hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মন দিয়ে নামায পড়ার উপায়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৩৫
সূরা ফাতিহার ব্যাখ্যা
সূরা ফাতিহা হলো কুরআনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূরা। এ সূরাটি মূলত একটি দু‘আ। তাই এ সূরার অপর একটি নাম হচ্ছে سُوْرَةُ الدُّعَاءِ অর্থাৎ দু‘আর সূরা। আর নামাযটাও মূলত দু‘আ ও মুনাজাত, এজন্য নামাযের প্রত্যেক রাক‘আতে এ সূরাটি পড়তে হয়।

আল্লাহর কাছে মুনাজাত করার আদব হলো- প্রথমে তাঁর গুণগান ও প্রশংসা করা, তারপর নিজের প্রয়োজনের কথা বলা। তাই এ সূরাটি আরম্ভ হয়েছে আল্লাহর প্রশংসা দিয়ে। যেমন-

﴿اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ ﴾

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি বিশ্বজাহানের (রব) পালনকর্তা।

‘রব’ বলতে ঐ সত্তাকে বুঝায়, যিনি কোন জিনিসকে তার মঙ্গলের দিকে দৃষ্টি রেখে পর্যায়ক্রমে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দেন। ‘আ-লামীন’ অর্থ বিশ্বজগত, এ শব্দ দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, তিনি কেবল কোন বিশেষ জিনিস, প্রাণী বা দেশের রব নন। আমরা যা দেখি এবং যা দেখি না, গোটা বিশ্বে যা কিছু আছে, তিনি হলেন সবকিছুর মালিক, প্রতিপালক, ও ব্যবস্থাপক। আমি যখন মায়ের গর্ভ থেকে বের হয়েছিলাম, তখন আমার অবস্থা বড়ই নাজুক ছিল। তিনি আমাকে ধীরে ধীরে জ্ঞান-বুদ্ধি ও শারীরিক দিক দিয়ে উন্নত করেছেন, তাই প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য তিনিই হতে পারেন। এজন্য অন্তর দিয়েই তাঁর শুকরিয়া আদায় করতে হয়।

আল্লাহ শুধুমাত্র রবই নন তিনি হলেন-

﴿اَلرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ﴾

বড়ই মেহেরবান, অশেষ দয়াময়।

আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামতের মধ্যে আমরা ডুবে আছি। মহান আল্লাহ বলেন, ‘‘তোমরা আমার নিয়ামত গণনা শুরু করলে তা গুনে শেষ করতে পারবে না।’’ (সূরা নাহ্ল- ১৮)

যেসকল নিয়ামত একান্ত প্রয়োজনীয়, তা তিনি এত ব্যাপক করে দিয়েছেন যে, এর কোন অভাব হয় না। যেমন- সূর্যের আলো, পানি, বাতাস ও আগুন। তিনি এসবের কোন বিনিময় কারও কাছ থেকে নেন না; কেবল নিজ দয়া ও অনুগ্রহের গুণে এসব নিয়ামত দান করে যাচ্ছেন। সবকিছু বাদ দিয়ে আমরা যদি কেবল আমাদের শরীরটার দিকে তাকাই, তবে মনে হবে- এটি যেন নিয়ামতের একটি জগত। চিকিৎসাবিদরা বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা মানুষের শরীরে পাঁচ হাজার প্রকারের উপাদান রেখেছেন। মানুষের চুলগুলো উদ্ভিদের মতো, হাড়গুলো পাহাড়ের মতো, রক্ত চলাচলকারী শিরাগুলো নদী-নালার মতো। মানুষের শরীরে তিন শতাধিক জোড়া রয়েছে। গড়ে ৬০ থেকে ৭০ বৎসর পর্যন্ত মানুষ এগুলো নাড়াচাড়া করে তবুও এগুলো ক্ষয় হয় না, কোন মেরামতেরও প্রয়োজন হয় না। আখিরাতে আল্লাহর রহমত কেবল মুসলিমরা পাবে; কিন্তু এ দুনিয়াতে তাঁর রহমত এত ব্যাপক যে- কাফির, মুশরিক ও জীবজন্তু সবাই প্রাপ্ত হয়। সবাইকে তিনি রিযিক দেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু সরবরাহ করেন। এখন আমাদের চিন্তা করা উচিত তিনি কেমন রহমান, কেমন রহীম।

পরের আয়াতে বলা হয়েছে,

﴿مَالِكِ يَوْمِ الدِّيْنِ ﴾

অর্থাৎ তিনি বিচার দিনের মালিক।

এ দুনিয়াতে মানুষ যা কিছু করে তার সঠিক বিচার ও পরিপূর্ণ প্রতিদান পাওয়ার জন্য আমাদের সামনে একটি দিন আসছে। এর নাম হলো কিয়ামতের দিন। সে দিনের একমাত্র বিচারক হবেন আল্লাহ তা‘আলা। আর তিনি কারো প্রতি যুলুম করবেন না। যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদেরকে তিনি নিয়ামতে ভরা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর যারা পাপকাজ করে অপরাধী হয়েছে, তাদেরকে তিনি জাহান্নামের জ্বলন্ত অগ্নিতে নিক্ষেপ করবেন। সে দিনের সকল ক্ষমতা একমাত্র তাঁরই হাতে থাকবে। দুনিয়ার কোন রাজা-বাদশার কর্তৃত্ব সেখানে থাকবে না। পরের আয়াতে বলা হয়েছে,

﴿اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَاِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ ﴾

হে আল্লাহ! আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদাত করি এবং তোমার কাছেই সাহায্য চাই।

যে আল্লাহ অতীত হতে সবকিছুর লালন-পালন করে আসছেন, বর্তমানেও যার অশেষ রহমত ও দয়া সবকিছুকে বেষ্টন করে আছে, মৃত্যুর পর আবার যার কাছে ফিরে যেতে হবে, তিনিই একমাত্র ইবাদাত পাওয়ার যোগ্য হতে পারেন।

গোটা কুরআনের সারমর্ম হলো- সূরা ফাতিহা। আর সূরা ফাতিহার সারমর্ম হলো- এ আয়াত। ইখলাসের সাথে আল্লাহর দাসত্ব করা এবং সকল কাজকর্মে তাঁরই কাছে সাহায্য চাওয়া- এটাই হলো তাওহীদের মূলকথা। ‘ইয়্যাকা না’বুদু’ বলার পর আবার ‘ওয়া ইয়্যাকা নাসতা‘ঈন’ এজন্য বলি যে, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোন মানুষ ভালো কাজ করতে পারে না। যেহেতু তিনি আমাকে নামাযের মতো এত মহান এক ইবাদাত পালনের তাওফীক দিয়েছেন, আমাকে তাঁর খাদিম হিসেবে নির্বাচন করেছেন, এজন্য আমি তাঁরই সাহায্য কামনা করছি; যাতে তিনি এমনভাবে আমাকে আমল করার তাওফীক দান করেন, যেভাবে আমল করলে তাঁর কাছে কবুল হয় এবং দুনিয়া-আখিরাতে এর ফলাফল আমি পাই। প্রতিটি কাজেই আমরা তাঁর মুখাপেক্ষী। আর তিনিই প্রকৃত সাহায্যকারী, অন্য কেউ নয়।

তারপর বলা হয়েছে,

﴿اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ - صِرَاطَ الَّذِيْنَ اَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ﴾

হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে সরল সঠিক পথ দেখিয়ে দিন। তাদের পথ যাদের প্রতি আপনি নিয়ামত দান করেছেন। তাদের পথ নয় যাদের প্রতি আপনি রাগান্বিত হয়েছেন। আর তাদের পথও নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

মানুষের জীবনে চাওয়া-পাওয়ার যা কিছু আছে, এর মধ্যে সবচেয়ে বড় জিনিস হলো- ‘সিরাতে মুস্তাক্বীম’ অর্থাৎ সৎপথের সন্ধান পাওয়া। আমরা আল্লাহর গুণগান গেয়ে আমাদের সেই সবচেয়ে বড় দু‘আটি আল্লাহর দরবারে পেশ করি। সেই পথ কোন্টি, তা ব্যাখ্যা করে বলি তাদের পথ যাদের প্রতি আপনি নিয়ামত দান করেছেন। তারা হলেন নবী, সিদ্দীক, শুহাদা ও সালিহীনগণ। তাদের পথ নয় যাদের প্রতি আপনি রাগান্বিত হয়েছেন। আর তারা হলো- ঐ সকল লোক, যারা দ্বীনের বিধিবিধান জেনে বুঝেও পালন করে না, নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য আল্লাহর বিধান পরিবর্তন করতেও তারা পরওয়া করে না। ইয়াহুদিদের অভ্যাস এমনই ছিল।

আর তাদের পথও নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। তারা ঐ সকল লোক যাদের ধর্মীয় জ্ঞান না থাকাতে, না বুঝে ভুল পথের অনুসারী হয়েছে। এতে তারা ধর্মের ব্যাপারে বাড়াবাড়িও করেছে। নাসারাদের এরকম অভ্যাস ছিল। সুতরাং আমরা আপনার কাছে এমন সহজ-সরল পথ চাই, যার মধ্যে না আছে কোন বাড়াবাড়ি, আর না আছে কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি।

যারা এভাবে সূরা ফাতিহা বুঝে বুঝে পড়বে, তাদের ব্যাপারে নিচের হাদীসে কুদ্সীটি প্রযোজ্য হবে-

আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নামায আদায় করল কিন্তু তাতে উম্মুল কিতাব তথা সূরা ফাতিহা পাঠ করল না তার নামায ত্রুটিপূর্ণ হয়ে গেল এবং পূর্ণাঙ্গ হলো না। এ কথা তিনি তিনবার বললেন, আবু হুরায়রা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হলো, আমরা যখন ইমামের পেছনে নামায আদায় করব তখন কী করব? তিনি বললেন, তোমরা চুপে চুপে তা পড়ে নাও। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি, মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, আমি নামাযকে অর্থাৎ সূরা ফাতিহাকে আমার ও আমার বান্দার মধ্যে ভাগ করে নিয়েছি। বান্দা যখন বলে اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, حَمِدَنِىْ عَبْدِىْ আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। আবার যখন বলে اَلرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ যিনি পরম করুণাময়, অতিশয় দয়ালু। তখন আল্লাহ বলেন اَثْنٰى عَلَىَّ عَبْدِىْ আমার বান্দা আমার গুণগান করেছে। আবার যখন বলে مَالِكِ يَوْمِ الدِّيْنِ যিনি প্রতিফল দিবসের মালিক। তখন আল্লাহ বলেন مَجَّدَنِىْ عَبْدِىْ আমার বান্দা আমার মাহাত্ম্য ও মর্যাদা বর্ণনা করেছে। আবার বান্দা যখন বলে اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَاِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ আমরা শুধুমাত্র আপনারই ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি। তখন আল্লাহ বলেন هٰذَا بَيْنِىْ وَبَيْنَ عَبْدِىْ وَلِعَبْدِىْ مَا سَاَلَ এ কথাটি আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে। অর্থাৎ ইবাদাত আমার জন্য আর সাহায্য আমার বান্দার জন্য- আমার বান্দা যা চাইবে তা সে পাবে। আর বান্দা যখন বলে اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ صِرَاطَ الَّذِيْنَ اَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ আমাদেরকে সরল-সঠিক পথ প্রদর্শন করুন। তাদের পথ, যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন; তাদের পথ নয় যাদের প্রতি আপনার গযব পড়েছে এবং তাদের পথও নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। তখন আল্লাহ বলেন هٰذَا لِعَبْدِىْ وَلِعَبْدِىْ مَا سَاَلَ এটা আমার বান্দার, আর আমার বান্দা আমার কাছে যা চাইবে আমি তাকে তা দান করব। [সহীহ মুসলিম, হা/৯০৪; মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হা/১৮৮; আবু দাউদ, হা/৮২১; তিরমিযী, হা/২৯৫৩; নাসাঈ, হা/৯০৯; ইবনে মাজাহ, হা/৩৭৮৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭২৮৯; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/৫০২; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৭৮৪; দার কুতনী, হা/১১৮৯; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৪৫৫; মিশকাত, হা/৮২৩।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন