hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সংক্ষেপিত ইযহারুল হক্ক

লেখকঃ ড. মুহাম্মাদ আহমদ আব্দুল কাদির মালকাবী

১. ১. ৩. গ্রন্থগুলির সংখ্যায় হেরফেরের ইতিহাস
৩২৫ খৃস্টাব্দে রোমান সাম্রাজ্যের পৌত্তলিক সম্রাট কন্সটান্টাইনের [(Constantine the Great) ২৮৮ খৃস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। ৩১২ খৃস্টাব্দে রোমের একচ্ছত্র শাসকে পরিণত হন। খৃস্টধর্মের শুরু থেকে ৩১২ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত রোমের সম্রাটগণ খৃস্টানধর্মকে রাষ্ট্র বিরোধী বলে গণ্য করতেন এবং খৃস্টানদের উপর অত্যাচার করতেন। ৩১৩ খৃস্টাব্দে কন্সটান্টাইন ‘মিলান ঘোষণা’ (Edict of Milan) এর মাধ্যমে খৃস্টধর্মকে স্বীকৃতি প্রদান করেন। এতদিন খৃস্টধর্ম একটি ‘গোপন’ ধর্ম বলে গণ্য ছিল। এখন খৃস্টানগণ প্রকাশ্যে ধর্মমত প্রকাশ ও পালন করতে শুরু করেন। এখন তাদের মধ্যকার এতদিনের বিরোধিতাগুলি প্রকাশ পায়। বিশেষত, একত্ববাদ, ত্রিত্ববাদ, যীশুর ঈশ্বরত্ব, বাইবেলের গ্রন্থ বা যীশুর সুসমাচার হিসাবে প্রচারিত বিভিন্ন গ্রন্থের গ্রহণযোগ্যতা ইত্যাদি বিষয়ে তাদের মধ্যকার মতভেদ প্রকট হয়ে দেখা দেয়। তখন পৌত্তলিক সম্রাট কন্সটান্টাইনের নির্দেশে ও তার ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধানে খৃস্টান ধর্মগুরুগণ ৩২৫ সালে নিসিয়া সম্মেলন সমবেত হন। ৩৩৭ খৃস্টাব্দে মৃত্যুর কিছু পূর্বে সম্রাট কন্সট্যান্টাইন খৃস্টধর্ম গ্রহণ করেন।] (রাজত্ব: ৩২৩-৩৩৭ খৃ) সময়ে নিকীয়া (Nicaea) শহরে খৃস্টান বিশপ-যাজকদের প্রথম সাধারণ মহা-সম্মেলন (ecumenical council) অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনের অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিল বাইবেলের সন্দেহভাজন গ্রন্থাবলি বা বাইবেল নামে প্রচলিত ‘‘জাল’’ পুস্তকগুলি সম্পর্কে পরামর্শ, মতবিনিময়, গবেষণা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। সম্মেলনে উপস্থিত (তিনশতাধিক) বিশপ ও মহাযাজকগণ এ সকল গ্রন্থের বিষয়ে গবেষণা, আলোচনা ও বিশ্লেষণের পরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, ‘যুডিথের পুস্তক’ (The Book of Judith) বিশুদ্ধ গ্রন্থ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। আর নিম্নের ১৪টি গ্রন্থ জাল বা সন্দেহজনক (Apocrypha) বলে বিবেচিত হবে, যেগুলিকে বাইবেলের পুস্তক বা ঐশী পুস্তক বলে কোনো অবস্থাতেই গ্রহণ করা যাবে না। এ জাল বা সন্দেহজনক পুস্তকগুলি নিম্নরূপ:

ইস্টেরের বিবরণ (The Book of Esther)

যাকোবের পত্র (The Letter of Jame)

পিতরের দ্বিতীয় পত্র (The Second Epistle General of Peter)

যোহনের দ্বিতীয় পত্র (The Second Epistle General of John)

যোহনের তৃতীয় পত্র (The Third Epistle of John)

যিহূদার পত্র (The General Epistle of Jude)

ইব্রীয়দের প্রতি পত্র (The Letter of Paul to the Hebrews)

উইসডম বা জ্ঞান পুস্তক (The Book of Wisdom/Wisdom of Solomon)

তোবিয়াসের পুস্তক (The Book of Tobias/Tobit)

বারুখের পুস্তক (The Book of Baruch)

যাজকগণ বা Ecclesiasticus (The Wisdom of Jesus the Son of Sirach)

মাকাবিজের প্রথম পুস্তক (The First Book of Maccabees)

মাকাবিজের দ্বিতীয় পুস্তক (The Second Book of Maccabees)

যোহনের নিকট প্রকাশিত বাক্য (The Revelation of St. John The Divine)

‘যুডিথের পুস্তক’ (The Book of Judith)-এর ভূমিকায় সেন্ট জীরোম (St. Jerome: ৩৪২-৪২০ খৃ)-এর বক্তব্য থেকে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বিষয়টি জানা যায়।

এর মাত্র ৩৯ বৎসর পরে ৩৬৪ খৃস্টাব্দে লোডেসিয়ায় আরেকটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে উপস্থিত ধর্মগুরুগণ উপর্যুক্ত ১৪টি ‘জাল’ পুস্তকের মধ্যে প্রথম ৭টিকে (১-৭ নং) বিশুদ্ধ বলে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, যেগুলিকে নিকীয় মহাসম্মেলনে ‘জাল’ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। এ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে এগুলি জাল নয়, বরং বিশুদ্ধ। অবশিষ্ট ৭টি পুস্তককে (৮-১৪ নং) এ সম্মেলনেও জাল ও বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। তারা এ সিদ্ধান্ত একটি সাধারণ পত্রের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন করেন।

এর ৩৩ বৎসর পর ৩৯৭ খৃস্টাব্দে আরেকটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলন ‘কার্থেজ’ সম্মেলন নামে পরিচিত। উপরের উভয় সম্মেলনে যে ৭টি পুস্তককে (৮-১৪ নং) জাল ও সন্দেহজনক বলে গণ্য করা হয় এ সম্মেলনে উপস্থিত ধর্মগুরুগণ সেগুলিকেও আইনসম্মত ও গ্রহণযোগ্য বলে গণ্য করেন। এভাবে উপরের ১৪টি জাল পুস্তকের সবগুলিকেই তারা বিশুদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য ঐশ্বরিক গ্রন্থ এবং খৃস্টানদের জন্য অবশ্য মান্য ও পালনীয় বলে ঘোষণা করেন।

এভাবে এ ১৪টি পুস্তক সহ মোট ৭৩টি গ্রন্থ ‘‘পবিত্র বাইবেলের’’ অবিচ্ছেদ্য অংশ, ঐশ্বরিক ও অবশ্য পালনীয় ও অবশ্য মান্য ধর্মগ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হয় সুদীর্ঘ প্রায় ১২০০ বৎসর যাবত। [কেউ এগুলির একটি শব্দ বা বাক্য সম্পর্কে সন্দেহ করলে বা এর কোনো অর্থে বিপরীত কথা সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান বা ভূগোলের নামে বললে তাকে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হতো বা অনুরূপ কঠিন শাস্তি প্রদান করা হতো।]

এরপর খৃস্টীয় ১৬শ শতকের মাঝামাঝি প্রটেস্টান্ট সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে। তারা নিম্নের গ্রন্থগুলিকে বাতিল বলে প্রত্যাখ্যান করেন:

বারুখের পুস্তক (The Book of Baruch)

তোবিয়াসের পুস্তক (The Book of Tobias)

যুডিথের পুস্তক (The Book of Judith)

উইসডম বা জ্ঞান পুস্তক (The Book of Wisdom)

যাজকগণ বা Ecclesiasticus (The Wisdom of Jesus the Son of Sirach)

মাকাবিজের প্রথম পুস্তক (The First Book of Maccabees)

মাকাবিজের দ্বিতীয় পুস্তক (The Second Book of Maccabees)

তারা বলেন যে, এই গ্রন্থগুলি জাল, অগ্রহণযোগ্য এবং বাতিল। এগুলিকে কোনোভাবেই বাইবেলের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যায় না। এছাড়া তারা ‘ইস্টেরের বিবরণ’ (The Book of Esther)-এর কিছু অংশ বাতিল বলে গণ্য করেন এবং কিছু অংশ গ্রহণ করেন। এই গ্রন্থে ১৬টি অধ্যায় ছিল। তারা বলেন যে, প্রথম ৯ টি অধ্যায় এবং দশম অধ্যায়ের তিনটি শ্লোক সঠিক বলে স্বীকৃত। দশম অধ্যায়ের অবশিষ্ট ১০ শ্লোক ও বাকী ৬টি অধ্যায় বাতিল হিসেবে প্রত্যাখ্যাত। উপরের গ্রন্থগুলি বাতিল ও বানোয়াট বলে গণ্য করার ক্ষেত্রে তারা ৬ প্রকারের যুক্তি পেশ করেন:

এই গ্রন্থগুলি মূলত হিব্রু, ক্যালিডিয় ইত্যাদি ভাষায় লেখা ছিল। সেসব ভাষায় লিখিত এ সকল গ্রন্থের মূল উৎসগুলি হারিয়ে গিয়েছে।

ইয়াহূদীগণ এ সকল গ্রন্থকে ঐশী বা ঐশ্বরিক বলে মানেন না।

সকল খৃস্টান গ্রন্থগুলি মেনে নেন নি।

জীরোম (St. Jerome) বলেছেন যে, ধর্মের বিধিবিধান বর্ণনা ও প্রমাণ করার জন্য এই গ্রন্থগুলি যথেষ্ট নয়।

ক্লাউস বলেছেন যে, এ গ্রন্থগুলি সর্বত্র পঠিত হয় না।

৩য়-৪র্থ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ খৃস্টান বিশপ ও ঐতিহাসিক ইউসেবিয়াস (Eusebius Pamphilus) তার Ecclesisatical History গ্রন্থে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, এই গ্রন্থগুলি, বিশেষ করে মাকাবিজের দ্বিতীয় পুস্তক বিকৃত ও পরিবর্তিত হয়েছে।

এখানে লক্ষ্য করুন। তারা নিজেরাই নিজেদের ধর্মের পূর্ববর্তী প্রজন্মদের অধার্মিকতার স্বীকৃতি প্রদান করছে। তারা নিজেরাই স্বীকার করছে যে, যে সকল গ্রন্থের মূল উৎস হারিয়ে গিয়েছে এবং শুধু অনুবাদগুলি রয়েছে, যেগুলিকে ইয়াহূদীগণ তাদের ধর্মগ্রন্থ হিসেবে মানেন না, যেগুলির ঐশ্বরিক বা প্রেরণালব্ধ হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই এবং এ সকল কারণে যে সকল পুস্তককে প্রথম প্রজন্মের খৃস্টানগণ জাল বা সন্দেহজনক বলে ঘোষণা করেছেন, সেগুলিকেই আবার পরবর্তী প্রজন্মের খৃস্টানগণ ঐশী বা আসমানী গ্রন্থ হিসেবে অবশ্য মান্য ও অবশ্য পালনীয় বলে ঘোষণা করেছেন। ক্যাথলিকগণ কার্থেজ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুসারে এখন পর্যন্ত এই গ্রন্থগুলিকে ঐশী ও ঐশ্বরিক হিসেবে মেনে থাকেন; যেগুলির মধ্যে পুরাতন নিয়মের ও নতুন নিয়মের জাল বা সন্দেহজনক পুস্তকগুলি রয়েছে।

যে পুস্তককে পূর্ববর্তীরা জাল বলেছেন তার গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে পরবর্তীদের সিদ্ধান্তের কীই বা মূল্য থাকতে পারে? বরং এ সকল সম্মেলনের সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে যে, খৃস্টানদের ধর্মগ্রন্থগুলির অশুদ্ধতা ও অনির্ভরযোগ্যতার বিষয়ে বিরুদ্ধবাদিদের মতামতই সঠিক।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন