মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ইরানে শিয়া বিপ্লব সফল হওয়ার পর তার তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন দেশে একাধিক সংগঠন তৈরি করা হয়, যেন বিভিন্ন দেশে ইরানি বিপ্লব ছড়িয়ে দেওয়া যায়। তার ধারাবাহিকতায় বাহরাইনকে মুক্ত (!) [মুক্ত তারা কাদের থেকে করবে? তারা চায় সুন্নীদের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করে শিয়াদের কবলে নিয়ে যাওয়া এবং ইরানকেন্দ্রিক এক বৃহৎ শিয়া রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। [সম্পাদক]] করার জন্য ‘হাদি মুদাররিসি’র অধীন الجبهة الإسلامية لتحرير البحرين “বাহরাইন মুক্তকারী ইসলামিক ফ্রন্ট” নামে এটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা হয়, যার প্রধান কার্যালয় ছিল তেহরানে। প্রতিষ্ঠার শুরুতেই তার নিম্নরূপ উদ্দেশ্যসমূহ প্রকাশ করা হয়:
১. আলে-খলিফার শাসন নিঃশেষ করা।
২. খোমেনি বিপ্লবের ন্যায় বাহরাইনে শিয়া শাসন প্রতিষ্ঠা করা।
৩. “উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ” [‘উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ’ এর আরবি নাম مجلس التعاون الخليجي ইংরেজি নাম ‘Gulf Cooperation Council’] থেকে বাহরাইনকে পৃথক করে ইরানি প্রজাতন্ত্রের সাথে সম্পৃক্ত করা। [দেখুন: ফালাহ আল-মুদাইরিস রচিত: الحركات والجماعات السياسية في البحرين (পৃ.৯৯-১০৪) আল-আহযাব ওয়াল হারাকাত ওয়াল জামা‘আতিল ইসলামিয়্যাহ, ২/৫৩৯; তাতে উল্লেখ আছে যে, জাবহাতুল ইসলামিয়্যাহ লি তাহরিরে বাহরাইনের এ সময়ের বড় উদ্দেশ্য হচ্ছে: আলে খলীফার শাসন অবসান। তাছাড়া তারা তাদের ‘আস-সাওরাতুল ইসলামিয়্যাহ ফিল বাহরাইন’ এর সপ্তম প্রকাশিত পত্রে সেটা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছে।]
‘আল-জাবহাতুল ইসলামিয়াহ’ বা ইসলামিক ফ্রন্ট ইরান থেকে বেশ কয়েকটি পত্রিকা প্রকাশ করে, যেমন «الشعب الثائر» ‘বিপ্লবী জাতি’ ও «الثورة الرسالة» ‘বিপ্লবী পয়গাম’ ইত্যাদি শিরোনামে। এ ফ্রন্টের প্রচার বিভাগের দায়িত্বে ছিল ঈসা মারহুন।
এ ফ্রন্টের অর্থ যোগানদাতা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হল «الصندوق الحسيني الاجتماعي» ‘হুসাইনি সোশ্যাল ফান্ড’। ১৯৭৯ই. সালে ‘বাহরাইন মুক্তকারী ইসলামিক ফ্রন্টে’র শিয়ারা সৌদি আরবের শিয়াদের সাথে মিলে ‘কাতিফে’ বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল। তাদেরকে যখন দমন করা হয়, তখন বাহরাইন গোয়েন্দা সংস্থার একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে ফ্রন্টের লোকেরা অপহরণ করে, ফলে সরকার তাদের উপর কঠোর হয় ও তাদের একাধিক নেতাকে বন্দি করে।
চাপের মুখে তারা সাময়িকভাবে ফ্রন্টের কার্যক্রম বন্ধ করে আগামী আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়, বাহরাইনে অস্ত্র সমাগম করতে থাকে, অতঃপর ১৯৮১ই. সালে মুহাম্মদ তাকি মুদাররিসির নেতৃত্বে তারা সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। তাদের বিদ্রোহ অকৃতকার্য হয়, সরকার তাদের সাথে জড়িত ৭৩-অপরাধীকে আটক করে।
আশির দশকের মাঝামাঝিতে উক্ত ফ্রন্টের সদস্যরা ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার কর্তা ব্যক্তিদের সাথে বৈঠক করে ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ নামে একটি সামরিক শাখা খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
‘বাহরাইন মুক্তকারী! ইসলামিক ফ্রন্টে’র সাধারণ সম্পাদক শায়খ মুহাম্মদ আলি মাহফুজকে ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইনি’র দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি তিন হাজার বাহরাইনি শিয়া যুবকদের সমন্বয়ে ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ গঠন করেন এবং তাদেরকে ইরান ও লেবাননে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। হিযবুল্লাহ বাহরাইনির প্রধান নির্বাচিত হন আব্দুল আমির জামরি, বর্তমান তার স্থানে আছেন আলি সালমান।
‘বাহরাইন মুক্তকারী ইসলামিক ফ্রন্টে’র প্রধান হাদি মুদাররিসিকে হিযবুল্লাহ বাহরাইনির অভিভাবক ও অর্থ যোগানদাতা গণ্য করা হয়। অনুরূপ মুহাম্মদ তাকি মুদাররিসিও তার একজন অর্থ যোগানদাতা ও তাত্ত্বিক অভিভাবক।
‘হিযবুল্লাহ বাহরাইনি’ ত্রাস ও বিপ্লব সৃষ্টি করে বাহরাইনের গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানসমূহে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়। তার প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে বর্তমান সরকারকে হটিয়ে ইরানি শিয়া সরকারের আদলে ও তার আদর্শের উপর নতুন সরকার গঠন করা। এ কথার প্রথম প্রমাণ আয়াতুল্লাহ রুহানির ঘোষণা, তিনি বলেছেন: নিশ্চয় বাহরাইন ইরানের অনুগত ও ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের একটি অংশ। [দেখুন: الحركات والجماعات السياسية في البحرين (পৃ.৯৯-১০০)]
১৯৯৪ই. সালের বিদ্রোহ, সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ড ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তারা বিভিন্ন নামে অপরাধ সংগঠিত করত, যেমন منظمة العمل المباشر ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, حركة أحرار البحرين ‘বাহরাইন স্বাধীনতাকামী আন্দোলন’ ও منظمة الوطن السليب ‘অধিকৃত মাতৃভূমি [রক্ষার] আন্দোলন’ ইত্যাদি, সবগুলো আন্দোলনের গোঁড়ায় ছিল ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’।
পরবর্তীতে এসব দল আলি সালমানের নেতৃত্বে جمعية الوفاق الوطني الإسلامية বা ‘জাতীয়তাবাদী ইসলামি সম্মিলিত জোটে’র অন্তর্ভুক্ত হয়। তারা নিজেদেরকে শিয়া মতবাদ প্রচার ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত করে। সামরিক শাখা ও বিদ্রোহ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর হাতে।
‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর অপর নাম «حركة أحرار البحرين» এর হেড কোয়ার্টার লন্ডন থেকে «صوت البحرين» ‘বাহরাইন কণ্ঠ’ নামে মাসিক ম্যাগাজিন প্রকাশ করে। এ ম্যাগাজিনের মাধ্যমে হিযবুল্লাহ বাহরাইন তাদের দাবিসমূহ, তৎপরতা ও খবরাখবর প্রচার করে। সংগঠনটি এমন অনেক বিদেশী দেশ থেকে অনুদান হাসিল করে, ইসলামের প্রতি যাদের রয়েছে প্রচুর বিদ্বেষ। এক রিপোর্ট থেকে জানা যায় ‘লন্ডন ফোরাম’ [পূর্বনাম ‘মিম্বারুল বাহারিনাহ’] এর মাধ্যমে প্রাপ্ত তার এক অনুদানের পরিমাণ ছিল ৮০ হাজার ডলার থেকেও অধিক। ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ তাদের ‘বাহরাইন স্বাধীনতাকামী আন্দোলন’ এর নামে এমনসব রাজনৈতিক সংস্কার কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে, যাতে করে তার সামরিক শাখার সদস্যরা সরকার পরিবর্তের ন্যায় অভীষ্ট লক্ষ্য আঞ্জাম দিতে সক্ষম হয়।
‘বাহরাইন স্বাধীনতাকামী আন্দোলনে’র গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ হলেন সায়িদ শিহাবী, মাজিদ আলাবি ও মানসুর জামরি।
১৯৯৬ই. সালে বাহরাইন পুনরায় হত্যা ও ধ্বংস যজ্ঞের সম্মুখীন হয়, ইরান যার পরিকল্পনা করেছিল।
১৪-মার্চ ১৯৯৬ই. সালে ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ সাতরাহ ওয়াদিয়ান নামক স্থানে এক হোটেলে অগ্নিসংযোগ করে, যার ফলে এশিয়ার সাতজন লোক মারা যায়, এটাও তাদের হিংসার নগ্ন প্রকাশ।
তারপর ২১মার্চ ১৯৯৬ই. সালে ‘আজ-জিয়ানি’ গ্যারেজে আগুন লাগিয়ে দেয়, ফলে শো-রুমে বিদ্যমান সকল গাড়ি পুড়ে কয়লায় পরিণত হয়।
তাদের হিংসা ও বিদ্বেষ উত্তরোত্তর বর্ধিত হয়, যার ফলে তারা ৬-মার্চ ১৯৯৬ই. সালে বড় বড় নয়টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে ধ্বংস্তুপে পরিণত করে।
এ ছাড়া তারা একাধিক হোটেল ও স্কুল জ্বালিয়ে দেয়, অনুরূপ জ্বালিয়ে দেয় সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, টেলিফোন সংস্থা, যা রাস্তার পাশে অবস্থিত ছিল। অনুরূপ তারা জ্বালিয়ে দিয়েছে বাহরাইনের ইসলামি ব্যাংক, বাহরাইনের জাতীয় ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক কেন্দ্র, যা বাহরাইনের অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল।
বছরের শুরু থেকে ইরানি প্রচার মাধ্যমগুলো বাহরাইনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য জনগণকে উসকে দেয়। তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করে যেন তারা জাতীয় কর্মকাণ্ডে বাঁধার সৃষ্টি করে ও অফিস আদালতে ধর্মঘটের ডাক দেয় এবং সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে।
১৯৯৬ই. সালের ১৩-ফেব্রুয়ারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসমূহে ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি দু’দিনের ধর্মঘট ডাক দেওয়া হয়। শিয়াদের নিয়ন্ত্রিত প্রচার যন্ত্রগুলো সাধারণ মানুষকে আগামী ঈদুল ফিতরে অংশ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়!
অনুরূপ ২-মে ১৯৯৬ই. সালে বাহরাইন জনগণকে সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আগত ঈদুল আদহা বয়কট করার আহ্বান জানায়। [অথচ তারা ঈদে গাদির, ঈদে নওরোজ ও ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর শাহাদাতের দিন (যাকে তারা ‘ফারহুয যাহরা’ নাম দিয়ে থাকে সেদিন) ঈদ উদযাপন থেকে বিরত থাকে না, কিংবা তা বয়কটের আহ্বান জানায় না।]
ইরানি সংবাদ পত্রগুলো শিয়া সম্প্রদায়কে বিভিন্নভাবে উসকে দেয়। ১৯৯৬ই. সালের ২২-মার্চ ইরানি পত্রিকার এক সংবাদে বলা হয়: “নিশ্চয় বাহরাইনি সরকার বাহরাইনি জনগণের সামনে দাড়াতে সক্ষম হবে না”। এ জাতীয় সংবাদ দ্বারা তাদের উদ্দেশ্য শিয়াদের দাবি বাস্তবায়ন করা ও বাহরাইনকে আরেকটি শিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করা।
«الأنباء الكويتية» ম্যাগাজিন ১০-মে ১৯৯৬ই. তারিখে প্রকাশ করে যে, ইরাকি সেনাবাহিনী যেসব অস্ত্র কুয়েতে রেখে গেছে, সেগুলো ‘কুয়েতি হিযবুল্লাহ দল’ ক্রয় ও কব্জা করে বাহরাইনি হিযবুল্লাহর নিকট চালান করেছে।
পত্রিকাটি আরো প্রকাশ করেছে যে, ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর প্রতি ইরানের যেসব নির্দেশ রয়েছে, তন্মধ্যে বাহরাইনে গোপন পথে অস্ত্র প্রেরণ করার দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা অন্যতম। অস্ত্র আমদানির পদক্ষেপ খুব গোপনে গ্রহণ করা হয়, যেন বাহরাইনের নিরাপত্তা বাহিনী তার সন্ধান না পায় এবং নিরাপদভাবে বিভিন্ন স্থানে বণ্টন করা সম্ভব হয়।
‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর একজন কেন্দ্রীয় নেতা আলি আহমদ কাজেম মুতাকাওয়ি স্বীকার করেন: ইরানি গোয়েন্দা বিভাগের এক দায়িত্বশীল আহমদ শারিফির সাথে আমরা এক বৈঠকে বসেছি, তাতে তিনি সমুদ্রপথে বাহরাইনে অস্ত্র সরবরাহের পরামর্শ দিয়েছেন।
এ ঘোষণার সপক্ষে জাসেম হাসান খাইয়াত বলেন: ইরানি গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা আহমদ শারিফির সাথে আমরা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি, যে কোনো উপায়ে হোক বাহরাইনে অস্ত্র চালান করতে হবে।
জাসেম খাইয়াত আরো বলেন: মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে সরকার পরিবর্তন করা ও ইরানের আদলে বাহরাইনে একটি শিয়া রাষ্ট্র কায়েম করা। তিনি আরো বলেন, এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে সামরিক প্রশিক্ষণ হাসিলের জন্য ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ রেজা আলে-সাদেক ও মেজর ওহিদির মাধ্যমে প্রথম ব্যাচ উত্তর তেহরানের ‘কারাজ’ ক্যাম্পে প্রেরণ করা হয়েছে।
শিয়া খতিব আব্বাস আলি আহমদ হাবিল জনগণকে নানা খুতবা ও বক্তৃতার মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে উসকে দেয়। সে মানুষকে কঠোর হতে ও সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে উদ্বুদ্ধ করে। ছোট ছোট অনেক জমাত তৈরি করে, যেন পর্যায়ক্রমে তারা ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ দলে যোগ দেয়। [দেখুন বাহরাইনের টেলিভিষণে দেওয়া তাদের ভাষণ ও তখনকার আরবি ও বাহরানি পত্রিকাসমূহ।]
শিয়া আব্দুল ওয়াহহাব হুসাইনও এ সংগঠনে অনেক অবদান রাখে। কিভাবে নিরাপত্তা বাহিনী ও তদন্তকারীদের সাথে আচরণ করতে হবে, কিভাবে বিব্রতকর প্রশ্নসমূহের উত্তর দিতে হবে, কিভাবে সামাজিক চাহিদা পূরণ করতে হবে, কিভাবে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সামাজিক বয়কট ও আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে ইত্যাদি বিষয়ে সে ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’কে দিকনির্দেশনা প্রদান করত।
‘খতিব আব্বাস হাবিল’ আব্দুল ওয়াহহাব ও আব্দুল আমির জামরি থেকে মুহাম্মদ রিয়াশের মাধ্যমে উপরোক্ত আবদুল ওয়াহাব হুসাইন থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও নির্দেশনা গ্রহণ করত।
তখনকার বাহরাইনের তথ্যমন্ত্রণালয় ও মন্ত্রীপরিষদ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন: “‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ ইরানের বিপ্লবী গার্ডের একটি ক্যাম্প উত্তর তেহরানের ‘কারাজ’ ক্যাম্পে একাধিক প্রশিক্ষণ নিয়েছে”। পরবর্তীতে যখন ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর কর্মকাণ্ডের সাথে ইরানের সম্পৃক্ততা প্রকাশ পেল, ইরান চাপের মাথায় ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর ব্যাচগুলোকে হিযবুল্লাহ লেবাননের ক্যাম্পে স্থানান্তর করে।
‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এসব ক্যাম্প থেকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে যেমন অস্ত্র, বোমা, আত্মরক্ষার কৌশল, তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা ও প্রতারণার শিল্প ইত্যাদি। [স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শায়খ মুহাম্মদ ইবনে আলে-খলিফা ও তখনকার বাহরানি পত্র-পত্রিকা এ সংবাদ প্রকাশ করেন।]
১৯৯৬ই. সালের ঘটনার সাথে জড়িত হিযবুল্লাহর কতক ব্যক্তিবর্গ নিম্নরূপ: ক. আলি আহমদ কাজেম মুতকাওয়ি, ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর ফাইন্যান্স কিমিটির সদস্য ও ইরানি গোয়েন্দা বিভাগের সাথে সমন্বয়কারী। খ. আদেল শালাহ, সামরিক শাখার সদস্য। গ. খলিল সুলতান, প্রচার সম্পাদক। ঘ. জাসেম হাসান মানসুর আল-খাইয়াত, গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির সদস্য। ঙ. কুয়েত প্রবাসী শায়খ মুহাম্মদ হাবিব, হুসাইন আহমদ মুদাইফি, হুসাইন ইউসুফ আলি, খলিল ইবরাহিম ঈসা আল-হায়েকি। [‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর সাথে সম্পৃক্ত তখন ৪৪-জন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়।]
তাদের সন্ত্রাস ও বিদ্রোহের ফলে সে বছর বাহরাইনের ক্ষতির পরিমাণ ছিল আনুমানিক ৬৫৮,২২৪,১৫ ডলার।
এ সব ঘটনার পর, বাহরাইন সরকার কর্তৃক শিয়াদের প্রতি প্রচুর ছাড় দেওয়া এবং শিয়া হুসাইনি ডেরাসমূহের খতিব, কালো পাগড়িধারী ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর কর্মকর্তা যেমন শিয়া আলি সুলাইমান, আব্দুল আমির জামরি ও মুহাম্মদ সনদ প্রমুখ নেতৃবর্গের প্রতি বাহরাইন সরকারের ক্ষমাসূলভ আচরণ ও তাদের কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতা দেওয়া সত্বেও তারা এখনও তাদের নিজেদেরকে বিভিন্ন প্রকার ধ্বংসযজ্ঞ ও সন্ত্রাসের সাথে সংশ্লিষ্ট রেখেছে। তাদের সর্বশেষ জঘন্য ঘটনা ২০০৬ই. সালে বাহরাইনের সরকারের নিকট প্রকাশ পায়, যা ছিল একটি ইরানি ষড়যন্ত্রের নীলনকশা, যেমন বাহরাইনের বিভিন্ন জায়গায় শিয়াদের নামে জমি ক্রয় করে সেখানে তাদেরকে প্রতিষ্ঠিত করা, ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর সদস্যদেরকে বাহরাইনের সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া এবং পরোক্ষভাবে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থাকে সহযোগিতা করা, যাদের সম্পর্ক ইরানের সাথে রয়েছে। [দেখুন: ৩/৯/২০০৬ই. তারিখের موقع إيلاف ও ৪/৯/২০০৬ই. তারিখের صحيفة الأيام البحرينية ]
বাহরাইনের নিরাপত্তা বাহিনীর রিপোর্টে প্রকাশ যে, হিযবুল্লাহ বাহরাইনকে পুনরায় সংগঠিত ও নতুনভাবে ঢেলে সাজানো হচ্ছে এবং তার সদস্যদেরকে তেহরানের নিকটবর্তী “ইমাম আলি ব্যারাকে” একাধিক ব্যাচে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর একাধিক প্রতিনিধি ‘হিযবুল্লাহ লেবানন’ এর একাধিক শীর্ষ নেতার সাথে বৈঠকে বসেন, যেমন ‘হিযবুল্লাহ লেবানন’ এর ইকরাম বারাকাত ও ‘হিযবুল্লাহ বাহরাইন’ এর সামরিক শাখার নেতৃবর্গ। তাদের বৈঠক প্রথমে দামেস্ক ও পরবর্তীতে বৈরুতে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শিয়াদের আন্দোলন ও রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়, যেমন কিভাবে শিয়াদের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে ও ইরানি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে ইত্যাদি। এতে ‘হাসান নাসরুল্লাহ’ বাহরাইনি শিয়া যোদ্ধাদেরকে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। [দেখুন: مجلة الوطن العربي সংখ্যা ১৫৪৩, তারিখ: ২৭/৯/২০০৬ই.]
তাদের স্বীকারোক্তি থেকে প্রমাণিত যে, তাদের আলোচনার কতক বিষয় ছিল বাহরাইনি শিয়াদের অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা, উভয় পক্ষের সাহায্য ও অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাহরাইনের অর্থনীতিতে শিয়া ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা, মৌলিক কতিপয় পণ্যের উপর তাদের একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করা, যেন চাপ প্রয়োগ করে সরকার থেকে স্বার্থ আদায় করা সম্ভব হয়।
অনুরূপ ইরানি গোয়েন্দা বিভাগ বাহরাইনের সংসদ নির্বাচনে শিয়াদের ইতিবাচক অংশ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে ও তাদেরকে সমর্থন জানায়। সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনের জন্য শিয়াদের সর্বাত্মক সাহায্য করে, যেন তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আইন পাসে সক্ষম হয়। ইরান এভাবেই তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে, কারণ তারা সবাই উপসাগর ও আরব ভূমিতে ইরানের স্বার্থ ও তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য অব্যাহত চেষ্টা করে যাচ্ছে। [দেখুন: مجلة الوطن العربي সংখ্যা ১৫৪৩, তারিখ: ২৭/৯/২০০৬ই.]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/712/13
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।