা মুসলিমগণ এবং খৃস্টানগণ ঐশ্বরিক গ্রন্থ বা আসমানী কিতাবের অনুসারী বলে দাবি কর। আর পারস্যবাসীগণ আমাদেরই মত কোনো কিতাব মানে না। আমাদের ভ্রাতাগণ তোমাদের ভ্রাতাগণের উপর বিজয় লাভ করেছেন। এভাবে আমরাও শীঘ্রই তোমাদের উপরে বিজয় লাভ করব এবং তোমাদেরকে নিশ্চিহ্ন করতে সক্ষম হব। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়।

কুরআনের ভবিষ্যদ্বাণী যথাসময়ে বাস্তবায়িত হয়। পরাজয়ের প্রায় ৭ বৎসর পরে ৬২৭ খৃস্টাব্দে (৬ হি) রোমান সম্রাট হিরাক্লিয়াসের পারস্য সম্রাটের বাহিনীকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করে হৃত এলাকাসমূহ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন। [মতিওর রহমান, ঐতিহাসিক অভিধান, পৃ. ৪৭।]

(৭) মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘‘আমিই কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই তা সংরক্ষণ করব।’’ [সূরা : ১৫ হিজ্র, ৯ আয়াত।]

এভাবে আল্লাহ কুরআন নাযিলের শুরুতেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, তিনি এই কুরআনকে সকল প্রকার বিকৃতি, সংযোজন ও বিয়োজন থেকে সংরক্ষণ করবেন। আর বাস্তবেও তা প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্বের সকল পণ্ডিত তা জানেন। এ মহান নেয়ামতের জন্য প্রশংসা মহান আল্লাহর।

(৮) ইয়াহূদীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, ‘‘বল, (হে ইয়াহূদীগণ,) ‘যদি আল্লাহর নিকট পরকালের বাসস্থান অন্য লোক ব্যতীত বিশেষভাবে শুধু তোমাদের জন্যই হয় তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর- যদি তোমরা সত্যবাদী হও। কিন্তু তাদের কৃতকর্মের কারণে কখনোই (যতক্ষণ জীবন আছে) তারা তা কামনা করবে না। এবং আল্লাহ যালিমদের বিষয়ে অবাহিত।’’ [সূরা: ২ বাকারা, ৯৪-৯৫ আয়াত।]

এ বিষয়ে সূরা জুমুআয় আবারো বলেছেন: ‘‘বল, হে ইয়াহূদীগণ, তোমরা যদি বিশ্বাস করে থাক যে, তোমরা আল্লাহর প্রিয়জন, অন্য কোনো মানবগোষ্ঠী নয়, তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর- যদি তোমরা সত্যবাদী হও। কিন্তু তাদের কৃতকর্মের কারণে তারা তা কামনা করবে না। এবং আল্লাহ যালিমদের বিষয়ে অবহিত।’’ [সূরা: (৬২) জুমু‘আ ৬-৭ আয়াত।]

এ ভবিষ্যদ্বাণী আক্ষরিকভবে পরিপূর্ণ হয়েছে। ইয়াহূদীগণ তাঁর কঠিনতম শত্রু ছিলেন। তাকে মিথ্যাবাদী বলে প্রমাণ করার বিষয়ে তাদের আগ্রহ ছিল সর্বাধিক। ইয়াহূদীরা তাঁর সাথে শত্রুতার কারণে যুদ্ধ ও দেশান্তর বেছে নিয়েছেন, কিন্তু কখনো কোনো ইয়াহূদী তাঁর এ দাবির অসারতা প্রমাণ করতে জনসমক্ষে মৃত্যু কামনা করতে এগিয়ে আসেন নি।

(৯) আল্লাহ বলেছেন, ‘‘আমি আমার বান্দার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছি তাতে তোমাদের কোনো সন্দেহ থাকলে তোমরা তার অনুরূপ কোনো সূরা আনয়ন কর এবং যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের সকল সাহায্যকারীকে আহবান কর। যদি তোমরা তা আনয়ন করতে না পার- এবং কখনোই তা করতে পারবে না- তবে সেই আগুনকে ভয় কর, মানুষ এবং পাথর যার ইন্ধন, কাফিরদের জন্য যা প্রস্তুত রয়েছে।’’ [সূরা : ২ বাকারা, ২৩-২৪ আয়াত।]

এ ভবিষ্যদ্বাণী যথাযথভাবেই বাস্তবায়িত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগ থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত সময়কালে সকল সময়ে ও যুগেই ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর শত্রুগণ সক্রিয় ছিলেন ও রয়েছেন। ইসলামের দুর্ণাম করতে তাদের আগ্রহ ও উদ্দীপনায় কখনো ভাটা পড়ে নি বা প্রচারাভিযানও কখনো ক্ষান্ত হয় নি। তা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত কখনোই কুরআনের মুকাবিলা করার ঘটনা ঘটে নি।

উপরে উল্লিখিত বিভিন্ন ভবিষ্যদ্বাণী ও কুরআনের মধ্যে বিদ্যমান অন্যান্য ভবিষ্যদ্বাণী প্রমাণ করে যে, কুরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত বাণী। কারণ আল্লাহর রীতি হলো, কেউ যদি নবূয়ত দাবি করে এবং আল্লাহর নামে মিথ্যা কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করে, তবে সে কথা সত্য হয় না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন