hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিরক

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১০
বড় শিরক এর প্রকারভেদ
শিরকে আকবার এর প্রকার বর্ণনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মনীষী বিভিন্ন ধরনের মত প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বলেন, শিরকুল আকবার বা বড় শিরক চার প্রকার-

প্রথম প্রকার: اَلشِّرْكُ فِي الدَّعْوَةِ (আশ-শিরকু ফিদ্-দাওয়াত) বা আহবানে শিরক :

আল্লাহকে ডাকার মত গায়রুল্লাহকে ডাকা। সে ডাক কোন প্রাপ্তি বা মুক্তির জন্য হোক কিংবা শুধু ইবাদত বা বিনয় প্রকাশার্থে হোক। এ দু‘আ তিনটি শর্তে শিরক হবে-

ক) রূপক কোন অর্থ উদ্দেশ্য না করে বাস্তব অর্থে ডাকলে।

খ) প্রার্থিত বিষয়টি আল্লাহ ছাড়া আর কারও অধিকারে না থাকলে।

গ) প্রার্থনাকারী প্রার্থিত ব্যক্তির সামনে উপস্থিত না থাকলে অথবা মৃত হলে। যেমন-

* জীবিত পীর, খাজা, গাউস-কুতুবের কাছে সন্তান, রোগ নিরাময়, ব্যবসায় উন্নতি, বিপদ হতে পরিত্রান ও পরলৌকিক সুপারিশ ও মুক্তির প্রার্থনা করা।

* কোন মৃত, কবরস্থ কিংবা অনুপস্থিত পীর দরবেশের নিকট কোন কিছু প্রার্থনা করা। এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَإِذَا رَكِبُوْا فِي الْفُلْكِ دَعَوُا اللهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ فَلَمَّا نَجَّاهُمْ إِلَى الْبَرِّ إِذَا هُمْ يُشْرِكُوْنَ﴾

যখন তারা নৌকায় আরোহন করে তখন একনিষ্ঠচিত্তে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন তাদের মুক্তি দিয়ে ডাঙ্গায় নিয়ে যান, তখনই তারা শিরক করে। (সূরা আনকাবুত ৩৯:৬৫)

দ্বিতীয় প্রকার: اَلشِّرْكُ فِي الْاِرَادَةِ (আশ-শিরকু ফিল ইরাদাহ) বা নিয়্যাত, ইচ্ছা ও সংকল্পে শিরক :

নিজের আমল দ্বারা সংক্ষেপে ও সবিস্তারে গায়রুল্লাহকে উদ্দেশ্য করা। এ শিরক আক্বীদাহ বিশ্বাসের মাঝে বিরাজ করে। আল্লামা ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, এ শিরক হচ্ছে এমন এক সাগর, যার কোন কুল কিনারা নেই। অনেক অল্প মানুষই এ থেকে পরিত্রান পেয়ে থাকে। যে ব্যক্তি নিজ আমলের দ্বারা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নৈকট্য কামনা করবে, তার কাছে বিনিময় প্রত্যাশা করবে অথবা শুধু পার্থিব কল্যাণের উদ্দেশ্যেই আমল করবে, সে ব্যক্তি ইচ্ছা ও উদ্দেশ্যের ক্ষেত্রে শিরকে লিপ্ত হবে। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী :

﴿مَنْ كَانَ يُرِيْدُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِيْنَتَهَا نُوَفِّ إِلَيْهِمْ أَعْمَالَهُمْ فِيْهَا وَهُمْ فِيْهَا لَا يُبْخَسُوْنَ أُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ لَيْسَ لَهُمْ فِي الْاٰخِرَةِ إِلَّا النَّارُ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوْا فِيْهَا وَبَاطِلٌ مَّا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ ﴾

যে ব্যক্তি পার্থিব জীবন ও তার চাকচিক্য কামনা করে, আমি দুনিয়াতেই তাদেরকে পুরোপুরিভাবে তাদের আমলের প্রতিফল ভোগ কারিয়ে দেব এবং তাতে তাদের প্রতি কিছুমাত্র কমতি করা হবে না। এরাই হল সেসব লোক আখিরাতে যাদের জন্য আগুন ছাড়া আর কিছুই নেই। তারা এখানে যা কিছু করেছিল সবই বরবাদ হয়ে গেছে, আর যা কিছু উপার্জন করেছিল সবই বাত্বিল বলে গণ্য হয়েছে। (সূরা হূদ ১১:১৫-১৬)

তৃতীয় প্রকার: اَلشِّرْكُ فِي الطَّاعَةِ (শিরক ফিত তা‘আহ) বা আনুগত্যের শিরক :

হুকুম বা বিধান প্রবর্তনের ক্ষেত্রে গায়রুল্লাহকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করা; অথচ বিধান প্রনয়ণ বা হুকুম প্রদান করা আল্লাহর হক বা অধিকার সমূহের অন্তর্ভুক্ত।

* কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী মানব রচিত আইনের আনুগত্য উপরোক্ত প্রকারের শিরকে আকবারের অন্তর্ভুক্ত।

* সুফীবাদের শিরকযুক্ত তরীকাহসমূহে কুরআন-সুন্নাহর দলীল প্রমাণ ব্যতীত পীরের সমস্ত কথাকে মেনে নেয়াকে অপরিহার্য করা হয়। এসবগুলোই শিরকের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন:

﴿اِتَّخَذُوْاۤ اَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ اَرْبَابًا مِّنْ دُوْنِ اللهِ وَالْمَسِيْحَ ابْنَ مَرْيَمَۚ وَمَاۤ اُمِرُوْاۤ اِلَّا لِيَعْبُدُوْاۤ اِلٰهًا وَّاحِدًاۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ سُبْحَانَهٗ عَمَّا يُشْرِكُوْنَ﴾

তারা আল্লাহ ব্যতীত তাদের আলিম ও সংসার-বিরাগীদেরকে তাদের প্রভু হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং মারইয়ামের পুত্র মাসীহ্কেও। অথচ তারা এক ইলাহের ইবাদাত করার জন্যই আদিষ্ট হয়েছিল। (কেননা) তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই। তারা যাকে শরীক করে তা হতে তিনি কতই না পবিত্র। (সূরা তাওবা- ৯:৩১)

চতুর্থ প্রকার : اَلشِّرْكُ فِي الْمَحَبَّةِ (আশ-শিরকু ফিল মুহাববত) বা ভালোবাসার ক্ষেত্রে শিরক :

আল্লাহর সাথে গায়রুল্লাহকে এমনভাবে ভালোবাসা যে, বান্দাহ গায়রুল্লাহর (আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর) সামনে বিনীত, বিগলিত ও তার দাস হয়ে যায়, চাই সে ভালোবাসা আল্লাহর ভালোবাসার সমান হোক বা কম-বেশী হোক। যেমন-

* মূর্তিপূজারী সম্প্রদায় কর্তৃক তাদের বিভিন্ন মূর্তির প্রতি ভালোবাসা।

* কিছু নামধারী মুসলিম সম্প্রদায় কর্তৃক গাউস, কুতুব, পীর ফকির, খাজা, দরগাহ- মাজার ইত্যাদির প্রতি ভালোবাসা।

* অপর কিছু সম্প্রদায় কর্তৃক আধুনিক পাশ্চাত্য সভ্যতা, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদির প্রতি অন্ধ ভালোবাসা।

* তরুন-তরুণী সম্প্রদায় কর্তৃক গায়ক-গায়িকা, নায়ক-নায়িকা, শিল্পীদের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত ভালোবাসা।

* পার্থিব জীবন, ধন-সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তি ও ভোগ-বিলাসের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত ভালোবাসা, যা আল্লাহ ও পরকালকে ভুলিয়ে দেয়। এগুলো এই শিরকের অন্তর্ভুক্ত। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ تَعِسَ عَبْدُ الدِّيْنَارِ وَالدِّرْهَمِ وَالْقَطِيْفَةِ وَالْخَمِيْصَةِ إِنْ أُعْطِيَ رَضِيَ وَإِنْ لَّمْ يُعْطَ لَمْ يَرْضَ

আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ধ্বংস হোক স্বর্ণমুদ্রার দাস, ধ্বংস হোক রৌপ্যমুদ্রার দাস, ধবংস হোক মোলায়েম চাঁদর ও মোটা চাঁদরের দাস। যদি তাকে এগুলো দেয়া হয়, তাহলে সে খুশি; আর যদি না দেয়া হয়, তাহলে অসন্তুষ্ট হয়।

(সহীহ বুখারী ৬৪৩৫; সুনানে ইবনে মাজাহ ৪১৩৫)

আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন:

﴿وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّتَّخِذُ مِنْ دُوْنِ اللهِ اَنْدَادًا يُّحِبُّوْنَهُمْ كَحُبِّ اللهِؕ وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰهِ﴾

মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমনও রয়েছে, যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্য কিছুকে তাঁর সমকক্ষ হিসেবে গ্রহণ করে। তারা তাদেরকে তেমনি ভালোবাসে যেমনটি কেবল আল্লাহকেই ভালোবাসা উচিত। আর যারা (সত্যিকার অর্থে) আল্লাহর ওপর ঈমান আনয়ন করে, তারা তো তাঁকেই সর্বাধিক ভালোবাসবে। (সূরা বাক্বারা- ২:১৬৫)

আবুল বাকা আল-হানাফী

আবুল বাকা আল-হানাফী তার ‘কুল্লিয়্যাতে’র মধ্যে শিরককে অন্য আরো ছয় ভাগে বিভক্ত করেছেন। সেগুলো নিম্নরূপ:

১. شِرْكُ الْاِسْتِقْلَالِ (শিরকুল ইস্তেকলাল) :

এর সংজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুজন ভিন্ন ভিন্ন বা স্বতন্ত্র মালিকানা সম্পন্ন শরীক সাব্যস্ত করা; অথবা আল্লাহর পাশাপাশি আরো দু’জন স্বয়ংসম্পূর্ণ শরীক থাকার ধারণা পোষণ করাকে ‘শিরকুল ইস্তেকলাল’ বলা হয়। যেমন- অগ্নিপূজকদের শিরক; তারা যাবতীয় কল্যাণের বিষয়াদিকে ‘ইয়াজদান’ নামক দেবতার কাজ বলে মনে করতো, আর যাবতীয় অকল্যাণমূলক কাজকে ‘আহরমন’ নামক দেবতার কর্ম বলে মনে করতো। অথবা তারা আলোকে কল্যাণের স্রষ্টা ও অন্ধকারকে অকল্যাণের স্রষ্টা মনে করতো।

২. شِرْكُ التَّبْعِيْضِ (শিরকুত তাবয়ীদ) :

একাধিক মা‘বুদের সমন্বয়ে এক মা‘বুদ হওয়ার বিশ্বাস করাকে ‘শিরকুত তাবয়ীদ’ বলা হয়। যেমন- খ্রিস্টানদের ত্রিত্ববাদের শিরক। তারা বিশ্বাস করে আল্লাহ, ঈসা (আঃ) ও মারইয়াম (আঃ) এর দ্বারা সমন্বিত একটি সত্তাই হচ্ছে মা‘বুদ। মুসলিম দাবীদার হয়েও যারা মুহাম্মাদ ﷺ কে আল্লাহর জাতি নূর দ্বারা তৈরী অথবা আল্লাহর সত্তার অংশ অথবা তাঁর রুহানী সত্তা মনে করে, তারাও উক্ত শিরকে আক্রান্ত। যেমন: বেরেলভী ও পীর-সূফীদের একাংশের বিশ্বাস।

৩. شِرْكُ التَّقْرِيْبِ (শিরকুত তাকরীব) :

আল্লাহ তা‘আলা এর নিকটবর্তী করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে গায়রুল্লাহর উপাসনা করাকে ‘শিরকুত তাকরীব’ বলা হয়। যেমন: প্রাচীন জাহেলী যুগের মূর্তিপূজারিদের শিরক, পোপ পূজারী খৃষ্টানদের শিরক, পুরোহীত পূজারী হিন্দুদের শিরক এবং পীর-মাশায়েখ পূজারী মুসলমানদের শিরক। কেননা এরা সকলেই যাদের পূজা করে তাদেরকে আল্লাহর নৈকট্য পাইয়ে দিবে- এই আশায় পূজা করে। আরবের মুশরিকরা বলতো:

﴿مَا نَعْبُدُهُمْ إِلَّا لِيُقَرِّبُوْنَا إِلَى اللهِ زُلْفٰى﴾

আমরা দেবতাদের উপাসনা কেবল এ জন্যই করছি যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেবে। (সূরা যুমার ৩৯:৩)

৪. شِرْكُ التَّقْلِيْدِ (শিরকুত তাকলীদ) :

অন্যের অন্ধ অনুসরণে গায়রুল্লাহর উপাসনা করাকে ‘শিরকুত তাকলীদ’ বলা হয়। যেমন- আরব জনগণের শিরক, তারা তাদের পূর্বপুরুষদের অনুসরণে মূর্তি পূজা করতো। অতএব যারা বর্তমানেও পূর্বপুরুষদের দোহাই দিয়ে পীর-পূজা ও মাজার পূজা ইত্যাদিতে লিপ্ত, তারাও এই প্রকার শিরকে আক্রান্ত।

৫. شِرْكُ الْأَسْبَابِ (শিরকুল আসবাব) :

কোন বিষয় আল্লাহর কারণে সংঘটিত হয়েছে এমনটি না বলে অপর কোন বস্ত্তর প্রভাবে সংঘটিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করা বা বলাকে ‘শিরকুল আসবাব’ বলা হয়। যেমন- জড়বাদী ও প্রকৃতিবাদীদের শিরক, যারা যে কোন কল্যাণকে প্রকৃতির দান ও অকল্যাণকে প্রকৃতির বিরূপ প্রতিক্রিয়া বলে বিশ্বাস করে। এ জগত সুষ্ঠভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য আল্লাহর পরিকল্পনাকে স্বীকার না করে প্রকৃতিকেই এর পরিচালক বলে মনে করে।

৬. شِرْكُ الْأَغْرَاضِ (শিরকুল আগরায) :

সম্পূর্ণ গায়রুল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোন কাজ করাকে ‘শিরকুল আগরাদ’ বলা হয়। যেমন: প্রকৃত মুনাফিকদের সালাত, যা তারা কেবলমাত্র মানুষকে দেখানোর জন্যই আদায় করে থাকে।

শায়খ মুবারক ইবন মুহাম্মদ আল-মীলী শিরকে আকবারকে ভিন্নভাবে চার প্রকারে বিভক্ত করেছেন। সেগুলো হচ্ছে :

১. شِرْكُ الْاِحْتِيَازِ (শিরকুল এহতিয়ায) অর্থাৎ স্বতন্ত্র মালিকানা ও স্বত্তাধিকারের শিরক :

এর সংজ্ঞা প্রদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আল্লাহ ব্যতীত অপর কারো কোন অণু পরিমান বস্ত্তর উপর স্বয়ংসম্পূর্ণ মালিকানা রয়েছে বলে বিশ্বাস করাকে ‘শিরকুল এহতিয়ায’ বলা হয়। কেননা আসমান-যমিনে অনু পরিমান বস্ত্তর মধ্যেও আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো পূর্ণ মালিকানা নেই।

২. شِرْكُ الشِّيَاعِ (শিরকুশ শিয়া’) অর্থাৎ যৌথ মালিকানার শিরক :

এ বিশ্বাস পোষণ করা যে, এ জগতের কোন বস্ত্ততে আল্লাহ ব্যতীত অপর কারো একচ্ছত্র মালিকানা না থাকলেও কোন কোন বস্ত্ততে আল্লাহর সাথে অন্যের যৌথ মালিকানা রয়েছে। যদিও উভয়ের মাঝে অবস্থান ও মর্যাদার দিক থেকে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। আল্লাহর সাথে এ ধরণের শরিকানাও অসম্ভব।

৩. شِرْكُ الْإِعَانَةِ (শিরকুল এ’য়ানত) অর্থাৎ সাহায্য সহযোগিতার শিরক :

এ বিশ্বাস পোষণ করা যে, এ জগতের কোন কিছুতে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো মালিকানা বা শরিকানা না থাকলেও এর কোন কোন বিষয়াদি পরিচালনার ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্যকারী রয়েছে বলে মনে করা। এ ধরনের আক্বিদা পোষণ করাও শিরক। কেননা আল্লাহ তা‘আলা সর্ব শক্তিমান, অমুখাপেক্ষী।

৪. شِرْكُ الشَّفَاعَةِ (শিরকুশ শাফা’আত) অর্থাৎ শাফাআতের শিরক :

এ বিশ্বাস পোষণ করা যে, আল্লাহ তা‘আলার দরবারে তাঁর বান্দাদের মাঝে এমন কতিপয় বান্দাও রয়েছেন, যারা তাঁদের মর্যাদার বদৌলতে আল্লাহ তা‘আলার দরবারে তাঁর পূর্ব অনুমতি ছাড়াই নিজস্ব শাফা‘আতের মাধ্যমে নিজ নিজ ভক্তদেরকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে নাজাত দিতে সক্ষম; অথচ এ আক্বিদাহ পোষণ করাও শিরক। কেননা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নির্দেশ ব্যতিত কেউ নিজ ক্ষমতা ও মর্যাদা বলে কারো জন্য সুপারিশ করতে পারবে না।

শায়েখ মুবারক ইবনুল মুহাম্মদ তাঁর এ চার প্রকার শিরক প্রমাণের জন্য পবিত্র কুরআনের নিম্ন বর্ণিত আয়াতটি উপস্থাপন করেছেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে:

﴿قُلِ ادْعُوا الَّذِيْنَ زَعَمْتُمْ مِّنْ دُوْنِ اللهِ لَا يَمْلِكُوْنَ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَلَا فِي الْأَرْضِ وَمَا لَهُمْ فِيْهِمَا مِنْ شِرْكٍ وَّمَا لَهٗ مِنْهُمْ مِّنْ ظَهِيْرٍ وَلَا تَنْفَعُ الشَّفَاعَةُ عِنْدَهٗ إِلَّا لِمَنْ أَذِنَ لَهٗ

বলুন, তোমরা তাদেরকে আহবান কর, যাদেরকে উপাস্য মনে করতে আল্লাহ ব্যতীত। তারা নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের অনু পরিমাণ কোন কিছুর মালিক নয়। এতে তাদের কোন অংশও নেই এবং তাদের কেউ আল্লাহ্র সহায়কও নয়। যার জন্য অনুমতি দেয়া হয়, তার জন্য ব্যতীত আল্লাহ্র কাছে কারও শাফা’আত কারো জন্য উপকারে আসবে না। (সূরা সাবা ৩৪:২২-২৩)

তিনি এ আয়াতটি উদ্ধৃত করে বলেন, এ আয়াত থেকে শিরকের কোন প্রকারই বাদ পড়ে যায়নি। গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে এ প্রকারগুলো আল্লামা আবুল বাকা ও ইমাম ইবনুল কাইয়িম বর্ণিত প্রকার সমূহের সাথে সামাঞ্জস্যশীল। পার্থক্য শুধু ভাষা ও বর্ণনায়।

একটি গুরুত্বপূর্ণ ফায়দা:

উপরোক্ত আয়াত থেকে বুঝা যায় যে, উপকার একমাত্র তার কাছ থেকেই পাওয়া যায়, যার মধ্যে নিমেণাক্ত চারটি গুণের একটি হলেও বিদ্যমান আছে।

১. ইবাদতকারী তার কাছে যা আশা করে তার স্বতন্ত্র মালিক হওয়া।

২. স্বতন্ত্র মালিক না হলেও অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে যেকোন ভাবে মালিক হওয়া।

৩. অংশীদার না হলেও সে জিনিষের ব্যাপারে মালিকের সাহায্যকারী হওয়া।

৪. সাহায্যকারীও না হলে অন্ততপক্ষে মালিকের কাছে কারো জন্য সুপারিশ করার ক্ষমতা রাখা। আল্লাহ তা‘আলা উপরোক্ত আয়াতের মাধ্যমে শিরকের এই চারটি স্তরকেই ধারাবাহিকভাবে অস্বীকার করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেছেন যে,

﴿لَا يَمْلِكُونَ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَلا فِي الْأَرْضِ﴾

তার সার্বভৌমত্ব ও রাজত্বে অন্য কারো মালিকানা নেই।

দ্বিতীয় অংশে বলেছেন,

﴿وَمَا لَهُمْ فِيْهِمَا مِنْ شِرْكٍ﴾

অংশীদারিত্বের ভিত্তিতেও অন্য কারো মালিকানা নেই।

তৃতীয় অংশে বলেছেন,

﴿وَمَا لَهٗ مِنْهُمْ مِنْ ظَهِيرٍ﴾

তার কোন সাহায্য ও সহায়তাকারীও নেই।

চতুর্থাংশে বলেছেন,

﴿وَلَا تَنْفَعُ الشَّفَاعَةُ عِنْدَهٗ إِلَّا لِمَنْ أَذِنَ لَهٗ﴾

তার কাছে তাঁর অনুমতি ব্যতিত কারো জন্য সুপারিশ করার বিন্দুমাত্র ক্ষমতাও কারো নেই। নবী-রাসূল ও পূণ্যবানদের সে সুপারিশ সাব্যস্ত করেছেন সেটা তার অনুমতিক্রমে হয় বলে তাতে মুশরিক ও অংশীবাদির কোন অংশ নেই। কারণ নাবী-রাসূল ও পূণ্যবানদের সুপারিশ তাওহীদবাদি বান্দা ছাড়া অন্য কেউ পাবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন