hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সংক্ষেপিত ইযহারুল হক্ক

লেখকঃ ড. মুহাম্মাদ আহমদ আব্দুল কাদির মালকাবী

৪০
ভূমিকা: কতিপয় প্রয়োজনীয় মূলনীতি ও তথ্য
মানবীয় জ্ঞান, বিবেক ও বাইবেলের আলোকে ত্রিত্ববাদ [(Trinity) বা ত্রিত্ববাদ-এর সাধারণ অর্থ ‘তিনত্ব’, তিনের সমাহার বা তিনের সমস্টি (a group of three closely related persons or things)। খৃস্টধমের পরিভাষায় এর অর্থ (the unity of Father, Son, and Holy Spirit as three persons in one Godhead): এক ঈশ্বরত্বের মধ্যে পিতা, পুত্র ও পবিত্র আত্মা এই তিন ব্যক্তির মিলন। খৃস্টান পন্ডিতগণ সকলেই একমত যে, (Trinity) শব্দটি বাইবেলের পুরাতন বা নতুন নিয়মের কোথাও নেই। খৃস্টের কোনো বাক্যে কখনো এ শব্দটি বা এ অর্থের কোনো শব্দ ব্যবহৃত হয় নি। এমনকি খৃস্টের প্রেরিতগণ, শিষ্যগণ বা তাদের শিষ্যগণও এ পরিভাষাটি কখনো ব্যবহার করেন নি। মূলত দ্বিতীয়-তৃতীয় শতাব্দীতে এ পরিভাষাটির জন্ম। কে এই পরিভাষাটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন তাও নিশ্চিতরূপে জানা যায় না। খৃস্টান ধর্মগুরুগণ মনে করেন যে, দ্বিতীয়-তৃতীয় খৃস্টীয় শতাব্দীর প্রসিদ্ধ ধর্মগুরু কার্থেজের প্রেসবিটার (Presbyter) টার্টোলিন (Tertullian), যিনি ২২০ খৃস্টাব্দের পরে মৃত্যুবরণ করেন, তিনিই সর্বপ্রথম এ পরিভাষাটি ব্যবহার করেন। তখনো এ পরিভাষাটির অর্থ ও ব্যবহার স্পষ্ট ছিল না। সত্যিকার অর্থে বিগত ২০০০ বৎসরে কখনো এ পরিভাষাটির অর্থ স্পষ্ট হয় নি। খৃস্টধর্মের মধ্যে অগণিত দল, উপদল ও মতভেদ মূলত এ বিশ্বাসটির ব্যাখ্যা নিয়ে। প্রথম খৃস্টীয় শতকগুলিতে অনেক খৃস্টান সম্প্রদায়ই একেশ্বরবাদী ছিলেন। মানুষ ঈশ্বর হতে পারে, বা ঈশ্বর মানুষের দেহ গ্রহণ করতে পারেন এরূপ বিশ্বাস কখনোই ইহূদীদের মধ্যে ছিল না। তবে পৌত্তলিক রোমানগণের মধ্যে এরূপ বিশ্বাস অতি-প্রচলিত ছিল। তাঁরা সম্রাটকেও ঈশ্বর বা ঈশ্বরের প্রতিভু হিসাবে পূজা করতেন। এছাড়া গ্রীক দর্শনভিত্তিক রোমান ধর্মে ‘প্রজ্ঞা’ (Logos)-কে ঈশ্বরের প্রকাশ বলে বিশ্বাস করা হতো। পৌল ও প্রথম যুগের কিছু খৃস্টান গুরু এ সকল বিশ্বাসকে ভিত্তি করে প্রথমে ‘যীশুর’ ঈশ্বরত্ব প্রমাণের চেষ্টা করেন। এরপর এ বিশ্বাসের সাথে ‘একত্ববাদে’র সমন্বয় এবং যিশুর ঈশ্বরত্বের সাথে মানবত্বের সমন্বয় করার ক্রমাগত প্রচেষ্টার চূড়ান্ত রূপ হলো এই ত্রিত্ববাদ। এখানে পাঠকের জন্য ‘এনসাইক্লোপীডিয়া ব্রিটানিকায়’ ত্রিত্ববাদ’ সম্পর্কে যা লেখা হয়েছে তা থেকে কিছু কথা উল্লেখ করছি:Neither the word Trinity nor the explicit doctrine appears in the New Testament, nor did Jesus and his followers intend to contradict the Shema in the Old Testament: "Hear, OIsrael: The Lord our God is one Lord" (Deuteronomy 6:4). The earliest Christians, however, had to cope with the implications of the coming of Jesus Christ and of the presumed presence and power of God among them, i.e, the Holy Spirit, whose coming was connected with the celebration of the Pentecost. The Father, Son, and Holy Spirit were associated in such New Testament passages as the Great Commission: "Go therefore and make disciples of all nations, baptizing them in the name of the Father and of the Son and of the Holy Spirit" (Matthew 28:19); and in the apostolic benediction: "The grace of the Lord Jesus Christ and the love of God and the fellowship of the Holy Spirit be with you all" (2 Corinthians 13:14). Thus, the New Testament established the basis for the doctrine of the Trinity. The doctrine developed gradually over several centuries and through many controversies. Initially, both the requirements of monotheism inherited from the Old Testament and the implications of the need to interpret the biblical teaching to Greco-Roman religions seemed to demand that the divine in Christ as the Word, or Logos, be interpreted as subordinate to the Supreme Being. An alternative solution was to interpret Father, Son, and Holy Spirit as three modes of the self-disclosure of the one God but not as distinct within the being of God itself. The first tendency recognized the distinctness among the three, but at the cost of their equality and hence of their unity (subordinationism); the second came to terms with their unity, but at the cost of their distinctness as "persons" (modalism). It was not until the 4th century that the distinctness ofthe three and their unity were brought together in a single orthodox doctrine of one essence and three persons.....] আলোচনার পূর্বে ভুমিকায় কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেছি। এ বিষয়গুলি পাঠককে পরবর্তী পরিচ্ছেদগুলির আলোচনা হৃদয়ঙ্গম করতে সাহায্য করবে।

১ম বিষয়: পুরাতন নিয়মের পুস্তকগুলি বারংবার ঘোষণা করছে যে, আল্লাহ বা ঈশ্বর এক, একক, অনাদি, অনন্ত, চিরন্তন, স্ত্রী-সন্তানগ্রহণ থেকে পবিত্র, অমরণশীল, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, তিনি যা ইচ্ছা করেন তাই করেন। কোনো কিছুই তাঁর সাথে তুলনীয় নয়, তাঁর সত্ত্বাতেও নয় এবং তাঁর গুণাবলিতেও নয়। তিনি দেহ ও আকৃতি থেকে পবিত্র। এই বিষয়গুলি পুরাতন নিয়মের পুস্তকাবলিতে এত বেশি বলা হয়েছে এবং এত বেশি প্রসিদ্ধ যে এগুলির জন্য উদ্ধৃতি বা সাক্ষ্য-প্রমাণ পেশ করা নিষ্প্রয়োজন।

২য় বিষয়: আল্লাহ বা ঈশ্বর ছাড়া অন্য কাউকে উপাসনা বা পূজা করা নিষিদ্ধ। তোরাহ বা পুরাতন নিয়মের বিভিন্ন স্থানে এ বিষয়ে বারংবার বলা হয়েছে। যেমন, যাত্রাপুস্তকের ২০/৩, ৪, ৫, ২৩; ৩৪/১৪, ১৭; দ্বিতীয় বিবরণ ১৩/১-১১, ১৭/২-৭ ইত্যাদি।

তাওরাতে সুস্পষ্ট বলা হয়েছে যে, যদি কেউ আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত, উপাসনা, পূজা বা আরাধনার কথা প্রচার করে বা এরূপ করতে আহবান করে তবে তাকে হত্যা করতে হবে, তিনি যদি মহা মহা অলৌকিক চিহ্ন বা মুজিযার অধিকারী নবীও হন। অনুরূপভাবে তাওরাতে সুস্পষ্টত বলা হয়েছে যে, যদি কোনো ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত, উপাসনা বা পূজা করে বা এরূপ করতে কাউকে উদ্বুদ্ধ করে বা অনুপ্রেরণা দেয় তবে তাকে পাথর মেরে হত্যা করতে হবে। এরূপ ব্যক্তি নারী হোক আর পুরুষ হোক, আত্মীয় হোক, অনাত্মীয় হোক বা বন্ধু হোক সর্বাবস্থায় তাকে এভাবে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করতে হবে। [দ্বিতীয় বিবরণ ১৩/১-১১, ১৭/২-৭।]

তৃতীয় বিষয়: তোরাহ-এর বিভিন্ন শ্লোক থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহর কোনো তুলনীয় নেই এবং তিনি কোনো সৃষ্টির মত নন। দ্বিতীয় বিবরণের ৪র্থ অধ্যায়ের ১২ ও ১৫ শ্লোক নিম্নরূপ: ‘‘(১২) তখন অগ্নির মধ্য হইতে সদাপ্রভু তোমাদের কাছে কথা কহিলেন; তোমরা বাক্যের রব শুনিতেছিলে, কিন্তু কোনো মুর্তি দেখিতে পাইলে না, কেবল রব হইতেছিল। ... (১৫) যে দিন সদাপ্রভু হোরেবে অগ্নির মধ্য হইতে তোমাদের সহিত কথা কহিতেছিলেন, সেই দিন তোমরা কোন মুর্তি দেখ নাই; অতএব আপন আপন প্রাণের বিষয়ে অতিশয় সাবধান হও।’’

নতুন নিয়মের অনেক স্থানেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, পৃথিবীতে ঈশ্বরকে দেখা যায় না। যোহনলিখিত সুসমাচারের ১ম অধ্যায়ের ১৮ শ্লোকে বলা হয়েছে: ‘‘ঈশ্বরকে কেহ কখনো দেখে নাই।’’

তীমথিয়ের প্রতি প্রেরিত পৌলের প্রথম পত্র ৬/১৬ শ্লোক: ‘‘যাঁহাকে মনুষ্যদের মধ্যে কেহ কখনও দেখিতে পায় নাই, দেখিতে পারেও না।’’

যোহনের প্রথম পত্র ৪/১২: ‘‘ঈশ্বরকে কেহ কখনও দেখে নাই।’’

এ সকল শ্লোক দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, ঈশ্বরের কোনো তুলনা বা নমুনা নেই। সৃষ্টির কোনো কিছুই তার সাথে তুলনীয় নয়। তাকে পৃথিবীতে দেখা যায় না। যাকে দেখা যায় তিনি কখনোই ঈশ্বর হতে পারেন না, যদিও ঈশ্বরের বাক্যে, ভাববাদিগণের বাক্যে বা প্রেরিতগণের বাক্যে তাঁর বিষয়ে ‘ঈশ্বর’, ‘প্রভু’ বা অনুরূপ কোনো শব্দ ব্যবহার করা হয়। কাজেই কারো বিষয়ে শুধু ‘ঈশ্বর’ (God), সদাপ্রভু (Lord), উপাস্য (god) বা অনুরূপ কোনো শব্দের প্রয়োগ দেখেই ধোঁকাগ্রস্থ হয়ে তাঁকে ঈশ্বর বলে পূজা করা যায় না। কারণ জ্ঞান, বুদ্ধি, বিবেক ও বাইবেলের দ্ব্যর্থহীন বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক প্রয়োগকে রূপক অর্থে গ্রহণ করা জরুরী।

বাইবেলের বিভিন্ন পুস্তকে অগণিত স্থানে ফিরিশতা, ঈশ্বরের দূত, মূসা আলাইহিস সালাম, ভাববাদী, ইস্রায়েল-বংশীয় বিচারকর্তৃগণ, ভাল মানুষ, সাধারণ মানুষ, এমনকি শয়তানকে ‘‘ঈশ্বর’’ বা উপাস্য বলা হয়েছে। [সামান্য কয়েকটি নমুনা দেখুন: যাত্রাপুস্তক ৭/১ ‘‘তখন সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, দেখ, আমি ফরৌণের কাছে তোমাকে ঈশ্বর করিয়া (I have made thee a god to Pharaoh) (বাংলা বাইবেলে: ‘‘ঈশ্বর স্বরূপ করিয়া’’, আসলে ‘‘স্বরূপ’’ শব্দটি অতিরিক্ত) নিযুক্ত করিলাম; আর তোমার ভ্রাতা হারোণ তোমার ভাববাদী হইবে।’’ এখানে মোশিকে ঈশ্বর বলা হয়েছে। গীতসংহিতা ৮২/৬: ‘আমিই বলিয়াছি, তোমরা ঈশ্বর, তোমরা সকলে পরাৎপরের (মহান ঈশ্বরের) সন্তান (I have said, Ye are gods; and all of you are children of the Most High)।’’ এখানে শুধু বিশেষ মানুষদেরকেই নয় গড়ভাবে সাধারণ মানুষদেরকে ‘‘ঈশ্বর’’ ও ‘‘ঈশ্বরের পুত্র’’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২ করিন্থীয় ৪/৪ ‘‘তাহাদের মধ্যে এই যুগের ঈশ্বর (god of this world: এখানে বাংলা বাইবেলে ও ‘ইঞ্জিলে (god) অর্থ ‘দেব’ বা ‘দেবতা’ বলা হয়েছে; অথচ অন্যান্য স্থানে God ও god : আল্লাহ এবং ইলাহ উভয়ের অর্থই ‘ঈশ্বর’ লেখা হয়েছে) অবিশ্বাসীদের মন অন্ধ করিয়াছে, যেন ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি যে খৃস্ট তাঁহার গৌরবের সুসমাচারের দীপ্তি তাহাদের প্রতি উদয় না হয়।’’] ঈশ্বর ছাড়া অন্য কারো ক্ষেত্রে যখন ঈশ্বর শব্দের প্রয়োগ করা হয় তখন এরূপ ব্যবহারের পিছনে নির্ধারিত কোনো কারণ বা সূত্র থাকে। মূল বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে উপস্থাপন করলে শ্রোতা বা পাঠক সে সূত্র অনুধাবন করতে পারেন। কাজেই ঈশ্বর ছাড়া অন্য কারো ক্ষেত্রে ‘‘ঈশ্বর’’ বা অনুরূপ শব্দের প্রয়োগ দেখে বাইবেলের দ্ব্যর্থহীন নির্দেশনা ও মানবীয় জ্ঞান-বিবেক বিসর্জন দিয়ে তাকে প্রকৃত ঈশ্বর, ঈশ্বরের পুত্র, ঈশ্বরের অংশ বা উপাস্য বলে দাবি করা কোনো বিবেকবান সজ্ঞান মানুষের জন্য সম্ভব নয়।

চতুর্থ বিষয়: কোনো নবী বা ভাববাদী কখনো ‘‘ত্রিত্ববাদ’’ প্রচার করেন নি, ত্রিত্ববাদের পক্ষে কিছু বলেন নি এবং কোনো আসমানী গ্রন্থে এ বিষয়ক কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয় নি। তাওরাত বা মোশির ব্যবস্থা ও ধর্মবিশ্বাসে এবং তাঁর অনুসারীদের মধ্যে যে ত্রিতত্ত্ববাদের অস্তিত্ব নেই তা সকলেই জানেন। এজন্য কোনো পৃথক প্রমাণ পেশের প্রয়োজন নেই। যে কেউ প্রচলিত তোরাহ পাঠ করলেই দেখবেন যে, এর মধ্যে সুস্পষ্টভাবে, অস্পষ্টভাবে, ইশারা-ইঙ্গিতে বা কোনোভাবে ত্রিত্ববাদের কথা উল্লেখ করা হয় নি। মূসা আলাইহিস সালাম-এর যুগ থেকে আজ পর্যন্ত কোনো ইয়াহূদী আলিম, পণ্ডিত বা ধর্মগুরু ত্রিত্ববাদী বিশ্বাস স্বীকার করতে বা এরূপ বিশ্বাসের কোনো প্রমাণ তাদের ধর্মগ্রন্থে আছে বলে কখনোই স্বীকার করবেন না।

যদি ত্রিত্ববাদ সত্য হতো তাহলে অবশ্যই মূসা আলাইহিস সালাম থেকে ঈসা আলাইহিস সালাম পর্যন্ত ইস্রায়েলীয় ভাববাদীগণ সকলেই এ বিষয়টি সুস্পষ্ট ও বোধগম্যভাবে ব্যাখ্যা করতেন এবং ঈশ্বরের এ গুণটি সকলের বোধগম্য করে ব্যাখ্যা করাই তাদের মূল দায়িত্ব হতো। কারণ তাদের দায়িত্ব ছিল মূসার শরীয়তের বা ব্যবস্থার বিশ্বাস ও কর্ম উভয় দিকের সকল নির্দেশ পালন করা।

ত্রিত্ববাদীগণ বিশ্বাস করেন যে, ত্রিত্বে বিশ্বাস করা, অর্থাৎ পিতা, পুত্র ও পবিত্র আত্মা এ তিনিটি স্বয়ংসম্পূর্ণ, স্বাধীন ও পৃথক তিনটি সত্ত্বার সমন্বয়ে ঈশ্বরের সত্ত্বা গঠিত এবং এ তিনটি সম্পূর্ণ স্বাধীন, পৃথক ও পরিপূর্ণ ঈশ্বর মিলে এক ঈশ্বর- এ কথা বিশ্বাস করাই মুক্তির একমাত্র পথ। কোনো মানুষ, এমনকি কোনো ভাববাদীও ত্রিত্বে বিশ্বাস না করলে তিনি পরকালে মুক্তি পাবেন না বা ‘‘ঈশ্বরের রাজ্যে’’ প্রবেশ করতে পারবেন না।

বড় অবাক লাগে যে, ঈশ্বরের যে গুণটি বিশ্বাস না করলে ভাববাদী ও অ-ভাববাদী কোনো মানুষেরই মুক্তি নেই, সে গুণটির কথা মোশি থেকে যীশু পর্যন্ত একজন ভাববাদীও স্পষ্টভাবে সকলের জন্য বোধগম্য করে ব্যাখ্যা করলেন না। কেউই বিষয়টির আলোচনা করে এ বিষয়ক সকল সন্দেহ নিরসন করলেন না। খৃস্টধর্মের প্রতিষ্ঠাতা সাধু পলের মতে যে বিষয়গুলি একেবারেই গুরুত্বহীন, দূর্বল ও অপূর্ণ, সেই বিষয়গুলি মোশি ও সকল ভাববাদী কত বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করলেন, একবার বলে আবার বললেন, বারংবার বিভিন্ন ভাবে বুঝালেন, সেগুলি মেনে চলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব দিলেন, সেগুলি অমান্যকারীকে মৃত্যুদন্ড প্রদানের বিধান দিলেন.... অথচ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুক্তির উৎসটির বিষয়ে কিছুই বললেন না!!

এর চেয়েও অবাক বিষয় হলো, স্বয়ং যীশু তাঁর ঊর্ধ্বারোহণ পর্যন্ত কখনোই এই ‘বিশ্বাস’টিকে পরিস্কারভাবে বুঝিয়ে বললেন না। তিনি কখনোই বললেন না যে, ‘‘ঈশ্বর তিনটি স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব ও সত্তা (three hypostases or three concrete realities): পিতা, পুত্র ও পবিত্র আত্মা। তন্মধ্যে পুত্র সত্তা আমার দেহের সাথে অমুকভাবে সম্পর্কিত ও সম্মিলিত হয়েছে। অথবা পুত্র সত্তাটি আমার দেহের সাথে এমন একভাবে সম্পর্কিত ও সম্মিলিত হয়েছে যার নিগূঢ় তত্ত্ব তোমাদের জ্ঞানের ধারণ ক্ষমতার বাইরে। কাজেই তোমরা জেনে রাখ যে, উক্ত সম্পর্কের ভিত্তিতে আমিই ঈশ্বর।’’ অথবা এই অর্থে এমন কোনো কথা বললেন না যাতে অন্তত এ বিশ্বাসটি স্পষ্টরূপে জানা যেত। ত্রিত্ববাদী খৃস্টানগণ ত্রিত্বের পক্ষের তাঁর কোনো স্পষ্ট বাক্য পেশ করতে পারেন না। শুধু কয়েকটি দ্ব্যর্থবোধক অস্পষ্ট বাক্যই তাঁদের সম্বল।

‘মীযানুল হক্ক’ (Scale of Truth) গ্রন্থের প্রণেতা ড. ফান্ডার (Carl Gottaleb Pfander) তাঁর ‘মিফতাহুল আসরার’ (রহস্যের চাবি) নামক পুস্তকে বলেন: ‘‘আপনি যদি বলেন যে, তাহলে কেন যীশু তাঁর ঈশ্বত্বের কথা আরো পরিস্কারভাবে বললেন না? তিনি কেন স্পষ্টভাবে ও এককথায় বললেন না যে, ‘আমিই ঈশ্বর’?’’...

এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন: ‘‘কারণ, তাঁর পুনরুত্থান ও ঊর্ধ্বারোহণের পূর্বে কেউ এ সম্পর্ক এবং একত্ববাদ বুঝতে সক্ষম ছিলেন না। তিনি যদি এ কথা বলতেন তবে তাঁরা বুঝতেন যে, তিনি তাঁর মানবীয় দেহ অনুসারে ঈশ্বর। আর এই কথাটি নিশ্চয়ই বাতিল। এই কথাটি হৃদয়ঙ্গম করাও সে সকল বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত যেগুলির বিষয়ে তিনি বলেন: ‘‘তোমাদিগকে বলিবার আমার আরও অনেক কথা আছে, কিন্তু তোমরা এখন সে সকল সহ্য করিতে পার না। পরন্তু তিনি, সত্যের আত্মা (the Spirit of truth : আল-আমীন, আস-সাদিক) যখন আসিবেন, তখন পথ দেখাইয়া তোমাদিগকে সমস্ত সত্যে লইয়া যাইবেন; কারণ তিনি আপনা হইতে কিছু বলিবেন না, কিন্তু যাহা যাহা শুনেন তাহাই বলিবেন, এবং আগামী ঘটনাও তোমাদিগকে জানাইবেন।’’ [যোহন ১৬/১২-১৩। এখানে সুস্পষ্টতই মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আগমনের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে। এই গুণাবলির সবগুলিই তাঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এবং কোনোভাবেই ‘পবিত্র আত্মার’ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।...]

এরপর তিনি বলেন: ‘‘ইয়াহূদী ধর্মের নেতৃবৃন্দ অনেকবারই তাঁকে গ্রেফতার করতে ও প্রস্তরাঘাতে হত্যা করতে চেয়েছেন, অথচ তিনি তাঁর ঈশ্বরত্বের কথা তাঁদের সামনে একান্তই ধাঁধার আকারে পেশ করেছিলেন।’’

পাদরী সাহেবের বক্তব্য থেকে জানা গেল যে, দুইটি কারণে যীশু তাঁর ঈশ্বরত্বের কথা স্পষ্ট করে জানান নি:

প্রথমত, তাঁর ঊর্ধ্বারোহণের পূর্বে কেউ তা বুঝতে সক্ষম ছিল না।

দ্বিতীয়ত, ইয়াহূদীদের ভয়।

দুইটি ওজরই অত্যন্ত দুর্বল ও একান্তই অবাস্তব ব্যাখ্যা।

প্রথম বিষয়টি একেবারেই বাতিল। কারণ এক্ষেত্রে তাঁর এতটুকু কথাই যথেষ্ট ছিল যে, ‘‘আমার দেহের সাথে ঈশ্বরের দ্বিতীয় সত্ত্বা (পুত্রের সত্তার) সম্মিলন ও সংমিশ্রণের বিষয়টি বুঝা তোমাদের সাধ্যের বাইরে। কাজেই তোমরা এ বিষয়ে গবেষণা বাদ দেও। তোমরা শুধু বিশ্বাস কর যে, আমি এ মানবীয় দেহের হিসাবে ঈশ্বর নই; বরং উপর্যুক্ত সম্মিলনের ও সংমিশ্রণের ভিত্তিতে আমি ঈশ্বর।’’ [এ কথাগুলি তিনি নিজে মুখে বললে তাঁর ঈশ্বরত্বের বিষয়টি বুঝা কতই না সহজ হতো! হাজার বছর ধরে তাঁর অনুসারীদের আর ঝগড়া ও দলাদলি করতে হতো না!! তিনি কত কথা বললেন! কত অপ্রয়োজনীয় (!) কথা বললেন, যেগুলি সব তাঁর শিষ্যরা ‘রহিত’ করে দিলেন! ধার্মিকতার বিষয়ে কত কথা বললেন, যেগুলি মূলত পাপমোচন ও মুক্তির জন্য অপ্রয়োজনীয়। কত কথা তিনি বললেন, যা শিষ্যগণ না বুঝলে আবার বুঝিয়ে দিলেন। ... অথচ যে বিষয়টির উপর পাপমোচন ও মুক্তি নির্ভর করছে, সেই বিষয়টি তিনি একেবারেই বুঝালেন না।... তিনি নিজের প্রাণ উৎসর্গ করলেন বিশ্বের পাপ মোচনের জন্য, অথচ যে বিশ্বাস দিয়ে পাপ মোচন হবে সে বিশ্বাসের কথাটি বুঝালেন না!]

এছাড়া তাঁর সাথে ঈশ্বরত্বের সম্পর্ক বুঝার অক্ষমতা তাঁর ঊর্ধ্বারোহণের পরে দূরীভূত হয়েছে বলে যে দাবি তিনি করেছেন তা একেবারেই ভিত্তিহীন। এ বিষয়টি বুঝার অক্ষমতা এর পরেও একইভাবে বিদ্যমান। আজ পর্যন্ত একজন খৃস্টান পণ্ডিতও এ সম্পর্ক ও একত্ববাদের সাথে এর সম্পর্ক সঠিকভাবে বুঝতে পারেন নি। যে যা বলেছেন সবই আন্দাযে ঢিল ছুঁড়েছেন। প্রত্যেকের কথার মধ্যেই কঠিন সমস্যা ও বিভ্রান্তি রয়েছে। সর্বদা তাঁরা একে অপরকে বিভ্রান্ত বলে অভিযোগ করেছেন। এজন্যই প্রটেস্টান্ট পণ্ডিতগণ এ সম্পর্ক ব্যাখ্যা করা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছেন। মি. ফান্ডারও তাঁর পুস্তকাদিতে বিভিন্ন স্থানে স্বীকার করেছেন যে, এ বিষয়টি একটি গূঢ় রহস্য যা জ্ঞান দ্বারা বুঝা সম্ভব নয়। [ত্রিত্বের সাথে একত্বের সমন্বয় ও খৃস্টের ঈশ্বরত্বের সাথে মনুষ্যত্বের সমন্বয়ের দাবিটি একটি অযৌক্তিক ও বুদ্ধিবিরোধী বিষয়। ফলে খৃস্টানগণ কখনোই এ বিষয়ে একমত হতে পারেন নি। খৃস্টানদের ধর্মীয় ইতিহাস ও অগণিত যাজকীয় সম্মেলনের (ecumenical council) বিবরণ পাঠ করলেই পাঠক তা জানতে পারবেন। এখানে উল্লেখ্য যে, ‘অবতারবাদ’ বা মানুষরূপে ঈশ্বরের (God incarnate) আগমন বিষয়ক ধর্মবিশ্বাস বিভিন্ন প্রাচীন ধর্মের মধ্যে দেখা যায়। হিন্দুধর্মেও এই বিশ্বাস রয়েছে। কিন্তু এই বিশ্বাসটির ব্যাখ্যা করতে যেয়ে খৃস্টানদের মত বিপদে কেউ পড়েন নি। হিন্দুরা খুবই সহজভাবে কৃষ্ণকে ঈশ্বরের অবতার (God incarnate) বলে বিশ্বাস করেন। এর ব্যাখ্যা চাইলে তারা অতি সহজে বলবেন যে, ঈশ্বর মানুষ রূপে এসেছিলেন.... ইত্যাদি। আবার খৃস্টানরা খৃস্টকে ঈশ্বরের অবতার (God incarnate) বলে বিশ্বাস করেন। কিন্তু এর ব্যাখ্যা দিতে তাঁদের খুবই বেগ পেতে হয়। মূলত পুরাতন নিয়মের একেশ্বরবাদী ধর্মবিশ্বাসের সাথে এই অবতার বাদের সমন্বয় করতে যেয়েই এই বিপদ। এর পাশাপাশি নতুন নিয়মের কিছু কথাও তাঁদেরকে বিপদে ফেলেছে। ৪টি বিষয় তাঁদেরকে বিপদগ্রস্থ করেছে: (১) ঈশ্বরকে তিনটি পরিপূর্ণ স্বাতন্ত্রময় সত্তায় বিভক্ত করা, (২) আবার এই তিনটি স্বতন্ত্র সত্তাকে এক বলে দাবি করা, (৩) এই তিনের একজন খৃস্টের মধ্যে আবার পৃথক দুইটি সত্তার অস্তিত্ব দাবি করা এবং (৪) এই ঈশ্বর মানব জাতির পাপের জন্য প্রাণ দিয়েছেন বলে দাবি করা। এই ৪টি বিষয়ের সমন্বিত ব্যাখ্যা তাঁদের জন্য এত কঠিন যে, প্রকৃতপক্ষে কেউ এর ব্যাখ্যা দিতে পারেন না। ফলে একজনের ব্যাখ্যার সাথে অন্যজনের ব্যাখ্যা মিলে না। প্রাচীন যুগ থেকে অগণিত খৃস্টান ধর্মগুরু ও পন্ডিতের মতামত পাঠ করলেই পাঠক তা বুঝতে পারবেন। খৃস্টধর্মের অগণিত দল উপদলও মূলত এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই জন্মেছিল। কোনো খৃস্টানই এই তিনটি বিষয়ের সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেন না। এ বিষয়ক কিছু মতামত দেখুন: Encyclopaedia Britannica, articles: Chalcedon, Council of; Syrian Orthodox Patriarchate of Antioch, Nestorius; Nestorian, Monarchianism; Paul Of Samosata, etc.বর্তমানে অনেকেই এ বলে পার পেতে চান যে, ত্রিত্ববাদ একটি অযৌক্তিক ও অবাস্তব বিষয়, তবে যেহেতু ধর্মগ্রন্থে রয়েছে তাই আমরা বিশ্বাস করি (an irrational truth found in revelation)। তাদের এ কথাটি প্রতারণা মাত্র। প্রথমত, কখনোই কোনো ধর্মগ্রন্থে ত্রিত্ববাদের এ কথাগুলি নেই। প্রচলিত বিকৃত বাইবেলের মধ্যেও কোথাও ত্রিত্ববাদ (Trinity) শব্দটিই নেই, এর সংজ্ঞা বা ব্যাখ্যা তো অনেক দূরের কথা। দ্বিতীয়ত, যদি কোনো ধর্মগ্রন্থে এরূপ কথা থাকে তবে তা প্রমাণ করবে যে, তা মহান আল্লাহর দেওয়া ওহী নয়; কারণ ওহী ও মানবীয় জ্ঞান উভয়ই একই উৎস থেকে আগত, কাজেই উভয়ের মধ্যে ব্যতিক্রম থাকতে পারে, তবে সংঘর্ষ থাকতে পারে না। বিস্তারিত দেখুন: ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা, পৃ. ৭০-৭৩।]

দ্বিতীয় ওযরটিও একইভাবে বাতিল। কেন যীশু খৃস্ট ধাঁধার আকারে তার ঈশ্বরত্বের কথা বলবেন? কেন তিনি ইয়াহূদীদেরকে ভয় পাবেন? খৃস্টানদের বিশ্বাস অনুসারে তাঁর আগমনের তো একটিই উদ্দেশ্য, তা হলো ক্রুশে চড়ে প্রাণ দিয়ে সৃষ্টির পাপ মোচন। ইয়াহূদীদের হাতে ক্রুশবিদ্ধ হতেই তো তিনি এসেছিলেন। তিনি নিশ্চিতরূপে জানতেন যে, ইয়াহূদীরা তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করবে। কখন তাঁরা তাঁকে ক্রশবিদ্ধ করবে তাও তিনি জানতেন। কাজেই তিনি সঠিক বিশ্বাসটি ব্যাখ্যা করতে ভয় পাবেন কেন?

বড় অবাক কান্ড! আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্ঠা, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টদের থেকে ভয় পাচ্ছেন! তাঁর সৃষ্টির মধ্যে একটি দুর্বল জাতিকে তিনি এত ভয় পাচ্ছেন যে, ভয়ের চোটে সেই কথাটিও বলতে পারছেন না, যে কথাটি বিশ্বাস করার উপরে মুক্তি ও পূর্ণতা নির্ভর করছে। অথচ সেই ঈশ্বরেরই সৃষ্ট ভাববাদিগণ, যেমন যিরমিয়, যিশাইয়, যোহন, এরা তাঁদের সামনে সত্য বলতে ভয় পাচ্ছেন না। তাঁদেরকে কঠিন ভাবে যন্ত্রণা ও শাস্তি প্রদান করা হচ্ছে। কাউকে আবার হত্যাও করা হচ্ছে! কিন্তু তাঁরা সত্য প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছেন না।

এর চেয়েও অবাক বিষয় হলো, খৃস্ট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ বিশ্বাসটি সঠিকভাবে বলার ক্ষেত্রে ইয়াহূদীদেরকে ভয় পাচ্ছেন। অথচ সৎকার্যে আদেশ ও অন্যায় থেকে নিষেধ করার বিষয়ে তাঁদেরকে কঠোরতার সাথে সত্য কথা বললেন। এমনকি সে বিষয়ে তাঁদেরকে গালাগালি করলেন। তিনি ইয়াহূদী অধ্যাপক ও ফরীশীগণকে মুখোমুখি সম্বোধন করে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় তাদের গালি দিয়েছেন ও তাদের অনাচার মানুষদের সামনে প্রকাশ করে দেন। এমনকি তাঁদের একজন তাঁকে অভিযোগ করে বলেন যে, ‘‘হে গুরু, এ কথা বলিয়া আপনি আমাদেরও অপমান করিতেছেন।’’ মথি ২৩/১৩-৩৭ ও লূক ১১/৩৭-৫৪-এ সকল বিষয় বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। [মথি ২৩/১৩-৩৭; লূক ১১/৩৭-৫২।]

এর পরেও কিভাবে মনে করা যায় যে, খৃস্ট ইয়াহূদীদের ভয়ে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় এ বিশ্বাসটি স্পষ্ট করে বলেন নি? কখনোই তা তাঁর মহান ব্যক্তিত্বের ক্ষেত্রে ঘটতে পারে না, কখনোই না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন