hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সংক্ষেপিত ইযহারুল হক্ক

লেখকঃ ড. মুহাম্মাদ আহমদ আব্দুল কাদির মালকাবী

৮৯
৪. ২. ২. ৪. মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষয়ক চতুর্থ ভবিষ্যদ্বাণী
দ্বিতীয় বিবরণের ৩২ অধ্যায়ের ২১ আয়াতে ইস্রায়েল-সন্তানদের অবিশ্বাস, মুর্তিপূজা, অনাচার ইত্যাদির প্রতি ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে: ‘‘উহারা অনীশ্বর দ্বারা (with that which is not God) আমার অনতর্জ্বালা জন্মাইল, স্ব স্ব অসার বস্তু (অসার উপাস্য: idols) [ইংরেজি কিং জেমস ভার্সন বা অথরাইজড ভার্সনে (with their vanities) এবং রিভাইযড স্টান্ডার্ড ভার্সনে (with their idols) লেখা হয়েছে। আরবী বাইবেলে (তাদের অসার উপাস্যগণ দ্বারা) লেখা হয়েছে।] দ্বারা আমাকে অসন্তুষ্ট করিল; আমিও নজাতি দ্বারা (with those which are not a people) উহাদের অনতজ^র্ালা জন্মাইব, মূঢ় জাতি (a foolish nation) দ্বারা উহাদিগকে অসন্তুষ্ট করিব।’’

এ ভবিষ্যদ্বাণীর মর্ম আরো সুস্পষ্ট হয় যিশাইয় ৬৫/১-৬ শ্লোক দ্বারা: ‘‘(১) যাহারা জিজ্ঞাসা করে নাই, আমি তাহাদিগকে আমার অনুসন্ধান করিতে দিয়াছি; যাহারা আমার অন্বেষণ করে নাই, আমি তাহাদিগকে আমার উদ্দেশ পাইতে দিয়াছি; যে জাতি আমার নামে আখ্যাত হয় নাই, তাহাকে আমি কহিলাম, ‘দেখ, এই আমি, দেখ এই আমি।’। (২) আমি সমস্ত দিন বিদ্রোহী প্রজাবৃন্দের প্রতি আপন অঞ্জলি বিস্তার করিয়া আছি; তাহারা আপন আপন কল্পনার অনুসরণ করিয়া কুপথে গমন করে। (৩) সেই প্রজারা আমার সাক্ষাতে নিত্য নিত্য আমাকে অসন্তুষ্ট করে, উদ্যানের মধ্যে বলিদান করে, ইষ্টকের উপরে সুগন্ধিদ্রব্য জ্বালায়। ৪ তাহারা কবর-স্থানে বসে, গুপ্তস্থানে রাত্রি যাপন করে (Which remain among the graves, and lodge in the monuments); {মুর্তি-প্রতিমার মন্দিরে রাত্রিযাপন করে} [১৮৪৪ সালের আরবী বাইবেল থেকে।] তাহারা শূকরের মাংস ভোজন করে, ও তাহাদের পাত্রে ঘৃণার্হ মাংসের ঝোল থাকে; ৫ তাহারা বলে, স্বস্থানে থাক, আমার নিকটে আসিও না, কেননা তোমা অপেক্ষা আমি পবিত্র। ইহারা আমার নাসিকার ধূম, সমস্ত দিন প্রজ্বলিত অগ্নি। ৬ দেখ, আমার সম্মুখে ইহা লিখিত আছে; আমি নীরব থাকিব না, প্রতিফল দিব; ইহাদের কোলেই প্রতিফল দিব।’’

এখানে মূঢ় (আরবী বাইবেলে: জাহিল) জাতি বলতে আরবদেরকে বুঝানো হয়েছে। কারণ তারা ছিল মূঢ়তা, মুর্খতা, ও বিভ্রান্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে। তাদের নিকট কোনো জ্ঞান-বিজ্ঞান ছিল না। ধর্মীয় জ্ঞান বা বুদ্ধিবৃত্তিক দর্শন-বিজ্ঞান কিছুই তাদের ছিল না। তারা মুর্তি বা জড়-পূজা ছাড়া কিছুই জানত না। ‘যাহারা জিজ্ঞাসা করে নাই’ এবং ‘ যাহারা আমার অন্বেষণ করে নাই’ বলতেও আরবদেরকেই বুঝানো হয়েছে। কারণ আল্লাহর সত্ত্বা, গুণাবলি ও ব্যবস্থা সম্পর্কে তারা অজ্ঞ ছিল। তারা আল্লাহর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করত না এবং অনুসন্ধানও করত না। এ বিষয়ে কুরআন কারীমে বলা হয়েছে: ‘‘আল্লাহ মুমিনদের প্রতি অবশ্য অনুগ্রহ করেছেন, তাদের নিজেদের মধ্য হতে তাদের জন্য রাসূল প্রেরণ করে, সে তাঁর আয়াত তাদের নিকট আবৃত্তি করে, তাদেরকে পরিশোধন করে এবং কিতাব (গ্রন্থ) ও হিকমাহ (প্রজ্ঞা) শিক্ষা দেয়, যদিও তারা পূর্বে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই ছিল।’’ [সূরা আল-ইমরান, ১৬৪ আয়াত।]

অন্যত্র আল্লাহ বলেন: ‘‘তিনিই প্রেরণ করেছেন অজ্ঞ-নিরক্ষরদের মধ্যে একজন রাসূল তাদের মধ্য থেকে, যিনি তাদেরকে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করে শুনান, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং তাদেরকে গ্রন্থ ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দান করেন, যদি তারা এর আগে সুস্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে ছিল।’’ [সূরা জুমুআ: ২ আয়াত।]

দাসী হাগারের (হাজেরার) পুত্র ইশ্মাইলের বংশধর হওয়ার কারণে এবং ধর্মবিষয়ক অজ্ঞতার কারণে ইয়াহূদীগণ তাদেরকে ঘৃণা করত। ইয়াহূদীরা ইবরাহীমের স্বাধীন স্ত্রীর সন্তান, আল্লাহর আশীর্বাদ-প্রাপ্ত, নবীগণের বংশধর, আসমানী কিতাব ও ব্যবস্থার অনুসারী হিসেবে নিজেদেরকে উন্নত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ জাতি বলে মনে করত।

কিন্তু তারা আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়। অনিশ্বর বা মুতি-প্রতিমার পূজা, বিভিন্ন অনাচার ও পাপ তাদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করে। উপরের বক্তব্যদ্বয়ে তাদের এ সকল অনাচারের বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এ সকল কারণে মহান প্রতিপালক এ বিদ্রোহী জাতিকে পরিত্যাগ করে উম্মাতে মুহাম্মাদীকে বেছে নিয়েছেন।

তাহলে এ আয়াতের অর্থ, ইস্রায়েলীয়গণ তাদের স্ব স্ব অসার দেবদেবীর পূজা-অর্চনা করে আমাকে অসন্তুষ্ট করে। এজন্য তাদেরই নিকট ঘৃণিত একটি মুর্খ ও মূঢ় জাতির দ্বারা আমি তাদেরকে অসন্তুষ্ট করব। [এখানে অন্য একটি বিষয় লক্ষণীয়। ইহূদীগণ একত্ববাদ বিনষ্ট করে আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে। এর বিপরীতে একটি মুঢ় জাতিকে প্রকৃত ও সত্য একত্ববাদ প্রদান করে তাদের মাধ্যমে আল্লাহ ইস্রায়েলীয়গণকে অসন্তুষ্ট করেন। আর এজন্যই মুসলিমদের প্রতি ইহূদীদের অন্তর্জ্বালা ও অসন্তুষ্টি চিরন্তন। তাত্ত্বিকভাবে তারা স্বীকার করতে বাধ্য যে, খৃস্টান ধর্ম, হিন্দু ধর্ম ইত্যাদি অত্যন্ত বিকৃত, ঘৃণ্য ও ঈশ্বরের অবমাননাকর বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত। পক্ষান্তরে ইসলামী একত্ববাদ, মুর্তিপূজার