hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হিযবুল্লাহ সম্পর্কে কী জানেন

লেখকঃ আলী আস-সাদিক

৪৬
দ্বিতীয় ধাপ:
কেউ বলেন: হাসান নাসরুল্লাহ ও তার দল বর্তমান ইয়াহূদীদের মোকাবেলায় রুখে দাঁড়িয়েছে, যখন সকল রাষ্ট্র ও দল হাত গুটিয়ে নিয়েছে। তারা ইয়াহূদীদের ক্ষতি করছে, যা খোদ ইয়াহূদীরা স্বীকার করে। আমরা কিভাবে তাদের বিরুদ্ধাচরণ করি, অথচ তারা উম্মতে মুসলিমার পক্ষে দুশমনের সাথে লড়াই করছে?! আমরা কি ইয়াহূদীদের ক্ষতিতে খুশি না?!

এটা সংশয়, বরং ফেতনা কোনো সন্দেহ নেই। যারা বাহ্যিক অবস্থা দেখেন, আবেগি হৃদয় নিয়ে ভাবেন এবং হিযবুল্লাহর নীতি, আকিদা ও লক্ষ্য জানেন না, তাদের ব্যতীত কেউ এসব কথায় ধোঁকা খেতে পারে না।

এ সন্দেহ দূরীকরণে একটু ব্যাখ্যা করে বলছি:

প্রথমত: ইয়াহূদীদের যে অনিষ্টই স্পর্শ করুক তাদের ব্যক্তিতে ও সামরিক ঘাটিতে আমরা তাতে খুশি। তবে প্রতারিত হয়ে, ইতিহাস ভুলে ও আবেগে তাড়িত হয়ে এভাবে বলা ঠিক নয়: “যে কেউ ইয়াহূদীদের মারুক, তারা আমাদের ভাই ও বন্ধু”। বরং কে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে, কে তাওহীদ ও সুন্নতকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেমন ফিলিস্তিনে আমাদের ভাইয়েরা রয়েছে, তাদেরকে পৃথক করব, তাদের সাথে বন্ধুত্ব ও সখ্যতা গড়ে তুলব, পক্ষান্তরে যে তাওহীদের উপর নেই, তাওহীদ ব্যতীত দ্বিতীয় কোনো লক্ষ্য লালন করে, আমরা তার সাথে বন্ধুত্ব করব না এবং তাকে সাহায্যও করব না। যদিও শত্রুকে মারার কারণে খুশি হব, কারণ শত্রু দুর্বল হচ্ছে, অনুরূপ শত্রুপক্ষ তাকে মারার কারণেও খুশি, যেন শির্ক ও কুফর দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়। আমাদের জবান বলে: হে আল্লাহ তুমি জালেমদেরকে জালেম দ্বারা ধ্বংস কর এবং তাদের মাঝখান থেকে তাওহীদপন্থীদের নিরাপদে বের করে আন। আমরা যখন বলি: রাফেযীদেরকে শত্রু পক্ষ মারলে খুশি হই, তার উদ্দেশ্য তাদের আস্তানা ও ঘাঁটি, সাধারণ মুসলিম, শিশু, নারী ও নিরপরাধ মানুষ কখনো নয়। এতে আমরা দুঃখিত হই, খুশি হই না।

দ্বিতীয়ত: অত্র এলাকায় ষড়যন্ত্র ও প্রতারণার খেলা চলছে, যা খেলছে ইরান ও সিরিয়া। তারা হাসান নাসরুল্লাহ ও তার দলকে সাহায্য করে এবং তারাই হিযবুল্লাহকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঠেলে দেয়। এ ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার মূল কারণ:

১. অত্র এলাকাকে কেন্দ্র করে ইরানের বিরাট পরিকল্পনা ও প্রোগ্রাম রয়েছে, সেই পরিকল্পনাই তারা বাস্তবায়ন করতে চায়। আমেরিকা, সাফাভি (ইরান) ও ইয়াহূদী সম্প্রদায় যখন থেকে ইরাক দখলের পায়তারা করছে, সেই থেকে ইরানের তৎপরতাও দ্রুত বর্ধিত হচ্ছে। কয়েক মাস পূর্বে দামেস্কে ইরান ও সিরিয়ান সামরিক সহায়তার চুক্তি হয়, তার সাথে হিযবুল্লাহ ও ফিলিস্তিনি কয়েকটি গ্রুপ যোগ দেয়। এ দিকে ইরাকের কয়েকটি শিয়া গ্রুপ তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে। তাদের নতুন চুক্তি ক্যান্সারের ন্যায় বিভিন্ন জায়গায় জড়িয়ে পড়ছে, মুসলিম উম্মাহর উপর যার অনিষ্ট ইয়াহূদীদের থেকেও মারাত্মক। এ পরিকল্পনার পক্ষে মুসলিমদের সমর্থন লাভ ও তাদের এলাকায় দ্রুত তার প্রচারের জন্য ফিলিস্তিনি ঘটনা ব্যতীত উত্তম কোনো ঘটনা নেই। তাই ফিলিস্তিনকে তুরুপের তাস ও খেলনার গুটি বানানো হয়েছে, যার পশ্চাতে রয়েছে ইরানি সাফাভি সম্প্রদায়ের খবিস উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন, যাদের আকিদা ও মূলনীতিসমূহ আমরা ইতিপূর্বে জেনেছি। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আরবি ও ইসলামি বিশ্বে শিয়া সম্প্রদায়ের আধিপত্য বিস্তার করা, যার সূচনা হয়েছে শাম ও ইরাকের উর্বর ভূমি থেকে। অতঃপর ধীরে ধীরে পুরো বিশ্বে তার বিস্তার ঘটানো।

তৃতীয়ত: লেবাননি রাফেযী ও ইয়াহূদীদের মাঝে কেন হঠাৎ ঝগড়া বাঁধলো, তার কয়েকটি ব্যাখ্যা তারা পেশ করে:

১. ইরাকে শিয়াদের ‘সুন্নী মুক্ত আন্দোলন’ তীব্রতর করা, যা বাস্তবায়ন করছে ইরাকি শিয়া মিলিশিয়া। ফিলিস্তিনি অধিবাসীদের বিরুদ্ধে হত্যা, ধ্বংস-যজ্ঞ এবং দক্ষিণ ইরাকে সুন্নিদেরকে নির্বাসনে পাঠানোর আন্দোলন তো চলছেই, যার ফলে ‘বসরা’তে মাত্র ৭% পার্সেন্ট সুন্নী মুসলিম অবশিষ্ট আছে, অথচ কয়েক দশক আগে সেখানে মুসলিমদের আধিক্য ছিল। আমেরিকার ইরাক দখলের সময়ও সেখানে ৪০% পার্সেন্ট সুন্নী মুসলিম ছিল।

এর মাঝে ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদের মিথ্যাচারও প্রকাশ পেল, যার বাণী ছিল: “ইসরাইলের অস্তিত্ব নিঃশেষ কর এবং শয়তানে আকবর আমেরিকার সাথে জিহাদ কর”। এ দিকে সত্যিকার মুজাহিদ আহলে-সুন্নাহ আফগানিস্তান, ইরাক ও চেচনিয়ায় যুদ্ধ করে সততার স্বাক্ষর রাখছে। অনুরূপ ফিলিস্তিনি সুন্নী মুজাহিদরা দুনিয়াকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছে যে, ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে একমাত্র তারাই যুদ্ধের ময়দানে আছে। বিশ্বের দৃষ্টিতে হিযবুল্লাহ শুধু একটি নাম সর্বস্ব সংগঠন ছিল, ফিলিস্তিনি আন্দোলনকারী মুজাহিদরা বাহাদুরি প্রদর্শন করে ইসরাইলকে অপমান করেছিল। পক্ষান্তরে হিযবুল্লাহ ইয়াহূদীদের সাথে গোপনে চুক্তি করেছিল, তারা শুধু ইসরাইলের ভাড়াটিয়া গোলাম। অতএব এমন কোনো আমল করা জরুরি ছিল, যা থেকে প্রমাণ হয় যে, হিযবুল্লাহও ইয়াহূদী বিরোধী, তারও প্রয়োজন আছে। এ জন্যই দু’জন ইসরাইলি সৈন্য অপহরণ করার নাটক করল।

২. ইরাকি প্রতিরোধ আন্দোলনকারী সুন্নিরা যখন আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত, তখন ইরান আমেরিকার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলছে, হিযবুল্লাহও তাতে যোগ দিচ্ছে। ইরাকি শিয়া মিলিশিয়ায় হিযবুল্লাহ অনুপ্রবেশ করছে ও তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। সবাই ইরাকের আহলে-সুন্নাহকে নিঃশেষ করার চক্রান্তে লিপ্ত, ইত্যাদি বিষয়গুলো প্রকাশ হয়ে পড়েছিল।

৩. সিরিয়া ও লেবাননে শিয়া আক্রমণ নিষ্প্রাণ হয়ে গিয়েছিল, কারণ জনগণের নিকট প্রত্যাখ্যাত ইয়াহূদী ও আমেরিকার সাথে ইরানের সমঝোতা সবাই জেনে গেছে। আরেকটি কারণ ছিল, ইরাকে আমেরিকা-ইরানি স্বার্থে কিছু মতানৈক্য দেখা দিয়েছিল।

ইত্যাদি কারণে খুব জরুরি হয়েছিল এমন কোনো কাজ করা, যার ফলে বিশ্বের দৃষ্টি হিযবুল্লাহর দিকে ধাবিত হয় ও ইরাক-ফিলিস্তিনে সংগঠিত শিয়া নৃশংসতা মানুষ ভুলে যায়। অনুরূপ ফিলিস্তিনে স্বাধীনতা আন্দোলনের সফলতাও মুছে যাক, যাদের সামনে ইসরাইল অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছিল। তাই শিয়া তাবলীগী কাজকে প্রাণ দেওয়ার জন্য এরূপ করা জরুরি ছিল। অপর দিকে আহমাদিনেজাদের চটলাদার শ্লোগান: “ইসরাইল নামক রাষ্ট্র মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা জরুরি” এবং “ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা অপরিহার্য” মানুষ ভুলতে বসেছিল, পুনরায় তাও চালু করা প্রয়োজন দেখা দিল। আবার ইরাকের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী হিযবুল্লাহর অবস্থাও চাপা দেওয়া প্রয়োজন ছিল। লেবাননের পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে আসছিল, সেটাও বিনষ্ট করার প্রয়োজন ছিল, যার হুমকি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট দিয়েছে। এসব কারণেই একটি নাটক খুব জরুরি হয়ে পড়ে, যদিও সেটা লেবাননের বিনিময়ে... সমগ্র লেবানন... যদিও তার খেসারত সরকার ও সাধারণ জনগণ সবাইকে গুনতে হয়, তবুও এ রকম একটা ফিল্ম অবশ্যম্ভাবী ছিল। যদিও এ ফিল্ম ও খেলনা গুটি চালনার কারণে পূর্ণ লেবানন ধ্বংস হয়..!

এ জন্য... এবং এসব উদ্দেশ্য হাসিল করার নিমিত্তে হিযবুল্লাহ ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে তার দুঃসাহসিক ও দুর্দান্ত অপারেশনের মাধ্যমে ফিল্মের আয়োজন করে, কারণ সে ইরানি স্বার্থ বাস্তবায়নকারী তৃতীয় এজেন্ট!..

আমরা কি ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে অপারেশন পরিচালনার বিপক্ষে?!. না, কখনো না। আমরা দখলদার ইয়াহূদী অস্তিত্বে আঘাতকারী প্রত্যেক বিষয়ে খুশি হই, যা তাদেরকে দুর্বল বানায় ও মানুষের অন্তর থেকে তাদের ভীতি দূর করে। কিন্তু ধোঁকা খেতে চাই না, কিংবা চাই না ইয়াহূদীদের পরিবর্তে এমন শক্তি আগমন করুন, যারা ইয়াহূদীদের চেয়েও খারাপ। আমরা চাই না এই ফিল্মের আয়োজকরা ফিলিস্তিন নিয়ে ব্যবসা করুক, যখন বাগদাদে শিয়ারা ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে, তাদের রক্ত প্রবাহিত করছে, তাদের সম্পদ ও সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে...

আমরা কখনো বরদাশত করি না ইরান তার ঘৃণিত উদ্দেশ্যের জন্য সিরিয়া ও লেবাননের নিরাপত্তা বিনাশ করুক। আমরা বরদাশত করি না ইরানের এজেন্ডা বাস্তবায়নে হিযবুল্লাহ উসকানিমূলক কাজ করুক, আর তার বিনিময়ে ইসরাইল লেবাননের জনগণ, শিশু ও নারীদের হত্যা করুক। আমরা বরদাশত করি না নব্য ইরানিরা নিজেদের গায়ে মিথ্যার চাদর উড়াক ‘তারা প্রতিরোধকারী’, কারণ সবার সামনে ও ভর দুপুরে তারা আমেরিকান ও ইয়াহূদী লক্ষ্য বাস্তবায়নে সদা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমরা চাই না, ইরানি শিয়ারা আমাদের পরিবার ও মুসলিম ভাইদেরকে ইরাকে যেভাবে তারা হত্যা করছে, তার থেকে বিশ্ব দৃষ্টি অন্য দিকে ফিরিয়ে নিক। আমরা চাই না এসব ঘৃণ্য কাজের বিনিময়ে ইরান পারমানবিক অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম হোক, যা সে কুমতলব হাসিলের জন্য আরব ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে, ব্যবহার করবে তাদের দেশ, ঐতিহ্য, সম্পদ ও সম্মানের বিপরীত!..

পুরো ইতিহাস তালাশ করুন, কোথাও পাবেন না শিয়ারা কখনো ইয়াহূদীদের সাথে যুদ্ধে কিংবা তার ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছে, অথবা পাবেন না কখনো শয়তানে আকবরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে?! পূর্ণ ইতিহাসে একটি শব্দও পাওয়া যাবে না, যা তাদের দাবির স্বপক্ষে। বরং তার উল্টো পাবেন, যা ইরানকে লাঞ্ছিত করে, তার প্রমাণ তারা ইরাকের যুদ্ধে আমেরিকান ও ইয়াহূদীদের থেকে অস্ত্র আমদানি করেছে, যা ইরানি চাপাবাজদের গালে চপেটাঘাত, “যার নাম ইরানগেট ক্যালেঙ্কারি”। ইরান নব্য শিয়াদের উসকানি দিচ্ছে, সে আমেরিকাকে ইরাকের জনগণের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলছে এবং ইরান আমেরিকাকে ইরাকে দীর্ঘ দিন রাখার জন্য সাহায্য করছে। ইরান হিযবুল্লাহর মাধ্যমে লেবাননের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে, তার শান্তি ও শৃঙ্খলাকে নস্যাৎ করছে। এ ইরান উপসাগরীয় দেশসমূহে উগ্রতার ইন্ধন দিচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের তিনটি দ্বীপ অন্যায়ভাবে দখল করে আছে। ইরান ফিলিস্তিনিদের আন্দোলনকে খেলনায় পরিণত করে, যখন ইচ্ছা তার দ্বারা সে খেলা শুরু করে, যার খেসারত দিতে হয় আরব ও ইসলামি ভূ-খণ্ডকে!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন