hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হিযবুল্লাহ সম্পর্কে কী জানেন

লেখকঃ আলী আস-সাদিক

‘হরকতে আমাল’ ও তার প্রতিষ্ঠাতাদের পরিচয়
[উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট হল, ‘হরকতে আমাল’ থেকে হিযবুল্লাহর জন্ম। হরকতে আমালের সদস্যরাই তার প্রতিষ্ঠাতা ও সংগঠক। তাই হিযবুল্লাহর আলোচনার পূর্বে ‘হরকতে আমাল’ ও তার প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে জানা জরুরি।]

‘হরকতে আমালে’র প্রতিষ্ঠাতা ইরানি বংশোদ্ভব মুসা সদর ১৯২৮ই. তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তেহরান ইউনিভার্সিটি থেকে শিক্ষা সমাপ্ত করে ১৯৫৮ই. সালে তিনি লেবানন যান। এক সরকারি অনুষ্ঠানে ফুয়াদ শিহাব [ফুয়াদ শিহাবের জন্ম ১৯/৩/১৯০২ই., তিনি লেবাননের তৃতীয় প্রেসিডেন্ট, তার মেয়াদ ছিল ২৩/৯/১৯৫৮ই. থেকে ২২/৯/১৯৬৪ই. পর্যন্ত।] তাকে লেবাননের নাগরিকত্ব প্রদান করেন, ফলে সে তার নাগরিকত্ব লাভ করে, যদিও সে ইরানের সন্তান ইরানি। [দেখুন: আমাল ওয়াল মুখাইয়ামাতুল ফিলিস্তিনিয়াহ, (পৃ.৩১)]

তিনি ছিলেন খোমেনির ছাত্র। খোমেনির সাথে তার ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তারা উভয়ে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হন। মুসা সদরের ভাগ্নির পাণি গ্রহণ করে খোমেনির ছেলে আহমদ। আবার খোমেনির নাতনির পাণি গ্রহণ করে মুসা সদরের ভাগিনা মুরতাজা তাবাতাবায়ি।

‘মুসা সদর’ দক্ষিণ লেবানন, বৈরুত ও বেক্কা প্রদেশে ‘হরকতে আমাল’ নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন, যা প্রথমে দেশের জাতীয় সেনাবাহিনীর সহযোগী ছিল।

সিরিয়ার কোনো ‘নুসাইরি [নুসাইরী সম্প্রদায় সবচেয়ে খারাপ শিয়া সম্প্রদায়। তারা গুপ্তঘাতক দল। সিরিয়ার বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বাশশার আল-আসাদ এর সেনাবাহিনী সবই নুসাইরী শিয়া সম্প্রদায়ের। তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে ইসলাম হাউজ এর ‘নুসাইরিয়া’ প্রবন্ধটি পড়ুন। www.islamhouse.com/409011[সম্পাদক]]’ প্রতিনিধি লেবাননে আগমন করলে ‘মুসা সদর’ তার ডান হাত হয়ে কাজ করত। সিরিয়ার নুসাইরি সেনাবাহিনী যখন লেবাননে প্রবেশ করে, তখন ‘মুসা সদর’ দেশ প্রেমিক ইসলামি ব্যক্তিত্ব থেকে অভ্যন্তরীণ উপনিবেশ এজেন্ট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। অতঃপর সে নিম্নের কাজগুলো দ্রুত সম্পাদন করে:

১. মুসা সদর নিজের অনুগত এক সেনা অফিসারকে আদেশ করেন, ফলে সে লেবাননি এরাবিক জাতীয় সেনাবাহিনী থেকে পৃথক হয়ে সিরিয়ার সাথে মিলে নতুন এক বাহিনী গঠন করেন। অনুরূপ অপর সেনা অফিসার আহমদ মিমারি উত্তর লেবাননে লেবাননি এরাবিক সেনাবাহিনী থেকে পৃথক হয়ে সিরিয়ার নুসাইরি সেনাবাহিনীর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। ইতোপূর্বে খ্রিস্টান ক্যাথলিক শাখাভুক্ত ‘মুওয়ারানা’ সম্প্রদায়ের আতঙ্কের কারণ ছিল লেবাননি এরাবিক ফোর্স, কিন্তু মুসা সদরের এ কাণ্ডের কারণে তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল, কারণ ইবরাহিম শাহিন ও অন্যান্য শিয়া সেনা অফিসারদের থেকে আভ্যন্তরীণ এ বিপদের আশঙ্কা তারা কখনো করেনি। অতঃপর মুসা সদর ‘হরকতে আমালে’র সদস্যদের নির্দেশ করেন যেন তারা জাতীয় সেনাবাহিনী থেকে পৃথক হয়ে সশস্ত্র যোদ্ধাদের সাথে যোগ দেয়। তারপর থেকে ‘মুসা সদর’ ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন ও সংস্থাসমূহের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়।

২. ৫/৮/১৯৭৬ই. সালে ফ্রান্সের এক সংবাদ সংস্থা থেকে জানা যায়, সিরিয়ান নুসাইরি সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রণাধীন লেবাননের যেসব এলাকা রয়েছে, তাতে স্থানীয় সরকার গঠনের উদ্দেশ্যে ‘মুসা সদর’ রোমের অর্থোডক্স, ক্যাথলিক খ্রিস্টান, ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের অপর গ্রুপ ‘মুওয়ারানা’ সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ও লেবাননের বেক্কা প্রদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে রিয়াক এয়ার ফোর্সের হলরুমে এক বৈঠকে বসেন।

তারপর থেকে ‘মুসা সদর’ ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলোকে দমন করা আরম্ভ করেন, দেখুন ১২/৮/১৯৭৬ই. তারিখের ফ্রান্সের সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলোকে সে অপবাদ দেয় যে, তারা এরাবিক গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করছে, যার প্রথম সারিতে আছে লেবাননের সংবিধান। তার নিকট ইয়াহূদী আগ্রাসন বিরোধী ফিলিস্তিনি মুসলিমরা একটি সমস্যা, যারা ফিলিস্তিন ও লেবাননকে ইসরাইল মুক্ত করতে চায়, সে তার অনুগত শিয়াদের ফিলিস্তিনি সমস্যা মোকাবিলার আহ্বান জানায়।

ফিলিস্তিনিদের উপর মুসা সদরের অত্যাচার ছিল পীড়াদায়ক, স্বাধীনতাকামী একনেতা কায়রোতে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, মুসা সদর খ্রিস্টান মুওয়ারানা গোষ্ঠী ও সিরিয়া সরকারের সাথে মিলে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

মুসা সদর ও তার দল সিরিয়া সরকারকে শুধু সহযোগিতা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং দাবিও জানিয়েছে যে, ফিলিস্তিনিদের আত্মঘাতী হামলা বন্ধ করা হোক এবং তাদেরকে দক্ষিণ লেবানন থেকে বহিষ্কার করা হোক, এ জন্য দফায় দফায় সংঘর্ষও বাঁধে তার অনুগতদের সাথে। তারা ‘সায়দা’ নগরীতে সর্বাত্মক ধর্মঘট করে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র যোদ্ধাদের (মুজাহিদদের) দক্ষিণ লেবানন থেকে বিতাড়িত করার দাবি জানায়।

ফিলিস্তিনি মুজাহিদদের বাধা দেওয়ার লক্ষ্যে মুসা সদরই সর্বপ্রথম দক্ষিণ লেবাননে ক্যাম্প তৈরির জন্য সরকারী জরুরি ফোর্স তলব করে, যেন ফিলিস্তিনিরা এতে জড়ো না হতে পারে এবং এখান থেকে ইসরাইল বিরোধী কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা না হয়। মুসা সদরের দাবি হচ্ছে, লেবাননের সাথে ইসরাইলের শান্তি চুক্তি রয়েছে, যা কোনোভাবেই ফিলিস্তিনিরা ভঙ্গ করতে পারে না। [দেখুন: আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ আল-গরিব রচিত ‘আমাল ওয়াল মুখাইয়ামাতুল ফিলিস্তিনিয়াহ’: (পৃ.৩১-৩৪)]

ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার এক সেনা অফিসার বলেন: “ইসরাইল ও লেবাননি শিয়াদের মাঝে সাক্ষরিত চুক্তি মোতাবেক নিরাপদ এলাকার শর্ত নেই, যেখানে ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা করা যাবে না। আমরা তাদের স্বার্থের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাদের সাথে আমাদের একপ্রকার সমঝোতা রয়েছে, যেভাবে হোক ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্ব নিঃশেষ করতে হবে, যাদের কারণে হামাস ও জিহাদি গ্রুপগুলো এখনো টিকে আছে”। [দেখুন: ‘সাহিফাতু মায়ারিফ’ আল-ইহুদিয়াহ, তারিখ: ৮/৯/১৯৯৭ই.]

মুসা সদর সবচেয়ে বেশী কাজ করে সিরিয়ার নুসাইরি সরকারের সাথে। এক সরকারী প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর লেবাননের নুসাইরি সম্প্রদায় তার কারণে শিয়া ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে, সে তাদের জন্য একজন শিয়া জাফরি মুফতি নিয়োগ দিয়েছে। আবার যখন হাফেয আল-আসাদের পিতার মৃত্যুর সময় হল, সিরিয়ার সরকার মুসা সদরকে ডেকে পাঠালো। সে তার পিতাকে কতক মন্ত্র পাঠ করাল, যা তাদের মৃতদের মুমূর্ষু অবস্থায় পাঠ করানো হয়।

লেবাননি এরাবিক সেনাবাহিনী ও লেবাননে অবস্থিত ফিলিস্তিনি সশস্ত্র যোদ্ধারা যখন কোনো যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়, শিয়াদের সামনে তারা নিজেদের পিঠ অরক্ষিত পায়। উদাহরণত যখন তারা বালাবাক্কা ও হারমালের নিকটস্থ এলাকায় নুসাইরিদের সাথে যুদ্ধে মশগুল ছিল, তখন শিয়া জাফরি মুফতি সুলাইমান ইয়াফুঈ গিয়ে নুসাইরিদের সাথে মিলে এবং তাদের নেতৃত্ব দিয়ে অসহায় ও নিরস্ত্র মুসলিমদের মাড়িয়ে বিজয় বেশে বালাবাক্কায় প্রবেশ করে।

মুসা সদর এতেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং সে ‘হরকতে আমালে’র নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ করেছে যে, তারা বৈরুতের ‘নাবা’ ও ‘শিয়াহ’ এলাকায় মুওয়ারানা খ্রিস্টানদের প্রতিরোধ করবে না। তার এ কথার অর্থ বৈরুতের শিয়া অধ্যুষিত এলাকা সে মুওয়ারানাদের নিকট লিজ দিয়েছে, সেখান থেকে তারা যেভাবে ইচ্ছা সুন্নি মুসলিমদের হত্যা করবে, বন্দী করবে। সে একসময় বলত: “অস্ত্র পুরুষের সৌন্দর্য, নিশ্চয় আমরা বদলে দেওয়ার দল, আমাদের আন্দোলন কারবালার বালুতে মিশে যায়নি”। [দেখুন: حزب الله من الحلم الأيديولوجي إلى الواقعية السياسية (পৃ.১৫৫০)]

১৪০৫হি. রমদানে أمل الشيعية সংগঠন বৈরুতে ফিলিস্তিনি শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় গ্রহণকারীদের সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দেয়। এতে তারা সবধরনের অস্ত্র ব্যবহার করে, পূর্ণ মাস তারা নিধনযজ্ঞ অব্যাহত রাখে, যতক্ষণ না শরণার্থীরা দামেস্কের তৎকালীন শাসক হাফেজ আসাদ ও তার বৈরুত প্রতিনিধি ‘নবীহ বারি’র সকল শর্ত মেনে নিয়েছে, তাদের উপর থেকে ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ হয়নি।

২০/৫/১৯৮৫হি. সোমবার রমদানের প্রথম রাতে শরণার্থী শিবিরে হামলা শুরু হয়। ‘হরকতে আমালে’র মিলিশিয়ারা ‘সাবরা’ ও ‘শাতিলা’ নামক দু’টি ফিলিস্তিনি শিবিরে হামলা করে। অতঃপর গাজার হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার, নার্স ও স্টাফদের ধরে ‘আমালে’র স্থানীয় অফিস জালুল-এ নিয়ে আসে। শিয়া যোদ্ধারা কয়েকটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, যেমন রেড ক্রিসেন্ট ও রেড ক্রস সংস্থার চিকিৎসার সরঞ্জামাদি বহনকারী এম্বুলেন্সকে শরণার্থী শিবিরে প্রবেশে বাঁধা দেয়, হাসপাতাল থেকে পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয়।

২০/৫/১৯৮৫ই. সোমবার ভোর পাঁচটায় ‘সাবরা’ শরণার্থী শিবির কামানের গোলা ও বন্দুকের গুলির শিকার হয়। একই দিন সকাল সাতটায় ‘বুরজুল বারাজেনাহ’ শরণার্থী শিবিরেও তার বিস্তার ঘটে। যখন ‘হরকতে আমালে’র নৃশংস হামলা নারী, পুরুষ ও শিশুদের নির্বিচারে শিকার করছিল, তখন ‘নবীহ বারিহ’ লেবাননের ষষ্ঠ ব্রিগেডকে নির্দেশ করল আহলে সুন্নার বিপক্ষে ‘আমালে’র যোদ্ধাদের সাহায্য কর। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ষষ্ঠ ব্রিগেড এসে চতুর্দিক থেকে ‘বুরজুল বারাজেনাহ’ শিবিরে গোলা বর্ষণ শুরু করল।

উল্লেখ্য যে, ষষ্ঠ ব্রিগেডের সবাই শিয়া। ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু শিবিরে তারা কামান ও রকেটের হামলা করে। ষষ্ঠ ব্রিগেডকে ১৯৮৪ই. সালের এপ্রিল থেকে এসব অস্ত্র ও গোলা-বারুদ দিয়ে সজ্জিত করার পর এই প্রথমবার তার প্রয়োগ করল, তাও আহলে সুন্নার বিরুদ্ধে।

১৮/৬/১৯৮৫ই. তারিখে ‘হরকতে আমালে’র আগুনে বিধ্বস্ত শিবির থেকে ফিলিস্তিনিরা মুক্ত হয়। পুরো একমাস ভয়-ভীতি-আতঙ্ক ও ক্ষুধার্ত জীবনে তারা কুকুর ও বিড়াল পর্যন্ত খেতে বাধ্য হয়েছিল। ৯০% বাড়ি-ঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। নানা তথ্য থেকে তিন হাজার একশো হতাহতের সংখ্যা জানা যায়। ১৫-হাজার শরণার্থী বাড়ি-ঘর ছেড়ে চলে যায়, যা মোট আশ্রয়প্রাপ্তদের প্রায় ৪০%।

শরণার্থী ক্যাম্পে ‘হরকতে আমালে’র নৃশংস হত্যাকাণ্ড ছিল খুব বেদনাদায়ক, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। [খোমেনির পক্ষ থেকে এসব হত্যাকাণ্ডের বিপক্ষে কোনো প্রতিবাদ বা অসন্তুষ্টি ছাপা হয়নি, লাগাতার এসব নৃসংশতা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সে। শায়খ ‘আসাদ বিউদ তামিমি’ ‘গাজি আব্দুল কাদের হুসাইনি’কে সাথে নিয়ে খোমেনির নিকট ইরানে যান, যেন তিনি গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, কিন্তু তিনি ব্যবস্থা নিতে অস্বীকার করেন! অতঃপর তারা ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনতাজিরির নিকট যান, তিনি গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে ফতোয়া দেন, যে কারণে খোমেনি তার উপর খুব ক্ষিপ্ত হন এবং তাকে প্রেসিডেন্সি কক্ষ থেকে সরিয়ে দেয়! দেখুন: মুহাম্মদ আসাদ বুউদের প্রবন্ধ: ماذا يجري في لبنان “লেবাননে কি ঘটছে”, যা ২৭/৮/১৪২৭হি. موقع مفكرة الإسلام ওয়েব সাইট প্রকাশ করেছে। উস্তাদ ফাহমি হাওয়িদি বলেন: “ইমাম খোমেনি ফিলিস্তিনি স্মরণার্থী শিবিরে ‘হরকতে আমালে’র হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে নীরবতা অবলম্বন করেন। তিনি ২০-জনু, ১৯৮৫ই. সালে যখন ঈদের খুতবা পাঠ করেন, স্মরণার্থী শিবিরে ফিলিস্তিনিদের উপর পরিচালিত যুদ্ধের প্রতি ঈঙ্গিতও করেননি। তার একাধিক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি যখন এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসা করল, তিনি বললেন: নিশ্চয় ইমাম বিভিন্ন জাতির মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করেন, এ হিসাব তার নিকট, তিনি ভালো জানেন তার ভারসাম্যের বিষয়! দেখুন: ফাহমি হাওয়িদি রচিত إيران من الداخل ‘ইরান মিনাদ দাখিল’: (পৃ.৪০৪)] নিম্নে তার কয়েকটি গোপন তথ্য উপস্থাপন করছি:

১. ‘ইতালি রিপাবলিকান’ পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সাবরা ও ‘শাতিলা’র ম্যাসাকার ছিল জঘন্যতম নৃশংসতা, যা ‘হরকতে আমালে’র সদস্যরা সংগঠিত করেছে।

২. ২৬/৫/১৯৮৫ই. তারিখে ‘আমালে’র শিয়ারা একটি শরণার্থী ক্যাম্প গুড়িয়ে দিলে শত শত বৃদ্ধ, শিশু ও নারী হতাহত হয়।

৩. ‘সানডে টেলিগ্রাফ’ পত্রিকার প্রতিবেদক বলেন: বৈরুতের হাসপাতালে অনেক ফিলিস্তিনি মৃতদেহের গলা কাটা ছিল।

৪. আহতদের হত্যা করার দৃশ্য দেখে প্রতিবাদ করায় এক নার্সকেও শিয়ারা হত্যা করে।

৫. দু’জন সাক্ষীর বরাতে ‘অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস’ সংস্থা জানায় যে, আট দিনে ‘আমাল মিলিশিয়ারা’ তিনটি শরণার্থী শিবির থেকে কয়েক ডজন আহত ও বেসামরিক লোক ধরে এনে হত্যা করেছে।

৬. দু’জন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, তারা ‘হরকতে আমালে’র যোদ্ধা ও ষষ্ঠ ব্রিগেডের সৈনিকদের দেখেছে, গাজা হাসপাতাল ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৪৫ এর অধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে অনেকে আহতও ছিল।

৭. এক ফিলিস্তিনি নারী লাশের দীর্ঘ সারি দেখে চিৎকার করে উঠেন: “ইয়াহূদীরাও তাদের চেয়ে ভালো”। অপর নারী নাক ঢেকে লাশের সারিতে ভাইয়ের লাশ তালাশ করছেন... চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে হটাৎ চিৎকার করে উঠলেন: নিশ্চয় এই তো সে (আমার ভাই), কিন্তু দেখছি পোকায় তার শরীর খাচ্ছে... এরূপ আরো অনেক মৃতদেহ ছিল যাতে মাছি ভনভন করছে।

৮. ‘সাবরা শিবির’ পতনের পর ‘আমালে’র যোদ্ধারা পশ্চিম বৈরুতের রাস্তায় স্বাধীনতা দিবসে মার্চ করার সময় শ্লোগান দেয়: لا إله إلا الله العرب أعداء الله “আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আরব হল আল্লাহর দুশমন”। [দেখুন: الوطن الكويتية তারিখ, ৩৬/১৯৮৫ই. أمل والمخيمات الفلسطينية থেকে সংগৃহীত, (পৃ.৯৯)] ‘আমালে’র অপর সদস্য অস্ত্র হাতে বলে: “আমি হত্যা করেই যাব, যত দিন লাগবে লাগুক, যতক্ষণ না ফিলিস্তিনিরা লেবানন থেকে নিঃশেষ হয়”।

৯. ৪/৬/১৯৮৫ই. তারিখ কুয়েতি সংবাদ সংস্থা ও ৩/৬/১৯৮৫ই. তারিখ ‘আল-ওয়াতান’ ম্যাগাজিন প্রচার করে: “আমালে”র যোদ্ধারা ‘সাবরা’ শরণার্থী শিবিরে পরিবারের সামনে থেকে ২৫-যুবতীকে অপহরণ করে তাদের শ্লিলতাহানির মত জঘন্য অপরাধ করেছে”।

এসব ডকুমেন্ট থেকে আমরা নিশ্চিত ‘হরকতে আমালে’র মূল লক্ষ্য ফিলিস্তিনি সুন্নিদের অস্তিত্বকে নিঃশেষ করা, যে সুন্নি ফিলিস্তিনিরা দখলদার ইয়াহূদীদের থেকে নিজেদের মাতৃভূমি মুক্ত করতে চায়। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে দ্বাদশ ইমামিয়া আকিদা তার অনুসারীদের অন্তরে আহলে সুন্নার প্রতি হিংসা-ক্ষোভ ও প্রতিশোধ স্পৃহা জন্ম দিয়ে থাকে, তাই তাদেরকে তারা কাফের ও ইয়াহূদী-খ্রিস্টানদের সমতুল্য জ্ঞান করে, বরং তাদের চেয়েও বড় কাফের মনে করে।

তাওফিক মাদিনি বলেন: “হরকতে আমালে’র অন্তর্নিহিত কার্যক্রম হচ্ছে সশস্ত্র ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্ব নিঃশেষ করা, কারণ তারা শিয়া সমাজের নিরাপত্তার অন্তরায়। তাদের কারণে ইসরাইল দক্ষিণ লেবাননে হামলার সুযোগ পায়”। [দেখুন: أمل وحزب الله في حلبة المجابهات (পৃ.৮১)]

ইসরাইলি সৈন্যরা যখন লেবানন ঢুকে শিয়াদের মদদে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের দমন করে, তখন শিয়ারা দক্ষিণ লেবাননে ইয়াহূদী সৈন্যদের ফুল ও তোরণ দিয়ে অভ্যর্থনা জানায়! [সুবহি তুফাইলি الشرق الأوسط কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে এরূপ বলেছেন। দেখুন, সংখ্যা: (৯০৬৭), ২৯-রজব, ১৪২৪হি. মোতাবেক: ২৫-সেপ্টেম্বর, ২০০৩ই. এ বিষয়টি হিযবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহও নিশ্চিত করেছেন। দেখুন: سجل النور (পৃ.২২৭), যা الوحدة الإعلامية لحزب الله থেকে প্রকাশিত। [আদেল রউফ রচিত, عراق بلا قيادة থেকে সংগৃহীত, (পৃ.২৬৬)]

‘হরকতে আমালে’র এক নেতা (হায়দার দায়েখ) বলেন: “আমরা ইসরাইলের দিকে অস্ত্র তাক করে ছিলাম, কিন্তু ইসরাইল আমাদের জন্য তার হাত প্রসারিত করল ও আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এলো। তারা ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী ওহাবিদেরকে দক্ষিণ লেবানন থেকে হটাতে আমাদের অনেক সাহায্য করেছে”। [দেখুন: হায়দারের সাথে এক সাংবাদিকের সাক্ষাতকার, যা ২৪/ ১০/ ১৯৮৩ই. তারিখে مجلة الأسبوع العربي প্রকাশ করেছে।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন