মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
এক শ্রেনির মানুষ বলে থাকে যে, নবী ﷺ-কে তৈরী না করলে আল্লাহ তা‘আলা কিছুই সৃষ্টি করতেন না। এ ব্যাপারে তারা যে হাদীসটি বলে তা একটি জাল বা বানোয়াট হাদীস। তারা আরও বলে যে, আল্লাহ তা‘আলা নাবী ﷺ-কে তাঁর নিজের নূর দিয়ে তৈরী করেছেন; সুতরাং নাবী ﷺ নূরের তৈরী। আর নবী ﷺ এর নূরে সমস্ত জগত তৈরী। সর্বপ্রথম আল্লাহ তা‘আলা নাবী ﷺ-কে তাঁর নূর দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। এভাবে তারা আল্লাহর সাথে শিরক করে থাকে। কারণ, এতে আল্লাহর সত্ত্বার সাথে সৃষ্টির সংমিশ্রণ ঘটানো হয়, যা তাওহীদুল আসমাই ওয়াস সিফাতের ক্ষেত্রে শিরকের অন্তর্ভুক্ত। অথচ সহীহ হাদীসে রয়েছে, আল্লাহ সর্বপ্রথম কলম সৃষ্টি করে তাকে লিখতে বলেন। যেমন-
উবাদা ইবনে সামেত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা‘আলা সর্বপ্রথম কলম সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর কলমকে বললেন, লিখ! কলম বলল, কি লিখব? আল্লাহ তা‘আলা বললেন, তাকদীর লিখ, যা সংঘটিত হয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত যা সংঘটিত হবে তা সবকিছু লিখ। (সুনানে তিরমিজি ৩৩১৯)
আর রাসূলুল্লাহ ﷺ যে মানুষ ছিলেন, তার প্রমাণ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে। মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
বলুন! আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। আমার নিকট অহী আসে যে, নিশ্চয় তোমাদের ইলাহ একমাত্র ইলাহ। (সূরা কাহফ ১৮: ১১০)
আলোচ্য আয়াতে মুহাম্মদ ﷺ উদাত্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন যে, আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। তবে পার্থক্য এই যে, আমার নিকট অহী আসে। নিমেণ এ ব্যাপারে আরো কিছু দলীল তুলে ধরা হলো-
প্রথম প্রমাণ : মুহাম্মদ ﷺ অন্যান্য মানুষের মতই একজন আদম সন্তান ছিলেন। মানুষ যেমন পানাহার করে, অনুরূপভাবে তিনিইও পানাহার করতেন। অন্যান্য মানুষের যেমন সন্তানাদি ছিল, তেমনি রাসুল ﷺ এরও সন্তানাদি ছিল ও স্ত্রীও ছিল। তিনি বলেছেন,
নিশ্চয় আমি মানুষ, আমি তোমাদের মত ভুলে যাই। যদি আমি ভুলে যাই তবে অবশ্যই স্মরণ করিয়ে দেবে। (সহীহ মুসলিম ১৩০২; সুনানে আবু দাউদ ১০২২)
দ্বিতীয় প্রমাণ : অন্যান্য মানুষের মত রাসূলুল্লাহ ﷺ এরও বংশ তালিকা ছিল- একথা সকলেই জানেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ যে একজন মানুষ ছিলেন কুরাইশ বংশে জন্ম গ্রহণ তার বিরাট প্রমাণ। নিম্নে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বংশতালিকা পেশ করা হলো :
মুহাম্মদ ﷺ আবদুল্লাহর পুত্র, তিনি আবদুল মুত্তালিবের পুত্র, তিনি হাশেমের পুত্র, হাশিম কুরাইশ বংশের, কুরাইশ কেনানা বংশের, কেনানা আরব বংশোদ্ভুত, আরবগণ ইসমাইলের বংশধর, ইসমাইল ইবরাহিম (আঃ) এর বংশধর, ইবরাহিম নূহ (আঃ) এর বংশধর, নূহ (আঃ) আদম (আঃ) এর বংশধর, আর আদম (আঃ) হলেন মাটির তৈরী। অতএব মুহাম্মদ ﷺ নিজেও মাটির তৈরী মানুষ। আর সর্বোত্তম মানব বংশেই তাঁর জন্ম। মানব পিতা-মাতার মানব শিশু হিসেবেই তিনি দুনিয়াতে আগমন করেছেন। মাটির তৈরী মানুষের জন্য মাটির তৈরী রাসূল প্রেরণই ছিল মহান আল্লাহ তা‘আলা এর চিরাচরিত নীতি। মানব জাতির জন্য প্রেরিত কোন রাসূলই মানব জাতির বাহির থেকে আসেননি। এ হচ্ছে কুরআন সুন্নাহ ও ইজমা দ্বারা সুপ্রতিষ্ঠিত ইসলামি আক্বিদাহ। যার বিরোধিতা করা সুস্পষ্ঠ কুফ্র। মুহাম্মদ ﷺ যে মানব ছিলেন সে ব্যাপারে আল্লামা আবদুর রউফ মুহাম্মদ ওসমান ইজমা নকল করেছেন:
এ আক্বিদা-বিশ্বাস শরীয়ার বাণীসমূহ দ্বারা সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত ও যার উপর গোটা মুসলিম উম্মাহর ইজমা তথা সর্বসম্মত অভিমত ব্যক্ত হয়েছে যে, রাসূলগণ যে জনগোষ্ঠির প্রতি প্রেরিত হয়েছেন, তারা তাদেরই জাতিভুক্ত ছিলেন। রাসূলগণের ব্যাপারে এই হলো আল্লাহর সুন্নাহ (নীতিমালা)। আর আল্লাহর নীতিমালায় কোন পরিবর্তন নেই। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
﴿وَلَنْ تَجِدَ لِسُنَّةِ اللهِ تَبْدِيْلًا﴾
তুমি আল্লাহর সুন্নাহ তথা নীতিতে কোন ব্যতিক্রম পাবে না। (সূরা আহযাব ৩৩:৬২)
রাসূলুল্লাহ ﷺ কোন নতুন রাসূল ছিলেন না; বরং পূর্ববর্তী রাসূলগণের মত তিনিও অহী প্রাপ্ত মানুষই ছিলেন। কুরআন, সুন্নাহ ও রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সিরাত ও জীবনী সম্পর্কে যার সামান্য জ্ঞান আছে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর মানব বংশোদ্ভুত হওয়ার বিষয়টি তার কাছে দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট।
আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, আমি আবদুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল। আল্লাহর কসম! আমি এটি ভালোবাসি না যে, তোমরা আমাকে ঐ মর্যাদার উর্ধ্বে তুলে দাও, যেই মর্যাদায় আল্লাহ আমাকে আসীন করেছেন। (মুসনাদে আহমদ ১২৫৫১)
উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি মিম্বারের উপর (খুৎবা প্রদাকালে) বলেন, আমি নবী ﷺ-কে বলতে শুনেছি যে, তোমরা আমার প্রশংসা ও মর্যাদার ক্ষেত্রে সেরূপ বাড়াবাড়ি করো না, যেরূপ বাড়াবাড়ি করেছিলো খ্রিস্টান জাতি ঈসা ইবনে মারইয়ামের ব্যাপারে [তারা ঈসা (আঃ)-কে আল্লাহর পুত্র বলে আখ্যায়িত করেছিলো]। বরং আমি হচ্ছি আল্লাহর বান্দা; সুতরাং তোমরা আমার ব্যাপারে শুধু এতটুকু বলো যে, আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল।
(সহীহ বুখারী ৩৪৪৫; মুসনাদে আহমদ ১৫৪)
তৃতীয় প্রমাণ : মুহাম্মদ ﷺ অন্যান্য মানুষের মত পানাহার করতেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ পানাহার করতেন এজন্য কাফেররা উপহাস করতো। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন:
আর মুহাম্মাদ কেবল একজন রাসূল। তার পূর্বে নিশ্চয় অনেক রাসূল বিগত হয়েছে। যদি সে মারা যায় অথবা তাকে হত্যা করা হয়, তবে তোমরা কি তোমাদের পেছনে ফিরে যাবে? আর যে ব্যক্তি পেছনে ফিরে যায়, সে কখনো আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারে না। আর আল্লাহ অচিরেই কৃতজ্ঞদের প্রতিদান দেবেন। (সূরা আল ইমরান ৩:১৪৪)
অপর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে:
﴿إِنَّكَ مَيِّتٌ وَإِنَّهُمْ مَيِّتُوْنَ﴾
নিশ্চয় তুমি মৃত্যুবরণ করবে এবং তারা সকলে মৃত্যু বরণ করবে। (সূরা যুমার ৩৯:৩০)
রাসূলুল্লাহ ﷺ অতি মানব ছিলেন না যে, তিনি মৃত্যুবরণ করবেন না। বরং তিনি ছিলেন মানুষ নবী, তাই তাঁর মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী ছিল। উল্লেখিত প্রমাণাদি দ্বারা একথা সুস্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, মুহাম্মদ ﷺ একজন মানুষ নবী ছিলেন।
সকল নবী-রাসূলগণ মৃত্যুবরণ করেছেন। আমাদের রাসূল ﷺ যখন মৃত্যুবরণ করলেন তখন বিষয়টি অনেকের কাছেই অস্পষ্ট ছিল। এমনকি উমর বিন খাত্তাব (রাঃ) তরবারী হাতে ঘোষণা করলেন, যে ব্যক্তি বলবে মুহাম্মদ ﷺ মরে গেছে, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দিব। এ কারণে রাসূল ﷺ এর মৃত্যু নিয়ে একটি ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছিল। অতঃপর যখন আবু বকর (রাঃ) এসে আয়েশার হুজরায় গেলেন, তখন চাঁদর উত্তোলন করে রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে চুমু খেলেন। তারপর বললেন, আপনার প্রতি আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক, আপনাকে আল্লাহ তা‘আলা দুইবার মৃত্যু দিবেন না। যে মৃত্যু আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার জন্য বরাদ্দ ছিল তা আপনি গ্রহণ করেছেন। একথা বলে আবু বকর (রাঃ) পুনরায় চাঁদর দিয়ে মুখ ঢেকে দিয়ে জনসম্মুখে এলেন এবং নিম্নের ঐতিহাসিক ভাষণটি প্রদান করলেন-
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবু বকর (রাঃ) বললেন, তোমাদের মধ্য থেকে যারা মুহাম্মদ ﷺ এর ইবাদত করতে তারা জেনে রাখ মুহাম্মদ ﷺ মৃত্যুবরণ করেছেন। আর যারা আল্লাহর ইবাদত করতে তারা জেনে রাখ যে, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা চিরঞ্জীব, তার কোন মৃত্যু নেই। এরপর তিনি কুরআন মাজিদের নিম্মোক্ত আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন:
আর মুহাম্মাদ কেবল একজন রাসূল। নিশ্চয় তার পূর্বে অনেক রাসূল বিগত হয়েছে। যদি সে মারা যায় অথবা তাকে হত্যা করা হয়, তবে তোমরা কি তোমাদের পেছনে ফিরে যাবে? আর যে ব্যক্তি পেছনে ফিরে যায়, সে কখনো আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারে না। আর আল্লাহ অচিরেই কৃতজ্ঞদের প্রতিদান দেবেন। (সূরা আল ইমরান ৩:১৪৪)
এ আয়াত শোনা মাত্র সকলের কাছে মনে হলো যে, তারা ইতিপূর্বে এ আয়াত কখনো শুনেন নাই। আবু বকর থেকেই প্রথম শুনলেন এবং সকলের মুখে মুখে এ আয়াত উচ্চারিত হতে লাগলো। (সহীহ বুখারী ১২৪১) **
আর তোমার পূর্বে কোন মানুষকে আমি স্থায়ী জীবন দান করিনি; সুতরাং তোমার মৃত্যু হলে তারা কি অনন্ত জীবনসম্পন্ন হয়ে থাকবে ? [সুরা আম্বিয়া ৩৪।]
তাছাড়া একথা কীভাবে গ্রহণ করা যায় যে, তিনি নূরের তৈরী; অথচ আললাহ তা‘আলা তাকে মানবজাতির হেদায়াতের জন্য অনুসরণীয় একমাত্র আদর্শ হিসেবে প্রেরণ করেছেন। নূরের তৈরী সৃষ্টির প্রকৃতি, চাল-চলন তো হবে ভিন্ন, তাকে কীভাবে মানুষ পুরোপুরি আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে তার যথাযথ অনুসরণ করবে। আশা করি বিবেকবান পাঠকের নিকট বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/283/39
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।