বিরোধিতা, ইবাদত-বন্দেগি, শুচিতা-অশুচিতা ইত্যাদি সবই বিশুদ্ধ একত্ববাদের উপর প্রতিষ্ঠিত ও ইহূদী ধর্ম-ব্যবস্থার কাছাকাছি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মুসলিমদের প্রতি তাদের অসন্তুষ্টি এতই বেশি ও চিরস্থায়ী যে, এদের ধ্বংস করার জন্য তারা যে কোনো অপবিত্র, মুর্তিপূজক ও বহু-ঈশ্বরবাদী জাতির সাথে সকল প্রকার সহযোগিতা করতে প্রস্ত্তত।] তিনি তাঁর এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন। তিনি ইয়াহূদীগণ কর্তৃক ঘৃণিত এই মূঢ় জাতির মধ্যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রেরণ করেন। তাঁর মাধ্যমে তিনি তাদেরকে সত্য পথের নির্দেশনা দান করেন। ইয়াহূদীরা যে জাতিকে অত্যন্ত ঘৃণা করত সে জাতির মধ্যে শেষ নবীকে প্রেরণ করে, তাকে কিতাব ও হিকমাত প্রদান করে এবং তাঁর মাধ্যমে তাদেরকে সুপথে পরিচালিত করে ইস্রায়েল-সন্তানদেরকে চূড়ান্তভাবে অসন্তুষ্ট করেছেন ও তাদের অন্তর্জ্বালা জন্মিয়েছেন।

ইয়াহূদীদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নুবুওয়াত পাওয়ার পরে আরব ও মুসলিম জাতি ইয়াহূদীদেরকে যেভাবে অসন্তুষ্ট করেছে এবং অন্তর্জ্বালা দিয়েছে আর কোনো জাতি সেভাবে ইয়াহূদীদেরকে অসন্তুষ্ট করতে বা অন্তর্জ্বালা দিতে পারে নি। যদিও পারসিকগণ এবং রোমানগণ একাধিকবার ফিলিস্তিনে ইয়াহূদীদের রাজ্য বিনষ্ট করেছে এবং তাদেরকে বন্দী করে নিয়ে গিয়েছে, কিন্তু মূসা আলাইহিস সালাম-এর নুবুওয়াত ও গ্রন্থের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ইয়াহূদীদের স্থায়ী অন্তর্জ্বালা ও অসন্তুষ্টি সৃষ্টি করার মত কোনো নবী বা আসমানী গ্রন্থ তাদের মধ্যে প্রকাশ পায় নি। কিন্তু মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উম্মাত ইয়াহূদীদেরকে সামরিক ভাবে পরাজিত করেছে তো বটেই, উপরন্তু ইয়াহূদীদের মধ্যে নুবুওয়াতের ধারা থেমে যাওয়ার পরে মহান আল্লাহ তাঁর নুবুওয়াত ও কিতাব এ উম্মাতকে প্রদান করেন। ফলে ইয়াহূদীরা আরবদের সাথে কপটতা ও চাটুকারিতার আশ্রয় গ্রহণ করে এবং তাদেরকে ভয় পেতে থাকে। নিঃসন্দেহে ইয়াহূদীদের জন্য অন্তর্জ্বালা ও অসন্তুষ্টির এ হলো চূড়ান্ত পর্যায়। [যে সকল জাতি দ্বারা ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়গণকে অসন্তুষ্ট করেছেন তাদের অন্যতম ব্যাবিলনীয় জাতি, গ্রীক-রোমান জাতি ও আরব জাতি। এদের মধ্যে আরবগণই ছিল মূঢ় বা জাহিল হিসেবে সুপ্রসিদ্ধ। অন্যান্যরা শিক্ষা, সভ্যতা ও জ্ঞান-দর্শনে ইস্রায়েলীগণের সমপর্যায়ের বা তার চেয়েও অধিক উন্নত ছিল। বাইবেলের এ আয়াতের ব্যাখ্যা ছাড়া অন্য কোথাও কোনো ইউরোপীয় গবেষক, পন্ডিত বা পাদরি স্বীকার করবেন না যে, ব্যাবিলনীয়গণ বা গ্রীকগণ মুর্খ জাতি বা তারা আরবগণ বা ইহূদীগণের তুলনায় মুর্খ ছিল। এছাড়া আমরা দেখেছি যে, অসন্তুষ্টির মূল বিষয়- অসার দেবদেবীর উপাসনা বনাম প্রকৃত একত্ববাদ লাভ। এ দিক থেকে আরবগণ ছাড়া অন্য কোনো জাতি তাদেরকে অসন্তুষ্ট করে নি। সর্বোপরি এরূপ চিরন্তুন অসন্তুষ্টি আর কোনো জাতির প্রতি তাদের নেই। খৃস্টানগণ দীর্ঘদিন তাদেরকে অসন্তুষ্ট করেন বটে, তবে খৃস্টানগণ তো ইস্রায়েলীয়দেরই অন্তুর্ভুক্ত, তাদের দ্বারাই প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত। কাজেই তাদেরকে ভিন্ন জাতি বা মূঢ় জাতি বলে গণ্য করার কোনো উপায় নেই। এছাড়া ইহূদীদের অন্তর্জ্বালার সবচেয়ে বড় বিষয় ফিলিস্তিন ও যেরুজালেমের অধিকার। এখানেও আরবজাতিকে তাদের স্থায়ী অন্তর্জ্বালার উৎস বানিয়েছেন আল্লাহ। ইতিহাসের যে কোনো পাঠক জানেন যে, বিগত দেড় হাজার বৎসর ধরে ইহূদীগণ ইউরোপে ও সর্বত্র অত্যাচারিত হয়েছেন এবং একমাত্র আরব ও মুসলিম দেশগুলিতেই পরিপূর্ণ নিরাপত্তা ও শান্তিতে অবস্থান করেছেন। কিন্তু ইহূদীদেরকে প্রশ্ন করলে দেখবেন, তাদের অন্তর্জ্বালা অত্যাচারীদের প্রতি তত নয়, যতটা আরব ও মুসলিমদের প্রতি।]

যদি কেউ বলেন যে, এ ভবিষ্যদ্বাণীতে ‘‘নজাতি (which are not a people)’’, ‘‘মূঢ় জাতি (a foolish nation)’’ বলতে বা ‘যাহারা জিজ্ঞাসা করে নাই (that asked not for me)’, ‘যাহারা আমার অন্বেষণ করে নাই (that sought me not)’, ‘যে জাতি আমার নামে আখ্যাত হয় নাই (a nation that was not called by my name)’ বলতে যীশু খৃস্টের ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে তাহলে তা একান্তই ভিত্তিহীন, অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা বলে গণ্য হবে। কারণ, যীশুখৃস্ট তো ইস্রায়েল জাতির সদস্য ও ইস্রায়েল জাতির মধ্যে ও তাঁদেরই জন্য (unto the lost sheep of the house of Israel) প্রেরিত হয়েছিলেন। সামান্য বুদ্ধি-বিবেকের অধিকারী কোনো ব্যক্তিও দাবি করতে পারেন না যে, কোনো জাতির মানুষ সে জাতির মধ্যে একজন মহান ভাববাদীর আবির্ভাব বা প্রসিদ্ধিলাভে মনোকষ্ট ও অন্তর্জ্বালা লাভ করবে। বরং অন্য কোনো জাতি বা ‘‘পরজাতি (the Gentiles)’’-দের মধ্যে, বিশেষ করে ইয়াহূদীরা যাদেরকে ‘‘বাঁদীর সন্তান’’ ও মুর্খ জাতি হিসেবে অত্যন্ত ঘৃণা করত তাদের মধ্যে ভাববাদীর আবির্ভাবে ও তাদের উন্নতি ও প্রসিদ্ধিতেই তাদের অন্তর্জ্বালা ও মনোকষ্ট হতে পারে।

এছাড়া খৃস্টীয় ৬ষ্ঠ শতকে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আবির্ভাব পর্যন্ত আরবগণ ছাড়া অন্য কোনো জাতি আরবদের মত মূঢ় বা মুর্খ জাতি বলে প্রসিদ্ধি লাভ করে নি। আরব জাতি ছাড়া অন্যান্য জাতির মধ্যে, বিশেষত গ্রীক, রোমান ও পারসিক জাতির মধ্যে সাধারণভাবে লেখাপড়া ও বিশেষভাবে জ্ঞান, বিজ্ঞান ও দর্শনের বিভিন্ন শাখায় গবেষণা বিদ্যমান ছিল। এভাবে আমরা দেখতে পাই যে, এ ভবিষ্যদ্বাণীটি আক্ষরিকভাবে আরব জাতির মধ্যে এক মহান নবীর- মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর- আবির্ভাবের কথা বলেছে, যার আবির্ভাব পৌত্তলিকতা, প্রতিমাপূজা, শূকরের মাংস ভক্ষণ ও অন্যান্য অনাচার-পাপাচারে লিপ্ত ইয়াহূদী জাতির স্থায়ী মনোকষ্ট ও অন্তর্জ্বালা সৃষ্টি করবে।

বস্তুত ইয়াহূদী-খৃস্টানদের ধর্মগ্রন্থে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আবির্ভাব বিষয়ক অনেক ভবিষ্যদ্বাণী বিদ্যমান। কোথাও তাঁর কথা, কোথাও তাঁর উম্মাতের কথা, কোথাও তাঁর উপর অবতীর্ণ ওহীর কথা, কোথাও তাঁর জিহাদের কথা, কোথাও তাঁর আযান ও তাসবীহের কথা, কোথাও মক্কা মুকার্রামার কথা, কোথাও ইসলামের ব্যাপক প্রসারতার কথা বলা হয়েছে। অন্যান্য স্থানে যীশুখৃস্ট উদাহরণ ও নমুনার মাধ্যমে তাঁর ও তাঁর উম্মাতের কথা বলেছেন, যেগুলি সুসমাচারগুলিতে লিপিবদ্ধ রয়েছে। [মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিছু ভবিষ্যদ্বাণী অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন। যিশাইয়র পুস্তকের ২১ অধ্যায়ে বলা হয়েছে: ‘‘১৩ আরর দেশের উপরে দায়িত্ব The burden upon Arabia (বাংলা বাইবেলে: আরব বিষয়ক ভারবাণী)। হে দদানীয় (Dedanim) পথিক দলসমূহ, তোমরা আরবে বনের মধ্যে রাত্রি যাপন করিবে। ১৪ তোমরা তৃষিতের কাছে জল আন; হে টেমা-দেশবাসীরা (Tema), তোমরা অন্ন লইয়া পলাতকদের সহিত সাক্ষাৎ কর। ১৫ কেননা তাহারা খড়্গের সম্মুখ হইতে, নিষ্কোষিত খড়্গের, আকর্ষিত ধনুর ও ভারী যুদ্ধের সম্মুখ হইতে পলায়ন করিল। ১৬ বস্তুতঃ প্রভু আমাকে এই কথা কহিলেন, বেতনজীবীর বৎসরের ন্যায় আর এক বৎসর কাল মধ্যে কেদরের (Kedar) সমস্ত প্রতাপ লুপ্ত হইবে; ১৭ আর কেদর-বংশীয় বীরগণের মধ্যে অল্প ধনুর্ধর মাত্র অবশিষ্ট থাকিবে, কারণ সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা বলিয়াছেন।’’একটি ভবিষ্যদ্বাণী যতটুকু স্পষ্ট হতে পারে তার চেয়েও স্পষ্টতর এই ভবিষ্যদ্বাণী। এখানে স্পষ্টভাবেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হিজরত ও বদরের যুদ্ধে কুরাইশদের পরাজয়ের কথা বলা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উন্মুক্ত নিষ্কোষিত তরবারীর সম্মুখ থেকে পলায়ন করেন। পথিমধ্যে তাইমা/তিহামার উম্মু মা’বাদের নিকট থেকে পানি, দুগ্ধ ইত্যাদি গ্রহণ করেন। পরবর্তী এক বৎসরের মধ্যে বদরের যুদ্ধে কেদারের বা আরবের প্রতাপ লুপ্ত হয়। তাদের অধিকাংশ প্রসিদ্ধ যোদ্ধা এই যুদ্ধে নিহত হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হিজরত ও বদরের যুদ্ধ ছাড়া অন্য কোনো ক্ষেত্রে এই ভবিষ্যদ্বাণীর প্রয়োগ সম্ভব নয়।যিশাইয়র পুস্তকের ৬০ অধ্যায়ে রয়েছে: ‘‘১ উঠ, দীপ্তিমতী হও, কেননা তোমার দীপ্তি উপস্থিত। সদাপ্রভুর প্রতাপ তোমার উপরে উদিত হইল। .... ৬ তোমাকে আবৃত করিবে উষ্ট্রযূথ, মিদিয়নের ও ঐফার দ্রুতগামী উষ্ট্রগণ; শিবা দেশ হইতে সকলেই আসিবে; তাহারা সুবর্ণ ও কুন্দুরু আনিবে, এবং সদাপ্রভুর প্রশংসার সুসমাচার প্রচার করিবে। ৭ কেদরের সমস্ত মেষপাল তোমার নিকটে একত্রীকৃত হইবে, নবায়োতের মেষগণ তোমার পরিচর্যা করিবে; তাহারা আমার যজ্ঞবেদির উপরে উৎসৃষ্ট হইয়া গ্রাহ্য হইবে, আর আমি আপনার ভূষণস্বরূপ গৃহ বিভূষিত করিব। (All the flocks of Kedar shall be gathered together unto thee, the rams of Nebaioth shall minister unto thee: they shall come up with acceptance on mine altar, and I will glorify the house of my glory)এখানেও স্পষ্টত মক্কাকে সম্বোধন করা হয়েছে এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মাধ্যমে মক্কার পবিত্র ঘরের বিশ্বব্যাপী মর্যাদা লাভ ও বিশ্বের সর্বত্র থেকে মানুষের হজ্জে আগমনের কথা বলা হয়েছে। একমাত্র মক্কার ‘আপনার ভূষণস্বরূপ গ্রহ’ (the house of my glory) পবিত্র কাবাঘর ছাড়া অন্য কোথাও কেদরের সমস্ত মেষপাল একত্রীকৃত হয় নি। যিরূশালেমের ধর্মধামেও না, খৃস্টানদের মহাচার্চ, ভ্যাটিকান বা অন্য কোথাও নয়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার যে, একমাত্র কেদরের সমস্ত মেষপালই সম্পূর্ণভবে খৃস্টীয় চার্চের প্রভাব থেকে মুক্ত থেকেছে।হবক্কূকের পুস্তকের তৃতীয় অধ্যায়ের বক্তব্য: ‘‘৩ ঈশ্বর তৈমন হইতে আসিতেছেন, পারণ পর্বত হইতে পবিত্রতম আসিতেছেন। আকাশমন্ডল তাঁহার প্রভায় সমাচ্ছন্ন, পৃথিবী তাঁহার প্রশংসায় (হাম্দ) পরিপূর্ণ। (God came from Teman, and the Holy One from mount Paran. Selah. His glory covered the heavens, and the earth was full of his praise)আমরা দেখেছি যে, পারণ পর্বত ও পারণ প্রান্তর মক্কার প্রান্তর, যেখানে ইসমাঈল (আ) ও তাঁর বংশধর বসতি করেন। এখানে পারণের পবিত্রতম বলতে স্পষ্টতই মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বুঝানো হয়েছে। বিশেষত পরের বাক্যে ‘পৃথিবী তাঁহার প্রশংসায় পরিপূর্ণ’ বলে স্পষ্টতই তাঁর নাম ‘মুহাম্মাদ’ বা প্রশংসিত তা বুঝানো হয়েছে।গীতসংহিতার ৭২ গীতে বলা হয়েছে: ‘‘৮ তিনি এক সমুদ্র অবধি অপর সমুদ্র পর্যনত, ঐ নদী অবধি পৃথিবীর প্রানত পর্যনত কর্তৃত্ব করিবেন। ৯ তাঁহার সম্মুখে মরুনিবাসীরা নত হইবে, তাঁহার শত্রুগণ ধুলা চাটিবে। ১০ তর্শীশ ও দ্বীপগণের রাজগণ নৈবেদ্য আনিবেন; শিবা ও সবার রাজগণ উপহার দিবেন। ১১ হাঁ, সমুদয় রাজা তাঁহার কাছে প্রণিপাত করিবেন; সমুদয় জাতি তাঁহার দাস হইবে। ১২ কেননা তিনি আর্তনাদকারী দরিদ্রকে, এবং দুঃখী ও নিঃসহায়কে উদ্ধার করিবেন। ১৩ তিনি দীনহীন ও দরিদ্রের প্রতি দয়া করিবেন, তিনি দরিদ্রগণের প্রাণ নিস্তার করিবেন। ১৪ তিনি চাতুরী ও দৌরাত্ম হইতে তাহাদের প্রাণ মুক্ত করিবেন, তাঁহার দৃষ্টিতে তাহাদের রক্ত বহুমূল্য হইবে; ১৫ আর তাহারা জীবিত থাকিবে; ও তাঁহাকে শিবার সুবর্ণ দান করা যাইবে, লোকে তাঁহার নিমিত্ত নিরনতর প্রার্থনা করিবে, সমস্ত দিন তাঁহার ধন্যবাদ করিবে (prayer also shall be made for him continually; and daily shall he be praised)।’’ এ কথাগুলিও স্পষ্টত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বিষয়ে বলা হয়েছে। তিনি ও তাঁর উম্মাতই সমুদ্র থেকে সমুদ্র পর্যন্ত ও পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত রাজত্ব লাভ করেন। একমাত্র তাঁর সামনেই মরুনিবাসীরা নত হয় এবং বিভিন্ন রাজ্যের রাজার বশ্যতা স্বীকার করে। তিনিই দরিদ্র ও অসহায়দের রক্ষার জন্য সর্বজনীন আইন প্রদান করেন ও কল্যাণমুখি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। কেবলমাত্র ইসলাম ধর্মেই নিয়মিত ও আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর উপর সালাত-সালাম পাঠের ব্যবস্থা রয়েছে। সর্বোপরি একমাত্র তিনিই সবত্র ‘প্রশংসিত’ (মুহাম্মাদ)।যিশাইয়র পুস্তকের ৫ অধ্যায়ের ২৬ আয়াতে রয়েছে: ‘‘তিনি দূরস্থ জাতিগণের প্রতি পতাকা তুলিবেন, পৃথিবীর প্রানতবাসীদের জন্য শিস দিবেন; আর দেখ, তাহারা দ্রুতগমনে সত্বর আসিবে।’’ বাহ্যত এখানে হজ্জের বিষয়ে বলা হয়েছে।যিশাইয়র পুস্তকের ২১ অধ্যায়ে রয়েছে: ‘‘৬ বস্তুতঃ প্রভু আমাকে এই কথা কহিলেন, যাও, এক জন প্রহরী নিযুক্ত কর; সে যাহা যাহা দেখিবে, তাহার সংবাদ দিউক। ৭ এবং সে দেখিল দুই জন করিয়া অশ্বারোহীসহ একটি রথ, গর্দভের একটি রথ এবং উষ্ট্রের একটি রথ, এবং সে যথাসাধ্য সাবধানে কর্ণপাত করিল: And he saw a chariot with a couple of horsemen, a chariot of asses, and a chariot of camels; and he hearkened diligently with much heed (বাংলা বাইবেলে: ‘‘যখন সে দল দেখে, দুই দুই জন করিয়া অশ্বারোহীদিগকে, গর্দভের দল, উষ্ট্রের দল দেখে তখন সে যথাসাধ্য সাবধানে কর্ণপাত করিবে।’’) ... ৯ আর দেখ, এক দল লোক আসিল; অশ্বারোহীরা দুই দুই জন করিয়া আসিল। আর সে প্রত্যুত্তর করিয়া কহিল, ‘পড়িল, বাবিল পড়িল, এবং তাহার দেবগণের সমস্ত ক্ষোদিত প্রতিমা ভাঙ্গিয়া ভূমিসাৎ হইল। (Babylon is fallen, is fallen; and all the graven images of her gods he hath broken unto the ground)। এখানেও বাহ্যত গর্দভের রথ বলতে যীশুকে এবং উটের রথ বলতে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বুঝানো হয়েছে। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আগমনের পরে তাঁরই সাহাবীদের হাতে বাবিলের পতন ঘটে এবং তথাকার প্রতিমাগুলি ভূমিসাৎ হয়।হগয় ভাববাদীর পুস্তকের ২ অধ্যায়ের ৭ আয়াতে বলা হয়েছে: ৭ আর আমি সর্বজাতিকে কম্পান্বিত করিব; এবং সর্বজাতির মনোরঞ্জন বস্তু সকল আসিবে (And I will shake all nations, and the desire of all nations shall come)। রেভারেন্ড প্রফেসর ডেভিড বেঞ্জামিন আরমেনীয়ার একজন বিশপ ছিলেন। তিনি খৃস্টধর্মের উপরে সর্বোচ্চ লেখাপড়া করেন এবং গ্রীক, ল্যাটিন, সিরিয়ান, আরামাইক, হিব্রু, কালডীয়ান ইত্যাদি ভাষায় সুপন্ডিত ছিলেন ১৯০০ সালের দিকে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তাঁর রচিত অনেকগুলি মূল্যবান পুস্তকের একটি (Muhammad in the Bibble)। এই পুস্তকে তিনি হিব্রু, আরামাইক ও অন্যান্য ভাষার পান্ডলিপি থেকে প্রমাণ করেছেন যে, এখানে (desire) বা মনোরঞ্জন শব্দের স্থলে মূলত ‘হামদা’ বা ‘আহমদ’ শব্দ রয়েছে। তিনি প্রাচীন পাণ্ডুলিপি ও ভাষাতাত্ত্বিক আলোচনার মাধ্যমে আরো অনেক ভবিষ্যদ্বাণী প্রমাণ করেছেন।গীতসংহিতার ৯৬ গীতের ৪ আয়াতে বলা হয়েছে: ‘‘কেননা সদাপ্রভু মহান ও অতি কীর্তনীয় (For the LORD is great, and greatly to be praised)।’’ এই আয়াতের প্রাচীন আরবী অনুবাদে ‘মুহাম্মাদ’ শব্দটি স্পষ্টত উল্লেখ করা হয়েছে বলে হিজরী অষ্টম শতকের প্রসিদ্ধ আলিম ইবনু তাইমিয়া (৭২৮হি/১৩২৮খৃ) উল্লেখ করেছেন। লক্ষণীয় যে, তৎকালীন সময়ে ১৪শ খৃস্টীয় শতকে সিরিয়ান ও কালদীয় খৃস্টানদের মধ্যে যে বাইবেল প্রচলিত ছিল তিনি এবং তৎকালীন মুসলিম আলিমগণ সেগুলির উপরেই নির্ভর করতেন। তাদের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, সে সময়ে বাইবেলের পুস্তকগুলিকে অধ্যায় ও পংক্তিতে ভাগ করার নিয়ম প্রচলিত হয় নি। এজন্য তিনি শুধু পুস্তকের নাম উল্লেখ করেছেন, অধ্যায় ও পংক্তির নম্বর উল্লেখ করেন নি। এছাড়া তিনি বাইবেল থেকে আরো কয়েকটি উদ্ধতি প্রদান করেছেন, যেগুলিতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, কিন্তু উদ্ধৃতিগুলি বর্তমান প্রচলিত বাইবেলের মধ্যে পাওয়া যায় না। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, যিশাইয় ভাববাদীর পুস্তকের একটি আয়াতে বলা হয়েছে: ‘‘হে ঈশ্বরের পবিত্র, মুহাম্মাদ, তোমার নাম চিরস্থায়ী।’’ এই পুস্তকের অন্য আয়াতে রয়েছে: ‘‘হে ঈশ্বরের পবিত্রতম, মুহাম্মাদ, আমি তোমার বিষয় জানিয়েছি।’’ অন্য আয়াতে রয়েছে: ‘‘আমার প্রিয় ও আমার পুত্র আহমদ।’’ অন্য আয়াতে রয়েছে: ‘‘আমরা পৃথিবীর প্রান্ত থেকে মুহাম্মাদের রব শুনিলাম।’’ তিনি যহিষ্কেল ভাববাদীর পুস্তক থেকে একটি উদ্ধৃতি দিয়েছেন যাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহ কেদারের সন্তানগণকে একটি পুস্তক দান করবেন এবং তাদেরকে ইহূদীদের উপর প্রাধান্য দান করবেন। বর্তমান প্রচলিত বাইবেলের মধ্যে বিদ্যমান যিশাইয় ও যিহিষ্কেল ভাববাদীর পুস্তকদ্বয়ে এই আয়াতগুলি পাওয়া যায় না।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন