hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সংক্ষেপিত ইযহারুল হক্ক

লেখকঃ ড. মুহাম্মাদ আহমদ আব্দুল কাদির মালকাবী

৭৪
৪. ১. ১. ১. অতীত ও ভবিষ্যতের অজানা সংবাদ
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অতীত ও ভবিষ্যতের অনেক অজানা বিষয় বলেছেন। অতীত বিষয়াবলির মধ্যে অন্যতম পূর্ববতী নবীগণ ও ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিগণ বিষয়ক সংবাদাদি। তিনি কারো নিকট থেকে এগুলি শ্রবণ করেন নি। কোনো গ্রন্থ থেকে তিনি এগুলি পাঠ করেন নি। এ দিকে ইঙ্গিত করে কুরআনে আল্লাহ বলেছেন: ‘‘এ সমস্ত অদৃশ্যলোকের সংবাদ আমি তোমাকে ওহী দ্বারা অবহিত করছি, যা এর আগে তুমি জানতে না এবং তোমার সম্প্রদায়ও জানত না।’’ [সূরা হূদ, ৪৯ আয়াত।]

অতীত নবীগণ ও জাতিগণের বর্ণনায় বাইবেলের বিবরণের সাথে কুরআনের বিবরণের কিছু পার্থক্য রয়েছে। মহান আল্লাহ সত্যের প্রকাশ ও বাইবেলের বিকৃতি উদ্ঘাটনের জন্যই এ বিষয়গুলি প্রকাশ করেছেন। [কুরআন ও বাইবেলের এ পার্থক্য সুনিশ্চিতরূপে কুরআনের ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অলৌকিকত্ব ও সত্যতা প্রমাণ করে। আমরা দেখেছি, আধুনিক গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে, এ সকল পার্থক্যের ক্ষেত্রে কুরআনের বর্ণনাই সঠিক ও বাইবেলের বর্ণনা ভুল। ডা. মরিস বুকাইলি এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।] এ বিষয়ে মহান আল্লাহ কুরআনে বলেন: ‘‘ইস্রায়েল-সন্তানগণ যে সকল বিষয়ে মতভেদ করে এ কুরআন তার অধিকাংশ তাদের নিকট বিবৃত করে।’’ [সূরা (২৭) নামল: ৭৬ আয়াত।]

ভবিষ্যতের বিষয়ে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক সংবাদ প্রদান করেছেন, যেগুলি পরবর্তী সময়ে যথাযথভাবে সংঘটিত হয়ে তার ভবিষ্যদ্বাণীর সত্যতা প্রমাণিত করেছে। এ সকল ভবিষ্যদ্বাণীর মধ্যে রয়েছে:

(১) তিনি সাহাবীগণকে মক্কা, যিরূশালেম, ইয়েমন, সিরিয়া ও ইরাক বিজয়ের সুসংবাদ প্রদান করেন। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে, নিরাপত্তাহীনতা ও বিশৃঙ্খলা দূরীভূত হয়ে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হবে, এমনকি একজন একাকী নারী উত্তর-পূর্ব আরবের হীরা শহর [বর্তমান ইরাকের কূফা শহরের প্রায় ৫ মাইল উত্তরে অবস্থিত একটি প্রাচীন আরবীয় রাজ্য।] থেকে মক্কা পর্যন্ত দীর্ঘ পথ ভ্রমন করতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পাবে না। খাইবার বিজয়ের আগের দিন তিনি সংবাদ দেন যে, আগামীকাল আলীর (রা) হাতে খাইবারের পতন ঘটবে। তিনি সাহাবীগণকে জানান যে, তারা পারস্য সম্রাট ও রোমান (বাইজান্টাইন) সম্রাটের ধনভান্ডার বণ্টন করবেন এবং পারসীয়দের মেয়েরা তাঁদের খেদমত করবে।

তিনি আরো বলেন, পারস্য সাম্রাজ্য একটি বা দুটি ধাক্কা, এরপর আর পারস্য সাম্রাজ্য থাকবে না। আর রোম অনেক শিঙ বিশিষ্ট, একটি শিঙ ধ্বংস হলে অন্য শিঙ তার স্থান দখল করবে। বহুদূর শেষ যুগ পর্যন্ত তারা পাথর ও সমূদ্রের অধিবাসী। এ হাদীসে পারস্য বলতে সাসানীয় সাম্রাজ্য ও রোম বলতে ইউরোপীয়গণকে বা পূর্ব ও পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যকে (Byzantine Empire & Holy Roman Empire) বুঝানো হয়েছে। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছিলেন তাই ঘটেছে।

(২) তিনি বলেন যে, উমার (রা) যতদিন জীবিত থাকবেন, ততদিন অশান্তি-বিশৃঙ্খলা প্রকাশিত হবে না। অবস্থা তাই হয়েছিল। উমারের (রা) জীবদ্দশায় মুসলিম সমাজে অশান্তি প্রকাশিত হয় নি। তিনি অশান্তি-বিশৃঙ্খলার দরজা উন্মোচনের পথে বাঁধা ছিলেন।

(৩) তিনি বলেন, উসমান (রা) কুরআন পাঠরত অবস্থায় নিহত হবেন। আলীর (রা) দাড়িকে তাঁর মাথার রক্ত দিয়ে রঞ্জিত করবে যে ব্যক্তি- অর্থাৎ আলীকে (রা) যে হত্যা করবে- সেই সবচেয়ে দুর্ভাগা। উসমান (রা) ও আলী (রা) উভয়েই- তিনি যেভাবে বলেছেন সেভাবেই- শহীদ হন।

(৪) তিনি বলেন, সাকীফ গোত্রের মধ্যে একজন মিথ্যাবাদী ও একজন ধ্বংসকারী খুনির আবির্ভাব হবে। মুহাদ্দিস ও ঐতিহাসিকগণ উল্লেখ করেছেন যে, এই মিথ্যাবাদী ব্যক্তি ছিল সাকীফ গোত্রের মুখতার ইবনু আবূ উবাইদ (মৃত্যু ৬৭হি/৬৮৭খৃ), যে নিজেকে নবী বলে দাবি করে এবং বসরার আমীর মুসআব ইবনু যুবাইর তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাকে হত্যা করেন। আর ধ্বংসকারী খুনি ছিল হাজ্জাজ ইবন ইউসূফ (মৃত্যু ৯৫হি/৭১৪খৃ)।

(৫) ফিলিস্তিন বা যিরূশালেম বিজয়ের পরে মহামারী দেখা দেবে। তিনি যেভাবে বলেছিলেন সেভাবেই তা ঘটে। উমারের (রা) শাসনামলে ফিলিস্তিন বিজয়ের তিন বৎসর পরে যিরুশালেম থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ইমওয়াস শহরে এ মহামারীর আবির্ভাব ঘটে। এখানে মুসলিম বাহিনীর সেনা ক্যাম্প ছিল। এ ছিল ইসলামের আগমনের পরে মুসলিম সমাজের প্রথম মহামারী। এতে তিন দিনের মধ্যে ফিলিস্তিন ও সিরিয়ায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। [অন্য বর্ণনায় ২৫ হাজার মানুষ এই মহামারীতে মৃত্যুবরণ করেন, যাদের মধ্যে ফিলিস্তিন ও সিরিয়ায় অবস্থানরত অনেক মুসলিম যোদ্ধাও ছিলেন।]

(৬) তিনি মহিলা সাহাবী উম্মু হারাম বিনতু মিলহান (রা)-কে বলেন যে, তিনি একদল মুসলিমের সাথে সমূদ্র পথে যুদ্ধে যাত্রা করবেন। ২৭ হি/৬৪৭ খৃ উসমান (রা)-এর শাসনামলে যখন মু‘আবিয়া সিরিয়ার গভর্নর ছিলেন, তখন উম্মু হারাম ও তাঁর স্বামী সিরিয়া থেকে মুসলিম যোদ্ধাদের সাথে সাইপ্রাস অভিযানে বের হন। সমূদ্র পার হয়ে সাইপ্রাসের উপকূলে অবতরণের পরে তাঁর বাহন থেকে পড়ে তিনি তথায় নিহত ও সমাধিস্থ হন।

(৭) তিনি ইন্তেকালের আগে জানান যে, তাঁর বংশের মধ্যে সর্বপ্রথম ফাতিমাই (রা) তাঁর কাছে গমন করবেন। কার্যত তাই হয়। তাঁর মৃত্যুর ৬ মাস পরে ১১ হিজরীর রামাদান মাসে ফাতিমা (রা) মৃত্যুবরণ করেন।

(৮) তিনি বলেন যে, আমার এই সন্তান- অর্থাৎ হাসান ইবনু আলী (রা)- একজন মহান নেতা; আল্লাহ তার দ্বারা আমার উম্মতের দুটি বৃহৎ দলের মধ্যে শাস্তি ও সন্ধি স্থাপন করবেন। কার্যত তাই হয়েছিল। ৪০ হিজরীর রামাদান মাসে আলী (রা)-এর শাহাদাতের পরে তিনি খলীফা হিসেবে বাইয়াত গ্রহণ করেন। ৬ মাস তিনি দায়িত্ব পালন করেন। এরপর মু‘আবিয়া (রা)-এর নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার মুসলিমগণ এবং হাসানের নেতৃত্বাধীন অন্যান্য এলাকার মুসলিমগণের মধ্যে গৃহযুদ্ধ ঘটার উপক্রম হয়। তিনি মুসলিমদের পারস্পরিক যুদ্ধ অপছন্দ করতেন। এজন্য ৪১ হিজরীর জুমাদাল উলা মাসে তিনি মুআবিয়া (রা)-এর পক্ষে খিলাফত ত্যাগ করেন। এতে মুসলিম উম্মাহ গৃহযুদ্ধ থেকে রক্ষা পায়। এ জন্য এ বৎসরকে ‘আমুল জামাআত’ বা ঐক্যের বৎসর বলা হয়।

(৯) তিনি বলেন যে, তাঁর দৌহিত্র হুসাইন ইবনু আলী (রা) তাফ্ফ নামক স্থানে শহীদ হবেন। ফুরাত নদীর তীরে কুফার নিকটবর্তী একটি এলাকার নাম তাফ্ফ। পরবর্তীকালে তা কারবালা নামে খ্যাত। পরবর্তীকালে ৬১ হিজরীতে (৬৮০ খৃস্টাব্দে) হুসাইন তথায় শহীদ হন।

(১০) তিনি সুরাকা ইবনু জাশ‘আমকে (রা) বলেন, তিনি কিসরার বালাগুলি পরিধান করবেন। পারস্য বিজয়ের পরে যখন কিসরার মহামূল্যবান মনিমুক্তখচিত বালাগুলি উমারের (রা) নিকট আনয়ন করা হয় তখন তিনি তা সুরাকাকে পরিধান করান এবং বলেন, প্রশংসা আল্লাহর, যিনি এগুলিকে কিসরার নিকট থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন এবং সুরাকাকে পরিধান করিয়েছেন।

(১১) উত্তর আরবের দাওমাতুল জান্দালের শাসক উকাইদিরের নিকট খালিদ ইবনুল ওয়ালীদকে (রা) প্রেরণ করার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খালিদকে বলেন, তুমি যেয়ে দেখতে পাবে যে, সে মরুভূমিতে বন্যগরু শিকারে ব্যস্ত রয়েছে। খালিদ তথায় যেয়ে তাকে সে অবস্থাতেই পান।

(১২) তিনি বলেন যে, ভবিষ্যতে হিজাজ থেকে একটি অগ্নি নির্গত হবে যার আভায় সিরিয়ার বুসরা শহরের উটগুলির ঘাড় আলোকিত হয়ে যাবে। ৬৫৪ হিজরীর জুমাদাল উলা মাসে (১২৫৬খৃ) মদীনার নিটকবর্তী প্রান্তর থেকে একটি বিশাল আগুন প্রকাশিত হয়। [সমসাময়িক সুপ্রসিদ্ধ সিরিয় ঐতিহাসিক আব্দুর রাহমান ইবনু ইসমাঈল আবূ শামা (৫৯৯-৬৬৫ হি/ ১২০২-১২৬৭ খৃ) এ বিষয়ে অসংখ্য অগণিত প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর সাক্ষ্য ও লিখিত বিবরণ সংকলন করেন। সমসাময়িক অন্য প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস ও ঐতিহাসিক ইয়াহইয়া ইবনু শারাফ নববী (৬৩১-৬৭৬হি) এবং অন্যান্য সমসাময়িক ঐতিহাসিক ও আলিম এ বিষয়ে লিখেন। গ্রন্থকার তাদের বর্ণনার সারসংক্ষেপ এখানে উদ্ধৃত করেছেন।]

ক্রমান্বয়ে অগ্নির প্রকম্পন ও আন্দোলন ব্যাপকতা লাভ করে। বারংবার ভূকম্পন হয়। লোকজন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আল্লাহর কাছে কাঁদাকাটা করতে থাকে। অগ্নির আন্দোলন অব্যাহত থাকে। মদীনাবাসীগণ নিশ্চিত হন যে, তাদের ধ্বংস সন্নিকটে। আগুনের শিখা উপরে উঠতে উঠতে এমন তীব্রতা ধারণ করে যে, মানুষের দৃষ্টি আবৃত করে ফেলে। মক্কা থেকে এবং সিরিয়ার বুসরা থেকেও এই অগ্নি দৃষ্ট হয়। প্রায় তিনমাস প্রজ্জ্বলিত থাকার পরে রজব মাসের ২৭ তারিখে, মেরাজের রাত্রিতে আগুন নিভে যায়।

ইতিহাসের গ্রন্থগুলিতে এ অগ্নির বিবরণ রয়েছে। এছাড়া এর বিবরণে পৃথক পুস্তক রচনা করা হয়েছে। এ অগ্নি প্রকাশিত হওয়ার ৪০০ বৎসর পূর্বে ইমাম বুখারী তাঁর সংকলিত হাদীসগ্রন্থে হাদীসটি সংকলন করেছেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন