hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিরক

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

কিভাবে সৃষ্টিকে স্রষ্টার সমতুল্য করা হয়
১. যে ব্যক্তি তার দু‘আ, ভয়, আশা-ভরসা সৃষ্টির সাথে সম্পৃক্ত করল, সে এসব কাজে সৃষ্টিকে স্রষ্টার সাথে সমতুল্য করে ফেলল।

২. যে ব্যক্তি তার প্রণয়-বিনয়, দাসত্ব-আনুগত্য সর্বশক্তিমান আল্লাহকে না দিয়ে শক্তিহীন, নিঃস্ব, মুখাপেক্ষী, ব্যক্তিগতভাবে সর্বহারা ও সর্বগুণহীন দাস-দাসীকে দিল সে ঐ দাস-দাসীকে আল্লাহর সমতুল্য করে নিল।

সার্বভৌম ক্ষমতা, নিরঙ্কুশ মালিকানার অধিকারী, স্বয়ং সম্পূর্ণ, সর্বগুণে গুণান্বিত, সকল দোষ-ত্রুটি হতে পবিত্র, উপমাহীন, তুলনাহীন, সমকক্ষহীন, প্রতিদ্বন্দ্বীহীন রাববুল আলামীনের সাথে গাভী, তুলসী গাছ, মাটি ও খড়কুটোর তৈরী মূর্তি, সৃজিত ও লালিত-পালিত দাসানুদাসদেরকে তুলনা করা কত বড় কদর্য, কুৎসিত, বিশ্রী ও মন্দ তুলনা তা কি আর ভাষায় ব্যক্ত করা যায়?

৩. নবী, ফেরেশতা, জ্বীন, ওলী-আউলিয়া, পোপ-ফাদার, পুরোহিত, পীর বাবা, খাজা বাবা, দয়াল বাবা, উলঙ্গ ফকির, কবর-মাজারস্থ মৃত ব্যক্তি, মূর্তি ও দেবতার কাছে মানুষের লাভ-ক্ষতি, দান ও বঞ্চনার ক্ষমতা আছে বলে যে ব্যক্তি বিশ্বাস করল, সে এসব বিষয়ে তাদেরকে আল্লাহর সমতুল্য করল।

৪. যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া কাউকে সেজদা করল সে তাকে আল্লাহর সমতুল্য করল।

৫. যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া আর কারো উপর ভরসা করল সে ব্যক্তি তাকে আল্লাহর সমতুল্য করল।

৬. যে ব্যক্তি সশ্রদ্ধভাবে আল্লাহ ছাড়া কারো নামে শপথ করল সে তাকে আল্লাহর সমতুল্য করল।

৭. সে ব্যক্তি অহংকার করল, মানুষকে তার প্রশংসা ও তার সামনে বিনয় প্রকাশ করার জন্য বলল, নিজেকে মানুষের আশা-ভরসাস্থল বলে প্রকাশ করল, মুক্তিদাতা, উদ্ধারকর্তা বলে দাবি করল, আল্লাহর আইন-বিধান পরিবর্তন করে নিজেই আইন-বিধান তৈরী করল, সে নিজেকে আল্লাহর সমতুল্য করল।

৮. যে ব্যক্তি নিজেকে শাহানশাহ (রাজাধিরাজ), মালিকুল আমলাক, সুলতানুস সালাত্বীন, আমীরুল উমারা, আহকামুল হাকিমীন, কাজীউল কুজাত নামকরণ করল সে নিজেকে আল্লাহর সমতুল্য করল। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رِوَايَةً قَالَ أَخْنَعُ اِسْمٍ عِنْدَ اللهِ وَقَالَ سُفْيَانُ غَيْرَ مَرَّةٍ أَخْنَعُ الْأَسْمَاءِ عِنْدَ اللهِ رَجُلٌ تَسَمّٰى بِمَلِكِ الْأَمْلَاكِ قَالَ سُفْيَانُ يَقُوْلُ غَيْرُهٗ تَفْسِيْرُهٗ شَاهَانْ شَاهْ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলার কাছে সর্বাধিক নিকৃষ্ট নাম হলো- সুফইয়ান (রহঃ) একাধিকবার বলেছেন যে, আল্লাহ তা‘আলার নিকট সর্বাধিক নিকৃষ্ট সে ব্যক্তির নাম যে দুনিয়ায় ‘রাজাধিরাজ’ নাম ধারণ করে। সুফইয়ান (রহঃ) বলেন, অন্যেরা এর ব্যাখ্যায় বলেন যে, এর মানে ‘শাহানশাহ’।

(সহীহ বুখারী ৬২০৬; ভারতীয় ছাপা ২য় খন্ডের ৯১৬ পৃষ্ঠার ৩নং টিকা সহ দ্রষ্টব্য)

৯. যে ব্যক্তি আব্দুল কাদের জীলানীকে ‘গাওছুল আযম’ (সবচেয়ে বড় ত্রাণকর্তা) বলল, সে তাকে আল্লাহর সমতুল্য করল এবং তাঁর চেয়েও বড় সাব্যস্ত করল।

১০. যে ব্যক্তি কাউকে বলল, مَا شَاءَ اللهُ وَشِئْتَ (যা আল্লাহ চেয়েছেন এবং আপনি চেয়েছেন) সে তাকে আল্লাহর সাথে সমতুল্য হিসেবে সাব্যস্ত করল। রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে এক ব্যক্তি এ কথাটি বললে তিনি তাকে বললেন, ‘তুমি কি আমাকে আল্লাহর সমতুল্য করে ফেললে? বরং এক আল্লাহ যা চান (তাই সংঘটিত হয়)।

অন্য এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ লোকদেরকে এ কথা বলতে নির্দেশ দিয়েছেন: مَا شَاءَ اللهُ ثُمَّ شِئْتَ অর্থাৎ ‘‘যা আল্লাহ চেয়েছেন অতঃপর আপনি চেয়েছেন’’। (সুনানে নাসায়ী ৩৭৮২; সুনানে ইবনে মাজাহ ২১১৭)

শিরককারীদের এসব অমর্যাদাকর সমতুল্যকরণ বাতিল করার উদ্দেশ্যে কুরআনুল কারীমের মধ্যে মহান আল্লাহ তা‘আলা নিজের জন্য দুটো উপমা উপস্থাপন করেছেন:

প্রথম উপমা:

﴿ضَرَبَ اللهُ مَثَلًا عَبْدًا مَّمْلُوْكًا لَّا يَقْدِرُ عَلٰى شَيْءٍ وَّمَنْ رَّزَقْنَاهُ مِنَّا رِزْقًا حَسَنًا فَهُوَ يُنْفِقُ مِنْهُ سِرًّا وَّجَهْرًاؕ هَلْ يَسْتَوُوْنَؕ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِؕ بَلْ اَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ﴾

আল্লাহ উপমা দিচ্ছেন অপরের অধিকারভুক্ত এক দাসের, যে কোনকিছুর ওপর ক্ষমতা রাখে না এবং এমন এক ব্যক্তির, যাকে তিনি নিজের পক্ষ হতে উত্তম রিযিক দান করেছেন। অতঃপর সে তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে; তারা কি একে অপরের সমান? সকল প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য; অথচ তাদের অধিকাংশই তা জানে না। (সূরা নাহল- ১৬:৭৫)

দ্বিতীয় উপমা:

﴿وَضَرَبَ اللهُ مَثَلًا رَّجُلَيْنِ اَحَدُهُمَاۤ اَبْكَمُ لَا يَقْدِرُ عَلٰى شَيْءٍ وَّهُوَ كَلٌّ عَلٰى مَوْلَاهُ اَيْنَمَا يُوَجِّهْهُّ لَا يَأْتِ بِخَيْرٍؕ هَلْ يَسْتَوِيْ هُوَ وَمَنْ يَّأْمُرُ بِالْعَدْلِ وَهُوَ عَلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ﴾

আল্লাহ আরো দু’জন ব্যক্তির উপমা দিচ্ছেন- তাদের একজন বোবা, যে কোনকিছুরই শক্তি রাখে না এবং সে তার মনিবের বোঝা হয়ে থাকে। তাকে যেখানেই পাঠানো হোক না কেন সে ভালো কিছুই করে আসতে পারে না। সে কি ঐ ব্যক্তির সমান হবে, যে ন্যায়ের নির্দেশ দেয় এবং যে আছে সরল পথে?

(সূরা নাহল- ১৬:৭৬)

প্রথম উপমাটি সম্পদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, আর দ্বিতীয় উপমাটি তিনি জ্ঞানের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছেন। অর্থাৎ মাল ও জ্ঞানে তাঁর সাথে সৃষ্টির কোন তুলনাই চলে না, যেমনিভাবে চলে না অন্য কোন ক্ষেত্রেও। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদেরকে তাদেরই অবস্থা দিয়ে নিজের মর্যাদা ও সমতুল্যহীন হওয়ার বিষয়টি কত সুন্দরভাবেই না বুঝালেন।

মানব সমাজে অক্ষম ও সম্পূর্ণ নিঃস্ব কোন ক্রীতদাস এবং ধনবান, বিত্তশীল দানবীর ব্যক্তিকে মর্যাদার দিক থেকে কেউই এক সমান মনে করে না। যেমন- মূক, অক্ষম, অপরের উপর বোঝা, কল্যাণকর কাজে যোগ্যতাহীন, মূর্খ-আহমক কোন ব্যক্তিকে একজন সুশিক্ষিত, ন্যায়-নীতিবান জ্ঞানী ব্যক্তির সমান কেউ মনে করে না। মানব সমাজে কি কখনো কোন ব্যক্তি নিঃস্ব, হতদরিদ্র কাঙ্গালের দুয়ারে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে কিছু পাওয়ার আশায় যায়? অথবা কখনো কি কেউ কোন বোবা ও বধির, মূর্খ ও জ্ঞানহীন নাদানের নিকট জ্ঞান শেখার আশায় ধর্ণা দেয়? তাই যদি হয় তোমাদের নিজেদের অবস্থা, তবে কীভাবে সকল সম্পদের নিরঙ্কুশ মালিক, সকল জ্ঞানের একচ্ছত্র অধিকারী, সর্ববিষয়ে ন্যায়নীতিবান মহান আল্লাহকে তাঁর সৃজিত, লালিত-পালিত, নিঃস্ব, জাত মূর্খ, জাত কাঙ্গাল দাসানুদাসাদেরকে তাঁর সমতুল্য করছ? কীভাবে নিঃস্ব, কাঙ্গাল, জাত ফকিরদেরকে দু‘আ ইবাদাত নিবেদন করছ? আমাকে ছেড়ে নিষ্প্রাণ লক্ষ্মীর কাছে ধন আর স্বরস্বতীর কাছে জ্ঞান প্রার্থনা করছ। কীভাবে আমার প্রাপ্য মূর্তিকে দিচ্ছ? এই কি তোমাদের ন্যায় বিচার! এটাই কি তোমাদের জ্ঞানের পরিচয়। এটা কি তাঁর আত্মমর্যাদার সম্পূর্ণ পরিপন্থী নয়? এটা কি সবচেয়ে বড় জুলুম ও অবিচার নয়?

সৃষ্টিকে আল্লাহর সমতুল্য করা শিরকে আকবার। তাওবা না করে মৃত্যু বরণ করলে যার পরিণাম চির জাহান্নাম। এহেন শিরকে লিপ্ত ব্যক্তিরা জাহান্নামে পতিত হয়ে যে উক্তি করবে কুরআনে তা এভাবে উদ্ধৃত হয়েছে:

﴿تَاللهِ إِنْ كُنَّا لَفِيْ ضَلَالٍ مُّبِيْنٍ إِذْ نُسَوِّيْكُمْ بِرَبِّ الْعَالَمِيْنَ﴾

আল্লাহর কসম! আমরা (জাহান্নামবাসী) সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে ছিলাম। যখন আমরা তোমাদেরকে (পূজিত) রাববুল আলামীনের সমতুল্য করেছিলাম।

(সূরা শুয়ারা ২৬:৯৭-৯৮)

৩। আল্লাহকে যথাযথ মর্যাদা না দেয়া :

শিরক মানে আল্লাহর সমস্ত মর্যাদাকে অস্বীকার করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿وَمَا قَدَرُوا اللهَ حَقَّ قَدْرِهٖ وَالْاَرْضُ جَمِيْعًا قَبْضَتُهٗ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّماوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ ۢبِيَمِيْنِهٖؕ سُبْحَانَهٗ وَتَعَالٰى عَمَّا يُشْرِكُوْنَ﴾

তারা আল্লাহকে যথাযথ সম্মান করে না। কিয়ামতের দিন সমস্ত পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুষ্টিতে এবং আকাশমন্ডলী থাকবে ভাঁজকৃত- তাঁর ডান হাতে। অতএব তারা তাঁর সাথে যাকে শরীক করে তিনি তার থেকে অনেক পবিত্র ও মহান। (সূরা যুমার- ৩৯:৬৭)

৪। আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞতা ও মুর্খতা :

শিরকের কারণসমূহের মধ্যে এটি হল অজ্ঞতা ও মুর্খতা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿قُلْ أَفَغَيْرَ اللهِ تَأْمُرُوْنِّيْ أَعْبُدُ أَيُّهَا الْجَاهِلُوْنَ﴾

বলুন, হে মূর্খরা! তোমরা কি আমাকে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের ইবাদত করতে আদেশ করছ? (সূরা যুমার ৩৯:৬৪)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন