মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
(১) সূরা তাওবায় মহান আল্লাহ বলেন: ‘‘মুহাজির ও আনসারগণের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসরণ করে আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জান্নাত, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত, যেথায় তারা চিরস্থায়ী হবে। এই মহা-সাফল্য।’’ [সূরা তাওবা, ১০০ আয়াত।]
এখানে আল্লাহ প্রথম অগ্রগামী মুহাজির ও আনসারদের সম্পর্কে তাঁর সন্তুষ্টি ও জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। নিঃসন্দেহে আবূ বাক্র সিদ্দীক, উমার ফারূক, উসমান যুন্নুরাইন- রাদিয়াল্লাহু আনহুম সকলেই প্রথম অগ্রগামী মুহাজিরদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। অনুরূপভাবে আলী (রা)-ও প্রথম অগ্রগামী মুহাজিরদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এতে প্রমাণিত হলো যে, তাঁরা চারজনই আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত এবং তাদের খিলাফতের বৈধতাও প্রমাণিত হলো। কাজেই চতুর্থজনের বিরুদ্ধে নিন্দা বা আপত্তি যেমন বাতিল, তেমনিভাবে প্রথম তিনজনের বিরুদ্ধে নিন্দা বা আপত্তিকর কথা এ আয়াতের ভিত্তিতে বাতিল ও প্রত্যাখ্যাত হবে। অনুরূপভাবে অন্যান্য সাহাবীর বিষয়েও আপত্তি বা নিন্দা বাতিল ও প্রত্যাখ্যাত হবে; কারণ তাঁরা অগ্রগামী মুহাজির-আনসার বা তাঁদের নিষ্ঠাবান অনুসারী।
(২) সূরা তাওবার মধ্যে অন্যত্র আল্লাহ বলেছেন: ‘‘যারা ঈমান আনে, হিজরত করে এবং সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে তারা আল্লাহ নিকট মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ, আর তারাই সফলকাম। তাদের প্রতিপালক তাদেরকে সুসংবাদ দিচ্ছেন, স্বীয় দয়া ও সন্তোষের এবং জান্নাতের, যেখানে আছে তাদের জন্য স্থায়ী সুখ-শান্তি। সেথায় তারা অনন্তকাল চিরস্থায়ী হবে। আল্লাহর নিকটেই আছে মহা-পুরস্কার।’’ [সূরা তাওবা, ২০-২২ আয়াত।]
এখানে আল্লাহ হিজরতকারী এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী মুমিনদের জন্য চারটি বিষয় উল্লেখ করেছেন: (১) তাদের মর্যাদা অধিকতর, (২) তারা সফলকাম, (৩) তাদের জন্য আল্লাহর দয়া, সন্তোষ ও জান্নাতের সুসংবাদ ও (৪) চিরস্থায়ীভাবে অনন্তকাল তাদের জান্নাতে অবস্থানের সুসংবাদ। এই স্থায়িত্বের বিষয়টির গুরুত্ব বুঝাতে সমার্থক তিনটি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে: ‘স্থায়ী সুখ-শান্তি’, ‘চিরস্থায়ী’ ও ‘অনন্তকাল’।
নিঃসন্দেহে প্রথম চার খলীফা হিজরতকারী এবং আল্লাহর রাস্তায় জীবন ও সম্পদ দিয়ে জিহাদকারী মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। কাজেই তাদের মর্যাদা, সফলতা, অনন্ত জান্নাতের সুসংবাদ ও তাঁদের খিলাফতের বৈধতা প্রমাণিত হলো। কাজেই তাঁদের বিরুদ্ধে এবং অন্যান্য মুহাজির মুজাহিদ সাহাবীর বিরুদ্ধে আপত্তি বা নিন্দাচারের কোনো সুযোগ নেই।
(৩) সূরা তাওবার অন্য স্থানে আল্লাহ বলেছেন: ‘‘কিন্তু রাসূল এবং যারা তার সাথে ঈমান এনেছে তারা নিজ সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে; তাদের জন্যই কল্যাণ আছে এবং তারাই সফলকাম। আল্লাহ তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জান্নাত, যার নিম্ন দেশে নদী প্রবাহিত, যেথায় তারা স্থায়ী হবে, এই মহা-সাফল্য।’’ [সূরা তাওবা, ৮৮-৮৯ আয়াত।]
এখানে আল্লাহ মুমিন মুজাহিদ সাহাবীগণ, যাঁরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলেন তাঁদের জন্য কল্যাণ, সফলতা ও অনন্ত জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। নিঃসন্দেহে চার খলিফা মুমিন মুজাহিদদের অন্যতম ছিলেন। কাজেই তাঁদের জন্য কল্যাণ, সফলতা ও অনন্ত জান্নাত এবং তাদের খিলাফতের বৈধতাও প্রমাণিত হলো। তাঁদের বিরুদ্ধে এবং অন্যান্য মুমিন মুজাহিদ সাহাবীর বিরুদ্ধে আপত্তি বা নিন্দাচারের কোনো সুযোগ নেই।
(৪) আল্লাহ বলেন: ‘‘তাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ী থেকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত করা হয়েছে ....। আমি তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে, সৎকার্যের নির্দেশ দিবে এবং অসৎকার্যে নিষেধ করবে। সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে।’’ [সূরা হাজ্জ, ৪১ আয়াত।]
এখানে ঘর-বাড়ী থেকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত মুহাজিরদের সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তাঁদেরকে প্রতিষ্ঠা প্রদান করলে তারা চারটি কাজ করবেন: সালাত প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান করা, সৎকার্যে আদেশ করা এবং অসৎকার্যে নিষেধ করা। আল্লাহ খলীফা চতুষ্টয়কে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করেছিলেন এবং তাঁদের সময়ে ইসলাম বিশ্বে প্রসারিত হয়েছে। এতে বুঝা যায় যে, তাঁরা এই চারটি কর্ম আঞ্জাম দিয়েছেন। আর এতে প্রমাণিত হয়েছে যে, তাঁরা সত্যপন্থী ও সঠিক ছিলেন।
(৫) সূরা নূরে আল্লাহ বলেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে, তিনি তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করবেনই, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবেং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য সুদৃঢ় করবেন তাদের দীনকে যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্য নিরাপত্তা দান করবেন। তারা আমার ইবাদত করবে, আমার কোনো শরীক করবে না, অতঃপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে তারা তো সত্যত্যাগী।’’ [সূরা নূর, ৫৫ আয়াত।]
এখানে ‘তোমাদের মধ্য থেকে’ কথা থেকে বুঝা যায় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার সময়ে যে সকল মুমিন জীবিত ও বিদ্যমান ছিলেন তাদের মধ্য থেকে কিছু মানুষকে আল্লাহ এই প্রতিশ্রুতি প্রদান করছেন। তাঁরা সবাই নয়, বরং তাদের মধ্য থেকে কিছু মানুষ ‘প্রতিনিধিত্ব’ বা ‘স্থলাভিষিক্তত্ব’ লাভ করবেন।
এখানে আল্লাহ বললেন, তিনি এদেরকে ‘খলীফা’ অর্থাৎ ‘প্রতিনিধি’ বা ‘স্থলাভিষিক্ত’ বানাবেন। এথেকে জানা যায় যে, এই প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করা হবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরে; কারণ তার পরেই তো তাঁর প্রতিনিধি বা স্থলাভিষিক্ত নিয়োগের প্রশ্ন আসে। আর এ কথা তো সুস্পষ্ট যে, তাঁর পরে কোনো নবী আসবেন না, কাজেই তাঁর প্রতিনিধিত্ব বলতে এখানে ‘নবুয়ত’ বুঝানো হয় নি, বরং ‘ইমামত’ বুঝানো হয়েছে। এখানে ‘তাদেরকে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন’ থেকে ... ‘তারা আমার কোনো শরিক করবে না’ পর্যন্ত সবগুলি সর্বনাম বহুবচন ব্যবহার করা হয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তাঁর নবীর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরে যাদেরকে এভাবে ইমামত বা খিলাফত প্রদান করবেন তারা তিনজনের কম হবেন না; কারণ আরবীতে তিনের কমকে বহুবচন করা হয় না।
আল্লাহ বলেছেন, ‘ তিনি অবশ্যই তাদের জন্য সুদৃঢ় করবেন তাদের দীনকে....’ এখানে আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিলেন যে, তাদেরকে শক্তি, ক্ষমতা ও বিশ্বব্যাপী প্রভাব প্রতিপত্তি প্রদান করবেন। এথেকে জানা যায় যে, এ সকল ইমাম বা খলীফা শক্তি, ক্ষমতা ও বিশ্বব্যাপী প্রতিপত্তি অর্জন করবেন।
আল্লাহ বলেছেন, ‘‘তাদের দীনকে যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন’। এ কথা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, এ সকল ইমামের যুগে যে দীন প্রতিষ্ঠিত ও আচরিত হবে সে দীন আল্লাহর মনোনিত দীন।
আল্লাহ বলেছেন: ‘‘তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্য নিরাপত্তা দান করবেন’’। এ কথা থেকে প্রমাণিত হয় যে, তাঁদের ইমামত, খিলাফত বা শাসনামলে তাঁরা শাস্তি ও নিরাপত্তার মধ্যে থাকবেন, তাঁরা কোনো ভয়-ভীতির মধ্যে থাকবেন না এবং ‘তাকিয়্যাহ’ আত্মরক্ষামূলক মিথ্যা কথা বলারও কোনো প্রয়োজন তাঁদের যুগে থাকবে না।
আল্লাহ বলেছেন: ‘‘তারা আমার ইবাদত করবে, আমার কোনো শরীক করবে না’’। এ কথা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তাঁদের খিলাফত বা শাসনামলে তাঁরা মুমিন থাকবেন, মুশরিক হবেন না।
এভাবে এই আয়াত দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরের চার খলিফার ইমামত বা প্রতিনিধিত্ব প্রমাণিত হয়। বিশেষভাবে প্রথম তিন খলীফা: আবূ বাক্র সিদ্দীক, উমার ফারূক এবং উসমান যুন্নুরাইন (রাদিয়ল্লাহু আনহুম)-এর ইমামত ও শাসন প্রমাণিত হয়। কেননা এই আয়াতে প্রতিশ্রুত ‘সুদৃঢ় করণ’ তাঁদের সময়ে বেশি প্রকাশিত হয়েছে। বড় বড় বিজয়, পরিপূর্ণ ক্ষমতা ও প্রতাপ, দীনের বিজয় ও প্রকাশ এবং শান্তি ও নিরাপত্তা তাঁদের যুগে যেভাবে ছিল ৪র্থ খলীফা আলী (রা)-এর যুগে সেভাবে ছিল না। তাঁর পবিত্র যুগে তিনি বিদ্রোহী মুসলিমদের সাথে যুদ্ধবিগ্রহ করতে বাধ্য হন। ফলে বিজয় ও নিরাপত্তার ধারা ব্যাহত হয়।
এভাবে এ আয়াত দ্বারা খলীফা চুতষ্টয়ের ইমামত প্রমাণিত হয়। কাজেই প্রথম তিন খলীফা ও অন্যান্য সাহাবীদের বিরুদ্ধে শিয়াদের ভিত্তিহীন কথাবার্তা এবং শেষ দুই খলীফা উসমান (রা) ও আলী (রা)-এর বিরুদ্ধে খারিজী সম্প্রদায়ের ভিত্তিহীন কথাবার্তা কুরআনের আলোকে বাতিল বলে প্রমাণিত হলো। তাদের এ সকল ভিত্তিহীন কথা দ্বারা মূলধারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পেশ করা যায় না।
(৬) হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় যে সকল সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলেন, তাঁদের বিষয়ে সূরা ফাতহে আল্লাহ বলেন: ‘‘যখন কাফিররা তাদের অন্তরে পোষণ করত গোত্রীয় অহমিকা, অজ্ঞতা যুগের অহমিকা, তখন আল্লাহ তাঁর রাসূল ও মুমিনদেরকে স্বীয় প্রশান্তি দান করলেন, আর তাদেরকে তাকওয়ার বাক্যে সুদৃঢ়-স্থায়ী করলেন, এবং তারাই ছিল এর অধিকতর যোগ্য ও উপযুক্ত। আল্লাহ সমস্ত বিষয়ে সম্যক জ্ঞান রাখেন।’’ [সূরা ফাত্হ, ২৬ আয়াত।]
সূরা ফাতহের মধ্যে অন্যত্র আল্লাহ বলেন: ‘‘মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল; তার সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদেরকে রুকু ও সাজদায় অবনত দেখবে। তাদের পরিচিতি চিহ্ন রয়েছে তাদের মুখমন্ডলে সাজদার প্রভাবে।’’ [সূরা ফাত্হ, ২৯ আয়াত।]
এভাবে আল্লাহ সাহাবীগণের বিষয়ে বললেন যে, তাঁরা মুমিন, আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রশান্তি লাভে তাঁরা স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে শরিক, তাকওয়ার বাক্য তাদের সাথে চিরস্থায়ীভাবে সম্পৃক্ত এবং এর জন্য তাঁরা ছিলেন অধিকতর যোগ্য ও উপযুক্ত। আল্লাহ তাঁদের প্রশংসা করেছেন যে, তাঁরা কাফিরদের বিষয়ে কঠোর এবং নিজেরদের মধ্যে সহানুভূতিশীল এবং তাঁরা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় রুকু-সাজদায় রত থাকেন।
নিঃসন্দেহে অন্যান্য সাহাবীদের সাথে চার খলিফা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহচর ছিলেন এবং এ সকল বিশেষণ সবই তাঁদের জন্য প্রযোজ্য। তাঁদের বিষয়ে বা কোনো সাহাবীর বিষয়ে কেউ যদি এর বিপরীত কোনো বিশ্বাস পোষণ করে তবে তার বিশ্বাস বাতিল ও কুরআনের সাথে সাংঘর্ষিক।
(৭) সূরা হুজুরাতে আল্লাহ বলেন, ‘‘কিন্তু আল্লাহ তোমাদের নিকট ঈমানকে প্রিয় করেছেন এবং তাকে তোমাদের হৃদয়গ্রাহী করেছেন; কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে করেছেন তোমাদের নিকট অপ্রিয়। তারাই সৎপথ অবলম্বনকারী।’’ [সূরা হুজুরাত, ৭ আয়াত।]
এ আয়াত থেকে জানা যায় যে, সাহাবীগণ ঈমান ভালবাসতেন এবং কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতা ঘৃণা করতেন এবং তাঁরা সৎপথ অবলম্বনকারী ছিলেন। সাহাবীদের বিষয়ে এর বিপরীত কোনো বিশ্বাস পোষণ করা কুরআনের সুস্পষ্ট আয়াত দ্বারা বিভ্রান্তি বলে প্রমাণিত হলো।
(৮) সূরা হাশরে আল্লাহ বলেন: ‘‘অভাবগ্রস্ত মুহাজিরগণের জন্য, যারা নিজেদের ঘরবাড়ী ও সম্পত্তি হতে উৎখাত হয়েছে। তারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাহায্য করে। তারাই তো সত্যপরায়ণ। মুহাজিরদের আগমনের পূর্বে যারা এই নগরীতে বসবাস করেছে এবং ঈমান এনেছে তারা মুহাজিদরদেকে ভালবাসে এবং মুহাজিরদেরকে যা দেওয়া হয়েছে তার জন্য তারা অন্তরে আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে না। আর তারা তাদেরকে নিজেদের উপরে অগ্রাধিকার দেয়, নিজেরা অভাগগ্রস্ত হলেও; যারা কার্পণ্য হতে নিজেদেরকে মুক্ত করেছে তারাই সফলকাম।’’ [সূরা হাশর, ৮-৯ আয়াত।]
এই আয়াতে আল্লাহ মুহাজিরদের প্রশংসায় বলেছেন যে, তাঁদের হিজরত বা দেশত্যাগ জাগতিক কোনো স্বার্থে বা উদ্দেশ্যে ছিল না, বরং আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনাতেই তাঁরা হিজরত করেন, তাঁরা আল্লাহর দীন ও তাঁর রাসূলের সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহায্যকারী ছিলেন এবং তাঁরা কথা-কর্মে সত্যপরায়ণ ও সত্যবাদী ছিলেন। আর আনসারগণের প্রশংসায় আল্লাহ বলেছেন যে, আনসারগণ মুহাজিরদের ভালবাসতেন; মুহাজিরগণ কোনো কিছু লাভ করলে আনসারগণ খুশি হতেন এবং আনসারগণ নিজেদের অভাব থাকা সত্ত্বেও মুহাজিরদেরকে নিজেদের চেয়েও অগ্রাধিকার প্রদান করতেন।
নিঃসন্দেহে এ সকল গুণ ঈমানের পূর্ণতার সাক্ষ্য দেয়। এ সকল দরিদ্র মুহাজির আবূ বাক্র (রা)-কে বলতেন, হে আল্লাহর রাসূলের খলীফা। আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, এ সকল মুহাজির সত্যবাদী ছিলেন। কাজেই আবূ বাকরের এই উপাধিও সত্য হওয়া জরুরী। আর এমতাবস্থায় আবূ বাক্রের ইমামতে সন্দেহ পোষণের কোনো সুযোগ থাকে না। মুহাজির ও আনসারগণের বিষয়ে এর ব্যতিক্রম বা বিপরীত কোনো আকীদা বা ধারণা পোষণকারী নিঃসন্দেহে কুরআন অমান্যকারী।
(৯) সূরা আল-ইমরানে আল্লাহ বলেন: ‘‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে; তোমরা সৎকার্যের নির্দেশ দান কর, অসৎকার্যে নিষেধ কর এবং আল্লাহে বিশ্বাস কর।’’ [সূরা আল-ইমরান, ১১০ আয়াত।]
এখানে আল্লাহ সাহাবীগণের প্রশংসায় বলেছেন যে, তাঁরা শ্রেষ্ঠ উম্মাত, তাঁরা সৎকার্যের নির্দেশ দান করতেন এবং অসৎকার্যে নিষেধ করতেন এবং তাঁরা মুমিন ছিলেন। নিঃসন্দেহে চার খলিফা এ প্রশংসিত উম্মাতের অন্যতম ছিলেন। তাঁদের বিষয়ে এর ব্যতিক্রম ধারণা বা বিশ্বাস কুরআনের সাথে সাংঘর্ষিক ও বাতিল।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/612/65
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।