hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সংক্ষেপিত ইযহারুল হক্ক

লেখকঃ ড. মুহাম্মাদ আহমদ আব্দুল কাদির মালকাবী

৪১
প্রথম পরিচ্ছেদ: বুদ্ধিবৃত্তিক প্রমাণাদি দ্বারা ত্রিত্ববাদ খণ্ডন
খৃস্টানগণ বিশ্বাস করেন যে, একত্ববাদ ও ত্রিত্ববাদ উভয়ই প্রকৃত, বাস্তব ও আক্ষরিক সত্য, কোনোটিই রূপক বা আপেক্ষিক নয়। আর মানবীয় বুদ্ধি, বিবেক, যুক্তি ও বিজ্ঞান কখনোই প্রকৃত ‘একত্ব’ ও প্রকৃত ‘বহুত্ব’কে একত্রিত বলে স্বীকার করতে পারে না। কোনো কিছু প্রকৃত ও আক্ষরিক অর্থে ‘‘তিন’’ বলে প্রমাণিত হওয়ার অর্থ তা প্রকৃত ও আক্ষরিকভাবে ‘‘একাধিক’’ বলে প্রমাণিত। আর যা প্রকৃত ‘‘একাধিক’’ তা কখনোই প্রকৃত ‘‘এক’’ হতে পারে না। একই বিষয়ে প্রকৃত ‘একাধিক্য’-এর সাথে প্রকৃত ‘একত্ব’ একত্রিত হওয়ার দাবি করলে ‘দুইটি প্রকৃত সাংঘষিক বিষয়’ একত্রিত হওয়ার দাবি করা হবে। যা একেবারেরই অসম্ভব ও অবান্তর।

কাজেই যিনি ত্রিত্বে বিশ্বাস করেন, অর্থাৎ ঈশ্বরকে প্রকৃত অর্থেই সম্পূর্ণ পৃথক ও স্বয়ংসম্পূর্ণ তিনটি ব্যক্তি বা সত্ত্বা (three persons) বলে বিশ্বাস করেন, তিনি কখনোই প্রকৃত একত্বে- অর্থাৎ ঈশ্বর প্রকৃতই এক ব্যক্তি বা সত্ত্বা বলে বিশ্বাস করতে পারেন না।

যা প্রকৃত ‘এক’ তার পরিপূর্ণ বিশুদ্ধ এক-তৃতীয়াংশ থাকতে পারে না। কিন্তু ‘তিন’-এর একটি পরিপূর্ণ বিশুদ্ধ এক-তৃতীয়াংশ রয়েছে, তা হলো ‘এক’। তিন হলো ‘তিনটি এক’-এর সমষ্টি। ‘প্রকৃত এক’ কখনো একাধিক ‘এক’ এর সমষ্টি হতে পারে না।

প্রকৃত ‘এক’ তিন-এর একটি অংশ। যদি একই বস্তু একই সময়ে ‘তিন’ ও ‘এক’ হয় তবে বুঝতে হবে যে, বস্তুটি একই সময়ে নিজেই পূর্ণ এবং নিজেই নিজের অংশ। একত্ব ও ত্রিত্বের একত্রিত হওয়ার অর্থ হলো ‘এক’ নিজেই নিজের এক-তৃতীয়াংশ এবং তিন ‘এক’-এর এক তৃতীয়াংশ। আবার তিন নিজেই নিজের তিনগুণ এবং এক নিজেই নিজের তিনগুণ। মানবীয় বুদ্ধি-বিবেক এরূপ চিন্তাকে পাগলের প্রলাপ বলে গণ্য করবে। [খৃস্টানগণ দাবি করেন যে, তাঁদের ধর্ম পুরাতন নিয়মের ধর্মের শিক্ষা থেকে গৃহীত। কিন্তু এই দাবিটি একটি অন্তঃসারশূণ্য মিথ্যা ছাড়া কিছুই নয়। পুরাতন নিয়মের ‘‘মাসীহ’’, ‘‘বাক্য’’ ইত্যাদি কয়েকটি শব্দের বিকৃত অর্থ ছাড়া পুরাতন নিয়মের কোনো ধর্ম বিশ্বাস বা ধর্মীয় আচারই প্রচলিত খৃস্টধর্মে নেই। খৃস্টধর্মের ভিত্তি হলো গ্রীক দর্শন ভিত্তিক রোমান প্যাগান ধর্ম। ইসলাম ধর্ম ভারতে আগমণের পরে সম্রাট আকবর হিন্দু ধর্ম ও দর্শনের ভিত্তিতে ‘ইসলাম’ ধর্মকে ‘সাইজ’ করে নতুন ধর্ম তৈরির চেষ্টা করেন। তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু একই চেষ্টায় পৌল ও তাঁর সহকর্মিগণ সফল হয়েছিলেন। গ্রীক লগস (logos) শব্দটির অর্থ ‘জ্ঞান’, ‘বিবেক’, ‘পরিকল্পনা’ ‘বাক্য’ ইত্যাদি (word, reason, plan)। গ্রীক দর্শনে ও রোমান পৌত্তলিক ধর্মে এই ‘লগস’ শব্দটিকে ঈশ্বরের বিশেষ গুণ এবং সৃষ্টির উৎস মনে করা হতো। এছাড়া মানুষের মধ্যে ‘বিবেক’ বা ‘জ্ঞান’-কেও ঐশ্বরিক শক্তি বলে বিশ্বাস করা হতো। এর পৌত্তলিক ব্যবহারও ছিল। শব্দটির প্রতি এই পৌত্তলিক ভক্তি ও গ্রীক দর্শনের ব্যাখ্যাকে ভিত্তি করে ‘খৃস্টকে’ মুর্তিমান লগস বলে প্রচার করা হয়। বলা হয় ‘বাক্য মাংস হলেন’। বিস্তারিত দেখুন: Encyclopaedia Britannica, articles: Logos; Incarnation. বাক্যের দেহ গ্রহণ যদি জিন, ভুত বা ফিরিশতার দেহ গ্রহণের মত কিছু বলে তাঁরা দাবি করতেন, তবে তাঁদের সমস্যা কম হতো। তাঁরা দাবি করেন যে, যীশুর মানবীয় সত্তার সাথে বাক্যের ঈশ্বরীয় সত্তা মিশ্রিত হয়। এ মিশ্রণের গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা তাঁরা কোনো দিনই দিতে পারেন নি।]

এভাবে আমরা বুঝতে পারি যে, মহান আল্লাহর ক্ষেত্রে ‘‘প্রকৃত ত্রিত্ব’’ কখনোই সম্ভব নয়। এজন্য যদি খৃস্টানগণের ধর্মগ্রন্থে আল্লাহর ত্রিত্ববোধক কোনো কথা পাওয়া যায় তাহলে তা এমনভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে যেন তা বাইবেলের অন্যান্য বক্তব্য ও মানবীয় জ্ঞান-বুদ্ধির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

জর্জ সেল (George Sale) অষ্টাদশ শতকের একজন খৃস্টান পণ্ডিত। তিনি ইংরেজি ভাষায় কুরআন কারীমের অনুবাদ করেন ১৭৩৪ সালে প্রথম প্রকাশিত এবং ১৮৩৬ খৃস্টাব্দে পুনর্মুদ্রিত হয়। তিনি খৃস্টান প্রচারক ও পাদরিদেরকে মুসলিমদের বিষয়ে কিছু উপদেশ ও পরামর্শ দান করেন। এতে তিনি বলেন: ‘‘আপনারা মুসলমানদেরকে জ্ঞানবুদ্ধি-বিরোধী ধর্মীয় বিষয়গুলি শেখাবেন না। কারণ তারা এমন বোকা নয় যে, এ সকল জ্ঞান বিরোধী বিষয় আমরা তাদেরকে গেলাতে পারব। যেমন মুর্তি বা প্রতিকৃতির উপাসনা [খৃস্টানগণ উপাসনায় বা প্রার্থনায় যীশু, মেরি, ক্রশ ইত্যাদির প্রতিমুতির (icon) পুজা করেন, এগুলির উদ্দেশ্যে প্রণতি জানান ও প্রার্থনা করেন, যদিও বাইবেলের পুরাতন ও নতুন নিয়মে মুর্তি, প্রতিমা ও প্রতিকৃতির পূজা-অর্চনা কঠিনভাবে নিষেধ করা হয়েছে।], প্রভুর নৈশভোজ (Eucharist/Holy Communion/ Lord's Supper) [খৃস্টধর্মের মূল ‘ইবাদত’ বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানে খৃস্টানগণ রুটি ও মদ গ্রহণ করেন এবং বিশ্বাস করেন যে পাদরি প্রার্থনার সাথে সাথে প্রত্যেকের হাতের রুটির টুকরা ও মদ প্রকৃত অর্থে যীশু খৃস্টের দেহ ও রক্তে রূপান্তরিত হয়। তারা আক্ষরিকভাবে ও প্রকৃত অর্থে যীশুর মাংস ভক্ষণ করেন ও রক্ত পান করেন। এভাবে যীশুর রক্ত-মাংস পানাহারের মাধ্যমে তারা অনন্ত জীবন লাভ করেন।] ইত্যাদি বিষয়। এ সকল বিষয় গ্রহণ করতে তাদের খুবই অসুবিধা হয়। যে সকল চার্চে বা ধর্মমতে এ ধরনের বিষয় রয়েছে সেগুলি কখনো মুসলমানদেরকে আকর্ষণ করতে পারে না।’’

এখানে এ খৃস্টান পণ্ডিত স্বীকার করছেন যে, প্রতিকৃতি উপাসনা এবং প্রভুর নৈশভোজ জাতীয় অনুষ্ঠানগুলি ‘জ্ঞান বিরোধী’। [তিনি আরো স্বীকার করলেন যে, ধর্মীয় বিষয়ে ইসলামী ধর্মবিশ্বাস এত স্বচ্ছ, যৌক্তিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক যে, মুসলমানদের মধ্যে এরূপ জ্ঞান-বিরোধী কুসংস্কারের ও বিশ্বাসের প্রতি স্বভাবজাত ঘৃণা সৃষ্টি হয়। এজন্য তাঁরা এ প্রকারের বিষয় মানতে পারেন না।] প্রকৃত সত্য কথা হলো, এই সকল বিষয় যারা বিশ্বাস করেন তারা নিঃসন্দেহে একত্ববাদের ছায়া থেকে বঞ্চিত এবং বহু-ঈশ্বরবাদের অন্ধকারে নিমজ্জিত। মহিমাময় আল্লাহ তাঁদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন। প্রকৃত সত্য কথা হলো, পৃথিবীতে এত বেশি অবান্তর, অবাস্তব ও বুদ্ধিবিবেক বিরোধী ধর্ম বিশ্বাস আর দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া যায় না। তাঁরা ধর্মবিশ্বাস হিসেবে ও তাঁর প্রমাণে যে সকল কথা বলেন এগুলি বুদ্ধিবৃত্তিক অসচ্ছত ও মানবীয় জ্ঞানের সার্থে সাংঘর্ষিকতা যে কোনো বিবেকবান মানুষের কাছে সুস্পষ্ট। [খৃস্টধর্মের মূল বিষয় : ত্রিত্ববাদ (Trinity), মূল পাপ (Original Sin) ও প্রায়শ্চিতবাদ (Atonement), নৈশভোজ, ইত্যাদি। ত্রিত্ববাদ ও নৈশভোজের কথা পাঠক জনলেন। মূলপাপ ও প্রায়শ্চিতবাদের মূল কথা হলো, আদমের ফল ভক্ষণের কারণে সকল মানুষ জন্মগতভাবে পাপী। এ পাপের জন্য সকল মানব সন্তানকে জাহান্নামে যেতেই হবে। প্রায়শ্চিত্ব হিসেবে কুরবানী দিতে হবে। কিন্তু পাপী নিজে বা পাপীর সন্তানগণ প্রায়শ্চিত করলে বা কুরবানী দিলে হবে না। নিষ্পাপকে পাপীর জন্য কুরবানী দিতে হবে। ঈশ্বর মানুষের এ পতনে বেদনাতুর হন। মানুষকে জাহান্নাম থেকে রক্ষার আর কোনো পথ না পেয়ে তিনি নিজের পুত্র সত্ত্বাকে মানুষরূপে পৃথিবীতে পাঠান। মানুষরূপী ঈশ্বর মানবজাতির পাপের প্রায়শ্চিত হিসেবে নিজে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। জাহান্নাম বা নরকের চাবী শয়তানের হাতে থাকে। মৃত্যুর দরজা পার না হয়ে সেখানে যাওয়া যায় না। ঈশ্বর স্বয়ং মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে মৃত্যুর দরজা পার হয়ে নরকে গমন করেন এবং তিন দিন নরক-শাস্তি ভোগ করার পর নরকের চাবি নিয়ে চলে আসেন। এভাবে তিনি আদমের পাপের প্রায়শ্চিত করেন ও মানবজতিকে নরক থেকে রক্ষার ব্যবস্থা করেন। এখন মানুষের দায়িত্ব শুধু একথা বিশ্বাস করা যে, ঈশ্বর তিনটি ঈশ্বরের সমষ্টি। তিনজনই পরিপূর্ণ, স্বয়ংসম্পূর্ণ ও প্রকৃত ঈশ্বর। তবে তিন মিলে তিন ঈশ্বর নন, এক ঈশ্বর। আর এ ঈশ্বরের এক ঈশ্বর পুত্র ঈশ্বর পৃথিবীতে এসে মরিয়ম-তনয় যীশুর দেহের মধ্যে মিশে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, তিনদিন নরকবাস করেন এবং পু্নরুত্থিত হয়ে স্বর্গে পিতার নিকট গমন করেন। এ বিশ্বাস করলেই মানুষের জান্নাত লাভ সুনিশ্চিত। এ বিশ্বাস যার আছে সে যত পাপই করুক না কেন তার জন্য জান্নাত সুনিশ্চিত। কোনো কর্মই তার জন্য জরুরী নয়। বরং কর্ম করে বা শরীয়ত মেনে জান্নাতে যাওয়ার চেষ্টা করার অর্থই যীশুর বরকতে অবিশ্বাস করা। খৃস্টধর্মের মূলপাপ ও প্রায়শ্চিতবাদ বিষয়ে জনৈক খৃস্টান লেখক বলেন: "No heathen tribe has conceived so grotesque an idea, involving as it does the assumption, that man was born with a hereditary stain uopn him, and that this stain (for wihch he was not personally responsible) was to be atoned for, and that the creator of all things had to sacrifice His only begotten son to neutralise this mysterious curse." Major Yeats-Brown, Life of a Bengal Lancer. From Ahmed Deedat, The Choice Vo.-2, p165.]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন