hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

গীবত থেকে বাঁচার উপায়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১২
গীবত করার পরিণাম
আল্লাহ তা‘আলার কাছে গীবত একটি বড় ধরণের অপরাধ। তাই এর পরিণামও বড় ভয়াবহ। এর পরিণাম উভয় জগতেই হয়ে থাকে। গীবতের কারণে ব্যক্তি যেভাবে দুনিয়ার জীবনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, পরকালের জীবনেও তার চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মানুষ গীবতের মাধ্যমে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। যেমন :

১. গীবতের ফলে বিদ্বেষ ও বিভেদ সৃষ্টি হয়

গীবতের অন্যতম বড় কুফল হচ্ছে, এর ফলে মুসলমানদের একতা বিনষ্ট হয়ে যায়। প্রত্যেকের অন্তরে অন্যের প্রতি সন্দেহ ও অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়। ভালবাসা ও প্রীতি বিলুপ্ত হয়।

২. গীবতের কারণে গীবতকৃত ব্যক্তির প্রতি অনাস্থা জন্মে :

যার গীবত করা হয় তার দোষগুলো মানুষের মাঝে প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ফলে তার প্রতি মানুষের অনাস্থা জন্ম নেয়। তাছাড়া অপরের দোষ বর্ণনা করার কারণে গীবতকারীর প্রতিও মানুষের অনাস্থা তৈরি হয়।

৩. গীবতকারী মানুষের নিকট আস্থা হারিয়ে ফেলে :

দুনিয়াতে গীবতের একটা বড় কুফল হচ্ছে গীবতকারী সকলের আস্থা হারিয়ে ফেলে। কেউ তার উপর আস্থা স্থাপন করতে ভরসা পায় না। কেননা সকলেই একথা মনে করে যে, আজ যেমন সে আমাদের সামনে অন্য মানুষের দোষ আলোচনা করছে তেমনি সে যে কাল অন্যের সামনে আমাদের দোষ আলোচনা করবে না তার কি নিশ্চয়তা আছে?

যে ব্যক্তি তোমার সামনে অন্যের নিন্দা করছে তার কাছে এ আশা তুমি করো না যে, অন্যের কাছে সে তোমার সুনাম করবে। কেননা দোষচর্চা করাটাই হচ্ছে তার মজ্জাগত পেশা।

এক জ্ঞানী ব্যক্তির সামনে এক মূর্খ ব্যক্তি মানুষের গীবত ও দোষচর্চা শুরু করল। জ্ঞানী ব্যক্তিটি তখন তাকে উপদেশ দিয়ে বললেন, ‘‘দেখ ভাই! মানুষের গীবত করে তুমি তোমার প্রতি আমার আস্থা নষ্ট করে দিও না।’’

৪. গীবত করলে শয়তান আনন্দিত হয় :

আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

اِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوْهُ عَدُوًّا

‘‘নিশ্চয় শয়তান তোমাদের শত্রু। অতএব তাকে তোমরা শত্রুই মনে করো।’’ (সূরা ফাতির- ৬)

পাপ কাজ মাত্রই শয়তানকে আনন্দ দেয়। কিন্তু শয়তান এ কথা নিজেই স্বীকার করেছে যে, গীবতেই তাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দেয়।

যারা গীবত করে শয়তান তাদের মুখে মধু মিশিয়ে দেয়।

৫. গীবত করলে আল্লাহ ও তার নবীর অবাধ্যতা করা হয় :

আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

وَمَا اٰتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا

‘‘রাসূল তোমাদের নিকট যা কিছু নিয়ে আসেন তোমরা তা গ্রহণ কর, আর যা কিছু নিষেধ করেন তা হতে তোমরা বিরত থাক।’’ (সূরা হাশর- ৭)

সুতরাং যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করে গীবত করা হয়, তবে তা আল্লাহর ও নবীর অবাধ্যতা ছাড়া আর কিছুই নয়।

৬. পাপের দিকে মন আকৃষ্ট হয় :

কিছু কিছু পাপ আছে যা সংঘটিত হওয়ার কারণে আরো কতগুলো পাপ সংঘটিত হয়ে পাপকে আরো শক্তিশালী করে। গীবত তার মধ্যে একটি। চারটি জিনিস হচ্ছে পাপের মূল :

(১) গীবত,

(২) মিথ্যা,

(৩) চোগলখোরি,

(৪) কোন নারীর সতীত্বের দিকে তাকানো।

৭. গীবতকারীর শত্রুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় :

গীবতকারী ব্যক্তি যতজন লোকের গীবত করে ততজন লোকের ঘৃণার পাত্র ও শত্রুতে পরিণত হয়। তাই তার শত্রুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

৮. গীবতকারী আল্লাহর অসন্তুষ্টির শিকার হয় :

আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদেরকে গীবত করতে নিষেধ করা সত্ত্বেও বান্দা যদি তাঁর নিষেধ অমান্য করে গীবতের মত ঘৃণিত অপরাধ করে বেড়ায় তবে আল্লাহ তা‘আলা তার উপর খুবই অসন্তুষ্ট হন।

৯. গীবত বড় ধরনের সুদ :

আমরা মনে করি যে, শুধু টাকা-পয়সাতেই সুদ রয়েছে, কিন্তু তা নয়। গীবতের মাধ্যমেও সুদের সমান অপরাধ হয়ে থাকে। নবী ﷺ বলেন-

اِنَّ مِنْ اَرْبَى الرِّبَا اَ لْاِسْتِطَالَةُ فِى عِرْضِ الْمُسْلِمِ بِغَيْرِ حَقٍّ

সবচেয়ে বড় সুদ হচ্ছে অন্যায়ভাবে কোন মানুষের মান-সম্মানের উপর আঘাত করা। (আবু দাউদ হা: ৪৮৭৮)

১০. গীবতের কারণে আমল নষ্ট হয়ে যায় :

রাসূল ﷺ একবার সাহাবাগণকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি জানো, প্রকৃত দরিদ্র ও নিঃস্ব কে? সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা তো মনে করি যার কাছে অর্থ-কড়ি নেই, সে-ই নিঃসব ও দরিদ্র। তখন রাসূল ﷺ বললেন, নিঃসব ও দরিদ্র ঐ ব্যক্তি যে কিয়ামতের দিন অনেক নেক আমল নিয়ে উপস্থিত হবে। কিন্তু একদল লোক আল্লাহর দরবারে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবে। কারো অর্থ সে আত্মসাৎ করেছে, কাউকে গালি দিয়েছে, কারো গীবত ও দোষচর্চা করেছে। কিংবা কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা স্বাক্ষী দিয়েছে ইত্যাদি। আল্লাহ সকলের মধ্যে তার নেক আমল বণ্টন করা শুরু করবেন। তার নেক আমল শেষ হয়ে যাওয়ার পরও যদি অভিযোগকারীদের পাওনা শেষ না হয় তখন সকলের গুনাহ ও বদ-আমলের বোঝা তার উপর চাপিয়ে দেবেন। সে সকলের বদ-আমলের বোঝা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। সে-ই হল সত্যিকারের দরিদ্র ও নিঃসব ব্যক্তি।

(মুসলিম হা: ৬৭৪৪)

দুনিয়াতে কেউ বিপদে পড়লে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ছুটে আসে সাহায্যের জন্য। কিন্তু কিয়ামতের দিন তার উল্টা হবে, পিতা-মাতা সন্তান থেকে আর সন্তান পিতা-মাতা থেকে পালিয়ে যাবে। স্বামী স্ত্রীকে এবং স্ত্রী স্বামীকে দেখে পালিয়ে যাবে। প্রত্যেকেই সেদিন নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। শুধু ইয়া নাফসী, ইয়া নাফসী বলবে।

১২. পরকালে গীবতকারীদের করুণ পরিণতি :

عَنْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ -صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ َ وَسَلَّمَ- « لَمَّا عُرِجَ بِى مَرَرْتُ بِقَوْمٍ لَهُمْ اَظْفَارٌ مِنْ نُحَاسٍ يَخْمِشُوْنَ وُجُوهَهُمْ وَصُدُوْرَهُمْ فَقُلْتُ مَنْ هَؤُلاَءِ يَا جِبْرِيلُ قَالَ هَؤُلاَءِ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ لُحُومَ النَّاسِ وَيَقَعُونَ فِى اَعْرَاضِهِمْ

আনাস বিন মালিক (রাঃ) বলেন, রাসূল ﷺ বলেন, যখন আমার প্রতিপালক আমাকে মেরাজে নিয়েছিলেন, তখন আমি এমন এক শ্রেণীর লোকদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম যাদের নখগুলো ছিল পিতলের নখের মত। যা দ্বারা তারা নিজেদের চেহারা ও বক্ষ খামচাচ্ছিল। আমি তাদের সম্পর্কে জিবরাঈল (আঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এরা সেসব ব্যক্তি যারা দুনিয়াতে মানুষের গোশত খেত এবং তাদের ইজ্জত নষ্ট করত। অর্থ্যাৎ তারা গীবত করত। (আবু দাউদ হা: ৪৮৭৮)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন