hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সংক্ষেপিত ইযহারুল হক্ক

লেখকঃ ড. মুহাম্মাদ আহমদ আব্দুল কাদির মালকাবী

৮৭
৪. ২. ২. ২. মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষয়ক দ্বিতীয় ভবিষ্যদ্বাণী
দ্বিতীয় বিবরণের ৩৩/১-২: ‘‘(১) আর ঈশ্বরের লোক মোশি মৃত্যুর পূর্বে ইস্রায়েল-সন্তানগণকে যে আশীর্বাদে আশীর্বাদ করিলেন তাহা এই। (২) তিনি কহিলেন: সদাপ্রভু সীনয় হইতে আসিলেন, সেয়ীর হইতে তাহাদের প্রতি উদিত হইলেন; পারণ পর্বত হইতে আপন তেজ প্রকাশ করিলেন, দশ সহস্র (অযুত অযুত) [বাংলা বাইবেলে ‘‘অযুত অযুত’’, ইংরেজিতে (ten thousands)।] পবিত্রের সহিত (নিকট হইতে) [বাংলা বাইবেলে ‘নিকট হইতে’ লেখা হয়েছে। তবে ইংরেজি (with) এর অনুবাদ ‘সহিত’ হওয়া বাঞ্ছনীয়।] আসিলেন; তাহাদের জন্য তাঁহার দক্ষিণ হস্তে অগ্নিময় ব্যবস্থা ছিল। (The LORD came from Sinai, and rose up from Seir unto them; he shined forth from mount Paran, and he came with ten thousands of saints: from his right hand went a fiery law for them) [দ্বিতীয় বিরণ ৩৩/২।]

এখানে ‘সীনয় হইতে সদাপ্রভুর আগমনের’ অর্থ মোশিকে তোরাহ প্রদান করা এবং ‘সেয়ীর হইতে উদিত হওয়ার’ অর্থ যীশুকে ইনজীল প্রদান করা। আর পারণ পর্বত হইতে আপন তেজ প্রকাশ করার অর্থ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর কুরআন অবতীর্ণ করা। কারণ ‘পারণ পর্বত’ মক্কার একটি পর্বত। আদিপুস্তক ২১/২০-২১ শ্লোকে ইশ্মায়েলের বর্ণনায় বলা হয়েছে: ‘‘(২০) পরে ঈশ্বর বালকটির সহবর্তী হইলেন, আর সে বড় হইয়া উঠিল, এবং প্রানতরে থাকিয়া ধনুর্ধর হইল। (২১) সে পারণ প্রানতরে বসতি করিল (he dwelt in the wilderness of Paran)। আর তাহার মাতা তাহার বিবাহার্থে মিসর দেশ হইতে এক কন্যা আনিল।’’

নিঃসন্দেহে ইশ্মায়েলের অবস্থান মক্কায় ছিল। যদ্বারা জানা যায় যে, পারণ প্রান্তর বলতে মক্কাকেই বুঝানো হয়েছে এবং পারণ মক্কার একটি পর্বতের নাম। [এ বিষয়ে হবক্কূক ভাববাদীর পুস্তকের ৩ অধ্যায়ের তিন আয়াতে বলা হয়েছে: ‘‘ঈশ্বর তৈমন হইতে আসিতেছেন, পারণ পর্বত হইতে পবিত্রতম আসিতেছেন। [সেলা] আকাশমন্ডল তাঁহার প্রভায় সমাচ্ছন্ন, পৃথিবী তাঁহার প্রশংসায় পরিপূর্ণ (God came from Teman, and the Holy One from mount Paran. Selah. His glory covered the heavens, and the earth was full of his praise)। মুহাম্মাদ অর্থই প্রশংসিত: praised।] উপরন্তু শমরীয় তাওরাতে সুস্পষ্টত পারানকে হিজাজ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৮৫১ সালে মুদ্রিত শমরীয় তাওরাতে ইশ্মায়েলের বর্ণনায় আদিপুস্তকের ২১/২১ শ্লোকটি নিম্নরূপ: ‘‘সে হিজাজে অবস্থিত পারণ প্রানতরে বসতি করিল।’’

এ পারণ প্রান্তরে বা হিজাজে ও মক্কায় ইসমাঈল আলাইহিস সালাম-এর বংশে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছাড়া অন্য কোনো নবী-ভাববাদীর আবির্ভাব ঘটে নি। এতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ‘পারণ পর্বত হইতে আপন তেজ প্রকাশ করার’ অর্থ মক্কায় মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর কুরআন অবতীর্ণ করা। কারণ কোনো স্থানে আল্লাহর ওহী বা প্রত্যাদেশ অবতীর্ণ হলে বা ‘ঐশ্বরিক প্রতাপ’ প্রকাশ পেলেই বলা চলে যে, আল্লাহ অমুক স্থান থেকে আগমন করলেন, অর্থাৎ আল্লাহর নির্দেশনা বা বিধান সেখান থেকে আগমন করল।

ইয়াহূদী-খৃস্টানগণ স্বীকার করেন যে, সিনাই-এ তাওরাত অবতীর্ণ হয়েছে। অনুরূপভাবে সেয়ীর বা ফিলিস্তিনে ইঞ্জিল বা সুসমাচারের আগমন ঘটেছিল। কাজেই পারণ থেকে তেজ প্রকাশের অর্থ মক্কায় কুরআন কারীম অবতীর্ণ হওয়া। আর কুরআনের প্রথম অবতরণ শুরু হয়েছিল পারণ পর্বতের সর্বোচ্চ অংশে, হেরা পাহাড়ের গুহায়।

এখানে আরো লক্ষণীয় যে, দশ সহস্র পবিত্র ব্যক্তিসহ (with ten thousands of saints) আগমন এবং দক্ষিণ হস্তে অগ্নিময় ব্যবস্থা (from his right hand went a fiery law for them) মোশি বা যীশুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, বরং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অযুত অযুত বা দশ সহস্র পবিত্র ব্যক্তি বলতে সাহাবীগণকে বুঝানো হয়েছে [মক্কা বিজয়ের সময় তিনি দশ সহস্র সাথী সহ মক্কায় আগমন করেন।] যারা তাঁর সহযোগিতায় রত ছিলেন, তাঁর অনুসরণ করে ও তাঁর সাথে শত্রুদের মুকাবিলা করে দীনকে বিজয়ী করেন।

বস্তুত যে কোনো বিবেকবান ব্যক্তি সাধ্যমত নিরপেক্ষতার সাথে যদি যাচাই করেন যে পারণ পর্বত হইতে আপন তেজ প্রকাশকারী, অযুত অযুত পবিত্রের সাথে আগমন কারী, দক্ষিণ হস্তে অগ্নিময় বিধান-সহ আগমনকারী নবী কে? তাহলে তিনি সুনিশ্চিত বুঝতে পারবেন যে, তিনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছাড়া কেউ নন।

যেহেতু এ ভবিষ্যদ্বাণীটি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নুবুওয়াত প্রমাণ করে, এজন্য খৃস্টান ধর্মগুরুগণ বাইবেলের কোনো কোনো আধুনিক অনুবাদে ‘‘দশ সহস্র (অযুত অযুত) পবিত্রের সহিত আসিলেন (he came with ten thousands of saints)’’ এবং ‘‘তাহাদের জন্য তাঁহার দক্ষিণ হস্তে অগ্নিময় ব্যবস্থা ছিল (from his right hand went a fiery law for them)’’-এ দুটি বাক্য উল্লেখ করছেন না বা পরিবর্তন করছেন।

বাইবেলের এ বাণীটি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে তিনজন নবীর- মূসা আলাইহিস সালাম, ঈসা আলাইহিস সালাম ও মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নুবুওয়াতের এবং তাঁদের উপর তিনটি আসমানী গ্রন্থ অবতীর্ণ হওয়ার স্থান ঘোষণা করছে। বাইবেলের এ বক্তব্যটি কুরআনের সূরা তীন-এর ১-৩ আয়াতের বক্তব্যের সাথ্যে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ আয়াতগুলিতে মহান আল্লাহ বলেন: ‘‘(১) শপথ তীন ও যাইতুন-এর (২) শপথ সিনাই পর্বতের (৩) এবং শপথ এই নিরাপদ নগরীর।’’

এ তিন আয়াতে উপর্যুক্ত তিনজন নবীর প্রেরণের স্থানের উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমে ‘‘তীন ও যায়তূন’’ বলে ফিলিস্তিনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ সেখানেই এ দুটি ফলের উৎপাদন ব্যাপক। এরপর সিনাই পর্বত ও মক্কার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

কুরআন ও বাইবেলের বর্ণনার পার্থক্য হলো, কুরআনে গুরুত্বের পর্যায়ক্রমিকতায় ক্রমবৃদ্ধি এবং বাইবেলে ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা হয়েছে। গুরুত্বের দিক থেকে সিনাই পর্বতে প্রাপ্ত মূসা আলাইহিস সালাম-এর প্রত্যাদেশ ফিলিস্তিনে (সেয়ীরে) প্রাপ্ত ঈসা আলাইহিস সালাম-এর প্রত্যাদেশের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ [বাইবেলের বর্ণনা অনুসারে যীশু বারংবার ঘোষণা করেছেন যে, তিনি মূসার (আ) বিধান ও প্রত্যাদেশের অধীন এবং সেটি পালন ও পূর্ণতা দানের জন্যই তিনি এসেছেন।] এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রাপ্ত প্রত্যাদেশ তাঁদের উভয়ের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। অনুরূপভাবে মক্কা ফিলিস্তিন ও সিনাই থেকে অধিক মর্যাদা সম্পন্ন।

পক্ষান্তরে বাইবেলের বক্তব্যে ঐতিহাসিক ক্রম ও ধারাবাহিকতা বর্ণনা উদ্দেশ্য। এজন্য প্রথমে সিনাই, এরপর ফিলিস্তিন এবং সবশেষে মক্কা বা পারণ পর্বতের কথা বলা হয়েছে। এখানে মূসা আলাইহিস সালাম-এর নুবুওয়াতকে প্রভাতের আগমনের সাথে তুলনা করা হয়েছে, ঈসা আলাইহিস সালাম-এর নুবুওয়াতকে সূর্যোদয়ের সাথে তুলনা করা হয়েছে এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নুবুওয়াতকে দিবসের সর্বগ্রাসী প্রকাশ ও শক্তিময় আলোর বিকীরণের সাথে তুলনা করা হয়েছে। স্বভাবতই তৃতীয় পর্যায়টি প্রথম দুটি পর্যায়ের চেয়ে অধিক শক্তিশালী ও ব্যাপকতর। এ সময়েই সূর্য তার পরিপূর্ণ তেজ প্রকাশ করে এবং সকল সৃষ্টি আলো, তাপ ও শক্তি লাভ করে। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর অবতীর্ণ দীন ও গ্রন্থ যেভাবে আপন তেজে শিরক, কুফর, মুর্তিপূজা, পাপ ও অনাচারের অন্ধকার অপসারণ করেছে পৃথিবীর বুকে আর কোনো ধর্মই সেভাবে তেজ প্রকাশ করে নি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন