hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রাফ‘উল মালাম সম্মানিত ঈমামগণের সমালোচনার জবাব

লেখকঃ শাইখুল ইসলাম আহমাদ ইবন আবদুল হালীম ইবন তাইমিয়্যাহ

২১
ষষ্ঠ কারণ: হাদীসে আমল না করার কারণ এও হয়ে থাকে যে, ইমাম বা আলিম ব্যক্তি হাদীসের চাহিদা…
হাদীসে আমল না করার কারণ এও হয়ে থাকে যে, ইমাম বা আলিম ব্যক্তি হাদীসের চাহিদা বা ইপ্সিত উদ্দেশ্য সম্পর্কে অজ্ঞাত থাকবেন বা জানবেন না। আর যে ব্যক্তি হাদীসের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অজ্ঞাত, তার ঐ হাদীসে আমল করার প্রশ্নই উঠে না। বেশ কয়েকটি কারণে হাদীসের উদ্দেশ্য একজন ইমাম বা আলিমের কাছে অজানা থাকতে পারে। যেমন,

ক. কখনও কখনও হাদীসে উল্লিখিত শব্দটি অপরিচিত কোনো শব্দ হয়ে থাকে। যেমন, নিম্নোক্ত শব্দসমূহ:

১. ‘মুযাবানাহ’ [গাছের ঝুলন্ত খেজুর অন্যত্র শুকনা খেজুরের পরিবর্তে বিক্রি করা।]

২. ‘মুখাবারাহ’ [ভূমিতে অর্জিত শস্যের বিশেষ অংশের তৃতীয় বা চতুর্থাংশের বিনিময়ে কাজ করা।]

৩. ‘মুহাকালাহ’ [শীষের অভ্যন্তরস্থিত গমকে বাইরের পরিস্কার গমের বিনিময়ে বিক্রয় করা।]

৪. ‘মুলামাসাহ’ [বিক্রেতা বলবে: আমার কাপড় স্পর্শ করলে বেচা-কেনা অবশ্যম্ভাবী অথবা ক্রেতা বলবে, আমি তোমার কাপড় স্পর্শ করলেই বেচা-কেনা সম্পূর্ণ হবে।]

৫. ‘মুনাবাযাহ’ [কোনো ব্যক্তি বিক্রেতাকে এই কথা বলা যে, আমি তোমার দিকে এই প্রস্তর টুকরা নিক্ষেপ করলেই বিক্রয়া সম্পূর্ণ হবে।]

৬. ‘গারার’ [ধোকাপূর্বক ক্রয় বিক্রয় অর্থাৎ দ্রব্যের উপরের অংশ দেখে ক্রেতা মুগ্ধ হয় এবং ধোকা প্রাপ্ত হয় কিন্তু ভিতরগত বস্তু সম্পর্কে সে অনভিহিত।] ইত্যাদি কদাচিৎ ব্যবহৃত শব্দগুলো, যার মধ্যে আলিমগণ কখনও কখনও এসব শব্দের বিভিন্ন ব্যাখ্যা করে থাকেন।

তাছাড়া কদাচিৎ অর্থে ব্যবহৃত শব্দের উদাহরণ নিম্নের মারফু‘ হাদীসেও পাওয়া যায়, যেখানে বলা হয়েছে,

«لَا طَلَاقَ، وَلَا عَتَاقَ فِي إِغْلَاقٍ»

এখানে إِغْلَاق শব্দের তফসীর আলিমগণ إكراه বা জবরদস্তি করেছেন [তখন হাদীসের অর্থ দাঁড়ায়, (কারও নিকট হতে জোরপূর্বক তালাক নেওয়া হলে এবং জোরপূর্বক কারও গোলাম আযাদ করা হলে ঐ স্ত্রীর প্রতি তালাকও পতিত হবে না এবং ঐ গোলামও আযাদ হবে না।) [মুসনাদে আহমদ, আবু দাউদ, ইবন মাজাহ ও ইবন হিব্বান]।]। আর সে হিসেবে তারা জবরদস্তি স্ত্রী তালাক ও দাসের স্বাধীনতা নিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মত দিয়েছেন, কিন্তু যারা এ মতের বিপরীত মত পোষণ করেন, তারা এ তাফসীরটি জানেন না।

খ. আবার কখনও উক্ত ইমাম বা আলিমের জন্য সে হাদীসের অর্থ না জানার কারণ হচ্ছে, যে শব্দ হাদীসে এসেছে, তার বর্তমান আভিধানিক ও প্রচলিত অর্থ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মনোনীত অর্থের বিপরীত হওয়া। কারণ সম্ভবত সে ইমাম বা আলিম শব্দটির সে অর্থই করবে যা সে বর্তমানে বুঝে। সে মনে করছে যে বর্তমানে প্রচলিত শব্দটির অর্থই রাসূলের উদ্দেশ্য। কেননা শব্দের অর্থ সব সময় এক হওয়াই হচ্ছে মৌলিক নীতি। (অথচ সময়ের পরিবর্তনে শব্দটির অর্থে পরিবর্তন এসেছে, রাসূলের যুগে যে অর্থে এটি ব্যবহৃত হয়েছিল বর্তমানে হয়ত সে অর্থে ব্যবহৃত হচ্ছে না, ফলে উক্ত ইমাম বা আলিম রাসূলের উদ্দেশ্য না বুঝে শব্দটি থেকে বর্তমানে প্রচলিত অর্থ গ্রহণ করেছে। আর এভাবেই তিনি প্রকৃতপক্ষে হাদীসটির অর্থ বুঝতে অক্ষম হলেন।) যেমন,

কেউ বিভিন্ন বর্ণনা থেকে শুনল যে, (মদ হারাম হলেও) ‘নাবীয’ এর ব্যাপারে ‘রুখসত’ বা ছাড় দেওয়া হয়েছে। তখন সে মনে করল যে, ‘নাবীয’ সম্ভবত কোনো এক প্রকার মাদক। কারণ সে তার ভাষাতেই এরূপই বুঝে থাকে। অথচ প্রকৃতপক্ষে, খেজুর মিশ্রিত মিষ্টি পানিকেই নাবীজ বলা হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত ওতে নেশা না আসে। অনেক সহীহ হাদীসেই নাবীযের এরূপ ব্যাখ্যা এসেছে।

অনুরূপভাবে কেউ কেউ কুরআন ও সুন্নায় উদ্ধৃত ‘খমর’ শব্দটি শুনতে পেল। তখন তারা মনে করল যে, ‘খমর’ বলতে শুধুমাত্র আংগুরের রসকেই বুঝায়; যখন তা শক্ত ও নেশাযুক্ত হয়। কেননা এটাই ‘খমর’ বা মদের আভিধানিক অর্থ। যদিও অনেক সহীহ হাদীসে প্রত্যেক নেশাযুক্ত পানীয়কেই মদ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে [সহীহ বুখারী ও মুসলিমে এ সংক্রান্ত হাদীস রয়েছে।]। (সুতরাং এখানেও সে ব্যক্তি যে মদ বলতে শুধু আংগুরের রস বুঝেছে, সে ভুল করেছে। সে ভুলের কারণ হচ্ছে, কুরআন ও সুন্নাহর শব্দকে রাসূলের যুগের ব্যবহৃত অর্থের বিপরীতে অথবা হাদীসের স্বীকৃত অর্থ বাদ দিয়ে বর্তমান কালের আভিধানিক অর্থে ব্যবহার করা। সুতরাং হাদীসের সঠিক অর্থ না জানা থাকার এটাও একটি কারণ।)

গ. আবার কখনও উক্ত ইমাম বা আলিমের জন্য সে হাদীসের অর্থ না জানার কারণ হচ্ছে, হাদীসের শব্দ মুশতারাক (একই শব্দের কয়েকটি অর্থ থাকা) কিংবা মুজমাল (সংক্ষিপ্ততাজনিত অস্পষ্টতা) থাকা অথবা শব্দটি হাকীকত (তথা প্রকৃত) ও মাজায (অন্যার্থবোধক) অর্থের মধ্যে ঘুর্ণায়মান থাকা। এমতাবস্থায় সে ইমাম বা আলিম শব্দের তার নিকটস্থ অর্থ গ্রহণ করে, যদিও অন্যটাই সেখানে উদ্দেশ্য।

যেমন, সাহাবীগণের এক দল প্রথমতঃ কুরআনুল কারীমের ﴿وَكُلُواْ وَٱشۡرَبُواْ حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ ٱلۡخَيۡطُ ٱلۡأَبۡيَضُ مِنَ ٱلۡخَيۡطِ ٱلۡأَسۡوَدِ﴾ [ البقرة : ١٨٧ ] ) আয়াতে الخيط الأبيض এবং الخيط الأسو “সাদা এবং কালো সুতা”-কে “রশি” অর্থে ব্যবহার করেছেন [আদী ইবন হাতিম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে অনুরূপ বর্ণনা দেখুন, সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ। [সম্পাদক]]।

অনুরূপভাবে কেউ কেউ আল্লাহর বাণী, ﴿فَٱمۡسَحُواْ بِوُجُوهِكُمۡ وَأَيۡدِيكُم﴾ [ المائ‍دة : ٦ ] “তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ কর” এই আয়াতের أَيۡدِيكُم “তোমাদের হাত” শব্দ দ্বারা হাতের বগল পর্যন্ত অর্থে ব্যবহার করেছেন।

ঘ. আবার কখনও উক্ত ইমাম বা আলিমের জন্য সে হাদীসের অর্থ না জানার কারণ হচ্ছে, কুরআনের আয়াত বা হাদীসের শব্দের ‘চাহিদা বা উদ্দেশ্যে’ গুপ্ত থাকা [অর্থাৎ শব্দ দ্বারা কিসের ইঙ্গিত করা হয়েছে, তা স্পষ্ট না থাকা। [সম্পাদক]]। কেননা কোন কথার কী ‘চাহিদা বা উদ্দেশ্য’, তা অত্যন্ত ব্যাপক বিষয়; সেটা উপলব্ধি ও কথার বিভিন্ন দিক বুঝার ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে বিরাট তফাৎ হয়ে থাকে। কারণ, এ ব্যাপারে আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান ও বুঝ সবার জন্য সমান নয়।

আবার হতে পারে, ‘নস’ বা ভাষ্যে ব্যবহৃত সেই বাক্যের ‘চাহিদা ও উদ্দেশ্য’ সংক্রান্ত সাধারণ একটি অর্থ সেই ব্যক্তি (ইমাম) এর জানা রয়েছে; কিন্তু উক্ত ‘নস’ বা ভাষ্য দ্বারা প্রকৃত যে ‘চাহিদা বা উদ্দেশ্য’ রয়েছে, সেটা তার জানা (সাধারণ) অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে বলে তাঁর মনেই হয় নি [অর্থাৎ তার (ইমামের) মনেই হয় নি যে, হাদীসের নস বা ভাষ্যের প্রকৃত অর্থ, তার জানা হাদীসের সাধারণ অর্থের আওতাভুক্ত। ফলে তিনি হাদীসের ‘নস’ বা মূল ভাষ্যের চাহিদা সাধারণভাবে জানলেও, সেটার প্রকৃত অর্থ তার জানা সাধারণ অর্থের আওতায় আসবে বলে তার মনের কোনেই উদিত হয় নি। তিনি সে প্রকৃত অর্থটি হাদীসের বাক্যের চাহিদার মধ্যে প্রবেশ করানোর ব্যাপারে সাবধান হন নি। [সম্পাদক]]।

আবার হতে পারে, এটা যে নস (বা কুরআন, হাদীস) এর ভাষ্যের চাহিদা ও উদ্দেশ্য সেটা সে ব্যক্তি (ইমাম) এর জানা ছিল, কিন্তু পরে তিনি তা ভুলে যান। এও একটি বিরাট অধ্যায়। আল্লাহ ছাড়া কারও পক্ষে তা নিরূপণ করা সম্ভব নয়।

আবার হতে পারে, ‘নস’ বা ভাষ্যে ব্যবহৃত সেই বাক্যের ‘চাহিদা ও উদ্দেশ্য’ বিষয়ে সেই ব্যক্তি (ইমাম) ভুল করে থাকবেন। ফলে তিনি বাক্যকে এমন অর্থে ব্যবহার করবেন, যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট প্রেরিত আরবী ভাষায় প্রমাণিত হয় না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন