hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সংক্ষেপিত ইযহারুল হক্ক

লেখকঃ ড. মুহাম্মাদ আহমদ আব্দুল কাদির মালকাবী

৪৮
৩. ১. ১. ২. অত্যাশ্চার্য কাব্যিক গদ্য ও বিন্যাস
কুরআন কোনো মানুষের রচিত বাণী নয়, বরং তা আল্লাহর বাণী একথার দ্বিতীয় প্রমাণ হলো বিন্যাস। এ বিষয়টিও ভাষা কেন্দ্রিক। কুরআনে ভাষার সর্বোচ্চ সাহিত্যমান ও অলঙ্কার সংরক্ষণ ছাড়াও এর ‘কাব্যিক গদ্য’ আরবী ভাষায় এক অত্যাশ্চার্য ও অতুলনীয় বিষয়। এর বাক্য বিন্যাস, প্রতি বাক্যের শেষের মিল ও ছন্দ, অভ্যন্তরীণ অর্থ ও অর্থের আবহ ইত্যাদি বিষয় আরবের ভাষাবিদ কাবি-সাহিত্যিকদের হতবাক করে দিয়েছে। এই অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণ হলো, কোনো কুরআন বিরোধী গায়ের জোরেও যেন বলতে না পারে যে, অমুক বা তমুক সাহিত্যিক, কবি বা লেখকের লেখা থেকে এ কথাগুলি বা এ বিন্যাস চুরি করা হয়েছে। এভাবে কুরআন সকল মানবীয় কাব্য ও সাহিত্যের উপরে নিজের স্থান নিশ্চিত করেছে।

একজন কবি বা সাহিত্যিক তার গদ্য বা পদ্যে যত চেষ্টাই করুন, সমালোচনার ঊর্ধ্বে উঠতে পারেন না এবং তার পুরো সাহিত্যকর্মকে নির্ভুল করতে পারবেন না। এজন্য কবি-সাহিত্যিকগণকে তাদের সাহিত্যের জন্য যেমন প্রশংসা করা হয়েছে, তেমনি তাদের ভুলভ্রান্তি বা দুর্বলতার জন্য তাদের নিন্দাও করা হয়েছে। সকল জাঁদরেল কবি ও সাহিত্যিকের সাহিত্য কর্মের মধ্যে ভুলভ্রান্তি ধরা পড়েছে। আরবের সম্ভ্রান্ত গোত্রপতিগণ আরবী ভাষায় তাদের পরিপূর্ণ দখল এবং ইসলামের প্রতি তাদের কঠিনতম শত্রুতা সত্ত্বেও তারা কুরআনের সাহিত্যিক, আলঙ্কারিক ও বিন্যাসের মানের ক্ষেত্রে কোনো সমালোচনার সুযোগ পান নি। তারা এ বিষয়ে কুরআনের কোনো সমালোচনা করতে সক্ষম হন নি।

তারা স্বীকার করেন যে, কুরআন আরবীয় সাহিত্যিকদের গদ্য সাহিত্য বা কবিদের কবিতা কোনোটির সাথেই তুলনীয় নয়। এর যাদুকরী আকর্ষণীতায় অবাক হয়ে কখনো তারা একে ‘যাদু’ বলে অভিহিত করেছেন। [নিম্নের আয়াতগুলি দেখুন: সূরা আনআম: ৭, ইউনূস: ২, হূদ: ৭, হিজর: ১৫, ইসরা: ৪৭, আনবিয়া: ৩, ফুরকান: ৮, সাবা: ৪৩, সাফ্ফাত: ১৫, সাদ: ৪, যুখরুফ: ৩০, আহকাফ: ৭, কামার: ২, মুদ্দাসি্সর: ২৪ আয়াত।] কখনো তারা বলেছেন, এগুলি পূর্ববর্তী যুগের গল্প-কাহিনী [নিম্নের আয়াতগুলি দেখুন: সূরা আনআম: ২৫, আনফাল: ৩১, নাহল: ২৪, মুমিনূন: ৮৩, ফুরকান: ৫, নামল: ৬৮, আহকাফ: ১৭, কালাম: ১৫, মুতাফ্ফিফীন: ১৩ আয়াত।] এবং বানোয়াট কথা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা বানিয়েছেন [নিম্নের আয়াতগুলি দেখুন: সূরা ফুরকান; ৪, সাবা: ৪৩, আহকাফ ১১ আয়াত।]। কখনো তারা তাদের অনুসারী ও সাথীদেরকে বলেছেন: ‘‘তোমরা এই কুরআন শ্রবণ করো না এবং তা আবৃত্তিকালে শোরগোল সৃষ্টি কর, যাতে তোমরা জয়ী হতে পার।’’ [সূরা : ৪১ ফুসসিলাত (হা-মীম-আস্সাজদা): ২৬ আয়াত।]

এগুলি সবই কথার যুদ্ধে পরাজিত হতবাক শত্রুর আচরণ। এতে প্রমাণিত হয় যে, কুরআন তার অলঙ্কার, সর্বোচ্চ সাহিত্যমান ও সর্বোত্তম বিন্যাস পদ্ধতিতে অননুকরণীয় ও অলৌকিক।

আর একথা কিভাবে কল্পনা করা যায় যে, ভাষার যাদুকর স্বভাব-কবি আরবগণ যারা সংখ্যায় মরুভূমির বালুকা ও পাহাড়ি প্রান্তরের কাঁকরের মত অগণিত, যাদের জাহিলী অপ্রতিরোধ্য উগ্র ধর্মান্ধতা ও উৎকট জাত্যাভিমান, প্রতিপক্ষের বিরোধিতায় ও মর্যাদা রক্ষার প্রতিযোগিতায় তাদের আত্মত্যাগের চূড়ান্ত অনুভুতি সুপ্রসিদ্ধ, তারা জন্মভূমি পরিত্যাগ, রক্তপাত, জীবন ত্যাগ করার পথ বেছে নিল, তাদের সন্তানসন্ততি ও পরিবার পরিজন যুদ্ধবন্দী হলো, তাদের ধনসম্পদ লুণ্ঠিত হলো। অথচ তাদের প্রতিপক্ষ সকল মানুষের সামনে তাদেরকে একটিমাত্র চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন।

তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা করছেন: ‘‘আমি আমার বান্দার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছি তাতে তোমাদের কোনো সন্দেহ থাকলে তোমরা তার অনুরূপ একটি সূরা আনয়ন কর এবং তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের সকল সাহায্যকারীকে আহবান কর। যদি তোমরা তা করতে না পার- আর কখনোই তা করতে তোমরা পারবে না- তবে সেই নরকাগ্নিকে ভয় কর, মানুষ এবং পাথর যার ইন্ধন, অবিশ্বাসীদের জন্য যা প্রস্তুত রয়েছে।’’ [সূরা: ২ বাকারা, ২৩-২৪ আয়াত।]

আরো বলেছেন: ‘‘তবে তোমরা এর অনুরূপ একটি সূরাই আনয়ন কর এবং আল্লাহ ব্যতীত অপর যাকে পার আহবান কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’’ [সূরা : ১০ ইউনূস, ৩৮ আয়াত।]

অন্যত্র বলছেন: ‘‘বল, যদি এই কুরআনের অনুরূপ কুরআন আনয়নের জন্য মানুষ ও জিন সমবেত হয় এবং তারা পরস্পরকে সাহায্য করে তবুও তারা এর অনুরূপ কিছু আনয়ন করতে পারবে না।’’ [সূরা: ১৭ ইসরা (বানী ইসরাঈল), ৮৮ আয়াত।]

তারা যদি মনে করত যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য কারো সহযোগিতায় কুরআন রচনা করেছেন, তবে তাদের জন্যও অনুরূপ সহযোগিতা গ্রহণ খুবই সহজ ছিল। ভাষাজ্ঞানে এবং অন্য কারো সহযোগিতা গ্রহণের সুযোগের ক্ষেত্রে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো তাদের মতই ছিলেন। এক্ষেত্রে তাঁর কোনো বিশেষ সুবিধা ছিল না। তা সত্ত্বেও তারা প্রতিযোগিতার পরিবর্তে যুদ্ধকেই বেছে নিয়েছিল। কথার যুদ্ধের পরিবর্তে তরবারীর যুদ্ধ গ্রহণ করেছিল। এতে প্রমাণিত হয় যে, কুরআনের সর্বোচ্চ সাহিত্য ও আলঙ্কারিক মান তারা স্বীকার করে নিয়েছিল। এর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার বা এর বিপরীতে কোনো সাহিত্যকর্ম পেশ করার ক্ষমতা তাদের ছিল না। [নবুয়তের শুরু থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারংবার এই একটি চ্যালেঞ্জ তাদের সামনে ছুঁড়ে দিয়েছেন। আমরা বুঝতে পারি যে, অবিশ্বাসী আরবদের যদি ক্ষমতা থাকত তবে সহজেই হাজার হাজার মানুষকে জমায়েত করে কুরআনের ছোট্ট সূরার অনুরূপ একটি সূরা তৈরি করে শুনিয়ে মুহাম্মাদের সকল বক্তব্য স্তব্ধ করে দিতে পারত। কাব্যিক যুদ্ধ ও সাহিত্যিক প্রতিযোগিতা তাদের মধ্যে সুপরিচিত ছিল। তা সত্ত্বেও তারা কুরআনের ক্ষেত্রে এরূপ প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে সাহস পায় নি। কারণ তারা কুরআনের অলৌকিকত্ব খুব ভালভাবেই বুঝতে পেরেছিল। তারা বুঝেছিল যে, যদি এরূপ কোনো বড় জমায়েত করে সেখানে তাদের তৈরি কোনো কাব্য বা সাহিত্যকর্মকে কুরআনের বিপরীতে চ্যালেঞ্জের জবাব হিসেবে পেশ করা হয় তবে উপস্থিত আরবগণ তাদের স্বভাবজাত ভাষা জ্ঞান ও রুচির মাধ্যমে কুরআনের অলৌকিকত্বই গ্রহণ করবে এবং তাদের কর্মকে প্রত্যাখ্যান করবে। এতে তাদের পরাজয় ও ইসলামের প্রসার নিশ্চিত হবে। এজন্যই তারা এরূপ কোনো প্রকাশ্য প্রতিযোগিতার পথে না যেয়ে কঠিন পথই বেছে নিয়েছিল। আমরা জানি যে, সাহিত্যিক বা কথার প্রতিযোগিতায় জয় পরাজয় কিছুটা অস্পষ্ট থাকে। দুটি সাহিত্যকর্ম যদি কাছাকাছি হয় তবে উভয় পক্ষের মানুষই জয়লাভের দাবি করতে পারে। বিতর্ক বা বহসে অহরহ এরূপ ঘটে। কিন্তু নিশ্চিত পরাজয়কে কেউ বিজয় দাবি করতে পারে না। আরবের কাফির নেতৃবৃন্দ যদি কুরআনের কাছাকাছি কিছু পেশ করার আশা করতে পারত তবে তারা অবশ্যই তা পেশ করত এবং তাদের অনুসারীরা তাদের বিজয় দাবি করত। কিন্তু তারা পরাজয়ের বিষয়ে এতই নিশ্চিত ছিল যে, এ পথে যাওয়ার সাহস তাদের হয় নি। ফলে যাদু, মিথ্যা কাহিনী, অন্যরা তাকে বানিয়ে দিয়েছে ইত্যাদি বলে জনগণকে তা থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করত।]

এজন্য তাদের কেউ কুরআনের সত্যতা ও অলৌকিকত্ব মেনে নিয়েছে এবং কুরআন ও তার প্রেরণকারীর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে। কেউ তার অলৌকিক সাহিত্যিক মান দেখে হতবাক হয়েছে। কিন্তু কেউই এর সাহিত্য মান অস্বীকার করতে পারেনি। এ বিষয়ে ওয়ালীদ ইবনুল মুগীরা, উতবা ইবনু রাবীয়াহ প্রমুখ আরবীয় কাফির নেতার স্বীকারোক্তি ও মন্তব্য ইতিহাসে প্রসিদ্ধ, যা বিষয়টি নিশ্চিত করে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন