hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সালাতে সূরা ফাতিহা পাঠের পদ্ধতি নিয়ে বিতর্কের সমাধান

লেখকঃ আশরাফুল ইসলাম

৩৭
ইমামের ক্বিরাআত পাঠের সময় চুপ থাকার দাবি - কৌশলে লঙ্ঘন
আবু আব্দিল্লাহ আব্দুর রাজ্জাক - ১৭: (পৃ. ১০-১১)

তাছাড়া দুই সাকতা সম্পর্কি হাদীস দুটির ভাষ্যনুযায়ী একথা প্রমাণিত নয় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর রুকুর পূর্বে সাকতায় মুক্তাদীর জন্য সূরা ফাতিহা পাঠের সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন, আর সাহাবীগণ প্রায় সে সাকতায় সূরা ফাতিহা পাঠ করতেন। তথাপি যারা ইমামের রুকুর পূর্বের সাকতায় সূরা ফাতিহা পাঠের পক্ষে অভিমত পোষণ করে এবং এর সমর্থনে যে সব প্রমাণ পেশ করে থাকেন তন্মধ্যে একটি হলো:

قد ذكر البيهقي في أقاويل الصحابة بإسناده عن عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده أنهم كانوا يقرون خلف رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا أنصت ، فإذا قرأ لم يقرءوا وإذا أنصت قرؤوا وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : كل صلاة لا يقرأ فيها بأم القرآن فهي خداج

আবু আব্দুল্লাহ আল...আবু মু'আবিয়াহ, ইবনু উমার, আমর ইবনু শু’আয়িব নিজের পিতা থেকে তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তাঁরা। অর্থাৎ সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পিছনে তখন কিরাআত করতেন যখন তিনি চুপ থাকতেন। আর যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিরাআত করতেন তখন তারা কিছুই পড়তেন না। অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চুপ থাকতেন তখন তারা কিরাআত করতেন। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন (এমন) সকল সালাত যার মধ্যে সূরা ফাতিহা পড়া হয় না তা অসম্পূর্ণ । (বায়হাকী কিতাবুল কিরাআত)।

পর্যালোচনা - ১৭: আমরা পূর্বেই বলেছি হাদীসটি সাক্ষ্যমূলকভাবে উপস্থাপিত হয়। [দ্র: পর্যালোচনা-৩ ও ৫] ইমাম বায়হাক্বী (রহ) উদ্ধৃত হাদীসটি বর্ণনার পর, পরবর্তী সাহাবী ও তাবেঈদের বর্ণনা থেকে যা উপস্থাপন করেছেন। মুহাদ্দিসগণ দুই সাকতার হাদীসগুলো থেকে সেটাই বুঝেছেন। অথচ পুস্তিকাটির লেখক অস্বীকার করেছেন। আর এ ব্যাপারে মুহাদ্দিসগণের সিদ্ধান্ত সঠিক। কেননা, সাকতা দু’টির স্থান সামুরাহ (রা) থেকে সুস্পষ্ট হয়েছে। আর তাতে সূরা ফাতিহা পাঠের বিষয়টি আবূ হুরায়রা (রা) ও আমর বিন শুআয়েবের হাদীসটি থেকে প্রমাণিত। তা ছাড়া শেষোক্ত হাদীসটি সূরা আ‘রাফের ২০৪ নং আয়াতের ‘আনসাত’ ব্যাখ্যা সমৃদ্ধ। কেননা সেখানেও ইমামের ক্বিরাআতের সময় ‘আনসাত’ বা চুপ থাকার আমলটি এসেছে। পুস্তিকাটির লেখক সেগুলোর বিরোধিতা করছেন এমনসব হাদীস দ্বারা যেখানে আনসাত বা চুপ থাকা সম্পর্কে আলোচনাই নেই। তা হলে কিভাবে পুস্তিকার লেখকের দাবিনুযায়ী তার উপস্থাপিত দলিলগুলো সূরা আ‘রাফের ২০৪ নং আয়াতের ব্যাখ্যা হতে পারে? বরং বিরোধী হওয়া শায কিংবা মানসুখ। যেভাবে আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ) ও শায়খ আলবানী (রহ) বলেছেন।

আবু আব্দিল্লাহ আব্দুর রাজ্জাক - ১৮: (পৃ. ১১)

 হাদীসটির পর্যালোচনা: “সাহাবীগণ এ পড়তেন যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চুপ থাকতেন” আর যখন “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিরাআত করতেন তখন তারা (সাহাবীগণ) কিছুই পড়তেন না" । এর অর্থ এই নয় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুকুর পূর্বে চুপ থাকতেন আর তখন সাহাবীগণ সূরা ফাতিহা পড়তেন। কেননা ওপরে। বর্ণিত হাদীসটিতে সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখন চুপ থাকতেন, আর কখন সাহাবীগণ পড়তেন। সূরা ফাতিহা পড়া যায় এরূপ দীর্ঘ সাকতা যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুকুর পূর্বে করতেন, আর সে সাকতায় সাহাবীগণ যদি সূরা ফাতিহা পড়তেন, তাহলে অবশ্যই তা অন্যান্য সাহাবীগণ একা কর্তৃক সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত হয়ে আসত। যেরূপ বর্ণিত হয়েছে তাকবীরে। তাহরীমা ও কিরাআতের মধ্যবর্তী সময়ের সাকতা সম্পর্কে। 

পর্যালোচনা - ১৮: ঐ চুপ থাকার দাবি হলো, ইমামের ক্বিরাআত চলাকালীন সময় মুক্তাদির চুপ থাকা ও মনোযোগী হওয়া। যা পুস্তিকার লেখক কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করলেন। রুকু‘র পূর্বে সাকতা করার ব্যাখ্যা অন্যান্য হাদীসের ভিত্তিতে মুহাদ্দিসগণ নিয়েছেন। [দ্র: পর্যালোচনা-১৭] হাদীসের মধ্যকার দ্বন্দ নিরসনের নীতিমালা অনুযায়ী মুহাদ্দিসগণের উপস্থাপনাটি সঠিক।

ইমাম বায়হাক্বী তাঁর ‘কিতাবুল ক্বিরাআতে’ আলোচ্য হাদীসটি দ্বারা সাকতাতে সূরা ফাতিহা পাঠের দলিল নিয়েছেন। তিনি (রহ) লিখেছেন:

حديث السكتتين أثبت من كل حديث يَحتج به من يقول : بترك القراءة خلف الإمام في جَميع الصلوات عند أهل الْمعرفة بالْحديث ، وذهب إلى هذا الْمذهب في الْجمع بيْن الإنصات عند قراءة الإمام وقراءة الفاتِحة عند سكوت الإمام من سَميناهم في الْجزء قبله من الصحابة والتابعين ومن بعدهم

‘‘হাদীসের বিশেষজ্ঞদের নিকট দুই সাকতার হাদীস ঐসব হাদীস থেকে বেশি প্রমাণিত যা তাদের বিরুদ্ধে দলিল হিসাবে উপস্থাপিত হয় যারা বলে, সব সালাতেই ইমামের পিছনে ক্বিরাআত পাঠ ত্যাগ করবে। এই মতটি (পক্ষে-বিপক্ষের দলিলগুলোর) সামগ্রিক দাবি (সমন্বয়) করে - ইমামের ক্বিরাআতের সময় আনসাত (চুপ) থাকা, আর ইমামের সাকতাতে সূরা ফাতিহা পড়ার মাধ্যমে। যা এই পুস্তিকার শুরুতে সাহাবী (রা), তাবেঈন (রহ) ও পরবর্তীর্দের থেকে উদ্ধৃত হয়েছে। [বায়হাক্বী, কিতাবুল ক্বিরাআত পৃ. ৮৫]

আমরা পূর্বে আরও কয়েকজন মুহাদ্দিস কর্তৃক হাদীসটি দ্বারা ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা পাঠের অভিমত উল্লেখ করেছি। [দ্র: ‘পর্যালোচনা - ৫’]

সুস্পষ্ট হলো, অভিধানবীদ ও মুহাদ্দিস উভয়ের নিকট হাদীসটির দাবি সাকতাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা।

আবু আব্দিল্লাহ আব্দুর রাজ্জাক - ১৯: (পৃ. ১২)

আমর ইবনু শু'আয়িব বর্ণিত উপরিউক্ত হাদীসটি যে, ইমামের রুকুর পূর্বের সাকতায় মুক্তাদীর সূরা ফাতিহা পাঠ সংক্রান্ত হাদীস নয় তা অনুধাবনে। নিম্নে বর্ণিত হাদীসসমূহ মনোযোগ সহকারে দেখুন: 

(১) আনাস (রা) হতে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ

  عن أنس بن مالك : أن النبي صلى الله عليه و سلم صلى بأصحابه فلما قضی صلاته أقبل عليهم بوجهه فقال : ( أتقرؤون في صلاتكم خلف الإمام والإمام يقرأ ) ؟ فسكتوا فقالها ثلاث مرات فقال قائل أو قائلون : إنا لنفعل قال : فلا تفعلوا وليقرأ أحدكم بفاتحة الكتاب في نفسه  

তোমরা কি ইমামের কিরাআত অবস্থায় কিছু পাঠ করে থাক? এটা করবে। । বরং কেবল মাত্র সূরায়ে ফাতিহা চুপে চুপে পড়বে...... (সংক্ষেপিত অনুবাদ)। (সহীহ ইবনু হিব্বান হা/১৮৪৪, বুখারী জুযউল কিরআত হা/২৫৫)

পর্যালোচনা - ১৯: লেখক আমর বিন শুআয়েবের হাদীসটি অনুধাবনে ৭টি বর্ণনা এনেছেন। যার কোনোটিই আমর বিন শুআয়েবের বর্ণনার মূল দাবি ‘যখন রসূলুল্লাহ (স) পড়তেন তখন আমরা পড়তাম না, আর যখন তিনি চুপ থাকতেন তখন আমরা পড়তাম’- বক্তব্যের পরিপূরক নয়, বরং বিরোধী। কেবল তা-ই না, সূরা আ‘রাফ: ২০৪ নং আয়াত, সূরা মুযযাম্মিল: ২০ নং এবং এদের সমর্থিত হাদীসে রসূল (স), সাহাবীদের (রা) বর্ণনা, তাবেঈদের বর্ণনা ও মুহাদ্দিসগণের বুঝের বিরোধী। লেখকের উল্লিখিত হাদীসগুলো পরস্পর বিরোধী বিভিন্ন শব্দে বর্ণিত, যেমন - ‘এমনটি (ক্বিরাআত) করো না, মনে মনে ফাতিহা পড়’, কোনটিতে ‘সরবে ফাতিহা পড়া’, কোনটিতে বুঝা যায় না কিভাবে ফাতিহা পড়তে হবে। যার ফলে হাদীসগুলোর সনদ সহীহ বা হাসান হলেও মতন মুযতারাব হওয়াতে যঈফ হাদীস হয়। বিশেষভাবে যখন তা কুরআন ও পরিপূরক সহীহ হাদীসের বিরোধিতায় উপস্থাপন করা হয়। পক্ষান্তরে যখন সাকতার হাদীস দ্বারা ব্যাখ্যা নেয়া হয়, তখন হাদীসগুলোর মৌলিক দাবি সূরা ফাতিহা পড়ার হুকুমও পালন হয়।

আনাস (রা)-এর হাদীসেও নবী (স)এর প্রশ্ন ছিলো:

أتقرَؤونَ   في   صلاتِكم خَلْفَ الإمامِ والإمامُ يقرَأُ ؟

‘‘তোমরা কি খলফাল ইমাম (ইমামের পিছনে) পাঠ করো আর ইমাম পড়তে থাকেন।’’ যখন সাহাবীগণ স্বীকার করলেন তখন নবী (স) বললেন:

فلا تفعَلوا ولْيقرَأْ   أحَدُكم   بفاتحةِالكِتابِ   في   نفسِه  

‘‘এটা করো না, তোমাদের কেউ মনে মনে ফাতিহাতুল কিতাব পড়বে।’’

অর্থাৎ সাধারণভাবে ইমামের পড়া অবস্থায় মুক্তাদির ক্বিরাআত করা নিষিদ্ধ হলো, কেবল মনে মনে সূরা ফাতিহা পাঠের সুযোগ থাকলো। যার পদ্ধতিটি আমর বিন শুআয়েবের হাদীসটিতে সুস্পষ্ট হয়।

আমরা হাদীসটির ঐ অর্থই গ্রহণ করি, যা ইমাম বুখারী, ইমাম বায়হাক্বী, ইমাম তিরমিযী (রহ) ও আরবি অভিধানবীদগণ করেছেন। সূরা ফাতিহা ইমামের ক্বিরাআত অবস্থায় নয়, বরং সাকতা বা আনসাতের সুযোগে পাঠ করাটাই সঠিক। কেননা আলোচ্য আনসাতের দাবি পবিত্র কুরআন, সহীহ হাদীসে রসূল (স) ও সাহাবীদের (রা) বর্ণনা থেকে প্রমাণিত।

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন: فَإِذَا قَرَأْنَاهُ فَاتَّبِعْ قُرْآنَهُ ‘‘যখন আমি তা পাঠ করি, তখন আপনি সে পাঠের অনুসরণ করুন।’’ [সূরা ক্বিয়ামাহ: ১৮ আয়াত]

ইবনে আব্বাস (রা) আয়াতটির ব্যাখ্যায় বলেন: فَاسْتَمِعْ لَهُ وَأَنْصِتْ ‘‘অর্থাৎ মনোযোগ সহকারে শুনুন ও চুপ থাকুন।’’ [সহীহ বুখারী - কিতাবুল অহী হা/৫, আরও দ্র: হা/৭৫২৪]

মূলত এটি সূরা আ‘রাফের ২০৪ নং আয়াতের চুপ থাকা বা আনসাতেরই ব্যাখ্যা। যা সাহাবী আবূ হুরায়রা (রা) ও আবূ মূসা (রা) থেকেও মারফু‘ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন