hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রাফ‘উল মালাম সম্মানিত ঈমামগণের সমালোচনার জবাব

লেখকঃ শাইখুল ইসলাম আহমাদ ইবন আবদুল হালীম ইবন তাইমিয়্যাহ

৩০
ইজতেহাদের শুদ্ধতা ও অশুদ্ধতা এবং মুজতাহিদ তার ইজতেহাদের ফলে পুণ্য লাভ
উপরোক্ত কথার সপক্ষে প্রমাণসমূহ নিম্নরূপ:

১- মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَدَاوُۥدَ وَسُلَيۡمَٰنَ إِذۡ يَحۡكُمَانِ فِي ٱلۡحَرۡثِ إِذۡ نَفَشَتۡ فِيهِ غَنَمُ ٱلۡقَوۡمِ وَكُنَّا لِحُكۡمِهِمۡ شَٰهِدِينَ ٧٨ فَفَهَّمۡنَٰهَا سُلَيۡمَٰنَۚ وَكُلًّا ءَاتَيۡنَا حُكۡمٗا وَعِلۡمٗاۚ﴾ [ الانبياء : ٧٨، ٧٩ ]

“আর দাউদ এবং সুলাইমান এক ব্যক্তির শষ্য বিনষ্ট সম্পর্কে মীমাংসা করছিলেন, তখন ঐ ব্যক্তির শষ্যের মধ্যে ছাগল প্রবেশ করেছিল। আমি ঐ মীমাংসা দেখছিলাম। ঐ মীমাংসা সম্পর্কে আমি সুলায়মানকে সঠিক জ্ঞান দান করেছিলাম। অবশ্য আমি উভয়কেই জ্ঞান ও হিকমত দান করেছিলাম”। [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৭৮-৭৯] এখানে আল্লাহ সুলাইমানকে বোধশক্তি দ্বারা বিশেষিত করেছেন এবং তাদের উভয়ের প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের প্রশংসা করেছেন।

২- সহীহ বুখারী ও মুসলিমে ‘আমর ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন বিচারক সঠিক ইজতিহাদ করে, তখন তার জন্য দু’টি প্রতিদান থাকে। আর ইজতেহাদে ভুল করলে একটি প্রতিদান পাবে।”

এ হাদীসে মুজতাহিদ ভুল করলেও প্রতিদানের কথা পরিস্কার বর্ণনা করা হয়েছে। এটা তার যথাসাধ্য ইজতিহাদ তথা প্রচেষ্টার কারণেই। সুতরাং তার ভুল মার্জনীয়। কেননা প্রত্যেকটি নির্দিষ্ট হুকুমে নির্ভুল তত্ত্ব পাওয়া অসম্ভব অথবা কঠিন।

৩- মহান আল্লাহ বলেন:

﴿وَمَا جَعَلَ عَلَيۡكُمۡ فِي ٱلدِّينِ مِنۡ حَرَجٖۚ﴾ [ الحج : ٧٨ ]

“দীনের মধ্যে তোমাদের জন্য সমস্যাকর কিছুই নেই”। [সূরা আল-হজ, আয়াত: ৭৮]

৪- অন্যত্র আল্লাহ ঘোষণা করেন:

﴿يُرِيدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلۡيُسۡرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ ٱلۡعُسۡرَ ﴾ [ البقرة : ١٨٥ ]

“আল্লাহ্ তোমাদের সরল ও সহজ চান, বক্র এবং কঠিন কিছু চান না”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৫]

৫- সহীহ বুখারী ও মুসলিমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে, তিনি খন্দকের যুদ্ধের দিন সাহাবীগণকে বলেন, “বনি কুরাইযার গোত্রে না পৌঁছানো অবধি কেউ আসরের সালাত আদায় করবে না।” কিন্তু পথে যখন আছরের সালাতের সময় হয়ে গেল, তখন কিছু সংখ্যক সাহাবী বললেন, আমরা বনি কোরাইযা ছাড়া সালাত আদায় করব না। আবার কেউ কেউ বললেন, তাঁর (রাসূলের) ইচ্ছা এটা নয়, তাই তারা পথেই সালাত আদায় করে নিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের দু’ দলের কারও ওপরই এর জন্য দোষারোপ করেন নি।’

প্রথম দল, (রাসূলের) বক্তব্যকে সাধারণভাবে গ্রহণ করেছেন। ফলে তারা সালাত ছুটে যাওয়ার অবস্থাকেও সাধারণ হুকুমের অধীন গণ্য করেছেন।

পক্ষান্তরে অন্য সাহাবীগণ এ অবস্থাকে সাধারণ হুকুমের আয়াত্বাধীন মনে না করার সপক্ষে অবশ্যম্ভাবী দলীল পেশ করেছেন। (আর তা হচ্ছে তাদের নিকট) রাসূলের হাদীসের উদ্দেশ্য হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদেরকে ঘেরাও করেছেন, তাদের কাছে দ্রুত পৌঁছানো।

ফকীহগণের মধ্যে এটা একটি বিরোধপূর্ণ প্রসিদ্ধ মাসআলা যে, কিয়াস দ্বারা অনির্দিষ্টকে নির্দিষ্ট করা যাবে কিনা? এতদসত্ত্বেও যারা পথে সালাত আদায় করছেন, তারা বেশি সঠিক কাজ করেছেন [অথচ তারা কিয়াসকে ‘নস’ এর বিপরীতে ব্যবহার করেছেন। তারপরও তারা যদি সঠিক পদ্ধতিতে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে যে, এটা হচ্ছে দীনের ফিকহের কারণে। যারা ফকীহ তারা সত্যিকার অর্থে হুকুম বা বিধানের প্রকৃত কারণ উপলব্ধি করে সেটার উপর আমল করতে চেষ্টা করেন। পক্ষান্তরে শুধু ‘নস’ এর প্রকাশ্য রূপের উপরও অনেকে আমল করে থাকেন। তাদের এ পদ্ধতিও সঠিক। তবে প্রথম গোষ্ঠীর মূল্যায়ণ হচ্ছে, আহলুল ফিকহ হিসেবে, তারা যুগ যুগ ধরে সম্মানিত। আর দ্বিতীয় গোষ্ঠীর মূল্যায়ণ হচ্ছে যে, তারা রাসূলের সুন্নাতের অনুসারী, আহলে হাদীস হিসেবে। তারাও কিয়ামত পর্যন্ত সম্মানের অধিকারী। যদি উভয় পদ্ধতিকে একসাথ করে সমন্বয় করা যায়, তবে তা হবে নূরুন ‘আলা নূর। তাদের মধ্যে পরস্পর মতান্তর থাকতে পারে তবে মনন্তর নয়। প্রত্যেকেই ইনশাআল্লাহ সঠিক পথের পথিক। [সম্পাদক]]।

৬- অনুরূপভাবে বেলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যখন দুই সা‘ ( صاع ) ‘খেজুর এক সা [এক সা‘ এর পরিমাণ হচ্ছে, সাধারণত: পূর্ণ বয়স্ক লোকের দু’ হাতের মধ্যস্থিত বস্তু চার বার নিলে যা হয়, তা। তবে সেটার ওজনের দিকে হিসেব করলে, হানাফীদের নিকট ৩২৬১.৫ গ্রাম, আর অন্যান্য ইমামদের নিকট ২১৭২ গ্রাম। সাধারণত চার মুদ মিলে এক সা‘ হয়। আর এক মুদ সমান, হানাফীদের নিকট ৮১৫.৩৯ গ্রাম; যা দুই রতল। অন্যান্যদের নিকট ৫৪৩ গ্রাম, যা এক রতল ও অন্য রতলের ৩/২ অংশ। [সম্পাদক]]-এর পরিবর্তে বিক্রি করলেন, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা ফিরত দেওয়ার আদেশ দিলেন [আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, বিলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বুরনী খেজুর নিয়ে আসলে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এটা কোত্থেকে? বিলাল বললেন, আমাদের কাছে কিছু খারাপ খেজুর ছিল, তা থেকে দু’ সা‘ বিনিময়ে এক সা‘ নিয়েছি। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “উওয়াহ, এটাই তো সুদ, এটা করবে না, বরং তুমি যখন বিক্রয় করতে চাইবে, তখন অন্য কিছু দিয়ে খেজুর বিক্রয় করে ফেলবে, তারপর সেটা দিয়ে খেজুর কিনে নিবে”।]। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম) কিন্তু এজন্য বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু সুদ খাওয়ার হুকুম হিসেবে ফাসিক, লা‘নত কিংবা কঠোরতার সম্মুখীন হন নি। কেননা এটা হারাম হওয়া সম্পর্কে তিনি অবগত ছিলেন না।

৭- তদ্রূপ আদি ইবন হাতেম রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং সাহাবীগণের এক দল কুরআনের এই আয়াত পাঠ করলেন,

﴿حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ ٱلۡخَيۡطُ ٱلۡأَبۡيَضُ مِنَ ٱلۡخَيۡطِ ٱلۡأَسۡوَدِ﴾ [ البقرة : ١٨٧ ]

“যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের জন্য কালো দাগ হতে সাদা দাগ পরিদৃষ্ট হয়।” এর অর্থ সাদা ও কালো রশি মনে করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বালিশের নিচে সাদা কালো দুইটি সুতা রাখতেন। দুইটি সুতার মধ্যে একটি অপরটি হতে স্পষ্ট হওয়া পর্যন্ত তারা সাহরী খেতেন। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আদি ইবন হাতিম রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন:

«إِنَّ وِسَادَتَكَ لَعَرِيضٌ، إِنَّمَا هُوَ سَوَادُ اللَّيْلِ، وَبَيَاضُ النَّهَارِ»

“যদি সাদা ও কালোর অর্থ সুতা হয়ে থাকে, তা হলে তোমার বালিশ বেশ প্রশস্ত! তার অর্থ এই নয়, বরং তার অর্থ রাতের অন্ধকার এবং দিনের আলো)”। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম) [এখানে একটি কথা জানা আবশ্যক যে, ‘আদী ইবন হাতেম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর এ ঘটনাটি আয়াতটি নাযিল হওয়ার অনেক পরের ঘটনা। কারণ, আয়াতটি দ্বিতীয় হিজরীতে নাযিল হয়, পক্ষান্তরে আদী ইবন হাতেম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ইসলাম গ্রহণ করেন ১০ম হিজরী সালে। সহীহ মুসলিমের হাদীস নং ১০৯০ পড়লে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। তিনি নিজে ইজতিহাদ করেছেন এবং ভুল করেছিলেন। [সম্পাদক]]।

এর মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একথার ইঙ্গিত দিলেন যে, তারা আয়াতের ভাবার্থ বুঝতে সক্ষম হয় নি। কিন্তু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দ্বিতীয়বার সিয়াম পালন করার নির্দেশ দেন নি এবং রমযানের দিবসে তাকে সিয়াম পরিত্যাগ করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেন নি, যদিও সিয়াম ত্যাগ করা মারাত্মক কবীরা গুণাহ।

ইজতিহাদের কারণে তিরষ্কারের ব্যতিক্রম ঘটনা

উল্লিখিত মাসআলার বিপরীত হলো আহত ব্যক্তির শীতের মধ্যে গোসলের ফাতওয়া: (জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে, প্রচণ্ড শীতের সফরে কোনো একজন সাহাবী মারাত্মক আহত হলেন, তারপর তার স্বপ্নদোষ হলে তিনি উপস্থিত সাহাবীদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমি কি গোসল করবো, না তায়াম্মুম করবো ?) সাহাবীরা প্রচণ্ড শীতে তাকে গোসলের ফাতওয়া দিলেন। গোসলের দরুন ঐ সাহাবীর মৃত্যু হয়। এ সংবাদ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে পৌঁছালে তিনি বললেন, “তারা তাকে হত্যা করেছে, আল্লাহ তাদেরকে হত্যা করুন। যদি তারা না জানে তো জিজ্ঞেস করল না কেন? অজ্ঞতার ঔষধ তো কেবল জিজ্ঞেস করা”। (আবু দাউদ)

এর কারণ হচ্ছে, ঐ সকল লোক ইজতিহাদ ব্যতিরেকেই ভুল করেছিলেন। কেননা তারা বিদ্বান ( أهل العلم ) ছিলেন না [এটাই প্রমাণ করে যে, ইজতেহাদ করার জন্য আলেম হওয়া লাগবে। সাধারণ শিক্ষিত মানুষের কোনো ইজতিহাদ সওয়াবের জন্য গ্রহণযোগ্য ওযর নয়। অবশ্যই তাদেরকে দীনী জ্ঞানে জ্ঞানী হতে হবে। [সম্পাদক]]।

৮- অনুরূপভাবে উসামা রাদিয়াল্লাহু আনহু হুরাকাত যুদ্ধে যখন কলেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠকারীকে হত্যা করেন [ইমাম বুখারী সাহাবী উসামা ইবন যায়েদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুহাইনা গোত্রের হুরাকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠালেন। সকালবেলা যুদ্ধ করে আমরা তাদের পরাজিত করলাম। তিনি বলেন, তখন আমি ও আমার এক আনসারী লোক তাদের এক লোককে বাগে পেলাম। যখন আমরা তাকে বেষ্টন করে ফেললাম, তখন সে বলল, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। তিনি বলেন, তখন আনসারী তাকে হত্যা করা হতে বিরত হলো। কিন্তু আমি তাকে আমার অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করলাম। তিনি বলেন, অতঃপর যখন আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসলাম, তখন তাঁর কাছে সেটার খবর পৌঁছল। তিনি তখন আমাকে বললেন, উসামা, তুমি কি তাকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরও হত্যা করলে?! আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, সে তো তা বাঁচার জন্য বলেছে। তিনি আবার বললেন, তুমি কি তাকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরও হত্যা করলে?! এভাবে বারবার বলতে থাকলেন, এমনকি আমি মনে করতে লাগলাম, হায় আমি যদি এদিনের আগে ইসলাম গ্রহণ না করতাম! হুরাকা হচ্ছে, জুহাইনা গোত্রের একটি শাখা, বনী মুররার বাসভূম বাতনে নাখলার পিছনে তাদের আবাসভূমি ছিল। সে যুদ্ধটি ৭ম অথবা ৮ম হিজরী সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে যুদ্ধের আমীর ছিলেন গালেব ইবন উবাইদুল্লাহ আল-কালবী, আর যাকে উসামা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হত্যা করেছিলেন তার নাম ছিল, মিরদাস ইবন নাহীক।], তখন তার ওপর দিয়াত বা কাফ্‌ফারা কিছুই ওয়াজিব করেন নি। কেননা উসামা রাদিয়াল্লাহু আনহুর ধারণা ছিল যে, এরূপ সংকটময় মুহুর্তের (Critical Moment) ইসলাম গ্রহণ গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং তাকে হত্যা করা জায়েয, যদিও মুসলিমকে কতল করা হারাম কাজ।

সালাফে সালেহীন (Anciant Puritous) ও অধিকাংশ ফকীহ্‌গণ এ মতটি গ্রহণ করে বলেছেন, গ্রহণযোগ্য তাবিল বা ব্যাখ্যার মাধ্যমে বিদ্রোহীগণ ন্যায়পরায়নগণকে হত্যা করলে সেটার জন্য কিসাস, কাফ্ফারা বা দিয়াত দিতে হবে না। যদিও মুসলিমকে হত্যা করা ও তাদের সাথে যুদ্ধ করা হারাম।

আর শাস্তি প্রযোজ্য হবার যে শর্তটি আমরা উপরে বর্ণনা করেছি [আর সেটা হচ্ছে, হারাম কাজটি সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়া কিংবা হারাম হওয়া সম্পর্কে দৃঢ়ভাবে জ্ঞাত হওয়ার শক্তি রাখা। [সম্পাদক]], প্রত্যেক নির্দেশনায় এর উল্লেখ জরুরী নয়। কেননা এই সম্পর্কীয় জ্ঞান হৃদয়ে বিরাজমান। যেমন, আমলের প্রতিদানের ওয়াদার জন্য শর্ত হলো খালেছভাবে আল্লাহর জন্য আমল করা এবং মুরতাদ (Apostate) হওয়ার কারণে আমল বরবাদ না হওয়া। এই শর্তটি প্রত্যেক নেক কাজের প্রতিদানের ওয়াদাপূর্ণ হাদীসেই উল্লেখ করা হয় না।

তারপরও (আরও একটি বিষয় প্রনিধানযোগ্য, তা হচ্ছে) কোথাও যদি শাস্তি প্রয়োগ অনিবার্য হয়েও পড়ে, তখনও ঐ শাস্তির হুকুম প্রতিবন্ধকতার কারণে রহিত হয়ে থাকে।

আর শাস্তি অনিবার্য হলেও যে সকল প্রতিবন্ধকতার বিবিধ কারণে তা প্রয়োগ করা যায় না। যেমন,

ক. তাওবা করে।

খ. আল্লাহর দরবারে গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়ার প্রার্থনা করে।

গ. এমন সৎকাজ করে যা দ্বারা গুনাহ মুছে যায়।

ঘ. দুনিয়ার বালা মুসীবত।

ঙ. গৃহীত সুপারিশকারীর সুপারিশ বা শাফা‘আত।

চ. পরম করুণাময় আল্লাহর রহমত।

যখন উল্লিখিত সমস্ত উপকরণগুলোর অনুপস্থিতি ঘটে, তখন আযাব বা শাস্তি অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। অবশ্য উল্লিখিত উপকরণগুলোর অনুপস্থিতি শুধু ঐ সমস্ত লোকের পক্ষে হয়ে থাকে, যারা সীমালঙ্ঘনকারী, নাফরমান অথবা মালিকের হাত থেকে পলায়ণরত জন্তুর ন্যায় পালিয়ে যেতে উদ্যত।

কারণ, প্রকৃত শাস্তির ধমক দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, এটা বর্ণনা করা যে, নিশ্চয় এ কাজটি হচ্ছে ঐ শাস্তির কারণ। আর যখন এ রকম কিছু আসবে, তখন বুঝা যাবে যে, ঐ কাজটি হারাম এবং গর্হিত।

অতএব, কোনো লোকের কাছে (শাস্তি হওয়ার) কারণ পাওয়া গেলেই যে সে ব্যক্তি অবশ্যই যেটার কারণ হয়েছে সেটার (শাস্তির) সম্মুখীন হবে, সেটা একেবারেই বাতিল বা অসার কথা। কেননা কারণকৃত বস্তুর (শাস্তির) প্রাপকের জন্য সেটার শর্ত যেমন পাওয়া অপরিহার্য, তেমনি সকল প্রকারের প্রতিবন্ধকতা না থাকাও আবশ্যক।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন