মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
‘‘আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান’’ এ ধারনাটি বাতিল এবং শিরক
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/283/44
আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান এই বিশ্বাস অতিশয় বিপজ্জনক; মূর্খতা এই কারণে যে, এই বিশ্বাস আল্লাহর সৃষ্টির ইবাদত করার মত সবচেয়ে বড় পাপকে উৎসাহিত করা হয় যুক্তিসম্মতভাবে ব্যাখ্যা করে। এটা ‘তাওহীদ আল আসমাই ওয়াস সিফাত’ বিশ্বাসের বিপরীত শিরকের একটি রূপ। কারণ এটা স্রষ্টার জন্য এমন এক বিশেষণ দাবি করে যা তাঁর নয়। কুরআন অথবা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জীবনীতে আল্লাহর এই ধরনের বর্ণনা পাওয়া যায় না। প্রকৃতপক্ষে কুরআন এবং সুন্নাহ এই বক্তব্যের বিপরীত।
আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান নন, বরং তিনি আরশে সমাসীন বিষয়টির প্রমাণ হচ্ছে-
১। কুরআন থেকে প্রমাণ : আল্লাহ তার সৃষ্টির উর্ধ্বে আরশে সমাসীন কুরআনে এরূপ প্রচুর আয়াত আছে। এইগুলো কুরআনের প্রায় প্রতি সূরাতেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাওয়া যায়। আল্লাহ তা‘আলা আরশের উপর সমাসীন- এই আয়াতটি পবিত্র কুরআনে সাত বার উল্লেখ করা হয়েছে। অতএব আল্লাহ তা‘আলা সর্বত্র বিরাজমান রয়েছে এরূপ বিশ্বাসকারী কাফের এবং ইসলাম থেকে বহিষ্কৃত। বস্ত্তত আল্লাহ তা‘আলা মর্যাদা ও পরাক্রমে, জাত ও সত্তাগতভাবে যেমন সবার উর্ধ্বে তেমনি তিনি অবস্থানের দিক থেকেও সকল সৃষ্টির উর্ধ্বে। আল কুরআনের প্রায় এক হাজার আয়াত দ্বারা আল্লাহর উর্ধ্বে অবস্থান করার গুণটি বুঝা যায়। আল্লাহ তা‘আলা আরশের উপর সমাসীন থেকেই সবকিছু দেখেন ও শুনেন। আরশের উপর সমাসীন হওয়ার সাতটি আয়াত নিম্নে প্রদত্ত হলো।
যিনি আসমান, যমীন ও উভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। তারপর তিনি রহমানের আরশে সমাসীন হয়েছেন। সুতরাং তাঁর সম্পর্কে যিনি জানেন, তুমি তাকেই জিজ্ঞাসা কর। (সূরা ফুরকান ২৫:৫৯)
তিনিই আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তিনি আরশে সমাসীন হয়েছেন। (সূরা হাদীদ ৫৭:৪)
এ আয়াতগুলোতে বর্ণিত اِسْتَوٰي ‘অধিষ্ঠিত হয়েছে’ এটি فِعْلِيْ وَجُوْدِيْ صِفَت ‘ফে‘লি ওজুদী সিফাত’ বা ক্রিয়াগত ইতিবাচক গুণ। এ ধরণের গুণগুলো আল্লাহর ইচ্ছার সাথে সংশ্লিষ্ট। যখন ইচ্ছে এগুলো করেন, আবার যখন চান এগুলো পরিহার করেন। আরশ সৃষ্টির পূর্বে اِسْتَوٰي বা অধিষ্ঠান ক্রিয়াটি পরিত্যাক্ত ছিল। এ ধরনের গুণগুলো قَدِيْمَةُ النَّوْعِ حَادِثَةُ الْاَحَادِ অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা অনাদীকাল থেকেই এগুলো দ্বারা গুণান্বিত ছিলেন এবং অনন্তকাল ব্যাপী গুণান্বিত থাকবেন। তবে এগুলো তার ইচ্ছাধীন হওয়ায় তিনি যখন চাইবেন প্রকাশ করবেন। আর যখন চাইবেন পরিত্যাগ করবেন। যেমন- হাঁসি-খুশি, বিস্ময়, কিয়ামত দিবসে আগমন- এসব যখনই ইচ্ছে তখনই তিনি করেন। (আল মাদখাল ৯১-৯২)
اِسْتَوٰي শব্দটি দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর আরশের উপর অধিষ্ঠিত হওয়ার গুণটি প্রকাশ করেছেন। তিনি আরশের উপরই বিরাজমান। সত্তাগতভাবে তিনি সর্বত্র বিরাজমান নন। ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, এ শব্দটির ব্যাখ্যায় সালাফে সালেহীন থেকে চারটি শব্দ বর্ণিত হয়েছে।
১. اِسْتَقَرَّ (ইস্তাকার্রা) তথা অধিষ্ঠিত হয়েছেন।
২. عَلَا (আলা) তথা সমুন্নত হয়েছেন।
৩. اِرْتَفَعَ (ইরতাফা‘আ) তথা ‘সমুচ্চ হয়েছেন।
৪. صَعُدَ (সায়িদা) অর্থ আরোহন করেছেন।
এ সব অর্থই একথা প্রকাশ করে যে, আল্লাহ তা‘আলা আরশের উপর অধিষ্ঠিত।
ফেরেশতা এবং রূহ আল্লাহর দিকে উর্ধ্বগামী হয় এমন একদিনে, যা পার্থিব পঞ্চাশ হাজার বৎসরের সমান। (সূরা মাআরিজ ৭০:৪)
সুতরাং যারা গভীরভাবে চিন্তা করে, কুরআন নিজেই তাদের স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে, আল্লাহ তার সৃষ্টির অনেক ঊর্ধ্বে আরশে সমাসীন এবং কোন ভাবেই এর ভিতরে অথবা এর দ্বারা পরিবেষ্টিত নয়। যদি আল্লাহ তা‘আলা আরশে সমাসীন না হন, তাহলে ফেরেশতা এবং রূহ আল্লাহর দিকে উর্ধ্বগামী হয় কি করে?
মিরাজ থেকে প্রমাণ: মদীনায় হিজরত করার দুই বৎসর পূর্বে রাসূলুল্লাহ ﷺ মক্কা হতে জেরুজালেমে অলৌকিক রাত্রি ভ্রমণ (ইসরা) করেন এবং সেখান হতে মিরাজে ভ্রমন করেন অর্থাৎ সাত আসমানের উপর সৃষ্টির সর্বোচ্চ সীমায় গমন করেন। আল্লাহ তা‘আলা আরশে সমাসীন অধিষ্ঠিত হওয়ার উপর যদি অন্য কোন দলীল-প্রমাণ নাও থাকতো, তবুও আল্লাহ তা‘আলা আরশে আছেন তা প্রমাণ করার জন্য শুধুমাত্র মিরাজের ঘটনাটিই যথেষ্ট ছিল। মিরাজের ঘটনা হাদীস ও তাফসীরের গ্রহণযোগ্য সকল কিতাবেই বিশুদ্ধ সনদে বিস্তারিতভাবে বর্ণিত রয়েছে। তিনি যাতে সরাসরি আল্লাহর সামনে উপস্থিত হতে পারেন এ জন্য তাকে এই অলৌকিক ভ্রমন করানো হয়েছিল। সেখানে সপ্তম আসমানের ঊর্ধ্বে দিনে পাঁচবার সালাত (আনুষ্ঠানিক প্রার্থনা) আদায় করা বাধ্যতামূলক করা হয়। সেখানে আল্লাহ তা‘আলা সরাসরি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সঙ্গে কথা বলেন এবং সূরা বাক্বারার শেষ আয়াতগুলো অবতীর্ণ করেন। (বুখারীতে বিস্তারিতভাবে বর্নিত আছে)
যদি আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান হতেন, তাহলে রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে কোথাও যেতে হত না। তিনি নিজের বাড়ীতে সরাসরি আল্লাহর সম্মুখে হাজির হতে পারতেন। সুতরাং এই ঘটনাটি একটি প্রমাণ যে আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান নন, তিনি আরশে সমাসীন।
২। হাদিস থেকে প্রমাণ: রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বিবরণের মধ্যে প্রচুর প্রমাণ রয়েছে, যেগুলি পরিস্কারভাবে প্রমাণ করে যে, আল্লাহ পৃথিবী অথবা তার সৃষ্টির মধ্যে বিদ্যমান নন। যেমন-
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যখন আল্লাহ সৃষ্টি সমাপ্ত করলেন, তখন তিনি একটি কিতাব লিখলেন, যা আরশের উপর তার নিকট রয়েছে। (সেখানে লিখা রয়েছে যে) নিশ্চয় আমার করুনা আমার ক্ষোভ হতে অগ্রগামী হবে। (সহীহ বুখারী ৩১৯৪; মুসনাদে আহমদ ৮১২৭)
মু‘আবিয়া ইবনুল হাকাম আস-সুলামী হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার একটি বাঁদি আছে, আমি তাকে একটি ধপ্পর মেরেছি। রাসূলুল্লাহ ﷺ আমার এই কাজটিকে বড় অন্যায় হিসেবে দেখলেন। অতঃপর আমি বললাম, তাহলে আমি কি তাকে স্বাধীন করে দেব? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তাকে আমার কাছে নিয়ে এসো। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর আমি তাকে নিয়ে আসলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ তাকে (দাসীকে) জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহ কোথায়? সে উত্তর দিল, আল্লাহ তা‘আলা আকাশে। রাসূলুল্লাহ ﷺ মেয়েটিকে আবার জিজ্ঞেস করলেন, আমি কে? সে উত্তর দিল, আপনি আল্লাহর রাসূল। তিনি বললেন, তাকে মুক্তি দাও, কারণ নিশ্চয় সে একজন সত্যিকার মুমিন।
(সহীহ মুসলিম ১২২৭; সুনানে আবু দাউদ ৯৩১; মুসনাদে আহমদ ১৭৯৪৫)
অপর হাদীসে বলা হয়েছে, আল্লাহ তা‘আলা প্রতি রাতের শেষভাগে প্রথম আকাশে অবতরণ করেন। আর এ কথা সকলেরই জানা আছে যে, অবতরণ বলা হয় উপর থেকে নিচে নামাকে। যদি আল্লাহ তা‘আলা সত্তাগতভাবে সর্বত্র বিরাজমান থাকেন। তাহলে আবার কোথা থেকে প্রথম আকাশে অবতরণ করেন? হাদীসে বর্ণিত হয়েছে:
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, আমাদের রব আল্লাহ তা‘আলা প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে প্রথম আকাশে অবতরণ করেন। অতঃপর তিনি আহবান করতে থাকেন, কে আছ! আমাকে ডাকবে, যার ডাকে আমি সাড়া দেব? কে আছ! আমার কাছে আবেদন করবে, যার আবেদনে আমি দান করবো? কে আছ! আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, যাকে আমি ক্ষমা করবো? (সহীহ বুখারী ৭৪৯৫; সহীহ মুসলিম ১৮১৩; সুনানে ইবনে মাজাহ ১৩৮৮)
সুতরাং ইসলাম এবং এর প্রধান তত্ত্ব তৌহিদ অনুসারে নিরাপদে বলা যায় যে, আল্লাহ তাঁর সৃষ্টি হতে সর্ম্পূণ আলাদা। কোন প্রকার সৃষ্টিই তাঁকে বেষ্টিত করে নেই অথবা তাঁর ঊর্ধ্বে বিদ্যমান নেই। আল্লাহ সকল বস্তুর ঊর্ধ্বে। ইসলামের মূল সূত্র হিসেবে আল্লাহ সম্বন্ধে এটাই হল সঠিক মতবাদ। এটা খুব সহজ ও দৃঢ়। **
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/283/44
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।