hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রাফ‘উল মালাম সম্মানিত ঈমামগণের সমালোচনার জবাব

লেখকঃ শাইখুল ইসলাম আহমাদ ইবন আবদুল হালীম ইবন তাইমিয়্যাহ

২৫
দশম কারণ: হাদীসে আমল না করার দশম কারণ এই যে, উক্ত হাদীসটির বিপক্ষে এমন কিছু দলীল-প্রমাণ রয়েছে…
হাদীসে আমল না করার দশম কারণ এই যে, উক্ত হাদীসটির বিপক্ষে এমন কিছু দলীল-প্রমাণ রয়েছে, যার ফলে মুজতাহিদ ব্যক্তি বা ইমাম মনে করেন যে, উক্ত হাদীস দুর্বল, মনসুখ (রহিত) অথবা তাতে তাবিল তথা ব্যাখ্যা করে ভিন্ন মত গ্রহণের অবকাশ রয়েছে। অথচ অন্যান্য ইমামগণ সেটাকে বা সেটার মত প্রমাণকে হাদীসের সাথে দ্বান্দ্বিক বলে মনে করেন না অথবা বাস্তবিকই সেই দলীল-প্রমাণকে ঐ হাদীসটির বিপরীতে গ্রহণযোগ্য দ্বান্দ্বিক মনে করার সুযোগ নেই।

যেমন, অনেক কুফাবাসী কোনো কোনো সহীহ হাদীসের বক্তব্যকে ( ظاهر القرآن ) কুরআনের ব্যাহ্যিক অর্থের [উসূলীদের পরিভাষায় এটাকে বলা হয়, যাহের। এর সংজ্ঞা দিয়ে বলা যায়, যা সাধারণ বক্তব্য থেকে বুঝা যায়, অথচ তাতে ভিন্ন ব্যাখ্যার সুযোগ রয়েছে। [সম্পাদক]] সাথে দ্বান্দ্বিক মনে করে থাকেন। কেননা তাদের বিশ্বাস এই যে, কুরআনের প্রকাশ্য দলীল কিংবা সাধারণ বক্তব্য বা অনুরূপ বিষয়, ( نص الحديث ) হাদীসের দালিলিক ভাষ্যের [উসূলীদের পরিভাষায় এটাকে বলা হয়, ‘নস’। যার সংজ্ঞা দিয়ে বলা যায়, যে উদ্দেশ্যে বাক্যটি নিয়ে আসা হয়েছে, যাতে অন্য ব্যাখ্যার সুযোগ নেই। যেমন, আল্লাহর বাণী, ﴿وَأَحَلَّ ٱللَّهُ ٱلۡبَيۡعَ وَحَرَّمَ ٱلرِّبَوٰاْۚ ﴾ [ البقرة : ٢٧٥ ] এখানে সাধারণ ভাষ্য থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ বেচাকেনা হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। কিন্তু ব্যাকটি যে উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হয়েছে, তা হচ্ছে, বেচাকেনা ও সুদের মধ্যে পার্থক্যকরণ। সুতরাং প্রথম অর্থটিকে বলা হয়, ‘যাহের’। আর দ্বিতীয় অর্থটিকে বলা হবে, ‘নস’। [সম্পাদক]] ওপর প্রাধান্য পাবে।

অতঃপর কখনো (সেসব মুজতাহিদ ব্যক্তি বা ইমাম, যারা হাদীসের ওপর আমল করেন নি,) তারা যা প্রকৃত অর্থে যাহের ( ظاهر ) প্রকাশ্য নয়, তাকেই ( ظاهر ) প্রকাশ্য অর্থ বিশ্বাস করে (এবং এর সাথে হাদীসের মধ্যস্থিত ( نص ) কে দ্বান্দ্বিক মনে করে পরিত্যাগ করে থাকে) কেননা সাধারণত একই কথার মধ্যেই বিভিন্ন প্রকার উদ্দেশ্য নিহিত থাকে [সুতরাং হয়ত সে ইমাম বা মুজতাহিদ যেটাকে কুরআনের ‘যাহের’ অর্থ মনে করে হাদীসের ‘নস’ এর সাথে দ্বান্দ্বিক গণ্য করে হাদীসের উপর ‘আমল ত্যাগ করেছে, আসলে কুরআনের সে অর্থটি যাহের নয়। বরং হাদীসের ‘নস’ এ যে অর্থটি এসেছে সেটাই কুরআনের ‘যাহের’ বা সেটাই কুরআনের ‘নস’। কিন্তু মুজতাহিদ সেটা বুঝতে ভুল করেছেন। [সম্পাদক]]।

এ কারণেই অনেক কুফাবাসী ‘একজন সাক্ষ্য ও দাবীদারের শপথ’ এর মাধ্যমে বিচার করার সংক্রান্ত রাসূলের ( القضاء بالشاهد واليمين ) হাদীসটির ওপর আমল করেন নি [অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বাদীর নিকট দুইজন সাক্ষী না থাকলে, সে একজন সাক্ষী পেশ করার পর দ্বিতীয় সাক্ষীর স্থানে শপথ করবে। ফলে বাদীর পক্ষে রায় দেওয়া হবে। কুফাবাসীগণ ঐ হাদীসটি এজন্য কবুল করেন নি যে, কুরআনে দুই জন সাক্ষীর নির্দেশ রয়েছে।]। যদিও তারা (কুফাবাসী) ব্যতীত অন্যান্যগণ জানেন যে, কুরআনের যাহের ( ظاهر ) বা প্রকাশ্য অর্থে ‘এক সাক্ষী এবং দাবীদারের শপথ’ এর মাধ্যমে বিচারকার্য সমাধা করার কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। এরূপ কিছু থাকলেও তাদের নিকট এটা (হাদীস) তাদের নিকট কুরআনের তাফসীররূপে গণ্য [সুতরাং, হাদীসে কুরআনের যে তাফসীর বা ব্যাখ্যা রয়েছে তাও গ্রহণযোগ্য হবে এবং সেটাকে কুরআনের সাথে দ্বান্দ্বিক মনে করা যাবে না। সে হিসেবেই ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল ও ইমাম শাফে‘ঈ এ হাদীসের ওপর ‘আমল করেছেন। অথচ কুফাবাসী (হানাফী আলিমগণ) কুরআনের দু’জন সাক্ষী গ্রহণের নির্দেশের সাথে ‘এক সাক্ষী ও দাবীদারের শপথ’ সংক্রান্ত হাদীসকে দ্বান্দ্বিক মনে করে তাতে ‘আমল করেন নি। [সম্পাদক]]।

আর ইমাম শাফে‘ঈ রহ. এ (কুরআনের আয়াতের যাহের ( ظاهر ) বা প্রকাশ্য অর্থ ও হাদীসের ( نص ) কে দ্বান্দ্বিক মনে করা সংক্রান্ত) ধারাটির ব্যাপারে যে জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য দিয়েছেন, তা সর্বজন বিদিত [ইমাম শাফে‘ঈ রহ. বলেন, কখনও কোনো আয়াত কোনো সহীহ হাদীসের ভাষ্যের সাথে বিরোধপূর্ণ হয় না। যদি বাহ্যিকভাবে এরকম কিছু মনে হয়, তবে সেটাকে কুরআনের ব্যাখ্যা মনে করতে হবে। [সম্পাদক]]।

ইমাম আহমদ রহ.-এর বিষয়ে লেখা পুস্তিকাখানিও বেশ প্রসিদ্ধ, যাতে তিনি বিশদভাবে ঐ সব লোকের দাঁত ভাংগা জবাব দিয়েছেন, যারা মনে করে, প্রকাশ্য (যাহেরী) কুরআনের আয়াতই যথেষ্ট এবং হাদীসের ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। তিনি তার সে পুস্তিকাখানিতে তার বক্তব্যের সপক্ষে এমন অনেক দলীল-প্রমাণ নিয়ে এসেছেন, কলেবর বৃদ্ধির ভয়ে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া এখানে সম্ভব হলো না।

হাদীসে আমল না করার যে কারণটি এখানে বর্ণিত হলো, (অর্থাৎ উক্ত হাদীসটির বিপক্ষে এমন কিছু দলীল-প্রমাণ থাকা, যার ফলে মুজতাহিদ ব্যক্তি বা ইমাম মনে করেন যে, উক্ত হাদীস দুর্বল, মনসুখ (রহিত) অথবা তাতে তাবিল তথা ব্যাখ্যা করে ভিন্ন মত গ্রহণের অবকাশ রয়েছে)-এর আরও কিছু উদাহরণ হলো:

ক. কুরআনুল কারীমের ( عموم ) বা অনির্দিষ্ট কে ( تخصيص ) নির্দিষ্ট করে আসা হাদীসের ওপর আমল না করা।

খ. অথবা কুরআনের আয়াতে আগত ( مطلق ) শর্তমুক্ত বিধানকে ( تقييد ) করে আসা হাদীসের ওপর আমল না করা।

গ. অথবা কুরআনের বিধানের চেয়েও হাদীসে কিছু সংযোজন রয়েছে এমন হাদীসের ওপর আমল না করা।

অনুরূপভাবে আরও বিশ্বাস করা যে,

ঘ. কুরআনুল কারীমে বর্ণিত বিধানের ওপর কিছু সংযোজিত বর্ধিত করা হলে ( الزيادة على النص ), অনুরূপভাবে, কুরআনের শর্তমুক্ত বিধানকে শর্তযুক্ত ( تقييد المطلق ) করা হলে, তা কুরআনের বিধানকে রহিত করে দেয়। তদ্রূপ অনির্দিষ্ট বিধানকে নির্দিষ্ট করা ( تخصيص العام ) দ্বারা সে অনির্দিষ্ট বিধানকে রহিত করা হয়ে যায় [এগুলো উসূলিদের কিছু ধারা। বস্তুত এ সকল ধারাতে যা বর্ণিত হয়েছে, তা সর্বসম্মত ধারা নয়। কারও কারও নিকট সেগুলো ‘নাসখ’ বা রহিত করার বিধান হলেও অন্যদের নিকট সেটি ব্যাখ্যা পর্যায়ের। সুতরাং যাদের নিকট এ মূলনীতিগুলো দলীল-প্রমাণ, তাদের অনেকের মত হচ্ছে, কুরআন যেহেতু অকাট্য, আর সব হাদীস অকাট্য নয়, সেহেতু অকাট্য বিষয়কে অকাট্য নয় এমন কিছু দ্বারা রহিত করা যাবে না। সে কারণে তারা বেশ কিছু হাদীসের উপর আমল করেন নি। যা মত প্রার্থক্যের গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ বিবেচিত হয়ে আছে। [সম্পাদক]]।

অনুরূপভাবে মদীনাবাসীদের কেউ কেউ কখনও কখনও সহীহ হাদীসকে এজন্য ছেড়ে দেয় যে সেটা ( عمل أهل المدينة ) মদীনাবাসীরা তাতে আমল করতেন না। মদীনাবাসীদের উক্ত হাদীসে আমল না করা ঐ হাদীসের প্রতিকূলে ইজমার মত। আর তাদের (মদীনাবাসীদের) সমষ্টিগত রায় এমন একটি দলীলস্বরূপ, যাকে হাদীসের ওপর প্রাধান্য দেওয়া হয়।

ঙ. যেমন, উল্লিখিত কানুনের ওপর ভিত্তি করে ( خيار المجلس ) তথা ক্রয়-বিক্রয়ের পর স্থান ত্যাগ পর্যন্ত চুক্তি রাখা না রাখার স্বাধীনতা সংক্রান্ত হাদীসের বিরোধিতা করা। তা শুধু এজন্য যে, মদীনাবাসীগণ এ হাদীসের ওপর আমল করেন নি। যদিও অধিকাংশ লোক ভালভাবেই প্রমাণ করবে যে, মদীনাবাসীগণ উক্ত মাসআলায় একমত হন নি। এমনকি যদি মদীনাবাসীগণ একমতও হয়, আর অন্যান্যরা উক্ত মাসআলায় মতানৈক্য প্রকাশ করে, তবুও তাদের ইজমার ওপর আমল না করে হাদীসের ওপর আমল বাঞ্ছনীয়।

ঘ. তদ্রূপ মদিনা ও কুফার কতিপয় লোক ( قياس الجلي ) বা প্রকাশ্য কিয়াসের সাথে দ্বন্দ্বের কারণে কতিপয় হাদীসের ওপর আমল ছেড়ে দেয়। তাদের এ কাজের ভিত্তি হচ্ছে, ( القواعد الكلية ) বা মৌলিক নীতিসমূহকে ঐ জাতীয় খবর (হাদীস) দ্বারা খণ্ডন করা যায় না।

ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার বিরোধী নীতিমালাসমূহ। চাই সে সব দ্বারা বিরোধিতাকারী শুদ্ধভাবেই বিরোধিতাকারী হোন কিংবা ভুলের ওপর থেকেই বিরোধিতাকারী হোন।

এভাবে হাদীসের ওপর আমল না করার মৌলিক দশটি দশটি কারণ সুস্পষ্ট।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন