hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সংক্ষেপিত ইযহারুল হক্ক

লেখকঃ ড. মুহাম্মাদ আহমদ আব্দুল কাদির মালকাবী

৬৬
৩. ২. ১. ৪. সাহাবীগণের বিষয়ে শিয়া ইমামগণের বক্তব্য
শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা আলী (রা) ও তাঁর বংশের যে সকল মহান ব্যক্তিকে ইমাম বলে বিশ্বাস করেন তাঁরা সকলেই সাহাবীগণের সততা ও ধার্মিকতার সাক্ষ্য দিয়েছেন। এখন আমি -শিয়াদের ‘পাঁচ-পবিত্র’-র সংখ্যানুসারে শিয়া সম্প্রদায়ের ইমামগণ থেকে ৫টি বক্তব্য উদ্ধৃত করব।

(১) ‘নাহজুল বালাগা’ নামক গ্রন্থটি শিয়া সম্প্রদায়ের নিকট নির্ভরযোগ্য পুস্তক। [হিজরী পঞ্চম শতকে ‘আলীর (রা) বক্তৃতা-সংকলন’-রূপে এই পুস্তকটি প্রকাশ পায়। বইটির সংকলক কে তা সঠিকভাবে জানা যায় না। তবে মনে করা হয় যে, বাগদাদের প্রসিদ্ধ শিয়া নেতা আলী ইবনুল হুসাইন শরীফ মুরতাযা (৩৫৫-৪৩৬হি) আলীর (রা) বক্তৃতার সংকলন হিসেবে বইটি প্রণয়ন ও প্রকাশ করেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, মুরতাযার ভাই মুহাম্মাদ ইবনুল হুসাইন শরীফ রাযী (৩৫৯-৪০৬হি) বইটি সংকলন করেন।] এ পুস্তকে আলীর (রা) নিম্নোক্ত বক্তব্য উদ্ধৃত করা হয়েছে: ‘‘আল্লাহ পুরস্কৃত করুন ‘অমুককে’। তিনি (১) বক্রতাকে সোজা করেছেন, (২) মনের রোগব্যাধির চিকিৎসা করেছেন, (৩) সুন্নাত (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিশুদ্ধ রীতি) প্রতিষ্ঠা করেছেন, (৪) বিদ‘আত (ইসলামের মধ্যে নব-উদ্ভাবিত বিভ্রান্তিকর মত বা কর্ম) পশ্চাতে রেখেছেন, (৫) পরিচ্ছন্ন পোশাকে প্রস্থান করেছেন, (৬) অতি অল্প ভুলত্রুটিতে আক্রান্ত হয়েছেন, (৭) কল্যাণ অর্জন করেছেন, (৮) অকল্যাণ থেকে বিমুক্ত থেকেছেন, (৯) আল্লাহর আনুগত্য আদায় করেছেন, (১০) সত্যিকারভাবে আল্লাহকে ভয় করেছেন এবং তিনি প্রস্থান করেছেন জাতিকে বহুমুখি পথের সামনে রেখে, যেখানে বিভ্রান্ত পথ পায় না কিন্তু সুপথপ্রাপ্ত নিশ্চিত হতে পারে।’’

প্রসিদ্ধ শিয়া পণ্ডিত ও ‘নাহজুল বালাগা’ গ্রন্থের ব্যাখ্যাকার মাইসাম ইবনু আলী আল-বাহরানী (৬৮১হি/১২৮২খৃ) এবং ‘নাহজুল বালাগা’ গ্রন্থের অন্যান্য অধিকাংশ ব্যাখ্যাকারের মতে এখানে ‘অমুক’ বলতে আবূ বাক্র (রা)-কে বুঝানো হয়েছে। আর কোনো কোনো ব্যাখ্যাকার মনে করেন যে, ‘অমুক’ বলতে এখানে ‘উমার’ (রা)-কে বুঝানো হয়েছে। [আবূ বাকর (রা) ও উমারের (রা) বিরুদ্ধে পরবর্তী যুগের শিয়াদের ঘৃণা এত বেশি ছিল যে, তাঁদের নাম নেওয়াকেও তাঁরা পাপ ও অপবিত্র কাজ বলে মনে করত। এজন্য আলীর (রা) এই বক্তব্য থেকে মূল নামটি তারা মুছে ফেলে সেখানে ‘অমুক’ শব্দ উল্লেখ করেছে। এভাবেই সংকলক বক্তৃতাটি সংকলন করেছেন। এজন্য শব্দটির ব্যাখ্যা করতে হয়েছে।] এখানে আলী (রা) আবূ বাক্র (রা) বা উমারের (রা) ১০টি গুণ উল্লেখ করেছেন। এগুলি অবশ্যই তাঁর মধ্যে বিদ্যমান ছিল। আবূ বাক্র (রা) বা উমারের (রা) মৃত্যুর পরেই আলী (রা) এ সকল গুণের কথা বলেছেন। এথেকে প্রমাণিত হয় যে, মৃত্যু পর্যন্ত তাঁরা এরূপই ছিলেন এবং আলীর স্বীকৃতি অনুসারে তাঁরা সন্দেহাতীতভাবে সত্যপরায়ণ ও সঠিক ইমাম ও খলীফা ছিলেন।

‘নাহজুল বালাগা’ গ্রন্থের ব্যাখ্যাকারগণ উল্লেখ করেছেন যে, আলী (রা) এক পত্রে আবূ বাকর (রা) ও উমার (রা) সম্পর্কে লিখেছেন, ‘‘আল্লাহর শপথ, ইসলামে তাঁদের দুজনের মর্যাদা অত্যন্ত মহান। তাদের সম্পর্কে আপত্তিকর কথা বলা ইসলামের জন্য বড় কঠিন আঘাত। আল্লাহ তাঁদের উভয়কে তাঁদের মহান কর্মগুলির জন্য পুরস্কার প্রদান করুন।’’

(২) আলী ইবনু ঈসা আল-আরদাবীলী (৬৯২হি/১২৯৩খৃ) একজন প্রসিদ্ধ দ্বাদশইমাম-পন্থী শিয়া ধর্মগুরু ও পণ্ডিত ছিলেন। দ্বাদশ-ইমামপন্থী শিয়াগণ তাকে একজন নির্ভরযোগ্য পণ্ডিত বলে গণ্য করেন। তাঁর রচিত প্রসিদ্ধ একটি গ্রন্থ ‘‘কাশফুল গুম্মাহ ফী মা’রিফাতিল আইম্মাহ’’ (ইমামদের পরিচয়ে অন্ধকারের অপসারণ)। এ পুস্তকে তিনি উল্লেখ করেছেন: ‘‘ইমাম আবূ জা’ফর মুহাম্মাদ আল-বাকির [রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দৌহিত্র ইমাম হুসাইনের পৌত্র মুহাম্মাদ আল-বাকির ইবনু আলী যাইনুল আবেদীন (৫৭-১১৪ হি/৬৭৬-৭৩২খৃ)। শিয়া সম্প্রদায়ের বিশ্বাস অনুসারে তিনি ছিলেন নিষ্পাপ ইমামগণের পঞ্চম ইমাম। পূর্ববর্তী চার জন: (১) আলী (রা), (২) আলীর পুত্র হাসান (রা), (৩) আলীর পুত্র হুসাইন (রা) এবং (৪) হুসাইনের পুত্র (বাকিরের পিতা) আলী যাইনুল আবেদীন (রাহ)।]-কে তরবারীতে কারুকার্য করা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, হ্যাঁ, তা করা যায়; কারণ আবূ বাকর সিদ্দীক নিজের তরবারী কারুকার্য করাতেন। তখন বর্ণনাকারী বলেন, আপনি এভাবে আবূ বাকরকে ‘সিদ্দীক’ (মহা-সত্যপরায়ণ ও সর্বোচ্চ ধার্মিক) উপাধিতে ভূষিত করছেন? তখন ইমাম বাকির নিজ আসন থেকে উঠে দাঁড়ান এবং বলেন, হ্যাঁ, অবশ্যই তিনি সিদ্দীক, অবশ্যই তিনি সিদ্দীক, অবশ্যই তিনি সিদ্দীক। যে ব্যক্তি তাঁকে সিদ্দীক বলবে না আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার কোনো কথাই সত্য বলে গ্রহণ করবেন না।’’

মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান আল-হুর্র আল-আমিলী (১১০৪হি/১৬৯৩খৃ) হিজরী একাদশ শতকের প্রসিদ্ধতম দ্বাদশ-ইমাম পন্থী শিয়া পণ্ডিত ছিলেন। তাঁর রচিত প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘‘আল-ফুসূল আল-মুহিম্মাহ ফী উসূলিল আইম্মাহ’’ (ইমামগণের মূলনীতির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়সমূহ)। এ গ্রন্থে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ইমাম মুহাম্মাদ বাকির (১১৪হি) কিছু মানুষকে দেখতে পান যে, তারা আবূ বাকর উমার ও উসমানের () সমালোচনা করছেন। তিনি তাদেরকে বলেন, (কুরআনে মুমিনদেরকে তিন দলে বিভক্ত করা হয়েছে, মুহাজির, আনসার ও পরবর্তী মুমিন যারা মুহাজির ও আনসারদের জন্য দু‘আ করেন ও তাঁদের ভালবাসেন) তোমরা (এ তিন দলের) কোন্ দলের তা আমাকে বল। তোমরা কি মুহাজিরদের অন্তর্ভুক্ত যাদের বিষয়ে আল্লাহ বলেছেন: ‘‘মুহাজিরগণ যারা নিজেদের ঘরবাড়ী ও সম্পত্তি হতে উৎখাত হয়েছে, তারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাহায্য করে’’ [সূরা হাশর, ৮ আয়াত।]? তারা বলেন: না, আমরা তা নই।

তখন তিনি বলেন, তাহলে তোমরা কি আনসারদের অন্তর্ভুক্ত যাদের বিষয়ে আল্লাহ বলেছেন: ‘‘মুহাজিরদের আগমনের পূর্বে যারা এই নগরীতে বসবাস করেছে এবং ঈমান এনেছে তারা মুহাজিদরদেকে ভালবাসে’’ [সূরা হাশর, ৯ আয়াত।]? তারা বলে, না আমার তাও নই।

তখন তিনি বলেন, তোমরা নিজেরাই সাক্ষ্য দিলে যে, কুরআনে উল্লিখিত এই দুই দলের সাথে তোমাদের কোনোরূপ সম্পর্ক নেই। আর আমি তোমাদের বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, কুরআনে উল্লিখিত তৃতীয় দলের সাথেও তোমাদের সম্পর্ক নেই, যাদের বিষয়ে আল্লাহ বলেছেন: ‘‘যারা তাদের পরে এসেছে তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন এবং ঈমানের ক্ষেত্রে অগ্রণী আমাদের ভাইদেরকে ক্ষমা করুন। আর আপনি আমাদের অন্তরে মুমিনগণের বিরুদ্ধে কোনো হিংসা, বিদ্বেষ বা অমঙ্গল ইচ্ছা রাখবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক, নিশ্চয় আপনি পরম দয়ার্দ্র ও মহা করুণাময়।’’ [সূরা হাশর, ১০ আয়াত।]

এখানে ইমাম মুহাম্মাদ বাকিরের সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, আবূ বাক্র সিদ্দীক (রা) সত্যিকার ‘সিদ্দীক’ বা মহা-সত্যপরায়ণ ও সর্বোচ্চ ধার্মিক ছিলেন। যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করবে সে দুনিয়াতে ও আখিরাতে মিথ্যাবাদী। যে ব্যক্তি আবূ বাকর সিদ্দীক (রা), উমার ফারূক (রা) বা উসমান যুন্নুরাইন (রা)-এর বিষয়ে সমালোচনা বা আপত্তিকর কথা বলবে সে কুরআন প্রশংসিত তিন দলের বহির্ভুত বিভ্রান্ত বলে গণ্য হবে।

আল্লাহ আমাদেরকে সাহাবীগণের () বিষয়ে কুধারণা পোষণ থেকে রক্ষা করুন এবং তাঁদের প্রতি ভালবাসার উপর আমাদের মৃত্যু দান করুন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন