hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

গীবত থেকে বাঁচার উপায়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

যেসব বিষয়ে গীবত সংঘটিত হয়
যেসব বিষয়কে কেন্দ্র করে মানুষ গীবত বা পরনিন্দায় লিপ্ত হয় তা হল :

১. কারো বংশ নিয়ে সমালোচনা করা :

তুচ্ছ ও হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে কেউ যদি বলে, অমুক ব্যক্তির বংশ ভাল নয় বা অমুক ব্যক্তির গোষ্ঠি খারাপ বা অমুক নীচু বংশের লোক বা অমুক ব্যক্তির বংশের বৈশিষ্ট্যই এরকম তবে তা গীবত হবে। কারণ এভাবে বলার দ্বারা উক্ত বংশ বা গোত্রের সকলকে দোষারূপ করা হয়। আর এভাবে দোষী সাব্যস্ত করাটা ইসলামী শরীয়তে একেবারেই নিষিদ্ধ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

وَالَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوْا فَقَدِ احْتَمَلُوْا بُهْتَانًا وَّاِثْمًا مُّبِيْنًا

‘‘নিশ্চয় যারা মুমিন নর-নারীকে এমন ব্যাপারে কষ্ট দেয় যে ব্যাপারে তারা দোষী নয়, তাহলে তারা মিথ্যা অপবাদ ও স্পষ্ট পাপ অর্জন করল।’’

(সূরা আহযাব : ৫৮)

বংশ নিয়ে গর্ব করা জায়েয নয়। রাসূল ﷺ বলেন-

اِثْنَتَانِ فِى النَّاسِ هُمَا بِهِمْ كُفْرٌ اَلطَّعْنُ فِى النَّسَبِ وَالنِّيَاحَةُ عَلَى الْمَيِّتِ »

‘‘মানুষের মধ্যে দু’টি কাজ রয়েছে যা কুফরী। একটি হচ্ছে বংশের গর্ব করা। আর অপরটি হচ্ছে মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ করা।’’ (মুসলিম হা: ২৩৬)

- عَنِ بْنِ عُمَرَ : اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ خَطَبَ النَّاسَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ فَقَالَ يَا اَيُّهَا النَّاسُ اِنَّ اللهَ قَدْ اَذْهَبَ عَنْكُمْ عُبِّيَّةَ الجَاهِلِيَّةِ وَتَعَاظُمَهَا بِاٰبَائِهَا ، فَالنَّاسُ رَجُلَانِ : بَرٌّ تَقِيٌّ كَرِيْمٌ عَلَى اللهِ ، وَفَاجِرٌ شَقِيٌّ هَيِّنٌ عَلَى اللهِ ، وَالنَّاسُ بَنُوْ اٰدَمَ ، وَخَلَقَ اللهُ اٰدَمَ مِنْ تُرَابٍ ، قَالَ اللهُ : { يَا اَيُّهَا النَّاسُ اِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَّاُنْثٰى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَّقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوْا اِنَّ اَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللهِ اَتْقَاكُمْ اِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌ

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ মক্কা বিজয়ের দিন খুতবা প্রদানকালে বলেছিলেন, ‘‘হে লোকসকল! আল্লাহ তা‘আলা জাহেলী যুগের সকল গর্ব ও অহংকার দূর করে দিয়েছেন। এখন মানুষ দুই প্রকার- এক প্রকার হচ্ছে সৎ ও পরহেযগার; তারা আল্লাহর কাছে সম্মানিত। আর এক প্রকার হচ্ছে অপরাধী ও হতভাগা। তারা আল্লাহর কাছে ঘৃণিত। আর সকল মানুষ আদম থেকে সৃষ্ট। আর আদমকে আল্লাহ মাটি থেকে বানিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘হে মানুষ সকল! আমি তোমাদেরকে একই নারী ও পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি এবং আমি তোমাদেরকে বিভিন্ন গোত্রে ও বংশে বিভক্ত করে দিয়েছি যাতে তোমরা পরিচিতি লাভ করতে পার।’’

(তিরমিযী হা: ৩২৭০)

দ্বীনদারী ও সৎকর্ম ব্যতীত কোন ব্যক্তির উপর অপর ব্যক্তির শ্রেষ্ঠত্ব নেই। কাজেই নিজেকে ও নিজের বংশকে উচ্চ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে অপরের বংশের দোষ-ত্রুটি বের করে তা প্রকাশ করা বা অপরের বংশকে গালি দেয়া ইসলামে বৈধ নয়।

ইসলামে সকলেই সমান। প্রত্যেক মুসলমান অপর মুসলামানের ভাই। তাই কেউ কারো উপর প্রাধান্যযোগ্য নয়। কেননা প্রত্যেক মানুষ একই সত্ত্বা থেকে সৃষ্ট। প্রত্যেকেই আদম (আঃ) এর সন্তান। তবুও ইসলাম কোন কোন ব্যক্তিকে প্রাধান্য দিয়েছে, তবে সেটা তাকওয়ার দিক থেকে। যে যত বেশি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে মান্য করবে সে তত বেশি মর্যাদা পাবে। স্বয়ং রাসূল ﷺ নিজ ক্রীতদাস যায়েদের সাথে এমন ব্যবহার করতেন যে, উভয়ের মধ্যে মনিব-ক্রীতদাস সম্পর্ক তা বুঝাই যেত না। যার কারণে সমগ্র আরবের মধ্যে তিনি যায়েদ ইবনে মুহাম্মদ (মুহাম্মদের ছেলে যায়েদ) নামে পরিচিত ছিলেন।

ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন বিলাল (রাঃ) একজন হাবশী ক্রীতদাস হওয়া সত্ত্বেও আরবের মুসলিমরা তাকে ঘৃণা না করে নিজেদের ভাই মনে করত। উমর (রাঃ) তাকে يَا سَيِّدِيْ ‘হে আমাদের সরদার’ বলে সম্বোধন করতেন।

অনেক সাহাবী ক্রীতদাস ছিলেন। তারা ইসলাম গ্রহণের পর ইসলাম তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেয় এবং সমাজের বংশীয় ভেদাভেদ চিরতরে দূর করে দেয়। ধনী-গরীব, সাদা-কালো সকলের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টি করে দেয়।

তাই কোন মুমিন ব্যক্তির জন্য উচিত নয় যে, কারো বংশকে নীচু মনে করা এবং নিজের বংশকে বড় মনে করে অহংকার করা।

২. কারো শারীরিক দোষ বর্ণনা করা :

আল্লাহ তা‘আলা মানবজাতিকে নানাভাবে নানা আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। কেউ সাদা, কেউ কালো, কেউ খাটো, কেউ লম্বা, কেউ মোটা, কেউ চিকন ইত্যাদি। আর আল্লাহর সৃষ্টিতে ভুল ধরা কারো জন্য বৈধ নয়। তেমনিভাবে আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে হাসি-তামাশা করাও হারাম। আর যার বৈশিষ্ট্য নিয়ে হাসি-তামাশা করা হচ্ছে সে শুনলে মনে কষ্ট পাবে বলে এটা গীবতের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং কেউ যদি কোন ব্যক্তিকে কানা, খোরা, অন্ধ, বেটে, লম্বো, চিকনা ইত্যাদি বলে সম্বোধন করে; আর এতে যদি সম্বোধিত ব্যক্তি মনে কষ্ট পায় তবে তা গীবত বলে গণ্য হবে। হাদীসে এসেছে-

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ : حَكَيْتُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلًا . فَقَال : مَايَسُرُّنِي اَنِّي حَكَيْتُ رَجُلًا وَاَنَّ لِي كَذَا وَكَذَا . قَالَتْ : فَقُلْتُ : يَارَسُولَ اللهِ ، اِنَّ صَفِيَّةَ امْرَاةٌ ، وَقَالَتْ بِيَدِهَا هٰكَذَا كَانَّهَا تَعْنِي قَصِيرَةً ، فَقَالَ : لَقَدْ مَزَجْتِ بِكَلِمَةٍ لَوْ مَزَجْتِ بِهَا مَاءَ الْبَحْرِ لَمُزِجَ .

আয়েশা ؓ বলেন, আমি নবী ﷺ এর কাছে এক ব্যক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করলাম। তখন নবী ﷺ বললেন, অনেক কিছুর বিনিময়ে হলেও কারো সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করাটা আমাকে আনন্দিত করতে পারবে না। আয়েশা ؓ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি সাফিয়ার বেঁটে হওয়াটা অপছন্দ করেন না? তিনি বললেন, হে আয়েশা! তুমি এমন একটি কথা বললে যা নদীর পানির সাথে মিশিয়ে দিলে তার উপরও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে।

(তিরমিযী হা: ২৫০২)

শারীরিকভাবে মানুষের কিছু দোষ থাকতেই পারে। তাই কারো সেসব দোষ উল্লেখ করে তার মনে কষ্ট দেয়া কোন মুসলমানের কাজ নয়। তার চিন্তা করা উচিত, আমি যে দোষটি নিয়ে তাকে ঠাট্টা করছি তা যদি আমার মাঝে থাকত তবে কেমন হত। তাই নিজের উপর আল্লাহর রহমতের কথা চিন্তা করে তাঁর প্রশংসা করা উচিত।

বর্তমান সমাজে মানুষের বিভিন্ন শারীরিক দোষ-ত্রুটি নিয়ে রসিয়ে আলাপ করা এবং চোখ টিপে হাসাহাসি করাটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তখন এ কথা মনে থাকে না যে, একদিন আমাদেরকে মহান রাববুল আলামীনের দরবারে জীবনের প্রতিটি মুহুর্তের হিসাব দিতে হবে। সর্বদা আমলনামা লেখক ফেরেশতারা আমাদের প্রতিটি মুহুর্তের কথা ও কাজের নিখুঁত হিসাব রাখছেন।

৩. দারিদ্র্যতার কারণে কারো সমালোচনা করা :

দারিদ্র্যতার কারণে কোন মুমিনকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করা ও অপরের কাছে বলে বেড়ানো এটাও এক প্রকার গীবত। সমাজে ধনী-গরীব সবধরণের লোক বসবাস করে। অনেক ধনী রয়েছে যারা সমাজের গরীব ব্যক্তিদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করে থাকে। এমনকি তাদের সম্পর্কে নানা ধরণের অহেতুক সমালোচনাও করে থাকে, এটা বৈধ নয়। কেননা দারিদ্র্যতা তো আল্লাহই দিয়েছেন। এর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা কিছু কিছু বান্দাকে পরীক্ষা করে থাকেন। এ ব্যাপারে দোষ ধরা আল্লাহর সৃষ্টিতে দোষ ধরার শামিল। অপর দিকে ব্যক্তি মনে কষ্ট পাবে বলে এটা গীবতের পর্যায়েও পড়ে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

يَا اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِّنْ قَوْمٍ عَسٰى اَنْ يَّكُوْنُوْا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِّنْ نِّسَاءٍ عَسٰى اَنْ يَّكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ

‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের পুরুষেরা যেন অপর পুরুষদের বিদ্রূপ না করে। হতে পারে যে, তারা এদের তুলনায় অনেক ভাল। আর মহিলারাও যেন অপর মহিলাদের বিদ্রূপ না করে । কেননা হতে পারে তারা এদের তুলনায় ভাল।’’ (সূরা হুজরাত : ১১)

ইসলামের প্রথম যুগের অধিকাংশ মুসলিমই দরিদ্র ছিলেন। তাদেরকে নিয়ে কাফেররা উপহাস করত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

زُيِّنَ لِلَّذِيْنَ كَفَرُوا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا وَيَسْخَرُوْنَ مِنَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَالَّذِيْنَ اتَّقَوْا فَوْقَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَاللهُ يَرْزُقُ مَنْ يَّشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ

‘‘যারা কুফরী করেছে তাদের দুনিয়ার জীবনকে সুশোভিত করা হয়েছে। আর তারা মুমিনদেরকে নিয়ে উপহাস করে থাকে। অথচ মুত্তাক্বীরা কিয়ামতের দিন তাদের উপরে থাকবে। আর আল্লাহ যাকে চান অগণিত রিযিক দান করেন।’’ (সূরা বাকারা : ২১২)

৪. কারো পোষাক নিয়ে সমালোচনা করা :

প্রত্যেকেই নিজ নিজ সাধ্য ও রুচী অনুযায়ী নানা ধরণের পোষাক পরিধান করে থাকে। এতে কারো পোষাক নিম্ন মানের হয়, আবার কারো পোষাক হয় উচ্চ মানের। এক্ষেত্রে কারো পছন্দের সাথে অপরের পছন্দের মিল থাকে না। তাই কেউ কারো পোষাক সম্পর্কে অসৎ উদ্দেশ্যে সমালোচনা করা উচিত নয়। যেহেতু এ ধরণের আলোচনা মানুষের মনে কষ্ট দেয় তাই এটাও গীবতের মধ্যে গণ্য হবে।

৫. কারো বদভ্যাসের সমালোচনা করা :

সমাজ, পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য কারণে মানুষের মধ্যে রুচি ও অভ্যাস বিভিন্ন রকম হয়, যা অন্যান্যদের কাছে দৃষ্টি কটু মনে হয়। কিন্তু এ নিয়ে গীবত ও দোষচর্চায় লিপ্ত হওয়া আরো গর্হিত অন্যায়। হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে কাউকে তার অনুপস্থিতিতে পেটুক, বাঁচাল, ভীরু, অলস, নির্বোধ, বেয়াদব এসব বলে মন্তব্য করা গীবতের অন্তর্ভুক্ত।

৬. কারো পাপ কাজের সমালোচনা করা :

কারো পাপ কাজ নিয়ে তার অনুপস্থিতিতে সমালোচনা করাও গীবতের অন্তর্ভুক্ত। যেমন, যদি কেউ বলে যে, অমুক ব্যক্তি এই পাপ কাজ করে বেড়ায় বা এই এই খারাপ কাজে অভ্যস্ত; তবে তাও গীবত বলে গণ্য হবে।

মানুষ হিসেবে সকলের দ্বারাই কমবেশি পাপ কাজ সংঘটিত হয়ে থাকে। আর তাই পাপের কথা পাপীকে না বলে অন্য মানুষকে বলে বেড়ানো গীবত বলে গণ্য হবে। যারা গীবতের মাধ্যমে এসব পাপকাজ লোক সমাজে ছড়িয়ে দেয় তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

اِنَّ الَّذِيْنَ يُحِبُّوْنَ اَنْ تَشِيْعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌ فِي الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَاللهُ يَعْلَمُ وَاَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ

‘‘যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মান্তিক শাসিত্ম এবং আল্লাহ সবই জানেন; কিন্তু তোমরা জান না।’’ (সূরা নূর : ১৯)

মুমিন ব্যক্তি পথভ্রষ্ট হওয়ার জন্য তিনটি জিনিসই যথেষ্ট।

১. মানুষের এমন দোষ আলোচনা করা যা তার নিজের মধ্যেও রয়েছে।

২. নিজের দোষ বের না করে মানুষের দোষ খুজে বের করাা।

৩. সঙ্গীকে অনর্থক কষ্ট দেয়া।

ইবলিস মানুষের শত্রু হিসেবে সর্বদা মানুষের পরকালের ক্ষতি করার জন্য সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। যখনই সুযোগ পায় তখনই সে মানুষকে নানা ধরণের অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত করে থাকে। আর তাই মানুষের দ্বারা হাজার রকম গুনাহের কাজ সংঘটিত হয়।

কোন মানুষকে কখনও কোন পাপ কাজে লিপ্ত দেখলে তা অন্যের কাছে না বলে উচিত হল সংশোধনের উদ্দেশ্যে তাকে তার পাপ কাজটি ধরিয়ে দেয়া। যাতে সে পরবর্তীতে এ পাপ কাজে লিপ্ত না হয়।

আরেকটি কথা মনে রাখা দরকার যে, প্রত্যেকের মধ্যেই রয়েছে কিছু না কিছু দোষ। মানুষের গীবত ও দোষচর্চায় আমরা সুখ অনুভব করি অথচ আমাদের নিজেদের মধ্যেই রয়েছে অসংখ্য দোষ-ত্রুটি। নিজেদের দোষ সম্পর্কে গাফেল থাকা আর শুধু পরের দোষ খুঁজতে থাকা নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক।

৮. কারো ইবাদাতের সমালোচনা করা :

ইবাদাতের মধ্যে কমবেশি প্রায় সকলের কোন না কোন ত্রুটি থেকে যায়। তা না জানার কারণেও হতে পারে অথবা অলসতার কারণেও হতে পারে। তাই বলে কারো ইবাদাতের মধ্যে কী কী ভুল-ত্রুটি রয়েছে তা তাকে না জানিয়ে অন্যের সাথে সমালোচনা করে মনে প্রশান্তি লাভের চেষ্টা করা গীবত। সুতরাং কেউ যদি কারো ইবাদাতে কোন ভুল-ত্রুটি দেখতে পায় তাহলে তার কর্তব্য হল, এটা নিয়ে নিজে পাপের সাথে না জড়িয়ে ঐ ব্যক্তিকে সংশোধন করে দেয়া।

১০. অমুসলিমের সমালোচনা করা :

অনেকে মনে করতে পারে শুধুমাত্র মুসলিমদের গীবত করা হারাম। এটি একটি ভুল ধারণা। অমুসলিমদেরও এমন দোষ অপরের কাছে বলে বেড়ানো বৈধ নয় যার ফলে সামাজিক শৃঙ্খলা ব্যহত হয়। তবে ইসলামের স্বার্থে অমুসলিমদের ইসলাম বিরোধী বা সামাজিক শৃঙ্খলা বিবর্জিত কর্মকান্ড সম্পর্কে আলোচনা করা যায়।

১৩. মৃত ব্যক্তির সমালোচনা করা :

জীবিত ব্যক্তিদের গীবত যেমনি হারাম তেমনি কোন মৃত ব্যক্তির দোষচর্চা করাও হারাম। রাসূল ﷺ বিভিন্ন হাদীসে এ সম্পর্কে সতর্ক

করেছেন। তিনি বলেন-

اِذَا مَاتَ صَاحِبُكُمْ فَدَعُوْهُ وَ لَاتَقَعُوْا فِيْهِ

‘‘তোমাদের কোন সাথী যখন মারা যায় তখন তাকে ছেড়ে দাও আর তার সমালোচনায় লিপ্ত হয়ো না।’’ (আবু দাউদ হা- ৪৯০১)

তাছাড়া মানুষের সুস্থ বিবেক-বুদ্ধিও মৃত ব্যক্তির গীবত করাকে সমর্থন করে না। যেমন-

প্রথমতঃ আমরা মৃতদের গীবত করতে পারি; কিন্তু তারা আমাদের গীবত করতে পারে না। যারা আমাদের গীবত করছে না আমরা কেন তাদের গীবত করব?

দ্বিতীয়ত ঃ মৃত ব্যক্তির দ্বারা আমরা সর্বদা উপকৃত হই। কেননা কবর আমাদেরকে মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। অন্তরে আল্লাহর ভয় জাগ্রত করে। তাই তাদের এ উপকারের প্রতিদানস্বরূপ আমাদেরও উচিত মৃতদের দোষচর্চা না করে তাদের জন্য দো‘আ করা।

তৃতীয়ত ঃ মৃত ব্যক্তির গীবত স্বভাবতই তার বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের মনে কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর কোন মুসলিমের পক্ষে উচিত নয় অপর মুসলিমকে কষ্ট দেয়া। এটা রাসূল ﷺ নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন-

اَلْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُوْنَ مِنْ لِسَانِه وَيَدِه

‘‘মুসলিম সেই ব্যক্তি যার হাত ও জ্বিহবা থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে।’’ (মুসলিম হা: ১৭১)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন